Wednesday, May 24, 2023

বাংলা মিডিয়ামে /, পশ্চিমবঙ্গ পর্ষদের মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকে পড়লে ভবিষ্যত নেই ?? জীবন এবং জীবিকা পর্ব-১১

 বাংলা মিডিয়ামে /, পশ্চিমবঙ্গ পর্ষদের মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকে পড়লে ভবিষ্যত নেই ?? জীবন এবং জীবিকা পর্ব-১১

বিপ্লব পাল, ২১ শে মে, ২০২৩
আমার আগের পর্বে এই পশ্নটি করেছেন কৃষ্ণনাগরিক একজন মহিলা। তার প্রশ্ন শুনে মনে হল, তিনি শঙ্কিত। যেহেতু বাংলা মিডিয়ামে পশ্চিম বঙ্গ পর্ষদের সিলেবাসে পড়াশোনা করেছেন, তার বুঝি কোন ভবিষ্যত নেই! আসলে তার মাথায় এই শঙ্কা, এই ভুল চিন্তা ঢোকানো হয়েছে। কারন আজকাল গ্রাম শহরেও সিবিএস ই , আই এস সি বোর্ডের ইংরেজি মিডিয়াম স্কুল গজিয়ে উঠছে। সবার মগজ ধোলাই করা হচ্ছে ইংরেজি মিডিয়ামে না পড়লে- তার ভবিষ্যত নেই! আই এস সি , সি বি এস ই বোর্ডে পড়াশোনা না করলে ভবিষ্যত শুন্য! প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে পিছিয়ে যাবে!
বাংলা মিডিয়ামে পড়াশোনা করেও- আপনা ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল হতে পারে। কোন সমস্যা নেই। তাই নিয়েই লিখছি এই পর্বে। যদিও ছাত্রছাত্রীদের মানসিক সুস্বাস্থ্য নিয়ে লেখার ইচ্ছা ছিল। সেটা পরের পর্বে লিখব। আমার পরের পর্বের লেখাগুলো ফেসবুক ফিডে পেতে, আমার প্রোফাইলে ফলো বাটন ক্লিক করে রাখবেন প্লিজ।
আমি নিজে ক্লাস টেন পর্যন্ত করিমপুর জগন্নাথ হাইস্কুলে [ যা কিনা একান্তই গ্রামশহর স্কুল] বাংলা মিডিয়ামে পড়ে, উচ্চমাধ্যমিকে নরেন্দ্রপুরে ইংরেজি মিডিয়ামে পড়েছি। আজ প্রায় ২৩ বছর আমেরিকাতে আছি। কোন অসুবিধে হয় নি । এই আমেরিকাতে আমার মতন আরো হাজার হাজার বঙ্গ সন্তান আছেন। যারা বাংলা মিডিয়ামেই পড়াশোনা করে এখানে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার অধ্যাপক। তারা ইংরেজিতে আমেরিকানদের পড়াচ্ছেন। ইংরেজিতে চিকিৎসা করছেন। কারোর কোন অসুবিধা হয় না। বাংলার উজ্জ্বল নক্ষত্ররা -মেঘনাদ সাহা, সত্যেন বোস, ডিকে মিত্র, অমর্ত্যসেন, অশোক মিত্র- এরা সবাই বাংলা মিডিয়ামেই পড়েছেন!!! স্কুলে বাংলা মিডিয়ামে পড়লে কেউ পিছিয়ে যায় না। এসব ভুল ধারনা মাথা থেকে ফেলে দিন। এ এক ধরনের হীন্যমন্যতা।
আপনি বলবেন আমাদের সময় সরকারি স্কুলের পরিবেশ ছিল অন্য। এখন সব নষ্টদের দখলে চলে গেছে। স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ স্ক্যামের পর কেই বা আর তার ছেলেমেয়েদের এইসব ভ্রষ্টাচারি শিক্ষকদের কাছে পাঠাতে চাইবে??
বাট ওয়েট এ মিনিট। কোনদিন কেউ শিক্ষকদের কাছ থেকে কিছু শিখেছে??
যারা জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত-তাদের জিজ্ঞেস করুন, সারা জীবন কজন শিক্ষকের কাছ থেকে শিখেছে বনাম কতটা নিজের চেষ্টায় শিখেছে???
প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার বিজ্ঞানী কর্পরেট বসদের জিজ্ঞেস করলে দেখবেন- তারা প্রায় ৯৯% নিজের চেষ্টায় শিখেছে। মাস্টার মশাই বড়জোর উৎসাহ দিতে পারেন। শেখানোটা সহজ করতে পারেন। কিন্ত সেটা অধিকাংশ শিক্ষকই পারেন না। কারন তারাও মুখস্থ করেই পরীক্ষায় পাশ করেছেন।
বিবেকানন্দের একটি বাক্য আমার শিক্ষা জীবন বদলে দিয়েছিল। "No one can teach anybody anything. The teacher is only a guide. The man has to work out his own salvation."। আমিও ভেবে দেখেছিলাম- কেউ কাউকে শেখাতে পারে না। শেখানোটা সহজ করতে পারে। কিন্ত শিখতে হয় নিজেকেই। মাষ্টার মশাই শেখাবেন এই ভরসায় কোনদিন থাকি নি। চিরকাল নিজে পড়েই শিখেছি। যারা জীবনে প্রথিতযশা প্রতিষ্ঠিত- সবাই- ১০০% নিজের চেষ্টায় শিখেছেন। কেউ শেখায় না। সবই নিজেকে শিখে নিতে হয়। মাস্টার মশাই শেখাটা সহজ করে দিতে পারেন। এর বেশী কিছু না।
আমরা যখন ছোটছিলাম তখন গুগুল, ইউটিউব, উইকি-এসব ছিল না। বই ছিল শেখার একমাত্র রাস্তা। এখন ইউটিউবে যেসব শেখার ভিডিও পাওয়া যায়- যেকোন সাবজেক্টে- তার থেকে কোন মাস্টারমশাই ভাল শেখাবেন?
সেটা সম্ভবই না। কারন ভিডিওতে সুন্দর গ্রাফিক্স থাকে বোঝানোর জন্য। একটা ভিডিও সুন্দর ভাবে স্ক্রিপ্ট, প্ল্যানিং করে তোলা হয়, এডিটিং করা হয়। তারপরে একই সাবজেক্টে ইউটিউবে ১০ টা ভিডিও পাবেন। ১০ টা ভিডিও ঘাঁটলে শেখা আরো সহজ হয়।
আমি একটা গল্প বলি। আমার ছেলে ক্লাস ১২ এ উঠছে এই বছর। আমেরিকাতে আমাদের স্কুল ডিস্ট্রিক্ট হাওয়ার্ড কাউন্টি- যা হামেশাই দেশের সেরা স্কুল বোর্ডের মধ্যে থাকে। ও যখন প্রাইমারী এবং মিডল স্কুলে ছিল, শিক্ষকতার মান ছিল বেশ উঁচু। কিন্ত যেই হাইস্কুলে উঠল, তবে থেকে দেখছি, হাইস্কুলের অঙ্ক ফিজিক্স কেমিস্ট্রির মাস্টার মশাইদের হাল বেহত খারাপ। ম্যাথ টিচারের বিরুদ্ধে শুধু আমি না, প্রচুর অভিভাবক নালিশ করতে বাধ্য হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের গ্রামের স্কুলে আমাদের সময় অন্তত এর থেকে ভাল অঙ্কের শিক্ষক ছিল!
আমার ছেলে মাঝে মাঝে অঙ্ক বা ফিজিক্সের কিছু শিখতে আসে। বলে টিচার কিছুই শেখাতে পারছে না। সে ক্লাসে কিছুই বুঝতে পারে নি!
আমি বলি না- আমি শেখাবো না। ইউটিউবে অনেক ভাল রিসোর্স আছে। সেখানে দশটা ভিডিও আগে দেখ। সেখান থেকে শেখ। শিখে স্কুলের এসাইনমেন্ট কর। হ্যা, সেখানে অঙ্ক না পারলে, আমি সাহায্য করতে পারি। কিন্ত আগে ইউটিউব থেকে, উইকি থেকে শিখে এস। নিজে শেখার চেষ্টা কর। তারপরে আমি আছি। আস্তে আস্তে দেখলাম, ও ইন্টারনেট ইউটিউব থেকেই বেশী শিখছে। এখন আর শিক্ষক খাজা-এই অযুহাত দেয় না। ইউটিউব থেকেই শিখে নিচ্ছে। ইনফ্যাক্ট ওর আর আমার কাছেও বেশী আসার প্রয়োজন হয় না। আগে ইউটিউব গুগুল থেকে নিজে শেখার চেষ্টা করে।
পয়েন্ট টু নোট ---
এক, পশ্চিম বাংলার সব গ্রামেও এখন ইউটিউব,গুগুল আছে। শিক্ষার দুনিয়া এখন ফ্ল্যাট । আমেরিকার সব থেকে ভাল স্কুলবোর্ড, ভারতের আই এস সি, সি বি এস সি- যেকোন বোর্ড- বাংলা ইংরেজি যে মিডিয়ামই হোক না কেন -শিখতে হবে সেই ইউটিউব, উইকি থেকেই। কারন ইউটিউব টিচিং রিসোর্স - যেকোন শিক্ষকের শেখানোর থেকে অনেক বেশী কার্যকরী।
দুই,
যেকোন স্কুল, যেকোন বোর্ডের থেকে, যেকোন শিক্ষক শিক্ষিকার থেকে ইউটিউবে বেটার শিখবে। কিন্ত কেন? মনে রাখবেন এই সব শিক্ষক শিক্ষিকারাও মুখস্থ করেই শিখেছেন। কেউ প্রায় সাবজেক্ট ম্যাটার গভীরে বোঝেন না। তারাও সেই ফর্মুলা বেসড মুখস্থ করেই শেখাচ্ছেন। তাদের কাছে শিখলে ইনফ্যাক্ট ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। আমি নিজে ১০ বছর আই আই টি জেইই এর জন্য ম্যাথ ফিজিক্স পড়াতাম। সুতরাং ছেলেকে ম্যাথ ফিজিক্স পড়াতে খুব ইচ্ছা হয়। কিন্ত ইউটিউবে এত ভাল ম্যাথ ফিজিক্স শেখার ভিডিও আছে, আমি নিশ্চিত আমার ছেলেকে আমি যা শেখাব-তার থেকে ও ইউটিউব থেকে শিখলে বেশী উপকৃত হবে। শিক্ষকরা প্লিজ অফেন্ডেড হবেন না। মানুষ যন্ত্রের কাছে একদিন হেরে যাবেই। কোটার কোটি টাকার শিক্ষকদের থেকেও ইউটিউবে শেখা অনেক বেশী এফিশিয়েন্ট। বিশেষত স্কুলের সায়েন্স এবং বেসিক সাবজেক্ট গুলো।
তিন নাম্বার পয়েন্টটা আরো গুরুত্বপূর্ন। বর্তমানে যেকোন চাকরিতে ,একজনকে সারাজীবন নতুন প্রযুক্তি শিখে যেতেই হবে। তখন মাস্টার মশাই, বাবা, স্কুল কোথায় পাবে? একটা বাগ বেড়োলে বা নতুন সফটোয়ার আসলে, সেই কমিউনিটি ফোরামে শিখেই তাকে চালাতে হবে। তখন মাস্টারমশাই কোথায়? সুতরাং সময় পালটে গেছে। এটা সেলফ লার্নিং এর যুগ। একদম স্কুল লেভেল থেকেই সেলফ লার্নিং এর ওপর জোর না দিলে ছেলেমেয়ে পিছিয়ে যাবে।
এই যে ১,২,৩ পয়েন্ট গুলো লিখলাম এর সাথে বাংলা মিডিয়াম বনাম ইংরেজি মিডিয়াম, কোন বোর্ড-কোন কিছুর সম্পর্ক নেই।
তবে একটা ব্যপার আছে। সেটা হচ্ছে ইংরেজিতে শেখার দক্ষতা। কারন বাংলায় শেখার রিসোর্স ভাল নেই। ইউটিউবের সব ভাল রিসোর্স ইংরেজিতে। বাংলা হিন্দিতে কিছু কিছু রিসোর্স আছে-কিন্ত মান ভাল না। তবে তা হয়ত স্কুলের থেকে বেটার। কিন্ত এই ইউটিউবের যুগে যেখানে ইংরেজি শেখার এত ভাল রিসোর্স- ইংরেজি শোনা এবং লেখার এত স্কোপ-সেখানে নিজে নিজে ইংরেজি শিখতে কি অসুবিধা?
তাছাড়া আই এস সি বা সিবিএসই বোর্ডে গেলেই আপনার ছেলেমেয়েরা ভাল ইংরেজি শিখবে-সেটাও ভ্রান্ত ধারনা। রেসেন্টলি আমি মার্কেটিং সেলসএর কাজে বেশ কিছু ছেলেমেয়েদের নিয়ে দেখেছি । যারা সবাই ওই আই এস সি, সিবিএসসি বোর্ডে্র। ওদের ইংরেজি খুব দুর্বল। এর মধ্যে তিনজনের আবার ইংরেজিতে এম এ। ওই ইংরেজি শেখার থেকে না শেখা ভাল। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের ১০ হাজার টাকা মাইনে দিলে ছাত্রছাত্রীদের হাল এর থেকে বেশী ভাল কি হবে? আই সি এস সি, সি বি এস ই প্রাইভেট স্কুলগুলোতে শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রচন্ড কম মাইনে দিয়ে শোষন করা হয়। বুঝতেই পারছেন-কারা সেখানে শিক্ষকতা করতে বাধ্য হয়। [ প্লিজ আমি সেই সব শোষিত শিক্ষক শিক্ষিকাদের ছোট করতে চাইছি না। কিন্ত ওই দশ হাজার টাকায়, কারা ওই জবে থাকতে বাধ্য হয়, সেই প্রশ্ন উঠবেই ]
আর এখন চ্যাট জিপিটির যুগ। দুর্বল ইংরেজিতে লিখলেও অসুবিধা নেই। আগে নিজের দুর্বল ইংরেজি লিখুন- তারপর সেটা নিয়ে- চ্যাট জিপিটিকে দিয়ে বলুন ভাল ইংরেজিতে লিখে দিতে। দারুন ইংরেজিতে লিখে দেবে-অত ভাল ইংরেজি ভারতের কোন বোর্ডের সেরা ছাত্ররাও লিখতে পারবে না। সুতরাং ইংরেজিতে দুর্বলতা আপনাকে পিছিয়ে দেবে না।
স্টিম ইঞ্জিন আসার আগে কারখানার সব কাজ ছেলেরা করত। কারন পেশী শক্তি। স্টিম ইঞ্জিন আবিস্কারের পর দেখা গেল মেয়েরাই টেক্সটাইল কারখানার কাজ ভাল করছে। কারন পেশী শক্তির আর দরকার নেই। দরকার স্কিল। তাতে আবার মেয়েরা এগিয়ে।
লার্জ লাঙ্গোয়েজ মডেল এ আই, চ্যাট জিপিটি যার শুরু-এটা ধরুন ওই স্টিম ইঞ্জিনের মতন। যারা ভাল ইংরেজি জানত, তাদের আর কোন এডভ্যান্টেজ নেই। এখন সুবিধা তারাই পাবে- যারা ভাবুক-যারা চিন্তা করতে পারে- যারা আবিস্কার করতে পারে। অর্থাৎ যারা বিজ্ঞান গনিত দর্পন পরিস্কার বুঝতে পেরেছে। মুখস্থ করে নি।
তবে হ্যা ইংরেজি ভাল শিখতে হবে। কারন ইউটিউবের সব ভাল ভিডিওই ইংরেজিতে। দেশী ইংরেজি হিন্দি স্কুল ভিডিও গুলো বেশ খাজা। দেখে লাভ নেই।
আরেকটা ছোট পর্যবেক্ষন দিয়ে এই লেখাটা শেষ করি। গত দুবছর থেকে দেখছি কোলকাতায় ইঞ্জিনিয়ারিং চাকরি গুলির বেশ বড় অংশ পাচ্ছে বিহারের ছেলেমেয়েরা। ক্রাকিং আই টি জব বলে একটা সংস্থা আছে যা কোলকাতায় ইঞ্ঝিনিয়ারিং ছাত্রদের চাকরির জন্য কোডিং শেখায় এবং-ইন্টারভিউ পেতে সাহায্য করে। বাংলার অনেক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেই ক্রাকিং টিম স্ক্রিনিং টেস্ট নিয়ে থাকে। আমি দেখেছি সেখানে, বিহারের ছেলেমেয়েরা বেশ ভাল করছে। এদের ইংরেজি দুর্বল। বিহারে হিন্দি মিডিয়ামে পড়েছে। কিন্ত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ঢুকে শিক্ষক কি পড়াচ্ছেন, সিলেবাস, গ্রেড এসব নিয়ে এরা মাথায় ঘামায় না। অনেকেই গরীব কৃষক সন্তান। ফার্স্ট ইয়ার থেকেই এরা আপ ওয়ার্ক-যেখানে সফটয়ার ফ্রি ল্যান্সিং এর সুযোগ আছে-সেখানে সফটোয়ারের ছোটখাট কাজ করে। করে শেখে। তাতে কিছু টাকা পায়। আবার হাতে কলমে কাজ শেখার সুযোগ পায় । এরা বাঙালী ছেলেমেয়েদের গুলো থেকে অনেক এগিয়ে। কারন বাঙালী ছেলেমেয়েরা সেই টিচার, গ্রেড এসব নিয়েই পড়ে আছে। কে এদের বলবে বিটেকে ১০০% পেলেও কেউ চাকরি দেয় না?
সুতরাং আমি জীবন এবং জীবিকার ১-১০ পর্বে যা লিখেছি- সেই এটিচুড, নিজের ইচ্ছাটাই আসল। বাংলা মিডিয়াম, মাধ্যমিক এসব গৌন। ্প্রচারে কান দেবেন না। এই চ্যাটজিপিটি এবং ইউটিউবের যুগে বাংলা না ইংরেজি মিডিয়াম, প্রেসি না তাম্রলিপ্ত কলেজ এসব আলোচনা ফালতু। কারন শেখার সুযোগ সবার সামনেই সমান। পিছিয়ে পড়লে নিজেকে দোষ দিন। বাংলা মিডিয়ামকে না।
পরের পর্বে লিখবো মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে। তারপর লিডারশিপ স্কিল নিয়ে। আগামী পর্বগুলো পাবার জন্য প্রোফাইলের ফলো বাটনে ক্লিক করে রাখুন। আর আগের পর্বগুলো সব টাইম লাইনে সাজানো আছে-স্ক্রল করুন।
বিদ্র-১ ঃ কোন শিক্ষক/শিক্ষিকাকে ছোট করার জন্য এই পোষ্ট না। আমি জানি এই লেখা অনেক শিক্ষকেরা পড়বেন। তাদের অনেকেই হয়ত ভাবছেন আমি শিক্ষক শিক্ষিকাদের অপমান করছি। একদম ঠিক না। দেখুন আমার বাবা-মা দুজনেই শিক্ষক। আমি যদিও কর্পরেট এবং ব্যবসার লোক- বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্ট টাইম শিক্ষকতা করি। সুতরাং শিক্ষকের ছেলে এবং নিজে শিক্ষক হয়ে শিক্ষকদের অপমান করার প্রশ্নই ওঠে না। আমি শুধু সত্যটাই বলতে চাইছি-যা বিবেকানন্দ অনেকদিন আগে বলে গেছেন। যে একজন শিক্ষক শুধুই পথপদর্শক হতে পারে। কিন্ত শিখতে হবে ছাত্রটিকে নিজেকেই। তার নিজের চেষ্টায়। শিক্ষক তার কাজটা সহজ করে দিতে পারেন। নিখুত করে দিতে পারেন। কিন্ত শেখার কাজটা ছাত্রকেই করতে হবে। আর যদি কোন ছাত্রছাত্রী এই মনোভাব নিয়ে বসে থাকে, শিক্ষক মশাই শেখালে, তবে শিখব-তার ভবিষ্যত শুন্য। এগুলো আমার নিজের অভিজ্ঞতা। আমি আই আই টি জেই ই ইর জন্য দীর্ঘ দশ বছর ম্যাথ, ফিজিক্স পড়াতাম। সব সময় চেষ্টা থাকত কিভাবে ছাত্রছাত্রীটি নিজে নিজে শিখতে পারবে। এখনো সেই মনোভাবই রাখি। সেলফ লার্নিং। কারন বর্তমান যুগে সেটা ছাড়া একজন ছাত্রছাত্রীর কোন ভবিষ্যত নেই। সুতরাং আশা করি আমার লেখাটি ভুল বুঝবেন না। আমার লেখাপত্র এই জন্যেই যে সমাজে যে রাশি রাশি ভুলের জন্য ছাত্রছাত্রীদের জীবন কেরিয়ার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে-তা যদি কিছুটা হলেও বন্ধ করতে পারি।
বিদ্র-২ ঃ শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। আমি টেকনোলজির ব্যপারি। ভারতে আমাদের গবেষনাগার আছে। সেখানে আনেক পি এই চ ডি, মাস্টার ডিগ্রি করা ছেলেমেয়েরা আছে। সব টপ স্কুলের, সবার ভাল রেজাল্ট। আমেরিকাতে ও আমি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সেন্টারের ফ্যাকাল্টি। দুটো দেশেই ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের গাইড করতে হয়। সেই অভিজ্ঞতা থেকে লিখছি, ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটা বড় সমস্যা-এরা কিছুতেই ভুল থেকে শিখতে চাইবে না। ভুল হলে বা রেজাল্ট ঠিক ঠাক না পেলে- সেটা একদম বাচ্চাদের মতন চেপে দেওয়ার চেষ্টা করে। যেন বাবা মারবে। মাস্টার মশাই শুন্য দেবে। অথচ সেই ভুলের মধ্যেই বিরাট এক সম্ভাবনা লুকিয়ে ছিল হয় ত! সুতরাং শিক্ষকরা যেভাবে পড়াচ্ছেন, শেখাচ্ছেন, যা যুগাপযোগী না। রেজাল্ট হয়ত ভাল করবে। কিন্ত তার কি মূল্য বাজারে?
[আগামী পর্বগুলি পেতে,প্রোফাইলের ফলো বাটনে ক্লিক করুন প্লিজ-নইলে মিস করে যাবেন ]

No comments: