Wednesday, May 27, 2009

টিপাইমুখ বাঁধ অবিলম্বে বন্ধ হৌক


সম্প্রতি হিমালয় পর্বতমালা-যা আমাদের নদী নালার একমাত্র উৎস স্থল, তাকে লুঠ করার সমস্ত ব্যাবস্থা তৈরী।

অজুহাত আরো বিদ্যুত চাই। কত চাই? ভারতের প্ল্যান আরো ৫০,০০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুত-নেপালের ১৩,০০০।

বিদ্যুত অবশ্যই চাই। ভারত এখন শিল্পোন্নত দেশ-সেখানে ঘন্টায় ৪-১০ ঘন্টা গড়ে লোডশেডিং নিশ্চয় কাম্য না। কিন্ত সেটা হিমালয়ের জল সম্পদকে লুন্ঠন করে কোটি কোটি মানুষের জীবিকাকে ধ্বংশ করে কেও নিশ্চয় চাইবে না । অতি সম্প্রতি আই আই টী কানপুরের অধ্যাপকরা অনশন ধর্ণায় বসেছিলেন-উদ্দেশ্য ভারত সরকারকে চাপ দিয়ে লোহারিনাগ-পাহারপুর প্রোজেক্টকে বন্ধ করা। উত্তর প্রদেশের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষি এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করত এই প্রোজেক্ট।

যাগগে সেটার সাথে ভারতের স্বার্থ জড়িত ছিল বলে না হয় ভারতীয় বিজ্ঞানীরা আন্দোলন করে থামালেন। কিন্ত কে থামাবে টিপাইমুখ বাঁধ? মনিপুরের এই বাঁধটির ১০০ মাইল দূরেই বাংলাদেশ। মণিপুরের আদিবাসিরাত বটেই-সাথে সাথে বাংলাদেশের সিলেট সহ আরো চার পাঁচটি জেলা পরিবেশ বিপর্যয়ের সামনে পড়বে

এই বিদ্যুত কেন্দ্র ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করবে-স্থানীয় শিল্পের বিকাশ ঘটাবে-এসব তথ্যে আমিও নিশ্চয় খুশী। সমস্যা হচ্ছে, টিপাই মুখ কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। হিমালয়ের বুকে এই রকম আরো ১০০ টী জলবিদ্যুত কেন্দ্র তৈরী করার পরিকল্পনা চলছে। আফটার অল, যত বেশী বাঁধ তত বেশী ঠিকাদারি। পকেট ভরবে রাজনীতিবিদদের। দুদিকে লাভ। অর্থাগম ভোটাগম। মাশুল গুনবে ভারত -বাংলাদেশের সাধারন মানুষ।যাদের অধিকাংশই আদিবাসি। নদীই একমাত্র জীবিকা কেন্দ্র।

বিদ্যুতের প্রয়োজন আমি অস্বীকার করি না। দরকার, সব থেকে বেশী দরকার এই শতাব্দিতে। প্রশ্ন উঠবে, ভারত-আমেরিকা পরমানু চুক্তিটা করে তাহলে কি লাভ হল? আমেরিকা বিদ্যুত ঘাটতি ঢাকতে একাধারে যেমন ৩০টি নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট বসাচ্ছে (২০২০ সালের মধ্যে)-ঠিক তেমনই বিদ্যুতের চাহিদা কমাতে প্রতিটি বাড়িতেই সোলার প্ল্যান্ট বসানো বাধ্যতা মূলক করছে। আর ভারত কি করছে?

আমাদের দেশের কোন শক্তি-সুরক্ষা রোড ম্যাপ নেই। সোলার এনার্জির ব্যাবহার বাধ্যতামূলক করে ১৫-২৫% বিদ্যুত ঘাটতি অবিলম্বে মেটানো যেতে পারে। মানছি চাহিদাটা প্রায় ২০০-৩০০% লেভেলে। তারজন্যে এখন থেকে পরমানু বিদ্যুত প্রকল্পগুলিতে হাত না দিলে উপায় নেই। ফ্রান্স বহুদিন আগে থেকে তাই করেছে। জাপান, আমেরিকা পরিবেশের অজুহাতে পরমানু প্রকল্প বন্ধ রেখে ছিল আগের দুই দশক। এখন আবার দ্রুত গতিতে পরমানু বিদ্যুতের দিকেই এগিয়ে চলেছে। কারন বর্তমান ফিফথ জেনারেশনের প্ল্যান্ট গুলোতে বিপর্যয় ঘটার সুযোগ প্রায় নেই-যা দ্বিতীয় প্রজন্মের পরমানুবিদ্যুত কেন্দ্রগুলিতে ছিল।

সত্যকে অস্বীকার করে আমরা এগোতে পারব না। সেই সত্যটা হল ভারত বা বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রকৃতি যা ধারণ করতে পারে তার তিন থেকে পাঁচ গুন বেশী। হ্যাঁ, আমরা তাদের খাওয়াতে পড়াতে পারছি বটে-কিন্তু পরিবেশকে ধ্বংশ করে। সুতরাং এই অবস্থায় জলবিদ্যুত কেন্দ্র করে, আরো বেশী সমস্যা সৃষ্টি না করাই শ্রেয়। জণ সংখ্যা নিয়ন্ত্রন না করে, আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা যে ভুল করেছেন, তার মাশুল একদম শুন্য হতে পারে না। সুতরাং এই মুহুর্তে পরমানু বিদ্যুতের বিশাল আয়োজন ছাড়া কোন উপায় নেই। তার পাশাপাশি প্রচুর স্থানীয় সোলার প্ল্যান্ট তৈরী করে, বিদ্যুতের দীর্ঘস্থায়ী চাহিদাতে লাগাম পড়াতে হবে।

কিন্তু হিমালয়ের পরিবেশকে ধ্বংশ করে জলবিদ্যুত কেন্দ্র করা-শ্রেফ কিছু ঠিকাদার আর রাজনীতিবিদদের পকেট ভরার খেলা। যার ফলে জ়ীবিকা হারাবে কোটি কোটি মানুষ। এর বিরুদ্ধে বিরাট জনআন্দোলন গড়ে না উঠলে-গোটা হিমালয়টাই অচিরে ঠিকাদার-লুঠেরাদের দখলে চলে যাবে।

Wednesday, May 13, 2009

বৃহত্তম গণতন্ত্রের রূপকথা


ভারতের চারটি পর্বে ভোটগ্রহন এই মাত্র সমাপ্ত ভারতের লোকসভা নির্বাচন, লোকবল, অর্থবল বা ব্যাপ্তি, যাই বলুন না কেন-এ হচ্ছে পৃথিবীর বৃহত্তম উৎসব


এটা জনগণের না জনগণকে টুপি পড়ানোর সার্কাস-তা আপাতত উহ্য থাক-তার আগে এই নির্বাচনের কিছু জানা অজানা তথ্য পেশ করি
  • ৭২ কোটি ভোটার-৮ লক্ষ ২৫ হাজার বুথ মোট 1,368,430 টী ভোট মেশিন ব্যাবহার করতে হয়েছে
  • মোট সরকারি খরচ ২০০ মিলিয়ান ডলারের ওপরে পার্থীরা বেসরকারি মতে খরচ করেছেন প্রায় চার বিলিয়ান ডলারের কাছাকাছি যা আমেরিকান নির্বাচনের থেকেও বেশী নির্বাচন বাবদ ওবামা খরচ করেছিলেন প্রায় দুবিলিয়ান ডলার-হিলারী দেড় বিলিয়ান
  • নিরাপত্তা বাহিনী একসাথে অত বুথে দেওয়া যাবে না বলে চারটি পর্বে ভোট হয়েছে, রেজাল্ট বেড়বে সামনের শণিবার, ১৬ই মে এত নিরাপত্তা সত্ত্বেও মাওবাদিরা দাপিয়ে বেড়িয়েছে মোট ৪০জন ভোট কর্র্মী মাওবাদি গেরিলাদের হাতে নিহত হয়েছেন মাওবাদি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে অত্যন্ত সফল ভাবে ভোট বয়কট হয়েছে
  • দুর্গম গীঢ় অরণ্যে শুধু একজন ( তাও তিনি সন্নাসী) ভোটারের জন্যেও পোলিং বুথ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন
  • সচিত্র ভোটার পরিচয় পত্র-এবার সম্পূর্ণ বাধ্যতামূলক ছিল, ভারতের সব জায়গায়
  • নাগাল্যান্ড এবং লাক্ষাদ্বীপে প্রায় ৯০% ভোটার তাদের অধিকার প্রয়োগ করেছেন। এটাই সর্বাধিক ভোট গ্রহনের হার। অন্যদিকে কাষ্মীরে ভোট পরেছে সব থেকে কম প্রথম দফায় ৪৬% ভোট পড়লেও, পরের দুই দফায় তা ২৬% এসে দাঁড়ায় জঙ্গীদের হুমকিতে
  • যারা পার্থী দাঁড়িয়েছেন, তাদের প্রায় সবাই কোটিপতি কংগ্রেস পার্থীদের গড় সম্পত্তি -সাড়ে ছকোটি টাকা, বিজেপির পার্থীদের ৫ কোটি টাকা, অন্যান্য রাজ্য বা জাতিভিত্তিক দলগুলির পার্থীদের গড় ও পাঁচ কোটী টাকার ওপরে অর্তাৎ পার্থীদের প্রায় সবাই ডলার মিলিয়নার ভারতীয়দের গড় উপায় এখনো আমেরিকানদের ৩%-কিন্ত তাতে কি? ভারতের জনপ্রতিনিধিরা আমেরিকান কংগ্রেসম্যানদের কাছাকাছি চলে এসেছেন আমেরিকান কংগ্রেসম্যানদের গড় তিন মিলিয়ান ডলারের কাছাকাছি এর মধ্যে পশ্চিম বঙ্গের পার্থীরাই বোধ হয় সব থেকে গরীব সিপিএম পার্থীদের গড় সম্পত্তি ৭৫ লাখটাকা ( ১৫০ হাজার ডলার) আর তৃণমূল পার্থীদের গড় সম্পতি ১কোটী ৩০ লাখ টাকা অহ!
  • ব্যাবসায়ীদের সুবিধা পাইয়ে দিয়ে কোটি কোটি টাকা রোজগার করার জন্যে গরীবদের দুঃখে দুবাটি কান্না এবং প্রতিশ্রুতি-সংক্ষেপে এটাই ভারতের গণতন্ত্র। যেমন ধরুন কংগ্রেসের পার্থী হতে গেলে ছকোটি টাকার সম্পত্তি যেমন লাগে-ঠিক তেমনই কংগ্রেসের ইস্তাহার গরীবদের জন্যে প্রতিশ্রুতিতে ভর্ত্তি। মাসে তারা ২৫ কেজি চাল দরিদ্রসীমার নীচের ফ্যামিলিগুলিকে ৭৫ টাকায় ( তিনটাকা কিলো চাল) দেবে বলে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ। দরিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী লোকেদের নূন্যতম ১০০ দিন কাজ দেবে ১০০ টাকা রোজে-নেগ্রা এই প্রজেক্ট এবারও চালু ছিল। তবে গরীবেরা কাজ পেয়েছে ২০ থেকে ৪০ দিন। কারন দেখা গেছে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যার হাতে কাজ দেওয়ার ক্ষমতা-সেই ব্যাক্তিটিই চাই না গ্রামের দরিদ্র লেবাররা ১০০ দিন কাজ পাক। ১০০ দিন কাজ পেলে তাদের ক্ষেতে কাজ করবে কে? আর ১০০ টাকা মজুরী তারা দেয় না-দেয় হয়ত ৫০টাকা। ফলে গ্রামে যে শ্রেনীটির হাতে ক্ষমতা-তারাই রুখে দিচ্ছে দরিদ্রযোজনার প্রজেক্টগুলি। যাইহোক, যেখানে লোকের দরকার শিক্ষা এবং চাকরী-সেখানে এইসব যোজনা ঘোষনা করে যদি ভোটে জিতে কোটিপতি হওয়া যায় খারাপ কি? চলুক যদ্দিন চলে চলুক।

ইস্যুঃ না সেরকম কোন ইস্যু ভিত্তিক হাওয়া এবার একদমই ছিল না। অর্থনীতির দিক দিয়ে কংগ্রেস যথেষ্ট ভাল দেশ চালিয়েছে গত পাঁচ বছর-কিন্ত তারা সন্ত্রাসবাদ থেকে জনগণকে নিরাপত্তা দিতে সম্পুর্ন ব্যার্থ ফলে বিজেপি কিছুটা মাটি পেয়েছে এবং নানান এক্সিট পোলে দেখা যাচ্ছে কংগ্রেস খুব বেশি হলে বিজেপির থেকে ৫ থেকে ১০টি আসন বেশী পাবে ফলে সরকারে চাবিকাঠি ছোট দলগুলির হাতে এদের মধ্যে বামফ্রন্ট ই তৃতীয় বৃহত্তম ছিল আগের বার-ফলে বামসুপ্রীমো প্রকাশ কারাত তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ে উদ্যোগী হন কিন্তু তা অচিরেই চতুর্থ শ্রেনীর সার্কাসে দাঁড়ায়-কারন, প্রতিটা দলই মসনদে ক্ষমতা চাই ন্যায় নীতি-বা তারা কোনদলের সাথে যাবে, সেটা কেওই জানে না জানে শুধু যাদের টাকা আছে ঠিক এই কারনে, সংখ্যালঘু ভোট এখনো কংগ্রেসে আসে কারন বাকি আর কোন পার্টি কি করবে-তাতে বিজেপির সুবিধা হবে কিনা-কেওই হলফ করে বলতে পারে না যেমন চন্দ্রবাবু নাইডু মুসলিম ভোট পেতে প্রথমে বামেদের সাথে জোট বাঁধলেন। তৃতীয় ফ্রন্টের সার্কাস দেখানো হল সেখানকার মুসলিমদের। এর পর চন্দ্রবাবু দেখলেন তৃতীয় ফ্রন্টে ক্ষীর জমছে না এখন বিজেপির দিকে পা বাড়িয়েছেন তেমনই মুসলিম ভোট পেতে মায়াবতী বরুন গান্ধীকে জেলে ভরেছেন কিন্ত ভোটের পর, শাঁসের আস্বাস পেলে, তিনিই বিজেপির সাথে চলে যেতে পারেন যেমন আগে দুবার গেছেন ফলে মুসলিমরাও যে তাকে এই ব্যাপারে বিশ্বাস করছে তা নয়-তাই মুসলিম ভোটের জোরে উত্তর প্রদেশে এবার কিছুটা মাটি খুঁজে পেয়েছে কংগ্রেস

অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি দিল্লীর মসনদ দখল করতে হলে এই চারটি রাজ্যে ভাল ফল না করলে তা সম্ভব না-উত্তর প্রদেশ (৮০), মহারাষ্ট্র (৪৮), পশ্চিম বঙ্গ (৪২) এবং অন্ধ্রপ্রদেশ(৪২) অর্থে এবার কারুরই কোন রাজ্যে কোন এডভ্যান্টেজ নেই-শুধু পশ্চিম বঙ্গে কংগ্রেস এবং জোট সঙ্গী তৃণমুল এবার প্রায় অর্ধেক সিট নিলেও নিতে পারে যদিও বঙ্গবাসী সিপিএম বা তৃণমুল-কাওকে নিয়েই সন্তুষ্ট না

ট্রেন্ডঃ

  • ভোটের পরে কি হবে বলা মুশকিল, তবে ধর্মের নামে রাজনীতি প্রায় মৃত আদবানীজির টিমের দুজন বিশিষ্ট ব্যাক্তির সাথে দিল্লীতে দেখা হয়েছিল হিন্দুত্বের টানে ভোট এখন আর ভাল আসছে না তবে বিজেপি নিজেও বুঝতে পারছে কালের চাকার বিপরীতেই তাদের ঠেলছে আর এস এস তারাও আই টী এবং মূলত ডেভেলেপমন্টের দিকেই জোর দিচ্ছেন-কিন্তু আর এস এসের চাপের কারনে, বিজেপি ঠিক তাদের সাম্প্রদায়িক ইমেজটা কাটাতে পারছে না। তবে এবার গোহারা হারলে, আদবানী হয়ত দলকে বোঝাতে পারবেন, হিন্দুত্ব ছেরে কম্পুটার নিয়ে না নামলে, দলের ভবিষ্যত কিছু নেই। আসলে বিজেপির সাপোর্টাররা যতই হিন্দুত্ব হিন্দুত্ব করে চেঁচাক না কেন-বিজেপির নেতাদের কিন্তু আমি দেখেছি পাক্কা ব্যাবসায়ী। একদম কংগ্রেসের মতন তারাও শুধু টাকা চেনে। আর টাকা বানাতে গেলে, যেন তেন প্রকারে দিল্লি দখল করতে হবে এটা বোঝে। ফলে কংগ্রেস যদি ডেভেলেপমেন্ট পলিটিক্স করে বেড়িয়ে যায়-তারাও হিন্দুত্বের আঁটি ধরে বসে থাকবে না।
  • কংগ্রেস জাতীয়তাবাদের চাবিটা বিজেপির কাছ থেকে নেওয়ার চেষ্টা করছে কারন, তাদের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক অত্যন্ত সলিড এখন সংখ্যালঘুরাও দেখছেন একমাত্র কংগ্রেসই নিরাপদ-বাকি ছোট ছোট পার্টিগুলি হয় বিজেপির সাথে সরাসরি বা পরোক্ষ ভাবে ( যেমন সিপিএম) বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে পারে
  • আঞ্চলিক দলগুলির প্রভাব এই নির্বাচনে আবার বাড়ল কেন্দ্রীয় বা জাতীয় দলগুলি যেমন কংগ্রেস বা বিজেপি বা সিপিএম সবাই আঞ্চলিক দলগুলির হাতে ক্ষমতা হারাচ্ছে দ্রুত পশ্চিম বঙ্গে যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে সম্পূর্ন বিলিয়ে গেছে 'জাতীয় কংগ্রেস' বিহারে নিতীশ প্রায় কোনঠাশা করেছেন তার নির্বাচনী সঙ্গী বিজেপিকে উড়িশ্যাতে বিজুত বিজেপিকে গলাধাক্কা দিয়ে বাড় করেদিলেন উড়ীয়্যা জাতিয়তাবাদের হাওয়ায় আসলে এইসব জাতীয় দলগুলি রাজ্যের ভালমন্দ একদমই ভাবে না সব জাতীয় দলের নেতারা দিল্লীতে বসে দুহাতে টাকা লোটে ফলে এমন পরিণতি আসতই এটা ভারতীয় গণতন্ত্রের খুব ভাল দিক যে দিল্লী দুর্বল হচ্ছে-এবং রাজ্যগুলির রাজনৈতিক শক্তি বাড়ছে
  • জাতপাতের রাজনীতি করে- নীচু জাতের লোকেদের টুপি পড়িয়ে, টাকা লোটার জন্যে উত্তর ভারতে একগাদা জাতিভিত্তিক দল আছে-যেমন মুলায়েমের সমাজবাদি পার্টি, মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদি পার্টি এরা কংগ্রেসের হরিজন ভোট ব্যাঙ্ক ছিনিয়ে নিয়ে, উত্তর প্রদেশ, বিহারে ক্ষমতা দখল করে, রাজ্যগুলির দফারফা সেরেছে কিন্তু সেই মুখোশও খুলে আসছে এদের সমীকরন ছিল নীচু জাতের ভোট+মুসলীম ভোট একত্রিত করে কংগ্রেসকে হঠানো কিন্ত সেটা করতে গিয়ে, বিজেপিকে প্রবল ভাবে সুবিধা করে দেওয়া হয়েছে- সংখ্যালঘুরা তা আস্তে আস্তে বুঝতে পারছে।ফলে এবার কংগ্রেস বহুদিনবাদে উত্তরপ্রদেশে আবার হারানো জমি পুনররুদ্ধার করার আশা রাখে

ভারতীয় জনগণ কি ভাবছে-তা আর দুদিন বাদেই জানা যাবে তারপরে ট্রেন্ড ব্যাপারটা আরো পরিস্কার হবে

Saturday, May 9, 2009

সইফুদ্দিনকে বসানোর জন্যে বুদ্ধদেবের চাল

সইফুদ্দিন চৌধুরী যাতে যাদবপুরে সিপিএম বিক্ষুব্ধ ভোট না পান তার জন্যে ঠিক স্ট্রাটেজিক মুহুর্তে একটি মারাত্মক চাল চাললেন বুদ্ধদেব বাবু ঘোষনা করেদিলেন সইফুদ্দিন চৌধুরীকে তিনি নাকি ব্যাক্তিগত ভাবে ফেরানোর চেষ্টা করেছেন বা করছেন যাতে ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায় কারন এটা সবাই জানে বিক্ষুব্ধ সিপিএমের এক বিরাট অংশের ভোট সইফুদ্দিনের কাছে যাবে বামপন্থি অনেকের কাছেই তৃণমুল এখনো অচ্ছুৎ-এবং তারা সিপিএমের দ্বিচারিতা ও দাম্ভিকতায় ক্রদ্ধও বটে তাদের কাছে সইফুদ্দিন অনেক বেশী গ্রহণযোগ্য এর পরে ভাঙরে তৃণমূল বিধায়কের জমির দালালির জন্যে তৃণমূলের অনেকেই সেখানে সম্প্রতি পিডিএসে যোগ দিয়েছেন তাদের মধ্যেও যাতে বিভ্রান্তু ছড়ায়, তার জন্যে মমতা ঘোষনা করেই দিয়েছেন-ভোটের পর নাকি সইফুদ্দিন সিপিএমে যোগ দেবেন! এবং তাকে সিপিএম দাঁড় করিয়েছে মুসলিম ভোট কাটতে আমার যদ্দুর ধারনা, এই যাদবপুর কেন্দ্রের ব্যাবসায়ী, বুদ্ধিজীবি এবং শিক্ষিত মানুষের একটা বড় অংশ পিডিএসে পাশে দাঁড়াতে, প্রমান গণেছেন বিরোধি রাজনীতির মালকিন এটাত কারোরই অজানা নয়, পশ্চিম বঙ্গের সংখ্যা গরিষ্ঠ লোকই তৃণমূল এবং সিপিএমের হিংসা ও ক্ষমতা দখলের কুনাট্যে ভীষন ক্রুদ্ধ এই শুন্যস্থান কংগ্রেস অবশ্যই পূরণ করতে পারত কিন্ত তারাও দিল্লীতে ক্ষমতা দখল ছাড়া কিছু বোঝে না-ফলে মমতার কাছে মাথা নত করে নিজের ভবিষ্যতে কুড়ুল মারল


তাহলে রাজ্যের একটি বিরাট অংশের লোক-যার বিলক্ষন বুঝতে পারছে তৃণমূলকে এনে সিপিএমের তৈরী দমবন্ধ করা অগণতান্ত্রিক পরিবেশত উদ্ধার হবেই না-বরং আরো বাজে দিকে এগোবে-তারা কোথায় যাবে? দুদিন আগেই তৃণমূলের হামলা করে বিজেপির মিছিলে এবং সেই ফটো তুলতে গিয়ে আমার বন্ধু ফটোগ্রাফার জয়মন্ডলকে তৃণমুলের সমর্থকটা পেটায় এবং প্রায় ১৪ লাখ টাকা মূল্যের তার দুটি ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়

(জয় মন্ডলের মুখেই শুনুন)
http://www.vinnobasar.org/read.aspx?linkid=984

ঠিক একদিন আগে তৃণমুল ভাঙরে পিডিএসের মিছিলে হামলা করে
(প্রত্যক্ষ দর্শীর মুখে ঘটনাটি শুনুন)
http://www.vinnobasar.org/read.aspx?linkid=977

গোটা রাজ্যে সিপিএম যেভাবে বুথ ক্যাপচার করে, তার পালটা দিল তৃণমূল নন্দীগ্রামে এতে অন্ধ সিপিএম বিরোধিরা উল্লাসিত হতে পারেন, আমি তাদের একজন হতে পারলাম না বলে দুঃখিত সিপিএমের ফ্যাসিজমের জবাবে তৃণমূলের ফ্যাসিজম কখনোই পশ্চিম বঙ্গের ভবিষ্যত হতে পারে না জনগণ আস্তে আস্তে হলেও এটা বুঝছেন কিন্ত তাদের সামনে উপায় কি?

সেই উপায়টা পিডিএস এবার দাঁড় করাচ্ছিল কংগ্রেস নিজেদের কবর নিজে খোঁড়ায়, পিডিএসের সামনে, এই সুযোগ অনেকটাই কংগ্রেসের ভুলের ফলে চলে আসে কিন্ত প্রশ্ন যেটা বরাবরই থাকে-তাহলে এদের বাদ দিয়ে কে? সেই তৃতীয় শক্তিটাই পিডিএস দাঁড় করাচ্ছিল-যেহেতু কংগ্রেস সরে গেছে এবং পিডিএস সিপিএম ও কংগ্রেস উভয়ের কাছেই গ্রহণযোগ্য একটি রাজনৈতিক শক্তি যা অনেক উন্নততর আদর্শ এবং এজেন্ডার ওপর দাঁড়িয়ে ( পিডিএস এজেন্ডাঃ http://www.pdsindia.org/)

ফলে মমতা প্রমান গণেছেন এবং উলটো পালটা বকছেন কিছু অতিবাম এবং অন্ধ তৃণমূল সমর্থকের কাছে মমতা দেবী হতে পারেন-কিন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ পশ্চিম বংগের মানুষের কাছে উনি নাথিং কারন তারা একটু ভালো ভাবে বাঁচতে চাই হ্যাঁ তারা পরিবর্ত্তন ও চাই-এবং সেই জন্যেই তৃণমুলকে ভোট দিচ্ছে কিন্তু যারা ক্ষমতাই আসার আগেই সিপিএমের মতন ব্যাবহার করা শুরু করেছে, তাদের সম্মন্ধে মোহভঙ্গ হবে খুবই দ্রুত

ফলে ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে এই-মমতা থাকলে সিপিএম নিরাপদ কারন আমি এখনো মনে করি না বিরোধি নেতৃত্বের যোগ্যতা তার বিন্দুমাত্র আছে সুতরাং মমতা এবং সিপিএম-এই দুজনের জন্যেই কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল পিডিএস ফলে জনগণের মনে একটা বিভ্রান্তি ছড়ানো হল, সইফুদ্দিন ভোটের পরে সিপিএমে যোগ দেবে পিডিএসের ওয়েব সাইটে কম্যুনিজম এবং তার ভয়াবহতার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে এবং ধণতন্ত্রকে সমাজতন্ত্রের মধ্যেই আদর্শগত ভাবেই ধারন করা হয়েছে প্রযুক্তি ভিত্তিক সমাধানকে রাজনৈতিক সমাধানের চেয়ে বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে-যা একমাত্র উন্নত দেশের রাজনৈতিক দলগুলিই এযাবৎ কাল করে এসেছে আদর্শ এবং যে কর্মপন্থা নিয়ে পিডিএস তৈরী হয়েছে তা সিপিএম এবং তৃণমূলের চেয়ে শতযোজন এগিয়ে জনগণ যত দ্রুত এটা জানবে-তত সিপিএমে এবং তৃণমূলের মোহ তাদের কেটে যাবে

আর সেটা বুদ্ধবাবু বা মমতাদেবী চাইবেন কেন? তাই পিডিএসকে অঙ্গুরে বিনাশ করার জন্যে নোংরা খেলায় মেতেছে সিপিএম এবং তৃণমূল তবে এর জবাব দেবে ভাবীকালের ইতিহাস




কারন সিপিএম এবং তৃণমূলকে পছন্দ করে না-এই পোলারিটিই পশ্চিম বঙ্গে সংখ্যা গরিষ্ঠ যা অতীব হাস্যকর কারন পিডিএস এবং সিপিএমের আদর্শ সাংঘাতিক ভাবেই আলাদা


Thursday, May 7, 2009

পাবলিক সেক্টরগুলিকে কিভাবে বসিয়ে দেওয়া হয়

জনসাধারনের ধারনা, পাব্লিক সিস্টেম মানেই বাজে। সরকারী স্কুলের শিক্ষকরা দ্বায়িত্বশীল না-সরকারী বাসের টাইম থাকে না! এয়ার ইন্ডিয়াতে দিল্লী থেকে কোলকাতায় আসতে মশা ভর্ত্তি প্লেনে আসতে হয় ( গল্প না সত্যি-আমি নিজেই ভুক্তভোগী। এয়ার ইন্ডিয়ার প্লেনে সিট নাম্বার পর্যন্ত নাও থাকতে পারে!) । সরকারী ব্যাঙ্কের কর্মীরা পেঙ্গুইনতুল্য। ইত্যাদি ইত্যাদি। লিস্টটা লম্বা। এবং সর্বজ্ঞাত।

কিন্তু প্রশ্ন এখানেই। দোষটা কার?
অনেকেরই ধারনা সরকারি কর্মীরা কাজ করতে অপরাগ। রাইটার্সে যারা দুদিন ঘুরেছে, তারা বিলক্ষন অবগত-সরকারী কর্মীদের দ্বায়িত্ববোধ বস্তুটা কি। কিন্তু সেটাই কি আসল চেহারা?

আসল রোগ অনেক গভীরে। ভারতীয় রেল দেখুন লাল্লুর কৃপায় কি দ্রুত লাভ করে বসল। এবং আগের থেকে অনেক ভাল পরিশেবা দিয়ে। অন্যদিকে দেখুন ইন্ডিয়ান এয়ার লাইন্স কিভাবে অত্যাধিক লসে ডুবে যাচ্ছে। এটা মন্ত্রীমহোদয় প্রফুল্ল পটেলের দোষ না কর্মীদের?

যারা জানেন না, তাদের জন্যে এবার কিছু ইন্টারেস্টিং তথ্য সামনে আনি। ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের সব থেকে লাভজনক রুট ছিল কোলকাতা-হায়দ্রাবাদ, হায়দ্রাবাদ-দিল্লী, বিশাখাপত্তনম-দিল্লী। বিজয় মাল্লার কিংফিশার এয়ারলাইন্স, এই রুট গুলোই সবার আগে পেল। শুধু কি তাই- প্রাইম টাইম সকাল ছটা-আটটার স্লট-যা ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স ব্যাবহার করত-সেটাও গিললো মাল্লার কিং-ফিশার এয়ার লাইন্স। যারা এখনো ইন্ডীয়ান ওয়েলকে ৩০০০ টাকা বকেয়া মেটায় নি। ফলে গোল্লায় গেল ইন্ডিয়ান এয়ার লাইন্স-কারন তাদের ফ্লাইট এখন ছাড়ে সকাল দশটায়-যে সময়ে যাওয়া মানে একটি কর্ম দিবস নষ্ট। তাদের টাইম স্লটে এখন চলে কিং ফিশার!

কি করে এসব হয়? বিমান মন্ত্রী প্রফুল্ল পটেল, মাল্লার জেটেই চলাফেরা করেন আজকাল। কারন প্রবাদ -মাল্লার জেটে সুরা এবং নারী-একই সাথে পাওয়া যায়। ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের কর্মীদের কাছেই শুনেছি -কিভাবে পটেল তাদের ওপর জোর করে যাত্রীতথ্য বার করেছে এবং লাভজনক রুট ও সময়কে তাপ্পি দেওয়া ডাটা দিয়ে, সময় বদলেছে যাতে কিংফিসারের সুবিধা হয়। বিনিময়ে কতকোটি টাকা পটেল সাব লুটেছেন-বলার দরকার নেই। কিন্ত প্রশ্ন তোলার আছে-আমাদের সৎ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন কি কিছু এসব জানেন না? এয়ার ইন্ডিয়া বা ইন্ডিয়ান এয়ার লাইন্সের প্রতিটা কর্মীরা যা জানে? সেই একই প্রশ্ন আদবানীকেও করা যায়-ওরাও জানতেন না প্রমোদ মহাজন দুহাতে টাকা লোটে আর পোষাকের চেয়েও দ্রুত নারী সঙ্গী বদলায়? সিপিএমের দিকেও দেখুন-বিমান বাবু কি জানেন না লক্ষন শেঠের বৈভবের কথা? কিন্তু এইসব মহান নেতাদের প্রফুল্ল পটেল বা প্রমোদ মহাজন বা একটা লক্ষন শেঠ গিলতে হয়। নইলে ভোটের বাজারে টাকা দেবে কে?

কলকাতা এয়ারপোর্ট এখনো সরকারি এয়ারপোর্ট অথোরিটি অব ইন্ডিয়ার (এ এ আই) এর হাতে আছে। এটাকে এখনো প্রফুল্ল পটেল গিলতে পারেন নি। কিন্তু ইন্টারন্যাশাল টার্মিনালের কি দুরাবস্থা। যাত্রীদের বসার জায়গায় এয়ার কন্ডিশন কাজ করে না। বাথরুমের অবস্থা আরো খারাপ। ফলে প্রায় সমস্ত ইন্টারন্যাশানাল এয়ারলাইন্স কলকাতা থেকে পালিয়েছে। দোষটা কার? কর্মীরা কাজ করে নি?
নাহ, আমি অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলাম। এখানেও সর্ষের মধ্যে ভুত। ইচ্ছা করেই ঠিক করা হচ্ছে না। যাতে অভিযোগের পাহাড় জমে ওঠে কলকাতা এয়ারপোর্টের বিরুদ্ধে এবং প্রফুল মালটি মোটা টাকার বিনিময়ে এটাকেও প্রাইভেট বানাতে পারেন।

প্রতিটা এয়ারপোর্টেই কর্মীরা নিজেদের কাজ খুব ভালো ভাবেই করেন। কিন্তু যখন শর্ষের মধ্য ভুত-তখন পতন ঠেকাবে কে? ঠিক একই কারনে কোলকাতার সরকারি মাধ্যমিক স্কুলগুলো লাটে উঠছে। এগুলো লাটে না উঠেল সিপিএমের কনট্রাক্টরদের চালিত প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক কনভেন্ট স্কুলগুলোতে কে পড়বে?

এগুলো সবই গণতান্ত্রিক কাঠামোর দুর্বলতা। এবং নির্বাচন সংস্কার ছাড়া, মোটেও ঠিক করা অসম্ভব। সরকারী সংস্থাগুলোকে লস খাইয়ে বেসরকারী সংস্থাগুলোকে সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে বাম-ডান সবাই সিদ্ধ হস্ত-সেটা আমরা পশ্চিম বঙ্গের অভিজ্ঞতা থেকেই বিলক্ষন বুঝেছি। আলখাল্লাটা বাম বা ডান, যাই পড়ুক না কেন-লোকটাত আসলেই বাঙালী বা ভারতীয়! বাম বা ডানদিকে মোড় নিলেই ত আর জৈবিক মানুষটার মৃত্যু হয় না!

সুতরাং গণতন্ত্রের পথে সমাজতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে এগোতে হলে নির্বাচনী পক্রিয়াটির সংস্কার দরকার আগে। এবং সাথে সাথে প্রতিটা নাগরিকের মধ্যে সমাজ এবং জাতির জন্যে দ্বায়িত্বশীল হয়ে কাজ করার প্রবণতাও আনতে হবে। শুধু মাইনে পাই- তাই কাজ করি আর ক্রিকেট দেখি-বাকী বিশ্ব ব্ল্যাকহোলে বা ম্যানহোলে যাক -কিছু যায় আসে না-এই গয়ং গচ্ছ অসামাজিক, ব্যাক্তিকেন্দ্রিক চিন্তা থেকে আমাদের মুক্ত হতেই হবে। সামাজিক দ্বায়িত্ববোধ থেকেই প্রকৃত সমাজতন্ত্রের জন্ম হয়। এর সাথে সাথে অবশ্য ব্যাপক হারে উদবৃত্ত্ব উৎপাদনও সমাজতান্ত্রিক কাঠামোর সাফল্যের পূর্ব শর্ত-তবে সেটা প্রযুক্তির পথেই দ্রুত এগিয়ে আসছে।

Tuesday, May 5, 2009

ফটোগ্রাফার জয় মন্ডলের ওপর তৃণমূলের আক্রমন


বিশ্ববিখাত বাঙালী ফটোগ্রাফার ( নিউ ইয়ার্ক টাইমস এবং রেডিফে ফ্রিল্যান্স করতেন) তৃনমূলের গুন্ডাদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন আজ আপাতত পাওয়া খবরে
জয় মন্ডল এখন কোলকাতার নার্সিং হোমে। তৃনমূলের গুন্ডারা তাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছে। ক্যামেরা ভেঙে দিয়েছে। তার অপরাধ, তৃণমূল যখন তমলুকে
বিজেপির মিছিলের ওপর হামলা করে-জ়য় মন্ডল তার ফটো তুলছিলেন।

আমি ব্যাক্তিগত ভাবে জয় মন্ডলের বিশেষ পরিচিত। দিল্লীতে একই গেস্ট হাউসের একই রুমে সাত দিন কাটিয়েছি-এবং উনি ওয়াশিংটনে আসলে প্রায় দেখা সাক্ষাত হয়। জয়দা কোন পার্টির লোক না। বাঙালী রাজনীতিবিদরা- এমন কি মমতা ব্যানার্জিও তাকে যথেষ্ঠই ভালোবাসেন।

কিন্তু এই ধরনের ঘটনা কি প্রমান করল? তৃণমূলকে ক্ষমতায় ফেরালে এরা সিপিএমের থেকে কম গুন্ডাবাজি করবে? এরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে? যারা সিপিএমের কায়দায় সাংবাদিক ফটোগ্রাফার পেটায় তারা সিপিএমের হাতে হৃত বাংলার গণতন্ত্রকে পুনউদ্ধার করবে? সিপিএমের জমানায় যদি একটি নন্দীগ্রাম হয়ে থাকে, তৃণমূলের সাপোর্টার দেখে একথা পরিস্কার, ওরা ক্ষমতায় আসলে ১০০ টা নন্দীগ্রাম হবে।

আমি আগেও বলেছি, এখনো দৃঢ় ভাবেই মনে করি, পশ্চিম বঙ্গে গণতন্ত্র এবং শিল্পের পরিবেশ ফেরাতে, সইফুদ্দিন চৌধুরীর হাত শক্ত করতে হবে। তৃণমূলকে বিরোধিতার ব্ল্যাঙ্ক চেক দেওয়া মানে, আরো গুন্ডাবাজি এবং হিংসাকে মদত দেওয়া।

জ়য় মন্ডলকে যারা পিটিয়েছে, আমি চাইব, মমতাদেবী তাদের দ্রুত বহিস্কার করে, নিজের অবস্থান পরিস্কার করুন। উনি যখন নিউ ইয়ার্কে ছিলেন, এই জয় মন্ডলই উনার বাজার করে দিত। জয় মন্ডল ব্যাক্তিত ভাবেও মমতাদির ভক্ত-যেমন পশ্চিম বঙ্গের অনেক মানুষ এখনো আগ পিছু না ভেবে মমতা ভজনা করে চলেছেন। জয় মন্ডল মার খেয়ে যা বুঝলেন, সেটার জন্যে পশ্চিম বঙ্গবাসি ভোট পর্যন্ত অপেক্ষা করলে তার ফল হবে ভয়াবহ।