Sunday, June 12, 2011

উচ্চশিক্ষা মানে প্রেসিডেন্সি-পশ্চিমবঙ্গ মানে কোলকাতা?


গত কুড়িদিন ধরে নতুন সরকার, অনেক কিছুই করার চেষ্টা করছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেমন পাহাড় বা জঙ্গল মহলের ক্ষেত্রে সমাধান এসেছে দ্রুত-কারন সমস্যার উৎপত্তির মূলেই ছিল সিপিএম। বা অসাধু অত্যাচারী সিপিএম নেতাদের প্রতি প্রান্তিক এবং ভাষা সংখ্যালঘুদের চূড়ান্ত অবিশ্বাস। এবং সেটা হয়েওছে সঙ্গত কারনে।

এর মধ্যেই কলকাতার জন্যে নেওয়া হচ্ছে একগুচ্ছের প্রকল্প। এর সবগুলোই ভীষন ভাবে দরকার ছিল-কারন কোলকাতার নাগরিক জীবনের মান ভারতের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেনীর শহরের মধ্যেও আসে না।

অন্যদিকে উচ্চশিক্ষা বলতে প্রেসিডেন্সির হৃতগৌরব কি করে ফেরানো যায়-তাই নিয়ে বঙ্গ সমাজের উচ্চপ্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের প্রচুর মতামত এবং মিডিয়া ফ্ল্যাশ চোখে পড়ল। গত ২০ দিনে উচ্চশিক্ষা মানেই প্রেসিডেন্সি বা প্রেসিডেন্সি মানেই উচ্চশিক্ষা-এমনটাই মনে হয়েছে!

কিন্ত পশ্চিম বঙ্গ মানেই কোলকাতা না বা প্রসিডেন্সি মানেই উচ্চশিক্ষা না।

বাকি জেলাশহর, মফঃশহর এবং গ্রামের কোন সমস্যা নেই? কোলকাতায় জলের স্তর যাতে না নামে তার জন্যে অর্ডিনান্স তৈরী হল-অথচ গ্রামে গ্রামে যে ডিপটিউবয়েলের জন্যে জলস্তর নামছে-জলাশয় বুঁজিয়ে চাষাবাদ হচ্ছে-তার বিরুদ্ধে কোন উচ্চবাচ্য নেই! প্রতিটা মফঃশরে এমনকি জেলা শহরগুলিতে বাসস্টান্ড ও বাসপরিশেবার বেহাল অবস্থা। আপাতত সেই দিকে চিন্তা নেই কারুর। দিদি কোলকাতার হাঁসপাতালে গেলেন-বরাদ্দ এল। কিন্ত গ্রামের স্বাস্থ্যপরিশেবার হাল কি? সেখানেত ডাক্তারবাবুরা গরু তাড়াতে তাড়াতে প্রেস্ক্রিপশন লিখছেন এখনো!

আর উচ্চশিক্ষা বলতে প্রেসিডেন্সির হাল ফেরাতে যে সময় নষ্ট হচ্ছে আমার চোখে তা দৃষ্টিকটূ এবং ভুল পথ। রাজ্যের কলেজগুলো থেকে যে সব ছেলে মেয়েরা পাশ করে বেড়চ্ছে তাদের অধিকাংশ না লিখতে পারে একলাইন ইংরেজি, না দুলাইন বাংলা। এবার ভাইপো-ভাইজিদের মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকের জন্য পড়াতে গিয়ে দেখলাম অত্যন্ত নিম্নমানের নোট বই এর ছড়াছরি। পশ্চিম বঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা নালন্দার ধ্বংশাবশেষ। এর জন্যে সার্বিক ভাবে পঠন পাঠনের সংস্কার দরকার-ইংরেজীর মান উন্নয়নের জন্যে বৃটিশ কাউন্সিলের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে সব লেভেলে। কারন ইংরেজিতে দক্ষতা না থাকলে-এই গ্লোবাল অর্থনীতিতে বাংলার ছেলেরা আরো পিছিয়ে পড়বে। প্রেসিডেন্সি থেকে আরেকটা অমর্ত্য সেন বার করার থেকে, বাংলার ছেলেরা যাতে বিশ্বঅর্থনীতির সাথে যুক্ত হতে পারে সেই চেষ্টা করতে হবে দ্রুত। ব্রাত্যবসুকে আমার আপাতত একজন ক্লুলেস ভবঘুরে মন্ত্রীর মতই মনে হচ্ছে যিনি সংস্কৃতি দপ্তর না পেয়ে উচ্চশিক্ষার চেয়ারে বসে শুধু নিজের প্রাত্তন কলেজকেই দেখতে পাচ্ছেন।