Wednesday, May 24, 2023

উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট- এবার কোন স্ট্রিমে? কোন কলেজে? -জীবন ও জীবিকা -১৫

 উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট- এবার কোন স্ট্রিমে? কোন কলেজে? -জীবন ও জীবিকা -১৫

বিপ্লব পাল, ২৪শে মে
আমি জানি এই দুদিন অভিভাবকরা তৎপর ফর্ম ফিলাপ করতে। ফর্ম তুলতে। তারপর প্রশ্ন আসবে কোথায় কোন স্ট্রিমে কোন কলেজে পড়ব।
এই পর্বে নতুন কিছু লিখছি না। শুধু পর্ব ১-১৪ তে আপনাদের সেসব প্রশ্ন পেয়েছি- তার সামারী দিচ্ছি।
[ অধিকাংশ উত্তর আসলে জীবন ও জীবিকা পর্ব ১-১৪ এর মধ্যেই আছে। আমার ওয়ালে এক এক করে পড়ে নিলেই হল। কিন্ত অধিকাংশ অভিভাবকের পড়ার ধৈর্য্য নেই। ফলে আমার পক্ষেও সম্ভব না তাদের সাহায্য করা। আগামী পর্বগুলি পেতে প্রোফাইল ফলো করুন। শনিবার ভারতীয় সময় বিকেল ৫৩০ তে আমি ফেসবুক লাইভ এং গুগল মিটে থাকছি আপনাদের প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দিতে। এর ডিটেলস ও এর পরের পোষ্টেই দেওয়া আছে। প্রোফাইলে গিয়ে দেখে নিন।]
#১ পিউর সায়েন্সে কি ফিউচার ? পর্ব -৫ পড়ুন। যদিও আমি এর পরে ফিজিক্স, ম্যাথ, স্টাট, কেমিস্ট্রি, বায়োলজি, জিও সায়েন্সের কেরিয়ার নিয়ে প্রতিটা পর্বে আলাদা আলাদা করে আলোচনা করব। প্রোফাইল ফলো করতে থাকুন,।
# ২ কম্পুটার,সফটীওয়ার নিয়ে পড়েত ইচ্ছুক- পর্ব ২,৩,৪,৬
# ৩ কোন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হলে ভাল হয় ? -পর্ব ২,৩,৪,৬
আমার উত্তর -কোন কলেজের মানই ভাল না। কলেজে যা পড়ানো হয় তা দিয়ে কেরিয়ার তৈরী হবে না। গুগুলের স্টান্ডার্ড কোডিং টেস্ট বা জ্যাম পাশ করার ক্ষমতা এইসব কলেজের ১% ছাত্রছাত্রীদের ও নেই। এগুলি আমি দেখেছি এবং আমার কাছে রেজাল্টের ডেটাও আছে। কোম্পানীতে ইন্টার্নশিপই আসল। পর্ব ৬ তে এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
# ৪ ইংরেজি অনার্স, হিউম্যানিটির ছাত্রছাত্রীদের কি স্কোপ আছে ? পর্ব ১৪ পড়ুন।
#৫ কমার্সের ছাত্রছাত্রীদের স্কোপ কি? এটা নিয়ে এখনো লিখি নি। পরে এক পর্বে ডিটেলেস এ লিখব। কর্মাস থেকে ফিনটেক, একাউন্টিং, লিগ্যাল অনেক কিছুতেই যাওয়া যায়। ব্যবসা বাড়তেই থাকবে, ফলে এদের চাহিদাও বাড়বে। কিন্ত সমস্যা এই যে ছোট ছোট ব্যবসা আজকাল সাস সিস্টেমে হচ্ছে। শুধু বড় ব্যবসার ক্ষেত্রেই পেশাদার একাউন্টান্ট লাগে। আর ট্যাক্স ফাইল করতে লাগে। ইম্পোর্ট এক্সপোর্টে লাগে। অনেকেই এম বি এ তে যেতে পারে। তাতে অবশ্য লাভ নেই। ওর থেকে একাউন্টিং, বিজনেস, কোম্পানী ল এক্সপার্ট হওয়া ভাল পেশা।
কমার্স নিয়ে পড়ে কমার্সেই থাকতে হবে এমন মানে নেই। আইন নিয়ে পড়ে কোম্পানী আইনজ্ঞ, বা কর্পরেট লইয়ার হতে পারে। ইম্পোর্ট এক্সপোর্ট এক্সপার্ট হতে পারে। এইসব লাইনে ইনকাম বেশী , বিশুদ্ধ একাউন্টিং থেকে। কোডিং শিখে সফটোয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ও যেতে পারে। স্যাপ বা ওরাকল শিখে ই আর পি সিস্টেম এনালিস্ট বা এইসব একাউন্টিং প্যাকেজের এক্সপার্ট হতে পারে, যাতে ভাল চাকরি। অনেক ভাল ইনকাম।
শুধু এম বি এ টা এড়িয়ে যাওয়া ভাল। খুব ভাল জায়গায় থেকে না করলে, এম বি এ ডিগ্রিটা সব দেশেই স্ক্যাম।
#৬ মেডিক্যাল লাইন- ডাক্তার, নার্স, ডায়াগোনস্টিক টেকনিশিয়ান, হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট, ফার্মাসিস্ট ইত্যাদি ইত্যাদি- দেখুন ভারতের জিডিপি যত বাড়ছে-লোকের হাতে বাড়তি ইনকাম আসছে-তার অধিকাংশ চলে যাচ্ছে মেডিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে। ফলে এই লাইনে এখন ভারতে বুম। হাসপাতাল গুলো প্রচুর লাভ করে, তাই এদের চাকরি স্টেবল। অভিজ্ঞতা বাড়লে মাইনে ও ভাল। এন্ট্রি লেভেলে হয়ত মাইনে কম। এই নিয়ে পরের পর্বে ডিটেলসে লিখব। কিন্ত মেডিক্যাল লাইনের যেকোন জব স্টেবল এবং অভিজ্ঞতা বাড়লে মাইনেও বাড়বে। ইংরেজিতে অর্নাস করে প্রাইভেট স্কুলে ২০ হাজার টাকার মাইনের চাকরির থেকে, নার্সের চাকরি অনেক অনেক ভাল। অভিজ্ঞ সার্টিফায়েড নার্সদের ভাল মাইনে।
#৭ এই মন্তব্যও পেয়েছি " ছেলেকে কোন রকমে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়িয়েছি। আর পড়ানোর ক্ষমতা নেই। কি করলে ও দ্রুত মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকার চাকরি পেতে পারে? "
> অবশ্যই পারে। উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়েও ৩-৪ বছরের মধ্যে ৩০-৪০ হাজার মাইনের চাকরি পেতে পারে। একটু জিদ থাকা দরকার। উপায়টা খুব সোজা। কোলকাতায় [ বা যেকোন শহরেই প্রচুর] ছোট ছোট সফটোয়ার কোম্পানী আছে- এরা মোবাইল এপ, ওয়েব সাইট এইসব বানায়। এইসব ছোট কোম্পানীগুলি প্রচুর ইন্টার্ন নেয়। বেসিক পাইথন বা এইচটিএমল-যা আজকাল সবাই জানে-ওইটুকু শেখা থাকলেই হয়। কিন্ত এখানেই কাজ শেখার স্কোপ আছে। এইসব ছোট ছোট কোম্পানীগুলিতে ৬ মাস বা এক বছর ইন্টার্নশিপে কাজ করে, মোবাইল এপ ইত্যাদি বানানোর কাজ শিখে নিতে হবে। তারপর যে কোম্পানীতে যাবে, সেখানে কাজ জানে বলে হয়ত মাসে ১০-১৫ হাজার মাইনে দেবে। এই ভাবে এক কোম্পানী থেকে অন্য কোম্পানী বদলাতে থাকলে, কাজ শিখতে শিখতে ৪-৫ বছর বাদে ৩০-৪০ হাজার মাইনের চাকরিতে ঢুকতে পারবে। পাশাপাশি কোন একটা ডিগ্রি করে নিলেই হল।
পড়াশোনা আমি কখনোই ডিসকন্টিনিউ করতে বলব না। হাজার দারিদ্র থাকলেও। কাজের পাশাপাশি পড়াশোনা, এডাভান্সড ডিগ্রি চলুক। পড়াশোনা করে ওপরে উঠতে থাকতেই হবে। থামলে চলবে না। মানুষ পরিশ্রম করেই বড় হয়। তাই কলেজে পড়ার পাশাপাশি, ইন্টার্নশিপ-চাকরি করতে সবাইকে উৎসাহ দিচ্ছি। কারন সেক্ষেত্রে ৪ বছর বাদে - সে দেখবে, তার ডিগ্রিধারী বন্ধুরা বেকার। কিন্তু সে ভাল মাইনেতে চাকরি করছে। ইনফ্যাক্ট ১০ বছর বাদে সে হয়ত বছরে ১২ লাখ মাইনের প্যাকেজ পাবে, যেখানে তার ডিগ্রিধারী বন্ধুরা বছরে তিন লাখ পেতে হিমসিম খাবে। এই জন্য আমি সবাইকে পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম চাকরি করার উপদেশ দিই। প্রচুর অনলাইন জব এখন ডিজিটাল মার্কেটিং, মোবাইল এপ, ওয়েব ডিজাইন ইত্যাদিতে। ধনী দরিদ্র সবার এটাই করা উচিত। যারা ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ইঞ্জিনিয়ারিং এ আছে- তারাও তাদের মতন করে নানান কোম্পানীতে ইন্টার্নশিপ খুঁজুক।
চাকরির মার্কেটে হাতে কলমে কাজ শেখার বিকল্প নেই। সেটা এই কলেজে পড়তে পড়তেই করতে হবে।
আগামী পর্বগুলো পাওয়ার জন্য--প্রোফাইল ফলো করে যান।

No comments: