Sunday, August 29, 2010

গ্রাউন্ড জিরো মসজিদ বিতর্ক


ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের দুব্লক দূরে ( ১৮০ মিটার) প্রস্তাবিত মুসলিম কমিনিউটি সেন্টার-পোষাকি নাম পার্ক ৫১-এখন আমেরিকার মিডিয়া ডার্লিং। এই ১৩ তলা বিলডিংটির পরিকল্পনা এখন সব বিতর্কের শীর্ষে-কিছু কিছু গবেষক বলছেন এই বিতর্কই নাকি আমেরিকায় মুসলিমদের ভবিষ্যত নির্ধারন করবে! যদিও আমি নিশ্চিত নই আজ থেকে ১০০ বছর বাদে ধর্ম বলে কিছু থাকবে কি না-তবে এই নিয়ে বাতবিতন্ডার ফলে অনেক কিছুই মিডিয়াতে সামনে আসছে-যা আগে এত প্রকাশ্যে আসে নি। ৯/১১ এর পর থেকে মুসলিমদের প্রতি আমেরিকানদের রাগ ছাইচাপা আগুনের মতন ছিল। গ্রাউন্ড জিরো বিতর্ককে কেন্দ্র করে অগ্নুৎপাত ( মতান্তরে মিডিয়াপাত) হচ্ছে।

মসজিদ বিরোধিরা বলছেন এর ফলে সন্ত্রাসীরা উৎসাহী হবে। কারন ৯/১১ এর সন্ত্রাসীরা সবাই ধর্মীয় সন্ত্রাসী-যাদের জীবনের একমাত্র ধ্যানজ্ঞানছিল ইসলামের বিজয়।ওয়ার্লড ট্রেড সেন্টারের দু ব্লক দূরে যদি, ইসলামিক কমিনিউটি সেন্টার তৈরী করা যায়, তাদের মনস্বত্ত্বকেই চাঙ্গা করা হবে। এবং ৯/১১ এ যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের প্রতি এ এক ভয়ানক অবিচার।

মসজিদের পক্ষে যারা আছেন, তাদের বক্তব্য হচ্ছে-এটি প্রাইভেট সম্পতি। ব্যাক্তিগত সম্পত্তির ওপর ধর্ম পালনের স্বাধীনতা সবার আছে। আমেরিকাত আর সৌদি আরব বা ব্রুনেই না, যে সেখানে ইসলাম ছারা অন্য ধর্মপালনের অনুমতি নেই! বিভেদের মাঝে মিলন মহানই আমেরিকার সংবিধানের মূল সূর। ওবামাও আমেরিকার সংবিধানের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। ফলে আমেরিকাতে তার জনপ্রিয়তা পড়তির দিকে। কিন্ত প্রেসিডেন্ট হিসাবে তার বক্তব্য নির্ভুল-তিনিই আমেরিকান সংবিধানের প্রথম রক্ষক।

এর বিপক্ষে যে যুক্তি আসছে সেগুলি এই রকম-

প্রথমত আমেরিকাতে ব্যাক্তিস্বাধীনতা থাকলেও কমিনিউটি সেন্টার বা ঐ জাতীয় কিছু গড়তে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমতি লাগে। এই ক্ষেত্রে তাতে আটকায় নি। নিউ ইয়ার্কের মেয়র ব্লুমবার্গের অনুমতি ছিল। সমস্যা হচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠ আমেরকানদের তাতে সমর্থন নেই। কিন্ত সেইব্যাপারে ত কোন আইন নেই।

দ্বিতীয় একটা ব্যাপার এই কমিনিউটি সেন্টারের মালিকানা নিয়ে। বর্তমান মালিক ইমাম ফয়জাল আবদুল রাউফ বিতর্কিত ব্যাক্তিত্ব। তিনি একজন বিশিষ্ট মৌলবাদি। অন্যান্য আমেরিকান মুসলিম মৌলবাদিদের মতন তার পদ্ধতিও হচ্ছে ধর মাছ, না ছুঁই পানি। ইসলামিক সন্ত্রাসবাদিদের বিরুদ্ধেও সে কিছু বলবে না-আবার তাদের পক্ষ নিয়েও বলবে না আমেরিকায় থাকার জন্যে। এই ক্যাঙারু সার্কাসে অনেকেই পাকা খিলাড়ি-রাউফ তাদের মধ্যে উজ্জ্বল নক্ষত্র বিশেষ। সে একদিকে নিজেকে মডারেট বলে দাবি করে- অন্যদিকে বলে-" আসল অকৃত্রিম ইসলামের" কথা! অন্যান্য ধর্মগুরুদের মতন চুড়ান্ত স্ববিরোধিতায় ভর্তি এমন একজনের হাতে এই কমিনিউটি সেন্টারের দ্বায়িত্ব গেলে সেখানে কিসের চাষাবাদ হবে সেটা বলা মুশকিল।

তবে আমেরিকান মুসলিমদের মধ্যেও অনেকেই গ্রাউন্ড জিরোতে মসজিদ বানানোর বিরুদ্ধে। সুফী মুসলিমরা এমনিতেই মসজিদের গুরুত্বে বিশ্বাস করে না। তারা এর বিরুদ্ধেই কারন তাদের কাছে ইসলাম দ্বীনের ধর্ম-সেখানে এই ধরনের লোক দেখানো ইমারত বানানো ইসলামের মূল দর্শনের বিরুদ্ধে।

এই ব্যাপারে সব থেকে উল্লেখযোগ্য বক্তব্য রেখেছে এবারের মিস আমেরিকা রিমা ফাকিহা। রিমা প্রথম কোন আরব মুসলিম যে মিস আমেরিকা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। ওর বক্তব্য হল আইনত এবং সংবিধানে কোন সমস্যা না থাকলেও মুসলিমদের উচিত আমেরিকানদের সংবেদনশীলতাকে গুরুত্ব দিয়ে সেখানে মসজিদ বানানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসা।

রিমা আরো কিছু বক্তব্য রেখেছে, যা এখানে আলোচনার দাবি রাখে।যেমন কোন এক মোল্লা রিমাকে বিকিনি পড়ার কারনে বাজে মুসলিম বলে গালাগাল দিয়েছিল। রিমার উত্তর হলে এই এক বিংশ শতকে জন্ম সূত্রে আমাদের একটা ধর্মীয় পরিচয় আছে ঠিকই-কিন্ত আমরা কেওই অতীতের সেই ধর্মাচরন মানি না-বরং একটি ধর্মবিহীন সার্বজনীন আধ্যাত্মিক চেতনার দিকেই বর্তমান বিশ্বের ঝোঁক।

রিমা যেটা বলতে চেয়েছে-সেটা বিবর্তনের দৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ন। আমার ধারনা যেভাবে তথ্য বিস্ফোরন হচ্ছে তাতে ধর্মের গাঁটামো মানার লোক আর কয়েক দশকবাদে খুঁজে পাওয়া যাবে না-বরং আস্তে আস্তে ধর্ম বিহীন সার্বজনীন কিছু আস্তিক চিন্তা তখনো থেকে যাবে। তখন এই ধরনের মসজিদ, মন্দিরের প্রয়োজন আর থাকবে না। তাই এই বাজে বিতর্কের ও দরকার হবে না।

Friday, August 27, 2010

শোভা মান্ডিঃ মাওবাদিদের মুখ এবং মুখোশ

আমি মাওবাদিদের কারনের প্রতি সহানুভূতিশীল হলেও, তাদের পথের নিন্দা করেছি। ইতিহাসের শিক্ষা এটাই গণতন্ত্রের বিকল্প কাল ও ছিল না-আজ ও নেই। লেনিন বা মাও কেওই গণতন্ত্রকে হত্যা করে কোন সমাধান পৃথিবীকে দিয়ে যান নি-বরং ইতিহাসের অন্যতম নিষ্ঠুর অসভ্যতাগুলি কমিনিউস্টদেরই অবদান।


শোভামান্ডির আত্ম সমর্পন থেকে মাওবাদি নেতৃত্ব সম্মন্ধে যা জানা যাচ্ছে, তাতে অনেকে অবাক হলেও আমি হচ্ছি না। শোভামান্ডি বেশ কয়েকবার মাওবাদি পুরুষ নেতৃত্বের হাতে ধর্ষিত হওয়ার পরেও মাওদের শীর্ষ নেতৃত্ব তার অভিযোগ শোনে নি। শোনার কথাও না। কারন খাদ্য এবং যৌনতার দাবি সৈন্যদের না মেটাতে পারলে-পৃথিবীর ইতিহাসে কোন মিলিশিয়াই দাঁড়াত না। বলশেভিকদের লাল সৈন্যরা ১৯১৮ সালে রাশিয়ার গ্রামে গঞ্জে কৃষক মেয়েদের দেদার ধর্ষন করেছে। লেনিন কিঞ্চিত বিচলিত হয়ে এই ব্যাপারে ট্রটস্কিকে নোট পাঠালে, যে উত্তর আসে সেটা এই এরকম - সবই ত বুঝিত গুরু, কিন্ত লালবাহিনীর লোকেদের যদি এই ব্যাপারে একটু ছার দেওয়া না যায়-বিদ্রোহ হতে পারে। বুঝতেই পারছেন এরা আনেকদিন গৃহছারা (গৃহিনী)! কোন সন্দেহ নেই শোভামান্ডির বয়ান থেকে পরিস্কার ভাবেই বোঝা যাচ্ছে মাওদের শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাব ঠিক একই রকম!

আমার অনেক বন্ধুরাই মাওবাদির জন্যে নানান মিডিয়াতে গলা ফাটিয়েছে। কারন মাওরা সমাজের নীপিড়িত মানুষদের জন্যে নাকি লড়ছে। স্যার কার্ল পপারের দয়াতে একটা জিনিস আমার কাছে খুব পরিস্কার-পৃথিবীর বৃহত্তম গণহত্যাগুলি স্বর্গ স্থাপনের নামেই করা হয়েছে। তাই স্বর্গের ব্যাপারীদের আমি এমনিতেই ভয় পাই। ভারতে মেয়েরা এমনিতেই নিপীড়িত-অত্যাচারিত। প্রতি বছর এদেশে ৮০০০ নারী মারা যায় পণ প্রথার বলি হয়ে-আর কত মেয়েরা যে ঘরে অত্যাচারিত হয়-সেটা সংখ্যাতত্ত্বের আওতারও বাইরে। বেসিক্যালি সমাজ যায় হোক না কেন-ক্ষমতার শীর্ষে পুরুষ থাকা মানে মেয়েদের ওপর এই অত্যাচার চলতেই থাকবে। ধনতন্ত্রে টাকা দিয়ে নারীকে লুঠ করা হয়-আর কমিনিউজমে বন্দুকের নলের সামনে।

গণতন্ত্রের বিকল্প কালকেও ছিল না, আজও নেই। সেই পথ অনেক কঠিন। অনেক পরিশ্রম, অনেক অপেক্ষা করতে হবে। কিন্ত বন্দুকের নল কোন পথ না। হিংসা দিয়ে অতীতেও কোনদিন কোন সমস্যার সমাধান হয় নি-আজ় ও হবে না। স্টালিন ৩০ বছর ধরে অত্যাচারের যে স্টিমরোলার রাশিয়ান সমাজে চালিয়েছেন- তাতে কোন সমস্যাটার সমাধান হয়েছিল?

Monday, August 23, 2010

সিনেমা রিভিওঃ শুকনো লংকার জীবন


শুকনো লংকা মিঠুন চক্রবর্ত্তীর সদ্যমুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা সিনেমা। মিঠুনের বাংলা সিনেমা শুনলেই খুব সম্ভবত আমার অধিকাংশ পাঠক ঠোঁট উলটে হেঁসে পালাবে। এবার কোলকাতার নানান ফোরামে দেখছিলাম সিনেমাটা নিয়ে অনেকেই উচ্ছাসিত। ডেটাবাজারের সৌজন্যে এখন যেদিন কলকাতাতে সিনেমা রিলিজ হয়, সেই দিনই
ডিঙ্গোরা সাইটে বাংলা সিনেমাটি চলে আসে। আমেরিকা এবং কানাডা থেকে একদম হাই ডেফিনিশনে দারুন দেখা যায় সিনেমাটি। ফলে রবিবার দুপুরের ভাবলাম দেখেই নিই-সিনেমাটিকে নিয়ে সবাই যখন এত উচ্ছাসিত।

সত্যি বলতে কি এত ভাল বাংলা সিনেমা বহুদিন দেখি নি। গল্পটা "বাঙাল" চিনু নন্দীকে ( মিঠুন) নিয়ে। চিনু সিনেমাতে এক্সট্রা বা সাইডরোলের কাজ করে। সিনেমা শিল্পের রোজমজুরে। আগে কোল ইন্ডিয়াতে চাকরি করত-অভিনয়কে ভালোবেসে সে দশকের পর দশক শত অপমান এবং দারিদ্র্যের মধ্যেও টালিগঞ্জের মাটি কামরে পড়ে আছে। প্যাশনকে প্রফেশন করার সাহস সবার থাকে না। কিন্ত চিনুর ছিল-এবং অভিনয়ের প্রতি সেই অর্জুনের চোখ, তাকে ভুলিয়ে রেখেছিল দৈনন্দিন অপমানের রোজতালিকা। সেই চিনুই একদিন সুযোগ পাবে বিশ্ববন্দিত পরিচালক জয় সুন্দর সেনের ( সব্যসাচী চক্রবর্ত্তী) ছবিতে নায়কের ভূমিকায়! চিনুর পাশের পৃথিবীটা বদলে যায়।

গল্পটা সাধারন-কিন্ত চিনুর মেটামরফসিসের মধ্যে দিয়ে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক প্রশ্নই দর্শকদের ছুঁড়ে দিয়েছেন পরিচালক। সত্যিই নেশাকে পেশা করার সাহস এবং তার জন্যে যেচে দারিদ্রকে বরণ করার সাহস আমরা কজন রাখি? মৃত্যুকে স্বীকার না করে কি তাকে জয় করা যায়?

সব থেকে আকর্ষনীয় মিঠুনের স্ত্রীর ভূমিকায় অঙ্গনা বোসের অভিনয়-দুই বাঙালের দাম্পত্য কথোপকপোন এর আগেও অনেক নাটক এবং বাংলা সিনেমাতে দেখেছি-কিন্ত এই ক্ষেত্রে অঙ্গনাকে দশে দশ দিলাম। বরং জয় সুন্দর সেনের স্ত্রীর ভূমিকাতে দেবশ্রী অনেক ডুবিয়েছে। সব্যসাচী তার স্টিরিওটাইপ ভেঙে বেড়োতে পারেন নি-তবে এই সিনেমাতে সেটা করার দরকার ও ছিল না-তাই জয় সুন্দর সেনের চরিত্রায়নটা দারুণ মানিয়েছে। বিশেষ করে ওর ওই ডায়ালোগটা-To be global , you have to be intensely local" -দারুন। এই কথাটা আমি নিজেও সর্বত্র বলি। লালনের মতন যারা "ইনটেন্সলি লোকাল" তারাই একমাত্র সার্বজনীন।

মিঠুনের সিরিয়াস অভিনয় বড়াবরই ভাল। তবে অনেক ক্ষেত্রেই অঙ্গনার অভিনয় মিঠুনকেও ঢেকে দিয়েছে। এমা গারেট ব্রাউনকেও বেশ ভাল লাগল।

যাইহোক ভাল বাংলা সিনেমা তৈরী হচ্ছে দেখে দারুন লাগছে। এই মাসেই আরেকটা ভাল বাংলা সিনেমা আসছে-রবীন্দ্রনাথের ল্যাবেরাটরী গল্পের চলচ্ছিত্রায়ন ( ট্রেলারটা এই লিংকে দেখে নিন)। শুকনো লংকা সিনেমাটা উত্তর আমেরিকার দর্শকরা ডিঙ্গোরার লিংক থেকে এখুনি দেখে নিতে পারেন। আরো ভাল লাগছে এই দেখে অনেক অবাঙালী দর্শক ও এখন এই ভাল বাংলা সিনেমারগুলি দেখছেন। জাপানিজ ওয়াইফ, বাঙালীর থেকে অবাঙালীরা বেশী দেখেছে। সিনেমা একটি সংস্কৃতির ব্র্যান্ড এম্বাসেডর। বাংলা সিনেমাতে সেখানে বছরে দশ বারোটি ভাল রিলিজ হচ্ছে-এটা ভেবেই দারুন লাগছে।

Tuesday, August 10, 2010

বই বাজার ঃ ভবিষ্যতের বাংলা বই


বই শব্দটির সংজ্ঞা কি আমার সঠিক জানা নেই-তবে মিশরের প্যাপিরাসে লেখা পাতা গ্রীকদের হাতে গুঁতো খেয়ে, মানব সভ্যতার বিবর্তনে বই এর জন্ম।ছাপাখানার জন্মের সাথে সাথে বই এর বিতরন সুলভ হয়-বলা যেতে পারে ১৪৪০ সালে গুটেনবার্গের ছাপাখানা ছিল বই এর প্রথম প্রযুক্তি বিপ্লব। আগে মুখে মুখে জ্ঞান ছড়াত-ফলে জ্ঞানের চর্চা ছিল সীমাবদ্ধ। গুটেনবার্গের আবিস্কারে দেশের সীমানা ভাংল জ্ঞান-বিজ্ঞান। মনে রাখতে হবে উনবিংশ শতাব্দিতে বাংলার রেনেসাঁসের অনেকটা জুরে আছে সেই সময় ইউরোপ থেকে আসা ইংরেজি বই এর সহজলভ্যতা।

প্রিন্ট মিডিয়া প্রায় পাঁচশো বছর ধরে রাজত্ব করেছে বা এখনো করছে। ইন্টারনেটের মিডিয়া বিপ্লবের সামনে বই এর ভবিষ্যত কি-সেটা খুব একটা পরিস্কার না। তবে কিছু কিছু চিত্র পরিস্কার হচ্ছে

১। নিউজ মিডিয়া সম্পূর্ন ইন্টারনেট ভিত্তিক হবে-কারন অনেক। এখন একজন সাংবাদিক ঘটনাস্থল থেকেই সংবাদ তার পত্রিকাতে ছাপাতে পারে। সংবাদ সময়ের সাথে সাথে বাসি হয়। তার ওপর আছে মাত্রারিক্ত প্রিন্টের খরচ। ফলে আমেরিকাতে নিউজ পেপারের প্রিন্ট এডিশন কমছে দ্রুত হারে- গত দশকে এখানে মারা গেছে প্রায় ৮০০ সংবাদপত্র। আবার ইন্টারনেটে খুলছে নতুন কমিউনিটি বেসড সংবাদপত্র-তার সংখ্যা হাজার হাজার।

২। কিন্ত বই এর কি হবে? ইন্টারনেটে উপন্যাস পড়া প্রায় অসম্ভব। রবীন্দ্রনাথ অনলাইন এখন সম্পূর্ন ভাবে পাওয়া যায়। কিন্ত ইন্টারনেটে বই পড়াটা চাপের। কারন আমাদের চোখের যে ফোকাল ভিষন সেটা দিয়ে গোটা স্ক্রীনের ওপর চোখ রেখে পাতার ওপর পাতা উপন্যাস পড়-মোটেও আনন্দদায়ক না।

৩। অন্য দিকে প্রিন্টিং খরচ বেড়েছে হু হু করে। আগে লাইব্রেরী বই কিনত। লোকে লাইব্রেরী মেম্বারশিপ দিয়ে পড়ত। এখন আমরা সবাই বিশ্ববাসী। হাতের কাছে লাইব্রেরী কোথায় পাব? প্রিন্ট বই এর যা দাম কিনে পড়া মধ্যবিত্তর জন্যে বেশ চাপের। আমার কাছে আবার অন্য সমস্যা। ঘরে যথেষ্ট জায়গা নেই বই রাখার।

৪। তাহলে বই এর ডিজিটাল ফর্মাট ছারা উপায় নেই। ডিজিটাল ফর্মাটে বই নিয়ে আসার দুটি মূল সমস্যা। বই এর এডব পিডিএফ বা পোর্টেবল ডিজিটাল ফর্মাট সবথেকে জনপ্রিয়। সমস্যা হচ্ছে পি ডি এফ কেনার পরে যে কেও সেই পি ডি এফ তার বন্ধুকে ইমেল করতে পারে বা ইস্নাইপস বা অন্য হাজার হাজার সাইটে ডকুমেন্টটা তুলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারে। এই পাইরেসি ঠেকাতে ডিজিটাল রাইট ম্যানেজমেন্ট লাগাতে হয় পিডিএফে। তবে সেটাও সেফ না। কারন সেখানে পিডিএফের সাথে পাসওয়ার্ডটা শেয়ার করলে-সেই পাইরেসি চলতেই থাকবে। ফলে ইবুকের জন্যে আরো উন্নত ডিজিটাল রাইট ম্যানেজমেন্ট এসেছে যেখানে আমরা প্রতিটা আই পি এড্রেস থেকে রিডিং ট্রাক করতে পারি। এই প্রযুক্তি আমরা এখন পরিক্ষামূলক ভাবে বই বাজারে চালাচ্ছি। এই মাসের মধ্যেই কমার্শিয়াল ভাবে এটাকে চালানো ইচ্ছা আছে। তবে প্রযুক্তিতে সমস্যা না থাকলেও বাংলা প্রকাশনা শিল্পের অধিকাংশই ব্যাপারটা বুঝতে চাইছে না। ফলে বই এর স্বত্ত্ব পেতে আমাদের অসুবিধা হচ্ছে। অথচ এটা পেলে নানান সাইটে যেসব বই স্ক্যান করে তুলে দেওয়া হচ্ছে এবং তাতে প্রকাশকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন, সেটা আটকানো যেত। সুনীল হুমায়ুনের সব বই স্ক্যান করা পিডিএফ ফর্মাটে একাধিক সাইট থেকে পাওয়া যায়। মুর্ছনা বলে একটা সাইট এই চোর্য্যবৃত্তি বেশ পেশাদারি ভাবে করছে। সে হয়ত বাংলা সাহিত্য লোককে পড়াতেই এটা করছে-কিন্ত এতে বাংলা সাহিত্যিকদের ক্ষতি হচ্ছে-প্রকাশকদের ক্ষতি হচ্ছে। প্রকাশকদের আরো ক্ষতি অপেক্ষা করছে। অথচ আমাদের বইবাজার সংস্থার সাথে প্রকাশকরা সহযোগিতা করলে, আমরা এটা আটকাতে পারতাম এবং লোকেরা অনেক সুলভে বাংলা বই পড়ার সুযোগ পেত। তবে অনেকেই এটা বুঝতে পেরেছেন। যারা বুঝেছেন, তাদের ই-বইগুলি সুলভে সেপটেম্বর মাসেই চলে আসবে।

৫। আমাজন ডট কম (www.amazon.com) আবিস্কার করে কিন্ডল বলে একটি ডিভাইস। যা বই এর মতন দেখতে। এবং সেই ডিভাইসে একদম বই এর মতন করে ৩০০০ পিডিএফ রাখা যায়। মানে আই টিউনে লোকে যেভাবে গান শোনে ঠিক সেই ভাবে একটা ডিজিটাল বই-লাইব্রেরীই লোকেরা এখন নিয়ে ঘোরা ফেরা করতে পারে। সমস্যা হচ্ছে কিন্ডল এখনো বাংলা পিডিএফ সাপোর্ট করে না। কিন্ডলের পিডিএফ আলাদা সফটয়আরে বানাতে হয়। আমরা কিন্ডলের সাথে কথাবার্তা বলছি। মুশকিল হচ্ছে আমার কাছে এখন খুব সীমিত সংখ্যায় বাংলা বই এর ডিজিটাল কপিরাইট আছে। এটা বেশী থাকলে আমাজনের কাছে অনেক বেশী শক্তিশালী দাবী জানানো যেত। তবে আমার ধারনা আস্তে আস্তে সবাই এর গুরুত্ব বুঝবে।

৬। এর মধ্যে বাংলা বই আমরা আমাজন ডট কম (www.amazon.com) এ তুলে দিচ্ছি। আমাজন বই এর বৃহত্তম অনলাইন মার্কেট। সেখানে বিচ্ছিন্নভাবে বাংলা বই বিক্রি হত দু একটা। আমাদের প্রায় ১৯,০০০ বাংলা বই এখানে তোলার পরিকল্পনা এই বছরের মধ্যে । এখন শারদিয়া সংখ্যা গুলি এই লিংকে পাওয়া যাবে -সব বাংলা পত্রিকার গ্রাহক হওয়াও যাবে। তবে এখন শুধু উত্তর আমেরিকাতে। এর পরে ইউরোপ, ভারত এবং বাংলাদেশেও চালু হবে-তবে দাম সব দেশের জন্যে আলাদা হবে। এই সপ্তাহের শেষেই আমাজনে হাজারের বেশী বাংলা বই চলে আসবে ( এখানে চোখ রাখুন)। এবং পরের মাস থেকে যারা আমাদের ডিজিটাল কপিরাইট দেবেন, তারাদের বইগুলির পিডিএফ ও আমাজন থেকেই কেনা যাবে। বা বই বাজার সাইট থেকেও কেনা যেতে পারে। পি ডি এফ ফর্মাটে বিদেশে বাংলা বই এর দাম ৮০% কমে যাবে বা ১/৫ হয়ে যাবে-এবং তার পরেও লেখকরা অনেক বেশী টাকা পাবেন। এখন ত অধিকাংশ লেখক প্রকাশকদের কাছ থেকে টাকাই পান না।

আমি ব্যাক্তিগত ভাবে বই এর ব্যাবসার সাথে জড়িত কেও না-কিন্ত গত দুবছর থেকে যখন দেখলাম প্রবাসী বাঙালীরা নিজেদের দলাদলি নিয়েই বেশী ব্যাস্ত, ঠিক করলাম নিজেরাই করব। আগের বছরই এই বই বাজারের
পরিকল্পনা শুরু করেছিলাম। তবে সফটওয়ার বানানোর কাজ শুরু হয়েছে এপ্রিল থেকে। স্যোশাল মিডিয়া টেকনোলজি এই কাজ করছে এবং আই বি এমের অভিজিৎ দেব সরকার প্রজেক্টটির প্রযুক্তি লিডার। এছারাও মনোজিত, সৌমেন্দু এবং রাহুল গুহ নানা ভাবে সাহায্য করছেন।

নিউ ইয়ার্কের মুক্তধারা সংস্থার বিশ্বজিত সাহা আমার এই কাজে এগিয়ে না আসলে , বই বাজারকে দিনের আলো দেখাতে অনেক দেরী হত। প্রযুক্তি এবং মার্কেটিং আমি ভাল জানলেও বই এর ব্যাবসাটাই জানতাম না। তার ওপর কোলকাতার বুকফেয়ার্স গীল্ড আমার আমার আবেদন নাকচ করে দেয়!
তবে এখন দ্রুত গতিতে আমাদের কাজ হচ্ছে এবং আশা করব এক দু বছর বাদে মাসিক গ্রাহক হওয়ার বিনিময়ে বাঙালীরা যে কোন সাহিত্য বা বাংলা বই অনলাইন পড়তে পারবে্ন।

বাংলা ভাষার ভবিষ্যত এমনিতেই খুব উজ্জ্বল না। এর পর বই এর যদি মাত্রছারা দাম হয়-তাহলে বাংলা প্রকাশনা শিল্প ডুবে যাবে। সুতরাং বাংলা বই কে সুলভে অনলাইন করতেই হবে।

প্রকাশকরা বা গ্রাহকরা আমার সাথে এই ইমেলে যোগাযোগ করতে পারেনঃ biplabpal2000@gmail.com
আর যারা নতুন কি কি বই আসছে জানতে চান-তারা ফেসবুকে বই বাজার পেজে জয়েন করুন। আপনাদের প্রোফাইলে নতুন বই এর সংবাদ চলে আসবে।


Sunday, August 8, 2010

সত্যিই কি আমরা আলাদা?

ইসলাম বা মুসলিমরা আলাদা এই ধরনের বিশ্লেষন করে শুধু শুধু আমরা তোমরা তত্ত্ব তৈরী হবে। সমস্যা হচ্ছে মুসলিমরা ভাবে তাদের ইসলাম সবার থেকে আলাদা ( এর থেকে ভালো ধর্ম হয় না) আর অমুসলিমরাও ভাবে ইসলাম সত্যিই সবার থেকে আলাদা ( এর থেকে ভয়ংকর ধর্ম হয় না)। ফলে দুপক্ষেরই ধারনা ইসলাম সত্যিই আলাদা!

বাস্তবে কি তাই? একজন মুসলিম মা কি তার ছেলেকে অন্য ধর্মর কোন মায়ের থেকে বেশী বা কম ভালোবাসে? অবশ্য আমি এমন উল্লুক নানান ফোরামে পেয়েছি-যেখানে অমুসলিমরা আমাকে বোঝানোর চেষ্টার করেছে মুসলিম পিতামাতারা ধর্মের কারনে সন্তানের প্রতি যত্নবান না-আর
ইসলামিস্টরা আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে ইসলামে ধর্মের জন্যে
তারা ছেলে মেয়েদের প্রতি বেশী যত্ন শীল।

এসব দেখার পর, শোনার পর স্বাভাবিক রক্তচাপ বজায় রাখা আমার পক্ষে সত্যিই অসম্ভব হয়। আমি শুধু ভাবি মানুষ কতটা নিরেট হলে ভাবতে পারে একজন মুসলমান মা, একজন হিন্দু বা ক্রীষ্ঠান মায়ের থেকে আলাদা হয়?

বাস্তব এটাই -আমি দেখেছি অধিকাংশ মানুষ সেটাই ভাবে। মুসলমান আর অসমুসলমানদের পক্ষে এটা মুদ্রার এপিঠ বনাম ওপিঠ হয়।

একজন ভারতীয় মুসলমান বা বাংলাদেশী মুসলমানের সাথে আমার জেনেটিক গঠনে কোন পার্থক্য নেই। আর সেটা নেই বলেই-আমরা জৈবিক ভাবে আলাদা হতে পারি না-সামাজিক যে পার্থক্যটা আছে সেটাও নগন্য কারন সামাজিক বিবর্তন ও আবাহওয়ার ওপর অনেক বেশী নির্ভরশীল-ইতিহাসের থেকে।

ধর্মের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস হিন্দুর ও আছে-মুসলমানদের ও আছে। অন্ধ বিশ্বাসী মুসলমানদের সংখ্যাটা অনেক অনেক বেশী। কিন্ত সেটা কি আদৌ কিছু পার্থক্য জুরে দিতে পারে? বাংলাদেশ কি পারবে সপ্তম শতকের আরবের উটের দুধ খেয়ে [ পড়ুন কোরানিক বা শারিয়া সমাজ] এক বিংশ শতাব্দীতে যে জীবিকাগুলো সৃষ্টি হচ্ছে, তার সুবিধা নিতে? বা তার ১০% লোককে খাওয়াতে? তাহলে মুসলিমরা যে নিজেদের ইসলামিক বা ইমান দেখায়-সেটা শ্রেফ লোক দেখানো-সমাজচ্যুত হওয়ার একটা ইনসিকিউরিটি-সত্যিকারের ইসলাম ধর্মে বাংলাদেশীরা বিশ্বাস করলে, বাংলাদেশ কি করে দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান হয়? বা ভারতে এত লোক ধর্মে সত্যিই বিশ্বাস করলে ভারতে কি করে এত ব্যাপক দুর্নীতি হয়?

সত্যিই কি কেও ধর্মে বিশ্বাস করে? না নিজেদের বেঁচে থাকায় বিশ্বাস করে?

কেও যখন বলে সে ইসলামে বা হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করে-সে শ্রেফ মিথ্যে কথা বলে। আসলে সে বলছে আমার আইডেন্টি মুসলিম বা হিন্দু- এবং এই পরিচয়টা তার বেঁচে থাকার জন্যে দরকার। সেই বেঁচে থাকা…।

কারন আমি দেখেছি কাস্টমার টানতে পাকিস্থানের মুসলিম রেস্টুরেন্ট মালিক পাঞ্জাবী সেজে বসে থাকে-কারন পাকিস্থানী রেস্টুরেন্টে অনেকেই যেতে চায় না পাকিস্থানের প্রতি ঘৃণাতে। আবার বাংলাদেশের সময় রায়োটে অনেক হিন্দু রাতারাতি নিজেদের মুসলিম করেছে-সেই বাঁচতে! আমি নিজেই দেখেছি অনেক মুসলিম আমেরকাতে এসে ক্রীষ্ঠান ধর্মের নাম নিয়ে চাকরি জীবন কাটায় যাতে মহম্মদ হওয়ার জন্যে তাকে বঞ্চিত না হতে হয়। সেই বাঁচার চেষ্টা।


দুর্ভাগ্য এটাই-এই সহজ সত্য আমাদের চোখে পড়ে না-আমরা বিশ্বাস করি না।

Monday, August 2, 2010

অসম্পূর্ন জীবন

অথবা মিড লাইফ ক্রাইসিস-এই ভাবেই শুরু করা যেত। চারিদিকে যত বন্ধু বান্ধব আছে-যে দিকে তাকাচ্ছি-সবাই নিজের চাকরি নিয়ে অসন্তুষ্ট। এদের সবার একটা কমন প্রফাইল আছে-ছাত্র জীবনে সবাই মেধাবী ছাত্র। আই আই টি থেকে পাশ করার পর সবাই নামকরা কর্পরেটে ঢুকে গেছে। আর্থিক দিয়ে কেওই অসফল না-মানে জীবনে সেই অস্তিত্ববাদি সংকট নেই। কিন্ত ইদানিং সবাই আমাকে বলে-জীবন চেটে গেছে! সবাই নাকি সেই কর্পরেট জীবন থেকে বেড়তে চাইছে। দ্বাসত্ব মুক্তি টাইপের ব্যাপার।

আমি লেখা লেখি এবং নানান কাজে ব্যাস্ত থাকায় আসলে নিজের চাকরিতে অত সময় দিতে পারি না-চাই ও না। গত পাঁচ বছর ধরে এটাই আমার রুটিন। কারন কর্পরেট জীবনের অন্তঃসারশুন্যতা নিয়ে ২০০৩ সালেই আমার গভীর উপলদ্ধি হয়। কঠিন অভিজ্ঞতা থেকে বুঝি ধণতন্ত্র আসলে একটা জাঁতাকল। প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে এতদিনে বেড়লাম না কেন? ব্যাপারটা হচ্ছে এখানে যাও বা কিছু করছি-তা বাস্তবে সমাজ বা মানুষের কাজে আসে। একাডেমিক্সএ আমাদের লাইনে যে গবেষনা হয়-তার পুরোটাই ফালতু। শুধু পেপার উৎপাদনের জন্যে ধান ভাঙাগীত। ফলে বাকী উপায় ছিল-ব্যাবসাতে ঝাঁপ দেওয়া বা এন জি ও খুলে দেশোদ্ধার করা। শেষেরটিতে এত দুর্নীতি নিজের চোখে দেখা-ভরসা হয় নি। তবে চাকরি ছেরে দুবার ব্যাবসা করার চেষ্টা করেছি-দুবারই ব্যার্থ হয়ে চাকরিতে ফিরে যেতে হয়েছে। শেষে বুঝেছি আসলে কয়েক মাসে ব্যাবসা নামে না-দীর্ঘ দু তিন বছর একটানা চেষ্টা করলে-কিছু দাঁড়ায় হয়ত। তাও সেটা কর্পরেট বেতনের প্রতিস্থাপক হওয়া কঠিন-ফলে কর্পরেট ঘানির কালো তৈল উৎপাদনই জীবন কায়া।

বাকীদের উপলদ্ধি হয়ত এত দ্রুত আসে নি-ফলে তারা জীবনের একটা দশক কর্পরেটকে দিয়ে এখন নিজেদের প্রশ্ন করছে-জীবনে কি করিলাম? বিলগেটসের মতন মাইক্রোসফট ও বানাইতে পারি নাই-লালনের মতে গান ও বাধিতে পারি নাই! রাস্তার ধারে একজন চায়ের দোকানের মালিকের দোকানটার ও একটা লেগাসি থাকে- কর্পরেট বাবুদের মাইনা ছারা কিছু নাই! জীবনের ইঁদুর দৌড়ে কর্পরেট গুহাতে জোরে দৌড় মেরে সবাইকে পেছনে ফেলে ঢুকে সবাই দেখছে-সেই গুহাতে যত ঢুকবে-ততই অন্ধকার-টানেলের শেষে আলো নেই।

এই বেশ ভাল আছি বলে উইকেন্ডে পার্টি করে অনেকেই বহুদিন চালিয়েছে। বরং বলা ভাল-এই সব অসস্তিকর প্রশ্নগুলো আসলে আগে এরা কেও নিজেদের জিজ্ঞাসা করে নি। প্রশ্নটা আইডেন্টিটির এবং লেগাসির। একটা না একটা দিন এগুলো মানুষকে তাড়া করবেই। অনেকেই তাদের হিন্দু মুসলিম আইডেন্টি নিয়েই খুশি-তাদের সীমিত পরিচিতির পরিসরে লোকজন তাদের গুরুত্ব দিলেই, তারা নিজেদের জীবন সার্থক বলে মনে করে। সমস্যা হচ্ছে তাদের নিয়ে-যারা ভাবে জীবনে কিছু করতে পারত-সেটা করতে হয়ত কর্পরেটে ঢুকেছিল-শেষে বুঝেছে কিছু করার জন্যে কর্পরেটে ঢোকা মুর্খামি-ওটা ঘানি টানার জায়গা।

তবে কে জানে-সম্পূর্ন জীবন বলে হয়ত সত্যিই কিছু নেই। অসম্পূর্ন জীবনই হয়ত আসল জীবন। অথবা হতেও পারে এটা আঙুর ফল টক টাইপের একটা মনোলগ।