Tuesday, December 17, 2013

দিব্যানী কাট্রাগাডার এরেস্ট

দিব্যানী কাট্রাগাডার এরেস্ট এবং ট্রিটমেন্ট নিয়ে ভারত তোলপাড়। রাহুল গান্ধী এবং মোদি দুজনেই আমেরিকান কংগ্রেশনার ডেলিগেটদের সাথে প্রতিবাদের মিটিং বয়কট করলেন। সারা দেশে গেল গেল রব। দিব্যানীকে স্ট্রিপ সার্চ করা হয়েছে জেলে-ভাবটা এমন যেন অতিবারাবাড়ি হয়েছে। আমেরিকান ডিপ্লোমাটদের সিকিউরিটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেটা নিয়ে অবশ্য আমি ভাবছি না। কারন সিকিউরিটির অভিযোগে যদি আমেরিকা ভারতের ভিসা অফিস বন্ধ করে দেয়, ভারতের প্রায় সব বড় আই টি কোম্পানী গুলির পেছেন ঢুকে গেল। তবে ওদ্দুর গড়াবে না। কেননা তার আগেই ন্যাসকম একটা হুঙ্কার ছাড়লে মোদি সিংহ বিড়াল হয়ে মিউ মিউ করে গুজরাত গর্তে ঢুকে যাবে। রাহুল ও বসে যাবে।  সে যাক।  দুটি দেশই ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রনে। তারা যা চাইবে তাই হবে।  সেই জন্য এই সব ডিপ্লোম্যাটিক নাটক নিয়ে আমার উৎসাহ নেই যার শেষ দৃশ্য লিখবে বিজনেস ইন্টারেস্ট।

   আমি অন্য একটা ব্যপার নিয়ে লিখছি। এর আগে  আমেরিকান এয়ারপোর্টে শারুখ খান, জর্জ ফার্নন্ডেজ এর স্ট্রিপ সার্চ নিতেও মিডিয়া ভারতীয় রক্ত গরম করেছে।

 দুটো ব্যাপার ভারতীয়দের জানতে হবে। আমেরিকাতে রাজ্যের গর্ভনররা ( মুখ্যমন্ত্রীর সমতুল্য) দুর্নীতির কারনে জেলে ঢোকে এবং ব্যাপারটা বেশ নিয়মিত। গত দশকে অন্তত বার সাতেক দেখেছি।  এবং অনেকে গর্ভনর থাকা কালীনই জেলে ঢুকেছে এবং হাতকড়া পড়িয়েই ঢোকানো হয়েছে। ঢুকিয়েছেন রাজ্যের এটর্নি জেনারেল যিনি পদাধিকার বলে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির "প্রায় সমতুল্য"।
এখানে এটর্নি জেনারেলদের অবাধ ক্ষমতা কারন তিনিও নির্বাচনে জিতে আসেন এবং আইনবলে গর্ভনর বাজে কাজ করলে, তাকে হাতকড়া পরিয়ে জেলে ঢোকান।

 দ্বিতীয় ব্যপারটা হল, এই সব এটর্নি জেনারেলরা সাধারনত, যারা ক্ষমতাধর, তাদের প্রতি বেশী নির্দয়। কারনটা আমেরিকানরা মনে করে যারা ক্ষমতাধর, তারা যদি আইন ভাংতে শুরু করে, দেশটা রসাতলে যাবে। কারন আইন ভেঙে দেশের ক্ষতি করার ক্ষমতা তাদেরই বেশী। দুমাস আগে ডেট্রয়েটের মেয়রের ৩০ বছর জেল হল দুর্নীতির জন্য। হাতকড়া পড়িয়ে তার কত ছবি বেড়িয়েছে। আর ও যা দুর্নীতি করেছে, ভারতের প্রতিটা মেয়র করে-শহরের কনট্রাক্টে ৫% খেত লোকটা। ভারতে ৫০% খায় মেয়রগুলো -এবং কেও জেলে যায় না। লালবাতি জ্বেলে ঘোরে।

   আরেকটা কথা। নিউয়ার্কের সাউথ ম্যানহাটনেরএটর্নি জেনারেল এখন প্রীত বেহেরা। যিনি সততার জন্য বিখ্যাত। ওবামা স্বয়ং তাকে বসিয়েছিলেন ওয়াল মার্টের রাঘব বোয়ালদের ধরতে। প্রীত অন্তত গোটা দশেক আমেরিকান বিলিয়নারকে জেলে ঢুকিয়েছে হাত কড়া পড়িয়ে। রজত গুপ্ত এর কোর্টেই জেলে গেছেন। যারা লেবার আইন ভাঙে, তাদের জন্য প্রীত বেশ ভয়ংকর বলেই নাম আছে। কারন সে একজন ডেমোক্রাট এবং তার যা জনপ্রীয়তা, সে ভবিষয়তে হয়ত ডেমোক্রাটিক গর্ভনর বা প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য দাঁড়াবে। ভারতীয় হিসাবে, সে তার সততার জন্য আমাদের সর্বদা  গর্বিত করেছে।  এই প্রীতের নির্দেশেই জেলে গেছে দিব্যানী এবং সে জেল ও খাটবে। এবং প্রীত যেভাবে লেবার আইন ভাঙার জন্য লোকেদের সাজা দিয়েছে, তাতে ডেমোক্রাটিক পার্টিতে তার উত্থান অপ্রতিরোধ্য। কোন ভারতীয় যদি ভবিষয়তে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট হওয়ার ক্ষমতা রাখে তাহলে সে হচ্ছে এই প্রীত।

দিব্যানীর কি ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী ডিপ্লোম্যাটিক ইমিউনিটি পাওয়া উচিত? একদমই না। ভিয়েনা কনভেনশনের দুটি আর্টিকল আছে ঃ
 Article 29. Diplomats must not be liable to any form of arrest or detention. They are immune from civil or criminal prosecution, though the sending country may waive this right under Article 32. Under Article 34, they are exempt from most taxes, and under Article 36 they are exempt from most customs duties.
Article 31.1c Actions not covered by diplomatic immunity: professional activity outside diplomat's official functions.

আর্টিকল ৩১/সি অনুযায়ী,  ডিপ্লোমাটিক কাজের বাইরে অন্য কোন কাজে এই ইমিউনিটি দেওয়া যায় না। প্রীত এটি ব্যাখ্যা করে শুনিয়েছে কেন দিব্যানীকে ডিপ্লোম্যাটিক ইমিউনিটি দেওয়া যাবে না।

 দিব্যানী কাট্রাগাডা এবং তার বাবা মুম্বাইএ সরকারি ফ্লাট কেলেঙ্কারিতে যুক্ত। যার জন্য সি বি আই তদন্ত চলেছে।

 ভারতে আই এ এস , আই এফ স রা নিজেদের রাজা এবং আইনের উর্ধে মনে করে ।  সেই মনোভাব নিয়ে আমেরিকাতে চললে ফাঁসবে এবং ফেঁসেওছে।

 দিব্যানী যেভাবে তার চাকরানীর পরিবারকে ভারতে হেনস্থা করেছে, সেই নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া নীরব। দিব্যানীর পরিবার এতই ঢ্যামনা যে দিল্লীর হাইকোর্টে মামলা ফাইল করে, সেখানে জাজমেন্ট পাশ করিয়েছে তার চাকরানী, তার বিরুদ্ধে আমেরিকাতে বা ভারতের বাইরে কোথাও মামলা করতে পারবে না!  আমেরিকান আইনে এসবের গুরুত্ব নেই কারন আমেরিকায় ঘটিত অপরাধের বিচার অন্য দেশে হতে পারে না। কিন্ত প্রশ্ন হচ্ছে কেও ত বলছে না, দিব্যানীর বাবা কি ভাবে তার চাকরানীর পরিবারকে ভারতে পুলিশ এবং কোর্ট দিয়ে হেনস্থা করেছে?

 আর অদ্ভুত লজিক! দিব্যানী ৪০০০ ডলার মাইনা পায়-সে কি করে ঘন্টায় ৯ ডলার ন্যানিকে দেবে? আরে বাবা দিতে পারবে না বলে কি আইন ভেঙে  ন্যানি রাখবে? ভারতে না হয় আইন হচ্ছে ফেও-আমেরিকাতে ত তা না!!  মাইনা দিতে পারবে না-ন্যানি রাখবে না। মিটে গেল। আমরাও রাখতে পারি না-বাথরুম থেকে বাচ্চার ডায়াপার পরিস্কার করা এখানে আমাদের নিজেদেরই করতে হয়! যত্তোসব উদ্ভট লজিক।

Thursday, December 12, 2013

রাখিস মা রসে বসে

ইদানিং রাখিস মা রসে বসে স্টাইলে লিখতে ভয় হয়। রস মানেই ত আদিরস। আর সেই দিকে পা বাড়ালেই - সেক্সিস্ট। মেয়েদের সেক্স অবজেক্ট থুরি মাল হিসাবে উপস্থাপনা ইত্যাদি বিজাতীয় ফেমিনিস্ট পেনের খোঁচাখুচি খেয়ে ইদানিং মেয়েদের দিকে তাকাতেই কেমন একটা গিল্টি ফিলিং হচ্ছে  

একটা জিনিস অবশ্য আমার কাছে পরিস্কার নয়। আমেরিকার কথা ছেড়েই দিলাম। খোদ ভারতেই দেখছি গত দশ বছরে মেয়েরা ড্রেসের ব্যাপারে অনেক বেশী সাহসী। ইদানিং টাইট জিনসের ফিটিংসে বাট প্রদর্শন না করলে অনেক মেয়েই নিজেদের অফ-ট্রেন্ড ভাবে। শুধু ভাবে না-নিতম্বের শেপ ঠিক রাখার জন্য জিমে পারসোনার ট্রেনার ও রাখে। মেয়েরা নিজেরাই তাদেরকে ক্রমশ আরো বেশী "অবজেক্ট অব সেক্সুয়াল এট্রাকশন" বা যৌন মাদক হিসাবে পেশ করছে ( ব্যাতিক্রম ও আছে )। 

এবার একটা মেয়ে জিমে খেটে খুটে একদম পিকচার পারফেক্ট বাটস তৈরী করে দেখালে, সেটা যদি আমরা পুরুষেরা না দেখি, মানে মেয়েটাক অবজেক্ট অব সেক্স হিসাবে না দেখি-তাহলে মেয়েটাকেটা অবজ্ঞা করা হচ্ছে  তার ইচ্ছাকে সন্মান দেওয়া হচ্ছে না  সেটা কি ঠিক?
অহম প্রানীকূল জুরেই নারী এবং পুরুষ নিজেকে অন্যের জন্য সেক্স অবজেক্ট হিসাবেই প্রেজেন্ট করে-কারন সেটাই জৈব অস্তিত্বর সারমর্ম। তাহলে, একজন নারীকে অবজেক্ট হব সেক্স হিসাবে দেখা একজন পুরুষের জন্য কেন খারাপ হবে? 

একজন নারী বা পুরুষের অনেক অস্তিত্ব আছে-বৌমা, ছোটমা, কাকিমা, বন্ধু, বস, শিক্ষক ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্ত বিজ্ঞান সম্মত ভাবে এটাই সত্য-এসব অস্তিত্বের ওপরে তাদের যৌনতার অস্তিত্ব। নারীকে অবজেক্ট অব সেক্স হিসাবে ভাবাটা পুরুষের মস্তিস্কে বিবর্তনের কারনেই হার্ডওয়ার্ড।

যারাএই স্বাভাবিক কামনাকে অস্বীকার করে, তারা হিপোক্রিট। জীবনের প্রবাহ, আমাদের প্রকৃতি -জলের মতন। যা আমাদের স্বাভাবিক কামনা-তার ওপর লজ্জা, ঘৃণা, সামাজিকতা, ট্রাডিশন, রক্ষণশীল, প্রগতিশীল, ফেমিনিজমের শিকল না পড়ানোই ভাল। 

জলের রং নীল, সবুজ, ঘোলা যায় হোক না কেন, তা নীচের দিকেই গড়াবে।