বিগ্রেডে মহাজোটের নেতাদের বক্তব্য শুনলাম। ফাইটটা ঠিক বিজেপি বনাম অন্যান্য পার্টি নয়। ভারতীয় গণতন্ত্রকে মোদি-শাহ রাজ থেকে বাঁচানোর জন্য জোটবন্ধন। যার জন্য এই মঞ্চে ছিলেন বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতারাও। শত্রুঘ্ন সিংহা, যশোবন্ত সিনহা। বাইশজনের বক্তব্যে "কমন" থিম একটাই- এই বর্তমান সরকার সিবি আই, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ইত্যাদি স্বয়ত্বশাসিত সংস্থাগুলিতে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করে ভারতীয় গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে উদ্যত।
মোদি চৌকিদার না চোর, চাষীদের আত্মহত্যা -এগুলো গৌণ। কারন কেউ সুস্থ মাথায় বলবে না বিজেপি গেলে মহাগোটবন্ধন, দুর্নীতিমুক্ত সরকার দেবে। বাস্তব এটাই বিজেপি সরকার এবং ভারতের অন্যন্য দলগুলি সবাই দিল্লীর দুর্নীতি সিন্ডিকেটের হাতের পুতুল। কিন্তু যা বুঝলাম, সবাই ভীত এই কারনে যে এই মোদি সরকার সিবি আই কে নিজেদের লেঠেল বাহিনী বানিয়েছে। বিরোধি নেতানেত্রীদের ধ্বংস করতে। পশ্চিম বঙ্গের চিটফান্ড কেলেঙ্কারির কথা ভাবুন। এত তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের ডাকা হল, তাদের কিছুদিন জেলে ভরা হল। কিন্ত তাদের চার্জশীটের প্রমান করতে পারল কই আদালতে?
তাহলে দুটোই পসিবিলিটি- সিবি আই এর হাতে যথেষ্ট প্রমান নেই, বা প্রমান থাকলেও তারা আসলেই এটিকে বিজেপির লিভার পুলি হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন রাজ্যসভায় বিল পাস করানোর জন্য ?
গণতন্ত্র থেকে ফ্যাসিবাদের উত্থান নতুন কিছু ত না। হিটলার,মুসোলিনি গণতান্ত্রিক উপায়েই ক্ষমতা দখল করে স্বৈরতন্ত্র তৈরী করেন। কংগ্রেস,বিজেপি, তৃনমূল, সিপিএম -কোন দল ক্ষমতায় থেকে গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছে? প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীরা তাদের পুলিশ ফোর্সকে কাজ লাগিয়ে বরাবরই রাজনৈতিক ফয়দা তুলেছেন।
সুতরাং এই মহাজোটের কাছ থেকে আমার আশা ছিল, কেউ অন্তত বলবেন সংবিধানের সমস্যা আছে। পুলিশ যদ্দিন প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকবে কেন্দ্রে এবং রাজ্যে শাসক দলের স্বৈরাচার হবেই। ১৯৭৮ সালে জনতা সরকার পুলিশ কমিশন বসিয়ে এটা প্রমান করেছিল এবং তারা প্রস্তাব দেয়, পুলিশের স্বয়ত্বশাসন। সেই প্রস্তাব কোন মুখ্যমন্ত্রী, এমন কি জ্যোতি বসুও মানেন নি।
ফ্যাসিজমের যে সমস্যাটা স্ট্রাকচারাল, সেই মূল সমস্যার দিকে না ফোকাস করে যদি সব লাইট মোদির দিকে দেওয়া হয়, তাহলে মোদি গেলে হয়ত সাময়িক সুরাহা হবে-কিন্ত নতুন কোন স্বৈরাচারী শাসক আসতেই পারে।
বিগ্রেডে কতলোক টেনেছে তৃনমূল- ঐতিহাসিক সমাবেশ ইত্যাদি বিশাল বপু বাতে কিছু হবে না। কারন বিগ্রেডে লোক টানত সিপিএম ও। আজ জনগণ যখন তাদের ক্ষমতা থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে, বিগ্রেডে পঞ্চাশ হাজার লোক টানার ক্ষমতাও তাদের নেই। তাদের বিগ্রেড সমাবেশগুলিযে চোখ রাঙিয়ে কোলকাতায় লোক টেনে এনে দেখানোর খেলা ছিল, সেটা সবাই জানে। আজ তারা অপ্রাসঙ্গিক, কারন তাদের বিগ্রেড ভরারটা ছিল রাজনৈতিক নাটক। তাদের রাজনীতির প্রাসঙ্গিকতাই ছিল না।
আজকে মোদিকে তাড়ানোর প্রাসঙ্গিকতা আছে, তাই বিগ্রেডের এই সমাবেশ গুরুত্বপূর্ন। কিন্ত মোদির পর কি? সেই উত্তর কিন্ত পাওয়া গেল না। কোন সাজেশন এল না। এটা চিন্তার।
কারন ইতিহাসের শিক্ষা। কেন্দ্রীয় শক্তির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক শক্তিগুলির গোটবন্ধন নতুন না। জয়প্রকাশ নারায়ন -১৯৭৭। জ্যোতি বসু, ভিপি সিং, বাজপেয়ী - ১৯৮৮। ইতিহাসে আরো পেছনে গেলে প্রতিটি সাম্রাজ্যবাদি শক্তিই আঞ্চলিক শক্তিগুলি জোটবন্ধনের ভয়ে থাকত। রোমান সম্রাজের বিরুদ্ধে সমস্ত নর্দান ট্রাইব রা বিদ্রোহ করেছে একত্রিত হয়ে একাধিবার। রোমান, অটোমান, মঙ্গোলিয়ান, মুঘল, বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় শক্তিগুলির একত্রিত লড়াই এর উদহরণ প্রচুর।
গোটা ভারতের আঞ্চলিক শক্তিগুলি বৃটিশদের রুখতে পারে নি-কারন তারা ঐক্যবদ্ধ ছিল না। কিন্ত আফগানরা রুখে দিয়েছিল। কারন তাদের ট্রাইবরা একত্রিত হয়ে বৃটিশদের বিরুদ্ধে লড়েছে। ১৮৯৭ সালে যে আফগান অভ্যুত্থান হয়, তার নেতা ছিলেন অরচিক ট্রাইবের প্রধান গুল বাদশা। সমস্ত আফগান ট্রাইবগুলিকে একত্রিত করা কঠিন কাজ ছিল-কিন্ত আফগানিস্থানকে বৃটিশদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সমস্ত ট্রাইবরা গুলবাদশার নেতৃত্বে এক হয়। তার নেতৃত্বকে স্বীকার করে। যার ফলে আফগানিস্থান নিজেদের স্বাধীনতা বজায় রাখতে সমর্থ হয়।
এখানে সমস্যা হচ্ছে আঞ্চলিক শক্তিগুলি একত্রিত হলে মোদি-শাহ রাজীকে থামাতে পারে খুব সহজেই। কিন্ত এই একত্রিত হতে গেলে নেতৃত্ব চাই। সবাই কি মমতার নেতৃত্ব মেনে নেবেন ? সিপিএম মানবে না। কংগ্রেস মানবে না। পশ্চিম বঙ্গের সঙ্কট। বহেনজী মায়াবতী, নিজে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খোয়াবে। গুলবাদশা সমগ্র আফগান ট্রাইবদের একত্রিত করতে পেরেছিলেন, কারন বাকীরা তার নেতৃত্বকে মেনে নিয়েছিল।
এই মহাজোটবন্ধনে সবাই নেতৃত্বের প্রশ্নটা এড়িয়ে গেলেন। মহাভুল করলেন। এই মহাজোটের কোন নেতৃত্ব তৈরী না হলে বা মমতা ব্যানার্জিকে বাকী দলগুলি সর্বসম্মত নেত্রী হিসাবে না মেনে নিলে, বিগ্রেডের এই মহাসমাবেশ কার্যকারী হবে না। বাইশটা ঘোড়া দিয়ে রথ টানতে গেলে, তার সারথি লাগে।
মোদি চৌকিদার না চোর, চাষীদের আত্মহত্যা -এগুলো গৌণ। কারন কেউ সুস্থ মাথায় বলবে না বিজেপি গেলে মহাগোটবন্ধন, দুর্নীতিমুক্ত সরকার দেবে। বাস্তব এটাই বিজেপি সরকার এবং ভারতের অন্যন্য দলগুলি সবাই দিল্লীর দুর্নীতি সিন্ডিকেটের হাতের পুতুল। কিন্তু যা বুঝলাম, সবাই ভীত এই কারনে যে এই মোদি সরকার সিবি আই কে নিজেদের লেঠেল বাহিনী বানিয়েছে। বিরোধি নেতানেত্রীদের ধ্বংস করতে। পশ্চিম বঙ্গের চিটফান্ড কেলেঙ্কারির কথা ভাবুন। এত তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের ডাকা হল, তাদের কিছুদিন জেলে ভরা হল। কিন্ত তাদের চার্জশীটের প্রমান করতে পারল কই আদালতে?
তাহলে দুটোই পসিবিলিটি- সিবি আই এর হাতে যথেষ্ট প্রমান নেই, বা প্রমান থাকলেও তারা আসলেই এটিকে বিজেপির লিভার পুলি হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন রাজ্যসভায় বিল পাস করানোর জন্য ?
গণতন্ত্র থেকে ফ্যাসিবাদের উত্থান নতুন কিছু ত না। হিটলার,মুসোলিনি গণতান্ত্রিক উপায়েই ক্ষমতা দখল করে স্বৈরতন্ত্র তৈরী করেন। কংগ্রেস,বিজেপি, তৃনমূল, সিপিএম -কোন দল ক্ষমতায় থেকে গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছে? প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীরা তাদের পুলিশ ফোর্সকে কাজ লাগিয়ে বরাবরই রাজনৈতিক ফয়দা তুলেছেন।
সুতরাং এই মহাজোটের কাছ থেকে আমার আশা ছিল, কেউ অন্তত বলবেন সংবিধানের সমস্যা আছে। পুলিশ যদ্দিন প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকবে কেন্দ্রে এবং রাজ্যে শাসক দলের স্বৈরাচার হবেই। ১৯৭৮ সালে জনতা সরকার পুলিশ কমিশন বসিয়ে এটা প্রমান করেছিল এবং তারা প্রস্তাব দেয়, পুলিশের স্বয়ত্বশাসন। সেই প্রস্তাব কোন মুখ্যমন্ত্রী, এমন কি জ্যোতি বসুও মানেন নি।
ফ্যাসিজমের যে সমস্যাটা স্ট্রাকচারাল, সেই মূল সমস্যার দিকে না ফোকাস করে যদি সব লাইট মোদির দিকে দেওয়া হয়, তাহলে মোদি গেলে হয়ত সাময়িক সুরাহা হবে-কিন্ত নতুন কোন স্বৈরাচারী শাসক আসতেই পারে।
বিগ্রেডে কতলোক টেনেছে তৃনমূল- ঐতিহাসিক সমাবেশ ইত্যাদি বিশাল বপু বাতে কিছু হবে না। কারন বিগ্রেডে লোক টানত সিপিএম ও। আজ জনগণ যখন তাদের ক্ষমতা থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে, বিগ্রেডে পঞ্চাশ হাজার লোক টানার ক্ষমতাও তাদের নেই। তাদের বিগ্রেড সমাবেশগুলিযে চোখ রাঙিয়ে কোলকাতায় লোক টেনে এনে দেখানোর খেলা ছিল, সেটা সবাই জানে। আজ তারা অপ্রাসঙ্গিক, কারন তাদের বিগ্রেড ভরারটা ছিল রাজনৈতিক নাটক। তাদের রাজনীতির প্রাসঙ্গিকতাই ছিল না।
আজকে মোদিকে তাড়ানোর প্রাসঙ্গিকতা আছে, তাই বিগ্রেডের এই সমাবেশ গুরুত্বপূর্ন। কিন্ত মোদির পর কি? সেই উত্তর কিন্ত পাওয়া গেল না। কোন সাজেশন এল না। এটা চিন্তার।
কারন ইতিহাসের শিক্ষা। কেন্দ্রীয় শক্তির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক শক্তিগুলির গোটবন্ধন নতুন না। জয়প্রকাশ নারায়ন -১৯৭৭। জ্যোতি বসু, ভিপি সিং, বাজপেয়ী - ১৯৮৮। ইতিহাসে আরো পেছনে গেলে প্রতিটি সাম্রাজ্যবাদি শক্তিই আঞ্চলিক শক্তিগুলি জোটবন্ধনের ভয়ে থাকত। রোমান সম্রাজের বিরুদ্ধে সমস্ত নর্দান ট্রাইব রা বিদ্রোহ করেছে একত্রিত হয়ে একাধিবার। রোমান, অটোমান, মঙ্গোলিয়ান, মুঘল, বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় শক্তিগুলির একত্রিত লড়াই এর উদহরণ প্রচুর।
গোটা ভারতের আঞ্চলিক শক্তিগুলি বৃটিশদের রুখতে পারে নি-কারন তারা ঐক্যবদ্ধ ছিল না। কিন্ত আফগানরা রুখে দিয়েছিল। কারন তাদের ট্রাইবরা একত্রিত হয়ে বৃটিশদের বিরুদ্ধে লড়েছে। ১৮৯৭ সালে যে আফগান অভ্যুত্থান হয়, তার নেতা ছিলেন অরচিক ট্রাইবের প্রধান গুল বাদশা। সমস্ত আফগান ট্রাইবগুলিকে একত্রিত করা কঠিন কাজ ছিল-কিন্ত আফগানিস্থানকে বৃটিশদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সমস্ত ট্রাইবরা গুলবাদশার নেতৃত্বে এক হয়। তার নেতৃত্বকে স্বীকার করে। যার ফলে আফগানিস্থান নিজেদের স্বাধীনতা বজায় রাখতে সমর্থ হয়।
এখানে সমস্যা হচ্ছে আঞ্চলিক শক্তিগুলি একত্রিত হলে মোদি-শাহ রাজীকে থামাতে পারে খুব সহজেই। কিন্ত এই একত্রিত হতে গেলে নেতৃত্ব চাই। সবাই কি মমতার নেতৃত্ব মেনে নেবেন ? সিপিএম মানবে না। কংগ্রেস মানবে না। পশ্চিম বঙ্গের সঙ্কট। বহেনজী মায়াবতী, নিজে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খোয়াবে। গুলবাদশা সমগ্র আফগান ট্রাইবদের একত্রিত করতে পেরেছিলেন, কারন বাকীরা তার নেতৃত্বকে মেনে নিয়েছিল।
এই মহাজোটবন্ধনে সবাই নেতৃত্বের প্রশ্নটা এড়িয়ে গেলেন। মহাভুল করলেন। এই মহাজোটের কোন নেতৃত্ব তৈরী না হলে বা মমতা ব্যানার্জিকে বাকী দলগুলি সর্বসম্মত নেত্রী হিসাবে না মেনে নিলে, বিগ্রেডের এই মহাসমাবেশ কার্যকারী হবে না। বাইশটা ঘোড়া দিয়ে রথ টানতে গেলে, তার সারথি লাগে।
No comments:
Post a Comment