Wednesday, August 12, 2015

নারী পুরাণ

আজ আজকালে বেশ ভাল নারীবাদি একটা লেখা দেখলাম। লেখিকাকে চিনি না। তবে বক্তব্য সংক্ষিপ্ত । পুরুষের চোখ যেখানে সর্বদাই নারীকে মেপে চলেছে-অথবা পুরুষের কামলোলুপ দৃষ্টিতে নারীর নির্মান যেখানে  ঘুন পোকা-সেখানে আল হোপ লস্ট। নো লাইট এট এন্ড অব দ্যা ট্যানেল।

 নারী হয়ে যেহেতু জন্মায় নি-সেখানে একজন মেয়ে ট্রামে বাসে রাস্তায় উত্তক্ত হলে বা পুরুষের হাতে মনে মলেস্ট হলে, অনুভূতি কেমন হতে পারে-কতটা ট্রমাটিক হতে পারে সেই অভিজ্ঞতা-তা নিয়ে আমার লেখার চেষ্টা হবে ধৃষ্টতা।

 কিন্ত সামহাও আমার উলটো অভিজ্ঞতাও কিছু হয়েছে-এবং সেগুলো লেখা সমাচীন বোধ করছি। এগুলো ল না এক্সেপশন টু ল্য- জানা নেই।  কোন জেনারালাইজেশনে যাব না। আবার লিখি ইহা একান্তই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা।

   প্রথম অভিজ্ঞতা কৈশরকালে । করিমপুরের খরে নদীতে বিজয়া দশমীতে বিরাট নৌ বাইচ হত। এখন সেই নদীকে মেরে ফেলা হয়েছে। কিন্ত এককালে শারদকেলির জন্য সে নদী ছিল দুইকুল ছাপানো। নৌবাইচে অংশ নিত কয়েকশো নৌকা। মফঃশহরের সব উঠতি ছেলে মেয়েই সেদিন নৌকায় উঠত। ওই রক্ষণশীল সমাজে বিজয় দশমীর দিনটা ছিল ব্যতিক্রম। ছেলেরা নৌকায় বসত প্রচুর লজেন্স এবং ফুল নিয়ে। ছেলেরা মানে সব উঠতি কিশোর -কিছু সদ্য গোঁফাওয়ালা যুবক। নৌকায় নৌকায় ইচ্ছা করে ধাক্কা মারা ছিল খেলা। আর ধাক্কা মারার সময় এক নৌকার ছেলেরা অন্যনৌকার মেয়েদের দিকে ছুঁড়ে দিত লজেন্স, ফুল। যে মেয়ের দিকে যত বেশী লজেন্স আর ফুল ছোঁড়া হত, গর্বে বুক ফুলে উঠত তারই।

  এমনিতে বেশ নির্দোশ ব্রজকূলধামের হোলিটাইপের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন। রক্ষণশীল সমাজে তিনশো চৌশট্টিদিন ব্যথা চেপে, ওইদিনটিতেই যা চপ আলুভাজা খেয়ে নেওয়া যায় আর কি। তখন বয়স সবে চোদ্দ থেকে পনেরো। বয়ঃসন্ধির কাল। সেবারই প্রথম লক্ষ্য করলাম কিছু বখাটে ছেলেরা মেয়েদের স্তন লক্ষ্য করে লজেন্স ছুঁড়ছে। সালোয়ার কামিজে ঢাকা  কিশোরীদের সদ্য ওঠা স্তনবৃন্তের রেখা যেন বুলস আই। সেখানে ছুড়তে পারলে স্কোর দশে দশ! আগের বছরগুলোতে আসলে খেয়াল করি নি। হয়ত তখনো মেয়েদের উপত্যকা আর পার্বত্য অঞ্চলের পার্থক্য করার মতন হর্মোন দেহে আসা শুরু হয় নি।

  যাইহোক, আমি বেশ রক্ষণশীল সুবোধ বালক হিসাবেই পরিচিত ছিলাম। এই নয় যে ব্যপারটা আমি উপভোগ করি নি । কিন্ত পরের দিন বিজয়ার প্রনাম সারতে গিয়ে এক দিদিকে বলেই ফেল্লাম-আচ্ছা কালকে কিন্ত ছেলেগুলো বেশ বাড়াবাড়ি করছিল! নিজেকে সুবোধ প্রমান করা আমার উদ্দেশ্য ছিল কি না জানি না-পুরুষকূলের পক্ষ থেকে বেশ অপরাধবোধের কারনে বলেই ফেললাম। সেই দিদিত হেঁসেই অজ্ঞান!! আরে বলিস কি!! ছেলেরা ওইটুকু "ছেলেমি" না করলে নাকি মেয়েরা তাদের ছেলে বলে মনেই করে না!! মানে আমার মতন সুবোধ বালক "সেজে" থাকা ছেলেরা আসলেই  ঢ্যাঁড়স !!

  সেই বছরই বোধ হয় আবুল বাশারের একটা অদ্ভুত গল্প পড়ি দেশে। গল্পটা এক কালো কুৎসিত মেয়েকে নিয়ে। যাকে কোন পুরুষ চাইছে না। মেয়েটার বিয়ে হচ্ছে না। বাড়িতে সারাদিন গঞ্জনা।   গল্পে সেই মেয়েটি  রেল লাইনের ধারে জঙ্গলে ধর্ষিত হবে । পাড়ার বখাটে ছেলেটা ধরা পড়বে। ছেলেটিকে যখন পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে মেয়েটা আসলে হতবাক। ছেলেটাকে সেই চিনিয়ে দিয়েছে । কিন্ত মনের গভীরে কোথাও ছোট্ট একটা ব্যথা। ওই ছেলেটি ছাড়া আর কেও ত তার দেহটা চায় নি-ও আর কোনদিন সেভাবে উপলদ্ধি করে নি নারীত্ব!

গল্পটা পড়ে আমি হাঁ হয়েছিলাম বহুদিন। যাইহোক, যত বড় হয়েছি বুঝেছি নারী জাতি বেজায় জটিল।  কি যে এদের মনে, মুখে আর হৃদয়ে, তা সর্বশক্তিমান আল্লাহওর অসাধ্য জানা।

আমার লেখার উদ্দেশ্য এই না যে আমি দাবী করছি মেয়েরা ধর্ষন উপভোগ করে। একদম এই ধরনের কোন কিছু দাবী আমি করছি না।  তবে মেয়েদের মন, মুখ এবং হৃদয় একশো কুড়ি ডিগ্রী বিপরীতেই থাকে।




1 comment:

Unknown said...

অসাধারণ এক ছোঁয়া দিয়ে গেল এ লেখা !