বিধান রায়ের মুল্যায়ন নিয়ে বামেদের সাথে আমজনতার মিলবে না -এটা সাদা কথা। এবার দেখা যাক বিধান রায়কে নিয়ে বামেদের মুল্যায়ন আদৌ ঠিক কিনা। কারন আমাদের মতন আম বাঙ্গালির চোখে উনিই বাংলার সেরা মুখ্যমন্ত্রী। সুতরাং বিধান রায়কে নিয়ে সুস্থ বিতর্ক হৌক। বামেরা তাদের যুক্তি দেখাক। আমি আমার বক্তব্য জানাচ্ছি কেন বিধান রায় বাংলার সেরা মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজনীতিবিদ
(১) উনি বেঙ্গল লেজিসলেটিভে আসেন ১৯২৫ সালে, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ক্যান্ডিডেট হিসাবে। ব্যারাকপুরে সুরেন ব্যানার্জিকে পরাস্থ করেছিলেন প্রথম নির্বাচনে একজন আনকোরা নির্দলীয় পার্থী হিসাবে!! কারন তদ্দিনে বাংলার মানুষ সমাজসেবী নিঃস্বার্থ বিধান রায়কে চিনে গেছে-তাই পোড় খাওয়া সুরেন ব্যানার্জি তার কাছে হেরে যান!
(২) উনি কংগ্রেসের গোষ্ঠিবাজি, দলাদলিতে কোন কালে ছিলেন না । পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হতেও চান নি। কঠিন সময়ে পশ্চিম বঙ্গের হাল ধরে ছিলেন শুধু গান্ধীজির অনুরোধে। তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার দেখলে দেখা যাবে তিনি গঠনমুলক কাজে জড়িয়ে ছিলেন সারা জীবন ।
শুধুত কল্যানী, হলদিয়া, দুর্গাপূর না -যাদবপুরের টিবি হাসপাতাল, চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতাল থেকে আরো একডজন স্পেলাসিস্ট সরকারি হাসপাতাল তার হাতে তৈরী। তার জ্যোতিবসুর অবদান কি? তার আমলে রক্তচোষা প্রাইভেট আমরি, রুবি ছাড়া বলার মতন কি তৈরী হয়েছে??
শুধুত কল্যানী, হলদিয়া, দুর্গাপূর না -যাদবপুরের টিবি হাসপাতাল, চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতাল থেকে আরো একডজন স্পেলাসিস্ট সরকারি হাসপাতাল তার হাতে তৈরী। তার জ্যোতিবসুর অবদান কি? তার আমলে রক্তচোষা প্রাইভেট আমরি, রুবি ছাড়া বলার মতন কি তৈরী হয়েছে??
(৩) সেই ১৯২৭ সালেও, বিধান রায় হুগলী নদীর দূষনের বিরুদ্ধে সরকারি স্টেপ নিতে লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে বিল আনার চেষ্টা করেন, দূষনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলেন। আর তার ৭০ বছর বাদে জ্যোতি, বুদ্ধ বা মমতার কাছে এসব দূষন মাথায় ঢোকার বস্তু না । বিধান রায়ের রাজনৈতিক চেতনার মূলে ছিল সবার জন্য সুস্বাস্থ্য, সুচেতনা । মমতা, জ্যোতি বুদ্ধ এদের রাজনীতি ভোট গোনা। সুতরাং আমের সাথে আমড়ার তুলনা করে লাভ কি?
(৪) উনি একজন সফল সমাজতন্ত্রী। কোলকাতা কর্পরেশনে ১৯৩১-৩৩ সালে তিনিই প্রথম বিনা পয়সায় চিকিৎসা এবং শিক্ষার জন্য ছোট ছোট কেন্দ্র খোলেন। তার মুখ্যমন্ত্রিত্বে পশ্চিম বঙ্গে সরকারি শিক্ষা এবং সরকারি চিকিৎসার প্রসার হয়েছে। আর জ্যোতি বুদ্ধ মুখে সমাজতন্ত্রের বুলি কপচিয়ে প্রাইভেট নার্সিং হোম আর প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ পেদে বেড়িয়েছে। সরকারি পরিশেবা ধ্বংস হয়েছে। সরকারি পরিশেবা ধ্বংস করে শিক্ষা এবং চিকিৎসার বেসরকারিকরন সিপিএম করেছে। সুতরাং প্রকৃত সমাজতন্ত্রী, সফল সমাজতন্ত্রীকে আপনারাই জেনে নিন।
আমি কি দিয়ে মাপবো বিধান রায় বনাম জ্যোতি বুদ্ধ মমতাকে?
মেধা? সেক্ষেত্রে এদের কেও বিধান রায়ের নোখের যোগ্যও না !! একজন এফ আর সি এস ডাক্তারের সাথে বাপের পয়সায় পড়াশোনা করা ফেইলড ব্যারিস্টারের তুলনা কি সম্ভব?
সরকারি পরিশেবা ? বিধান রায় যেটা তৈরী করেছিলেন, জ্যোতি সেটা ধ্বংস করেছিলেন। এনিয়ে আশাকরি বিতর্কে যাবেন না । কল্যানী, দূর্গাপূর আজকে শশ্বান শহর । অথচ এগুলোর প্রান প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বিধান রায়ের হাতে। সি এম সি, এন আর এস বিধান রায়ের আমলে কি ছিল, আর সিপিমের আমলে কি ছিল-সেটা যেকোন বয়স্ক লোককে জিজ্ঞেস করুন-তর্কে যেতে হবে না ।
উন্নয়ন, শিল্পায়ন নিয়ে কথা বললে বিধান রায়ের সাথে বাকীদের তুলনা করতে, মাইক্রোস্কোপ লাগবে!
ভিশন ?
১৯২৭ সালে যে লোকটা পরিবেশ দূষনের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার দূরদর্শিতা দেখায় আর তারপরে কোনদিন কোন বাঙালী রাজনীতিবিদ দূষনের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার দূরদর্শিতা দেখাতে পারে নি-তাহলে জ্যোতিবোসের মতন অতি সাধারন মধ্যমমেধার মানুষ যিনি পশ্চিম বঙ্গকে ধ্বংস করার রাজনীতি ছাড়া কিছু দেখাতে পারেন নি, তিনি কোন যোগ্যতায় বিধান রায়ের ত্রিসীমানাতে আসেন?
আমি বিধান রায়ের পক্ষে আরো অনেক কিছুই লিখতে পারতাম। এবার বামেরা তাদের বক্তব্য বলুক যুক্তি তথ্য দিয়ে।
No comments:
Post a Comment