Wednesday, November 26, 2014

বৌ এর চেঁচামেচি শুনলে হেভি দুঃখ হয় দাদা

                                        (১)
-দাদা একটা ফোন করবেন
-কেন ?
-দাদা একবার করুন না আমার রাতের দিকে

  ছেলেটা আমার জুনিয়ার এবং ভক্ত পাঠক। ভারতের টাইম রাত ১১টায় ধরলাম তাকে।

-দাদা, একটা পারসোনাল প্রবলেমে সাজেশন চাইছি...

- বলে ফেল। আমি কিন্ত কাট আন্ড ড্রাই সমাধান দিই

- দাদা একটা হেভি প্রবলেম। বৌ নিয়ে ফেঁসে আছি

- সে ত বৌমাত্রই  গলার ফাঁস-তুমি ব্যতিক্রম কে বললো?

- না দাদা। আমার মাত্রাটা আলাদা

-কেন

 -আমার বৌ হেভি শর্ট টেম্পারড দাদা। রাগলে মাথা ঠিক থাকে না

 - কোন হালার  বৌ কুল টেম্পারড বলে তোমার মনে হল ?

 - না দাদা। আমার কেসটা আলাদা। একদম আলাদা । বাড়িতে থাকলে মায়ের সাথে বৌএর চেঁচামেচি। হেভিটেনশন । অফিসে কাজ করতে পারি না । বাড়িতে ঘুম হয় না ।

-তাহলে আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে থাক...

- থাকতাম ত। সেখানেও সমস্যা। সব সময় চেঁচামেচি। মায়ের কাছে পালিয়ে যেতাম। পালিয়েও নিস্তার নেই । পালালে আরো চেঁচামেচি।

- সেত সব বৌরাই চেঁচামেচি করে। কিচির মিচির করে। ওটা ওদের ডিপার্টমেন্ট। ওসব সিরিয়াসলি শুনে লাভ নেই -রিয়াক্ট করলে লোকসান বেশী

- ওভাবে কি থাকা যায়। সংসারে থাকলে বৌ উল্টোপালটা কথা বললে আপনি কি করে চুপ করে বসে থাকবেন

- যদি বৌ এর কথায় সিরিয়াসলি রিয়াক্ট কর তার পরিনতি ভাবলেই চুপ করে বসে হজম করাই ভাল । সংসারে টিকে থাকার জন্য বাঙালী পুরুষের একটাই স্ট্রাটেজি। কথামৃত।  সংসারে সন্নাসীর মতন থাকতে হয় পুরুষকে। বৌ হচ্ছে কামান। তুমি স্টিলের প্লেট। একের পর গোলাগুলি চললেও স্টীলের প্লেটের কিছু হয় না । ধাক্কা খেয়ে ফিরে যাবে। সংসারে সেন্সিটিভ, সেন্টু হয়েছ কি, গেলে। সব যাবে। বৌ এর কথা এক কান দিয়ে শুনে অন্যকান দিয়ে ড্রেনে ফেল। ওটাই সমাধান

-আমার দাদা অত নির্লিপ্ত  হয়ে থাকা সম্ভব না -বৌ এর চেঁচামেচি শুনলে হেভি দুঃখ হয় দাদা ।রাগে ব্রহ্মতালু জ্বলে।


- তাহলে দুঃখও পাও। আরো বেশী করে পাও।  কেও সাধ করে আগুনে হাত দিলে আগুনে হাত পুড়বেই

-তাহলে আপনি বলছেন বিয়ে করা মানে আগুনে হাত দেওয়া

-আজ্ঞে না ,  বিয়ে করাতে অসুবিধা নেই । তবে বিয়ে করার পর কোন পুরুষ যদি মনে করে বৌ তার আশানুরূপ ব্যবহার করবে আর না করলে সে বৌকে যৌত্বিক ব্যবহার করতে বলবে,এবং বৌ  সেটা  শুনবে , সেটা নিরেট গর্ভতুল্য প্রত্যাশা।

-তাহলে আমার আশা নেই ?

-নেই কে বললো? তোমাকে কে বলেছে তোমার মা আর বৌ এর মধ্যে মাথা গলাতে? মেয়েদের মনের তুমি কি বোঝ?

-কি করবো বলুন ত? দুজনেই ঝগড়া করে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে অফিসে ফোন করে, একসাথে। হেভি চাপ মাইরী।

-সহজ সমাধান। তাদের বলতে দেবে। বলা হয়ে গেলে বলে দেবে -এটা তোমাদের ব্যপার-তোমাদের নিজেদের মেটাতে হবে।  নিজে ঢুকবে না । দুনিয়ায় কোন দুই নারী একসাথে থাকতে পারে না -তুমি শালা কে?  তাদের ঝগড়ার দ্বায়িত্ব নেওয়ার? যে পুরুষ মেয়েদের ঝামেলার মধ্যে ঢোকে, সংসার জীবনে তার ভবিষ্যত নেই ...।।

                                                         (২)

-সে দাদা বলা সহজ। কি করে মেনে নিই বলুনত? সব কিছুতেই কি আমি দোষ। সব দোষ আমার মেনে নিই কি করে বলুনত ?

-সেটা বিয়ের আগে ভাবো নি?

-মানে?
 -তোমার কি মনে হয় বিবাহিত জীবনটা ইন্ডিয়ান ডেমোক্রাসি?  বৌ একটা কিছু বললে, তুমি বিরোধি পার্টির মত বলবে আর পাড়ার জনগন মাই মিডিয়া তা শুনবে ?
   বিবাহিত জীবন হচ্ছে নাৎসি কন্সেট্রেশন ক্যাম্প। বৌ হিটলার, তুমি ইহুদি। তোমার মান ইজ্জত সব কিছু বাইরে। ভেতরে ওটা কন্সসেন্ট্রেশন ক্যাম্প-বাইরের লোকেদের কাছে দেখাবে সে কত বাধ্য !!

-ওসব মানা সম্ভব নই দাদা, তাই বৌকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিলাম। এবার উকিলের নোটিশ পাঠাব!!
শুধু মেয়েটার জন্য কি করব বুঝতে পারছি না ...

-বুঝতে পারছ না মানে?? তোমার কি মনে হয় ডিভোর্স করে আরেকটা বিয়ে করলে বাধ্য বৌ পাইবে???

-না দাদা। এই সব ঝামেলা আর সহ্য হয় না জানেন ত।

-তা বিয়ে করতে এসেছিলে কেন?

-দাদা কে জানত বলুন ত। বিয়ের পর এই হাল হয়। জানলে কি আর বিয়ে করতাম!!

-কিন্ত এখন ত বিয়ে মেয়ে সবই হয়ে গেছে। বৌ ছাড়া থাকতে পারলেও মেয়ে ছাড়াত থাকতে পারবে না

-সেটাই ত সমস্যা দাদা। মেয়েটাকে হেভি মিস করছি জানেন!!

-সেটাই স্বাভাবিক। বৌ কি ফিরতে চাইছে??

-সে দাদা এখন রাত বারোটা বাজে। ফোন করলে এখুনি ফিরবে!!

-তাহলে সেটাই কর

-কি বলেন দাদা-আবার, সেই ঝামেলা। অফিসে বৌর ধমক, মায়ের কান্না। খাওয়া নেই । ঘুম নেই । এই বেশ ভাল আছি কদিন জানেন

-সেত বৌ ছাড়া সবাই ভাল থাকে। মেয়ে ছারা কিন্ত থাকতে পারবে না । তাকে ফেরাতেই হবে। অলটারনেটিভ নাই।  ছেলে মেয়ে হয়ে গেলে অল্টারনেটিভ থাকে না

- বৌ আবার ফিরলে মারা যাব দাদা। জানেন আমার সুগার, ব্লাড প্রেসার---

-তার জন্যেত তুমি দায়ী হে-কে বলেছে তোমায় বৌ আর মায়ের ঝগড়ায় কান দিতে। কান দেবে না । যেদিন দুজনে ঝগড়া করবে হোটেলে থাকবে । নইলে বেলুড় মঠ। তাদের ঝগড়া না থামলে ফিরবে না । মেয়েরা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করতে ভালবাসে। তাদেরকে তাদের মত ঝগড়া করতে দাও। সেটাই তাদের স্পেস। তুমি গিয়ে হোটেলে থাক যেদিন ঝগড়া করবে। তবে বৌকে ফেরানোর বদলে, উকিলের কাছে গেলে সমস্যা বাড়বে-কমবে না । দাম্পত্য জীবনে উকিল ঢুকলে, ফাল করে বেড়োবে।

-ঠিক আছে দাদা। আরেকবার দেখি।

No comments: