Tuesday, April 28, 2015

বাল্টিমোর রায়োট

পৃথিবীতে যাহাই ঘটুক না কেন বামেরা তাহাতে শোষন নিপীড়ন এবং বঞ্চনা খুঁজিয়া পাইবে। দক্ষিনপন্থীরা যেমন সব কিছুতেই "গেল গেল" কন্সিপিরাসি খুঁজিয়া পান। বাল্টিমোরের রায়োট ইহা আরেকবার প্রমান করিল। বাল্টীমোর শহরের ৮০% অধিবাসী কালো। মেয়র এবং সিটি কাউন্সিলর কালো। পুলিশ কর্তা কালো।  শহরের দোকানদারদের ৭০% কালো। শহরে সিকিউরিটি মল বলে একটি মল আছে, যাহার প্রতিটি ক্রেতা বিক্রেতা কালো।

 কালো কিশোরের দল কালো দোকানদারদের পসরা লুঠ করিয়া, কালো পুলিশ পিটাইয়া, বর্ণ বিদ্বেশের প্রতিবাদ করিতে ছিল? মাই ফুট!

 যে ঘটনা হইতে উৎপাতের শুরু-তাহা বিচার করা দরকার।  তাহা হইতেছে ফ্রেডি গ্রে নামে একটি ড্রাগ এডিক্ট অপরাধ প্রবণ কালো তরুনের পুলিশ কাস্টডিতে মৃত্যু । মৃত্যুর কারন এখনো পরিস্কার নহে।  কোন ১০০% প্রমান নাই পুলিশের বাটানে উহার মৃত্যু হইয়াছে-হ্যা কিছু থিওরী আছে। তাহার জন্য ছজন পুলিশ অফিসারকে সাসপেন্ড ও করা হইয়াছে। পাঠক মনে রাখিবেন, এস এফ আই লিডার সুদীপ্তর পুলিশ কাস্টডিতে মৃত্যুতে কোন পুলিশ সাসপেন্ড হোন নাই- কোন তদন্ত কমিটি ও বসে নাই! এক্ষেত্রে দুটিই হইয়াছে!

  ফ্রেডিগ্রের মৃত্যুতে নাকি বাল্টিমোরের কালো জনতা ফুঁসিতেছে। ইহা পুরা বুলশিটিং। তাহা আজ সি এন এনের নিউজে পরিস্কার যখন আমরা দেখিলাম একটি মাতা তারা রায়োটিং টিন এজার পুত্রকে পিটাইতেছে ইহা কহিয়া-আমার পুত্র আরে ফ্রেডি গ্রে হৌক-ইহা আমি চাই না । কোন মাতা চাহিবেন তাহার পুত্র ড্রাগ এডিক্ট হইয়া চব্বিশ বছরে পা রাখিবার পূর্বেই দশবার জেলে যাক ?  অহো-কিছু কালো নেতা এবং গ্যাং লিডার নিজেদের কমিউনিটি প্রতিপত্তির ধরিয়া রাখিবার আছিলায় কাল ফ্রেডি গ্রের মৃত্যুতে শান্তিপূর্ন বিক্ষোভ দেখাইতেছিলেন। ইহাতে বাল্টিমোরের ড্রাগখেকো কালো টিনএজাররা সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়াইতে থাকে "পার্জ"।  উহারা এই বিক্ষোভকে দোকান পাট ( যাহা কালো লোকেদেরই সম্পত্তি) লুঠ করিবার লাইসেন্স হিসাবে ব্যবহার করিতে থাকে। ইনফ্যাক্ট কালো নেতা এবং গ্যাং লিডাররা লুঠ শুরু হইবা মাত্র পুলিশের সাথে যোগদান করিয়া অনেক সম্পত্তি বাঁচাইয়াছে। ইহা মিডিয়াতেও আমরা দেখিয়াছি।

 কিছু ড্রাগ এডিক্ট টিন এজারদের লুঠপাটকে বিপ্লব এসে গেছে টাইপের ঢাউস নিউজ করিয়া অতিবাম ওবেব সাইটগুলি চাপাইতেছে। তাহা বাম বাঙালী খাইতেছেও-কারন তাহারা বিদ্রোহ বিপ্লবের গন্ধ দেখিলেই লাইফাইতে থাকেন।  স্যোশাল মিডিয়া যুগে ঘাস সর্বত্রই সুলভ। উনারা ওবামার বক্তব্যও শুনিতে পারিতেন। প্রেসিডেন্ট খুব পরিস্কার ভাবে বলিয়াছেন, কালো কিশোররা ড্রাগ লইবে আর ধরা পরিলে "ভিক্টিমাইজেশনের কান্না গাহিবে"-আর বাটন খাইলে ভাংচুর করিবে-ইহাতে কালোদের মঙ্গল নাই-ইহা কমিনিউটিকে পিছাইয়া দিতেছে।

Friday, April 24, 2015

নেট নিউট্রালিটি-বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া

নেট নিউট্রালিটি নিয়ে বাজারে প্রচুর আওয়াজ! মজার ব্যপার হলো, বর্তমান ইন্টারনেটেই নেট নিউট্রালিটি নেই । না সব বাইট ইক্যুয়াল না । গুগল বা আমাজনের বাইট -আপনি সবার আগে পাবেন। কারন কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক, পেয়ারিং, ডিস্ট্রিবিউটেড প্রসেসিং এবং ডেটাবেসের দৌলতে-বা এদের কম্বাইন্ড এফেক্টে গুগল, ফেসবুক, আমাজন এদের বাইট সবার আগে আসবে আপনার কাছে-যদি চান অফকর্স।  সব থেকে বড় কথা-এই যে ফেবুকার এক্টিভিস্ট গুলো এত বড় বড় কথা বলছে -ফেসবুকের বাইটকে অগ্রাধিকার না দিলে বা তার ব্যবস্থা না করলে -এই যে রিয়াল টাইমে ডিসকাসন , চ্যাটিং-সেগুলোর ক্ষেত্রে প্রেমিকাকে একটা চুমু দেওয়ার পরে, তার চ্যাট মেসেজ আসতে দশ মিনিট দেরী হলে, আপনি কি ফেসবুককে আর ভালোবাসবেন ?

    গুগল, ফেবুক, আমাজন যা পারফর্মান্স দেয়-সেটা ওই ইউটোপিয়ান নেট নিউট্রালিটি মডেলে সম্ভব না -টেকনিক্যালি পসিবল না ।

 বেসিক্যালি সমস্যাটা সেখানে না । টেলিকম বিজনেসের একটা স্যাড, খুব দুঃখজনক দিক থেকে এই নয়েজটা আসছে।  এই যে ধরুন আপনি মাসে ১০০০ টাকা ইন্টারনেট বিল দিচ্ছেন- বা ১২০০ টাকাতে ডেটাপ্ল্যান নিয়েছেন-এই টাকাটা কে পায়? এটা কি ভারতে এয়ারটেল আর আমেরিকাতে ভ্যরাইজেন পাচ্ছে? ওপর থেকে সেটা দেখতে মনে হয় কারন-টাকাটা ওরাই নিচ্ছে। কিন্ত বাস্তবে ওই টাকার বড় অংশ চলে যায় ফাইবার অপ্টিক্সে রিয়ালস্টেট ফি, স্পেক্ট্রাম লাইসেন্স ফি দিতে। ফলে ক্যারিয়ারা বিজনেস বাড়াতে পারছে না খুব বেশী। এতে ইকুইপমেন্ট ম্যানুফাকচারারা পাতি শুয়ে গেছে। আমি আমার চাকরি জীবনের ৭০% এই টেলিকম ইকুইপমেন্টে কাটিয়েছি। বর্তমানে সেখানে আবিস্কারের গতি একদম থেমে গেছে।

    অথচ পৃথিবীতে গত দুই দশকে সব থেকে চমকপ্রদ আবিস্কার এবং প্রগতি হয়েছে টেলিকমে যার দরুন পৃথিবীটাই বদলে গেছে। কিন্ত যাদের আবিস্কার এবং গবেষনার জন্য এগুলো সম্ভব হল, তারা এর থেকে কিস্যু পায় নি। টাকা লুঠেছে এবং লুঠছে যারা মাটির মধ্যে ফাইবার অপটিকের কেবল পুঁতেছে। আর গুগল, ফেসবুকের মতন কোম্পানী যারা এই ইন্টারনেট পরিশেবা ব্যবহার করে বিশাল হয়েছে।  টেলিকম ক্যারিয়াররা নামেই রেভিনিউ বাড়িয়েছে। লাভ খুব বেশী হয় না ক্যারিয়ার বিজনেস থেকে।

 অনেকের ধারনা, তারা ইন্টারনেটের বিল পে করেন -এতেব ইন্টারনেটের বাইট বহনের সব খরচ, তারাই বহন করেন। এটা বিরাট ভুল ধারনা। তারা শুধু বাইটটির লাস্ট মাইলের বিল পে করেন। ইনফ্যাক্ট একটা সার্ভার থেকে একটা বাইট যখন আপনার কম্পিঊটারে পৌছাচ্ছে, আপনি তার ২০% বিল মোটে পে করছেন। বাইটগুলো লংডিসটান্স ট্রাভেলের বিলটি কিন্ত সেই ফেসবুক বা ওয়েবসাইটটিই পে করছে। ব্যাপারটা এমন -একটা প্যাকেট মুম্বাই থেকে মেমারীতে আসছে। মুম্বাই থেকে কোলকতার ফেয়ারটা বিক্রেতা কোম্পানী দিচ্ছে। বাকীটা দিচ্ছে ক্রেতা।

 ফলে টেলিকম ক্যারিয়াররা লবি করবেই-যাতে তারা আরোবেশী করে লিগ্যালি আরো সহজে আমাজন বা ফেসবুকের মতন ফাস্ট লেইন তৈরী করতে পারে।  আমার মতে সেটা ভাল । কারন সেক্ষেত্রে বরং আমাজন বা গুগলকে প্রতিযোগিতা দেওয়ার মতন কোম্পানী তৈরী হবে। নেট নিউট্রালিটি বেসিক্যালি গুগল বা ফেসবুকের মতন কোম্পানীগুলো দাবী করে। কারন এতে তাদের সুবিধা। তারা অনেক কম খরচে বেশী বাইট পাঠাতে পারছে। লাস্ট মাইলে। নেট নিউট্রালিটি উঠে গেলে, ইউটিউব সবার আগে বন্ধ হবে।  কারন ইউটিউব প্রায় সর্বত্র ব্যান্ডউইথের ৭৫% খায়, অথচ তার জন্য গুগলকে এক্সট্রা পে করতে হয় না । এতে অন্যান্য পরিশেবার ক্ষতি হয়। বর্তমানে আই ও টি আসছে। এই ভেঙে পড়া ইন্টারনেট ইনফ্রাস্ট্রাকচারের ওপরে মেশিন ডাটা জুরে দিলে, সব কিছু বসে যাবার চান্স আরো প্রবল।  কারন মেশিন ডাটা হিউমান জেনারেট ডেটার থেকে আরো বেশী হবে।

 প্রযুক্তির মধ্যে রাজনীতি ঢোকানো উচিত না । এতে প্রগতির আরো দুর্গতি হবে।

Wednesday, April 22, 2015

সিঙ্গল পয়েন্ট ফোকাস

জীবনে সফল হওয়া বলতে কি বোঝায় তা অবশ্যই বিতর্কিত-কারন জীবনের পরম উদ্দেশ্য বলতে কিছু নেই । সুতরাং সফল হওয়ার সংজ্ঞা আপেক্ষিক এবং সাবজেক্টিভ। আমি যেটাকে সফল হওয়া ভাবব-সেটাকে অন্যরা সফলতার সংজ্ঞা নাও ভাবতে পারে। আপাতত একটা সহজ সংজ্ঞা দিই-জীবনে যে যেটা চেয়েছে-সেটা কতটুকু পেয়েছে-আপাতত চলুন সেটাকেই সাফল্যের মাপকাঠি হিসাবে ভাবি।

      সেই সাফল্যের মাপকাঠিতে মমতা সফল-বুদ্ধদেব বা জ্যোতিবাসুরা ব্যার্থ। মমতার একটাই লক্ষ্য ছিল-সিঙ্গল পয়েন্ট ফোকাস- বাংলা থেকে সিপিএম হটাও, রাইটার্সের দখল। বুদ্ধরা বামপন্থা, সমাজতন্ত্র, কমিনিউজম, শিল্পায়ন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা অনেক কিছু মাড়িয়েছেন-এবং সবখানেই ছড়িয়েছেন। এর মূল কারন সাফল্য পেতে গেলে সিঙ্গল পয়েন্ট ফোকাস থাকতে হয়। মমতার একটাই ফোকাস ছিল-যেকোন মূল্যে সিপিএম বিরোধিতা।  যে কারনে অরভিন্দ কেজরিওয়াল সফল হচ্ছেন এবং আরো হবেন।  একটা জায়গায় ফোকাসটাকে ধরে রাখা।

   ব্যাক্তির জীবনেও সেটা দরকারী। আমি দেখেছি আই আই টির অনেক ব্রিলিয়ান্ট ছাত্র পরবর্তীকালে আমেরিকাতে এসে ক্যারিয়ারে বিশেষ কিছু করে উঠতে পারে নি। অথচ আঁতপাতি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্ররা অনেকেই এখানে এসেছে আই আইটির ছাত্রদের থেকে ক্যারিয়ারের দিক দিয়ে অনেক ভাল করেছে।  যেসব  আই আই টির ছাত্ররা আমেরিকাতে ক্যারিয়ারে ধেরিয়েছে, তাদের ঘাঁটালে দেখা যাবে এদের অধিকাংশর ফোকাসে অভাব ছিল। এবং সেই অভাবটা তাদের জীবনে এসেছে আইডেন্টি ক্রাইসিস থেকে। নিজেদের অন্যরকম ভাবে বলে, অন্যরকম কাজ, জীবিকা সিলেক্ট করতে গেছে-এবং ছড়িয়েছে। সেই সিপিএমের মতন সিঙ্গল পয়েন্ট ফোকাসের অভাব।

 ইনফ্যাক্ট আমার আশেপাশে এত লোক, এত ছাত্রকে উঠতে নামতে দেখেছি-সব কিছুর বিশ্লেষন করে একটাই নির্যাস উঠে আসে। সাফল্য পেতে গেলে একটা পয়েন্ট ফোকাস রাখতে হবে।  আমি এক্টিভিস্ট হিসাবে সফল হতে চাইলাম-এদিকে প্রাক্টিক্যালি এক্টভিজমের নামে অনেক এন জি ও খুলে, গোটা দশেক প্রেম করে, মিডিয়া ইন্টারভিঊ দিলাম-এদিকে কাজের নামে লবডঙ্কা-সেখানেও কিন্ত শুভঙ্করের ফাঁকি কেও এড়াতে পারবে না । ব্যবসা, চাকরী, প্রেম, লেখা-কোথাও এই নিয়মের ব্যতিক্রম হয় না । সমরেশ বসু প্রতিদিন নিয়ম করে আটঘণ্টা ধরে লিখতেন। অথচ, আজকাল কেও কটা কবিতা লিখে, তারপরে ফেসবুক কবিতাগুলো গায়েব করে দিয়েছে বলে নিউজ বার করে বিখ্যাত লেখক হতে চান!!  কত যে প্রতিভাবান খেলোয়ার তলিয়ে গেছে-একটু খেলায় নাম ডাক হওয়ার পরে মেয়েদের হাতছানি এড়াতে না পেরে!  ছাত্র জীবনে অনেক ট্যালেন্টেড ফিজিসিস্ট বা ম্যাথেমেটিশিয়ান দেখেছি-কিন্ত নামী পদার্থবিদ হয়েছে তারাই যারা  ফিজিক্স, পলিটিক্স, কবিতা, প্রেম নিয়ে একসাথে হামাগুড়ি খাওয়ার চেষ্টা করে নি। ফিজিক্সে সিঙ্গল পয়েন্ট ফোকাস রেখেছে দীর্ঘদীন। আমার এক জুনিয়ারের কথা মনে এলে-ছেলেটা দারুন প্রতিভাবান ছিল-প্রিন্সটনে ফিজিক্সে পি এই চ ডি করার পরে, প্রেমে পড়ে সেই ওয়ালস্ট্রীটে হারিয়ে গেল! নোবেল প্রাইজের স্বপ্নের পরিসমাপ্তি !

সুতরাং সব দিক দেখার পর আমার মনে হয়েছে সাফল্যের জন্য প্রতিভা এবং পরিশ্রম অবশ্যই দরকার। সাথে সাথে সিঙ্গল পয়েন্ট ফোকাস সব থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ন। 

Sunday, April 19, 2015

সীতারাম ইয়েচুরী এবং প্রথম বাহাদুর শাহ

সীতারাম ইয়েচুরীর সিংহাসন আরোহনে কিছু কিছু কমরেড আশার ছলনে বুক বাঁধিতেছেন। যদি ভারতবর্ষের বুকে বামেদের ডুবন্ত জাহাজের ক্যাপ্তেন শিপরেক হইতে জাহাজটি সারাই করিয়া আবার  জনসমুদ্রে ভাসাইতে সক্ষম হৌন।  ভারতের গণতন্ত্রে বামেদের বিধি সত্যই বাম। রাজনীতির যুদ্ধে আদর্শ হইতেও সেনাপতির ক্যারিশমা এবং তাহার স্ট্রাটেজি যুদ্ধের ভাগ্য নির্নয় করিয়া থাকে। দক্ষিন পন্থীদের ভাগ্য ফিরিয়াছে-তাহারা নরেন্দ্রমোদির ন্যায় দক্ষ দক্ষিনপন্থী সেনাপতির নেতৃত্বে বাড়িতেছেন। মোদি ম্যাজিক মিডিয়া ম্যাজিক বলিয়া নস্যাত করা সহজ বটে-কিন্ত  গণতান্ত্রিক যুদ্ধ নীতিতে,  তাহাও যুদ্ধের গুরুত্বপুর্ণ স্ট্রাটেজি। মধ্যমপন্থীদের দুঃখের দিন শেষ হইবে কংগ্রেসের অন্তর্জলী যাত্রায়। রাহুল গান্ধীর বদলে কেজরিওয়াল, মধ্যমপন্থীদের নেতা হিসাবে উঠিয়া আসিতেছেন। এবং মধ্যমপন্থীরাও কালক্রমে তাহার মধ্যে দক্ষ সেনানায়ক পাইবেন-যিনি এই গণতান্ত্রিক যুদ্ধের স্ট্রাটেজি বিলক্ষণ  বোঝেন এবং মোদিকে পরাজিত করিবার ক্ষমতা এবং প্রতিভা উভয়ের অধিকারী।

  নেতার অভাবে মাথা ঠুকিতেছেন ভারতের সাবেক বামপন্থী সমর্থক বৃন্ধ। তাহাদের নেতা প্রকাশ কারাতকে ইতিহাস কালিদাসের বামপন্থী সংস্করন বলিয়াই স্বরণ করিবে। এইবার আসিয়াছেন সীতারাম ইয়েচুরি। যিনি ১৯৮৯ সালে পিপলস ডেমোক্রাসিতে চেসেস্কুকে মহান কমিনিউস্ট নেতা এবং.২০১২ সালে উত্তর কোরিয়ার কুখ্যাত ডিক্টেটর কিম জংকে মহান শ্রমিক নেতা বলিয়া  দাবী করিয়াছিলেন। ইয়েচুরি সি বি এস সি বোর্ডের পরীক্ষায় প্রথম হইয়াছিলেন । এহেন যেসব ছাত্ররা পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করিয়া থাকে, তাহারা বুকিশ বলিয়া ভাল এক্সিকিউটিভ হইবার অধিকারী-কিন্ত একটি বৃহৎ দলকে নেতৃত্ব দান করিতে দরকার ভিশন এবং স্ট্রাটেজি। যাহা মোদি এবং কেজরিওয়াল উভয়ই ল্যান্ড স্লাইড বিজয়ে মাধ্যমে দক্ষতার সাথে প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন।  আর বামেদের ভোটার বেসের স্লাইডিং অব্যহত!

 কিন্ত ভারতের বাম আন্দোলনে নতুন ভিশন এবং স্ট্রাটেজি অনুপস্থিত। সেই গতানুগতিক স্টেট ক্যাপিটালিজমের রুমালকে স্যোশালিজমের বিড়াল বলিয়া চালাইবার পুরাতন ভুলগুলি রিপিট করিলে, আম ও ছালা দুই হারাইবার সম্ভাবনা প্রবল।  ল্যাটিন আমেরিকা এবং ইউরোপের সফল বাম আন্দোলনগুলির তিনটি ভিত্তি - প্রথমত তাহারা স্টেট ক্যাপিটালিজম বর্জন করিয়া, কমিউনিটি ক্যাপিটালিজমে ঝুঁকিয়াছিলেন কোয়াপরেটিভের মাধ্যমে । দ্বিতীয়ত লেনিনবাদ, মার্ক্সবাদ সব ত্যাগ করিয়া ইহারা মাটি হইতে বামপন্থার উপাদান খুঁজিয়াছেন যাহাতে ডিরেক্ট ডেমোক্রাসি বা পার্টিসিপেটরী ডেমোক্রাসিকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হইয়াছে। বস্তাপচা ঘৃণ্য পার্টি স্বর্গ, পার্টি ধর্ম, পার্টি ইহকাল পরকাল সুলভ ক্রনিক কমিনিউস্ট ক্রিমিন্যালিজমকে ল্যাটিন আমেরিকার বামপন্থা বহু পূর্বে বর্জন করিয়া কমিউনিটি ভিত্তিক ডেমোক্রাটিক ব্লক বানাইয়াছে। তৃতীয়ত নব্য বামপন্থায় পরিবেশ এবং সবুজের আন্দোলন একটি কেন্দ্রীয় স্থান লাভ করিয়াছে। যাহা ভারতের বাম আন্দোলনে সম্পূর্ন অনুপন্থিত। ইহারা বাতিল তামাকু সেবনেই ব্যস্ত।

  সীতারাম ইয়েচুরী গতানুগতিক বাম আন্দোলনের গতানুগতিক  বুকিশ নেতা।  সিপিএমের জাহাজ পশ্চিম বঙ্গে পুরাই ডুবিত -নেহাত বিজেপিতে নেতা নাই রূপা গাঙ্গুলি আছেন। জাহাজ পুনরায় ভাসাইতে যে দক্ষতা , জ্ঞান এবং নেতৃত্বের দরকার-কোনটাই তাহার নাই।  প্রকাশ কারাত  সিপিএমের আউরঙ্গজেব যিনি কমিউনিজমের বিশুদ্ধতার বল প্রয়োগ করিতে করিতে, সিপিএম সাম্রাজ্যকে ধ্বংস করিয়াছেন। সীতারাম ইয়েচুরীর অবস্থা আউরঙ্গজেব পুত্র প্রথম বাহাদুর শাহের ন্যায় হইবে, যিনি নিজের চোখের সামনে এই সম্রাজ্যের সম্পূর্ন পতন দেখিবেন। সদিচ্ছা থাকিলেও  আটকাইতে পারিবেন না ।

Tuesday, April 14, 2015

হালখাতা

আজ পয়লা বৈশাখ। ছোটবেলায় আমাদের হালখাতার দিন। বাংলার দোকানীদের ওল্ড ক্রেডিট সিস্টেম। ক্রেডিট কার্ড ছিল না ত কি হয়েছে? ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে ছোট ছোট শহরগুলিতে ছিল আত্মীয়তার সম্পর্ক। বাড়ি তৈরীর জিনিস থেকে মুদিখানার বাজার-সব জায়গাতেই খাতা থাকত বাবার মতন মাস্টার মশাইদের। দুই তিন মাসের বাড়ির বাজার ধারে দিতেন তারা। ওই  লোক্যাল ক্রেডিট সিস্টেম না থাকলে মাস্টারমশাইদের সংসার টানা কঠিনই হোত আজ থেকে ত্রিশ চল্লিশ বছর আগে।  সেই আশি নব্বই এর দশকে শিক্ষকদের মাস মাইনে ত্রিশ চল্লিশ হাজার হয় নি। বেশ মনে আছে তখন একজন রাজমিস্ত্রি বা ভাল ছুতোর মিস্ত্রির থেকে খুব বেশী ইনকাম করতেন না স্কুলের মাস্টারমশাইরা। সরকার সেকালেও ডেফিসিটে রান করত। ডিসেম্বরেই সরকারের হাঁড়িতে মা ভবানি। জানুয়ারী থেকে মার্চ মাসে শিক্ষকদের মাইনে হত না । এপ্রিলে গিয়ে এক্কেবারে তিনমাসের মাইনে দিত সরকার। ওই তিনমাস শিক্ষক ফ্যামিলিগুলির কষ্টেই দিন কাটত। ভরসা ছিল লোক্যাল ক্রেডিট সিস্টেম-বা খাতায় লিখে নেওয়া।  পয়লা বৈশাখে সেই ধারের কিছুটা শোধ করার রীতি। কারন ওই দিন পুরাতন খাতা ছেড়ে নতুন খাতায় হিসাব তুলত দোকানীরা।

 বিকেল চারটের সময় বাবার হাত ধরে বেড়িয়ে পড়তাম।  বড় দোকানগুলোতে শুধু মিষ্টিমুখই হোত না -একটা না একটা মিস্টির আইটেমে চমক থাকত। সাথে নতুন বাংলা ক্যালেন্ডার। মধ্যবিত্তর রংখসা দেওয়ালের শিল্পকলা। চার পাঁচটা দোকান ঘুরতেই পেট ভরপুর। বিকেল পাঁচটা বাজতেই আকাশ আস্তে আস্তে কালো মেঘে মন্দ্রিত -কালবৈশাখী হয়নি এমন পয়লা বৈশাখ গেছে বলে মনে নেই ।

   এখনত আস্তে আস্তে সব ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। সব পস বা পয়েন্ট অব সেল সিস্টেম-সেলস ট্রান্সকাশন খুব ছোটদোকানেও আজকাল চলে যাচ্ছে কম্পিউটারে। আর ক্রেডিটকার্ডের বদৌলতে সেই লোকাল ক্রেডিট সিস্টেম ও আস্তে আস্তে অস্তাচলে। ক্রেতা বিক্রেতা এখন দুই ভিন্নগ্রহের বাসিন্দা। ছোটবেলায় বাবারা কিনতেন পাড়ার অমুক কাকুর দোকান থেকে-যিনি কিনা আমাদের সাহা পাড়াতে থাকা একটা মানুষ -প্রতিদিন আমাদের বাড়ির সামনে দিয়েই দোকানে যেতেন। যাওয়ার পথে দু চারটে কথাও হত।
 আর আমরা কিনি ওয়ালমার্ট টার্গেট থেকে। কোন বিক্রেতা দোকানী নেই -আছে শুধু কর্পরেট রিটেল আর ক্রেডিট কার্ড।

 মানুষের পৃথিবীগুলো যেন কেমন আস্তে আস্তে ছোট হয়ে আসছে।  চারিদিকে যন্ত্র কর্পরেট ক্রেডিট অটোমেশন । তাদের সাথে কথা বলা যায় না , ছোঁয়া যায় না -তারা আমাদের সুঃখ দুঃখের ভাগীদার ও না । এই মানুষ বিহীন পৃথিবীই কি আমাদের ভবিষ্যত? আরো উন্নত ভাবে বাঁচতে গিয়ে বাঁচাটাকেই আমরা হারিয়ে ফেলছি না ত ? 

Monday, April 13, 2015

গাছপাঁঠা

প্রবাস জীবনে যেকটি খাদ্যাভ্যেস হারিয়েছি, তার মধ্যে সবার ওপরে থাকবে এঁচোড়। কচিঘন সবুজ এঁচোড় কষা, চিংড়ি এঁচোড়-আরো কত কি ! বলা হত গোঁশাইদের কাঁচা পাঁঠা। মুর্শিদাবাদে আমার ঠাকুর্দার ছিল এক ছোট কাঁঠাল বাগান । খান চল্লিশেক ছোট বড় কাঁঠাল গাছ ছিল তাতে।  এই মার্চ-এপ্রিল মাস আসতেই নিশ্চিন্দপুরের গ্রাম থেকে আমাদের করিমপুরের বাড়িতে নিয়মিত আসত এঁচোড় আর সজনের ডাঁটা। ইনফ্যাক্ট বাজারের এঁচোড় একটু পেকে যেত বলে বাজার থেকে কেনা এঁচোড় বাবার বা আমার কারোই পছন্দ হত না । একদম গাছ থেকে নামানো টাটকা কচি এঁচোড়ের স্বাদই আলাদা। এঁচোড়া রান্নাতেও স্পেশালিস্ট হাতের টাচ থাকা চায়- আমার জেঠিমা খুব ভাল এঁচোড় রান্না করতেন। এটাও বাঙালদের হাতেই জমত ভাল । এপ্রিল মে মাসের গরমে লাঞ্চে সজনে ডাঁটার চচ্চরি, এঁচোড়ের ডালনা , কাঁচা আমের ডাল-এগুলোর স্বাদ ভোলার নয়।

 আজ দেখলাম, আমেরিকাতে জাতে উঠেছে এঁচোড়। নিউয়ার্ক, লস এঞ্জেলেস, স্যান ফ্রান্সিসকো ইত্যাদি শহরের এলিট রেস্টুরেন্টগুলোতে এঁচোড় এখন ডেলিকেসি ভেগান ডিশ। এখনো চেখে দেখা হয় নি-তবে দেখব শীঘ্রই । এদেশে বাংলাদেশী স্টোরে একমাত্র এঁচোড় পাওয়া যায় ব্রাইন সল্যুশনের কোটোতে। সেটা এতটাই অখ্যাদ্য, ওটা খেলে এঁচোড় নিয়ে যে রোম্যান্টিসিজম আছে কেটে যাবে। এশিয়ান দোকানে মাঝে সাঝে এঁচোড় আসে-কিন্ত গাছ টাটকা না -কিছুটা পেকে যায়।  বাড়িতে কাঁঠাল গাছ লাগানোর অনেক জায়গা আছে-কিন্ত ট্রপিকাল ওয়েদার ছাড়া ওটি হবে না । আমেরিকাতে ফ্লোরিডা ছাড়া আর কোথাও কাঁঠাল বাগান করা সম্ভব না । ইনফ্যাক্ট ফ্লোরিডাতে এবার গ্রামের দিকে কাঁঠাল বাগান দেখলাম ও। 

একটা বাঙালী খাবার বিশ্বজয় করছে-এটাই খারাপ কি? 

Sunday, April 12, 2015

হিলারী ফর প্রেসিডেন্ট

 হিলারী ক্লিনটন প্রেসিডেন্টিয়াল ক্যাম্পেইন শুরু করলেন। দুবছর আগে থেকেই জানা ছিল। তার ঘনিষ্ঠরা সংগঠিতও হচ্ছিলেন-মানে যাকে বলে বেস সলিডিফিকেশন ।  প্রস্তুতি  ভালোই এগিয়ে নিয়ে গিয়ে হিলারী সম্পূর্ন নতুন কায়দায় অভিযান শুরু করলেন। স্যোশাল মিডিয়াতে ভিডিও ছেড়ে। না কোন অনুষ্ঠান, মঞ্চ না -শ্রেফ একটা ভিডিও, টুইট। পরের একঘন্টায় সেই টুইট শেয়ার হল প্রায় তিন মিলিয়ান ( ত্রিশ লাখ)।

 আমেরিকাতে আমার রাজনৈতিক হাতেখড়ি ২০০৭ সালে হিলারীর প্রাইমারীতে। যদিও সেখানে হিলারী হেরেছিলেন, গ্রাসরুট লেভেলে কাজ করতে গিয়ে, আমেরিকান রাজনীতির বেশকিছু অপ্রীতিকর দিকের সম্মুখীন হই । প্রথমত হিলারী কোটেরীতে যারা কাছের লোক বলে পরিচিত, সেই অনাবাসী ভারতীয়রা বেশ হীরক খচিত! সন্ট চাটোয়াল, বিনোদ গুপ্ত, রমেশ শাহ-সব একশে বারকে এক খিলাড়ি-কত যে ফ্রড এবং রেগুলেশন ভায়োলেশন কেস এদের বিরুদ্ধে বলে শেষ করা যাবে না । হিলারী ক্যাম্পেইন ম্যানেজার যিনি ছিলেন, সেই টেরী ম্যাকলীফ-যিনি এখন ভার্জিনিয়ার গর্ভনর মোটেই পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির নেতা নন -অনেক ডুবিয়াস ডিলের সাথে জড়িত। শুধু শ্লোগান সর্বস্বতা, লোককে তাতাতে হবে-এই সব নির্দেশ আসত। ক্যাম্পেইন স্ট্রাটেজি ম্যানেজার হিসাবে টেরী অদ্ভুত রকমের সুপারফিশিয়াল। আমার বেশ মনে আছে ২০০৮ সালের জানুয়ারী মাসে সাউথ ক্যারোলিনা যখন ওবামার সাথে ডিসিসিভ ব্যাটল গ্রাউন্ড হয়ে দাঁড়ায়, টেরী ন্যাপকিন ক্যাম্পেইন পরিকল্পনা করেন। সমস্ত পাবলিক টয়লেটের সামনে দাঁড়িয়ে ক্লিনটন স্বেচ্ছাসেবীদের বলা হল-হিলারী ক্যাম্পেনের প্রিন্টেড ন্যাপকিন বিলি করতে! অন্যদিকে ওবামা স্যোশাল মিডিয়াতেই তার ক্যাম্পেইন সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। মূলত ছোট ছোট গ্রুপ ও ফেসবুক ইভেন্টের মাধ্যমে ওবামা সাপোর্টাররা সংগঠিত হচ্ছিল। অন্যদিকে টেরির নেতৃত্বে হিলারী ক্যাম্পেইন ছিল সেকেলে এবং ট্রাডিশনাল। সেটাই কাল হয় হিলারীর। তিনি ইয়াং জেনারেশনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে ব্যার্থ হোন। তার ফল সবার জানা।

 এবার প্রাইমারীতে তার ধারে কাছে কেও নেই । সেটা বিশাল সুবিধা। রিপাবলিকান প্রাইমারী কে জেতে দেখা যাক। র‍্যান্ড পলের মতন  লিব্যার্টিয়ান তরুন সেনেটের বিরোধি হিসাবে নমিনেশন  পেলে, হিলারীর জেতাতে যথেষ্ট ব্যথা আছে। আর যেহেতু কংগ্রেস এবং সেনেট দুটোই রিপাবলিকানদের দখলে, ডেমোক্রাট হিসাবে প্রেসিডেন্ট হওয়াটাও কাঁটার মুকুট । প্রাক্টিক্যালি রিপাবলিকানদের বিল ভেটো দিয়ে আটকানো ছাড়া, তার হাতে কার্যকরী ক্ষমতা খুব বেশী থাকবে না ।

আমেরিকান গরীব এবং নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষেরা অবশ্য রাজনীতিতে আস্থা হারিয়েছেন। তাদের ধারনা কেওই তাদের জন্য কিছু করবে না । মধ্যে খান থেকে অনেক রাজ্যেই ট্রেড ইউনিয়ান বিরোধি বিল পাশ হয়েছে। আমেরিকাতে লেবার ক্লাস এবং লেবার ইন্টারেস্ট দুটোই ক্রমাগত পিছু হটেছে। এতে আমেরিকা ব্যবসা করার জন্য অনেক বেশি লুক্রেটিভ হয়েছে -কিন্ত আমেরিকাতে মধ্যবিত্ত শ্রেনী আরো বেশী দারিদ্রের পথে। অধিকাংশ মধ্যবিত্তের সেভিংসের যা অবস্থা চাকরি গেলে তিনমাস টানার ক্ষমতা নেই । এডুকেশন লোন পে অফ করতে গিয়ে অধিকাংশ উচ্চশিক্ষিত তরুন আমেরিকান বাড়ি কেনা ত দূরের কথা বিয়ে করতে পর্যন্ত পারছে না । সেভিংস, ইক্যুইটি এসব দেখলে একজন মধ্যবিত্ত আমেরিকানের অবস্থা একজন সম পর্যায়ের মধ্যবিত্ত ভারতীয় এবং চৈনিকদের থেকে একটু না- অনেক খারাপ।  আমেরিকা এখনো পর্যন্ত ভাল তাদের জন্য যারা প্রযুক্তির ব্যবসা করতে চান-নতুন ইনোভেশন আনতে চান ।  দেখা যাক হিলারী মধ্যবিত্ত আমেরিকানদের স্বস্তি দিতে পারেন কি না। আমার ধারনা পারবেন না -মার্কেটের অমোঘ নিয়মেই তা সম্ভব না । কারুর পক্ষেই তা সম্ভব না । মন্দের ভাল -এই হিসাবেই তাকে ভোট দেবে আমেরিকানরা। 

Saturday, April 11, 2015

পিতৃতন্ত্র

বাবা কন্সেপ্টটা উঠে গেলে মানব প্রজাতিতে আরো ভাল সন্তান আনা সম্ভব। এমনিতেই সন্তানের ক্ষেত্রে বাবার ভূমিকা মূলত ছেলে

 মেয়েকে মানুষ করতে। কিন্ত সেক্ষেত্রেও উন্নত দেশে সমাজ, স্কুল এবং রাষ্ট্রই মূল ভূমিকা রাখছে ছেলে মেয়ে বড় করার ক্ষেত্রে। সুতরাং

 "বাবা"  থাকার কি দরকার আমি বুঝছি না -শুধু শুধু কিছু ছেলের [ এবং মেয়ের] জীবন বরবাদ  করা হচ্ছে তাদের জোর করে 

একসাথে স্বামী স্ত্রী হিসাবে রেখে। এর থেকে ভালো সিস্টেম-ফ্যামিলি সিঙ্গল মহিলা বা পুরুষ চাইলে সিঙ্গল পুরুষ কেন্দ্রিক হৌক । সিঙ্গল

 ছেলেদের থেকে ৫০% ট্যাক্স কাটুক সরকার। এবং সেটা মায়েদের দেওয়া হৌক স্যোশাল সাপোর্ট হিসাবে। এই ভাবে ছেলেমেয়েদের 

জন্য বাবা কনসেপ্টটা উড়িয়ে দিয়ে একই সাথে অনেক স্যোশাল ম্যালাডিজ দূর করা সম্ভব। "বাবা" কন্সেপ্ট উঠে গেলে সমাজ আরো

 সাম্যবাদিও হবে। যেহেতু মূলত বাবারাই সম্পত্তি করে বা সম্পত্তির উত্তারাধিকারি হয়ে ভবিষ্যত প্রজন্মকে খোঁড়া করে। " বাবা"

 ব্যপারটা আজ থেকে দশ হাজার বছর আগে মানব সভ্যতায় ছিল না । বাবা এসেছে মূলত ব্যক্তিমালিকানার জন্মের সাথে সাথে।

 ইনফ্যাক্ট বাবা হচ্ছে একই সাথে পুরুষতন্ত্র, সামন্ততন্ত্রের ধারক ও বাহক। সুতরাং বাবার ধারনা সমাজ থেকে লোপ পেলে, অনেক 

পুরুষতান্ত্রিক এবং সামন্ততান্ত্রিক সমস্যা -তথা এই জোর করে দুটো নারী পুরুষকে সংসার নামক খাঁচার মধ্যে রেখে, তাদের জীবন 

এবং সৃজনশীলতাকে ধ্বংস করা বন্ধ হবে। ধর্মীয় মৌলবাদ ও দূর হবে। ধর্ম মানে হচ্ছে এই "বাবা" ব্যপারটাকে টিকিয়ে রাখা -"মা" 

কনসেপ্টটাকে"  গ্লোরিফাই করে।

Wednesday, April 8, 2015

অনেকান্তবাদ এবং প্রকৃত মুক্তমনা

হিন্দুত্ববাদি, ইসলামিস্ট বা লিব্যারালরা কেও কাঊকে জানার চেষ্টা করে না । সবার ধারনা তাদেরটাই সেরা।  এগুলো শ্রেফ অজ্ঞতা এবং মুর্খামি।  এরা জানেই না কোন দর্শন আসলেই কোন সমাধান দেয় না ।  পারসপেক্টিভ দেয়। পারস্পেক্টভের সাথে সমাধান মিশিয়ে ফেললে মুশকিল। নিৎসে পড়লে একটা পারস্পেক্টিভ পাব, মার্ক্স পড়লে আরেকটা লেয়ার খুলবে-তেমন উপনিষদ পড়লে আরেকটা ডাইমেনশন আসবে জীবন দর্শনে। এমন কি রজনীশ দর্শন থেকেও অনেক কিছু নতুন পারসপেক্টিভ অর্থাৎ জীবন নিয়ে নতুন কিছু ভাবার উপাদান পাওয়া যায়। মনের প্রসারতাই আসল লিব্যারালিজম বা উদারবাদ-মনের দরজা জানালা বন্ধ করাটাই মৌলবাদ। মনের প্রসারতা বাড়াতে সব কিছুই পরতে হবে- মার্ক্স , উপনিষদ, জালালুদ্দিন রুমি, এডাম স্মিথ-কোন কিছুই ব্রাত্য না । জৈন ধর্মে অনেকান্তবাদ বলে একটা দর্শন আছে। যা বলে পরম সত্য বলে কিছু নেই -তাই একাধিক সত্য বা রিয়ালাইজেশনের মাধ্যমে এই পৃথিবীকে দেখতে হয়। চিনতে হয়। যিনি শুধুমাত্র ইসলাম বা শুধুমাত্র হিন্দুত্ব বা মার্ক্সবাদ বা যুক্তিবাদের বা লিব্যারালিজমের মাধ্যমেই এই পৃথিবীকে চিনতে চাইছেন, তিনিই মৌলবাদি। যিনি এই সকল মতবাদের মাধ্যমে এই বাস্তবতাকে দেখছেন অনেকান্তবাদের স্বরুপে, তিনিই প্রকৃত মুক্তমনা ।

Tuesday, April 7, 2015

মডারেট, মৌলবাদ এবং নিৎসে

ন্যাপকিন আন্দোলন থেকে নাস্তিকদের উপদ্রব-সর্বত্র রক্ষণশীলদের "চাপা" চাপাতির ভাষ্য এক-সমাজের পরিকাঠামোর মধ্যে রয়েসয়ে থাকোনা বাপু! কি দরকার মানুষের অনুভূতিকে আঘাত করার? আর মানুষের অনুভূতিকি একটি? ধর্মানুভূতি, জবানুভূতি, কাস্টানুভুতি, ক্লাবানুভূতি, রাজনৈতিক দলদাসানুভূতি, দেশানুভূতি, রাজ্যানুভূতি, শহরানুভূতি, সাহিত্যানুভূতি, সিনেমানুভূতি- বিভূতির লিস্ট বড়ই লম্বা! নিউটন বিদেশী বিজ্ঞানী, তাই পাঠ্য বইতে তার স্থান হবে না অথবা কোরান বা গীতা " বিজ্ঞান সম্মত" ধর্মগ্রন্থ-এইসব উদ্ভট অশিক্ষিত জ্ঞান এবং তথ্য দিয়ে ছোটবেলা থেকে আপনার ছেলেমেয়ের ব্রেইন ওয়াশ করা হবে। তাদের ভবিষ্যতকে জাহান্নামে পাঠানো হবে। আর এই অশিক্ষা, কুশিক্ষা এবং অত্যন্ত ক্ষতিকর রাজনীতির সমালোচনা করলে-আপনার প্রতি  "মডারেটদের"  উপদেশ-কেন বাপু-সমাজ যা চায়, সেই ভাবে মানিয়ে চল না ??

  সমস্যা হচ্ছে এক অদ্ভুত পৃথিবীর বাসিন্দা আমরা। যেদিন হিন্দুত্ববাদিদের কাছ থেকে নিউটনকে সরানোর বালখিল্যতা শুনতে হল-সেদিনই জানলাম নাসার নতুন ম্যাগনেটো প্লাজমা রকেটে চেপে মাত্র ৩৯ দিনে মানুষ মঙ্গল গ্রহে যেতে সক্ষম হবে। ভারতীয় উপমহাদেশে মৌলবাদিরা উটের পিঠে চেপে, কেও বা গরুর বাঁট ধরে মধ্যযুগে ফিরে যাওয়ার পাঁয়তারা কষছে। আর এই তথাকথিত মডারেটদের ভূমিকা-কেন বাপু-এদের সাথে একটু কম্প্রোমাইজ করে নাও না ?

নিৎসে যারা পড়েছেন- তারা বিলক্ষন বুঝবেন, মানুষের নির্মানের মূলে "ভয়"। "মডারেট" বলে ছাপোষা শ্রেনীটির এহেন আচরনের কারন ও ওই ভয়। কারন মৌলবাদিরা চাপাতি চালাতে পারে। লিব্যারালরা বড়জোর ছাগু বা হনু বলে গাল দেবে। ফলে নিজেদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত জলে যাচ্ছে দেখেও তারা পেছন বাঁচাতে মৌলবাদিদের প্রশয় দেবেন- একটু কম্প্রোমাইজ করে নাও।

 ভারতীয় উপমহাদেশে ধর্মীয় মৌলবাদ এত গ্রাস করেছে, আর পিছু হটলেই দেশগুলো গৃহযুদ্ধের এবং খাদ্য সংকটের সামনে পড়বে।

মুল সমস্যা হচ্ছে মৌলবাদের বিরুদ্ধে কোন শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি তৈরী হচ্ছে না ।  এই উপমহাদেশের কমিনিউস্ট বা বামপন্থীরা লেনিন থেকে বেড়োতে রাজী না । সেটা আরেক ধরনের ধর্মীয় মৌলবাদ-যা ভাতে মারবে-অর্থনীতি ধ্বংস করবে, দেশটাকেই জেলখানা বানাবে।   কংগ্রেস বা  আওয়ামী লীগের মতন লিব্যারাল ডেমোক্রাটিক শক্তিগুলি নেতৃত্বর লক্ষ্য চুরি চামরি করে নিজেদের আখের গোছানো। তারজন্য পপুলিজম, মৌলবাদের তোষণ সবকিছুই তারা করবে। আপ আশা জাগিয়ে এল বটে-কিন্ত যেভাবে তারা পার্টির মধ্যে ইন্ট্রাপলিটিক্স হ্যান্ডল করতে ব্যর্থ হল-তাতে, সেই আশাও নিভু নিবু।

 আমরা নিরশ্বরবাদিরা একটু আধটু লিখি এইসব মৌলবাদিদের বিরুদ্ধে। ফলে ধবলকার বা অভিজিত রায়দের লাশ পরে রাজপথে। মডারেটরা বলে-কেন লেখ বাপু সমাজের নর্মের বাইরে? স্বীকার করে নিলেই ত ভাল যে কোরান বা গীতা মহান গ্রন্থ-তাতে আজ পর্যন্ত যা কিছু আবিস্কার হয়েছে তা ত আছেই-যা আবিস্কার হয় নি-তাও আছে-আর যেসব আবিস্কার ভুল বলে প্রমানিত হবে-সেসব ও থাকবে!!  কি দরকার গবেষনাতে টাকা ঢেলে? কোরান আর গীতার পন্ডিতদের টাকা দিলে, তারাই ওসব ধর্মগ্রন্থ খুঁজে মঙ্গল গ্রহে রকেটটাকে ৩৯ দিনে পাঠিয়ে দেবেন!! দেশের বিদ্যায়াতন গুলি ছাগল আর হনু তৈরীর কারখানা হলেই ত দেশের মঙ্গল নাকি?

  আসলে ইতিহাস বলছে নিৎসেই ঠিক। মানুষকে ভয় দেখালে সে আস্তিক থেকে নাস্তিকে দুদিনে চেঞ্জ করবে। সোভিয়েত ইউনিয়ানের ইতিহাস তাই বলে। মৌলবাদি থেকে একমাসে লিব্যারাল হবে। কিন্ত লিব্যারালিজমের অভ্যেসের মূলে আছে যুক্তি আর মানবিকতা । সেখানে কল্লা কাটার ভয় দেখানো নেই । তাই আমি সিউর নই ।  লিব্যারাল ভ্যালুগুলো, যা আসলেই শিল্প সভ্যতার উন্নত উৎপাদনের ফলে আমাদের সমাজে এসেছে- তা টিকবে কি না । কারন এই ভ্যালুগুলো মানুষের মধ্যে ভয় দেখিয়ে ঢোকানোর চেষ্টা করা হয় না । ইতিহাসের রায় এই ব্যাপারে খুব করুন। যে, বা যেসব গোষ্ঠি ভয় দেখাতে সক্ষম হবে, বিবর্তনের খেলায়, তারাই জিতবে।  গণতান্ত্রিক কাঠামোতে তা আরো সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 এতেব ন্যাপিকেনে ন্যাপি বা চুমু-চুহা আন্দোলনের কোন ভবিষ্যত নেই । যদ্দিনরা লিব্যারালরা  তুরস্কের মতন মৌলবাদের বিরুদ্ধে আইন করে তাদের পাইকেরী হারে ক্রস ফায়ারে মারতে পারবে- লিব্যারাল ভ্যালুগুলোকে বাঁচানো যাবে না । গণতন্ত্র দিয়ে ঠেকানো যাবে না। সরি ইতিহাসে মানবিকতাবাদি কোন সংস্কৃতি জেতে নি। যারা রাজত্ব করেছে, বা আজো করছে, তারা কব্জির জোরেই টিকেছে। মানবিকতা বা যুক্তি বা লিব্যালার ভ্যালুগুলি লিখে টেকানো অসম্ভব। অসির থেকে মসীর জোর বেশী-এগুলো শ্রেফ রোম্যান্টিসিজম। মৌলবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জিততে এই ধরনের রোমান্টিসিজম থেকে মুক্ত হওয়াই শ্রেয়।

Thursday, April 2, 2015

ভারতের সংবিধানের অনেক সংশোধন দরকার

এস এফ আই এর ছাত্রদের পুলিশ পিটিয়েছে। ওটা কিন্ত বঙ্গের কালচার। পুলিশ ক্ষমতাসীন পার্টির ঠাঙারে বাহিনী। সিপিএমের আমলে পুলিশ কঙু, তিনুদের পেটাতো। তাহলে তৃনমূলের বিরুদ্ধে সিপিএমের ক্ষোভ/অভিযোগ কে শুনবে? সবাই জানে সিপিএম আসলেও ওই ক খ হইবে না । যে যায় লঙ্কায়, সেই আসল রাবন । স্বৈরাচারী রাজার শুধু আলখাল্লা বদল হয়। তাতে বগলে ঘামের গন্ধ যায় না ।

  সমস্যা ভারতের সংবিধানে। পুলিশ কেন রাজ্যসরকারের হাতে থাকবে? আমেরিকাতে পুলিশ জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের হাতে। এখানে অপরাধ করলে গভর্নরকে হামেশাই জেলে ঢোকায় পুলিশ। ফলে কোন রাজনৈতিক পার্টি পুলিশকে নিজেদের ঠ্যাঙারে বাহিনী হিসাবে ব্যবহার করতে পারে না । যা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।

 যেসব ছেলেমেয়েরা কাল লাঠি খেয়েছে-তাদের জন্য দুঃখ হচ্ছে। কিন্ত তাদের রক্তের ওপর ভোট বাক্সে রিটার্ন অব ইনভেস্টমেন্ট হবে না -কারন তারা এমন একটা পার্টির সদস্য যাদের গণতান্ত্রিক কালচারের ওপর সাধারন মানুষত ছেরেই দিলাম-সিনিয়ার পার্টি মেম্বারদের ও বিশ্বাস নেই । খামকা শেয়ালমামা যদি মুর্গীচুরির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে , কে আর শুনবে? বরং সংবিধান বদলের দাবী উঠুক।

"সিপিএম" বা "তৃনমূলকে" জেতানোর চেয়ে, লোকে সিস্টেম বা সংবিধানকে আরো ভাল করার দিকে জোর দিক। সিপিএম বা তিনোরা সিস্টেমের প্রোডাক্ট। মেশিন বাজে হলে, মাল ও বাজেই হবে।