Monday, December 29, 2014

বেতন অসাম্য ও প্রযুক্তি

গোটা পৃথিবীতে এখন দুই মেরুর  বাসিন্দা। একমেরুতে লোকজন প্রযুক্তি বিপ্লবের সুযোগ নিয়ে নিজেদের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থানের উন্নতি করছে। অন্যমেরুতে যারা এটা পারছেনা, তারা ট্রাডিশনাল বা গতানুগতিক উৎপাদন ব্যবস্থায় বাঁচতে গিয়ে আরো পিছিয়ে পড়েছে। আরো গরীব হচ্ছে। ভারতে আই টি কর্মীরা প্রথম মেরুর বাসিন্দা। অন্যদিকে শিল্প-কৃষি শ্রমিক, ব্যাঙ্ক করনিক, আইনজ্ঞ, সাংবাদিক, ট্রাডিশনাল স্কিল্ড লেবার যেমন ছুতোর, রাজমিস্ত্রি এরা দ্বিতীয় মেরুর বাসিন্দা। অনেক ডাক্তার, শিক্ষক প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকলেও যেহেতু শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যে সরকারি চাকরি-সেহেতু, তারা এই হিসাবের বাইরে।  প্রাইভেট টিচারদের মাইনে বেড়েছে খাতা কলমে। কেও তাদের সঠিক মাইনা দেয় না ।

একটু পিছিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে কি মারাত্মক বৈষম্য তৈরী হচ্ছে প্রযুক্তির জন্য। ১৯৯২-৯৫ সালে আই টিতে সিনিয়ার লোকেরা পেত বছরে ৪-৭ লাখ টাকা (ব্যাঙ্গালোরে) ।  ২০০১-২ সালে সেটা হল, প্রায় ১২-২০ লাখ। এখন ব্যাঙ্গালোরে সিনিয়র পজিশনে লোকেরা পাচ্ছে ৩০-৬০ লাখ।  অর্থাৎ মাইনে বেড়েছে প্রায় দশগুন। যদি ডলারে ধরি, তাহলে ইনফ্লেশন এডজাস্টেড ভ্যালু পাব। ,৯২-৯৫ এ ডলার ছিল ৩০-৩৫ টাকা। সুতরাং ডলারে সেটা ছিল ১৩-২০ হাজার ডলার। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ৫০-১০০ হাজার ডলার। অর্থাৎ প্রায় ৫ গুন বৃদ্ধি ইনফ্লেশন এডজাস্টেড।  এবার একজন সরকারি কর্মচারীর বেতন ও কিন্ত বেড়েছে প্রায় ৩-৬ গুন।  ইনফ্লেশন এডজাস্টেড ভাবে দেখলে দুই থেকে তিনগুন। হাউসমেড বা বাড়িতে কাজ করা মেয়েদের বেতন এই সময়ের মধ্যে সমানুপাতিক হারে বেড়েছে। কিন্ত শিল্প শ্রমিকদের বেতন সেই ৯১ এ যারা ৫-১০ হাজার পেতেন এখন বড়জোর পান ১৫-২০,০০০। কি অনেকেই সেটা পান না । অর্থাৎ ইনফ্লেশন এডজাস্টেড হারে দেখলে শিল্প শ্রমিকদের বেতন কমেছে। সাংবাদিকদের ও এক হাল।  '৯৫ থেকে '১৪ এর মধ্যে ভাল সাংবাদিকদের বেতন খুব বেশী হলে বেড়েছে দুই থেকে চারগুন। সেটা ইনফ্লেশন এডজাস্ট করলে নেগেটিভ বা সামান্য বৃদ্ধি হবে। কৃষি শ্রমিকদের লেবার রেট বেড়েছে এই সময়ে প্রায় আড়াইগুন। অর্থাৎ ইনফ্লেশন ধরলে কিছুই বাড়ে নি।  তবে যাদের জমি আছে, তাদের আয় বেড়েছে। এসেট বেড়েছে-কারন জমির দাম বেড়েছে দশগুনের বেশী।  

সব থেকে খারাপ অবস্থা এন্ট্রি পজিশনে। '৯৫ সালে ইনফি এন্ট্রি পজিশনে একজন ইঞ্জিনিয়ারকে দিত ১৩,০০০ -এখন দেয় ১৬,০০০ । সর্বত্র এন্ট্রি পজিশনে মাইনে আসলে কমেছে প্রায় ৫০ থেকে ৬০% যদি ইনফ্লেশন এডজাস্টেড ভ্যালু দেখা যায়। সাংবাদিকতাতে এন্ট্রি পজিশনে কেও আজকাল পয়সা দেয় না ।

অর্থাৎ প্রযুক্তির কারনে বেতনে অসাম্য আরো বাড়ছে। সম্পদেও বাড়ছে।  তবে আস্তে আস্তে প্রযুক্তির কারনে, এই অসাম্য আস্তে আস্তে কমবে। যখন সবাইকে প্রযুক্তির আওতাই আনা সম্ভব হবে।

Sunday, December 28, 2014

শ্রমিক আত্মহত্যা

আজ দেখলাম একজন লিখেছেন হিন্দমোটরসে এক শ্রমিক আত্মহত্যা করেছেন। পশ্চিম বঙ্গে চাবাগান থেকে চটকল, সর্বত্রই ছাঁটাই, রুগ্নতা এবং মৃত্যু মিছিল।

 কেও বিড়লাকে দোষ দিচ্ছেন, কেও রাজনীতি, কেও সরকারকে। বেসিক্যালি ঘোলা জলে মাছ ধরা। শিল্প, কারখানা কোন কিছুই চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত না এযুগে। পুরাতন শিল্পগুলো যে মরবে, এটাই বাস্তব। প্রযুক্তির যুগে কোন কিছুই চিরস্থায়ী না । আজ ফ্লোরিডা থেকে ট্রেনে ফেরার পথে একদা ব্যস্ত শিল্প শহরগুলিতে অজস্র কারখানা কঙ্কাল দেখলাম।  সব দেশে সব রাজ্যেই শিল্প কারখানা মরে। কিন্ত নতুন কারখানাও গজায়। পশ্চিম বঙ্গের সমস্যা হচ্ছে নতুন কোন শিল্প আসে নি। ফলে কর্মচ্যুত শ্রমিকদের পুনঃবাসন হচ্ছে না ।

 আরো একটা বাস্তবকে স্বীকার করা যাক। কারখানা হলেই যে কর্মসংস্থান হবে তা বর্তমান যুগে সত্য না । অটোমেশনের দৌলতে এখন অনেক অনেক কম শ্রমিক নিয়েই চলছে কারখানা।  হাওড়া-চব্বিশ পরগনা বেল্টের অধিকাংশ কর্ম সংস্থান এখন বেয়াইনী ছোট ছোট কারখানা গুলোতে।

পরিস্থিতি কোন সরকার এসে, কোন নতুন রাজনীতি এসে বদলে দেবে এসব আকাশ কুসুম কল্পনা।  এই ইউটোপিয়ান স্বপ্নের জগতে থাকলে আরো শ্রমিক মরবে। এখন যেটা দরকার-সেটা হচ্ছে পুরাতন শ্রমিকদের নতুন স্কিলে রিহ্যাব এবং সেটা সরকার থেকেই করতে হবে। যেমন পুরাতন শ্রমিকদের মোবাইল, কম্পিউটার, আটোমোবাইল সারানোর কাজে ট্রেনিং দেওয়া যেতে পারে।  তার জন্য সরকার থেকে স্কিল রিহ্যাব স্কীম এখুনী চালু করা উচিত।

কারখানা খুলে, টিসিএস ইনফির মতন বড় শিল্প এসে পশ্চিম বঙ্গে দিন বদলাবে এসব নতুন প্রযুক্তির সামনে সব গল্প এখন। ইনফাক্ট, ইনফি, টিসিএস ও কর্মী কমাচ্ছে বা কমাতে বাধ্য হচ্ছে নতুন প্রযুক্তি এবং বিজনেস মডেলের সামনে। কিন্ত কোলকাতাতেই কিছু কিছু ছোট ছোট আই টি কোম্পানী ডোমেস্টিক সস্তার প্রোডাক্ট বার করে ভালোই করে খাচ্ছে।  কর্ম সংস্থান কিন্ত সেখানেই হচ্ছে। অথচ সরকার থেকে কিছুই করে না এইসব ছোট আই টি কোম্পানীগুলোর জন্য। পার্থ চ্যাটার্জি থেকে অমিত মিত্র সবাই নামী দামী শিল্পপতিদের তেলা মাথায় তেল মাখাতে ব্যস্ত-এদিকে সেই তেল কিন্ত আর চুইয়ে পড়ছে না ।

 সরকার দেওলিয়া। ওখানে প্রাইমারী স্কুলের চাকরিও দিতে পারবে না বা দিলে, নিজেদের ছেলে বৌকে দেবে।  বড় শিল্পে কোন কর্ম সংস্থান হবে না অটোমেশনের জন্য।  সুতরাং বাঙালীর সামনে এখন ব্যবসা অথবা আত্মহত্যা ছাড়া কোন উপায় নেই । অন্য রাজ্যে গিয়ে এদ্দিন করে খাচ্ছিল, সেটাও আস্তে আস্তে সম্ভব হবে না কারন বড় শিল্পে ছাঁটাই চলতেই থাকবে। এটা সমস্যার। বাঙালীর না আছে পুঁজি, না আছে বিজনেস স্কিল।  দেখা যাক দেওয়ালে পিঠ ঠেকা একটা জাতি কিভাবে নিজেদের উদ্ধার করে। তবে সমাধান লুকিয়ে আছে কিভাবে এই সব ছোট ছোট আধুনিক শিল্পগুলিকে সরকার সাহায্য দিতে পারে। এই ব্যপারে আমি দেখছি আমেরিকা কি করছে। সস্তায় অফিস দেওয়া থেকে বিজনেস নেটোয়ার্কিং , বিজনেস লোন, মেন্টরশিপ-সমস্ত রকমের সাহায্য দেওয়া হয় আমেরিকাতে যারা প্রযুক্তি ব্যবসায় আসতে চায়। এর একটা মূল কারন, তথ্য অনুয়ায়ী, আমেরিকাতে ৬৭% নতুন চাকরী সৃষ্টি হয়েছে নতুন প্রযুক্তি সেক্টরে-যেগুলি ছোট ছোট টেক কোম্পানী।  বড় কোম্পানীগুলি কর্মী কমিয়েছে আমেরিকাতে। একই ঘটনা ঘটছে কোলকাতাতেও। কিন্ত এখানে সরকার আমেরিকার মতন ছোট কোম্পানীগুলিকে সাহায্য করার জন্য যাযা দরকার তা করছে না । আসলে এই সরকার এত মিডিয়া লাইট খেতে ভালবাসে-এরা ভোট পাওয়ার জন্য শতাব্দি বা মুনমুন সেনের বুকের খাঁজের ওপর যত ভরসা করে-খাঁটি কাজের ওপর করে না । সবটাই যেখানে ধাপ্পাবাজি, কাজের কাজ আর কে করবে?

Saturday, December 20, 2014

সহি ইসলাম এবং ছেঁড়া জাঙ্গিয়ার মালিকের সন্ধানে মডারেট মুসলিম বৃন্দ

পেশোয়ারের নৃশংস শিশু হত্যাকান্ডের পর দেখছি, অনেক "মডারেট" মুসলমানের মনে কোরানে কি আছে, দেখিয়া খুজি ভাই, যদি বিশেষজ্ঞ পাই ( এজ ইফ, কোরান বাংলায় বা ইংরেজিতে পাওয়া যায় না ! বা সেটা নিজে পড়া যায় না ) টাইপের মনোভাব জেগেছে। একজন জানিয়েছেন, কোরান যে সন্ত্রাসবাদ, অসভ্যতা সমর্থন করে না এটা কোরান খুজে পেতে মুর্শিদাবাদের লোকেদের বোঝাতেই পারলেই নাকি, তারা আর মৌলবাদি হবে না ! উনারা নাকি বিদ্যাসাগর, রামমোহনের মতন ধর্ম সংস্কারের মাধ্যমে ইসলামকে ভদ্র সভ্য করে গড়ে তুলবেন!!!! তাতে নাকি কাজ হবে কারন অধিকাংশ সাধারন মুসলমান ধর্মান্ধ!

সমস্যা ত্রিবিধ।

প্রথমত হিন্দু ধর্মে সংস্কারের জন্য হিন্দুত্ব কমে নি বা হিন্দুদের আধুনিকরন হয় নি। হিন্দুদের আধুনিকরন হয়েছে আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে তারা জড়িয়েছে বলে। তাও সেটা শহর এলাকাতে সীমাবদ্ধ।  বিবেকানন্দর হিন্দু ধর্ম সংস্কারে যেটা হয়েছে হিন্দু মৌলবাদিরা গোডাউন আর শোকেশে ভাগ হয়ে গেছে। এই মুহুর্তে মুসলমানদের মধ্যে গোডাউন মৌলবাদি বেশী, শোকেসে কম। বিবেকানন্দ, রামমোহনের প্রভাবে হিন্দু ধর্মে শোকেস মৌলবাদি বেশী গোডাউনে কিছু কম। কিন্ত ব্যপারটা কালেদরে এক। ফলে ভারতে হিন্দুত্ববাদ কিছু কমে নি। তারা ক্রমাগত ক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।

দ্বিতীয় পয়েন্ট ফুকোর ক্ষমতার তত্ত্ব থেকে আসে। উনারা চান একটা অবস্থা সৃষ্টি করতে যেখানে কোরান সঠিক কিন্ত সন্ত্রাসবাদিরা ভুল। কিন্ত কনসেনসাস হচ্ছে কোরান ঠিক, মহম্মদ ঠিক। ফুকোর ক্ষমতার তত্ত্ব অনুযায়ী এক্ষেত্রে আসলেই ক্ষমতা বাড়বে ইসলামের মৌলবাদের কারন ইসলাম বেঠিক, এটা পুরো ত্যাজ্য হচ্ছে। এই জন্য হিন্দুত্ববাদিরা বিবেকানন্দ বিরোধি ইত্যাদি বলে হিন্দুত্বর রথ আটকানো যাবে না । হিন্দুত্ববাদ আটকাতে গেলে বিবেকানন্দের দর্শন এবং জীবনকে আক্রমন করতেই হবে।

 তৃতীয় ভুলটা এই যে ইসলামে সুন্নত বলে একটা ব্যপার আছে। বালকদের হত্যা করা উচিত না অনুচিত-এটা মোটেও কোরান থেকে তেহরকি পাকিস্তান নেই নি। নিয়েছে সুন্নত থেকে বা মহম্মদদের জীবন থেকে। যেখানে সহি বুখারিতে পরিস্কার লেখা আছে বানু কোরজার ইহুদিদের গণ নিধনের সময় মহম্মদের নির্দেশ কি ছিল (Then the Prophet said, "O Sad! These people have agreed to accept your verdict." Sad said, "I judge that their warriors should be killed and their children and women should be taken as captives." The Prophet said, "You have given a judgment similar to Allah's Judgment (or the King's judgment)."Sahih al-Bukhari,5:58:148 )। সুন্নত মানলে সন্ত্রাসবাদ ঠেকাতে পারবেন মডারেট মুসলিমরা ?  হজরত মহম্মদ রাষ্ট্রনেতা যুদ্ধনেতা হিসাবে প্রায় ৭০ টি যুদ্ধ করেছন। যদি সত্য হচ্ছে, এই মহম্মদ  শার্লক হোমসের  মতন এক আরব নেতার ছায়াতে তৈরী এক কাল্পনিক চরিত্র । যুদ্ধে সে যুগে যা করা হত, যথা লুঠ তরাজ, মেয়েদের ধর্ষন করে যৌনদাসী বানানো-এসব কিছুই মহম্মদ করেছেন বা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। সুন্নত মেনে, আই সিসিসরা আজ ঠিক তাই করছে, যা সেযুগে মহম্মদ করেছিলেন। সেযুগে সেসব ঠিক ছিল। এযুগে?? আর সুন্নত কত মারাত্মক তার প্রমান ইরাকে আই সিসিস।  ইমরানা কেস। উত্তরপ্রদেশে ইমরানার শশুর ইমরানাকে ধর্ষন করেছিল। ইমরানা অভিযোগ জানালে, উলেমারা সুন্নত অনুসরন করে নিদান দেন, ইমরানা শশুরকেই বিয়ে করুক!!  কারন? কারন মহম্মদ নিজের পুত্রবধু জয়নাবকে বিয়ে করেছিলেন!!   মহম্মদ যা করেছিলেন শশুররা তাই করুন-পুত্রবধূর দিকে হাত বাড়ান!!

বেসিক্যালি মুসলিম মৌলবাদিরা কিন্ত সৎ। তারা ইসলামে ঠিক যা যা করতে বলা হয়েছে, তারা তাই করছেন। অসৎ হচ্ছে তথাকথিত মডারেট মুসলিমরা। যারা কিছু হলেই সহি ইসলামের বিশেষজ্ঞ খুঁজতে বেড়োন এবং ইহা সহি ইসলাম না -ইসলাম শান্তির ধর্ম বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করেন। সব ধর্মের পাদের গন্ধই বিটকেল-কিন্ত ইসলামেরটা এত বাজে যে ও শান্তির ধর্ম, বিশেষজ্ঞ চাই ইত্যাদি ভুলভাল বক্তব্যে এই ধর্মের দুর্গন্ধ আটকানো যাবে না ।

Thursday, December 18, 2014

পেশোয়ার স্কুলে জঙ্গী হামলা- ইসলাম সম্মত না ইসলাম বিরোধি?

তেহেরকি তালিবান, যে গোষ্টিটি এই নৃশংস হত্যাকান্ডের কান্ডারী, তাদের মুখপত্র উমর খুরসানি জানিয়েছেন, তারা সুন্নত অনুযায়ী কাজ করেছেন। সুন্নত মানে হজরত মহম্মদের জীবনী অনুসরন করে শিক্ষা পাওয়া যায়।  মদিনার নিকটস্থ বানু কোরজায়া ইহুদি উপজাতির ৮০০ পুরুষ এবং "বালক" কে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন মহম্মদ। কারন তারা শত্রুতা করেছিল।  উমর এও জানিয়েছেন [১], যারা এই হত্যাকান্ডকে ইসলাম বিরোধি বলছেন তারা যেন শাহি আল বুখারীর হাদিস পড়ে দেখে নেয়- মহম্মদ বানু কোরাজিয়া ইহুদি উপজাতিকে গণহত্যার সময় নির্দেশ দিয়েছিলেন যেসব বালকদের যৌনচুল গজিয়েছে, তাদেরই যেন শুধু হত্যা করা হয়!!

যারা বলবেন ইহা ইসলামের অপব্যখ্যা-তারা এই বিষয় গুলি নিয়েও ভাবুন


  •    ধর্মগ্রন্থের বাক্যগুলি মধ্যযুগীয়। গঠন দুর্বল। এগুলিকে লিঙ্গুইস্টিকে বলে উইক টেক্সট। মানে একাধিক ব্যখ্যা হতে পারে। মানবিকেরা মানুষের মতন, অমানুষেরা অমানুষের মতন ব্যখ্যা করবে । ফলে ধর্মগ্রন্থ অনুসরন করাটা খুব ভয়ংকর রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। যেটা এক্ষেত্রে হয়েছে। এই নিয়ে আমার একটা বিস্তারিত প্রবন্ধ আছে আগে , সেটা দেখে নিতে পারেন [২]
  •  আরেকটা সমস্যা সুন্নত নিয়ে।  অর্থাৎ মহম্মদের জীবনীকে অনুসরন করা। এখানে সমস্যা দুটী।  মহম্মদ মদিনাতে যখন গেলেন, তখন তার হাতে আল ইসলামের কয়েকশ সৈনিক। এদিকে পেটে নেই খাবার। ফলে মক্কাগামী অনেক ক্যারভান লুঠ তরাজ করেছে মহম্মদের অনুগামীরা এবং মহম্মদ তাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে সেই যুগে আরবে ক্যারাভান লুঠ করা ডাকাতি করা হারাম ছিল না । এখন এই ইতিহাস অনুসরন করে যদি মুসলমানরা ভাবে বিধর্মী লোকেদের ওপর ডাকাতি করা সুন্নত, তাহলে বিপদ আছে। দ্বিতীয় ইস্যুটা এই যে মহম্মদ চরিত্রটাই কাল্পনিক।  এই যে তেহরিক ই পাকিস্তান বলছে, মহম্মদ যৌনচুল গজানো বালকদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন সাহি বুখারি অনুযায়ী-তা এই হাদিস অনুযায়ী মহম্মদের যে জীবনী আমরা জানি, তার কতটুকু সত্য? আমি যেটুকু ঐতিহাসিক রিসার্চ করতে পেরেছি, তাতে এটাই জেনেছি যে সেকালে মক্কায় হানিফ বলে এক প্রগতিশীল অংশের নেতা ছিলেন মহম্মদ। তার বাকী জীবনীর পুরোটাই গল্প। কোন ঐতিহাসিক বা বাস্তব প্রমান নেই । এটা নিয়েও একটা বিস্তারিত লিখেছিলাম [৩]


  এবার আসি একটা বৃহত্তর প্রশ্নে। ধর্ম পালন কি আমাদের জীবনে দরকার? কি দরকার মহম্মদের  কৃষ্ণের জীবনী অনুসরন করে? যেখানে তাদের জীবনে অনেক কিছুই আছে যা বর্তমানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন না ?

   আধ্যাত্মিক গাইডেন্স দরকার-সেটা আমি মানি। কিন্ত তার জন্য কি ধর্মগ্রন্থ দরকার? একদম না । আধ্যাত্মিকতার উৎস জীবনের উদ্দেশ্য খোঁজা। সেটা মধ্যযুগের ধর্মগ্রন্থ যা সম্পূর্ন ফালতু-বোঝা যায় না -সেখানে কেন খুঁজবো? আমি জীবনে উদ্দেশ্য প্রেমে, গানে কবিতায় বিজ্ঞানে কেন খুঁজবো না ?  আমি বিজ্ঞানের মাধ্যমে জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজি। কিভাবে খুঁজি, তার একটা বিশদ বিবরন এই প্রবন্ধে দিয়েছিলাম [৪]। জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজতে আমাকে কোনদিন ধর্মগ্রন্থের বুজরুকির সাহায্য নিতে হয় নি! না কোন গুরুর কাছে দৌড়তে হয়েছে।

 আবার অনেকে বলেন, ধর্ম না থাকলে সমাজে নৈতিকতা থাকবে না ! এটা ফালতু যুক্তি। নৈতিকতা মানে কি? সৎ থাকা।  এটা ধর্ম কেন শেখাবে? প্রতিটা মানুষকে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে, তাকে সৎ হতেই হবে। আমি ব্যবসা করে খাই। যদি কেও আমাকে বিশ্বাস না করে- কে আমাকে কাজ দেবে, বা কেইবা আমার জন্যে কাজ করবে? আর এই বিশ্বাসটা সততা থেকেই আসে।  সততা কেন ধর্মগ্রন্থ থেকে শিখতে হবে? এটাত বাস্তব বুদ্ধি থেকে আসা উচিত।

আমি জানি না বাকিদের জীবনের উদ্দেশ্য কি। তবে এটা জানি আমরা সবাই খাদ্য, যৌনতা, বাসস্থান, সন্তানের জন্য নিরাপত্তা চাই। আর সেটা টাকা ছাড়া আসে না জীবনে। ভাল কেরিয়ার গড়তে গেলে, অর্থ উপার্জন করতে চারটে জিনিস জীবনে জরুরী
 (১) বুদ্ধি   (২) পরিশ্রম (৩) সততা  (৪) সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা।

  ১-৩ অনেকেরই থাকে, কিন্ত সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াটা কঠিন। জীবনের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে গেলে অনেক কিছু নিয়ে বস্তুনিষ্ট নির্মোহ ভাবে বিশ্লেষন করতে হয়। যেমন আমার আই আই টি বন্ধুদের প্রায় সবার মধ্যেই ১-৩ গুনাবলি আছে। তা স্বত্ত্বেও,  ২০ বছর বাদে কেও কেও গুগল আপেলের মতন সংস্থায় লিডার আবার কেও কেও প্রায় বেকার বসে আছে । মধ্যের স্পেক্ট্রামে আছে আরো বেশী লোক।  এর কারন- কোন ফিল্ড উঠছে, কোন কোম্পানী উঠছে, কোথায় উন্নতি করার সুবিধা, কোন কোম্পানী কখন ছাড়া উচিত-এসব অনেক ভেবে কাজ করতে হয়। নইলে গাড্ডায়।  আমি দেখেছি ধর্মীয় মানুষদের একটা প্রবণতা আছে ধর্মের নামে, আল্লার নামে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। তারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় যুক্তি এবং বিশ্লেষন দিয়ে চারিদিকটা দেখে না । ফলে প্রায়শ গাড্ডায় পড়ে। আমার আশে পাশে যত সফল প্রযুক্তিবিদ, ব্যবসায়ী বা বিজ্ঞানী দেখছি-যাদের ভালোভাবে চিনি, তাদের কেও ধার্মিক না । এটা ভাবার কারন নেই মুসলমানরা সফল না । আমার এই হাওয়ার্ড কাউন্টির সার্কলে প্রচুর ভাল মুসলমান বন্ধু আছেন যারা বিজ্ঞানে বা মেডিসিনে নাম করেছেন। তাদের কেও ধার্মিক নন ( হয়ত এদের স্ত্রীরা এখনো ধার্মিক) । কারন ধার্মিক, ধর্মে গদগদ, জীবনে সফল- সেটা সম্ভব না ।  হ্যা অনেক সফল লোক আছেন, যারা আধ্যাত্মিক অনুপ্রেরনা পান ধর্ম থেকে। কিন্ত তাদের ঠিক ধার্মিক বলা যাবে না । এরা সবাই বুদ্ধিমান বিচক্ষন লোক।  তবে জীবনে সফল লোকেদের মধ্যে যে ধার্মিক লোকেদের সংখ্যা কম, উল্লেখযোগ্য ভাবে কম তা নিয়ে সন্দেহ নেই । কারন সফল হওয়ার চাবিকাঠি সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াতে। আর সঠিক সিদ্ধান্ত "বিশ্বাসী" মনোভাব থেকে আসে না । আসে যুক্তিপূর্ন বিশ্লেষনী মন থেকে।

মোদ্দা কথা ধার্মিক হওয়াটা জীবনের সাফল্যের পথে অন্তরায়। বোঝা মাত্র। এই বোঝা যত তাড়াতাড়ি নামাতে পারবেন তত ভাল ।


[১] http://indiatoday.intoday.in/story/peshawar-massacre-killing-consistent-with-prophet-mohammed-tehreek-teaching-pakistan-taliban/1/407503.html

[২] দেরিদার ডিকনস্ট্রাকশন তত্ত্বের আলোকে ধর্মগ্রন্থের ব্যাখ্যা
[৩]  রাজনৈতিক নেতা না অভিনেতা 
[৪] বিজ্ঞানবাদ বা ন্যাচারালিজম

  

Wednesday, December 17, 2014

পাকিস্থানে স্কুলশিশু গণহত্যা

পাকিস্থানে স্কুলশিশু গণহত্যায় চারিদিকে ইসলামের বিরুদ্ধে ছিঃছিঃ। ইসলাম সভ্যতার স্কাম, পিট, নর্দমার জল। আরো অনেক কিছু লেখা ভেসে আসছে।  এটাও সত্য পৃথিবীর কুখ্যাত, খতরনাক দশটি দেশের নটি মুসলমানদের দেশ। দশমটিও যদিও খ্রীষ্ঠান প্রধান-এটি বিপজ্জনক ইসলামের জন্য। তালিকায় সবার ওপরে উঠে আসায় সবচেয়ে ভয়ংকর রাষ্ট্র হয়েছে ইরাক। শীর্ষ ১০টি ভয়ংকর রাষ্ট্রের তালিকা হচ্ছে-
১) ইরাক (৯৭% মুসলিম)
২) নাইজেরিয়া (৫৯.৭ মুসলিম, ৪০.৩% খ্রিষ্টান) ,
৩) সোমালিয়া (৯৯.৮% মুসলিম),
৪) আফগানিস্তান (৯৯% মুসলিম),
৫) ইয়েমেন (৯৯% মুসলিম),
৬) সিরিয়া (৯০% মুসলিম) ,
৭) লিবিয়া (৯৭% মুসলিম),
৮) পাকিস্তান (৯৮% মুসলিম),
৯) মিসর ( ৯০% মুসলিম)
১০) কেনিয়া (৮২.৫% খ্রিষ্টান, ১১.১ মুসলিম) ।  

কিন্ত এত কিছু প্রমানের পরেও আমি ইসলামকে হিন্দু বা খ্রীষ্ঠান ধর্মের থেকে আলাদা কিছু ভাবতে নারাজ। কারন ধর্মটা একটা যুগের সামাজিক চাহিদা থেকে উদ্ভুত। স্যোশাল কনস্ট্রাক্ট। আমি ইসলামে এমন কিছু পায় নি যাতে মনে হয়েছে ধর্মটা খ্রীষ্ঠানদের থেকে আলাদা। কিন্ত তা স্বত্বেও পৃথিবী অধিকাংশ অসভ্যতা, অপরাধ, সন্ত্রাস মুসলমানরাই কেন করে ধর্মের নামে, সেটার উৎস কিন্ত বিশ্বরাজনীতি। অবশ্য আমি দাবী করছি না ইসলাম রাজনীতির থেকে আলাদা। কারন ইসলাম সহ সব ধর্মের উৎসের মূলেই আছে রাজনৈতিক চাহিদা। সমস্যা এখানেই যে মুসলমান সমাজে একজন বাচ্চাকে যেভাবে জোর করে আল্লার মুমিন বাঁদর বানানো হয়, অন্য ধর্মে সময়ের প্রগতির সাথে সাথে, সেই ধর্মীয় চাপ আর নেই । নইলে প্র্যাক্টিক্যালি স্পিকিং বৈদিক হিন্দু ধর্ম ইসলামের থেকেও অনেক বাজে।কিন্ত হিন্দুরা আর্থ সামাজিক প্রগতির কারনে বা মার্কেটের চাপে যেটুকু ধর্মের কুহেলিকা থেকে বেড়োতে পেরেছে, মুসলমানরা পারে নি। এই যে পারে নি-এর পেছনে কিন্ত ইসলামের ভূমিকা নেই । এই পারে নির মূল কারন মুসলমানদের আধুনিক মার্কেটের সাথে যুক্ত করার প্রক্রিয়াটা চলছে-কিন্ত শ্লো। বাংলাদেশে বা ভারতে যেসব মুসলমানরা আধুনিক অর্থনীতি যেমন আইটির সাথে যুক্ত হতে পেরেছে, তারা হয়ত ম্যাক্সিমাম, আই সিসের টুইটার একাউন্ট চালাবে কিন্ত বোমা হাতে বেড়োবে না । অনেকেই হয়ত বলবেন আধুনিক অর্থনীতি এবং নামাজ, রোজা,  শীতলা মায়ের উপোস একসাথে চলতেই পারে, কিন্ত আমার মতে সেটা বোধ হয় চিন্তার দৈন্যতা। হ্যা, আধুনিক প্রযুক্তি, অর্থনীতির সাথে যুক্ত অনেক হিন্দু মুসলমান এখনো ধার্মিক, মৌলবাদি ধার্মিক। কিন্ত ধৈর্য্য রাখুন। প্রযুক্তিই তাদের ডাইলুইট করবে।

 মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেশ ছড়ানোর সময় এটা না । এটা ভাবার সময় ধর্ম আদৌ মানুষের ভাল কিছু করতে পারে কি না । আমি জানি এই ফোরামেও লোকনাথ বাবা বা বিবেকানন্দের বা ইসলামের অনেক লয়াল সদস্য পাব তারা বলবেন  কেন বাপু, ইশ্বরে বা বাবা মায় বিশ্বাস করে একটু মানসিক শান্তিতে থাকি। আমাদের সাথে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের কি সম্পর্ক?

 প্রথমত আফিং বা মাল খেয়েও মানসিক শান্তি আসে। ঈশ্বরে মন রেখে যে শান্তি, তা মদ্যপের হাই ভাবের চেয়ে আলাদা না । এবং সেই ভাববাদ বাস্তব দ্বায়িত্ব এড়িয়ে আত্মপ্রতাড়না। আর দ্বিতীয়ত এই ধরনের ধর্মীয় উগ্রবাদ এবং নিরীহ ঈশ্বর ভক্তদের আক্সওম এক। ইশ্বর সর্বশক্তিমান। সর্ব ইচ্ছামান। একজন ধর্মীয় উগ্রবাদি যখন এই বাচ্চাদের মারছিল, সে কিন্ত ভেবেছে সে আল্লার ইচ্ছাতেই এই কাজ  করছে। বকোহারাম যখন বাচ্চা স্কুল বালিকাদের ধর্ষন করছিল, তারা কিন্ত তা আল্লার ইচ্ছাতেই তা করেছে!! এখন আল্লাভক্তরা বলবেন, তাহা আল্লা ইচ্ছার না । ওরা শয়তান। কিন্ত তাতে কি? কে শয়তান না ? নোয়াখালির দাঙ্গায় যেসব হিন্দু নারী ধর্ষিত হয়েছিল, ধর্ষকরা মুসলমান ছিল, না ছিল শয়তান? নোয়াখালির দাঙ্গায় জোর করে প্রায় আট হাজার হিন্দু রমনীকে বলাৎকার করে ইসলামে নিয়ে আসা হয়। তারাত বাংলাদেশে মুসলমান সমাজে বীরের মর্যাদা পায়!!  সুতরাং শয়তানের তত্ত্ব দিয়ে ইসলামের কুকীর্তি লুকানো যাবে না ।

 বাস্তব এটাই। আমরা একবিংশ শতাব্দির দিকে এগোচ্ছি। প্রযুক্ত এতটাই এগোচ্ছে ৯৫% মানুষ এখন যা করছে আগামী ২০ বছরের মধ্যে সেই পেশা থাকবে না । একমাত্র তারাই করে খেতে পারবে যারা কম্পিউটারকে চিন্তায় হারাতে পারবে।  ধার্মিক লোকেরা এত নিম্নবুদ্ধির হয়, তারা যে আগামীর প্রতিযোগিতায় টিকবে না সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। ফলে বেকারত্বের কারনে তারা নিজেদের মধ্যেই মুশল পর্ব চালাবে।  তবে এটাও নিশ্চিত আপনারা প্রতিদিন ইসলামিক সন্ত্রাসের অনেক সার্কাস দেখতেই থাকবেন। কিন্ত এসব দেশলাই এর কাঠি। নিভে যাওয়ার আগে জ্বলে ওঠা।

Sunday, December 14, 2014

হিন্দু শৌর্য্য পুরস্কার!

ধনঞ্জয় দেশাই। এবারের হিন্দু শৌর্য্য পুরস্কার প্রাপক। তার "হিন্দু বীরত্বের"  গল্প?  গত জুন মাসে মোসিন সাদিক নামে এক তথ্য প্রযুক্তি কর্মীকে এই মহান হিন্দু বীর হকি স্টিক দিয়ে খুন করে। থুরি,  মোসিন সাদিক একজন মুসলমান। মুসলমানরা আবার ভারতে বাঙালী, মারাঠি, ভারতীয়, তথ্য প্রযুক্তি কর্মী হয় না -ভারতে মহামানবের মিলনস্থলে, তাহারা শুধুই মুসলমান। তাদের নেতারা, হিন্দুরা সবাই বলে তারা মুসলমান! তারা ভারতীয়, বাঙালী, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী হতে চাইলেও, তাদের গলাধাক্কা দিয়ে সবাই বোঝাবে তারা মুসলমান।



 আমি জানি এই পোষ্ট দেওয়া মাত্র, দুজন নিরীহ ক্লজেট হিন্দুত্ববাদি লিখবে দাদা আপনি মেহদি মসরু বিশ্বাসকে নিয়ে লিখলেন না ? শালার মুসলমানটা দেশে বসে আই সি সের টুইটার একাউন্ট চালাচ্ছে, জিহাদি রিক্রট করছে!! ধনঞ্জয় দেশাই জাস্ট একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা!! মুসলিমদের আই সি সিস জিহাদি হওয়াটা কিন্ত ভারতের নিরাপত্তার জন্য বিরাট একটা রিস্ক!

প্রশ্নটা হচ্ছে দুটি ক্ষেত্রেই দেখা উচিত, সাধারন হিন্দু বা মুসলমানরা এই ধনঞ্জয় দেশাই বা মেহদি মসরু বিশ্বাসকে কি চোখে দেখছে। মসরু বিশ্বাস কিন্ত তারা বাবা মাকে বলতে সাহস পায় নি সে জিহাদি। সে যা করেছে লুকিয়ে। পরিস্কার ভাবেই তার ফ্যামিলি, সমাজ তার পাশে ছিল না । হ্যা, কিছু বিভ্রান্ত মুসলমান যুবক অবশ্যই তার পাশে আছে নিশ্চয়। কিন্ত ধনঞ্জয় দেশাইকে দেখুন! মহারাষ্ট্রের সব হিন্দু সংগঠন গুলি তার বীরত্বের জন্য পুরস্কার দিচ্ছে!!

 ক্লোজেট হিন্দুত্ববাদিরা আবার লিখবেন কেন ওসামা বিন লাদেনের সাপোর্ট বেস কি ভারত বা বাংলাদেশের মুসলিমদের মধ্যে নেই ? নিশ্চয় আছে। আমি নিজেই দেখেছি আজকালে প্রকাশিত হয়েছে সেসব প্রবন্ধ। ওসামাকে আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বীরযোদ্ধা হিসাবে চালানোর চেষ্টা হয়েছে ভারতের বাম-মুসলিম এক্সিসে। ঠিক যেমন ধনঞ্জয়কে দেখানো হচ্ছে ইসলামের আগ্রাসী ধর্ম-সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বীরযোদ্ধা। কি বীরত্ব সেত আপনারাই দেখলেন-এক নিরীহ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীকে হকি স্টিক দিয়ে পেটানো!! ওসামা বিন লাদেন ধনঞ্জয়ের বড় ভাই। উনি হাজার দুয়েক সাধারন আমেরিকানকে খুন করেছিলেন মাত্র!

 ধর্ম এবং রাজনীতি যখন মনকে কলুষিত করে হৃদয়ের ওপর তার পরিচিতিকে টেনে আনে এমনটা হয়। আজ তাহের ভাই এক অসাধারন গল্প শোনালেন কোরবানীর। তাদের গ্রামে কোরবানীর ভোজনের জন্য সাতটা গরু আনা হয়েছিল। একে একে ছটা গরু কাটা হল কোরবানীর হালাল করে। বাকি ছটা গরুকে একে একে কাটা হল। সপ্তম গরুটা নিজে এসেই শুয়ে পড়ল।  যে গলা কাটছিল, সে কিছুক্ষনের জন্য থমকে যায় এই আকস্মিক ঘটনায়। আফটার অল মানুষ ত! হৃদয়ত আছে! সে থমকে দাঁড়ানোয় সমবেত মুমিনদের মধ্যে কলরব ওঠে -আরে একটা গরুর জীবন না ইসমাইলের ধর্ম আগে ব্যাটা আহাম্মক?  সে সঙ্গে সঙ্গে চেগে ওঠে-তাইত, সে মানুষ না মুসলমান-তাই সপ্তম গরুটাকে কাটতে হবে!

 মোসিন সাদিকের জন্য যদি কোন হিন্দুর হৃদয় না কাঁদে, না কম্পিত হয়-তাকে যদি হিন্দুরা মনে করে ওই তাহের ভাই এর কোরবানীর সপ্তম গরু--আমি বলবো বেসিকে প্রবলেম। আগে মানুষ হৌক, তারপরে হিন্দু হওয়ার চেষ্টা করুক। আমাদের হৃদয়টাকে, সহজাত মানবতাকে ধর্মের কাছে, রাজনীতির স্বার্থে বন্ধক দিলে সেই সুযোগ আরো বেশী করে নেবে ধর্ম ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদরা।

 মোদিকে ভারতীয়রা ভোট দিয়েছিল অর্থনীতির পুনঃউদ্ধারের জন্য। কংগ্রসের চুরি ডাকাতিতে তিক্ত বিরক্ত হয়ে। উন্নয়ন ছিল প্রত্যাশা। কিন্ত ভোটের পর ক্রমাগত ভাবে যেভাবে হিন্দুত্ববাদিরা সর্বত্র মুসলমান বিদ্বেশ, বেদে বিজ্ঞান চর্চা এবং মেয়েদের পোষাকের মাপ ঠিক করতে মাঠে নেমেছেন, তাতে পরিস্কার বিজেপির ফোকাস এবং মন নেই উন্নয়নে। কারন তার জন্যে যে রাজনৈতিক এবং আইন সংস্কার দরকার, তা মোটেও করতে দেবে না ভারতের ফরেদার ব্যবসায়ী শ্রেনী-যারা আবার বিজেপির ব্যাকবোন। সুতরাং ক্ষমতায় থাকতে হিন্দুত্ববাদির জিগির ছাড়া উপায় নেই । তবে কিনা, সেটা আবার বাঘের পিঠে চেপে হরিন শিকার। একদিন না একদিন ঐ বাঘটা তার আরোহীকে খাবেই।

Sunday, December 7, 2014

নাস্তিক

মানুষ ত নাস্তিক হইয়েই জন্মায়। পরিবার তার মাথায় ঈশ্বরের ভয় ঢুকিয়ে তাকে আস্তিক বানায়। তাকে হিন্দু মুসলমান বানায়।

 মাথা ভয় ঢুকিয়ে তাকে এই যে হিন্দু বা মুসলমান বানাচ্ছে-এটার জন্যই কিন্তু বাঙালী জাতিটা দুইভাগ হল। কি ভারসাম্য রক্ষা 

করলেন? যারা নিজেদের হিন্দু বা মুসলমান ভাবে, ঈশ্বর জনিত ভয়ের কারনে, তাদের ব্রেইন ড্যামেজড। ধার্মিকরা এতই মূর্খ ধূর্ত 

রাজনৈতিকরা তাদের ধর্মানুভূতিতে সুড়সুরি দিয়ে, চুরি ডাকাতি করে। সুতরাং ধর্মটা যে সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য কাম্য না এটা 

আপনার আগে বোঝা উচিত। ধর্ম থাকবে, আবার সামাজিক সাম্য থাকবে তা আকাশ কুসুম কল্পনা। চিন্তার দৈন্যতা। এই ধরনের 

ললিপপ, ভুল চিন্তা থেকে সমাজকে বার করে আনতে হবে। নইলে আরেকবার দেশভাগ এবং সাম্প্রদায়িক গৃহযুদ্ধের জন্য তৈরী থাকুন। 

মিরাক্কেল

মিরাক্কেল হিন্দু দেবদেবী নিয়ে মস্করা করে, বেশ করে। করাই উচিত। আফটার অল হিন্দু দেব দেবীদের উৎস প্যাগান উৎসব যার 

অধিকাংশই যৌনতাপূর্ন। যে ধর্মের দেবরাজ ধর্ষক, ধণদেবী রক্ষিতা, বিদ্যার দেবী গণিকা-তাদের নিয়ে মস্করা করবে না ত কি 

করবে??? আর যদি প্রশ্ন ওঠে ইসলাম নিয়ে, মহম্মদ বা বিবি আয়েশাকে নয়ে মস্করা নয় কেন? অবশ্যই তা করা উচিত। যদি 

মুসলমানদের জঙ্গীপনার জন্য, ইসলামিক কমেডি সম্ভব না হয়ে থাকে, তাহলে সে লস মুসলমানদের । কারন মুসলমানরা তাদের 

জঙ্গীপনার মাধ্যমে নিজেদের, নিজের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত ধ্বংস করছেন। তারা জঙ্গীপনার মাধ্যমে নিজেদের ধর্মকে টিকিয়ে 

রাখার চেষ্টা করছেন, যা শুধুই তাদের পেছনে টেনে ফেলবে। উদাহরন ৫১ টা মুসলমান দেশ, যারা গরীব থেকে আরো গরীব হচ্ছে, 

খেতে পাচ্ছে না , বেকারত্ব ক্রমবর্ধমান, গৃহযুদ্ধ এবং জিহাদি আন্দোলনে আরো জজ্জ্বরিত। ইসলাম যদি সভ্যতার ক্যান্সার হয়ে থাকে

 এই দেশগুলি সভ্যতার নর্দমা। সুতরাং যেসব হিন্দুরা মীরাক্কেলের বিরুদ্ধে ইসলামি জঙ্গিপনার হনুকরন করার জন্য ফেসবুকে 

জেহাদ করছেন, তারা আসলেই বলছেন, মুসলমানরা ন্যাংটো হয়ে ঘোরে, আমরা কেন তাহলে প্যান্ট পড়ে ঘুরবো?

Friday, December 5, 2014

বাবরি মসজিদ ভাঙার দিন

আজ সেই ৬ ই ডিসেম্বর । বাবরি মসজিদ ভাঙার দিন। কারুর কাছে শোকের, কারুর কাছে রাগের, কারোর বা উল্লাসের দিন। ৭ই
 ডিসেম্বর, ১৯৯২ আমরা খালি পায়ে হেঁটেছিলাম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য। পরের কয়েকটা দিন ছিল থমথমে। গুজুবে। দাঙ্গার
 ভয়ে বাড়ির বাইরে বেড়োনো নিশেধ।

আজ যখন স্মৃতির ক্যালিডোস্কোপে দেখি, আসলেই দুঃখ হয় না। বরং মানুষের মুর্খতায় আমোদিত হই।


রাম ওখানে জন্মেছিল ! বাও! স্পাইডারম্যানের মতন দুস্কৃতি বিনাশয় ফিকশনাল চরিত্র এই রাম। পার্থক্য এই যে স্পাইডারম্যানের 
ভক্ত বালকরাও জানে, ম্যানহাটনে স্পাইডারম্যানের আপার্টমেন্ট নেহাত কল্পনা। কিন্ত রামভক্ত ধেরে লোকেরা গভীর ভাবে বিশ্বাস 
করে রাম অযোধ্যায় শুধু জন্মায় নি-কোথায় জন্মেছিল সেটাও তারা ইঞ্চি প্রিসিশনে জানে। আর বিশ্বাসেই বা কি আসে যায়। কোন
 বিশ্বাসের জন্য যদি মুসলমানদের বাঁশ দেওয়া যায়, হিন্দু হিসাবে ভোটিং ব্লক একত্রিত করার সুযোগত গণতন্ত্রই দেয়!!


অনেকে বাবরি মসজিদের প্রসঙ্গ তুললেই বলেন বাংলাদেশে যে রোজ মন্দির ভাংছে তার বেলা? আসলে মন্দির মসজিদ ভাংলে আমি
 খুশীই হয়। কারন এগুলি প্রগতিশীলতার প্রতিবন্ধক। স্পেস এজের এক্সিমা। যখন দেখি একজন বাংলাদেশী হিন্দু মন্দির কেন ভাঙা 
হচ্ছে সে প্রশ্ন না তুলে --মনের গোপনে বা একজন নাস্তিকের কাছে স্বীকার করে, আসলেই কালী বা দূর্গাকে যতই জাগ্রত দেবতা 
ইত্যাদি ইত্যাদি সুপারম্যান ভেবে পূজো করিনা কেন, তারা আসলেই নির্বল নির্বোধ নির্বাক পুতুল। নইলে যেসব মুসলমানরা কালী
 মূর্তি ভাঙে তাদের কেন কিছু হয় না ?

হায় হায়!!

ঠিক এই কারনেই বাবরি মসজিদ ভাঙার সময় নিশ্চয় কিছু বুদ্ধিমান অথচ ধার্মিক মুসলমান প্রশ্ন করেছিল, আল্লা যদি এত 
সর্বশক্তিমান সুপারম্যান হন কেন তিনি বাবরি মসজিদ রক্ষা করতে সক্ষম হলেন না ?
এতেব বন্ধুগন মন্দির মসজিদ মূর্তি ভাঙা আসলেই সমাজের প্রগতির পক্ষে ভাল। মধ্যযুগের ইউরোপে ইহুদিদের সিনাগগ প্রায় 
ভাংত খ্রীষ্ঠানরা। তাদের বার করে দিত অনেক সময় শহর থেকে। ঠিক এই কারনেই ইহুদিদের মধ্যে সেকুলার বা উন্নত চিন্তায়
 বিশ্বাসী দার্শনিকদের জন্ম হয়। স্পিনোজা, ফ্রয়েড, আইনস্টাইন, কার্লমার্ক্স সবাই ইহুদি কেন? কারন ধর্ম আর ইহুদিদের ঈশ্বর যে 
তাদের বাঁচাতে ব্যার্থ, এই চিন্তা থেকে সেকুলারিস্ট হিউম্যানিজমের চিন্তা প্রথমে ইহুদি মানসেই আসে।

সরি, আমি আপনাদের সাথে একমত নই । হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে এত সাম্প্রদায়িকতা চাপা হয়ে আছে, ধর্ম ছাড়তে না 
পারলে ( ঈশ্বরে বিশ্বাস বা আধ্যাত্মিকতা ছাড়তে আমি বলছি না -কিন্ত ধর্মের পরিচিতি কেন?? ), সম্প্রীতি অলীক আলেয়া। 
ইল্যুউশন । ধর্ম পালন করব আবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও থাকবে, তা হওয়ার নয়। ওর্গানাইজড রিলিজনের স্তম্ভ, সিম্বল হচ্ছে এই 
মন্দির মসজিদ। এসব গুঁড়িয়ে দিলে ধর্মবিশ্বাস ও দুর্বল হয় ( যে সুপারম্যান আল্লা বা স্পাইডারম্যান রাম, আসলেই সর্বশক্তিমান না 
-কারন উনারা নিজেদের বাড়িই বাঁচাতে অক্ষম )।

ধর্ম পালনের, ধার্মিক হয়ে কাটিয়ে দেবার পেছনে কাজ করে ঈশ্বরভীতি। ভয় মহান সর্বশক্তিমান আল্লা বা ঈশ্বর নিশ্চয় বিশাল ক্ষতি 

করে দেবেন। ছোটবেলায় কতবার যে শুনতাম কালীকে অবজ্ঞা করার জন্য তার একমাত্র ছেলে ওলাওঠাতে পরের দিন মারা গেছে। 

হায় হায়। কালীকে অপমান করলে শুধু হিন্দুদেরই মরে। মূর্তি ধ্বংসকারী বাবর বা কোন মুসলমানকে হিন্দুদের জাগ্রত দেবতা 

কোনদিন কিস্যু করতে পারল না !! আবার মহান সর্বশক্তিমান আল্লা বাবরি মসজিদ বাঁচাতে পারল না । 

  শিশু মনে ভয় ঢুকিয়ে তৈরী হয় সুপারম্যান আল্লা আর স্পাইডারমান রামের বানরবাহিনী। যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি, তখন আমাকে 

লক্ষীপূজোর প্রসাদ দিলে, খেতে অস্বীকার করি। আমার এক মামা বললো তোর এত সাহস, লক্ষীরে অবমাননা করিস ? আমি বললাম

 আমি ত এসব মানি না । মামা বললো তোর এত সাহস? এই লক্ষীর প্রসাদ কিছুই না । আমি বল্লাম না । বলে পা দিয়ে মারিয়েও 

দিলাম। তখন আমার বয়স এগারো! মামা বল্লেন লক্ষীর অভিশাপে নাকি সারাজীবন অর্থকষ্টে ভুগবো! ক্লাস টেনে একই অভিজ্ঞতা হলো 
স্বরস্বতীপূজোর দিন। আসলে সামনে পরীক্ষা। আমি আগের দিন রাত্রি থেকে কোন একটা অঙ্ক পারছিলাম না । চেষ্টা করছিলাম 

সকালেও। তাই অঞ্জলি দিতে বেরোলাম না । ব্যাপারটা একটু বেমানান ছিল। কারন আমার নিজের বাড়িতেই সরস্বতী পূজো হত। 

 সেটাও ইস্যু না । আসলে সরস্বতীপুজো হচ্ছে সদ্য শাড়ি পড়া কিশোরীদের পেছনে ঝাড়ি মারার দিন। সেই দুর্বার হাতছানি কাটানো

 ছিল কঠিন। কিন্ত যেকারনেই হোক, অঙ্ক না মেলার জন্য উঠতেও পারছিলাম না । শেষমেস পাড়ার এক দাদা যে আমাদের বাড়িতেই

 অঞ্জলি দিতে এসেছিল, সে বললো তোর পড়াশোনা হবে না !!

 আসলে শিশু মনে এই ভাবেই ভয় ঢুকিয়ে হিন্দুত্ব বা ইসলামের আইডেন্টি গুলো তৈরী করা হয়। আর সেই ভয়ের উর্বর জমিতে ফসল 

ফলায় ধূর্ত রাজনীতিবিদরা। সুতরাং দুচারটে মন্দির মসজিদ ভাংলে যদি সেই ঈশ্বরভীতি কমে, তাহলে তা সমাজ এবং দেশের জন্য 

মঙ্গল। 

Monday, December 1, 2014

জব সাটিসফ্যাকশন

ছোটবেলায় কত কিছু হতে চেয়েছিলাম।  গৃহপালিত স্বামীর রোলটা  বাদ দিয়ে কল্পনায় ছিল সব কিছু। লেখক, ডাক্তার, কবি, শিক্ষক, অধ্যাপক, পলিটিশিয়ান, অভিনেতা-যখন যা কল্পনায় টানত। তবে কল্পনার জগতে ছিলনা ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী বা কর্পরেট জগতের ঘানি টানা। ইভেনচুয়ালি, সেইগুলোই হলাম, যা ছোটবেলাতে বেশ আনগ্ল্যামারাস, নীরস, অনাকর্ষনীয়  মনে হত। তবে অন্যদের দিকে তাকালে দুঃখ বা আফসোসের কিছু নেই । আমি তাও কিছু দুধের সাধ ঘোলে মিটিয়েছি। বাকীদের ভাগ্যে আবার তাও জোটে নি। আবার ব্যতিক্রমও দেখছি। একদম ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞানী হতে চেয়েছে এবং বড় হয়ে ঠিক তাই হয়েছে, এমন ও হয়েছে আমার বন্ধুদের মধ্যে।

 তবে এই হতে চাওয়ার খেলায়, আশার থেকে নিরাশার পাল্লা অনেক বেশী ভারী প্রায় সবার জন্য। অনেকেই চিনি-যারা বিখ্যাত সাংবাদিক হওয়ার জন্য মিডিয়া ক্যারিয়ার বেছে নিয়ে বেকারত্বের জ্বালায় ভুগছে। এক মিডিয়া হাউস থেকে অন্য মিডিয়া হাউসে আনপেড ঠোক্কর খাচ্ছে। বিজ্ঞানী হতে গিয়ে পোষ্ট ডক্টের পর পোস্ট ডক্ট করে পজিশন না পেয়ে শেষে কোন ফ্যাইন্যান্সিয়াল কোম্পানীতে গণিতজ্ঞের কাজ করতে বা স্কুল শিক্ষক হতে বাধ্য হয়েছে অনেক বন্ধুই। এগুলো একটু বেশী ট্রাজিক।

 আবার ডাক্তার হতে চেয়ে এবং শেষে সফল ডাক্তার হওয়ার পরেও জনগনের ক্যালানি খেয়ে এবং  সরকারের অবজ্ঞার জন্য বিশাল অবসাদে ভুগছে-এমন বন্ধুও আছে! রিলেটিভলি ভাল আছে শিক্ষক, অধ্যাপকরা। চাকরির নিশ্চয়তা আছে, মাইনে ভাল , ছাত্রদের হাতে ক্যালানি খাওয়ার ভয় অন্তত ডাক্তারদের চেয়ে কম। শিক্ষকতা বাদে সব পেশাতেই হতাশা অনেক বেশী। যারা ব্যবসা করে সফল-তারা হাতে গোনা কজন-এবং তাদের বাইরে রাখলে বাকী সব পেশাতেই কম বেশী হতাশা অনেক বেশী। সেটা চাকরিতে ছাঁটাই এর ভয়, স্যাটিসফ্যাকশন, বাজে বস, বাজে কোম্পানী অনেক কিছু হতে পারে। শিক্ষতার চাকরিতে, ভারতে স্যাটিসফ্যাকশন এবং স্টেবিলিটি দুটোই বেশী। তবে আমেরিকার ক্ষেত্রে টেনিওর ট্রাক না পাওয়া পর্যন্ত অনিশ্চয়তা আছেই।

 যারা এখনো ক্যারিয়ারে সেটলড না -তাদেরকে শিক্ষকতা লাইনে যাওয়ার জন্য উৎসাহ দেব। অবশ্য কেও যদি  ইঞ্জিনিয়ারিং বা অন্যকোন ইনোভেটিভ ব্যবসা করতে চায়, সেটাও ভাল । আন্তারপ্রেনিওরশিপে খাটুনি বেশী, রিস্ক সাংঘাতিক-কিন্ত জব স্যাটিসফ্যাকশন বা ইনকাম ও অনেক বেশী।  তবে যদি কেও যদি ওই রিস্ক আর খাটুনি না নিতে চায়, তাহলে চাকরিতে সন্তুষ্টির জন্য শিক্ষতার চেয়ে ভাল লাইন আর নেই । যারা এন জি ও বা স্যোশাল আন্তারপ্রেনিওরশিপ নিয়ে কল্পনার জগতে আছেন-তাদের জন্য বলি ভারতে এটি ঠগবাজদের ঠেক। তবে আমেরিকা হলে স্যোশাল আন্তারপ্রেনিওরশিপ করেও প্রচুর জব সাটিসফ্যাকশন সম্ভব।

Sunday, November 30, 2014

মার্কেট দেবতা

চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য এড়াতে নাম পদবী পালটানো আমেরিকা সহ সবদেশেই চলে। আমেরিকাতে এর প্রাদুর্ভাব বেশী-যেহেতু ইহা বহু ভাষাভাষীর দেশ। এখানে আসার পর প্রতীক হয় পিটার, শান্তনু হবে স্যান।  আসলে কেওই চায় না শুধু পৈতৃক নামটার কারনে হায়ারিং ম্যানেজার সিভিটা ড্রপ করুক।

 তবে ভারতের ক্ষেত্রে এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমেরিকাতে মুসলিমরা আছে বড়জোর অর্ধশতাব্দি। কিন্ত ভারতের লোকেরাত মুসলিম নামের সাথে পরিচিত এক হাজার বছর ধরে!  কোলকাতার বাড়িগুলোতে যেসব মেয়েরা হিন্দু নামে কাজ করে, তাদের একটা বড় অংশই মুসলমান। তবে শিক্ষিত মুসলমান যুবকদের নাম ভাঁড়ানোর সুযোগ নেই -যেহেতু শিক্ষা সার্টিফিকেটটা লাগে। ভারত সহ সব দেশেই প্রাইভেট সেক্টরে শিক্ষিত মুসলমানেরা কিছুটা হলেও বৈষম্যের স্বীকার। আমি নিজেই দেখেছি অনেক ক্ষেত্রে আমি কোন মুসলমান ক্যান্ডিডেট  পছন্দ করলেও প্যানেলের বাকী কলীগরা বাতিল করে দিয়েছে। একটা বড় কারন, তাদের ধারনা মুসলমানরা ধর্মের কারনে, টিমের সাথে ভাল ভাবে "জেল" করতে পারে না । কারন এখানে টিম স্পিরিট বাড়াতে প্রায় গ্রুপ পার্টি হয়-যেখানে খানা পিনা চলে-সেখানে, ধর্মীয় কারনে, তাদেরকে পাওয়া নাও যেতে পারে। তাছারা প্রতিটা গ্রুপেই কিছু হোয়াইট সুপ্রিম্যাস্ট বা এক্সট্রিমিস্ট থাকে, তারা মুসলিম কর্মীটিকে উত্তক্ত করলে, কোম্পানীর লিগ্যাল লায়াবিলিটি বাড়ে। আমি নিজেই একটি ইহুদি বনাম মুসলীম কর্মীর বিবাদের সাক্ষী হয়েছি যে কেস কোর্টে গেছিল।  সুতরাং তাদের আশঙ্কা অমূলক তা নয়। দাড়ি ওয়ালা মুসলিম বা হিজাব পরিহিত মুসলিম মহিলা হোয়াইট কলার চাকরি খুঁজতে গেলে, আগেই আউট হয়ে যাবে।

 পরস্থিতি কিছুটা হলেও আমেরিকাতে বদলাচ্ছে।  দ্বিতীয় জেনারেশনের মুসলিম ছেলে মেয়েরা ধর্মীয় নয় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিশেষত তারা যদি একটু লিব্যারাল ফ্যামিলি থেকে আসে। তাদের মধ্যে মদ্যপান বা পর্ক নিয়ে ছুঁচিবাই নেই । নামাজি মুসলমানও খুব কম। এরা স্মার্ট কিডস।  ইন্টারনেট ঘেঁটে কোরান কি বালের ছাল, তা জানার পর ওসব ধর্ম থেকে অনেক দূরে থাকে। ইংল্যান্ডে আবার উলটো। দ্বিতীয় জেনারেশন মুসলমানদের বড় অংশই জেহাদি মুসলিম। আমেরিকাতে সে সমস্যা নেই-যেহেতু মুসলিমরা ইংল্যান্ডের মতন অতটা বড় বৈষম্যের শিকার না ।

 ধর্মীয় কারনে চাকরি স্থলে বৈষম্য খারাপ এবং বেয়াইনি। তবে এক্ষেত্রে কোম্পানী এবং মুসলিম পদপার্থী দুজনেরই সমান দ্বায়িত্ব আছে।  মুসলমানরা যদি চাকরি স্থলে নামাজ তথা ধর্মীয় বিচার বেশী চালু রাখে, অবশ্যই তারা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। আমি নিজেই দেখেছি এই ধরনের ধার্মিক মুসলমানদের নিয়ে কাজ করা সুখের হয় নি। কিন্ত উলটো দিকটাও আছে। এদের বাইরে একটা বড় অংশ মুসলিম আছে, যারা আমাদের মতন ধর্ম নির্লিপ্ত। তাদের নিয়ে কোন সমস্যা নেই ।  যারা সেকুলার মুসলিম, এসব থেকে দূরে, তারা যদি বৈষম্যের শিকার হয়, তাহলে, সেকুলার মুসলিম ও র‍্যাডিক্যাল মুসলিম হয়ে উঠতে পারে।

এক্ষেত্রে অবশ্য দক্ষিন ভারতীয়দের কথাও বলা দরকার। এরাও সেই দক্ষিনী কালচার, মসলার গন্ধোয়ালা টিশার্ট ওয়ার্ক প্লেসেও চাড়বে না । তারপরে লবি করবে। সিভি ফ্রড করবে।  এই জন্যে আজকাল আমেরিকাতে দক্ষিনীদের কেও হায়ার করতে চাইছে না ।

ব্যালান্সটা ডেলিকেট।  একটা মাল্টিকালচারাল ওয়ার্ক প্লেসে নিজের সংস্কৃতি বা ধর্মকে টানা অনেকটা অফিসে বসে পাদের গন্ধ ছাড়ার মতন । আমেরিকাতে এই ব্যপারে দক্ষিনীরা ধর্মীয় মুসলিমদের চেয়েও কুখ্যাত। তবে আশার কথা এই যে- সব আল্লার বড় আল্লা হচ্ছে মার্কেট। মার্কেট ঈশ্বরের চাপে কিন্ত সবাই বদলাচ্ছে। কারন পেটের টান বড় টান। পেটের টানেই একজন মুসলিম বধু সিঁদুর চাপিয়ে হিন্দু হয়ে কাজে আসে, একজন মুসলিম যুবক তার নামটা খ্রীষ্ঠান বানায় আর ডজন শব্দাঙ্কিত নামের সাউথ ইন্ডিয়ানগুলোও কোন না কোন আমেরিকান নাম নিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করে।

 সেই মার্কেট দেবতাকে শতকোটী প্রনাম।

Wednesday, November 26, 2014

বৌ এর চেঁচামেচি শুনলে হেভি দুঃখ হয় দাদা

                                        (১)
-দাদা একটা ফোন করবেন
-কেন ?
-দাদা একবার করুন না আমার রাতের দিকে

  ছেলেটা আমার জুনিয়ার এবং ভক্ত পাঠক। ভারতের টাইম রাত ১১টায় ধরলাম তাকে।

-দাদা, একটা পারসোনাল প্রবলেমে সাজেশন চাইছি...

- বলে ফেল। আমি কিন্ত কাট আন্ড ড্রাই সমাধান দিই

- দাদা একটা হেভি প্রবলেম। বৌ নিয়ে ফেঁসে আছি

- সে ত বৌমাত্রই  গলার ফাঁস-তুমি ব্যতিক্রম কে বললো?

- না দাদা। আমার মাত্রাটা আলাদা

-কেন

 -আমার বৌ হেভি শর্ট টেম্পারড দাদা। রাগলে মাথা ঠিক থাকে না

 - কোন হালার  বৌ কুল টেম্পারড বলে তোমার মনে হল ?

 - না দাদা। আমার কেসটা আলাদা। একদম আলাদা । বাড়িতে থাকলে মায়ের সাথে বৌএর চেঁচামেচি। হেভিটেনশন । অফিসে কাজ করতে পারি না । বাড়িতে ঘুম হয় না ।

-তাহলে আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে থাক...

- থাকতাম ত। সেখানেও সমস্যা। সব সময় চেঁচামেচি। মায়ের কাছে পালিয়ে যেতাম। পালিয়েও নিস্তার নেই । পালালে আরো চেঁচামেচি।

- সেত সব বৌরাই চেঁচামেচি করে। কিচির মিচির করে। ওটা ওদের ডিপার্টমেন্ট। ওসব সিরিয়াসলি শুনে লাভ নেই -রিয়াক্ট করলে লোকসান বেশী

- ওভাবে কি থাকা যায়। সংসারে থাকলে বৌ উল্টোপালটা কথা বললে আপনি কি করে চুপ করে বসে থাকবেন

- যদি বৌ এর কথায় সিরিয়াসলি রিয়াক্ট কর তার পরিনতি ভাবলেই চুপ করে বসে হজম করাই ভাল । সংসারে টিকে থাকার জন্য বাঙালী পুরুষের একটাই স্ট্রাটেজি। কথামৃত।  সংসারে সন্নাসীর মতন থাকতে হয় পুরুষকে। বৌ হচ্ছে কামান। তুমি স্টিলের প্লেট। একের পর গোলাগুলি চললেও স্টীলের প্লেটের কিছু হয় না । ধাক্কা খেয়ে ফিরে যাবে। সংসারে সেন্সিটিভ, সেন্টু হয়েছ কি, গেলে। সব যাবে। বৌ এর কথা এক কান দিয়ে শুনে অন্যকান দিয়ে ড্রেনে ফেল। ওটাই সমাধান

-আমার দাদা অত নির্লিপ্ত  হয়ে থাকা সম্ভব না -বৌ এর চেঁচামেচি শুনলে হেভি দুঃখ হয় দাদা ।রাগে ব্রহ্মতালু জ্বলে।


- তাহলে দুঃখও পাও। আরো বেশী করে পাও।  কেও সাধ করে আগুনে হাত দিলে আগুনে হাত পুড়বেই

-তাহলে আপনি বলছেন বিয়ে করা মানে আগুনে হাত দেওয়া

-আজ্ঞে না ,  বিয়ে করাতে অসুবিধা নেই । তবে বিয়ে করার পর কোন পুরুষ যদি মনে করে বৌ তার আশানুরূপ ব্যবহার করবে আর না করলে সে বৌকে যৌত্বিক ব্যবহার করতে বলবে,এবং বৌ  সেটা  শুনবে , সেটা নিরেট গর্ভতুল্য প্রত্যাশা।

-তাহলে আমার আশা নেই ?

-নেই কে বললো? তোমাকে কে বলেছে তোমার মা আর বৌ এর মধ্যে মাথা গলাতে? মেয়েদের মনের তুমি কি বোঝ?

-কি করবো বলুন ত? দুজনেই ঝগড়া করে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে অফিসে ফোন করে, একসাথে। হেভি চাপ মাইরী।

-সহজ সমাধান। তাদের বলতে দেবে। বলা হয়ে গেলে বলে দেবে -এটা তোমাদের ব্যপার-তোমাদের নিজেদের মেটাতে হবে।  নিজে ঢুকবে না । দুনিয়ায় কোন দুই নারী একসাথে থাকতে পারে না -তুমি শালা কে?  তাদের ঝগড়ার দ্বায়িত্ব নেওয়ার? যে পুরুষ মেয়েদের ঝামেলার মধ্যে ঢোকে, সংসার জীবনে তার ভবিষ্যত নেই ...।।

                                                         (২)

-সে দাদা বলা সহজ। কি করে মেনে নিই বলুনত? সব কিছুতেই কি আমি দোষ। সব দোষ আমার মেনে নিই কি করে বলুনত ?

-সেটা বিয়ের আগে ভাবো নি?

-মানে?
 -তোমার কি মনে হয় বিবাহিত জীবনটা ইন্ডিয়ান ডেমোক্রাসি?  বৌ একটা কিছু বললে, তুমি বিরোধি পার্টির মত বলবে আর পাড়ার জনগন মাই মিডিয়া তা শুনবে ?
   বিবাহিত জীবন হচ্ছে নাৎসি কন্সেট্রেশন ক্যাম্প। বৌ হিটলার, তুমি ইহুদি। তোমার মান ইজ্জত সব কিছু বাইরে। ভেতরে ওটা কন্সসেন্ট্রেশন ক্যাম্প-বাইরের লোকেদের কাছে দেখাবে সে কত বাধ্য !!

-ওসব মানা সম্ভব নই দাদা, তাই বৌকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিলাম। এবার উকিলের নোটিশ পাঠাব!!
শুধু মেয়েটার জন্য কি করব বুঝতে পারছি না ...

-বুঝতে পারছ না মানে?? তোমার কি মনে হয় ডিভোর্স করে আরেকটা বিয়ে করলে বাধ্য বৌ পাইবে???

-না দাদা। এই সব ঝামেলা আর সহ্য হয় না জানেন ত।

-তা বিয়ে করতে এসেছিলে কেন?

-দাদা কে জানত বলুন ত। বিয়ের পর এই হাল হয়। জানলে কি আর বিয়ে করতাম!!

-কিন্ত এখন ত বিয়ে মেয়ে সবই হয়ে গেছে। বৌ ছাড়া থাকতে পারলেও মেয়ে ছাড়াত থাকতে পারবে না

-সেটাই ত সমস্যা দাদা। মেয়েটাকে হেভি মিস করছি জানেন!!

-সেটাই স্বাভাবিক। বৌ কি ফিরতে চাইছে??

-সে দাদা এখন রাত বারোটা বাজে। ফোন করলে এখুনি ফিরবে!!

-তাহলে সেটাই কর

-কি বলেন দাদা-আবার, সেই ঝামেলা। অফিসে বৌর ধমক, মায়ের কান্না। খাওয়া নেই । ঘুম নেই । এই বেশ ভাল আছি কদিন জানেন

-সেত বৌ ছাড়া সবাই ভাল থাকে। মেয়ে ছারা কিন্ত থাকতে পারবে না । তাকে ফেরাতেই হবে। অলটারনেটিভ নাই।  ছেলে মেয়ে হয়ে গেলে অল্টারনেটিভ থাকে না

- বৌ আবার ফিরলে মারা যাব দাদা। জানেন আমার সুগার, ব্লাড প্রেসার---

-তার জন্যেত তুমি দায়ী হে-কে বলেছে তোমায় বৌ আর মায়ের ঝগড়ায় কান দিতে। কান দেবে না । যেদিন দুজনে ঝগড়া করবে হোটেলে থাকবে । নইলে বেলুড় মঠ। তাদের ঝগড়া না থামলে ফিরবে না । মেয়েরা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করতে ভালবাসে। তাদেরকে তাদের মত ঝগড়া করতে দাও। সেটাই তাদের স্পেস। তুমি গিয়ে হোটেলে থাক যেদিন ঝগড়া করবে। তবে বৌকে ফেরানোর বদলে, উকিলের কাছে গেলে সমস্যা বাড়বে-কমবে না । দাম্পত্য জীবনে উকিল ঢুকলে, ফাল করে বেড়োবে।

-ঠিক আছে দাদা। আরেকবার দেখি।

Monday, November 24, 2014

বৃটিশ আমলের কেরানী তৈরীর কল

শুনলাম প্রেসিডেন্সিতে প্রায় অর্ধেক ছাত্র সেমিস্টার দিতে পারছে না কারন অর্ধেকের কম ক্লাসে উপস্থিতি। তারা আবার এই
 নিয়ে ‪#‎হোককলরব‬ ও করেছিল!

আমি অবশ্য আই আই টি জীবনে নিজেই ক্লাস করতে চাইতাম না -দুএকজন প্রফ ছাড়া বাকীদের ক্লাস বেকার সময় নষ্ট মনে হত।

সময়, প্রযুক্তি, পৃথিবী, জীবিকা বদলাচ্ছে। জানি না ক্লাসরুমের আর প্রয়োজন আছে কি না । পরীক্ষার প্রয়োজন আছে-তবে ক্লাসরুমের
 আর নেই । ইউটিউবে যে কোন সাবজেক্টের উপর এম আই টি, স্টানফোর্ডের বাঘা অধ্যাপকদের লেকচার ( ক্লাসরুম 
এনভাইরনমেন্টে) পাওয়া যায়। আহা আমাদের সময় যদি ইউটিউব থাকত!!

আমিত মনে করি ইউটিউবে এত ভাল লেকচার আছে ক্লাসের আর দরকার নেই । ছাত্রদের প্রতি সেমিস্টারে একটা করে শুধু পরীক্ষা
 নেওয়া উচিত-আর একটা করে "প্রজেক্ট এসাইনমেন্ট" করা উচিত যেখানে তারা কিছুটা হলেও মৌলিক বা রিভিউএর কাজ করতে
 পারবে।

অতীতকে আঁকরে ধরে বৃটিশ আমলের কেরানী তৈরীর কল আরো কদিন প্রহ্লাদ পাথর হয়ে থাকবে ছাএদের ওপরে কে জানে!

ব্রাত্য -থ্রিয়েট্রিক্সের দুর্দান্ত কমেডি!

সমালোচনা লেখার আগে প্রথমেই ডিরেক্টর  দিব্যেন্দু পালকে একটা হাজার ওয়াটের ধন্যবাদ। আমেরিকায় আছি চোদ্দবছর। গন্ডে পিন্ডে,  পূজোয় এবং গজায় দু চারটি নাটক প্রতিবছরই দেখি। কিন্ত কোন এক অজ্ঞাত কারনে, নস্টালজিয়া বা যেকারনেই হোক না কেন- সবাই ওই উৎপল দত্ত না হলে ম্যাক্সিমাম বাদল সরকারের টিপিক্যাল সত্তর বা আশির দশকেই লটকে থাকে। মাঝে সাজে প্লেইন ভ্যানিলা কমেডি। দেশের সেরা সন্তানেরাই আমেরিকাতে আসে। তাদের এই স্টিরিওটাইপে আমি ক্লান্ত। প্রবাসে নাটকের প্রতি এক তুচ্ছ অবজ্ঞা ছাড়া আমার কিছুই বাকী ছিল না ।



থ্রিয়েট্রিক্সের  "ব্রাত্য" এক বিশাল ব্যতিক্রম সেই এক ঘেঁয়েমি থেকে। পরীক্ষামূলক উচ্চমানের কমেডি। সিটে বসে মনে হচ্ছিল একাডেমিতে বা মধূসূদন  মঞ্চে নান্দীকার দেখছি। দিব্যেন্দু সাক্ষাত অজিতেশ।

থ্রিয়েট্রিক্সের "ব্রাত্য"  প্রবাসের নাট্য মরুভূমিতে মৌসুমি বৃষ্টি।

 নাটকটি নবনিতা দেবসেনের ছোট গল্পের নাট্যরূপ। ঘটনা, গল্প-সবটাই আশির দশকে বালিগঞ্জের এক বিয়েবাড়ি। এই গল্প বা নাটকের মূল থিমটা এন্টন চেকভের "ওয়েডিং" নাটকের ছায়ায়। নাটকের মূল চরিত্র মেশোমশাই বা কন্যার পিতার চরিত্রের অনুপ্রেরনা চেকভের জিগলভ।  যিনি, বিয়েতে হরেক রকমের খরচকে যৌত্বিক ভাবেই বাজে খরচ মনে করেন। তাই নিয়ে পরিবারের সকলের সাথে ঝগড়া।  অশান্তি। ফলে আক্কেল জ্ঞান নেই বলে, তিনি আউটকাস্ট বা ব্রাত্য। এই নাটকে মেশোমশাই একজন টিপিক্যাল বাঙাল। যিনি সাতপাঁচ না ভেবে হৃদয়ের নির্দেশে কাজ করেন। মনের কথা রাখঢাক না রেখেই বলে ফেলেন!  এটি একটি ক্ল্যাসিক চেকভ ঘরনার নাট্য চরিত্র-যেখানে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ঘটনার সংবেদনশীলতায় গল্প এগোয়।

 নাটকের ভিত্তি  আমাদের চেতনাকে কুঠারাঘাত করা একটা প্রশ্ন।  আমাদের এত প্রয়োজনের উৎস কি? সামাজিক চাপ না সত্য সত্যই এত কিছু আমাদের দরকার আছে?  মেশোমশাই এর সাথে বাকী চরিত্রদের ঘাত প্রতিঘাতে এই প্রশ্নটাই আসে ঘুরে ফিরে।

এই ভোগবাদি সমাজের জাঁতাকলে প্রয়োজনের সংখ্যা বাড়তেই থাকে। অথচ আমরা প্রশ্ন করি না -এত কিছু কি আমাদের সত্যই দরকার? বা যেগুলো দরকার সেগুলোও  কি আমরা চাইছি না সমাজ যা চাইতে বলছে তাই চাইছি ? আমাদের চেতনার শ্রোতকেই কি আমরা ব্রাত্য করে রেখেছি ভোগবাদের, সামাজিকতার প্রবল চাপে?

এই গভীর ডায়েলেক্টিকটি একটি কমেডি নাটকে নামানো বেশ চাপের কাজ। কিন্ত মানতেই হবে দিব্যেন্দু এবং অরিন্দম একশো শতাংশ সফল এই কাজে। একবারের জন্যও একঘেঁয়ে হয় নি-সদা হাস্যরসে  থেকেছে দর্শক।

নাটকের সাফল্যের অনেকটাই নির্ভর করছিল দিব্যেন্দুর অভিনয় দক্ষতার ওপরে।  তিনি সফল। উনার অভিনয় দেখে,  পাবনার পিশেমশাইকে মনে পড়ল।  একগুঁয়ে, একবল্গা, ঠোঁটকাটা বাঙাল-প্রতিটা মুর্হুর্তে ওপার বাংলায় শিকড়ের সন্ধানে।  সাত পাঁচ না ভেবে মন যা চায়, তাই কয়ে ফেলেন! আর তার এই আপাত নিরীহ প্রশ্ন গুলিই দর্শকের দিকে গুগলি - সত্যই কি আমরা ভাবি আমাদের জীবনে কি দরকার? কি চাইছি? নাকি  আমাদের চেতনা এক ভোগবাদি সামাজিকতার কাছে বন্ধক ?

রন্টুর রোলে অরিন্দম ঘোষ।  দর্শকাসনে এসে, প্রথমেই থার্ড ফর্মে দর্শকের সাথে যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টাটাতে ও সফল। এমনিতেই এটা নাটকের মনোলগ, তা সব অবস্থাতেই কঠিন। অরিন্দম কিন্ত সেই কঠিন কাজটাই স্বভাবসুলভ দক্ষতার সাথে নামিয়েছে হাজারো মুন্সিয়ানা এবং ইম্পোভাইজেশনের মধ্যে দিয়ে।

বাকী সবার অভিনয় বেশ উচ্চমানের। নাটকের কুশীলবরা নাটকের সারবস্তু এবং চরিত্রের অন্দরমহলে হাঁটাচলা করেছেন-যেটা বিশাল পাওনা। মাসীমার রোলে স্বাতীকে ভালোই মানিয়েছে-বিশেষত দিব্যেন্দুর মতন পোড়খাওয়া সিজনড অভিনেতার পাশে কাজ করাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং। তাতে স্বাতী উত্তীর্ন। তবে নাটক অনুযায়ী ও শান্তিপুরের মেয়ে। ওর ভাষাতে শান্তিপুরি পরিশীলতার ভাবটা একটু বাড়াত হবে চরিত্রটি আরো বিশ্বাসযোগ্য করে আঁকতে।  যশোমান ব্যানার্জি অল্প সময় ছিলেন স্টেজে রসুই এর রোলে-কিন্ত তার স্টেজ প্রেজেন্সে এবং বডি ল্যাঙ্গোয়েজে পাকা অভিনেতার সাক্ষর ।

 শালীর রোলে পরমা খুব দক্ষ অভিনেত্রী। ওর অভিনয় ক্ষমতা এবং সেট পিস ও উপভোগ্য। কিন্ত আরেকটু ইম্পোভাইজেশন দরকার । পিশীমার রোলে সুবর্না নিঁখুত এবং মসৃন।  রাইমা চরিত্রে শম্পা স্টেজের ওপর একটা হাল্কা মিষ্টি সৌর্ন্দয্য ছড়িয়ে দিতে পেরেছে-যেটা ওর অভিনয়ের সার্থকতা।

ঋতুপর্নার আবহসঙ্গীত গুলো একদম খাপে খাপ, অসাধারন। তবে সেখানে পরীক্ষার ছাপ নেই । টাইমস এন্ড টেস্টেড সেট পিস গুলিই নির্বাচন করা হয়েছে।

 স্টেজটা একটু বেখাপ্পা। এত ভালো কোয়ালিটির প্রযোজনার সাথে বেমানান। শ্রাদ্ধ বাড়ি না বিয়ে বাড়ি বোঝার উপায় ছিল না । কল্পনা করতে হচ্ছিল এটা বিয়ে বাড়ি।

 আরেকটা ছোট্ট অনুরোধ। নাটকে এত রাধাবল্লভী ফিসফ্রাই এর গপ্পো-বাইরে একটাও খাওয়ার স্টল ছিল না । অনেকেই লাঞ্চ না করে এসেছিলেন-বেচারাদের ক্লান্ত পেটে এত রাধাবল্লভীর গপ্পো সইল কিনা কে জানে!

Saturday, November 22, 2014

অনুকূল ঠাকুর উবাচ- এক হিন্দু শরিয়তবাদির উপাখ্যান

                                                               (১)
লেখাটা না লিখিলেও চলিত! একটা আস্ত খোরাকের পেছনে সময় দেওয়া আদৌ বুদ্ধিমানের কাজ কি না এই সব নিয়ে যখন ভাবছি --দেখলাম, উনি এতসব মণিমাণিক্য ছড়িয়েছেন-এগুলি নিজের ভাষায় না লিখলে,  পাঠক এক বিশুদ্ধ হাস্যরস থেকে বঞ্চিত হবে!

 আমার দাদু ছিলেন অনুকুল ঠাকুরের শিষ্য!  তখনই প্রথম এই শব্দগুলির সাথে পরিচিত হই -

যজন,যাজন ও ইষ্টভৃতি 

তখন দেখতাম এক অদ্ভুত কেরামতি। দাদু হাগতে গেলেও এক পয়সা গুরুর নামে একটা ভাঁড়ে জমা দিয়ে হাগতে বসত!  এটি শ্রী শ্রী ঠাকুরে দীক্ষিত শিষ্যদের অবশ্য কর্তব্য-সর্বদা গুরুকে স্মরণ করিবে! হাগতে গেলেও করিবে! কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আমাশায় সর্বত্র গুরুকে স্বরণ করা এই কূলের ( যা সৎসঙ্গ) নিয়ম!  গুরুদেব ঠাকুরকে এক পয়সা ভাঁড়ে দিলে , উনি কোষ্টকাঠিন্যে পায়খানা তরল করিবেন, আমাশায় আঁটি বাঁধিবেন! অহ ! এমন জগৎগুরুর সন্ধান কভি কেও দেখিয়াছেন?


 উনার সর্বাধিক বিখ্যাত শিষ্য লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। সারা বাংলায় মেরেকেটে কোটি খানেক সৎসঙ্গী আছে বলে উনারা দাবী করেন!

                                                               (২)

 তবে শ্রী শ্রী ঠাকুর বিখ্যাত অন্যকারনে। এই ডাইনামিক হিন্দুধর্মে ইউজেনিক্স নামে ডিনামাইট ঢোকানোর পেটেন্টটি উনার । যারা ইউজেনিক্স নিয়ে পরিচিত নন -তাদের জন্য দুই লাইন জানিয়ে রাখি। এটি একটি খরতরনাক অপবিজ্ঞান যা নিয়ে হিটলার অবসেসড ছিলেন বিশুদ্ধ জার্মান জাতির সৃষ্টিতে। বিবাহে নরনারীর নির্বাচনের বিশুদ্ধতা উৎকৃষ্টতর সন্তানের জন্ম দেয়-এই হচ্ছে উনাদের "বিজ্ঞান সম্মত " বিশ্বাস!!

অনুকুল চক্রবর্ত্তীর (14 September 1888 – 27 January 1969) অবশ্য হিটলারে ঠাঙারে বাহিনী ছিল না।  তাই হিন্দু ধর্মের বর্ণবাদকে আশ্রয় এবং সাশ্রয় করেই উনি, হিন্দু ধর্মে ইউজেনিক্স ঢোকাতে উৎসাহী হোন।

উনার দর্শনের মূল থিওরী এই রকম -

       হিন্দু ধর্মের বর্ণবাদ ভাল! কারন তা বংশ গৌরব এবং বংশ দক্ষতা ( স্কিল) রক্ষা করে!  রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষা করে!

  এই ঠাকুর কোন এক কালে ডাক্তারী পাশ করেছিলেন। কোন বায়োলজি গ্রন্থে শুদ্র রক্তের সাথ ব্রাহ্মন রক্তের পার্থক্যর পরীক্ষালদ্ধ ফল পাওয়া যায়, তা আমাদের কারুর জানা নেই । তবে উনিত আবার ঈশ্বরের সাথে কথা বলতেন-হয়ত  কানে কানে ইশ্বর এসে এসব বৈজ্ঞানিক অমৃতবানী উনার কানে ঢেলেছিল!

  তবে এই বর্ণবাদ টেকাতে এবং উৎকৃষ্ট হিন্দু সন্তান প্রসব করিতে, উনার বিবাহের ফর্মুলা হচ্ছে এই রকম -


  •         প্রতিটা হিন্দু  পুরুষের দুইটি বিবাহ করা উচিত ! প্রথমটা সবর্ণ, পরেরটা অনুলোম অসবর্ণ । অনুলোম অসবর্ণ বিবাহ মানে উচ্চকাস্টের হিন্দু পুরুষের সাথে নিম্ন বর্ণের মহিলার বিবাহ। ব্রাহ্মন পুরুষের সাথে শুদ্রকন্যার বিবাহ। উচ্চবর্নের মহিলার সাথে নিম্ন বর্নের পুরুষের বিবাহে তিনি নারাজ। কারন তার বায়োলজি "গবেষণা" ।  নিম্নবর্নের স্পার্ম নাকি উচ্চবর্নের ডিম্বানুকে নষ্ট করে। প্রথমত উচ্চবর্নের আর নিম্ন বর্নের লোকেদের স্পার্ম আলাদা হয়-এই অতি মুল্যবান বৈজ্ঞানিক তথ্যর জন্য, উনাকে নোবেল বা নিদেন পক্ষে একটি গোবেল প্রাইজ দেওয়া উচিত ছিল! 
  •  সর্বর্নে বিবাহটা করার পর কিন্ত আপনি অসবর্ণ বিবাহটা করিবেন! কেন? কারন আপনার সবর্ন স্ত্রীর গর্ভে আসিবে বিশুদ্ধ সন্তান! আর অসবর্ন বিবাহে আসিবে অশুদ্ধ সন্তান! অশুদ্ধ সন্তান কেন? এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে শ্রী শ্রী ঠাকুর বিজ্ঞানে একেবারে "নিরক্ষর " ছিলেন না । উনার মতে বায়োডাইভারসিটি বাড়াইতে দ্বিতীয় বিবাহটি অসবর্ণ করিতে হইবে! 


 মোদ্দা কথা উনার এই স্বরচিত " বৈজ্ঞানিক "  ইউজেনিক্স ভারতে খুব বেশী চলে নি-কারন নেহেরু। যিনি হিন্দুদের বহুবিবাহ আইন করে রদ করেন ।  তবে শ্রীঠাকুর,  থিওরী অনুয়ায়ী দুটি বিয়ে করেছিলেন। এতে সমাজে বিশুদ্ধ এবং ডাইভার্স সন্তান এসেছিল কিনা আমার জানা নেই - তবে সতীন ও সতীনপুত্রের ঝগড়ায়, তার সৎসঙ্গ আশ্রম উঠে যাবার উপায় হয় একসময়। শিষ্যরাও বিরক্ত হয়েছিল। আমার দাদু তার সন্তানদের ওপর খাপ্পা ছিলেন-এটুকু মনে আছে।

                                                                (৩)

কেও যদি জোকার নায়েকের বৈজ্ঞানিক আবিস্কারে পুলকিত হৌন-তাহলে অনুকুল চক্রবর্ত্তীর  বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উদ্ভাবনী শক্তিতে তূরীয় অবস্থা পেতে পারেন! উনার পুনঃজন্মের তত্ত্বটি এখানে হুবহু দিলাম -

।। পুণর্জন্ম কিভাবে হয় ।।
"সম্বেগ জীবের বা মানুষের মধ্যে gene-এর (জনির) ভিতর-দিয়ে যে pitch-এ
(স্তরে) ওঠে, মরে যাওয়ার সময় psycho-plasm-এ (মানস দেহে) engraved (মুদ্রিত)
হ'য়ে থাকে সেই pitch-এ wave-এর (তরঙ্গের) আকারে । মিলনেচ্ছু sperm-এর
(শুক্রকীটের) ভিতর সেই জাতীয় সম্বেগ সৃষ্টি হ'লে tunining (সঙ্গতি) হয় এবং মৃত
ব্যক্তি পুনরায় শরীর গ্রহণ করার সুযোগ পায় । জন্ম ও মৃত্যুর এটাই revolving process
(ঘূর্ণায়মান পদ্ধতি) ।"
আঃ প্রঃ ২১।১০৭ থেকে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের বাণী ।



 শ্রী শ্রী ঠাকুরের মাথায় কতটা উর্বরা ফসফেট ছিল ভেবে দেখুন ত?  ব্যাপারটা জাস্ট ভাবুন

  আপনি মারা যাচ্ছেন-যাওয়ার সময় আস্তে আস্তে  তড়িৎ চুম্বক তরঙ্গে বিলীন হচ্ছেন! সেই তরঙ্গের একটা ফ্রিকোয়েন্সি আছে?  রাইট!
 
 এবার ধরুন আপনি যে সময় মৃত্যুর কারনে তরঙ্গে পরিনত, একজাক্টলি সেই সময়, অনেক পুরুষ, অনেক নারীর সাথে সঙ্গমে রত এবং তাদের যোনীদ্বারে কোটি কোটি স্পার্ম সবে ঢুকতে শুরু করেছে ! এই সব স্পার্মও তরঙ্গায়িত! নীলস বোর বা হাইজেনবার্গ স্পার্মের ওয়েভ পপার্টি বার করতে ব্যর্থ হলেও, শ্রী শ্রী ঠাকুর ঠিক জানেন, স্পার্মের ওয়েভ পার্টিকল ডুয়ালিটি!

 এবার আপনার মৃত আত্মার একটা ফ্রিকোয়েন্সি আছে এবং স্পার্মদেরও নিজস্ব ফ্রিকোয়েন্সি আছে! এবার আপনার আত্মার ফ্রিয়োয়েন্সির সাথে স্পার্মের ফ্রিকোয়েন্সি মিলে গেলেই আপনি খাঁটি "রেজোনান্স" পদ্ধতিতে স্পার্মের মধ্যে ঢুকে গেলেন!!  তারপরে সেই মহিলার পেট হইতে সন্তান হিসাবে বাহির হইবেন।

  তবে  গুরুর তত্ত্বে অসম্পূর্নতা আছে যা তার শিষ্য বা পুত্ররা সম্পূর্ন করেন নি!  প্রথমত কন্ডোম থাকিলে কি হইবে? তাহলে ত সবই গেল!! আর ওই কোটি কোটি স্পার্মের মধ্যে মাত্র একটিই ডিম্বানুর প্রাচীর ভেদ করতে পারে! ভেবে দেখুন-আপনি একটি স্পার্মের মধ্যে ঢুকে গেলেন রেজোনান্সের মাধ্যমে কিন্ত সেটি প্রাচীর ভেদ করিতে পারিল না !
 তাহা হইলে কি হইবে?  আপনি আবার সেই জন্মাতে জন্মাতে মারা পড়িলেন! রাইট? সেক্ষেত্রে আপনি --সেই স্পার্ম হইতে বাহির হইয়া,  নতুন যোনির সন্ধান করিতে লাগিলেন না পুনজন্ম হইলনা বলিয়া, মহাবিশ্বে তরঙ্গায়িত হইয়া ভাসিতে লাগিলেন, এসবের সমাধান কিন্ত গুরুদেব দিয়ে যান নি!!

ভেবে দেখুন। মৃত্যর পর আবার জন্ম নেওয়ার চেষ্টাটা কিন্ত বেশ চাপের! ওই তরঙ্গের ফর্মে আপনি শুধুই যোনি খুঁজে বেড়াচ্ছেন যেখানে লিঙ্গ সবে ঢুকেছে আর স্পার্ম ফেলার তালে আছে!  যোনিতে স্পার্ম পড়তেই আপনি ফ্রিকোয়েন্সি স্ক্যানার দিয়ে স্পার্ম খুঁজতে লাগলেন যদি ম্যাচিং ফ্রিকোয়েন্সি পেয়ে যান! তারপরেও যদিও নিস্তার নেই -কন্ডোম থেকে প্রতিযোগী স্পার্মদের কাছে হেরে যাওয়ার ট্রাবলটা এক্সট্রা! আমি বাপু মরে যাওয়ার পর এত ঝামেলার মধ্যে যেতাম না !

 তবে এই সুমহান তত্ত্বটার জন্য উনাকে গোবেল প্রাইজ অবশ্যই দেওয়া উচিত ছিল!

ভাবতে অবাক লাগে  জাকির নায়েক, অনুকুল ঠাকুর টাইপের লোকগুলো ধর্মীয় বাঙালী মধ্যবিত্তের মধ্যে জনপ্রিয় গুরুস্থানীয় চরিত্র। এই ব্যপারটা বোঝার জন্য যথেষ্ট আসলেই সংখ্যাগরিষ্ট বাঙালী কতটা অশিক্ষিত এবং অজ্ঞানের অন্ধকারে ডুবে আছে!

                                       (৪)

 কেও যদি ভাবেন শরিয়া এবং ইসলাম ভয়ংকর নারী বিরোধি-তারা অনুকুল ঠাকুরের "নারী" জাতির প্রতি উপদেশ পড়ে দেখতে পারেন!  আমি দুয়েকটা মণিমানিক্য তুলে দিচ্ছি ---মন্তব্য নেই কারন আমি সত্যই বাকরুদ্ধ!

   "
এক মা জিজ্ঞাসা করলেন, স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করা সত্ত্বেও
স্বামী যেখানে স্ত্রীর সঙ্গে দূর্ব্যবহার করে, সেখানে স্ত্রীর কী করবে?

শ্রীশ্রীঠাকুর- ঐ কথাই তো বলছিলাম। প্রকৃতিগত সামঞ্জস্য
দেখে বিয়ে না দিলে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই জীবন বিধ্বস্ত হ’য়ে যায়।
তুমি তোমার ধারনা অনুযায়ী হয়তো ভাল ব্যবহার করছ, কিন্তু স্বামীর
হয়তো অনুযোগ- আমি যা চাই, আমি যা পছন্দ করি, আমার স্ত্রী কিছুতেই
তেমনভাবে চলে না, সে তার নিজের খেয়ালমত চলে,
আমি তাকে নিয়ে আর পারি না। বড়জোর হয়তো বলবে, আমার
স্ত্রী এমনি ভাল মানুষ, কিন্তু আমি কিসে খুশি হই, আমি কিসে ভাল থাকি,
তা সে বোঝে না। তার নিজের এক ধরণ আছে, সেই ধরনে চলে। আমি বহু
ক্ষেত্রে দেখেছি, স্ত্রীর মত স্ত্রীও খারাপ নয়, স্বামীর মত স্বামীও খারাপ
নয়। উভয়েই ভাল মানুষ বলে সুনাম আছে বাইরে। সবার সঙ্গেই তাদের ব্যবহার
ভাল, কিন্তু উভয়ের মধ্যেই আর কিছুতেই বনিবনা হয় না। বিয়ে থাওয়ার এমনতর
গরমিল যদি কোথাও ঘটে গিয়ে থাকে, সেখানে স্বামী-স্ত্রীর
প্রকৃতিটা বুঝতে চেষ্টা করা উচিত এবং স্বামীর যাতে ভাল লাগে ও ভাল
হয় নিজের ব্যবহার সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করা উচিত। একটা জ্যান্ত
মানুষের সাথে ব্যবহার করার সব সময় স্মরণ রাখা উচিত, আমি ইট, কাঠ
বা পাথরের সঙ্গে ব্যবহার করছি না। যার সঙ্গে ব্যবহার করছি তার
একটি রুচি আছে, প্রকৃতি আছে , মেজাজ আছে, ধরণ আছে। বদ্যি যেমন
নারী টিপে ধাত বুঝে ওষুধ দেই, মানুষের সঙ্গে ব্যবহারের দাওয়াইও
তেমনি ধাত বুঝে প্রয়োগ করতে হয়। এক কথায় মানুষের মন-মেজাজ
বুঝে চলতে হয়। এমনটি যদি না চলতে পার তবে তোমার ভালর
ধারণা নিয়ে আবদ্ধ হ’য়ে থাকলে তুমি কিন্তু কখনও মানুষের মন পাবে না। শুধু
স্বামীর সঙ্গে ব্যবহারেই এমনতর নয়। প্রত্যেকের সঙ্গে ব্যবহারেই চোখ, কান, মন
খোলা রেখে চলবে। নজর করবে, কে কখন কী অবস্থায় আছে। তাই বুঝে তখন
যা বলার বলবে, যা’ করার করবে। তুমি হয়তো মনে করে রেখেছ, স্বামীর
কাছে সংসারের একটা প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য আবদার করবে। স্বামীর মন
কেমন তা লক্ষ্য না করে, তুমি তোমার চিন্তার সম্ভেগ অনুযায়ী এমন সময়ই
হয়তো কথাটা তাকে বললে যখন তার মন নানা সমস্যায় ভারাক্রান্ত। তখন
সে তো চটবেই। আবার, তুমিও বলবে, আমি তো নিজের জন্য কিছু
চাইতে যাইনি, সংসারের জন্য দরকার, সেই দরকারী জিনিসের
কথা বলতে গিয়ে কত কথা শুনলাম। যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা।
আমার ভাল কথাটাও তোমার গায়ে সয় না। এই বেধে গেল আর
কি লাঠালাঠি। পরস্পর হিসাব করে না চলার দরুন অনেক গোলমালের সুত্রপাত
হয়। মেয়েদের বিশেষ বিশেষ শারীরিক অবস্থায় বিশেষ-বিশেষ মেজাজের
সৃষ্টি হয়, সেটা হলো সাময়িক ব্যাপার এবং শারীরিক অবস্থার সাথে জড়িত।
পুরুষ ছেলের এটা সম্পর্কে যদি কোন জ্ঞান না থাকে এবং তখনকার
স্বাভাবিক বৈলক্ষণ্যের দরুন যদি অযথা শাসন করতে যায়, তাহলে কিন্তু
হিতে বিপরীত ঘটে। আবার, স্বামী হয়তো ফিটফাট থাকতে পছন্দ করে, কিন্তু
স্ত্রী হয়তো অগোছাল, অপরিচ্ছন্ন রকমে চলতে অভ্যস্ত। সেখানে স্ত্রীর ঐ
চলনে স্বামীর তো অসন্তুষ্ট হবার কথাই।
মা-টি অকপটে বললেন, আমার ঐ দোষটি আছে।
শ্রীশ্রীঠাকুর: দোষ যদি বুঝে থাকিস, তবে সেরে ফ্যাল্। যা করলে শরীর-
মনের পক্ষে ভাল হয়, ছেলেপেলে ভাল থাকে, স্বামীরও মনোরঞ্জন হয়,
তা তো করাই লাগে। স্বামীর কাছে যত সময় নত থাকবি। যুক্তি তর্ক
দিয়ে কারো মন জয় করা যায় না। তোর যদি কখনও মনেও হয় যে, স্বামী তোর
সঙ্গে অকারণ দূর্ব্যবহার করছে, তাও বলবি, আমি কথাটা বলতে চেয়েছিলাম
ভাল, কিন্তু ভাল করে বুঝিয়ে বলতে না পারায় তোমার অশান্তির কারণ
হয়েছি। ত্র“টি আমারই। এইরকম যদি করতে পারিস তাহলে দেখতে পাবি,
স্বামীর সব রাগ গলে জল হয়ে যাবে। একটা জায়গায় কেবল স্বামীর
বিরুদ্ধে দাড়াতে পারিস, অর্থাৎ যদি দেখিস, স্বামী তাঁর মা-
বাবা বা গুরুজনের সঙ্গে অসমীচিন ব্যবহার করছে, সেখানে কখনও কিন্তু
স্বামীর পক্ষ সমর্থন করতে যাবি না, শ্বশুর-শাশুড়ীর পক্ষ হয়ে সেখানে ন্যায্য
প্রতিবাদ করবি। স্বামীর মঙ্গলের জন্যই এটা করা দরকার। অনেক স্ত্রী তাদের
স্বামীকে তাদের গুরুজন ও আপনজন হতে বিচ্ছিন্ন করে নিজেদের
আঁচলধরা করে রাখতে চায়। ভাবে, আমরা স্বামী-স্ত্রী ছেলেপেলেদের
নিয়ে সুখে থাকতে পারলে হলো, আর চাই কী? কিন্তু এত যে স্বামীর প্রতি ও
নিজের প্রতি শত্র“তা করা হয়, এ-কথাটা বোঝে না। স্বামীর
প্রতি শত্র“তা এদিক দিয়ে যে, স্বামী যাদের নিয়ে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ,
প্রীতি, দায়িত্ব ও কর্ত্তব্যহীন করে তুললে সে ধীরে ধীরে অমানুষ হয়ে পড়ে,
তার জগৎটা হয়ে যায় সংকীর্ণ; কারণ, যে নিজের মা, বাপ,
ভাইবোনকে ভালবাসতে পারে না, তাদের প্রতি কর্ত্তব্য করতে পারে না,
সে দেশ ও দশকে ভালবাসবে, তাদের জন্য করবে, এ একটা মিছে কথা। অমনতর
যারা, তারা বড়জোর তথাকথিত politics (রাজনীতি)করতে পারে নাম-
চেতানর জন্য, স্বার্থ-সিদ্ধির জন্য। অন্তরের আসল বিস্তার তাদের কিছুই হয় না।
আর, তাদের আত্মপ্রসাদ বলেও কিছু থাকে না। যাদের খুশি করে, যাদের
আশির্বাদ ও প্রসাদ লাভ করে মানুষ বড় হবার প্রেরণা পায়, তাদের প্রতি টানই
যদি ছিঁড়ে যায়, তবে তার সম্বল কি রইল জীবনে তা তো বুঝি না।
ওভাবে রিক্ত ও নিঃসম্বল হয়ে করে দিল যে তাকে মনোজগতে, তার
প্রতি একদিন তার আক্রোশ আসাও অসম্ভব না। তখন ঐ
স্ত্রীকে হয়তো সে দুচক্ষে দেখতে পারে না। ভাবে, ঐ ডাইনী আমার
সর্বনাশ করেছে। আমার মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন সকলের
থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে আমাকে। আমার সাজানো বাগান
শুকিয়ে ফেলেছে। ও আমাকেও চায় না। ও চায় আমাকে দিয়ে ওর নিজের
খেয়াল পূরণ করতে। এটা প্রকারান্তে নিজের প্রতি শত্র“তা নয় কি? তাছাড়া,
যে ছেলেপেলেদের সুখসুবিধার দিকে চেয়ে অমন করে, তাদেরও কি ভাল
হয়? যে সঙ্কীর্ণ স্বার্থপরতার দীক্ষা তাদের দেয়, তার ফলে তারাও
তো পরস্পরকে ভালবাসতে শেখে না। কালে-কালে তারাও তো মা-
বাবা ও ভাই-বোন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। যেমনতর বীজ বোনা যায়,
তেমনতর ফলই তো ফলবে। তখন হয়তো দেখবে, তোমার একটি ছেলে চর্ব্য, চোষ্য,
লেহ্য, পেয় খাচ্ছে আর একটি ছেলে পথে-পথে না খেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে,
কিন্তু সে তাকে এক মুটি ভাতও দিচ্ছে না। দিতে চাইলেও তার স্ত্রীর
ভয়ে পারছে না। এই অবস্থা দেখলে তোমার কি ভাল লাগে? কিন্তু এই
অবস্থাটার তো সৃষ্টি করলে তো তুমি।
মা-টি সঙ্কুচিত হয়ে বললেন, ঠাকুর! আপনি আর বলবেন না, শুনে বড় ভয় করে।
মেয়ে মানুষ বোকা জাত, তাদেরই কি যত দোষ? মেয়েমানুষ ভূল
করে যদি স্বামীকে তার বাপ-মার থেকে নিজের দিকে টানতে চায়,
তাহলেই স্বামীও কি সেই ভূলে সায় দেবে?
শ্রীশ্রীঠাকুর তা তো দেওয়া উচিতই নয়। পুরুষেরই তো দায়িত্ব বেশী। সেই
তো তার পিতৃভক্তি ও মাতৃভক্তির দৃষ্টান্তে স্ত্রীকে তাদের
প্রতি আরো শ্রদ্ধাপরায়ণ করে তুলবে। যেখানে স্বামীর অতখানি দৃঢ়তা ও
পৌরুষ নেই, সেখানে সতী স্ত্রীর অনেকখানি করণীয় আছে। সে যদি স্বামীর
ভালই চায়, তবে তাই করবে যাতে স্বামীর মঙ্গল হয়। স্বামী যদি তার মা-
বাবার প্রতি কর্ত্তব্যচ্যুত হতে চায়, সে বরং তখন
কলেকৌশলে চেষ্টা করবে যাতে বাপ-মার প্রতি তার টান
বাড়ে এবং আবেগভরে সে তাদের সেবাযতœ করে। মানুষের অন্তরে শ্রদ্ধা,
ভক্তি, প্রীতি ইত্যাদি বাড়াবার জন্য অনেক সময় দূতীগিরি করতে হয়।
স্ত্রী হয়তো স্বামীকে বলল, বাবা-মা তোমাকে খুব ভালবাসেন। বলেন ও
রাগধাগ করলে কি হয়? মন ওর খুব ভাল। বাইরে আধিক্যেতা নেই। কিন্তু সকলের
প্রতি অনেক টান। আবার, শ্বশুর-শাশুড়ীর কাছে হয়তো বলতে হয়,
উনি আমাকে সবসময় বলেন, আমার কিছু করা লাগবে না তোমার। তুমি সব সময়
দেখবা, বাবা-মার যাতে কোন কষ্ট না হয়।
এইভাবে যদি কৌশলে দূতীগিরি করা যায়, তাহলে পরস্পরের মধ্যে শ্রদ্ধা,
প্রীতি, ভাব-সাব গজিয়ে দেওয়া যায়। এই তো সতী স্ত্রীর কাজ,
লক্ষ্মী বৌয়ের কাজ। গড়া সংসার ভাঙবে না সে, ভাঙা সংসার গড়বে সে,
জোড়া লাগাবে সে। মায়েদের তুই বোকা বলিস? বোকা হলে কখনও সন্তান
পেটে ধরে মানুষ করে তুলতে পারে? দে তো একটা ব্যাটাছাওয়ালের
কাছে একটা মা হারা শিশুকে মানুষ করার ভার। প্রায়ই হাগে-
মুতে একসা করে ফেলবেনে। কিন্তু মায়েরা কেমন অনায়াসেই করে তা। তাই
নিজেদের কখনও ভাববি না। তোরাইতো বুদ্ধিস্বরুপিণী, লক্ষ্মীস্বরুপিণী,
দূর্গতিনাশিনী, দুর্ম্মতিদলনী দূর্গা। তোরা আছিস, তাই তো আমাদের
আগলে রেখেছিস। নইলে আমাদের উপায় ছিল কী?
[তথ্যসূত্র: আলোচনা প্রসঙ্গে, ৬ই কার্তিক, শুক্রবার, ১৩৪৯ (ইং ২৩/১০/১৯৪২)]



এবার উনার নারীবাদি তত্ত্বগুলি সাজিয়ে নিন


  •   নিজেদের ভালোর জন্য নারীর স্বীকার করা উচিত তারা হীনবুদ্ধির জীব
  •   স্বামী অত্যাচার করলে, বকলে, ভুল ব্যবহার করলেও তা মেনে নিতে হবে -কারন লং টার্মে তা সংসারের জন্য ভাল  "যুক্তি তর্ক
    দিয়ে কারো মন জয় করা যায় না। তোর যদি কখনও মনেও হয় যে, স্বামী তোর
    সঙ্গে অকারণ দূর্ব্যবহার করছে, তাও বলবি, আমি কথাটা বলতে চেয়েছিলাম
    ভাল, কিন্তু ভাল করে বুঝিয়ে বলতে না পারায় তোমার অশান্তির কারণ
    হয়েছি। ত্র“টি আমারই। এইরকম যদি করতে পারিস তাহলে দেখতে পাবি,
    স্বামীর সব রাগ গলে জল হয়ে যাবে। '
  • নিজেদের  সংসার এবং সন্তান ছাড়া নারীর আর কোন কাজ নেই , জীবনের আর কোন উদ্দেশ্য নেই
সব সময় স্বামীর মন ও মেজাজ বুঝে চলতে হবে-তবে সে সার্থকনামা স্ত্রী!

 মুশকিল হচ্ছে এত বড় একজন খোরাকের পেছনে, এতটা সময় দিয়ে লেখাটা ঠিক হল কি না ! কিন্ত যেভাবে রাজনৈতিক কারনে হিন্দুত্বের বিষ রক্ত আবার বাংলাতে ঢুকছে, পবিত্র হিন্দু গুরুরা ঠিক কি টাইপের  এবং কোন গোয়ালের গরু সেটা মনে করিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি।



Sunday, November 16, 2014

নারী অধিকার বদলায় উৎপাদন ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে

তসলিমাকে কেন্দ্র করে একটা বিতর্ক সামনে এল-ধর্ম এবং পুরুষতন্ত্র বিরোধি আন্দোলনের রূপরেখা কেমন হওয়া উচিত? বেগম 

রোকেয়ার মতন পুরুষতন্ত্রের সাথে আপোস করে চলা নাকি তসলিমার মতন ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও নারীবাদি জিহাদ ? কিসে ভাল

 ফল হবে ? ইন্সিডেন্টালি আমি মনে করি না চেতনা উন্মেষের আন্দোলনে কিছু হয় বলে বা এগুলোর কোন প্রভাব আছে। সমাজ 

বদলায়, নারী অধিকার বদলায় উৎপাদন ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে। বাংলাদেশে নারী এগোলে তার পেছনে ভূমিকা থাকবে গার্মেন্টস

 শ্রমিকদের যারা নিজেদের রুজি বাঁচাতে নিজেদের অধিকারের লড়াই লড়বে। পাশ্চাত্যে নারীবাদিদের লেখালেখি থেকে নারীর 

অধিকার আসে নি। অধিকার এসেছে যখন শিল্প বিপ্লবের প্রয়োজন হয়েছে নারীকে ফ্যাক্টরী শ্রমিক বানাতে। আমেরিকাতেও নারী 

স্বাধীনতার সব থেকে গুরুত্বপূর্ন ধাপ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। যখন যুদ্ধের প্রয়োজনে নারীকে ফ্যাক্টরীতে যেতে হল। পশ্চিম বাংলাতেও নারী 

ক্ষমতায়ন যেটুকু হয়েছে তার মূলে আছে উদবাস্ত সমস্যা। প্রতিটা বাঙাল ফ্যামিলিতে এতই অর্থাভাব ছিল, ফ্যামিলিতে পুরুষরা বাধ্য

 হলেন মেয়েদের চাকরী করা মেনে নিতে। মেঘে ঢাকা তারার নীরারা পর্দায় না -বাস্তবেই বাঙালী নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন 

অবস্থান নিয়েছেন। আমার দাদু ছিলেন খুব রক্ষণশীল লোক-কিন্ত সংসারে অর্থাভাবে বাধ্য হয়েছিলেন মেনে নিতে যাতে আমার মা বা 

মাসীরা চাকরি করে। সেই নিয়ে তার আফশোস ও ছিল। তার সব সময় মনে হত হয়ত মেয়েদের চাকরী ছেড়ে ছেলে মেয়ে মানুষ 

করাটাই উচিত ছিল আগে। আমি এই অবস্থা দেখেছি আরো অনেক বাঙাল ফ্যামিলিতে-যেখানে মেয়েটিই চাকরী করে সংসার 

বাঁচিয়েছেন। বাবা অনেক কষ্টে মেয়ের চাকরি করা মানতে বাধ্য হয়েছে। এরা কেও বোভায়া বা রোকেয়ার নাম জানে না । 

অর্থানৈতিক প্রগতি, উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তন নারীবাদের আসল চাবিকাঠি। যেমন হাজার নারীবাদি ডায়ালোগ সত্ত্বেও বাস্তব হচ্ছে

 অধিকাংশ চাকরীজীবি মায়েরা ক্যারিয়ার ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে কি আমেরিকাতে, কি ভারতে। স্বেচ্ছায়। সুতরাং ছেলে মেয়ে মানুষ 

করার হিউমানয়েড বা কমিউনিটি সিস্টেম না আসা পর্যন্ত, মেয়েদের জন্য চাকরি করা এখনো সম্পূর্ন লেভেল ফিল্ড হবে না । কিন্ত 

প্রযুক্তির উন্নতিতে আস্তে আস্তে এমনিতেই নারীর অধিকার গুলি প্রতিষ্ঠিত হবে।