আলটিমেটলি রাজনীতিটা ক্ষমতা দখলের খেলা। আবাহমান কাল থেকেই খুন, উৎকোচ, ধর্ষন, ঘরবাড়ি ফসল জ্বালিয়ে দেওয়া-এসব কিছুই করতে হয়েছে ক্ষমতা টেকানোর জন্য। এর মধ্যে সব থেকে সূক্ষ্য যে কগনিটিভ কণ্ট্রোলের রিমোট বাটন ছিল-সেটা হচ্ছে ধর্ম।
তবে এই নিরাশার দিনেও আমি আশার আলো দেখি। আলটিমেটলি ধর্ম টিকে আছে শাসক শ্রেনীকে কগনিটিভি কণ্ট্রোল দিতে। মার্কেটের প্রসারের সাথে সাথে এটা সম্পূর্ন অন্যখেলা হবে। খেলাটা খুব সূক্ষ। ধর্ম মানুষকে একটা ভুল আশা দেখায়-ফলে পরকালে বা অন্যজন্মের আশায় তৈরী হয় তার আশাবাদ। সেটাও বেচা যায়-আধ্যাত্মিকতার আফিঙে মুড়ে সেটার ও কেনা বেচা চলে পৃথিবীর সর্বত্র। কিন্ত সেখানেই মার্কেটের কারসাজি! যদি অবজেক্টিভ ফাংশানের মধ্যে ইহজীবনের ভাল খাদ্য পানীয় সুরা নারী ঢোকানো যেত-খুব সম্ভবত বস্তুবাদি লোভ দিয়েই মানুষকে নিয়ন্ত্রন করা যেত। আধ্যাত্মিক লোভ, পরকালের সুরাহুরিদের লোভে দলে টানতে হত না। মার্কেট সেটাই করে। আমেরিকাতে মদ্য, মারিজুয়ানা, স্ট্রীপ ক্লাব, পর্ণ-এসবের বিরুদ্ধে আপত্তি কিন্ত আসে গোঁড়া ধর্মীয় আধ্যাত্মিক লোভে বিশ্বাসী লোকেদের কাছ থেকে। তবে এগুলোর ক্ষেত্রে ধর্মীয় লোকেদের একটা মরাল হাই গ্রাউন্ড থাকে। কিন্ত আসল প্রতিযোগিতা আসছে একটা নতুন শ্রেনীর "গুরু" দের কাছ থেকে। যারা বলছে তারা পেশাদার "লাইফস্টাইল গুরু"- ফিটনেস-খাওয়া দাওয়া-কাজ করা-চিন্তাকরা- রিলেশনশিপ-ইত্যাদি নিয়ে তারা পেশাদার এডাভাইসার হচ্ছে-দাবী করছে-দুবছরের মধ্যে রোগ সারিয়ে দেবে-পেশাদারী জীবনে উন্নতি করিয়ে দেবে উন্নত প্রোডাক্টভিটির মাধ্যমে। আমার ধারনা এই নো ননসেন্স লাইফস্টাইল গুরুরা আস্তে আস্তে ঈশ্বর এবং ধর্ম ভিত্তিক গুরুদের রিপ্লেস করতে সক্ষম হবে। এটা এখন আমেরিকার টপ ১% এ সীমাবদ্ধ-কিন্ত আস্তে আস্তে এটাই হবে মডেল।
আধ্যাত্মিক লোভের সাথে বস্তুবাদি লোভের একটা বিরোধ আছে। আশার স্থল সেটাই যে মার্কেট তার নিজের প্রয়োজনে বস্তবাদি লোভটাকেই বাড়াতে চাইবে। তাতেও অনেক ক্ষতি আছে। কিন্ত আপাতত তা ধর্মীয় চাপাতির থেকে ভাল।
মার্কেট অবশ্যই কাজ করে। আমেরিকাতে করছে। ১৯৮৯ সালে নিধার্মিকের সংখ্যা ছিল ৮%। এখন ১৮%। পশ্চিম ইউরোপের প্রায় সব দেশে নিধার্মিকরাই এখন সংখ্যাগুরু। ভারত বাংলাদেশেও করবে। মার্কেটকে খেলতে দিতে হবে। যাতে মার্কেট নিজের প্রয়োজনেই আধ্যাত্মিক বিশ্বাসকে সরিয়ে বস্তবাদি লোভ ঢোকাতে পারে। তবে ভারতে ধর্মীয় চাহিদাও মার্কেট হয়ে যায়! দেখা যাক নিরাশায় না ভুগে- জীবদ্দশায় দেখে যেতে চাই ধর্ম মুক্ত ভারত এবং বাংলাদেশে।
1 comment:
"....লাইফস্টাইল গুরুরা আস্তে আস্তে ঈশ্বর এবং ধর্ম ভিত্তিক গুরুদের রিপ্লেস করতে সক্ষম হবে, আপাতত তা ধর্মীয় চাপাতির থেকে ভাল।..." কিন্তু লাইফস্টাইল গুরুরা তো, নিম্নবিত্ত আর দরিদ্র (যারা সংখ্যাগুরু) জীবনে প্রবেশ করবে না ! সেখানে কি হবে !
বরং উচ্চবিত্তদের মধ্যে শিক্ষা থাকায়, অনেকাংশে গোঁড়ামি মুক্ত, কিছু আছেন যাঁরা বনেদীয়ানার অহঙ্কারের একজায়গায় ধর্ম কে ধরে রাখেন, শোকেস এর মত !
ভাল লাগে আপনার লেখা, নিরাশায় না ভুগে- বলি, "অন্ততঃ আমার মেয়ে তার জীবদ্দশায় দেখে যাক, ধর্ম মুক্ত পৃথিবী" ।
Post a Comment