Sunday, April 25, 2021

ভ্যাক্সিন সম্পূর্ন নিরাপদ- ভ্যাক্সিন বিরোধিদের প্রচারে ভুলে নিজের এবং দেশের ক্ষতি করবেন না

 

ভ্যাক্সিন সম্পূর্ন নিরাপদ- ভ্যাক্সিন বিরোধিদের প্রচারে ভুলে নিজের এবং দেশের ক্ষতি করবেন না

   বিপ্লব পাল  ৪/২৫/২০২১

গোটা পৃথিবীজুরে বিশেষত আমেরিকা এবং পশ্চিম বাংলায় একগুচ্ছের পন্ডিত লোক তৈরী হয়েছে, যারা ফেসবুকে রটিয়ে বেড়াচ্ছে- ভ্যাক্সিন নেওয়া আনসেফ। ভ্যাক্সিন নিলে অসুস্থ হতে পারেন। ভ্যাক্সিন মাল্টিন্যাশানাল কোম্পানীর উচ্চলাভের চক্রান্ত।  ভ্যাক্সিন নেওয়ার পরেও প্রচুর লোকে কোভিড আক্রান্ত হচ্ছে-তাহলে ভ্যাক্সিন নিয়ে লাভ কি? ভাইরাস দ্রুত মিউটেট করছে। তাহলে ভ্যাক্সিন নিয়ে কি লাভ?  ভ্যাক্সিন নিলে যৌনক্ষমতা কমে যাবে। ভ্যাক্সিন তৈরী করা কোম্পানীগুলিকে বিশ্বাস করা যায় না। ইত্যাদি ইত্যাদি। নানান ধরনের গুজব চারিদিকে ছড়াচ্ছে। আমি এই লেখায় ভ্যাক্সিন বিরোধি সমস্ত যুক্তিগুলিকে একত্র করে একে একে উত্তর দিচ্ছি

 

(১)    ভ্যাক্সিন নেওয়া আনসেফ। ইউরোপে এস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড স্থগিত। আমেরিকাতে জনসন এন্ড জনসনের ভ্যাক্সিন বাজারে ছেড়েও স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া ফাইজার এবং মর্ডানা ভ্যাক্সিন নেওয়ার পরেও প্রচুর লোক অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।  তাই ভাই নিয়ে কাজ নেই। আমার শরীরে কি হবে কে জানে!”

 -এবার আসুন গভীরে গিয়ে দেখি আসলে কি হচ্ছে।

ভেক্টর বাহিত ভ্যাক্সিন যেমন কোভ্যাক্সিন, কোভিশিল্ড বা জনসন এন্ড জনসনের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ব্লাড ক্লটিং হতে পারে ( থ্রম্বসিস)। কিন্ত এটা হচ্ছে ৪০ বছরের নিচের মহিলাদের। অর্থাৎ যারা রিপ্রোডাক্টিভ এজের। এরপরেও এই সংখ্যাটা কম। জনসন এন্ড জনসনের ক্ষেত্রে ছ জনের সন্ধান পাওয়া গেছে ৬০ লাখের মধ্যে। এস্ট্রাজেনেকার ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৭৯ , দুই কোটির মধ্যে। অর্থাৎ ১০ লাখে একজনের কম।

এটি নতুন কিছু না। কারন করোনা হলে, চল্লিশের নীচের মেয়েদের ব্লাড ক্লটিং এর সমস্যা আরো বেশী হয়। এডিনোভাইরাসে তৈরী সব ভ্যাক্সিনে এই সমস্যা থাকে যাদের অটোইমিউন ডিজিজ থাকে। এটি বহুদিন থেকেই জ্ঞাত তথ্য।

এবারে ভেবে দেখুন।  ভ্যাক্সিন না নিলে করোনা হওয়ার চান্স ১০০০ এর মধ্যে এক। শহরের ঘিঞ্জিতে থাকলে ১/১০০, কি ১/০।  আর নিলে,- শুধু ৪০ এর নীচের মহিলাদের ক্ষেত্রে ১ লাখে ১ জন। পুরুষ হলে চান্স নেই।  এবার আপনিই সিদ্ধান্ত নিন। ভ্যাক্সিন না নিয়ে,   ১০০জনের মধ্যে একজন হয়ে করোনাতে ভুগবেন?   না, ভ্যাক্সিন নিয়ে ১০ লাখে একজন হওয়ার চান্স নেবেন [ তাও মহিলা হলে] ?

 মডার্না বা ফাইজারে কোন থ্রম্বসিস সমস্যা নেই। কিন্ত যাদের একিউট এলার্জি কন্ডিশন আছে, তাদের খুব বাজে রিয়াকশন হয়। কিন্ত কজন? ফাইজারের ক্ষেত্রে প্রতি ১০ লাখে ৪ জন। মর্ডানার ক্ষেত্রে ১০ লাখে ২ জন। যাদের খুব বাজে এলার্জি হয়, তাদের ভ্যাক্সিন নেওয়ার দরকার নেই। একটা দেশের ৮০% মানুষ ভ্যাক্সিনেটেড হলেই প্যান্ডেমিক ঠেকানো যাবে।

 

একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে সব ওষুধেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। বর্তমান ভ্যাক্সিন মোটে আট্মাসে তৈরী হয়েছে। সুতরাং অনেক ক্ষেত্রেই সব সেফটি ডেটা হাতে আসে নি। কিন্ত যেটুকু এফ ডি এ পেয়েছে, তা যথেষ্ট বাজারে মার্কেটজাত করার জন্য। এরপরও এফ ডি এ কন্টিনিউয়াস মনিটরিং চালাচ্ছে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। ধরুন আপনি ভ্যাক্সিন নিয়েছেন। কিন্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে আপনি জানাতেই পারবেন এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ( এর নাম ভারস )।

VAERS | Vaccine Safety | CDC

 

এখনো পর্যন্ত যা ডেটা আসছে-তাতে ওই ১০ লাখে একজনের এলার্জিক রিয়াকশন বা থ্রম্বোসিস বা ব্লাড ক্লটিং ( ভেক্টর ভ্যাক্সিন অর্থাৎ কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে বা কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে)। এর বেশী কিছু নেই।

 (২) “ আমি যদি ভ্যাক্সিন না নিই সরকার কি করতে পারে?”  -হ্যা, গণতান্ত্রিক দেশে সরকার আপনাকে ভ্যাক্সিন না নেওয়ার জন্য চীনের মতন জেলে পাঠাতে পারবে না বটে-কিন্ত সব দেশেই ভ্যাক্সিনের ওপর ভিত্তি করে পজিটিভ ডিসক্রিমিনেশন চালু থাকে। যেমন আমেরিকাতে বাচ্চাদের ভ্যাক্সিনেশন না হলে তাদের স্কুলে বা কোন স্পোর্টস ক্লাবে নেবে না। আমেরিকাতে বেসরকারি উদ্যোগে ভ্যাক্সিন পাসপোর্ট চালু হচ্ছে। ভারতেও ৫০% ভ্যাক্সিনেশন হলে, সেই দিকে এগোবে। এই পাসপোর্টের উদ্দেশ্য যেসব রেস্টুরেন্ট বিজনেস অফিস ফ্যাক্টরি – তারা ভ্যাক্সিনেটেড লোক ছাড়া অফিসে বা ব্যাঙ্কে ঢুকতেই দেবে না। প্লেনে উঠতে দেবে না। এগুলো আস্তে আস্তে চলে আসবে যদি আমরা একটা দীর্ঘ লং টেইল  প্যান্ডেমিকের মধ্যে ঢুকি। এবং সেই দিকেই আমরা এগোচ্ছি। সুতরাং ভ্যাক্সিন না নিলে আপনাকে ব্যাঙ্ক, প্লেইন, ট্রেইন, অফিস, মল, দোকান অনেক জায়গাতেই এরপরে ঢুকতে দেবে না।

কারন ভ্যাক্সিন না নিলে, আপনি ভাইরাসের বাহক হিসাবে আরো বেশী দক্ষ। ভ্যাক্সিন নেওয়ার পরেও আপনি ভাইরাস ট্রান্সমিট করতে পারেন। সম্ভাবনা কম। অনেক কম।

 

 সুতরাং সুযোগ পেলেই ভ্যাক্সিন নিয়ে নিন।

 

(৩) “ভ্যাক্সিন কাজ করছে না। ভ্যাক্সিন নেওয়ার পরেও প্রচুর লোকের করোনা হচ্ছে। তাহলে খামোকা রিস্ক নিতে যাব কেন?” –

 -এখনো পর্যন্ত সব ডেটা সামারি-

     ভারতে ১৫ই এপ্রিল পর্যন্ত ভ্যাক্সিন নেওয়া সত্ত্বেও ২৪,০০০ জন লোকের কোভিড পজিটিভ এসেছে। কিন্ত মনে রাখতে হবে ভারতে ১০ কোটি লোক একটি ডোজ হলেও টীকা নিয়েছে। সুতরাং সংখ্যাটা ২৪,০০০/১০ কোটি বা এক লাখে মোটে ২৪জন।

অর্থাৎ ভ্যাক্সিন যারা নিচ্ছে তাদের মধ্যে ১ লাখে ২৪জন ইনফেক্টেড হচ্ছে।

আর ভ্যাক্সিন না নিলে সংখ্যাটা এক লাখে ১০০০ জন ( ৯০০জনের কাছাকাছি)।

 গ্লোবাল ডেটা থেকে দেখা যাচ্ছে, ভ্যাক্সিন না নিলে, ১০০০ জনে জন ইনফেক্টেড হচ্ছে ( রাফ এস্টিমেট) , আর ইনফেক্টেড লোকেদের ১০% হাসপাতালে যাচ্ছে।

 

ভ্যাক্সিন নিলে,  সিঙ্গল ডোজের ক্ষেত্রে এটি ৫০০০ জন, আর হসপিটালাইজেশন রেট  % ডবল ডোজে /১৫,০০০ এবং % অর্থাৎ সম্পূর্ন ভ্যাক্সিনেশন করলে একটি দেশ তার হসপিটালাইজেশনের পরিমান /৭৫ ভাগ কমাতে পারবে। যেটি ইস্রায়েলে হয়েছে। তাদের হসপিটালাইজেশন ৯৯% কমে গেছে। তারা অফিশিয়ালি মুক্ত প্যান্ডেমিক থেকে।

 

তাহলে দেখা যাচ্ছে, ভ্যাক্সিনের জন্য একটা দেশ করোনা মুক্ত হতে পারে। এবং তার জন্য এটিও সত্য কিছু লোকের মৃত্যু হতে পারে-কিছু লোকের সাইড এফেক্ট হতেই পারে। কিন্ত সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে তার সংখ্যা ভাইরাসের জন্য যা মৃত্যু হত তার /১০,০০০ ভাগ না। এটি আরো কম হবে যদি ডাক্তাররা বুঝেশুনে বা লোকজন বুঝেশুনে ভ্যাক্সিন নেয়। যাদের আগে ভ্যাক্সিন নেওয়ার সময় বিশাল এলার্জি রিয়াকশন খেয়েছে, তারা নেবে না-নেওয়া উচিত না। অসুবিধা নেই। একটা দেশের ৮০% লোক ভ্যাক্সিনেশন নিলেই দেশটি প্যান্ডেমিক মুক্ত হবে। কিছু লোক যদি মনে করে যে ভ্যাক্সিনের জন্য বাজে , খুব বাজে এলার্জি রিয়াকশন হবে ( তাদের যদি কেস হিস্ট্রি থাকে)  - তারা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।  

 

 সবাই যদি ধরে নেয় যে ভ্যাক্সিন দিলে তার ক্ষতি হতে পারে, এবং সেই জন্যে ভ্যাক্সিন যদি কেউ না নেয়-দেশটিতে মহামারী কেউ ঠেকাতে পারবে না।  সেই ক্ষেত্রে প্রতিটা লোকেরই ক্ষতি বেশী। কারন ভ্যাক্সিন নিলে তার মরার চান্স ছিল কোটিতে ১। করোনা মহামারীতে লাখে ১। সুতরাং এথিকাল প্রশ্নে চয়েস অভিয়াস-যে আমাদের ভ্যাক্সিন নেওয়া উচিত।

 

 

(৩) “ আপনি বলছেন রিস্ক সামান্য হলেও আছে। পরে আরো ভাল ভ্যাক্সিন আসবে। সেফটি ডেটাও অনেক বেশী থাকবে। তাহলে ভ্যাক্সিন দুদিন বাদে নেওয়াই ভাল। কি বলেন? “

 - নিজে স্বার্থপরের মতন চিন্তা করে দেশকে ডোবাবেন না প্লিজ। ভ্যাক্সিন শুধু আপনার নিজের সুরক্ষার জন্য না। দেশের জন্যও। কারন আপনি ভ্যাক্সিনেটেড হলে,  কোভিড-১৯ ভাইরাস ট্রান্সমিট করার সম্ভবনা কমবে ১/১০০। প্যান্ডেমিক ঠেকাতে আপনার আমার সবার, অন্তত একটা দেশের ৮০% লোকের ভ্যাক্সিনেশন করা দরকার। যেমন ইস্রায়েল করেছে। ওদের দেশের ৮০% লোক এখন ভ্যাক্সিনেটেড। ফলে হাসপাতালে করোনা পেশেন্ট ৯৯% হ্রাস পেয়েছে। ইস্রায়েল অফিসিয়ালি করোনা মুক্ত দেশ। তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পেরেছে। সুতরাং আপনার ভ্যাক্সিন নেওয়ার নির্ভর করছে দেশ কত দ্রুত প্যান্ডেমিক থেকে মুক্ত হবে।

আমি আরেকটা ছোট তথ্য দিই। আগেরবার এই সময় এপ্রিল মাসেই মর্ডানার ফেজ ওয়ান ট্রায়াল শুরু হয়। আমি ভল্যুউন্টার হওয়ার জন্য আবেদন করি। মোটে ৮০ জনের দরকার ছিল। আমি চান্স পাই নি ।মাত্র এক ঘন্টার মধ্যেই নাকি হাজারের বেশী লোক এপ্লাই করেছিল! কেন? আপনারা হয়ত জানেন না, যারা ওই ফেজ ওয়ান ট্রায়াল নিয়েছিল, ওভারডোজের জন্য ৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। একজন ৭ দিন হাসপাতালে ছিল। এরা রিস্ক নিল কেন বলুন ত? কি দরকার ছিল? এর জন্যে কেউ টাকা দেয় না। কিন্ত ওটা ছিল সামাজিক দ্বায়িত্ব। সবাই ভয় পেয়ে ট্রায়ালে পিছিয়ে আসলে, ভ্যাক্সিন তৈরী হবে কিভাবে? আমি ফেজ থ্রি ট্রায়ালে চান্স পেয়েছি এবং সেপ্টেম্বর মাসেই দুই ডোজ মর্ডানা নিয়েছি। তখন সেফটি ডেটা আসে নি এবং আমার এলার্জির হিস্ট্রি আছে। কিন্ত এটা আমার সামাজিক দ্বায়িত্ব বলে মনে হওয়াতে রিস্ক নিয়েছিলাম। ফেজ থ্রি ট্রায়ালের জন্য প্রতিবার আমাকে প্রায় ৩০ টি ব্লাড স্যাম্পল দিতে হয়েছে। ১০ মিনিট সুঁচ বিঁধিয়ে এতটা রক্ত বার বার দেওয়া খুব সুখপ্রদ অভিজ্ঞতা না। কালকেও আমাকে ব্লাড স্যাম্পল দিতে যেতে হবে। যাতে তারা টি সেল এবং এন্টিবডি কাউন্ট দেখতে পারে যে কিভাবে ভ্যাক্সিনের এফিসিয়েন্সি কমছে। এগুলো আমি করি। আরো অনেক আমেরিকানই ( প্রায় ত্রিশ হাজার মর্ডানা ভলিউন্টিয়ার)  এই পেইন টা নিচ্ছে।  কারন সবাই যদি রিস্ক এড়িয়ে যায়, ভ্যাক্সিনের ডিপ্লয়মেন্ট হবে কি করে ?

আপনি একা বেঁচে থাকতে পারেন না। সবাই বাঁচলে তবে আপনি বাঁচবেন।

 

(৪) “ ভাইরাস মিউটেট করছে দ্রুত। ভ্যাক্সিন নতুন মিউটান্টের বিরুদ্ধে এফেক্টিভ না-তাহলে ভ্যাক্সিন নিয়ে কি হবে? “

- আচ্ছা। তাহলে এটা ভাবুন। ফাইজার ভ্যাক্সিন ব্রাজিলিয়ান এবং বৃটিশ ভ্যারিয়ান্টের বিরুদ্ধে এফেক্টিভ। কিন্ত সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়ান্টের বিরুদ্ধে না।

এখানে আপনাকে যেটা জানতে হবে একটা নতুন ডেঞ্জারেস মিউটান্ট এফেক্টিভ হতে ৩-৫ মাস সময় নেয়। এই জন্যে ফ্ল ভ্যাক্সিনের সময় গোটা দেশকে  ৩০-৪০ দিনের মধ্যে ভ্যাক্সিনেটেড করে ফেলতে হয়। কেন?

কারন একটা দেশকে দ্রুত ভ্যাক্সিনেশন করলে, মহামারী ছড়ানোর প্রকোপ কমবে । ফলে মিউটান্ট ও অনেক কমে যাবে। তাদের গ্রোথ ও কমবে। ফলে ভ্যাক্সিন বেশী দিন এফেক্টিভ থাকবে।

তবে ফ্লু ভ্যাক্সিনের মতন কোভিড ভ্যাক্সিন ও প্রতি বছর হয়ত নিতে হবে। যেহেতু নিত্য নতুন মিউটান্ট বা ভ্যারিয়ান্ট আসবে।

সুতরাং মিউটান্টকেও ভ্যাক্সিন দিয়ে রোখা যায় যদি দুটো শর্ত মানা হয়

   এক, দেশে দ্রুত ভ্যাক্সিনেশন শেষ করা

    দুই, প্রতি বছর নতুন বুস্টার ডোজ নেওয়া

 

(৫) “যেসব কোম্পানী ভ্যাক্সিন বার করেছে, অতীতে আমেরিকান সরকার বা ইউরোপিয়ান উনিয়ান তাদের সেফটি ডেটার জন্য ফাইন করেছে “

 

-       আমেরিকাতে সব ফার্মা কোম্পানীকেই ফাইন করা হয়। বিশ্বের এমন কোন ফার্মা কোম্পানী নেই যারা সেফটি ডেটা কম্প্রোমাইজ করার জন্য ফাইন খায় নি আমেরিকাতে। এখন আপনি বলবেন তাহলে আমি কেন আপনার ওই   দশ লাখে দুজনের ব্লাড ক্লটিং ডেটাকে বিশ্বাস করব?

-        

আমরা এই ডেটাকে বিশ্বাস করব,  এর কারন ভ্যাক্সিন বাজারে দ্রুত ছাড়ার পর, বর্তমানে এফ ডি এ এবং সি ডি সি-এরা ভাক্সিন সেফটি ডেটা মনিটর করছে। সব অনলাইন। সবাই দেখতে পারে। আমি আগেই লিংক দিয়েছি।  এগুলো সরকারি সংস্থা। এদের বিশ্বাস না করলে বলতে হয় আপনার অন্ধবিশ্বাস, ধর্মান্ধদের থেকেও বেশী।

 

 

(৬) “এর আগে এম আর এন ভ্যাক্সিন বা ম্যাসেঞ্জার আর এন এ ভাক্সিনের ( ফাইজার/মর্ডানা) কোন সাফল্য নেই। হঠাত করে কোভিডের ক্ষেত্রে তারা কি করে সাফল্য পাচ্ছে। সন্দেহজনক”

 

 -ম্যাসেঞ্জার আর এন এ দিয়ে ভ্যাক্সিন তৈরী করা নতুন পদ্ধতি। মাত্র কুড়ি বছরে এর ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম তৈরী হয়েছে। এটি খুব কঠিন প্রযুক্তি। এর আগে তেমন সাফল্য আসে নি, কারন এত টাকা কেউ ঢালে নি-যা কোভিড ভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে ঢালা হয়েছে। কারন সরকার থেকে ইনভেস্টর সবাই প্রচুর টাকা দিয়েছে। আমেরিকান সরকার মর্ডানাকে ২ বিলিয়ান ডলারের গ্রান্ট দিয়েছিল।  যেখানে এর আগে এই প্রযুক্তি সফল করার জন্য ওই লেভেলে টাকা বা রিসোর্স লাগানোই হয় নি।

কিন্ত বর্তমানে প্রায় ২০০ মিলিয়ান ( ২০কোটি) ডোজ এম আর এন ভ্যাক্সিন আমেরিকাতে দেওয়া হয়েছে। এবং প্রশ্নাতীত ভাবেই মর্ডানা বা ফাইজার ভেক্টর ভ্যাক্সিনের থেকেও অনেক কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই আরো বেশী প্রোটেকশন দিচ্ছে।

 

যারা ভ্যাক্সিনের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছেন, লোককে ভয় দেখাচ্ছেন, তারা কিন্ত আপনার এবং দেশের ক্ষতি করছেন। এবং না বুঝেই।

No comments: