কিছু কিছু রাজনৈতিক ধোঁয়াশার উত্তর আমার জানা নেই।
যেমন ধরুন ভারত এবং আমেরিকা-এই দুই দেশের রাজনীতিতেই ধর্ম এবং মার্কেটপন্থীদের জোটবন্ধন। অথবা কমি/বাম দের সাথে লিব্যারালদের জোট। দুই সম্পূর্ন ভিন্নধর্মী রাজনীতি হয়েও তেলে জলে কি করে মেশে জানা নেই। যদি আমার পাঠকরা কিছু লাইট ফেলেন।
প্রথমে আসি ধর্ম এবং মার্কেটপন্থীদের জোটবন্ধন। আমেরিকাতে রিপাবলিকান এবং ভারতে বিজেপি-দুই পার্টির বেস-ধর্মীয় রক্ষনশীল এবং মার্কেটপন্থী লিব্যারাল। মুশকিল হচ্ছে এই দুটি বিপরীতমুখী রাজনীতি। মার্কেটের মুলে চাহিদা এবং লোভ। ধর্মের মূল ওই দুটো কমানো। সব সময় যে তেলে জলে মেশে তাও না। রিপাবলিকান পার্টিতে মার্কেটপন্থীদের সাথে ধর্মপন্থীদের ফাটাফাটী সবসময় হচ্ছে। এখন প্রেসিডেন্সিয়াল রেসে বেন কার্সন বনাম ডোনাল্ড ট্রাম্পের কেসটা ওই ধর্মপন্থী বনাম মার্কেটপন্থীদের লড়াই। কার্সন সব কিছু ঈশ্বর প্রেরিত, ঈশ্বরের কল্যানে নিয়োজিত-ইত্যাদি প্রচার করে চলেছেন। মাইরী, না দেখলে বিশ্বাস হত না-আমেরকাতে জিওপির ফোর রানার ক্যান্ডিডেট ঈশ্বেরের নামে ভোট চাইছেন। তার কোন অর্থনৈতিক এজেন্ডা নেই! দেশটাকে আবার খ্রীষ্ঠান নেশন বানাবেন যেমন বিজেপি ভারতকে হিন্দু নেশন বানাতে চায়। এই নিউরোসার্জেনটি সত্যই এক বিনয়ী, সৎ লোক। ফলে বাজারে কাটছে তার ঈশ্বরভক্তি! বিজেপির অন্দরেও আর এস এস বনাম উদারপন্থীদের লড়াই চলছে। মুশকিল হচ্ছে-এই তেলেজলে মিশে এরা কেন বাম লিব্যারালদের বিরোধিতা করছেন?
বাম লিব্যারালদের মধ্যে অবশ্য কালেক্টিভিজম বনাম লিব্যারিলিজমের এই ভার্টিক্যাল স্পিল্ট শুধু মাত্র গে রাইট ইত্যাদি ইস্যুতেই প্রকট হয়। ভারতে যেমন গে ইস্যুতে সুসি সহ অনেক কমিনিউস্ট পার্টি ছিল বিরুদ্ধে-কারন তারা মনে করে ওটা লিব্যারিলজমের ইস্যু-যা মার্কেটপন্থী। গে ইস্যুতে ভারতে বামেদের মধ্যে এই প্রভেদ খুব দৃষ্টিকটূ ভাবে দৃশ্যমান ছিল।
আমেরিকাতে কালেক্টিভিস্ট বামেরা ক্ষমতার থেকে অনেক দূরে থাকায়, এগুলো ইস্যু হয় নি। তবে "ইসলামের" মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আমেরিকান বামেদের মধ্যেও এই ভার্টিক্যাল স্প্লিটটা দেখি। লিব্যারাল বামেরা ইসলামের মূল্যায়নে অনেক হার্শ-কর্কশ। কারন ইসলাম গে রাইট সহ অনেক হিউম্যান রাইট বিরোধি। অন্যদিকে কালেক্টিভিস্ট বামেরা ইসালামের ক্ষেত্রে অনেক নরম। কারন তারা মনে করে ইসলামের কালেক্টিভিজম প্রি-ক্লাস স্ট্রাগলের ফসল। তবে অর্থনীতির ক্ষেত্রে দুই তরফের বামেরাই কালেক্টিভিস্ট। মানে অধিক হারে ট্যাক্স চাপিয়ে স্যোশাল বেনিফিট বাড়ানোর তত্ত্বে বিশ্বাসী।
এবার মোদির কথায় আসি। উনার দুটো বেস। একটা হিন্দুত্ব ছাড়া কিছু বোঝে না। অন্যটা মার্কেটপন্থী, অর্থনৈতিক ব্যবসা বাড়ানোর জন্য তাকে সাপোর্ট করে। এই দুই বিপরীত মুখী শক্তিকে নিয়ে কি আদৌ চলা সম্ভব? অর্থনৈতিক বেসটা চাইবে, কম্যুনাল হার্মোনি। যেমন নায়ারানমূর্তি। ভোটের আগে এবং পরে উনি মোদিকেই সমর্থন করছিলেন। কিন্ত হিন্দুত্বের কুৎসিত মুখ বেড়োতে উনিও মোদিকে সমালোচনা করছেন। বলা যায় বাধ্য হচ্ছেন। কারন এইসব ঘটনায় বিশ্বের কাছে ভুল সংকেত যাচ্ছে। ব্রান্ড ইন্ডিয়ার ভ্যালু পড়ছে। ফলে ইনফির ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। এই তেলে জলে মেশানো একদম অসম্ভব। দিল্লীতে গোপন সূত্রে খবর, মোদি এই দুই গোষ্ঠীর দিক থেকেই চাপে থাকেন বলে-উনি ইদানিং ভারতের বাইরে থাকতেই পছন্দ করছেন বেশী। মানে পাতি পালাচ্ছেন আর কি।
No comments:
Post a Comment