সে ছিল আরেক দীপাবলি। নদী থেকে এঁটেল মাটি তুলে দুদিন আগেই বানাতাম চোদ্দটা মাটির প্রদীপ। রোদে শুকাতো দুদিন। মা শর্ষের তেল দিয়ে পলতে ভিজিয়ে দিত। সন্ধ্যে নামতেই তুলসীতলায় চোদ্দটা প্রদীপ জ্বালাতাম পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্য।
সাথে থাকত এক প্যাকেট সরু সরু মোমবাতি। দোতালার বারান্দায় সেগুলোর কিছু জ্বালিয়ে, বাকীগুলো বরাদ্দ ছিল নারকেলের খোলে টর্চ তৈরীর খেলায়।
অমবশ্যা আর লোডশেডিং মিলে গ্রাম বাংলা ডুবে থাকত নিকষ অন্ধকারে। ওই একটা দিনে অন্ধকারটাই ছিল মজার। অন্ধকার না জমলে, জমত না আমাদের নারকেলের খোলে বানানো টর্চের খেলা।
বাড়ি থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে শ্বশান। শহর থেকে শ্বশানের রাস্তাও আমাদের বাড়ির ওপর দিয়েই যেত। সেখানেই হত সব থেকে "জাগ্রত" কালীর পূজো! তখনো কালীপূজো এত বারোয়ারী হয় নি করিমপুরে। কিছু তান্ত্রিক এবং শাক্ত ফ্যামিলিতেই পূজো হত। বাড়ির পূজোত কি? গ্রামের দিকে অত নিমন্ত্রিত হয়ে যাওয়ার নিয়ম নেই। সবাই যেত বাড়ি পূজো গুলোতেও।
শ্বশানকালীর পূজোতে যাওয়ার মধ্যে একটা বেশ ভৌতিক ছমছমে ব্যপার ছিল। তখন করিমপুরের শ্বশানের দিকটাতে বাড়ির থেকে জঙ্গল বেশী। মাটির রাস্তা, জঙ্গল, শিয়ালের ডাক-ঘুটঘুটে অন্ধকার পেরিয়ে দর্শন হত শ্বশান কালীর! ছাগল বলি হত তখন। তাই দেখতে হাজার হাজার মানুষের ভীর। আমরা কয়েকটা বখাটে ছেলে মিলে শ্বশানের ধারে নারকেলের খোলের টর্চ নিয়ে ঘুর ঘুর করতাম-যদি ভূতের দর্শন পাই। মনে ভয়-কিন্ত ওপরে বাতচিত-ধ্যুস ভুত আছে নাকি?
সবকিছুই ত বদলে যায়। দিন, কাল, স্থান। সেই অন্ধকার, জঙ্গল, শিয়াল, তান্ত্রিক, ছাগবলি-মাটির প্রদীপ হয়ত আর নেই। নগরায়ানের, কেবল টিভির দৌলতে ছেলেবেলা, শহরবেলা, গ্রামবেলা-সব হমোজেনাস, একমাত্রিক রসায়ন। স্মৃতিতেই বেঁচে থাক সেই পুরানো দিনের গ্রামের দীপাবলি।
সাথে থাকত এক প্যাকেট সরু সরু মোমবাতি। দোতালার বারান্দায় সেগুলোর কিছু জ্বালিয়ে, বাকীগুলো বরাদ্দ ছিল নারকেলের খোলে টর্চ তৈরীর খেলায়।
অমবশ্যা আর লোডশেডিং মিলে গ্রাম বাংলা ডুবে থাকত নিকষ অন্ধকারে। ওই একটা দিনে অন্ধকারটাই ছিল মজার। অন্ধকার না জমলে, জমত না আমাদের নারকেলের খোলে বানানো টর্চের খেলা।
বাড়ি থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে শ্বশান। শহর থেকে শ্বশানের রাস্তাও আমাদের বাড়ির ওপর দিয়েই যেত। সেখানেই হত সব থেকে "জাগ্রত" কালীর পূজো! তখনো কালীপূজো এত বারোয়ারী হয় নি করিমপুরে। কিছু তান্ত্রিক এবং শাক্ত ফ্যামিলিতেই পূজো হত। বাড়ির পূজোত কি? গ্রামের দিকে অত নিমন্ত্রিত হয়ে যাওয়ার নিয়ম নেই। সবাই যেত বাড়ি পূজো গুলোতেও।
শ্বশানকালীর পূজোতে যাওয়ার মধ্যে একটা বেশ ভৌতিক ছমছমে ব্যপার ছিল। তখন করিমপুরের শ্বশানের দিকটাতে বাড়ির থেকে জঙ্গল বেশী। মাটির রাস্তা, জঙ্গল, শিয়ালের ডাক-ঘুটঘুটে অন্ধকার পেরিয়ে দর্শন হত শ্বশান কালীর! ছাগল বলি হত তখন। তাই দেখতে হাজার হাজার মানুষের ভীর। আমরা কয়েকটা বখাটে ছেলে মিলে শ্বশানের ধারে নারকেলের খোলের টর্চ নিয়ে ঘুর ঘুর করতাম-যদি ভূতের দর্শন পাই। মনে ভয়-কিন্ত ওপরে বাতচিত-ধ্যুস ভুত আছে নাকি?
সবকিছুই ত বদলে যায়। দিন, কাল, স্থান। সেই অন্ধকার, জঙ্গল, শিয়াল, তান্ত্রিক, ছাগবলি-মাটির প্রদীপ হয়ত আর নেই। নগরায়ানের, কেবল টিভির দৌলতে ছেলেবেলা, শহরবেলা, গ্রামবেলা-সব হমোজেনাস, একমাত্রিক রসায়ন। স্মৃতিতেই বেঁচে থাক সেই পুরানো দিনের গ্রামের দীপাবলি।
No comments:
Post a Comment