Thursday, February 12, 2015

তেলেভাজা শিল্পের কথা

মমতা ব্যানার্জি তেলেভাজা শিল্পের কথা বলাতে দেখলাম বাজার আনন্দ থেকে সবাই হ্যাটা দিচ্ছে। এতে একই সাথে বাঙালীর সামন্ততান্ত্রিক মুখোশ এবং  ব্যবসাবিমুখ চরিত্র-দুটোই যুগপৎ  প্রকাশমান। কেও ব্যবসা তেলেভাজারই করুক বা আই টির করুক, দুটোই ব্যবসা। যদি সফল ভাবে কেও করতে পারে-দুটী ক্ষেত্রেই পরিশ্রম, ধৈর্য্য, নিষ্ঠা লাগে। কাস্টমারকে খুশী রাখা খুব সহজ না -কোন ব্যবসাতেই না । এই জন্য যেকোন কোন "বড় ব্যবসায়ী" একজন "ছোটব্যবসায়ী" কে যেকোন চাকুরিজীবির থেকে বেশী শ্রদ্ধা করে। গোলামী করতে করতে বাঙালীর এত দুরাবস্থা-তারা এটাও বোঝে না প্রতিটা মানুষের সৎভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টাকেই শ্রদ্ধা করতে হয়। থমাস এডিসন এককালে হকার ছিলেন। দিদিকে ধন্যবাদ ভুল থেকে শিখে উনি বুঝছেন, ছোট ছোট শিল্প করেই বাঙালীকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। আজ যে তেলেভাজা শিল্প করতে সক্ষম, কাল সে খাদ্য প্যকেজিং করে আরো দশটা বেকার ছেলেকে চাকরি দিতে পারবে। কিন্ত যারা দিদিকে হ্যাটা দিচ্ছে-সেই হোয়াইট কলার বাঙালী এক মালিকের গলাধাক্কা খেয়ে অন্যের দরজায় চাকরির জন্য লাইন দেবে। আসুন সবাইকে, সব সৎ পেশাকে আমরা শ্রদ্ধা করতে শিখি।আমরা বাঙালীরা এখনো সামন্ততান্ত্রিক যুগে এই ব্যপারে। স্বাধীনতার থেকে দাসত্বেই বাঙালীর প্রবৃত্তি বেশী।

আর বাজার আনন্দের ভূমিকা আরো ন্যাক্কারজনক। শুধু টিপ্পনীতেই শেষ নাই-আজ আবার খবর বার করেছে তেলেভাজার দোকানদাররা কত গরীব! এটা লেখে নি, আমেরিকাতে তেলেভাজা বিলিয়ান ডলারের শিল্প। কারন এখানে তেলেভাজাকে প্যাকেজিং করা হয় ঠিক ঠাক করে। সিঙারা বা চিকেনের ফ্রাই আমরা বাড়িতে  করি কিন্ত ফ্রোজেন ছাঁচ কিনি। নিজেদের তেলে ভাজি বলে, বদহজমের সমস্যা থাকে না । ইনফাক্ট আমি চিকেন রোল, সিঙারা আর আলুর চপ খেয়ে এটা লিখতে বসেছি। এগুলো সব ফ্রোজেন ছাঁচে পাওয়া যায়-বাড়িতে হাল্কা তেলে ভেজে নিলেই হল। আমি ত বলবো একটু উদ্ভাবনা , আমেরিকার মতন প্যাকেজিং করতে পারলে বাঙালীর তেলেভাজা বিশ্বজয় করবে।

আনন্দবাজার আর কদ্দিন বাঙালীকে বিভ্রান্ত করবে ?  

No comments: