Saturday, January 2, 2021

বিজ্ঞান এবং মানবমুক্তি

 

 ২০২০ কেমন গেল ? ধনী দরিদ্র বাম ডান বিজ্ঞানী ভক্ত মুমিন-সবাই একমত হবেন, প্যান্ডেমিক, আক্কা ভাইরাস খুব বাজে জিনিস ভাই। দেশ, এডমিনিস্ট্রেশন, চিকিৎসা বিজ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি সবাইকেই বেশ ফাটা প্যান্ট পরিয়ে ল্যাম্পপোষ্টে টাঙিয়ে দিয়েছে।

 

  এবার আমি যদি বলি,  কোভিড-১৯ কোন সিরিয়াস বিপর্যয় না? করোনা প্যান্ডেমিক  ১-১০ স্কেলে খুব বেশী হলে ১ বা ২/১০ পাবে।

 

   ২০২০ সালে ভারতে কোভিড-১৯ এ কতজন মারা গেছেন? দেড় লাখ। আসল সংখ্যা ৩-৪ লাখ হবে। গত বছরে ভারতে বায়ু দূষনের কারনে কত লোকের মৃত্যু?  ১৪ লাখ। আমি জানি অধিকাংশ লোক জানেই না।

 

 হিমালয়ে আলরেডী কাঁপুনি ধরেছে। পৃথিবীর সব জিওলজিস্টরাই বলছেন হিমায়য়ে খুব শীঘ্রই বিশাল ভূমিকম্প হতে চলেছে-যা রিক্টর স্কেলে ৮-৯ এর মধ্যে হবে। প্রতি ৬০০ বছরে এমন কম্পন একবার হয়। প্লেট টেকটোনিকের এডজাস্টমেন্ট।  কোথায় হবে বলা যাচ্ছে না। দিল্লীর কাছাকাছি হলে ২৫-৫০ লাখ লোকের মৃত্যু নিশ্চিত।

 

এখানেই শেষ না। প্রতি সাড়ে চার লাখ বছরে পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ফিল্ড ঘুরে যায়। উত্তরমেরু দক্ষিনমেরুর ( ম্যাগনেটীক পোল) দিকে ঘুরে যায়। এই ঘুরতে প্রায় ২০-২১ হাজার বছর লাগে। এবং এই সময়টাতে পৃথিবীর ম্যাগনেটীক ফিল্ড খুব দুর্বল থাকে-লোয়েস্ট পয়েন্টে  ৯৫% হ্রাস পায়। শেষ এই রিভার্সাল হয়েছে সাড়ে ছলাখ বছর আগে। অর্থাৎ ফিল্ড রিভারসাল টাইম আগত। এবং বিজ্ঞানীরা আচ করছেন তা হয়ত শুরু হয়ে গেছে-  ম্যাগনেটিক নর্থ পোল দ্রুত ঘোরা শুরু করেছে। দক্ষিন আটলান্টিকে ম্যাগনেটিক ফিল্ড আরো দুর্বল হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন-এসবই ঘোরা শুরু হওয়ার পূর্বাভাস। 

 

 ম্যাগনেটিক ফিল্ড বা চৌম্বক ক্ষেত্র ৯৫% শক্তি হারালে কি হবে?  সৌর ঝড় থামানো যাবে না। সূর্য্যের (   সোলার ফ্লেয়ার )  থেকে ধেয়ে আসা প্রচন্ড শক্তিশালী প্লাজমা এখন পৃথিবীকে আঘাত করে না। চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রভাবে পৃথিবীর পাশ দিয়ে চলে যায়। কিন্ত ওই ম্যাগনেটিক ফিল্ড দুর্বল হলে, তারা আছড়ে পরবে পৃথিবীর বুকে।  পৃথিবীর ওপর থাকা যাবতীয় সেল টাওয়ার, ইলেক্টিক লাইন সব বিকল হবে। বিদ্যুৎহীন। ইন্টারনেট ফোন বিহীন পৃথিবী আমরা কল্পনাও করতে পারি না।

 

এরপর আছে সুপার ভলকানো। ইয়োলোস্টোনের সুপার ভলকানো ইরাপশনের সময় ও ওভারডিউ। যেদিন হবে -একদিনের মধ্যে গোটা আমেরিকা ৫০ ফুট ছায়ের তলায়। আমেরকা নামে দেশটাই থাকবে না।

 

 ভূগর্ভে জলের অভাব বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর অতিরিক্ত জলে কোলকাতা নিউয়ার্কের ডুবে যাওয়া-এগুলোকে ছেড়েই দিলাম- ওমনদিন আসা শুরু হলে পালানোর জন্য অনেকদিন পাবেন। সুতরাং প্রানে মরবেন না।

 

 এসব কিছুর একটিই সমাধান।  যা মুছে দেবে সব রাজনৈতিক দ্বন্দও। গনতন্ত্র -না স্বৈরতন্ত্র-কমিউনিজম না ক্যাপিটালিজম। আসলে আমাদের অস্তিত্বের বিপন্নতা বা নানান রাজনৈতিক জাতিগত ধর্মগত বিভেদের কারন আমাদের দেহ। আমাদের দেহ টেকানো খুব কঠিন কাজ- ২৪/৭ বিশুদ্ধ অক্সিজেন লাগে। মডারেট তাপমাত্রা লাগে। প্রতিদিন ২০০০-৩০০০ ক্যালোরি বিশুদ্ধ খাবার লাগে। দেহের কন্টিনিয়েশন নিশ্চিত করতে রিপ্রোডাকশন, নতুন দেহের জন্ম লাগে। এই ৬০০ কোটি দেহের  থাকা খাওয়া বাঁচা নিশ্চিত করতে পৃথিবীতে এত রাজনীতি। পরিবেশ ধ্বংসের মুখে।

 

আমাদের দেহ টিকিয়ে রাখা-বায়োস্ফিয়ারের কি আর খুব দরকার আছে?? ভেবে দেখুন।  রোবোটিক্স যেভাবে এগোচ্ছে- কোয়ান্টাম কম্পুটেশন এগোচ্ছে- আর কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের ব্রেনের পুরো “ইমেজ” মান সফটোয়ারটাই যন্ত্রের মধ্যে চালানো সম্ভব হবে।

 ভাবুন মাত্র এক সেন্টিমিটারের চেয়েও অনেক ছোট চিপের মধ্যে আপনার ব্রেইন, আপনার চেতনা সব ঢূকে যাবে। ক্লাউডে তার অনেকগুলো ব্যাকাপ ও থাকবে। ওই চিপ নষ্ট হলেও কিস্যু যায় আসে না।  ক্লাউড থেকে টুক করে আরেকটা কপি অন্যচিপে ইন্সটল করে দেবে অন্য কোথাও।  ভূমিকম্প , সোলার ফ্লেয়ার, ফ্লাডে তা নষ্ট হলেও আরেকটা কপি যখন খুশী পাওয়া যাবে। আর ভাইরাস, জলের ক্রাইসিস, পল্যুউশন এগুলো ইস্যুই হবে না।

আমাদের এই চিন্তা চেতনাকে বয়ে বেড়ানোর জন্য এই দৈনিক ২৪০০ ক্যালোরি খাওয়া মেশিনটা- যাকে আমরা দেহ বলি-যা বেশ হেবি-এনার্জি ওয়েস্ট এবং যেকোন সময় দুর্ঘটনা, ভাইরাস সহ অনেক কিছুতেই টসকে যেতে পারে। তার কি দরকার আছে? তার থেকে “সিন্থেটিক” জীবনই ভাল যেখানে খুব ছোট্ট চিপ সব চিন্তা চেতনা বয়ে বেড়াবে। যারা ২০১৪ সালে রিলিজ হওয়া জনি ডিপের সাই ফাই ট্রান্সসেন্ডান্স সিনেমাটা দেখেছেন, তারা বুঝতে পারছেন আমি কি বলতে চাইছি।

 

আমাদের আগামী প্রজন্মের -ইন্টালিজেন্ট বিবর্তনের জন্য, এই দেহের কি আর দরকার নেই!  এ আই, দেহের মৃত্যুঘন্টা অনেক আগেই বাজিয়ে দিয়েছে! অহ কি আনন্দ- ধর্ম রাজনীতি দূষন রোগ বিপর্যয়- কোন কিছুই আর বইতে হবে না। বড্ড ভারী ভারী লাগে আজকাল। এ মানবজীবন না হাওড়ার মুটে?  এত রোগ, এত ধর্ম , এত রাজনীতি, এত দূষন, এত ইনজাস্টিস আর পিঠে সইছে না। তার থেকে একটা ছোট্ট চিপের মধ্যে ঢুকে কবিতা লিখতে পারলে, ছবি আঁকতে পারলে, চির আনন্দ। চির অমৃত জীবন।  চির নির্বান।

1 comment:

Raj Kumar Gupta said...

'২০২০ সালে ভারতে কোভিড-১৯ এ কতজন মারা গেছেন? দেড় লাখ। আসল সংখ্যা ৩-৪ লাখ হবে।'

আমার মনে হয় সংখ্যাটি দেড় লাখের অনেক কম। কারণ এর অধিকাংশই কোমর্বিড। বাকি মৃত্যুর বেশ কিছু সংখ্যক মানুষের সঠিক সময়ে চিকিৎসা না-পাওয়া।

'প্রতি সাড়ে চার লাখ বছরে পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ফিল্ড ঘুরে যায়।... শেষ এই রিভার্সাল হয়েছে সাড়ে ছলাখ বছর আগে।'

তাহলে কি ম্যাগনেটিক ফিল্ড রিভার্সাল কি ওভার ডিউ?

'...এই ৬০০ কোটি দেহের থাকা খাওয়া বাঁচা নিশ্চিত করতে পৃথিবীতে এত রাজনীতি।'

এখন পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায় ৭৮০ কোটি।

আপনি লেখাটির মধ্যে যে সব তথ্য দিয়েছেন তার বৈজ্ঞানিক লিঙ্ক দিলে ভাল হয়।