Tuesday, May 12, 2015

ধর্ম সংস্কার

অনেকেই মনে করেন ধর্মের যেহেতু অনেক ভার্সান সেহেতু সাধারন ধার্মিকদের ধর্মের উগ্রপন্থা ভার্সান থেকে দূরে রাখলেই সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত সমাজ গড়া যাবে। এইসব চিন্তাধারা নেহাতই বালখিল্যতা। উনবিংশ শতাব্দি থেকে হিন্দু ধর্মে ক্রমাগত সংস্কার হয়েছে-রামমোহন, বিবেকানন্দ, দয়ানন্দ স্বরস্বতী-অনেকেই এলেন। ফল কি হল ? নামো,  সাক্ষী মহারাজ ? রামকৃষ্ণ মিশনের অধিকাংশ শিষ্য কুসংস্কারাচ্ছন্ন। মিশন ও অদ্বৈত বেদান্ত ছেড়ে কুমারী পূজা ইত্যাদিতে ঘটা করে বেশী। বাঙালী যেটুকু সংস্কারমুক্ত হতে পেরেছে তার পেছনে আছে সেই শিল্প বিপ্লব যার কারনে মেয়েরা চাকরী করতে বেড়িয়েছে।  যেকোন পরিবর্তন আসে উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তনে-এবং তার থেকে উদ্ভুত মার্কেট ফোর্স থেকে। আর ধর্ম থেকে মুক্তির ব্যপারটার সাথে নারী মুক্তির যোগ ১০০%।

 না -ধর্মের কোন অসাম্প্রদায়িক ভার্সান হতে পারে না । কারন ধর্মের মূল বক্তব্য "ক্লাব কালচার" । আমার ক্লাব শ্রেষ্ঠ তাই আমি এই ক্লাবের মেম্বার। ইসলাম শ্রেষ্ঠ বলে না মানলে কেও কেন মুসলিম হবেন? তার যদি অদ্বৈত বেদান্ত ভাল লাগে তিনি তাই হবেন। সুতরাং ধর্ম মানতে গেলে সাম্প্রদায়িকতা আসবেই।

     আর যিনি মুসলমান তাকে ত হজরত মহম্মদের জীবনী ( সুন্নত ) এবং কোরান মানতেই হবে!!   এবং হজরত মহম্মদের জীবনী মানলে তার দ্বারা কৃত অজস্র খুন, যৌন দাসী রাখা থেকে আরো অনেক কিছু অমানবিক আচরন আসবেই। যাদের অনেক কিছু আজকের আই সি সিস এবং অভিজিত-বাবু-অনন্তের খুনীরা করছে।  একেই মহম্মদ চরিত্র কাল্পনিক-তার ওপর আরো কাল্পনিক অলীক চাপিয়ে আপনি কি সংস্কার করবেন একটা ধর্মের?  একটা বড় ঢপবাজির লাইটার ভার্সান ? এগুলো হাস্যকর চিন্তা। বড় ঢপবাজির জায়গায় ছোট ঢপবাজি চালানোর নাম ধর্মীয় সংস্কার।

  ফুকোর একটা রাজনৈতিক শক্তির তত্ত্ব আছে। যার মূল বক্তব্য হল পাওয়ার বাই কনসেসাস। ধর্ম ঠিক, সন্ত্রাসবাদিরা ভুল এই তত্ত্ব এই জন্যেই খাটে না -কারন সন্ত্রাসবাদিদের শক্তির মূল উৎস এই কনসেনসাস যে ইসলাম বা ধর্ম মহান। এখানে মডারেট এবং এক্সট্রিমিস্ট সবাই এক।  এটাই মৌলবাদিদের আসল শক্তি।

  সাথে সাথে নিৎসের বক্তব্যটাও দেখা দরকার।  মানুষ ধার্মিক এর সব থেকে বড় কারন ছোটবেলা থেকে বাবা মা ভয় দেখিয়ে, তাদের ইশ্বর বা আল্লা নামে ব্রেইন ড্যামেজ করেছে। এই "ভয়" এর জন্য তারা ধার্মিক। কিন্ত একটা রাষ্ট্র শক্তি বা মার্কেটের শক্তি যখন তাকে দেখাবে ধার্মিকদের জন্য চাকরি নেই -আছে মৃত্যু-সে পার্থিব ভয়ে অপার্থিব ভয়কে জয় করবে। এটাই চীন এবং রাশিয়াতে হয়েছিল কমিনিউস্ট জমানায়। ভয় একজন মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রন করে। সেটাই ইসলামিক সন্ত্রাসীরা চালাচ্ছে। পুতিন পালটা ভয় দেখানোয় রাশিয়াতে প্রায় একমিলিয়ান মুসলিম ইসলাম ত্যাগ করেছে। চীনের পশ্চিম দিকের মুসলিম অধ্যুশিত রাজ্যগুলিতেও রাষ্ট্র যন্ত্রের কারনে, লোকে ইসলাম ত্যাগ করছে। সুতরাং ভয়টাই আসল। বাকীটা ফালতু।  মানুষ হচ্ছে পরিবর্তনশীল। ভয়ের কারনে সে আজ হিন্দু বা মুসলিম। রাষ্ট্র উলটো ভয় দেখালে, সে উল্টোদিকেই হাঁটবে। উদাহরন রাশিয়া এবং চীন।

No comments: