ভারতের অবস্থা বলরাম সাদৃশ। রাশিয়া টাইম টেস্টেড বন্ধু। ভারতের এয়ার, আর্মি, নেভীর প্রায় ৬৫-৮০% রাশিয়ান অস্ত্র। ইউনাইটেড নেশনে রাশিয়া কখনো ভারতকে নিরাশ করে নি। সেই তুলনায় আমেরিকার সাথে ভারতের ব্যবসা যতই বেশী হোক ( ভারত-আমেরিকার বাণিজ্য, ভারত রাশিয়ার বাণিজ্যের প্রায় দশগুন! ) , আমেরিকা এবং ইউরোপ কাশ্মীর থেকে পাকিস্তান ইস্যুতে মোটেই ভারতের পাশে আগেও ছিল না-এখনো নেই। শুধু চীনের চাপ খেয়ে এখন রাজনৈতিক ভাবে কাছাকাছি আসছে। চীন ভারত এবং আমেরিকার-দুজনের কাছেই সমস্যা। সেই জন্য, আমেরিকা ভারত কাছাকাছি আসছে-কিন্ত অতীতের রাজনীতির সম্পর্ক মোটেও সুখের না।
সুতরাং রাশিয়ার বিরোধিতা করা ভারতের পক্ষে সম্ভব না। কিন্ত এই বিরোধিতা না করার খেসারত দিতে হবে ভবিষ্যতে। কারন চীন-পাকিস্তান ভারত আক্রমন করলে, এটা পরিস্কার ভারতের পাশে কেউ থাকবে না। সবাই লিপ সার্ভিসা দেবে। স্যাংশন করবে। তাতে চীনের মিলিটারি থামানো যাবে না।
এমনিতে ইউরোপ এবং আমেরিকা ভারতের অবস্থান বুঝতে পারছে এবং সেই জন্যে ভারতকে চাপ ও দিচ্ছে না। কিন্ত সমস্যা যেটা হবে, ভবিষ্যতের পৃথিবীত বাই-পোলার । একদিকে চীন-রাশিয়া অন্যদিকে আমেরিকা-ইউরোপ অক্ষ। ফাইনান্সিয়াল সিস্টেম ও এই দুই অর্ধে ভেঙে যাবে। সেই পৃথিবীতে নিরেপেক্ষ কেউ থাকতে পারবে না। একদম কোল্ড ওয়ারের সময় ফিরে আসছে।
এখনই হবে না-কিন্ত সেইদিন হয়ত দূরে না যে ভারতকে আমেরিকা-ইউরোপের অক্ষে নেওয়ার জন্য ফাইনান্সিয়াল চাপ শুরু হতে পারে। ভারতের সফটওয়ার এক্সপোর্টের ৯০% আমেরিকা-ইউরোপ নির্ভরশীল। ভিসা রেস্ট্রিকশন বাড়িয়ে সেখানে চাপ দেওয়া কঠিন কাজ না। রাশিয়ান আর্মস রিপ্লেসমেন্টের জন্য চাপ দেওয়া শুরু হয়ে গেছে এবং ভারত গত দশ বছরে রাশিয়ান আর্মস ইম্পোর্ট ৬০% কমিয়েছে এবং আস্তে আস্তে আমেরিকা এবং ইস্রায়েল সেই স্থান নিচ্ছে। এটা ভারতের জন্য ভাল। রাশিয়ান মিলিটারি প্রযুক্তি এখন খুব পুরাতন। কিন্ত ইউনাইটেড নেশনে রাশিয়ার মতন নির্ভরযোগ্য বন্ধু আমেরিকা বা বৃটেন হবে না। সেই জায়গাটা রিপ্লেস করা মুশকিল হবে।
এখনো পর্যন্ত ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতের বিদেশনীতি ঠিকঠাকই আছে-কিন্ত ভয় এটাই তলে তলে প্রস্তুতি না নিলে, এই নিরেপেক্ষতা খুব বেশীদিন বজায় রাখা যাবে না।
No comments:
Post a Comment