আত্মঘাতি বাঙালীর আদর্শ আত্মঘাতি কালিদাস নেতা ছিলেন জ্যোতি বসু। এই সাদা ধুতি পরা গুড ফর নাথিং বাম বাঙালী এলিটেদের জন্য বাংলার আজ এই হাল। প্রথমেই এটা মাথা থেকে বার করতে হবে, সাদা ধুতি, সাদা চুল, সৎ বাম নেতা মানে ভদ্র ভাল বাঙালী নেতা-এটা ঠিক না। এপারেয়ান্স কান বি ডিসেপ্টিভ।
নেতা জনতা থেকে আলাদা নন। জ্যোতি বসু এদ্দিন বাঙালীর নাম্বার ওয়ান নেতা ছিলেন কারন বাঙালীর ঐ সাদা ধুতি সৎ বাম বাঙালী নেতা নিয়ে একটা আশা ভরসার জায়গা ছিল-বিশ্বাসযোগ্যতা ছিল। কিন্ত অন হাইন্ডসাইট, লুক ইজ ডিসেপ্টিভ।
উনাকে নিয়ে আগে বহু লিখেছি-গল্প এবং কেন উনি পশ্চিম বঙ্গ ধ্বংসের ধৃতরাষ্ট্র। পুরাতন টাইম লাইন থেকে তিনটে তুলে দিলাম...
নিজের পোষ্টগুলো লাস্ট চারবছরে এই ৮-৯ জুলাইতে লেখা।
(1)
আমাদের প্রজন্ম এবং তার আশেপাশের দুই দশকের বাঙালী সন্তানদের অধিকাংশই পশ্চিম বঙ্গে ফিরতে পারবে না। কারন জ্যোতিবসু এবং সিপিএম। বুদ্ধ সফল হলে হয়ত, এই লাইনগুলো লিখতে হত না। আই আই টিতে জ্যোতি বসু সম্মন্ধে ছড়া কাটত অবাঙালীরা- জাতীয় পশু, জ্যোতি বসু। বাইরের রাজ্যগুলো এগোচ্ছে, পশ্চিম বঙ্গ ক্রমশ তখন পিছোচ্ছে। অন্যরাজ্যের ছেলে মেয়েরা ভীষন টিটকারি মারত।
এমন একজন ছিল স্বামীনাথন-মেটার ছাত্র, আমাদের একবছরের সিনিয়ার। আই আই টি কেজিপিতে এই স্বামী আর আজকের গুগুলের সিইও সুন্দর পিচাই ছিল হরিহর আত্মা। একবার হয়েছে কি তামিলনাডুতে হেবি নাটক চলছে। ডি এম কে এসে জয়ললিতাকে জেলে পুরেছে-তামিলনাডু জ্বলছে। আমরা বেশ মজা নিচ্ছি। শনিবারের সকালে স্বামীকে হালকা করে প্যাঁক মারার সুরে ব্রেকফাস্ট টেবলে বল্লাম-তামিলনাডু হচ্ছে ভারতের রাজনীতির আর্মপিট। তামিল রাজনীতি থেকে শুধুই বগলে ঘামের গন্ধ বেরোয়।
স্বামী ফোঁস করে উঠল। ছেলেটা তামিল কিন্ত ভালো বাংলা শিখেছিল। বলে-শালা তোরা বাঙালীরা ১৫ বছরে মুখ্যমন্ত্রী চেঞ্জ করতে পারলি না-যে আরামে তোদের পোঁদ মেরে যাচ্ছে । সব বাঙালী শালা হোমো নইলে একটা পার্টি আর তার অপদার্থ মুখ্যমন্ত্রী কি করে তোদের বছরের পর বছর পেছন মারে!!
সেটা বোধ হয় ১৯৯৪। স্বামী আমেরিকাতে মারা যায় ১৯৯৭ সালে, ট্রাকের সাথে গাড়ীর ধাক্কায়। ব্রিলিয়ান্ট ছাত্র ছিল। সিপিএম মাত্র ১৫ বছর টেকাতেই তামিলদের কাছে অমুন প্যাঁক খেয়েছিলাম। না জানি ও যদি জানত সিপিএম ৩৪ বছর ধরে বাংলার ক্ষতি করে গেছে।
(2)
জ্যোতিবসু ব্যক্তিগত ভাবে একজন সজ্জন বাঙালী ভদ্রলোক। কিন্ত রাজনৈতিক বিচার বিবেচনায়, বাংলাকে ধ্বংশের পথে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার প্রতিদ্বন্দী একমাত্র বল্লাল সেনই হতে পারে। তার পোষ্য সিটুর অত্যাচারে যখন একের পর এক কারখানাগুলো বন্ধ হচ্ছিল, তিনি শ্রমিক আন্দোলনে রাশ টানেন নি, যে রাশ ছিল তার নিজের হাতে। পক্ষান্তরে আজকে যে লাখে লাখে বাঙালী যুবকদের রাজ্য ছেড়ে ব্যাঙ্গালোর পুনেতে গিয়ে করে খেতে হচ্ছে- সে আই টি কর্মীই হোক, আর হোটেলের ওয়েটারই হোক- সেই সব্বোনাশের পথটা উনার তৈরী।
আমি উনার ওপর এই জন্য ক্রদ্ধ, যে সিপিএমের ৩৪ বছরে বাংলার যে সর্বনাশ হয়েছে, সেটা হারে হারে টের পাই যখন দেখি কোলকাতায় একটা ভাল ইঞ্জিনিয়ারিং ট্যালেন্ট খুঁজতে গেলে পাওয়া যায় না। ভালরা সবাই ব্যাঙ্গালোর, পুনে চলে গেছে বা এখনো যাচ্ছে। এই অবস্থায় কোলকাতায় ভাল আই টি প্রজেক্ট আসাও মুশকিল। এর সাথে মমতার জমির নীতির সম্পর্ক নেই। মূল সমস্যা এখন ডিম না মুর্গী আগে। দক্ষ কর্মী না থাকলে, ভাল প্রোজেক্ট এখানে আসবে না-আর প্রজেক্ট না এলে দক্ষ কর্মী তৈরী সম্ভব না।
উনি বোঝেন ও নি, পশ্চিম বঙ্গের কি সর্বনাশটাই উনি করছিলেন। সেটা আরো বেশী অন্ধত্ব। গোটা রাজ্য থেকে সক্ষম প্রতিভাবান বাঙালীরা সবাই চলে গেছে বহুদিন। এখনো যে দুচারটি প্রতিভা ওঠে, তারাও চলে যায় ব্যাঙ্গালোর পুনে তে। কারন কোলকাতায় সুযোগ নেই- সে ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যবসা, সিনেমা গান- সব কিছুর জন্যই সত্য।
উনার ফ্যানবেস ও বোঝে না উনিই বাংলার সর্বোনাশের আসল কান্ডারী। আজকে সিন্ডিকেট থেকে কলেজে ভর্তি হওয়া, পুলিশ থেকে প্রফেসার সবার দলদাস হওয়া-সবটাই উনার দান। বা উনার সৃষ্ট বেকারত্বের দান।
এমন বাঙালীর জন্মদিনে "কমরেড লহ প্রনাম" যারা এখনো লিখছে আবেগে, তাদের বলি, কমরেড লিখুন " বাংলার শ্রেষ্ঠ কালিদাসের জন্মদিনে লহ প্রনাম"।
(৩)
সিপিএম -আত্মঘাতি বাঙালীর ইতিহাস
(১)
২১ ই আগস্ট, ১৯৯১। মস্কোতে ট্যাঙ্ক ঘিরে ফেলেছে ক্রেমলিনের প্রাসাদ। হার্ডলাইন কমিনিউস্ট নেতারা গর্বাচেভকে তার ক্রিমিয়ার সামার রিসর্টে গৃহবন্দি করে বিশুদ্ধ কমিনিউজম প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে মিলিটারী ক্যু ঘটিয়েছেন। জনগণ পালা করে পাহারা দিচ্ছে বরিস ইয়েটসলিনের গণতন্ত্রপ্রেমী রাজনৈতিক নেতাদের। কেজিবির ওপর নির্দেশ এল, মেশিনগান নিয়ে ঢুকে বিদ্রোহি গণতন্ত্রকামী নেতাদের ১০০% ডাইল্যুউশনের। ফিনিশ দেম। সেভ কমিউনিজম!
এই অধ্যায়ে কেজিবির হেড তাদের কমরেডদের জিজ্ঞেস করলেন-তোমরা কি চাও? সেই কমিনিউস্ট জমানায় ফিরে যেতে যেখানে পার্টির অঙ্গুলি হেলনে কারনে অকারনে খুন করতে হয়, বন্দি করতে হয়-নাকি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাশিয়া? কজন বরিস ইয়েসলিনের ( তখন বরিস ইয়েসলিন রাশিয়ান ফেডারেশনের হেড) দলবলকে খুন করতে রাজী আছ?
একজন কেজিবি এজেন্ট ও এগিয়ে এল না।
কি করে আসবে? তারা দেখেছে রাশিয়া দুরাবস্থা। কোথাও খাবার নেই। সর্বত্র স্ট্রাইক। গত কুড়ি বছর ধরে একটা দেশের অর্থনৈতিক প্রগতি নেগেটিভ।
সেই মুহুর্তটাই কমিনিউস্ট নামক দানবটির মৃত্যুক্ষন। এরপর যা ঘটেছে সোভিয়েতের পতন, ইস্টার্ন ব্লকের পতন,পশ্চিম বঙ্গের কমিনিউস্টদের পতন-সবটাই সেই মৃত্যুর পরে, দানবটার আস্তে আস্তে একেকটা অর্গান শুকিয়ে আসা। নতুন করে মৃত্যু না। মৃত্যু অনেক আগেই ঘটেছে। সেই ২১শে আগস্ট, ১৯৯১।
এর আগে পর্যন্ত, মিথ্যে প্রচারে আমরা বিশ্বাস করতে শিখেছিলাম সোভিয়েত ইউনিয়ান হচ্ছে স্বর্গরাজ্য। কেন কমিউনিজম? ছোটবেলায় আমাদেরকে দেখানো হত -সোভিয়েত ইউনিয়ান। এক স্বপ্নরাজ্য। সেই প্রপাগান্ডার জন্য মির পাবলিকেশন থেকে আসত বাংলায় অনুদিত প্ত্রিকা সোভিয়েত ইউনিউয়ান। বিনা পয়সায় মাসে একদিন। অবিশ্বাস্য পেপার এবং প্রিন্টিং কোয়ালিটি। ওই প্রিন্টিং কোয়ালিটি দেখেই কমিনিউজমের প্রতি বিশ্বাসে মাথা নীচু হয়ে আসত! তার ওপরে আছে অবিশ্বাস্য সব ছবি সোভিয়েতের লাইফ-স্টাইলের। সুইমিং পুল, টেনিস , ডিস্কো-রেস্টুরেন্ট। কে জানত তখন ওই লোকগুলো মাত্র দুশো গ্রাম বাটারের জন্য রেশনের লাইনে মারামারি করে মাথা ফাটাচ্ছে?
অথচ কোনদিনই তখন জানতাম না, যাসের অবিশ্বাস্য পরিশ্রমে বেড়োচ্ছে সোভিয়েত ইউনিয়ান, তাদের পেটে রুটি নেই। খাদ্য সংকট এত তীব্র হয় রাশিয়ায়, ১৯৮৯ সাল থেকে রেশন চালু করতে বাধ্য হয়েছিল সরকার ।
১৯৯১ সালের ডিসেম্বর মাসে যখন সোভিয়েত ইউনিয়ান ধ্বংস হয়, পৃথিবীর সমস্ত দেশের কমিনিউস্ট পার্টিগুলির মৃত্যুদিন সেদিনই লেখা হয়ে গিয়েছিল। ওই ১৯৯১ সালের পরেও যে পশ্চিম বঙ্গে একটা কমিনিউস্ট পার্টি ৩৪ বছর টিকে আসে-এই বিশ্লেষনটা করা দরকার আছে। কমিনিউজমের মৃত্যু মানে অবশ্যই বামপন্থার মৃত্যু না। কিন্ত ওই লেনিনবাদি পার্টি স্বর্গ, পার্টি মর্ত্য টাইপের আবাল আদর্শবাদ পয়দা করে একটা জাতিকে সম্পূর্ন ধ্বংশ করার আত্মঘাতি রাজনীতি ১৯৯১ সালের পরেও কিভাবে ২৫ বছর বাংলায় টিকে গেল-তার সম্পূর্ন কৃতিত্ব প্রাপ্য ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের।
(২)
১৯৯১ সালের মধ্যেই, জঙ্গি ট্রেড ইউনিয়ানের দৌড়াত্মে পশ্চিম বঙ্গের শিল্প সম্পূর্ন মৃত্যুমুখে পতিত। ব্যান্ডেল থেকে হাওড়া যেতে গঙ্গার দুইধারে সারি সারি কারখানার কংকাল। ট্রেনে ভর্তি ভিখিরী-হকার। যারা এককালে ছিল কারখানার শ্রমিক। কিন্ত ১৪ বছরের বামফ্রন্ট শাসনে পুলিশ, এডমিনিস্ট্রেশনে সর্বত্র সিপিএম। কেন্দ্রের কংগ্রেসের কোন দায় নেই সিপিএমকে বাংলা থেকে সরানোর। কারন লোকসভায় কংগ্রেসের দিল্লী হাইকমান্ডের কাছে জ্যোতিবাবু যতটা প্রিয়ছিল- প্রিয়রঞ্জনরা ছিলেন না। বাংলার লোকেরাও যে তরমুজ কংগ্রেস নেতাদের ওপর ভরসা করতে পারছে -এমন না। ব্যাপক ছাপ্পা আর পঙ্গু কংগ্রেস নেতৃত্বের ফলে জ্যোতি বসুর মতন একজন মধ্যম মেধার মাথামোটা লোক, পশ্চিম বঙ্গে রাজত্ব করে গেল কুড়ি বছর। জ্যোতি মোষ ( ওটাই আমাদের চালু নাম) রাজত্ব করেছে বললে ভুল হবে। জংগী ট্রেড ইউনিয়ানের বুলডোজার চালিয়ে পশ্চিম বঙ্গকে ধ্বংস করছে। ওই লোকটাই পশ্চিম বঙ্গের শিল্পের কালাপাহাড়।
আমরা বড় হচ্ছি-ক্লাস সিক্স থেকে ইংরেজি। তার থেকেও মারাত্মক, সব কারখানাতেই লক আউট। নতুন কোন শিল্প আসছে না। যেগুলো ছিল, সব আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এইঅবস্থায় কিছুটা আশার সঞ্চার হয় কম্পিউটার এবং সফটোয়ার আউটসোর্সিং এ। কিন্ত বাধ সাধলেন জ্যোতিবসু। পশ্চিম বঙ্গে কম্পিউটার ব্যবহারে অলিখিত নিশেধাজ্ঞা আসে ট্রেড ইউনিয়ানের মাধ্যমে। উনি জানালেন কম্পিউটারের ব্যবহারের ফলে প্রচুর কেরানী চাকরি হারাবে।
এই সময়ের একটা ঘটনা বলি। আমি তখন আই আই টিতে দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র। আমার এক বন্ধু কোলকাতার একটা ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মে ইন্টার্নশিপ করছে সামারে (১৯৯২)। আমি ইন্টার্নশিপ করতাম সাহা ইন্সিটিউটে। ওর কারখানাতে গেছি একদিন। দেখি ও ফার্মের কম্পিউটারে চুটিয়ে ভিডিও গেম খেলছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম -কিরে এই কোম্পানীতে লোকে কম্পিউটার ব্যবহার করছে না?
ও বললো, না। ট্রেড ইউনিয়ানের নির্দেশ আছে-কেউ যেন কম্পিউটার ব্যবহার না করে। তাই কর্মীরা এতে ভিডিও গেম খেলে। ফলে যা হওয়ার তাই হল। আই টি শিল্পে এগিয়ে গেল ব্যাঙ্গালোর, নয়দা, হায়দ্রাবাদ। কোলকাতা পেল শুন্যে শুন্য।
আশা করি বুঝতে পারছেন জ্যোতি বসু এবং অশোক মিত্রের মতন বামপন্থী নেতারা সেকালে কি লেভেলের গাধা ছিল এবং কিভাবে তাদের একের পর এক আত্মঘাতি সিদ্ধান্তের খেসারত দিয়েছে আমাদের প্রজন্ম। বামপন্থী তাত্ত্বিক গাধামো এতটাই ক্ষতিকর, এবং আমাদের প্রজন্ম সেই গাধামোর জন্য এতটাই সাফার করেছে, পশ্চিম বঙ্গের শাসন ক্ষমতা থেকে এই "ভদ্রলোক" বামপন্থী বুদ্ধিজীবি ক্লাসটাকে ছুঁড়ে না ফেলে দিলে, এই রাজ্যের কোন ভবিষ্যত থাকা সম্ভব না।
ভাববেন না আমি বামপন্থী বিরোধি কেউ। কিন্ত পশ্চিম বঙ্গে সিপিএমের মাধ্যমে যে বামপন্থী ক্লাসের সৃষ্টি হয়েছে, সেটি আদ্যপান্ত একটি পরজীবি বুর্জোয়া ক্লাস । যাদের পেটে না আছে বিদ্যা । মাথায় না আছে বুদ্ধি। না আছে চাষের জমিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা। না কারখানায় কাজ করার শিক্ষা। না কিভাবে ব্যবসা করতে হয়, তার নো-হাও। এদের মোক্ষ স্কুল কলেজের একটি সিকিউরড চাকরি! সেটা বাগিয়ে সর্বত্র সাংস্কৃতিক বালামো করা-এই হচ্ছে তখনকার এবং বর্তমানের সিপিএমের পেডিগ্রি।
এই নয় যে গ্রাম খুব এগোচ্ছে তখন । ওপারেশন বর্গার ফলে একটা স্বচ্ছল কৃষি সমাজ তৈরী হয়েছে। কিন্ত সবার ছোট ছোট জমি। কারুর হাতে পুঁজি নেই যে গ্রামে ছোট ছোট কৃষি ভিত্তিক কারখানা করবে। কৃষি থেকে কৃষি ভিত্তিক শিল্পের উত্তোরনের জন্য দরকার ছিল কোয়াপরেটিভের। সেসব হল না । ফলে গ্রামে যাদের তিনটে চারটে করে ছেলে মেয়ে-অনেকেই বেকারত্বের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে অন্য রাজ্যবাসী হতে বাধ্য হয়েছে বহুকাল আগেই।
এর পরেও সিপিএম টিকেছে বেশ কিছুদিন। বুদ্ধ এসে অবস্থা আঁচ করেছিলেন। ভদ্রলোক ভালোই চেষ্টা করেছিলেন। জনগণ তাকে দুহাত তুলে ভোট ও দিয়েছিল। কিন্ত যারা ব্যবসা বোঝেনা, তারা যদি রাতারাতি শিল্প তৈরী করতে যায়, দালালদের খপ্পরে যাবেই। বুদ্ধর ও সেই হাল হল। কোলকাতার শহর তলিতে গজিয়ে ওঠে জমি হাঙর। যারা পার্টির সিলমোহরে, চাষীদের ভয় দেখিয়ে জমি কারতে শুরু করে। তবে সব থেকে বড় ক্ষতিটা তদ্দিনে করে দিয়েছেন প্রকাশ কারাত। ইউএস ভারত নিউক্লিয়ার ডিলে জন্য ইউ পি এ থেকে বেড়িয়ে এসে।
প্রকাশ কারাতের মতন সিপিএমের নেতারা কতটা নির্বোধ-সেটা যদি জানতে চান-শুধু এই তথ্যটা জানুন। আমেরিকা-ভারত নিউক্লিয়ার ডিল সাইনের ১০ বছরের পরেও কোন আমেরিকান বহুজাতিক ভারতে নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট খোলে নি। অথচ এই আমেরিকান বহুজাতিকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন, প্রকাশ কারাত। সাথে সাথে সিপিএম। এদিকে ডিল সাইনের দশ বছর বাদেও কোন আমেরিকান বহুজাতিকদের দেখা নেই নিউক্লিয়ার সেক্টরে!!
অর্থাৎ ভুতের সাথে যুদ্ধ করে আত্মঘাতি হয়েছিলেন প্রকাশ কারাত। ডুবিয়েছিলেন বুদ্ধকে। সিপিএম পার্টিটাকে।
এই সব বাম নির্বোধরা, তাদের নির্বুদ্ধিতার জন্য ডুবলে আনন্দই পাই। কিন্ত মুশকিল হয় যখন এই নির্বোধরা ক্ষমতায় বসে সফটোয়ার শিল্পকে শুরুতেই ধ্বংস করে।
আমি এই জন্যেই লিখেছিলাম-পশ্চিম বঙ্গের উন্নতির প্রথম শর্ত সিপিএম "ভদ্রলোক" মুক্ত পশ্চিম বঙ্গ। সেটা এই নির্বাচনে ঘটেছে। এবার এগোবে পশ্চিম বঙ্গ