১৯৭০ সাল থেকেই ফ্রান্সে কমিনিউস্ট বুদ্ধিজীবিরা ব্রাত্য। কারন ততদিনে সোভিয়েত ইউনিয়ানের দানবীয় রূপ সবার সামনে কদর্য্য ভাবে উলঙ্গ। তখন কমিনিউজিমের জয়গান করলে লোকে বলত উন্মাদ-মোদ্দা কথা স্রিরিয়াসলি কেউ নিত না। ফলে সার্তের মতন
মার্ক্সবাদি দিকপাল ও সোভিয়েতের নিন্দায় মুখর হন।
তাছাড়া ওই শ্রমিক বিপ্লবের ন্যারেটিভ ও খাচ্ছিল না। কারন পাশ্চাত্যে শ্রমিকরা তখন গাড়ি বাড়ি হাঁকিয়ে মধ্যবিত্ত-কারুর দায় পরে নি আরামের জীবন ছেড়ে গুলাগের দাস শ্রমিক হওয়ার।
কিন্ত বুদ্ধিজীবি হওয়ার জ্বালা এই যে, বুদ্ধি হইতে উদ্ভুত লেখাগুলি মার্কেটে না কাটলে পত্রিকাওয়ালা বা পাবলিশার্সও টাকা দেবে না।
ঠিক এই সময় মার্ক্সবাদি বুদ্ধিজীবিরা দেখলেন বামপন্থার মার্কেট টেকাতে নতুন কিছু আনতে হবে। মানে পুরাতন মদ যাতে নতুন বোতলে ঢোকানো যায়। বামপন্থার মদ হচ্ছে একটাই। সেটা হচ্ছে শ্রমিক-কৃষক শ্রেনীর ওপর অত্যাচার, অবিচার। কিন্ত বাজারে সেটা চলছে না।
কিন্ত বাজারে খাওয়াতে গেলে সেই অত্যাচার, অবিচারের গল্প ছাড়া কাটবে না। "এমপ্যাথি" মানে " পাঠকের সহানুভূতি" না উথলালে লেখা কাটে না। উনারা আবিস্কার করলেন-আচ্ছা, শ্রমিকরা অত্যাচারিত না হয় নাই হল। তাই বলে কি সমাজে অত্যাচার অবিচার নাই? মহিলারা পুরুষদের হাতে, কালোরা সাদাদের হাতে, সংখ্যালঘুরা সংখ্যাগুরুর হাতে অত্যাচারিত হয়েই চলেছে।
অর্থাৎ সহানুভূতির নতুন এঙ্গল আবিস্কার হল।
সেই পরিস্থিতিতে মার্ক্সিস্টদের নতুন বোতলের নাম হল -পোষ্ট মর্ডানিজম। বলা হল দেখ বাপু- যেদিকে তাকাও দেখিবে পাওয়ার স্ট্রাকচারের দৌলতে কেউ না কেউ কারুর ওপর অত্যাচার করেই চলেছে। তাহাই ইজম। বর্তমানে পাশ্চাত্যের বামপন্থা সেই খিচুরি- সব কিছুই সেই এমপ্যাথি ভিত্তিক হোমিওপ্যাথি।
এদ্দিন অব্দি ছিল ধনীরা চুরি ডাকাতি করে বড়লোক। এবার পোষ্টমডার্নিজমের নতুন তত্ত্বে- যার হাতে ক্ষমতা-সে ছলে বলে কৌশলে হাতিয়েছে। মানে কোম্পানীর যে সিইও-তার যোগ্যতা নেই। ডাকাতি করতে পারবে বলে বোর্ড তাকে বসিয়েছে। পুরুষের নারীর ওপর অত্যাচারের কারন ও সেই সামাজিক ক্ষমতায়ান। তা বায়োলজিক্যাল বলে মানতে নারাজ পোস্টমর্ডানিস্টরা।
পোষ্টমর্ডানিজমের দৌলতে সব থেকে বেশী ক্ষতি হয়েছে সক্ষম পুরুষদের যারা ইকনমির পিলার এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সংখ্যাগুরু। আজকে ট্রাম্পের বা মোদির সমর্থক কারা ? যেসব সক্ষম পুরুষ এই পোস্ট মর্ডান ন্যারেটিভের স্টিমরোলারের ( সেটা ভারতে এস সি এস টি দের রিজার্ভেশন, আমেরিকাতে বলে এফার্মেটিভ একশন, কখনো বা ফেমিনিজিম) চাকায় প্রতিদিন পিস্টোচ্ছে।
কর্মক্ষেত্রে আমাকে এঙরি হোয়াইট মেল মানে যাকে বলে রাগী শেতাঙ্গ পুরুষদের সাথেই বেশী সময় কাটাতে হয়েছে। এদের অনেকেই খুব ট্যালেন্টেড-কিন্ত যেহেতু আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে এদের জন্য কোন রিজার্ভেশন নেই -কিন্ত মেয়েদের জন্য আছে, কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য আছে -সেহেতু এরা ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায় নি। আবার চাকরির ক্ষেত্রে একজন হোয়াইট মেলকে ফায়ার করতে কিস্যু ভাবতে হয় না-কিন্ত কোন মহিলা বা কৃষ্ণাঙ্গকে ফায়ার করার আগে কোম্পানীকে অনেক নথি তথ্য তৈরী করতে হয়। ফলে আমেরিকার এই সাদা চামরার পুরুষদের মধ্যে রিজার্ভেশনের বিরুদ্ধে এক বিরাট রাগ। ঠিক যেমনই ভারতে জেনারেল কাস্টের লোকজনের মধ্যে রিজার্ভেশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগ্নেয়গিরি। এরাই কিন্ত ট্রাম্প এবং মোদির বেস। আপনি বলতে পারেন না এদের ক্ষোভের কারন নেই।
সত্যি কথা বলতে কি এই পোস্টমর্ডান ন্যারেটিভের চাপে সক্ষম পুরুষদের ঘরে বাইরে করুন সঙ্গীন দশা। ঘরে ফেমিনিজম, কর্মক্ষেত্রে রিজার্ভেশনের ফেবারিজম।
ঘরের মহিলাদের প্রাধান্য সর্বদাই ছিল। কিন্ত সেটা সংসার টেকানোর জন্য। এখন ঘরে ঘরে পুরুষ ত্রিফলা চাপে ফালফাল।
এক - পুরুষ কেন বলিউডের খানদের মতন রোম্যান্টিক না-নাচতে না পারলেও নিদেন পক্ষে কেন মিস্টি মিস্টি প্রেম করতে পারে না? এতেব আমার লাইফটাই ফেইল্ড-কারন র্যোমান্স নেই।
দুই- ভুল করলেও বকতে পারবেন না। কারন বাবা-মায়ের আতুপুতু ননীর দুলালী। বকলেই এরা যাবে গলে। তখন মনে হবে কেন বাবা-কি কুক্ষনে বকতে গেছিলাম, ভুল ধরাতে গেছিলাম!
তিন --তাকেও স্বামীর সমান কেরিয়ারের মই বেয়ে উঠতে হবে। এই চিন্তায় অসুবিধা নেই। কিন্ত বাস্তবে সন্তানের জন্মের পরে কেরিয়ারে ব্রেইক হবেই। তখন অধিকাংশ মেয়েই সেটা না মানতে পেরে মানসিক রুগী হয়ে ওঠে।
এব কিছুই ফেমিনিস্ট পোস্টমর্ডান চিন্তার ফসল। পোগতিশীলতার দায়। ভুগছে সক্ষম পুরুষ। নারীও কিন্ত সুখে নেই।
ঘরে এবং বাইরে এই ধরনের চাপ থেকে মুক্তি নেই বলেই মোদি এবং ট্রাম্পের সাপোর্টবেসের বড় অংশই সংখ্যাগুরু পুরুষ।
No comments:
Post a Comment