Monday, December 29, 2014

বেতন অসাম্য ও প্রযুক্তি

গোটা পৃথিবীতে এখন দুই মেরুর  বাসিন্দা। একমেরুতে লোকজন প্রযুক্তি বিপ্লবের সুযোগ নিয়ে নিজেদের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থানের উন্নতি করছে। অন্যমেরুতে যারা এটা পারছেনা, তারা ট্রাডিশনাল বা গতানুগতিক উৎপাদন ব্যবস্থায় বাঁচতে গিয়ে আরো পিছিয়ে পড়েছে। আরো গরীব হচ্ছে। ভারতে আই টি কর্মীরা প্রথম মেরুর বাসিন্দা। অন্যদিকে শিল্প-কৃষি শ্রমিক, ব্যাঙ্ক করনিক, আইনজ্ঞ, সাংবাদিক, ট্রাডিশনাল স্কিল্ড লেবার যেমন ছুতোর, রাজমিস্ত্রি এরা দ্বিতীয় মেরুর বাসিন্দা। অনেক ডাক্তার, শিক্ষক প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকলেও যেহেতু শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যে সরকারি চাকরি-সেহেতু, তারা এই হিসাবের বাইরে।  প্রাইভেট টিচারদের মাইনে বেড়েছে খাতা কলমে। কেও তাদের সঠিক মাইনা দেয় না ।

একটু পিছিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে কি মারাত্মক বৈষম্য তৈরী হচ্ছে প্রযুক্তির জন্য। ১৯৯২-৯৫ সালে আই টিতে সিনিয়ার লোকেরা পেত বছরে ৪-৭ লাখ টাকা (ব্যাঙ্গালোরে) ।  ২০০১-২ সালে সেটা হল, প্রায় ১২-২০ লাখ। এখন ব্যাঙ্গালোরে সিনিয়র পজিশনে লোকেরা পাচ্ছে ৩০-৬০ লাখ।  অর্থাৎ মাইনে বেড়েছে প্রায় দশগুন। যদি ডলারে ধরি, তাহলে ইনফ্লেশন এডজাস্টেড ভ্যালু পাব। ,৯২-৯৫ এ ডলার ছিল ৩০-৩৫ টাকা। সুতরাং ডলারে সেটা ছিল ১৩-২০ হাজার ডলার। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ৫০-১০০ হাজার ডলার। অর্থাৎ প্রায় ৫ গুন বৃদ্ধি ইনফ্লেশন এডজাস্টেড।  এবার একজন সরকারি কর্মচারীর বেতন ও কিন্ত বেড়েছে প্রায় ৩-৬ গুন।  ইনফ্লেশন এডজাস্টেড ভাবে দেখলে দুই থেকে তিনগুন। হাউসমেড বা বাড়িতে কাজ করা মেয়েদের বেতন এই সময়ের মধ্যে সমানুপাতিক হারে বেড়েছে। কিন্ত শিল্প শ্রমিকদের বেতন সেই ৯১ এ যারা ৫-১০ হাজার পেতেন এখন বড়জোর পান ১৫-২০,০০০। কি অনেকেই সেটা পান না । অর্থাৎ ইনফ্লেশন এডজাস্টেড হারে দেখলে শিল্প শ্রমিকদের বেতন কমেছে। সাংবাদিকদের ও এক হাল।  '৯৫ থেকে '১৪ এর মধ্যে ভাল সাংবাদিকদের বেতন খুব বেশী হলে বেড়েছে দুই থেকে চারগুন। সেটা ইনফ্লেশন এডজাস্ট করলে নেগেটিভ বা সামান্য বৃদ্ধি হবে। কৃষি শ্রমিকদের লেবার রেট বেড়েছে এই সময়ে প্রায় আড়াইগুন। অর্থাৎ ইনফ্লেশন ধরলে কিছুই বাড়ে নি।  তবে যাদের জমি আছে, তাদের আয় বেড়েছে। এসেট বেড়েছে-কারন জমির দাম বেড়েছে দশগুনের বেশী।  

সব থেকে খারাপ অবস্থা এন্ট্রি পজিশনে। '৯৫ সালে ইনফি এন্ট্রি পজিশনে একজন ইঞ্জিনিয়ারকে দিত ১৩,০০০ -এখন দেয় ১৬,০০০ । সর্বত্র এন্ট্রি পজিশনে মাইনে আসলে কমেছে প্রায় ৫০ থেকে ৬০% যদি ইনফ্লেশন এডজাস্টেড ভ্যালু দেখা যায়। সাংবাদিকতাতে এন্ট্রি পজিশনে কেও আজকাল পয়সা দেয় না ।

অর্থাৎ প্রযুক্তির কারনে বেতনে অসাম্য আরো বাড়ছে। সম্পদেও বাড়ছে।  তবে আস্তে আস্তে প্রযুক্তির কারনে, এই অসাম্য আস্তে আস্তে কমবে। যখন সবাইকে প্রযুক্তির আওতাই আনা সম্ভব হবে।

Sunday, December 28, 2014

শ্রমিক আত্মহত্যা

আজ দেখলাম একজন লিখেছেন হিন্দমোটরসে এক শ্রমিক আত্মহত্যা করেছেন। পশ্চিম বঙ্গে চাবাগান থেকে চটকল, সর্বত্রই ছাঁটাই, রুগ্নতা এবং মৃত্যু মিছিল।

 কেও বিড়লাকে দোষ দিচ্ছেন, কেও রাজনীতি, কেও সরকারকে। বেসিক্যালি ঘোলা জলে মাছ ধরা। শিল্প, কারখানা কোন কিছুই চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত না এযুগে। পুরাতন শিল্পগুলো যে মরবে, এটাই বাস্তব। প্রযুক্তির যুগে কোন কিছুই চিরস্থায়ী না । আজ ফ্লোরিডা থেকে ট্রেনে ফেরার পথে একদা ব্যস্ত শিল্প শহরগুলিতে অজস্র কারখানা কঙ্কাল দেখলাম।  সব দেশে সব রাজ্যেই শিল্প কারখানা মরে। কিন্ত নতুন কারখানাও গজায়। পশ্চিম বঙ্গের সমস্যা হচ্ছে নতুন কোন শিল্প আসে নি। ফলে কর্মচ্যুত শ্রমিকদের পুনঃবাসন হচ্ছে না ।

 আরো একটা বাস্তবকে স্বীকার করা যাক। কারখানা হলেই যে কর্মসংস্থান হবে তা বর্তমান যুগে সত্য না । অটোমেশনের দৌলতে এখন অনেক অনেক কম শ্রমিক নিয়েই চলছে কারখানা।  হাওড়া-চব্বিশ পরগনা বেল্টের অধিকাংশ কর্ম সংস্থান এখন বেয়াইনী ছোট ছোট কারখানা গুলোতে।

পরিস্থিতি কোন সরকার এসে, কোন নতুন রাজনীতি এসে বদলে দেবে এসব আকাশ কুসুম কল্পনা।  এই ইউটোপিয়ান স্বপ্নের জগতে থাকলে আরো শ্রমিক মরবে। এখন যেটা দরকার-সেটা হচ্ছে পুরাতন শ্রমিকদের নতুন স্কিলে রিহ্যাব এবং সেটা সরকার থেকেই করতে হবে। যেমন পুরাতন শ্রমিকদের মোবাইল, কম্পিউটার, আটোমোবাইল সারানোর কাজে ট্রেনিং দেওয়া যেতে পারে।  তার জন্য সরকার থেকে স্কিল রিহ্যাব স্কীম এখুনী চালু করা উচিত।

কারখানা খুলে, টিসিএস ইনফির মতন বড় শিল্প এসে পশ্চিম বঙ্গে দিন বদলাবে এসব নতুন প্রযুক্তির সামনে সব গল্প এখন। ইনফাক্ট, ইনফি, টিসিএস ও কর্মী কমাচ্ছে বা কমাতে বাধ্য হচ্ছে নতুন প্রযুক্তি এবং বিজনেস মডেলের সামনে। কিন্ত কোলকাতাতেই কিছু কিছু ছোট ছোট আই টি কোম্পানী ডোমেস্টিক সস্তার প্রোডাক্ট বার করে ভালোই করে খাচ্ছে।  কর্ম সংস্থান কিন্ত সেখানেই হচ্ছে। অথচ সরকার থেকে কিছুই করে না এইসব ছোট আই টি কোম্পানীগুলোর জন্য। পার্থ চ্যাটার্জি থেকে অমিত মিত্র সবাই নামী দামী শিল্পপতিদের তেলা মাথায় তেল মাখাতে ব্যস্ত-এদিকে সেই তেল কিন্ত আর চুইয়ে পড়ছে না ।

 সরকার দেওলিয়া। ওখানে প্রাইমারী স্কুলের চাকরিও দিতে পারবে না বা দিলে, নিজেদের ছেলে বৌকে দেবে।  বড় শিল্পে কোন কর্ম সংস্থান হবে না অটোমেশনের জন্য।  সুতরাং বাঙালীর সামনে এখন ব্যবসা অথবা আত্মহত্যা ছাড়া কোন উপায় নেই । অন্য রাজ্যে গিয়ে এদ্দিন করে খাচ্ছিল, সেটাও আস্তে আস্তে সম্ভব হবে না কারন বড় শিল্পে ছাঁটাই চলতেই থাকবে। এটা সমস্যার। বাঙালীর না আছে পুঁজি, না আছে বিজনেস স্কিল।  দেখা যাক দেওয়ালে পিঠ ঠেকা একটা জাতি কিভাবে নিজেদের উদ্ধার করে। তবে সমাধান লুকিয়ে আছে কিভাবে এই সব ছোট ছোট আধুনিক শিল্পগুলিকে সরকার সাহায্য দিতে পারে। এই ব্যপারে আমি দেখছি আমেরিকা কি করছে। সস্তায় অফিস দেওয়া থেকে বিজনেস নেটোয়ার্কিং , বিজনেস লোন, মেন্টরশিপ-সমস্ত রকমের সাহায্য দেওয়া হয় আমেরিকাতে যারা প্রযুক্তি ব্যবসায় আসতে চায়। এর একটা মূল কারন, তথ্য অনুয়ায়ী, আমেরিকাতে ৬৭% নতুন চাকরী সৃষ্টি হয়েছে নতুন প্রযুক্তি সেক্টরে-যেগুলি ছোট ছোট টেক কোম্পানী।  বড় কোম্পানীগুলি কর্মী কমিয়েছে আমেরিকাতে। একই ঘটনা ঘটছে কোলকাতাতেও। কিন্ত এখানে সরকার আমেরিকার মতন ছোট কোম্পানীগুলিকে সাহায্য করার জন্য যাযা দরকার তা করছে না । আসলে এই সরকার এত মিডিয়া লাইট খেতে ভালবাসে-এরা ভোট পাওয়ার জন্য শতাব্দি বা মুনমুন সেনের বুকের খাঁজের ওপর যত ভরসা করে-খাঁটি কাজের ওপর করে না । সবটাই যেখানে ধাপ্পাবাজি, কাজের কাজ আর কে করবে?

Saturday, December 20, 2014

সহি ইসলাম এবং ছেঁড়া জাঙ্গিয়ার মালিকের সন্ধানে মডারেট মুসলিম বৃন্দ

পেশোয়ারের নৃশংস শিশু হত্যাকান্ডের পর দেখছি, অনেক "মডারেট" মুসলমানের মনে কোরানে কি আছে, দেখিয়া খুজি ভাই, যদি বিশেষজ্ঞ পাই ( এজ ইফ, কোরান বাংলায় বা ইংরেজিতে পাওয়া যায় না ! বা সেটা নিজে পড়া যায় না ) টাইপের মনোভাব জেগেছে। একজন জানিয়েছেন, কোরান যে সন্ত্রাসবাদ, অসভ্যতা সমর্থন করে না এটা কোরান খুজে পেতে মুর্শিদাবাদের লোকেদের বোঝাতেই পারলেই নাকি, তারা আর মৌলবাদি হবে না ! উনারা নাকি বিদ্যাসাগর, রামমোহনের মতন ধর্ম সংস্কারের মাধ্যমে ইসলামকে ভদ্র সভ্য করে গড়ে তুলবেন!!!! তাতে নাকি কাজ হবে কারন অধিকাংশ সাধারন মুসলমান ধর্মান্ধ!

সমস্যা ত্রিবিধ।

প্রথমত হিন্দু ধর্মে সংস্কারের জন্য হিন্দুত্ব কমে নি বা হিন্দুদের আধুনিকরন হয় নি। হিন্দুদের আধুনিকরন হয়েছে আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থার সাথে তারা জড়িয়েছে বলে। তাও সেটা শহর এলাকাতে সীমাবদ্ধ।  বিবেকানন্দর হিন্দু ধর্ম সংস্কারে যেটা হয়েছে হিন্দু মৌলবাদিরা গোডাউন আর শোকেশে ভাগ হয়ে গেছে। এই মুহুর্তে মুসলমানদের মধ্যে গোডাউন মৌলবাদি বেশী, শোকেসে কম। বিবেকানন্দ, রামমোহনের প্রভাবে হিন্দু ধর্মে শোকেস মৌলবাদি বেশী গোডাউনে কিছু কম। কিন্ত ব্যপারটা কালেদরে এক। ফলে ভারতে হিন্দুত্ববাদ কিছু কমে নি। তারা ক্রমাগত ক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।

দ্বিতীয় পয়েন্ট ফুকোর ক্ষমতার তত্ত্ব থেকে আসে। উনারা চান একটা অবস্থা সৃষ্টি করতে যেখানে কোরান সঠিক কিন্ত সন্ত্রাসবাদিরা ভুল। কিন্ত কনসেনসাস হচ্ছে কোরান ঠিক, মহম্মদ ঠিক। ফুকোর ক্ষমতার তত্ত্ব অনুযায়ী এক্ষেত্রে আসলেই ক্ষমতা বাড়বে ইসলামের মৌলবাদের কারন ইসলাম বেঠিক, এটা পুরো ত্যাজ্য হচ্ছে। এই জন্য হিন্দুত্ববাদিরা বিবেকানন্দ বিরোধি ইত্যাদি বলে হিন্দুত্বর রথ আটকানো যাবে না । হিন্দুত্ববাদ আটকাতে গেলে বিবেকানন্দের দর্শন এবং জীবনকে আক্রমন করতেই হবে।

 তৃতীয় ভুলটা এই যে ইসলামে সুন্নত বলে একটা ব্যপার আছে। বালকদের হত্যা করা উচিত না অনুচিত-এটা মোটেও কোরান থেকে তেহরকি পাকিস্তান নেই নি। নিয়েছে সুন্নত থেকে বা মহম্মদদের জীবন থেকে। যেখানে সহি বুখারিতে পরিস্কার লেখা আছে বানু কোরজার ইহুদিদের গণ নিধনের সময় মহম্মদের নির্দেশ কি ছিল (Then the Prophet said, "O Sad! These people have agreed to accept your verdict." Sad said, "I judge that their warriors should be killed and their children and women should be taken as captives." The Prophet said, "You have given a judgment similar to Allah's Judgment (or the King's judgment)."Sahih al-Bukhari,5:58:148 )। সুন্নত মানলে সন্ত্রাসবাদ ঠেকাতে পারবেন মডারেট মুসলিমরা ?  হজরত মহম্মদ রাষ্ট্রনেতা যুদ্ধনেতা হিসাবে প্রায় ৭০ টি যুদ্ধ করেছন। যদি সত্য হচ্ছে, এই মহম্মদ  শার্লক হোমসের  মতন এক আরব নেতার ছায়াতে তৈরী এক কাল্পনিক চরিত্র । যুদ্ধে সে যুগে যা করা হত, যথা লুঠ তরাজ, মেয়েদের ধর্ষন করে যৌনদাসী বানানো-এসব কিছুই মহম্মদ করেছেন বা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। সুন্নত মেনে, আই সিসিসরা আজ ঠিক তাই করছে, যা সেযুগে মহম্মদ করেছিলেন। সেযুগে সেসব ঠিক ছিল। এযুগে?? আর সুন্নত কত মারাত্মক তার প্রমান ইরাকে আই সিসিস।  ইমরানা কেস। উত্তরপ্রদেশে ইমরানার শশুর ইমরানাকে ধর্ষন করেছিল। ইমরানা অভিযোগ জানালে, উলেমারা সুন্নত অনুসরন করে নিদান দেন, ইমরানা শশুরকেই বিয়ে করুক!!  কারন? কারন মহম্মদ নিজের পুত্রবধু জয়নাবকে বিয়ে করেছিলেন!!   মহম্মদ যা করেছিলেন শশুররা তাই করুন-পুত্রবধূর দিকে হাত বাড়ান!!

বেসিক্যালি মুসলিম মৌলবাদিরা কিন্ত সৎ। তারা ইসলামে ঠিক যা যা করতে বলা হয়েছে, তারা তাই করছেন। অসৎ হচ্ছে তথাকথিত মডারেট মুসলিমরা। যারা কিছু হলেই সহি ইসলামের বিশেষজ্ঞ খুঁজতে বেড়োন এবং ইহা সহি ইসলাম না -ইসলাম শান্তির ধর্ম বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করেন। সব ধর্মের পাদের গন্ধই বিটকেল-কিন্ত ইসলামেরটা এত বাজে যে ও শান্তির ধর্ম, বিশেষজ্ঞ চাই ইত্যাদি ভুলভাল বক্তব্যে এই ধর্মের দুর্গন্ধ আটকানো যাবে না ।

Thursday, December 18, 2014

পেশোয়ার স্কুলে জঙ্গী হামলা- ইসলাম সম্মত না ইসলাম বিরোধি?

তেহেরকি তালিবান, যে গোষ্টিটি এই নৃশংস হত্যাকান্ডের কান্ডারী, তাদের মুখপত্র উমর খুরসানি জানিয়েছেন, তারা সুন্নত অনুযায়ী কাজ করেছেন। সুন্নত মানে হজরত মহম্মদের জীবনী অনুসরন করে শিক্ষা পাওয়া যায়।  মদিনার নিকটস্থ বানু কোরজায়া ইহুদি উপজাতির ৮০০ পুরুষ এবং "বালক" কে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন মহম্মদ। কারন তারা শত্রুতা করেছিল।  উমর এও জানিয়েছেন [১], যারা এই হত্যাকান্ডকে ইসলাম বিরোধি বলছেন তারা যেন শাহি আল বুখারীর হাদিস পড়ে দেখে নেয়- মহম্মদ বানু কোরাজিয়া ইহুদি উপজাতিকে গণহত্যার সময় নির্দেশ দিয়েছিলেন যেসব বালকদের যৌনচুল গজিয়েছে, তাদেরই যেন শুধু হত্যা করা হয়!!

যারা বলবেন ইহা ইসলামের অপব্যখ্যা-তারা এই বিষয় গুলি নিয়েও ভাবুন


  •    ধর্মগ্রন্থের বাক্যগুলি মধ্যযুগীয়। গঠন দুর্বল। এগুলিকে লিঙ্গুইস্টিকে বলে উইক টেক্সট। মানে একাধিক ব্যখ্যা হতে পারে। মানবিকেরা মানুষের মতন, অমানুষেরা অমানুষের মতন ব্যখ্যা করবে । ফলে ধর্মগ্রন্থ অনুসরন করাটা খুব ভয়ংকর রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। যেটা এক্ষেত্রে হয়েছে। এই নিয়ে আমার একটা বিস্তারিত প্রবন্ধ আছে আগে , সেটা দেখে নিতে পারেন [২]
  •  আরেকটা সমস্যা সুন্নত নিয়ে।  অর্থাৎ মহম্মদের জীবনীকে অনুসরন করা। এখানে সমস্যা দুটী।  মহম্মদ মদিনাতে যখন গেলেন, তখন তার হাতে আল ইসলামের কয়েকশ সৈনিক। এদিকে পেটে নেই খাবার। ফলে মক্কাগামী অনেক ক্যারভান লুঠ তরাজ করেছে মহম্মদের অনুগামীরা এবং মহম্মদ তাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে সেই যুগে আরবে ক্যারাভান লুঠ করা ডাকাতি করা হারাম ছিল না । এখন এই ইতিহাস অনুসরন করে যদি মুসলমানরা ভাবে বিধর্মী লোকেদের ওপর ডাকাতি করা সুন্নত, তাহলে বিপদ আছে। দ্বিতীয় ইস্যুটা এই যে মহম্মদ চরিত্রটাই কাল্পনিক।  এই যে তেহরিক ই পাকিস্তান বলছে, মহম্মদ যৌনচুল গজানো বালকদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন সাহি বুখারি অনুযায়ী-তা এই হাদিস অনুযায়ী মহম্মদের যে জীবনী আমরা জানি, তার কতটুকু সত্য? আমি যেটুকু ঐতিহাসিক রিসার্চ করতে পেরেছি, তাতে এটাই জেনেছি যে সেকালে মক্কায় হানিফ বলে এক প্রগতিশীল অংশের নেতা ছিলেন মহম্মদ। তার বাকী জীবনীর পুরোটাই গল্প। কোন ঐতিহাসিক বা বাস্তব প্রমান নেই । এটা নিয়েও একটা বিস্তারিত লিখেছিলাম [৩]


  এবার আসি একটা বৃহত্তর প্রশ্নে। ধর্ম পালন কি আমাদের জীবনে দরকার? কি দরকার মহম্মদের  কৃষ্ণের জীবনী অনুসরন করে? যেখানে তাদের জীবনে অনেক কিছুই আছে যা বর্তমানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন না ?

   আধ্যাত্মিক গাইডেন্স দরকার-সেটা আমি মানি। কিন্ত তার জন্য কি ধর্মগ্রন্থ দরকার? একদম না । আধ্যাত্মিকতার উৎস জীবনের উদ্দেশ্য খোঁজা। সেটা মধ্যযুগের ধর্মগ্রন্থ যা সম্পূর্ন ফালতু-বোঝা যায় না -সেখানে কেন খুঁজবো? আমি জীবনে উদ্দেশ্য প্রেমে, গানে কবিতায় বিজ্ঞানে কেন খুঁজবো না ?  আমি বিজ্ঞানের মাধ্যমে জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজি। কিভাবে খুঁজি, তার একটা বিশদ বিবরন এই প্রবন্ধে দিয়েছিলাম [৪]। জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজতে আমাকে কোনদিন ধর্মগ্রন্থের বুজরুকির সাহায্য নিতে হয় নি! না কোন গুরুর কাছে দৌড়তে হয়েছে।

 আবার অনেকে বলেন, ধর্ম না থাকলে সমাজে নৈতিকতা থাকবে না ! এটা ফালতু যুক্তি। নৈতিকতা মানে কি? সৎ থাকা।  এটা ধর্ম কেন শেখাবে? প্রতিটা মানুষকে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে, তাকে সৎ হতেই হবে। আমি ব্যবসা করে খাই। যদি কেও আমাকে বিশ্বাস না করে- কে আমাকে কাজ দেবে, বা কেইবা আমার জন্যে কাজ করবে? আর এই বিশ্বাসটা সততা থেকেই আসে।  সততা কেন ধর্মগ্রন্থ থেকে শিখতে হবে? এটাত বাস্তব বুদ্ধি থেকে আসা উচিত।

আমি জানি না বাকিদের জীবনের উদ্দেশ্য কি। তবে এটা জানি আমরা সবাই খাদ্য, যৌনতা, বাসস্থান, সন্তানের জন্য নিরাপত্তা চাই। আর সেটা টাকা ছাড়া আসে না জীবনে। ভাল কেরিয়ার গড়তে গেলে, অর্থ উপার্জন করতে চারটে জিনিস জীবনে জরুরী
 (১) বুদ্ধি   (২) পরিশ্রম (৩) সততা  (৪) সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা।

  ১-৩ অনেকেরই থাকে, কিন্ত সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াটা কঠিন। জীবনের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে গেলে অনেক কিছু নিয়ে বস্তুনিষ্ট নির্মোহ ভাবে বিশ্লেষন করতে হয়। যেমন আমার আই আই টি বন্ধুদের প্রায় সবার মধ্যেই ১-৩ গুনাবলি আছে। তা স্বত্ত্বেও,  ২০ বছর বাদে কেও কেও গুগল আপেলের মতন সংস্থায় লিডার আবার কেও কেও প্রায় বেকার বসে আছে । মধ্যের স্পেক্ট্রামে আছে আরো বেশী লোক।  এর কারন- কোন ফিল্ড উঠছে, কোন কোম্পানী উঠছে, কোথায় উন্নতি করার সুবিধা, কোন কোম্পানী কখন ছাড়া উচিত-এসব অনেক ভেবে কাজ করতে হয়। নইলে গাড্ডায়।  আমি দেখেছি ধর্মীয় মানুষদের একটা প্রবণতা আছে ধর্মের নামে, আল্লার নামে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। তারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় যুক্তি এবং বিশ্লেষন দিয়ে চারিদিকটা দেখে না । ফলে প্রায়শ গাড্ডায় পড়ে। আমার আশে পাশে যত সফল প্রযুক্তিবিদ, ব্যবসায়ী বা বিজ্ঞানী দেখছি-যাদের ভালোভাবে চিনি, তাদের কেও ধার্মিক না । এটা ভাবার কারন নেই মুসলমানরা সফল না । আমার এই হাওয়ার্ড কাউন্টির সার্কলে প্রচুর ভাল মুসলমান বন্ধু আছেন যারা বিজ্ঞানে বা মেডিসিনে নাম করেছেন। তাদের কেও ধার্মিক নন ( হয়ত এদের স্ত্রীরা এখনো ধার্মিক) । কারন ধার্মিক, ধর্মে গদগদ, জীবনে সফল- সেটা সম্ভব না ।  হ্যা অনেক সফল লোক আছেন, যারা আধ্যাত্মিক অনুপ্রেরনা পান ধর্ম থেকে। কিন্ত তাদের ঠিক ধার্মিক বলা যাবে না । এরা সবাই বুদ্ধিমান বিচক্ষন লোক।  তবে জীবনে সফল লোকেদের মধ্যে যে ধার্মিক লোকেদের সংখ্যা কম, উল্লেখযোগ্য ভাবে কম তা নিয়ে সন্দেহ নেই । কারন সফল হওয়ার চাবিকাঠি সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াতে। আর সঠিক সিদ্ধান্ত "বিশ্বাসী" মনোভাব থেকে আসে না । আসে যুক্তিপূর্ন বিশ্লেষনী মন থেকে।

মোদ্দা কথা ধার্মিক হওয়াটা জীবনের সাফল্যের পথে অন্তরায়। বোঝা মাত্র। এই বোঝা যত তাড়াতাড়ি নামাতে পারবেন তত ভাল ।


[১] http://indiatoday.intoday.in/story/peshawar-massacre-killing-consistent-with-prophet-mohammed-tehreek-teaching-pakistan-taliban/1/407503.html

[২] দেরিদার ডিকনস্ট্রাকশন তত্ত্বের আলোকে ধর্মগ্রন্থের ব্যাখ্যা
[৩]  রাজনৈতিক নেতা না অভিনেতা 
[৪] বিজ্ঞানবাদ বা ন্যাচারালিজম

  

Wednesday, December 17, 2014

পাকিস্থানে স্কুলশিশু গণহত্যা

পাকিস্থানে স্কুলশিশু গণহত্যায় চারিদিকে ইসলামের বিরুদ্ধে ছিঃছিঃ। ইসলাম সভ্যতার স্কাম, পিট, নর্দমার জল। আরো অনেক কিছু লেখা ভেসে আসছে।  এটাও সত্য পৃথিবীর কুখ্যাত, খতরনাক দশটি দেশের নটি মুসলমানদের দেশ। দশমটিও যদিও খ্রীষ্ঠান প্রধান-এটি বিপজ্জনক ইসলামের জন্য। তালিকায় সবার ওপরে উঠে আসায় সবচেয়ে ভয়ংকর রাষ্ট্র হয়েছে ইরাক। শীর্ষ ১০টি ভয়ংকর রাষ্ট্রের তালিকা হচ্ছে-
১) ইরাক (৯৭% মুসলিম)
২) নাইজেরিয়া (৫৯.৭ মুসলিম, ৪০.৩% খ্রিষ্টান) ,
৩) সোমালিয়া (৯৯.৮% মুসলিম),
৪) আফগানিস্তান (৯৯% মুসলিম),
৫) ইয়েমেন (৯৯% মুসলিম),
৬) সিরিয়া (৯০% মুসলিম) ,
৭) লিবিয়া (৯৭% মুসলিম),
৮) পাকিস্তান (৯৮% মুসলিম),
৯) মিসর ( ৯০% মুসলিম)
১০) কেনিয়া (৮২.৫% খ্রিষ্টান, ১১.১ মুসলিম) ।  

কিন্ত এত কিছু প্রমানের পরেও আমি ইসলামকে হিন্দু বা খ্রীষ্ঠান ধর্মের থেকে আলাদা কিছু ভাবতে নারাজ। কারন ধর্মটা একটা যুগের সামাজিক চাহিদা থেকে উদ্ভুত। স্যোশাল কনস্ট্রাক্ট। আমি ইসলামে এমন কিছু পায় নি যাতে মনে হয়েছে ধর্মটা খ্রীষ্ঠানদের থেকে আলাদা। কিন্ত তা স্বত্বেও পৃথিবী অধিকাংশ অসভ্যতা, অপরাধ, সন্ত্রাস মুসলমানরাই কেন করে ধর্মের নামে, সেটার উৎস কিন্ত বিশ্বরাজনীতি। অবশ্য আমি দাবী করছি না ইসলাম রাজনীতির থেকে আলাদা। কারন ইসলাম সহ সব ধর্মের উৎসের মূলেই আছে রাজনৈতিক চাহিদা। সমস্যা এখানেই যে মুসলমান সমাজে একজন বাচ্চাকে যেভাবে জোর করে আল্লার মুমিন বাঁদর বানানো হয়, অন্য ধর্মে সময়ের প্রগতির সাথে সাথে, সেই ধর্মীয় চাপ আর নেই । নইলে প্র্যাক্টিক্যালি স্পিকিং বৈদিক হিন্দু ধর্ম ইসলামের থেকেও অনেক বাজে।কিন্ত হিন্দুরা আর্থ সামাজিক প্রগতির কারনে বা মার্কেটের চাপে যেটুকু ধর্মের কুহেলিকা থেকে বেড়োতে পেরেছে, মুসলমানরা পারে নি। এই যে পারে নি-এর পেছনে কিন্ত ইসলামের ভূমিকা নেই । এই পারে নির মূল কারন মুসলমানদের আধুনিক মার্কেটের সাথে যুক্ত করার প্রক্রিয়াটা চলছে-কিন্ত শ্লো। বাংলাদেশে বা ভারতে যেসব মুসলমানরা আধুনিক অর্থনীতি যেমন আইটির সাথে যুক্ত হতে পেরেছে, তারা হয়ত ম্যাক্সিমাম, আই সিসের টুইটার একাউন্ট চালাবে কিন্ত বোমা হাতে বেড়োবে না । অনেকেই হয়ত বলবেন আধুনিক অর্থনীতি এবং নামাজ, রোজা,  শীতলা মায়ের উপোস একসাথে চলতেই পারে, কিন্ত আমার মতে সেটা বোধ হয় চিন্তার দৈন্যতা। হ্যা, আধুনিক প্রযুক্তি, অর্থনীতির সাথে যুক্ত অনেক হিন্দু মুসলমান এখনো ধার্মিক, মৌলবাদি ধার্মিক। কিন্ত ধৈর্য্য রাখুন। প্রযুক্তিই তাদের ডাইলুইট করবে।

 মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেশ ছড়ানোর সময় এটা না । এটা ভাবার সময় ধর্ম আদৌ মানুষের ভাল কিছু করতে পারে কি না । আমি জানি এই ফোরামেও লোকনাথ বাবা বা বিবেকানন্দের বা ইসলামের অনেক লয়াল সদস্য পাব তারা বলবেন  কেন বাপু, ইশ্বরে বা বাবা মায় বিশ্বাস করে একটু মানসিক শান্তিতে থাকি। আমাদের সাথে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের কি সম্পর্ক?

 প্রথমত আফিং বা মাল খেয়েও মানসিক শান্তি আসে। ঈশ্বরে মন রেখে যে শান্তি, তা মদ্যপের হাই ভাবের চেয়ে আলাদা না । এবং সেই ভাববাদ বাস্তব দ্বায়িত্ব এড়িয়ে আত্মপ্রতাড়না। আর দ্বিতীয়ত এই ধরনের ধর্মীয় উগ্রবাদ এবং নিরীহ ঈশ্বর ভক্তদের আক্সওম এক। ইশ্বর সর্বশক্তিমান। সর্ব ইচ্ছামান। একজন ধর্মীয় উগ্রবাদি যখন এই বাচ্চাদের মারছিল, সে কিন্ত ভেবেছে সে আল্লার ইচ্ছাতেই এই কাজ  করছে। বকোহারাম যখন বাচ্চা স্কুল বালিকাদের ধর্ষন করছিল, তারা কিন্ত তা আল্লার ইচ্ছাতেই তা করেছে!! এখন আল্লাভক্তরা বলবেন, তাহা আল্লা ইচ্ছার না । ওরা শয়তান। কিন্ত তাতে কি? কে শয়তান না ? নোয়াখালির দাঙ্গায় যেসব হিন্দু নারী ধর্ষিত হয়েছিল, ধর্ষকরা মুসলমান ছিল, না ছিল শয়তান? নোয়াখালির দাঙ্গায় জোর করে প্রায় আট হাজার হিন্দু রমনীকে বলাৎকার করে ইসলামে নিয়ে আসা হয়। তারাত বাংলাদেশে মুসলমান সমাজে বীরের মর্যাদা পায়!!  সুতরাং শয়তানের তত্ত্ব দিয়ে ইসলামের কুকীর্তি লুকানো যাবে না ।

 বাস্তব এটাই। আমরা একবিংশ শতাব্দির দিকে এগোচ্ছি। প্রযুক্ত এতটাই এগোচ্ছে ৯৫% মানুষ এখন যা করছে আগামী ২০ বছরের মধ্যে সেই পেশা থাকবে না । একমাত্র তারাই করে খেতে পারবে যারা কম্পিউটারকে চিন্তায় হারাতে পারবে।  ধার্মিক লোকেরা এত নিম্নবুদ্ধির হয়, তারা যে আগামীর প্রতিযোগিতায় টিকবে না সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। ফলে বেকারত্বের কারনে তারা নিজেদের মধ্যেই মুশল পর্ব চালাবে।  তবে এটাও নিশ্চিত আপনারা প্রতিদিন ইসলামিক সন্ত্রাসের অনেক সার্কাস দেখতেই থাকবেন। কিন্ত এসব দেশলাই এর কাঠি। নিভে যাওয়ার আগে জ্বলে ওঠা।

Sunday, December 14, 2014

হিন্দু শৌর্য্য পুরস্কার!

ধনঞ্জয় দেশাই। এবারের হিন্দু শৌর্য্য পুরস্কার প্রাপক। তার "হিন্দু বীরত্বের"  গল্প?  গত জুন মাসে মোসিন সাদিক নামে এক তথ্য প্রযুক্তি কর্মীকে এই মহান হিন্দু বীর হকি স্টিক দিয়ে খুন করে। থুরি,  মোসিন সাদিক একজন মুসলমান। মুসলমানরা আবার ভারতে বাঙালী, মারাঠি, ভারতীয়, তথ্য প্রযুক্তি কর্মী হয় না -ভারতে মহামানবের মিলনস্থলে, তাহারা শুধুই মুসলমান। তাদের নেতারা, হিন্দুরা সবাই বলে তারা মুসলমান! তারা ভারতীয়, বাঙালী, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী হতে চাইলেও, তাদের গলাধাক্কা দিয়ে সবাই বোঝাবে তারা মুসলমান।



 আমি জানি এই পোষ্ট দেওয়া মাত্র, দুজন নিরীহ ক্লজেট হিন্দুত্ববাদি লিখবে দাদা আপনি মেহদি মসরু বিশ্বাসকে নিয়ে লিখলেন না ? শালার মুসলমানটা দেশে বসে আই সি সের টুইটার একাউন্ট চালাচ্ছে, জিহাদি রিক্রট করছে!! ধনঞ্জয় দেশাই জাস্ট একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা!! মুসলিমদের আই সি সিস জিহাদি হওয়াটা কিন্ত ভারতের নিরাপত্তার জন্য বিরাট একটা রিস্ক!

প্রশ্নটা হচ্ছে দুটি ক্ষেত্রেই দেখা উচিত, সাধারন হিন্দু বা মুসলমানরা এই ধনঞ্জয় দেশাই বা মেহদি মসরু বিশ্বাসকে কি চোখে দেখছে। মসরু বিশ্বাস কিন্ত তারা বাবা মাকে বলতে সাহস পায় নি সে জিহাদি। সে যা করেছে লুকিয়ে। পরিস্কার ভাবেই তার ফ্যামিলি, সমাজ তার পাশে ছিল না । হ্যা, কিছু বিভ্রান্ত মুসলমান যুবক অবশ্যই তার পাশে আছে নিশ্চয়। কিন্ত ধনঞ্জয় দেশাইকে দেখুন! মহারাষ্ট্রের সব হিন্দু সংগঠন গুলি তার বীরত্বের জন্য পুরস্কার দিচ্ছে!!

 ক্লোজেট হিন্দুত্ববাদিরা আবার লিখবেন কেন ওসামা বিন লাদেনের সাপোর্ট বেস কি ভারত বা বাংলাদেশের মুসলিমদের মধ্যে নেই ? নিশ্চয় আছে। আমি নিজেই দেখেছি আজকালে প্রকাশিত হয়েছে সেসব প্রবন্ধ। ওসামাকে আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বীরযোদ্ধা হিসাবে চালানোর চেষ্টা হয়েছে ভারতের বাম-মুসলিম এক্সিসে। ঠিক যেমন ধনঞ্জয়কে দেখানো হচ্ছে ইসলামের আগ্রাসী ধর্ম-সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বীরযোদ্ধা। কি বীরত্ব সেত আপনারাই দেখলেন-এক নিরীহ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীকে হকি স্টিক দিয়ে পেটানো!! ওসামা বিন লাদেন ধনঞ্জয়ের বড় ভাই। উনি হাজার দুয়েক সাধারন আমেরিকানকে খুন করেছিলেন মাত্র!

 ধর্ম এবং রাজনীতি যখন মনকে কলুষিত করে হৃদয়ের ওপর তার পরিচিতিকে টেনে আনে এমনটা হয়। আজ তাহের ভাই এক অসাধারন গল্প শোনালেন কোরবানীর। তাদের গ্রামে কোরবানীর ভোজনের জন্য সাতটা গরু আনা হয়েছিল। একে একে ছটা গরু কাটা হল কোরবানীর হালাল করে। বাকি ছটা গরুকে একে একে কাটা হল। সপ্তম গরুটা নিজে এসেই শুয়ে পড়ল।  যে গলা কাটছিল, সে কিছুক্ষনের জন্য থমকে যায় এই আকস্মিক ঘটনায়। আফটার অল মানুষ ত! হৃদয়ত আছে! সে থমকে দাঁড়ানোয় সমবেত মুমিনদের মধ্যে কলরব ওঠে -আরে একটা গরুর জীবন না ইসমাইলের ধর্ম আগে ব্যাটা আহাম্মক?  সে সঙ্গে সঙ্গে চেগে ওঠে-তাইত, সে মানুষ না মুসলমান-তাই সপ্তম গরুটাকে কাটতে হবে!

 মোসিন সাদিকের জন্য যদি কোন হিন্দুর হৃদয় না কাঁদে, না কম্পিত হয়-তাকে যদি হিন্দুরা মনে করে ওই তাহের ভাই এর কোরবানীর সপ্তম গরু--আমি বলবো বেসিকে প্রবলেম। আগে মানুষ হৌক, তারপরে হিন্দু হওয়ার চেষ্টা করুক। আমাদের হৃদয়টাকে, সহজাত মানবতাকে ধর্মের কাছে, রাজনীতির স্বার্থে বন্ধক দিলে সেই সুযোগ আরো বেশী করে নেবে ধর্ম ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদরা।

 মোদিকে ভারতীয়রা ভোট দিয়েছিল অর্থনীতির পুনঃউদ্ধারের জন্য। কংগ্রসের চুরি ডাকাতিতে তিক্ত বিরক্ত হয়ে। উন্নয়ন ছিল প্রত্যাশা। কিন্ত ভোটের পর ক্রমাগত ভাবে যেভাবে হিন্দুত্ববাদিরা সর্বত্র মুসলমান বিদ্বেশ, বেদে বিজ্ঞান চর্চা এবং মেয়েদের পোষাকের মাপ ঠিক করতে মাঠে নেমেছেন, তাতে পরিস্কার বিজেপির ফোকাস এবং মন নেই উন্নয়নে। কারন তার জন্যে যে রাজনৈতিক এবং আইন সংস্কার দরকার, তা মোটেও করতে দেবে না ভারতের ফরেদার ব্যবসায়ী শ্রেনী-যারা আবার বিজেপির ব্যাকবোন। সুতরাং ক্ষমতায় থাকতে হিন্দুত্ববাদির জিগির ছাড়া উপায় নেই । তবে কিনা, সেটা আবার বাঘের পিঠে চেপে হরিন শিকার। একদিন না একদিন ঐ বাঘটা তার আরোহীকে খাবেই।

Sunday, December 7, 2014

নাস্তিক

মানুষ ত নাস্তিক হইয়েই জন্মায়। পরিবার তার মাথায় ঈশ্বরের ভয় ঢুকিয়ে তাকে আস্তিক বানায়। তাকে হিন্দু মুসলমান বানায়।

 মাথা ভয় ঢুকিয়ে তাকে এই যে হিন্দু বা মুসলমান বানাচ্ছে-এটার জন্যই কিন্তু বাঙালী জাতিটা দুইভাগ হল। কি ভারসাম্য রক্ষা 

করলেন? যারা নিজেদের হিন্দু বা মুসলমান ভাবে, ঈশ্বর জনিত ভয়ের কারনে, তাদের ব্রেইন ড্যামেজড। ধার্মিকরা এতই মূর্খ ধূর্ত 

রাজনৈতিকরা তাদের ধর্মানুভূতিতে সুড়সুরি দিয়ে, চুরি ডাকাতি করে। সুতরাং ধর্মটা যে সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য কাম্য না এটা 

আপনার আগে বোঝা উচিত। ধর্ম থাকবে, আবার সামাজিক সাম্য থাকবে তা আকাশ কুসুম কল্পনা। চিন্তার দৈন্যতা। এই ধরনের 

ললিপপ, ভুল চিন্তা থেকে সমাজকে বার করে আনতে হবে। নইলে আরেকবার দেশভাগ এবং সাম্প্রদায়িক গৃহযুদ্ধের জন্য তৈরী থাকুন। 

মিরাক্কেল

মিরাক্কেল হিন্দু দেবদেবী নিয়ে মস্করা করে, বেশ করে। করাই উচিত। আফটার অল হিন্দু দেব দেবীদের উৎস প্যাগান উৎসব যার 

অধিকাংশই যৌনতাপূর্ন। যে ধর্মের দেবরাজ ধর্ষক, ধণদেবী রক্ষিতা, বিদ্যার দেবী গণিকা-তাদের নিয়ে মস্করা করবে না ত কি 

করবে??? আর যদি প্রশ্ন ওঠে ইসলাম নিয়ে, মহম্মদ বা বিবি আয়েশাকে নয়ে মস্করা নয় কেন? অবশ্যই তা করা উচিত। যদি 

মুসলমানদের জঙ্গীপনার জন্য, ইসলামিক কমেডি সম্ভব না হয়ে থাকে, তাহলে সে লস মুসলমানদের । কারন মুসলমানরা তাদের 

জঙ্গীপনার মাধ্যমে নিজেদের, নিজের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত ধ্বংস করছেন। তারা জঙ্গীপনার মাধ্যমে নিজেদের ধর্মকে টিকিয়ে 

রাখার চেষ্টা করছেন, যা শুধুই তাদের পেছনে টেনে ফেলবে। উদাহরন ৫১ টা মুসলমান দেশ, যারা গরীব থেকে আরো গরীব হচ্ছে, 

খেতে পাচ্ছে না , বেকারত্ব ক্রমবর্ধমান, গৃহযুদ্ধ এবং জিহাদি আন্দোলনে আরো জজ্জ্বরিত। ইসলাম যদি সভ্যতার ক্যান্সার হয়ে থাকে

 এই দেশগুলি সভ্যতার নর্দমা। সুতরাং যেসব হিন্দুরা মীরাক্কেলের বিরুদ্ধে ইসলামি জঙ্গিপনার হনুকরন করার জন্য ফেসবুকে 

জেহাদ করছেন, তারা আসলেই বলছেন, মুসলমানরা ন্যাংটো হয়ে ঘোরে, আমরা কেন তাহলে প্যান্ট পড়ে ঘুরবো?

Friday, December 5, 2014

বাবরি মসজিদ ভাঙার দিন

আজ সেই ৬ ই ডিসেম্বর । বাবরি মসজিদ ভাঙার দিন। কারুর কাছে শোকের, কারুর কাছে রাগের, কারোর বা উল্লাসের দিন। ৭ই
 ডিসেম্বর, ১৯৯২ আমরা খালি পায়ে হেঁটেছিলাম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য। পরের কয়েকটা দিন ছিল থমথমে। গুজুবে। দাঙ্গার
 ভয়ে বাড়ির বাইরে বেড়োনো নিশেধ।

আজ যখন স্মৃতির ক্যালিডোস্কোপে দেখি, আসলেই দুঃখ হয় না। বরং মানুষের মুর্খতায় আমোদিত হই।


রাম ওখানে জন্মেছিল ! বাও! স্পাইডারম্যানের মতন দুস্কৃতি বিনাশয় ফিকশনাল চরিত্র এই রাম। পার্থক্য এই যে স্পাইডারম্যানের 
ভক্ত বালকরাও জানে, ম্যানহাটনে স্পাইডারম্যানের আপার্টমেন্ট নেহাত কল্পনা। কিন্ত রামভক্ত ধেরে লোকেরা গভীর ভাবে বিশ্বাস 
করে রাম অযোধ্যায় শুধু জন্মায় নি-কোথায় জন্মেছিল সেটাও তারা ইঞ্চি প্রিসিশনে জানে। আর বিশ্বাসেই বা কি আসে যায়। কোন
 বিশ্বাসের জন্য যদি মুসলমানদের বাঁশ দেওয়া যায়, হিন্দু হিসাবে ভোটিং ব্লক একত্রিত করার সুযোগত গণতন্ত্রই দেয়!!


অনেকে বাবরি মসজিদের প্রসঙ্গ তুললেই বলেন বাংলাদেশে যে রোজ মন্দির ভাংছে তার বেলা? আসলে মন্দির মসজিদ ভাংলে আমি
 খুশীই হয়। কারন এগুলি প্রগতিশীলতার প্রতিবন্ধক। স্পেস এজের এক্সিমা। যখন দেখি একজন বাংলাদেশী হিন্দু মন্দির কেন ভাঙা 
হচ্ছে সে প্রশ্ন না তুলে --মনের গোপনে বা একজন নাস্তিকের কাছে স্বীকার করে, আসলেই কালী বা দূর্গাকে যতই জাগ্রত দেবতা 
ইত্যাদি ইত্যাদি সুপারম্যান ভেবে পূজো করিনা কেন, তারা আসলেই নির্বল নির্বোধ নির্বাক পুতুল। নইলে যেসব মুসলমানরা কালী
 মূর্তি ভাঙে তাদের কেন কিছু হয় না ?

হায় হায়!!

ঠিক এই কারনেই বাবরি মসজিদ ভাঙার সময় নিশ্চয় কিছু বুদ্ধিমান অথচ ধার্মিক মুসলমান প্রশ্ন করেছিল, আল্লা যদি এত 
সর্বশক্তিমান সুপারম্যান হন কেন তিনি বাবরি মসজিদ রক্ষা করতে সক্ষম হলেন না ?
এতেব বন্ধুগন মন্দির মসজিদ মূর্তি ভাঙা আসলেই সমাজের প্রগতির পক্ষে ভাল। মধ্যযুগের ইউরোপে ইহুদিদের সিনাগগ প্রায় 
ভাংত খ্রীষ্ঠানরা। তাদের বার করে দিত অনেক সময় শহর থেকে। ঠিক এই কারনেই ইহুদিদের মধ্যে সেকুলার বা উন্নত চিন্তায়
 বিশ্বাসী দার্শনিকদের জন্ম হয়। স্পিনোজা, ফ্রয়েড, আইনস্টাইন, কার্লমার্ক্স সবাই ইহুদি কেন? কারন ধর্ম আর ইহুদিদের ঈশ্বর যে 
তাদের বাঁচাতে ব্যার্থ, এই চিন্তা থেকে সেকুলারিস্ট হিউম্যানিজমের চিন্তা প্রথমে ইহুদি মানসেই আসে।

সরি, আমি আপনাদের সাথে একমত নই । হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে এত সাম্প্রদায়িকতা চাপা হয়ে আছে, ধর্ম ছাড়তে না 
পারলে ( ঈশ্বরে বিশ্বাস বা আধ্যাত্মিকতা ছাড়তে আমি বলছি না -কিন্ত ধর্মের পরিচিতি কেন?? ), সম্প্রীতি অলীক আলেয়া। 
ইল্যুউশন । ধর্ম পালন করব আবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও থাকবে, তা হওয়ার নয়। ওর্গানাইজড রিলিজনের স্তম্ভ, সিম্বল হচ্ছে এই 
মন্দির মসজিদ। এসব গুঁড়িয়ে দিলে ধর্মবিশ্বাস ও দুর্বল হয় ( যে সুপারম্যান আল্লা বা স্পাইডারম্যান রাম, আসলেই সর্বশক্তিমান না 
-কারন উনারা নিজেদের বাড়িই বাঁচাতে অক্ষম )।

ধর্ম পালনের, ধার্মিক হয়ে কাটিয়ে দেবার পেছনে কাজ করে ঈশ্বরভীতি। ভয় মহান সর্বশক্তিমান আল্লা বা ঈশ্বর নিশ্চয় বিশাল ক্ষতি 

করে দেবেন। ছোটবেলায় কতবার যে শুনতাম কালীকে অবজ্ঞা করার জন্য তার একমাত্র ছেলে ওলাওঠাতে পরের দিন মারা গেছে। 

হায় হায়। কালীকে অপমান করলে শুধু হিন্দুদেরই মরে। মূর্তি ধ্বংসকারী বাবর বা কোন মুসলমানকে হিন্দুদের জাগ্রত দেবতা 

কোনদিন কিস্যু করতে পারল না !! আবার মহান সর্বশক্তিমান আল্লা বাবরি মসজিদ বাঁচাতে পারল না । 

  শিশু মনে ভয় ঢুকিয়ে তৈরী হয় সুপারম্যান আল্লা আর স্পাইডারমান রামের বানরবাহিনী। যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি, তখন আমাকে 

লক্ষীপূজোর প্রসাদ দিলে, খেতে অস্বীকার করি। আমার এক মামা বললো তোর এত সাহস, লক্ষীরে অবমাননা করিস ? আমি বললাম

 আমি ত এসব মানি না । মামা বললো তোর এত সাহস? এই লক্ষীর প্রসাদ কিছুই না । আমি বল্লাম না । বলে পা দিয়ে মারিয়েও 

দিলাম। তখন আমার বয়স এগারো! মামা বল্লেন লক্ষীর অভিশাপে নাকি সারাজীবন অর্থকষ্টে ভুগবো! ক্লাস টেনে একই অভিজ্ঞতা হলো 
স্বরস্বতীপূজোর দিন। আসলে সামনে পরীক্ষা। আমি আগের দিন রাত্রি থেকে কোন একটা অঙ্ক পারছিলাম না । চেষ্টা করছিলাম 

সকালেও। তাই অঞ্জলি দিতে বেরোলাম না । ব্যাপারটা একটু বেমানান ছিল। কারন আমার নিজের বাড়িতেই সরস্বতী পূজো হত। 

 সেটাও ইস্যু না । আসলে সরস্বতীপুজো হচ্ছে সদ্য শাড়ি পড়া কিশোরীদের পেছনে ঝাড়ি মারার দিন। সেই দুর্বার হাতছানি কাটানো

 ছিল কঠিন। কিন্ত যেকারনেই হোক, অঙ্ক না মেলার জন্য উঠতেও পারছিলাম না । শেষমেস পাড়ার এক দাদা যে আমাদের বাড়িতেই

 অঞ্জলি দিতে এসেছিল, সে বললো তোর পড়াশোনা হবে না !!

 আসলে শিশু মনে এই ভাবেই ভয় ঢুকিয়ে হিন্দুত্ব বা ইসলামের আইডেন্টি গুলো তৈরী করা হয়। আর সেই ভয়ের উর্বর জমিতে ফসল 

ফলায় ধূর্ত রাজনীতিবিদরা। সুতরাং দুচারটে মন্দির মসজিদ ভাংলে যদি সেই ঈশ্বরভীতি কমে, তাহলে তা সমাজ এবং দেশের জন্য 

মঙ্গল। 

Monday, December 1, 2014

জব সাটিসফ্যাকশন

ছোটবেলায় কত কিছু হতে চেয়েছিলাম।  গৃহপালিত স্বামীর রোলটা  বাদ দিয়ে কল্পনায় ছিল সব কিছু। লেখক, ডাক্তার, কবি, শিক্ষক, অধ্যাপক, পলিটিশিয়ান, অভিনেতা-যখন যা কল্পনায় টানত। তবে কল্পনার জগতে ছিলনা ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী বা কর্পরেট জগতের ঘানি টানা। ইভেনচুয়ালি, সেইগুলোই হলাম, যা ছোটবেলাতে বেশ আনগ্ল্যামারাস, নীরস, অনাকর্ষনীয়  মনে হত। তবে অন্যদের দিকে তাকালে দুঃখ বা আফসোসের কিছু নেই । আমি তাও কিছু দুধের সাধ ঘোলে মিটিয়েছি। বাকীদের ভাগ্যে আবার তাও জোটে নি। আবার ব্যতিক্রমও দেখছি। একদম ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞানী হতে চেয়েছে এবং বড় হয়ে ঠিক তাই হয়েছে, এমন ও হয়েছে আমার বন্ধুদের মধ্যে।

 তবে এই হতে চাওয়ার খেলায়, আশার থেকে নিরাশার পাল্লা অনেক বেশী ভারী প্রায় সবার জন্য। অনেকেই চিনি-যারা বিখ্যাত সাংবাদিক হওয়ার জন্য মিডিয়া ক্যারিয়ার বেছে নিয়ে বেকারত্বের জ্বালায় ভুগছে। এক মিডিয়া হাউস থেকে অন্য মিডিয়া হাউসে আনপেড ঠোক্কর খাচ্ছে। বিজ্ঞানী হতে গিয়ে পোষ্ট ডক্টের পর পোস্ট ডক্ট করে পজিশন না পেয়ে শেষে কোন ফ্যাইন্যান্সিয়াল কোম্পানীতে গণিতজ্ঞের কাজ করতে বা স্কুল শিক্ষক হতে বাধ্য হয়েছে অনেক বন্ধুই। এগুলো একটু বেশী ট্রাজিক।

 আবার ডাক্তার হতে চেয়ে এবং শেষে সফল ডাক্তার হওয়ার পরেও জনগনের ক্যালানি খেয়ে এবং  সরকারের অবজ্ঞার জন্য বিশাল অবসাদে ভুগছে-এমন বন্ধুও আছে! রিলেটিভলি ভাল আছে শিক্ষক, অধ্যাপকরা। চাকরির নিশ্চয়তা আছে, মাইনে ভাল , ছাত্রদের হাতে ক্যালানি খাওয়ার ভয় অন্তত ডাক্তারদের চেয়ে কম। শিক্ষকতা বাদে সব পেশাতেই হতাশা অনেক বেশী। যারা ব্যবসা করে সফল-তারা হাতে গোনা কজন-এবং তাদের বাইরে রাখলে বাকী সব পেশাতেই কম বেশী হতাশা অনেক বেশী। সেটা চাকরিতে ছাঁটাই এর ভয়, স্যাটিসফ্যাকশন, বাজে বস, বাজে কোম্পানী অনেক কিছু হতে পারে। শিক্ষতার চাকরিতে, ভারতে স্যাটিসফ্যাকশন এবং স্টেবিলিটি দুটোই বেশী। তবে আমেরিকার ক্ষেত্রে টেনিওর ট্রাক না পাওয়া পর্যন্ত অনিশ্চয়তা আছেই।

 যারা এখনো ক্যারিয়ারে সেটলড না -তাদেরকে শিক্ষকতা লাইনে যাওয়ার জন্য উৎসাহ দেব। অবশ্য কেও যদি  ইঞ্জিনিয়ারিং বা অন্যকোন ইনোভেটিভ ব্যবসা করতে চায়, সেটাও ভাল । আন্তারপ্রেনিওরশিপে খাটুনি বেশী, রিস্ক সাংঘাতিক-কিন্ত জব স্যাটিসফ্যাকশন বা ইনকাম ও অনেক বেশী।  তবে যদি কেও যদি ওই রিস্ক আর খাটুনি না নিতে চায়, তাহলে চাকরিতে সন্তুষ্টির জন্য শিক্ষতার চেয়ে ভাল লাইন আর নেই । যারা এন জি ও বা স্যোশাল আন্তারপ্রেনিওরশিপ নিয়ে কল্পনার জগতে আছেন-তাদের জন্য বলি ভারতে এটি ঠগবাজদের ঠেক। তবে আমেরিকা হলে স্যোশাল আন্তারপ্রেনিওরশিপ করেও প্রচুর জব সাটিসফ্যাকশন সম্ভব।