Tuesday, September 23, 2014

বাম, ডান ও বায়োলজি

লোকে কেন বামপন্থী বা দক্ষিনপন্থী হয়?

আমাদের নিজের অভিজ্ঞতা অতি সরল। ফ্যামিলি ইনফ্লুয়েন্স। কে কতটা ধার্মিক হবে, সেটাও মোটামুটি পারিবারিক ল্যাজ।

 তবে ইদানিং বিজ্ঞানীরা বলতে শুরু করেছেন মস্তিস্কের গঠনের সাথে উনারা বাম বা ডান দিকের টেনডেন্সির সম্পর্ক পাচ্ছেন। ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের অধ্যাপক রায়টা কানাই  বায়োলজিতে  প্রকাশিক এক গবেষনাপত্রে দাবী [১] করেন, দক্ষিন পন্থীদের এমিগ্যাডেল একটু বড়-অন্যদিকে বামেদের বেশী থাকে এন্টেরিয়ার সার্কুলের কর্টেক্স। খুব জটিল বায়োলজির মধ্যে না ঢুকে-এটুকু জানা যাক যে এমিগ্যাডেল বড় হলে -  ইনফর্মেশন প্রসেসিং শক্তি বাড়ে।  লোকে একটু বেশী সচেতন হয়-দশদিক ভেবে কাজ করে। এন্টেরিয়াল সার্কুরাল কর্টেক্স বড় হলে লোক নতুনত্বকে সহজে গ্রহন করতে সক্ষম হয়। অর্থাৎ প্রগেসিভ হয় লোকে।


 জানিনা এই গবেষনা কতটা বিশ্বাসযোগ্য। কারন নিজের অভিজ্ঞতা হল একজন মানুষ বয়সের সাথে সাথে পালটে যায়। যৌবনে সবাই প্রতিবাদি। সমাজ, পৃথিবীকে পালটানোর স্বপ্ন দেখে। বাপের হোটেলে খেয়ে, মাথার ওপর উপায় করার চাপ না থাকলে, সেটাই স্বাভাবিক এবং স্বাস্থ্যসম্মত । ফেসবুক ফোরামে যেসব বামপন্থী দেখা যায় তাদের মধ্যে একটা প্যাটার্ন হচ্ছে এদের অধিকাংশ ছাত্র, যুবক এবং এখনো হাত পা ছাড়া। বাবা মা হয়ে সংসারের দ্বায়িত্ব নিতে হয় নি। ফলে সমাজ ও রাজনীতি নিয়ে গীটার এবং কবিতার রোমান্টিজম এখনো মরে নি এদের মধ্যে। অন্যদিকে জীবন এবং সংসারের দ্বায়িত্ব যারা নিয়েছেন-প্রোডাকসন সিস্টেম, সমাজ, মানুষ নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতাটা অনেক বেশী। ফাইনান্সিয়াল ট্রান্সাকশন--দ্বায়িত্বর ডিসচার্জ ও বেশী-আকাশকুসুম কল্পনার অবকাশ কম।

 এই জন্যে বয়সের সাথে সাথে বামপন্থীদের বিবর্তন হয় তিনটি গ্রুপে-এক যারা সংসারের দ্বায়িত্ব না নিয়ে চিরকাল ফ্যাতারু থেকে যেতে পারেন-চিরকালের ভবগুরে বামপন্থী। দ্বিতীয়গ্রুপ টি সংসার, সমাজ জীবনে বামপন্থার অসাড়তা বুঝে দক্ষিনপন্থীতে বিবর্তিত হয়। আর তৃতীয় গ্রুপটি হচ্ছে-যারা শুধু ক্ষমতার লোভে বাম রয়ে যান। যেমন সিপিএম। বাম মানে ত প্রতিবাদি রাজনীতি-৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকলে যারা সিপিএম করবে তাদের মধ্যে প্রতিবাদি চরিত্র তৈরী হবেটা কি করে ? ফলে সিপিএমের র‍্যাঙ্ক এন্ড ফাইল -এই তৃতীয় শ্রেণীর । ক্ষমতার গুড় খাওয়ার বামপন্থা।

 একমাত্র যৌবনেই মানুষ সত্যিকারের খাঁটি বামপন্থী থাকে।

 এটাও বোধ হয় একটা কারন, সমাজ বদলানোর ক্ষেত্রে ছাত্র আন্দোলনের ভূমিকা ঐতিহাসিক। ভাষা আন্দোলনই বলুন আর আজকের যাদবপুর-সমাজকে বদলানোর স্বপ্ন একমাত্র ছাত্ররাই দেখাতে পারে। সংসারী মানুষদের পক্ষে এটা সম্ভব না।

  এর বাইরেও আরেকটা তত্ত্ব আছে বামপন্থি হওয়ার-সেটা হচ্ছে গাঁজা, চরস, যৌন  জীবনের স্বাধীনতার। বামপন্থী মেয়েরা সেক্স নিয়ে কম রক্ষনশীল। বামপন্থী মেয়েদের মোহে বাম সার্কলে ঢোকার ইচ্ছা কলেজ জীবনে অনেকেরই থাকে। সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন পলিটিক্যাল ওরিয়েন্টেশনের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ন ফ্যাক্টর। অর্থাৎ "লিব্যারাল" এই ট্যাগটা অর্জন করার চাপ থাকে অনেকের মধ্যে। অজ্ঞানে বা সজ্ঞানে।


রেফারেন্স
[১] http://en.wikipedia.org/wiki/Biology_and_political_orientation

No comments: