৩৫ বছর একটা রাজ্যে কমিনিউস্ট বা লেনিনবাদিরা থাকলে কি হাল হতে পারে, সেটা ইতিহাসের অন্যান্য
লেনিনবাদি পরীক্ষা থেকেই বোঝা যায়।
রাজ্যের জন্যে সিপিএম কিছু করে নি এমন না। ভারতের অন্যান্য রাজ্যের থেকে এ রাজ্য শিল্পে পিছিয়ে থাকলেও
ভূমি বন্টনের জন্যে এ রাজ্যের চাষীদের অবস্থা কিছুটা ভাল। তবে ভূমিহীন চাষী এবং শ্রমিকদের অবস্থা খুবই খারাপ।
গুজরাতে বা মহারাষ্ট্রে যেখানে বছরে ১৮০ দিন কাজ পায় তারা, এরাজ্যে ৪০ দিন ও কাজ পায় না ভূমিহীন লেবারের
দল। এদের অধিকাংশই কাজ করতে চলে যাচ্ছে কেরালা বা গুজরাতে।
মূলত ভুল শিল্পনীতির জন্যেই বিদায় নিচ্ছে আজ সিপিএম সরকার। তারা জানত যুবকদের চাকরী দিতে হবে। কিন্ত
কিভাবে হবে, সেটা কিছু মাস্টারমশাইদের জানা সম্ভব ছিল না-যারা জীবনে কোনদিন কোন উৎপাদন পদ্ধতির
সাথে যুক্ত ছিলেন না। শেষে শিল্প স্থাপনের জন্যে টাটা সেলিমদের গোলাম হতে গিয়ে এক দালাল চক্রের হাতে
আসে সিপিএম। জনগনের পার্টি দালালদের পার্টিতে পরিণত হয়।
এর পরেও টিকে যেত সিপিএম। যদি না মাথার ওপরে প্রকাশ কারাতের মতন এক নিরেট নেতার বোঝা টানতে হত।
মমতাকে ঠেকানোর সব থেকে সহজ উপায় ছিল কংগ্রেসের সাথে কেন্দ্রে একসাথে দেশ শাসন করা। সেক্ষেত্রে বিজেপি
ছারা মমতার গতি ছিল না-এবং সেক্ষেত্রে সংখ্যালঘু ভোটও হারাতে হত না। এই সামান্য পাটিগণিত বোঝার ক্ষমতাও
যার নেই-তিনি সিপিএমের বড়কর্ত্তা। ফলে যা হবার , তাই হচ্ছে।
যাইহোক ১৩ ই মে সব অর্থেই এক ঐতিহাসিক বিজয় হবে। এ বিজয় হবে গণতন্ত্রের। আশা করা যায়
তৃণমূল দ্বায়িত্ববান অর্থবহ শাসকের ভূমিকা নেবে। যা নিতে বুদ্ধ সম্পূর্ন ব্যর্থ হয়েছেন। লেনিনবাদ মেনে
রাষ্ট্রর চেয়ে পার্টি বড় বানাতে গিয়ে পার্টি এবং রাজ্য -দুটোকেই ডুবিয়েছেন। যেখানে রাজ্য দেনায় ডুবে
যাচ্ছে-চাষীভুষো বেকারের দল নিজেদের মেয়েকে মুম্বাই এ বেচতে বাধ্য হচ্ছে সেখানে
আমেরিকা কোথায় হাগছে তাই নিয়ে মিছিল করা এক অবাস্তব ভাঁড়ামো এবং ছাগলামোতে পরিণত হয়েছিল
পশ্চিম বঙ্গে। তার সাথে সাথে অপ্রাসঙ্গিক বনধ সংস্কৃতি জুরে আজকে ফল এই যে দেশের সব থেকে বেশী বেকার
এবং বেশ্যার সাপ্লাই লাইন আজ পশ্চিম বঙ্গ। ২০,০০০ শিক্ষক এখনো পেনসন পান নি।
উৎপাদন ব্যবস্থাকে ধ্বংশ করে কোন আন্দোলন আজ পর্যন্ত ইতিহাসে জেতে নি। তাই অবাস্তব বাম আন্দোলন ত্যাগ
করে বাস্তবমুখী বাম আন্দোলনের সময় এটা। নইলে জনগনের আন্দোলন চলে যাবে দক্ষিন পন্থীদের হাতে-যেটা
মহারাষ্ট্রে হয়েছে-সেখানে জটাই পুরে জমি আন্দোলনের নেতৃত্বে আছে শিব সেনা। কারন মহারাষ্ট্রে বাম আন্দোলন
আজ মৃত। গোটা দেশেই বাম আন্দোলন মৃত হওয়াটা সময়ের অপেক্ষা যদি না এই হার থেকে সিপিএম শিক্ষা নিয়ে
নতুন ধরনের বাস্তববাদি বাম আন্দোলনে মানুষকে সামিল করে যা উন্নত উৎপাদন ব্যাবস্থার শর্তগুলি লঙ্ঘন করবে না।
No comments:
Post a Comment