মানুষ এবং পৃথিবীর ভবিষ্যত কি? এই যন্ত্র সভ্যতা মানুষকে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে?
এই নিয়ে , শতাব্দির শ্রেষ্ঠ বিতর্কটি অনুষ্ঠিত হল সাংহাইতে। জ্যাক মা এবং ইলন মাস্ক, নিজেরা ইতিহাস তৈরী করেন। সুতরাং তারা কিভাবে ভবিষ্যতকে দেখছেন তা সমগ্র পৃথিবীর জন্যই গুরুত্বপূর্ন। আমি অরিজিনাল ভিডিওটাও রাখছি কমেন্ট লিঙ্কে।
উনারা নানান বিষয়ে মতামত রেখেছেন। আমি শুধু চারটে সাবজেক্ট বেছে উনাদের মত এবং তার আরেকটু ব্যখ্যা দিচ্ছি।
(১) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ( এ আই ) ঃ
এক্ষেত্রে জ্যাক মা এবং ইলন মাস্ক - দুজনে ভিন্নমত পোষন করেন।
ইলন মাস্ক মনে করেন মানুষ এ আই এর কাছে অলরেডি পরাভূত। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে মানুষের বুদ্ধির পার্থক্য করতে গিয়ে মাস্ক বলছেন শিম্পাঞ্জি যেমন মানুষের কত বুদ্ধি আন্দাজ করতে পারে না, মানুষের পক্ষেও আর দুদিন বাদে এই আই সিস্টেম কি ভাবছে, তা অনুধাবন করাই সম্ভব না। সুতরাং এই পৃথিবীতে মানুষকে রেলিভ্যান্ট থাকতে হলে, সবাইকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হবে-যার জন্য উনি নতুন স্টার্টআপ খুলেছেন, নিউরোলিংক। যেখানে মানুষের ব্রেইন এবং এ আই একই সাথে একে অন্যের পরিপূরক হয়ে কাজ করবে।
জ্যাকমা, এমনটা মনে করেন না। উনার মতে এটা শিল্পবিপ্লবের পরে ধাপ । গাড়ী আসার পরে নিশ্চয় কোন মানুষ গাড়ীর সাথে দৌড়ের প্রতিযোগিতায় নামে না। যন্ত্র যে কাজ ভাল করে করতে পারে, সেই কাজ তারাই করবে। মানুষ কেন সেই কাজ করবে? মানুষের কাজ হবে পৃথিবীকে আরো মানবিক করে তোলা - নাচ, গান কবিতা শিল্পের মাধ্যমে। জ্যাক মা আরো জানাচ্ছেন যন্ত্র যত মানুষের কাজ করবে, মানুষ তত মানবিক কাজের জন্য সময় পাবে। উদাহরন হিসাবে উনি দিচ্ছেন যে আস্তে আস্তে মানুষের হাতে অবসর সময় বাড়ছে-উনার পিতামহ হয়ত গোটা জীবনে মোটে তিনটে শহর ঘুরেছেন। উনি ঘুরেছেন তিনশো শহর। জ্যাকমার নাতি ঘুরবে তিন হাজার শহর। কারন যন্ত্র যেহেতু সব কাজ করেদেবে, তাদের হাতে আরো বেশী সময় থাকবে।
ইলন মাস্ক ভিন্ন মত পোষন করেন। উনার মতে মানুষের কাজ হচ্ছে সমস্যা সমাধান করা।
এবার দেখাযাক কি করে চেকার, চেজ এবং গো এর মতন গেমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষকে হারিয়ে দিল।
এই ব্যাপারটাতে জ্যাক মার বক্তব্য শুধু লজিক আর মেমোরীতেই কম্পিউটার মানুষকে হারাতে পারে। কিন্ত সমস্যার সমাধানে শুধু লজিকে হয় না। মানুষের অভিজ্ঞতা, আবেগ আরো অনেক কিছুই লাগে।
মাস্ক একমত নন।
চেকারের সব চাল "ম্যাপ" করা সম্ভব। চেজের ডিগ্রি অব ফ্রিডম বেশী-কিন্ত তাও এই আই মানুষকে হারিয়ে দিচ্ছে। গো এর ডিগ্রি অব ফ্রিডম আরো বেশী । তাও কম্পিউটার জয়ী। মাস্ক মনে করেন আসলে আবেগ, অভিজ্ঞতা এগুলো সমাধানের ম্যাথেমাটিক্যাল ফ্রেম ওয়ার্কের সেই ওপেন ডিগ্রি অব ফ্রিডম - যা আস্তে আস্তে এ আই রপ্ত করে ফেলবে। সেই জন্যেই উনার মতে নিউরো লিংকের মতন স্টার্টাপ দরকার। যেখানে এই আই মানুষের ব্রেইনকে আরো দক্ষ, আরো এফিশিয়েন্ট করবে।
জ্যাকমা এই ব্যখ্যায় সন্তুষ্ট না। তার মতে লজিক্যাল স্তরের বাইরে এই আই কিছুই করতে পারবে না। যা কিছু মানবিক , তা মানুষকেই করতে হবে। সেখানে এ আই খাটবে না।
(২) মঙ্গলে বসতি স্থাপন - সোলার সিস্টেমের কলোনাইজেশন -
এখানে তারা আংশিক সহমত, খানিকটা ভিন্নমত।
তারা সহমত অন্যগ্রহে বসতি স্থাপনের থেকেও গুরুত্বপূর্ন পৃথিবীকে বসবাসযোগ্য করে রাখা-যা বর্তমান সভ্যতা করতে ব্যর্থ।
মাস্ক মনে করেন মঙ্গলে যাওয়ার এটাই প্রকৃষ্ট সময় । কারন বর্তমানে পৃথিবীর যা বিজ্ঞান প্রযুক্তি অর্থনীতির গতি-তাতে এটা সম্ভব। ভবিষ্যতে যদি হঠাৎ করে কোন দিন নিউক্লিয়ার বিপর্যয় হয়, ধূমকেতু আছড়ে পরে, রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরী হয়, এই সুযোগ আর নাও আসতে পারে। তাই মাস্ক মনে করেন পৃথিবীর বাজেটের ১% মঙ্গলে বস্তি স্থাপনের জন্য রাখা উচিত।
(৩) চাকরি ঃ
এখানে তারা কিছুটা সহমত, কিছুটা ভিন্নমত।
মাস্ক চিন্তিত যে নিউরো লিংকের মতন সহকারি ডিভাইস ছাড়া মানুষ বেকার হয়ে যাবে।
জ্যাক মা চিন্তিত না। উনি মনে করেন বর্তমানে মানুষ যা চাকরি করে, তা সত্যিই করার দরকার নেই মানুষের ( আমি নিজেও এটা নিয়ে দুবছর আগে লিখে ছিলাম)। কারন যন্ত্রই সেই কাজ ভাল করবে। মানুষের সপ্তাহে তিনদিন বারো ঘন্টার বেশী কাজ করার দরকার নেই। বাকী সময়টা মানুষ নাচ গান করবে, শিল্প চর্চা করবে। তাতেই অর্থনীতির বৃদ্ধি হবে।
(৪) শিক্ষা
দুজনেই একমত যে বর্তমান স্কুল কলেজ শিক্ষা, সময় নষ্ট।
জ্যাক মা করেন শিক্ষার মধ্যে আরো বেশী ইনোভেশন , আন্তারপ্রেনারশিপ, সৃজনশীল চিন্তা ( গল্প, কবিতা, নাটক, গান লেখা ) ঢোকাতে হবে। মুখস্থ করা, অঙ্কের সমাধান করা- এগুলো দরকার নেই। ওগুলো কম্পউটারই ভাল পারবে। এমন কি আর কয়েক বছর বাদে এই আই এলগোরিদম লেখার জন্য মানুষের দরকার হবে না ।
(৫) জন সংখ্য ঃ
দুজনেই একমত জন সংখ্যার সংকোচনটাই সমস্যা হবে। বিস্ফোরন না। উনাদের মতে সম্পদের যথাযত অপটিমাম ব্যবহার করলে, বর্ধিত জনসংখ্যা সমস্যা না।
ভিডিও লিংক
এই নিয়ে , শতাব্দির শ্রেষ্ঠ বিতর্কটি অনুষ্ঠিত হল সাংহাইতে। জ্যাক মা এবং ইলন মাস্ক, নিজেরা ইতিহাস তৈরী করেন। সুতরাং তারা কিভাবে ভবিষ্যতকে দেখছেন তা সমগ্র পৃথিবীর জন্যই গুরুত্বপূর্ন। আমি অরিজিনাল ভিডিওটাও রাখছি কমেন্ট লিঙ্কে।
উনারা নানান বিষয়ে মতামত রেখেছেন। আমি শুধু চারটে সাবজেক্ট বেছে উনাদের মত এবং তার আরেকটু ব্যখ্যা দিচ্ছি।
(১) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ( এ আই ) ঃ
এক্ষেত্রে জ্যাক মা এবং ইলন মাস্ক - দুজনে ভিন্নমত পোষন করেন।
ইলন মাস্ক মনে করেন মানুষ এ আই এর কাছে অলরেডি পরাভূত। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে মানুষের বুদ্ধির পার্থক্য করতে গিয়ে মাস্ক বলছেন শিম্পাঞ্জি যেমন মানুষের কত বুদ্ধি আন্দাজ করতে পারে না, মানুষের পক্ষেও আর দুদিন বাদে এই আই সিস্টেম কি ভাবছে, তা অনুধাবন করাই সম্ভব না। সুতরাং এই পৃথিবীতে মানুষকে রেলিভ্যান্ট থাকতে হলে, সবাইকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হবে-যার জন্য উনি নতুন স্টার্টআপ খুলেছেন, নিউরোলিংক। যেখানে মানুষের ব্রেইন এবং এ আই একই সাথে একে অন্যের পরিপূরক হয়ে কাজ করবে।
জ্যাকমা, এমনটা মনে করেন না। উনার মতে এটা শিল্পবিপ্লবের পরে ধাপ । গাড়ী আসার পরে নিশ্চয় কোন মানুষ গাড়ীর সাথে দৌড়ের প্রতিযোগিতায় নামে না। যন্ত্র যে কাজ ভাল করে করতে পারে, সেই কাজ তারাই করবে। মানুষ কেন সেই কাজ করবে? মানুষের কাজ হবে পৃথিবীকে আরো মানবিক করে তোলা - নাচ, গান কবিতা শিল্পের মাধ্যমে। জ্যাক মা আরো জানাচ্ছেন যন্ত্র যত মানুষের কাজ করবে, মানুষ তত মানবিক কাজের জন্য সময় পাবে। উদাহরন হিসাবে উনি দিচ্ছেন যে আস্তে আস্তে মানুষের হাতে অবসর সময় বাড়ছে-উনার পিতামহ হয়ত গোটা জীবনে মোটে তিনটে শহর ঘুরেছেন। উনি ঘুরেছেন তিনশো শহর। জ্যাকমার নাতি ঘুরবে তিন হাজার শহর। কারন যন্ত্র যেহেতু সব কাজ করেদেবে, তাদের হাতে আরো বেশী সময় থাকবে।
ইলন মাস্ক ভিন্ন মত পোষন করেন। উনার মতে মানুষের কাজ হচ্ছে সমস্যা সমাধান করা।
এবার দেখাযাক কি করে চেকার, চেজ এবং গো এর মতন গেমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষকে হারিয়ে দিল।
এই ব্যাপারটাতে জ্যাক মার বক্তব্য শুধু লজিক আর মেমোরীতেই কম্পিউটার মানুষকে হারাতে পারে। কিন্ত সমস্যার সমাধানে শুধু লজিকে হয় না। মানুষের অভিজ্ঞতা, আবেগ আরো অনেক কিছুই লাগে।
মাস্ক একমত নন।
চেকারের সব চাল "ম্যাপ" করা সম্ভব। চেজের ডিগ্রি অব ফ্রিডম বেশী-কিন্ত তাও এই আই মানুষকে হারিয়ে দিচ্ছে। গো এর ডিগ্রি অব ফ্রিডম আরো বেশী । তাও কম্পিউটার জয়ী। মাস্ক মনে করেন আসলে আবেগ, অভিজ্ঞতা এগুলো সমাধানের ম্যাথেমাটিক্যাল ফ্রেম ওয়ার্কের সেই ওপেন ডিগ্রি অব ফ্রিডম - যা আস্তে আস্তে এ আই রপ্ত করে ফেলবে। সেই জন্যেই উনার মতে নিউরো লিংকের মতন স্টার্টাপ দরকার। যেখানে এই আই মানুষের ব্রেইনকে আরো দক্ষ, আরো এফিশিয়েন্ট করবে।
জ্যাকমা এই ব্যখ্যায় সন্তুষ্ট না। তার মতে লজিক্যাল স্তরের বাইরে এই আই কিছুই করতে পারবে না। যা কিছু মানবিক , তা মানুষকেই করতে হবে। সেখানে এ আই খাটবে না।
(২) মঙ্গলে বসতি স্থাপন - সোলার সিস্টেমের কলোনাইজেশন -
এখানে তারা আংশিক সহমত, খানিকটা ভিন্নমত।
তারা সহমত অন্যগ্রহে বসতি স্থাপনের থেকেও গুরুত্বপূর্ন পৃথিবীকে বসবাসযোগ্য করে রাখা-যা বর্তমান সভ্যতা করতে ব্যর্থ।
মাস্ক মনে করেন মঙ্গলে যাওয়ার এটাই প্রকৃষ্ট সময় । কারন বর্তমানে পৃথিবীর যা বিজ্ঞান প্রযুক্তি অর্থনীতির গতি-তাতে এটা সম্ভব। ভবিষ্যতে যদি হঠাৎ করে কোন দিন নিউক্লিয়ার বিপর্যয় হয়, ধূমকেতু আছড়ে পরে, রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরী হয়, এই সুযোগ আর নাও আসতে পারে। তাই মাস্ক মনে করেন পৃথিবীর বাজেটের ১% মঙ্গলে বস্তি স্থাপনের জন্য রাখা উচিত।
(৩) চাকরি ঃ
এখানে তারা কিছুটা সহমত, কিছুটা ভিন্নমত।
মাস্ক চিন্তিত যে নিউরো লিংকের মতন সহকারি ডিভাইস ছাড়া মানুষ বেকার হয়ে যাবে।
জ্যাক মা চিন্তিত না। উনি মনে করেন বর্তমানে মানুষ যা চাকরি করে, তা সত্যিই করার দরকার নেই মানুষের ( আমি নিজেও এটা নিয়ে দুবছর আগে লিখে ছিলাম)। কারন যন্ত্রই সেই কাজ ভাল করবে। মানুষের সপ্তাহে তিনদিন বারো ঘন্টার বেশী কাজ করার দরকার নেই। বাকী সময়টা মানুষ নাচ গান করবে, শিল্প চর্চা করবে। তাতেই অর্থনীতির বৃদ্ধি হবে।
(৪) শিক্ষা
দুজনেই একমত যে বর্তমান স্কুল কলেজ শিক্ষা, সময় নষ্ট।
জ্যাক মা করেন শিক্ষার মধ্যে আরো বেশী ইনোভেশন , আন্তারপ্রেনারশিপ, সৃজনশীল চিন্তা ( গল্প, কবিতা, নাটক, গান লেখা ) ঢোকাতে হবে। মুখস্থ করা, অঙ্কের সমাধান করা- এগুলো দরকার নেই। ওগুলো কম্পউটারই ভাল পারবে। এমন কি আর কয়েক বছর বাদে এই আই এলগোরিদম লেখার জন্য মানুষের দরকার হবে না ।
(৫) জন সংখ্য ঃ
দুজনেই একমত জন সংখ্যার সংকোচনটাই সমস্যা হবে। বিস্ফোরন না। উনাদের মতে সম্পদের যথাযত অপটিমাম ব্যবহার করলে, বর্ধিত জনসংখ্যা সমস্যা না।
ভিডিও লিংক