এই মহাবিশ্বের বয়স ১৩৭৭ কোটি বছর। পৃথিবীর জন্ম ৪৫৪ কোটি বছর আগে। মানুষ এল সেইদিন - খুব বেশী হলে দুই লাখ বছর আগে।
এই অনন্ত চক্রে ২০১৮ আরো একটি এডিশন- কি যায় আসে! কিন্ত আমাদের ছোট ছোট চাওয়া পাওয়ার কুয়োর মহাবিশ্বে, একটা বছর অনেকটাই। সেই অনুন্নত প্রযুক্তির যুগে মাত্র এক বছরেই গোটা গ্রীসকে একত্রিত করেছেন আলেক্সজান্ডার। পরের বছর জয় করেছেন মিশর, পারস্য। সেই কালেও এক বছর ছিল অনেক। মুশকিল হচ্ছে আমরা আলেক্সান্ডার নই- ভাঙা গড়ার সুতীব্র ইচ্ছা আমাদের নেই- আছে শুধু গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে পিঁপড়ের জীবন মৃত্যুচক্রে একটা ফুঁটকি হয়ে বেঁচে থাকা।
এক্সিস্টেন্সিয়ালিজম বা অস্তিত্ববাদের সমস্যা সবাইকেই নাড়া দেয়। কখনো জ্ঞাতে অজ্ঞাতে। জীবনের আসলেই ত কোন পরম উদ্দেশ্য নেই। তাহলে কিসের জন্য বেঁচে থাকা? মৃত্যু আসবেই, এই ভেবেত আর বেঁচে থাকা যায় না। পরম বিশ্বাসীদের এই সমস্যা নেই-তাদের জন্য আছে জন্নত, স্বর্গ, পরজন্মের হাতছানি। আমাদের মতন নিধার্মিকদের সেই আশা ভরসার জায়গাটাও নেই-এটাই জীবন - এই জীবনেই যতটুকু পাওয়া তার চেষ্টা করে যেতে হবে।
আলটিমেটলি জীবনটাই হচ্ছে সেই তালা খোলার চেষ্টা করা যার চাবি আমার কাছে নেই। কিন্ত চেষ্টাটা করে যেতে হবে, কারন নইলে সময় কাটবে না। শুধু আশাটা রেখে যেতে হবে- তালাটা খুললেও খুলতে পারে কোনদিন। ঠিক এই কারনেই কমিনিউস্ট, হিন্দুত্ববাদি বা ইসলামিস্টরা ক্রমশ র্যাডিক্যাল হয়ে ওঠেন- কারন তাদের দৃঢ় ধারনা- তাদের দর্শনে ওই চাবিটা আছে-বাকী কারোর দর্শনে নেই! আর যতই তারা হতাশাই ভুগতে থাকেন যে চাবিটা কিন্ত পাওয়া যাচ্ছে না- তারা বুঝতে চান না, চাবিটাই নেই-তারা আরো র্যাডিকাল বিশ্বাসী হয়ে ওঠেন যে বিশ্বাসের গভীরতাই সেই চাবি আসিবে। কিন্ত না, আসে না। আসে মৃত্যু। আসে ধ্বংশ। আসে হতাশা।
সবটাই ছলনা। শ্রী রামকৃষ্ণের যত মত তত পথের আসল মানে হল- যত মত তত পথে ভুলিয়া থাক-চাবি আসিবেই। যত মত তত আলেয়ার আশা- চাবি মিলিবেই।
No comments:
Post a Comment