বুড়িমার চকলেট বোম ছাড়া কালীপূজো, দূর্গোপূজো ? আমরা মতন যারা আট বা নয়ের দশকে বেড়ে উঠেছি, পূজোতে বুড়িমার বোম ছিল সব থেকে বড় ব্র্যান্ড। এই বুড়িমা কে নিয়ে কৌতুহল অনেকদিনের -কিন্ত কোনদিন উনাকে নিয়ে কোন লেখা চোখে পড়ে নি। আজ প্রথম জানলাম উনার জীবন। উনার সংগ্রাম। অদ্ভুত, অভূতপূর্ব বললে কম বলা হয়।
উনার আদি বাড়ি ফরিদপুরে। অন্নপূর্ণা দাস। ১৯৪৮ সালে উদবাস্তু হয়ে উত্তর দিনাজপুরে যখন ক্যাম্পে উঠলেন সাথে দুই ছেলে মেয়ে। স্বামী নেই। শাক সব্জি, ঘটি বাটি যা পারেন, তাই বেচে কোন রকমে সংসার চালিয়েছেন। অভুক্ত থেকেছেন অধিকাংশ সময়।
সেই কঠিন পরিশ্রমের মধ্যেই বিড়ি বাঁধা শিখলেন সনাতন মন্ডলের কাছে। অভাবের চাপেই শিখেছিলেন কিভাবে বেচতে হয়। আস্তে আস্তে গড়ে তুললেন বিড়ি বাঁধার কারখানা।
এরপরে বেলুড়ে মেয়ে জামাই এর কাছে এসে, হরকুসুম গাঙ্গুলীর কাছ থেকে শিখলেন আলতা সিঁদুর বানানোর কাজ। আস্তে আস্তে অন্নপূর্ণা আলতা সিঁদুর ব্রান্ড ও তৈরী হল।
অবশ্যই তার রাজ্যজোড়া খ্যাতি বুড়িমার চকলেট ব্রান্ডে। এখানে তার গুরু বাজি বিশেষজ্ঞ আকবর আলি। পেয়ারীমোহন মুখুজ্যে রোডে তার তৈরী বাজির কারখানা এখন শিবকাশির বাজির সাথে পাল্লা দিচ্ছে। উনি শিবকাশিতেও কাটিয়েছেন বহুদিন বাজি তৈরী শেখার জন্য।
যে ব্যবসাতে হাত দিয়েছেন, সোনা ফলিয়েছেন। না তার আই আই টি, আই আই এমের কোন ডিগ্রি ছিল না। ম্যাট্রিক পাশ ও না উনি। ব্যবসায়িক পরিবারে জন্ম-তাও না। নেহাত অন্ন সংস্থানের চাপে ফেরি করা শুরু। তাহলে কোন জাদুবলে সফল বুড়ি মা?
যে কারন বিল গেটস বা মার্ক জুকারবার্গ সফল-ঠিক সেই কারনেই সফল বুড়ি মা। সোজা কোথায় ১০০% হ্যান্ডস অন। যা কিছু করেছেন-সেই তৈরী করা থেকে বেচা-নিজের হাতে। আজকাল কিছু কিছু আধুনিক ডিগ্রি সজ্জিত বাঙালী আন্তারপ্রেনারের সাথে সাক্ষাত হয়। তাদেরকে যখন তাদের নিজেদের প্রোডাক্ট নিয়েই জিজ্ঞেস করি -প্রযুক্তি থেকে বেচা-সব ব্যাপারেই দেখি, তারা কর্মচারীদের ওপর নির্ভরশীল। এরা বেশীদূর এগোবে না বলাই বাহুল্য।
সাথে সাথে আরো একটা কথা না বললেই না। বাংলাতে "প্রোডিউসার ক্লাস" টির কোন সন্মান নেই। এই বাংলাতেই আইরন ওয়ার্ক্সের জন্য বিখ্যাত ছিল কর্মকাররা। তাঁতি, কুমোর, কর্মকার-একদা এদের দক্ষতায় বাংলার প্রোডাক্ট বিক্রি হত অন্য দেশে, অন্য রাজ্যে। চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত, আধুনিক টেক্সটাইল কল, প্ল্যাস্টিকের উদ্ভব এবং সাথে সাথে ক্যালকেশিয়ানদের কলোনিয়াল ক্যঙ্গোভারের দৌলতে, বাংলায় প্রডিউসার ক্লাসটিকে ইতিহাস এবং সমাজ নেহাতই অন্ত্যজ শ্রেনী হিসাবে অন্ধকূপে ফেলেছে। ফলে একজন কামার, বা কুমোর সে নিজের পেশাতে খুব সফল হলেও, তার ছেলেমেয়েকে সে নিজের পেশাতে না দিয়ে, চাকুরিজীবি করে তোলে। আমেরিকাতে গ্রামে গ্রামে এইসব প্রোডিউসার ক্লাসের লোকেরা একদা ছোট ছোট ফ্যাক্টরি গড়েছেন। চীনের হাতে মার খাওয়ার আগে, এইসব ছোট ছোট ফ্যাক্টরীগুলোই ছিল, ম্যানুফাকচারিং এর নার্ভ সেন্টার। এই ট্রান্সফর্মেশনটা পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্রেও কিছুটা দেখেছি। কিন্ত জমিদারিপ্রথা, আঁতেলেকচুয়াল এবং বামপন্থী মনোভাবের কুম্ভীপাকে ্বাঙালী প্রোডিউসার ক্লাশ প্রায় অন্তর্জলি যাত্রায়।
ফলে বিখ্যাত বাঙালীর লিস্টে অন্নপূর্না দাসের স্থান হবে না কোথাও। সেখানে জ্বলজ্বল করবেন কথা ভেজে খাওয়া, মাথায় আদর্শবাদি টুপি পড়া শাসক শ্রেনীর হেগোপোঁদ চাটা বাঙালীকুশীলবরা। ঠিক সেই কারনেই বাঙালীর ভিখারিত্ব এবং মারোয়ারি শ্রেনীর দাসত্ব থেকেও মুক্তি নেই।
উনার আদি বাড়ি ফরিদপুরে। অন্নপূর্ণা দাস। ১৯৪৮ সালে উদবাস্তু হয়ে উত্তর দিনাজপুরে যখন ক্যাম্পে উঠলেন সাথে দুই ছেলে মেয়ে। স্বামী নেই। শাক সব্জি, ঘটি বাটি যা পারেন, তাই বেচে কোন রকমে সংসার চালিয়েছেন। অভুক্ত থেকেছেন অধিকাংশ সময়।
সেই কঠিন পরিশ্রমের মধ্যেই বিড়ি বাঁধা শিখলেন সনাতন মন্ডলের কাছে। অভাবের চাপেই শিখেছিলেন কিভাবে বেচতে হয়। আস্তে আস্তে গড়ে তুললেন বিড়ি বাঁধার কারখানা।
এরপরে বেলুড়ে মেয়ে জামাই এর কাছে এসে, হরকুসুম গাঙ্গুলীর কাছ থেকে শিখলেন আলতা সিঁদুর বানানোর কাজ। আস্তে আস্তে অন্নপূর্ণা আলতা সিঁদুর ব্রান্ড ও তৈরী হল।
অবশ্যই তার রাজ্যজোড়া খ্যাতি বুড়িমার চকলেট ব্রান্ডে। এখানে তার গুরু বাজি বিশেষজ্ঞ আকবর আলি। পেয়ারীমোহন মুখুজ্যে রোডে তার তৈরী বাজির কারখানা এখন শিবকাশির বাজির সাথে পাল্লা দিচ্ছে। উনি শিবকাশিতেও কাটিয়েছেন বহুদিন বাজি তৈরী শেখার জন্য।
যে ব্যবসাতে হাত দিয়েছেন, সোনা ফলিয়েছেন। না তার আই আই টি, আই আই এমের কোন ডিগ্রি ছিল না। ম্যাট্রিক পাশ ও না উনি। ব্যবসায়িক পরিবারে জন্ম-তাও না। নেহাত অন্ন সংস্থানের চাপে ফেরি করা শুরু। তাহলে কোন জাদুবলে সফল বুড়ি মা?
যে কারন বিল গেটস বা মার্ক জুকারবার্গ সফল-ঠিক সেই কারনেই সফল বুড়ি মা। সোজা কোথায় ১০০% হ্যান্ডস অন। যা কিছু করেছেন-সেই তৈরী করা থেকে বেচা-নিজের হাতে। আজকাল কিছু কিছু আধুনিক ডিগ্রি সজ্জিত বাঙালী আন্তারপ্রেনারের সাথে সাক্ষাত হয়। তাদেরকে যখন তাদের নিজেদের প্রোডাক্ট নিয়েই জিজ্ঞেস করি -প্রযুক্তি থেকে বেচা-সব ব্যাপারেই দেখি, তারা কর্মচারীদের ওপর নির্ভরশীল। এরা বেশীদূর এগোবে না বলাই বাহুল্য।
সাথে সাথে আরো একটা কথা না বললেই না। বাংলাতে "প্রোডিউসার ক্লাস" টির কোন সন্মান নেই। এই বাংলাতেই আইরন ওয়ার্ক্সের জন্য বিখ্যাত ছিল কর্মকাররা। তাঁতি, কুমোর, কর্মকার-একদা এদের দক্ষতায় বাংলার প্রোডাক্ট বিক্রি হত অন্য দেশে, অন্য রাজ্যে। চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত, আধুনিক টেক্সটাইল কল, প্ল্যাস্টিকের উদ্ভব এবং সাথে সাথে ক্যালকেশিয়ানদের কলোনিয়াল ক্যঙ্গোভারের দৌলতে, বাংলায় প্রডিউসার ক্লাসটিকে ইতিহাস এবং সমাজ নেহাতই অন্ত্যজ শ্রেনী হিসাবে অন্ধকূপে ফেলেছে। ফলে একজন কামার, বা কুমোর সে নিজের পেশাতে খুব সফল হলেও, তার ছেলেমেয়েকে সে নিজের পেশাতে না দিয়ে, চাকুরিজীবি করে তোলে। আমেরিকাতে গ্রামে গ্রামে এইসব প্রোডিউসার ক্লাসের লোকেরা একদা ছোট ছোট ফ্যাক্টরি গড়েছেন। চীনের হাতে মার খাওয়ার আগে, এইসব ছোট ছোট ফ্যাক্টরীগুলোই ছিল, ম্যানুফাকচারিং এর নার্ভ সেন্টার। এই ট্রান্সফর্মেশনটা পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্রেও কিছুটা দেখেছি। কিন্ত জমিদারিপ্রথা, আঁতেলেকচুয়াল এবং বামপন্থী মনোভাবের কুম্ভীপাকে ্বাঙালী প্রোডিউসার ক্লাশ প্রায় অন্তর্জলি যাত্রায়।
ফলে বিখ্যাত বাঙালীর লিস্টে অন্নপূর্না দাসের স্থান হবে না কোথাও। সেখানে জ্বলজ্বল করবেন কথা ভেজে খাওয়া, মাথায় আদর্শবাদি টুপি পড়া শাসক শ্রেনীর হেগোপোঁদ চাটা বাঙালীকুশীলবরা। ঠিক সেই কারনেই বাঙালীর ভিখারিত্ব এবং মারোয়ারি শ্রেনীর দাসত্ব থেকেও মুক্তি নেই।