এই ফোরামের ৫০% আলোচনা ইসলাম আর মহম্মদকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। হিন্দুত্ববাদটা ইসলামিয়তের রিয়াকশন , হনুকরন ইত্যাদি। কিন্ত এদের কেও কি একবার ও পড়াশোনা করে দেখেছে মহম্মদ বলে লোকটা আদৌ ঐতিহাসিক ভাবে ছিল কি না? লোকটা সন্ত্রাসবাদি, লুলুপুরুষ ইত্যাদি বলে গালাগাল দেওয়ার আগে একবার ও তো খুঁজে দেখতে হয়, লোকটা আদৌ ছিল কি না ?
অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিকেরা মহম্মদ বলে মহান প্রেফেটের যে কাহিনী হাদিস এবং আরো ইসলামিক সোর্সে পাওয়া যাবে এবং যা মুসলিমরা বিশ্বাস করে [ বা এন্টি ইসলামিস্টরাও করে], তার কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি খুঁজে পান নি। এফ ই পিটার, প্রাট্রিসশিয়া ক্রোন, কার্ল হেঞ্জ অলিগ যারা ঐতিহাসিক মহম্মদকে খুঁজতে গেছেন, কেও একটিও ইতিহাস সমর্থিত "প্রাইমারি" সোর্স পান নি। যা আছে তা তার মৃত্যুর ৫০-১০০ বছর পরে লিপিবদ্ধ করা মুখে চলে আসা গল্প। পাশাপাশি দেশ বা রাজ্যগুলি যা তিনি জয় করেছিলেন, তার মধ্যে সিরিয়া উন্নত ছিল। সিরিয়াতে মাত্র একটি নথিতে আরবদের নেতা হিসাবে মহম্মদের উল্লেখ আছে যা মহম্মদের সমসায়িক। আরবরা ওই সময় লিখতে জানতঁ। কেও তাদের মহান নেতার কথা লিখে যাবে না-তাই হয় নাকি? মহম্মদের কথা না লেখা থাকলেও ইসলামের সৈন্যদল, কাবার মূর্তি ভাঙ্গা ইত্যাদি নিয়ে সমসাময়িক আরবিকএবং সিরিয়ান নথি আছে। কিন্ত সেখানে মহম্মদ নেই। এটা কি ভাবে সম্ভব? আলেকজান্ডার, সিজার, চন্দ্রগুপ্ত যেখানে যেখানে যুদ্ধ করেছেন, রাজ্য জয় করেছেন-তার সমসাময়িক নথি বহুল পরিমানে আছে। আর মহম্মদের মতন এতবড় গুরুত্বপূর্ন আরব নেতার খবর সমসাময়িক কোন নথিতে পাওয়া যাবে না ? একশো বছর বাদে তার প্রথম জীবনী লেখা হবে, যেখানে লেখা লেখির ব্যাপারটা তখন খুব ই উন্নত ।
এইসব দেখে, রাশিয়ান ঐতিহাসিক মিখাইল তোমরা সিদ্ধান্তে এসেছিলেন মহম্মদ অখ্যাত কৃষক নেতা ছিলেন মদিনার। যাকে মক্কা থেকে তাড়ানো হয়েছিল কারন তিনি মক্কার মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ীদের ধণীদের বিরুদ্ধে খেপিয়েছিলেন। পরবত্তীকালে এই কৃষকনেতা আল ইসলাম সেনার সেনাপতি হোন এবং আরবকে একত্রিত করেন। কোরানের কিছু অংশ হয়ত তার কথা, বাকীটা পড়ে জোড়া হয়েছে।
এই সব নিয়ে ডিলেস উইকি আর্টিকলে আছেঃ এছারাও প্রচুর তথ্য নেটে পাওয়া যাবে।
http://en.wikipedia.org/wiki/Historicity_of_Muhammad
মোদ্দা কথা "মহম্মদ" বলে একজন প্রফেটকে রূপকথা এবং গল্পের মাধ্যমে দাঁড় করানো হয়েছে, একটা ধর্মকে দাঁড় করানোর জন্য। এবং ধর্মের ইতিহাস প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রেই এক। যীশু খ্রীষ্ঠের অস্তিত্ব ছিল কিনা - তাই নিয়েও ঐতিহাসিকরা সন্দিহান। ফলে যিশু নামে এক কাল্পনিক চরিত্র এবং তার ভিক্টিমাইজেশন এর কাহানী তৈরী করে পৃথিবীর বৃহত্তম ধর্ম তৈরী হয়েছে। আর আমাদের কৃষ্ণকে মিথিক্যাল বলে হিন্দুত্ববাদিরা মানতে চান না !!
মিথ এবং রূপকথা মানুষ তৈরী করে। এখন যেমন মোদিকে একটা মিথিক্যাল চরিত্র বানানোর চেষ্টা চলছে। ধরুন মহম্মদ ছিলেন সেকালের মোদি। এখন যেমন ভারতীয়দের মনে হচ্ছে মোদি এক শক্তিশালি একত্রিত ভারতের জন্ম দেবেন, সেকালের আরবরাও মহম্মদকে নিয়ে তাই ভাবত। সেই ভেবে একটা মিথিক্যাল মহম্মদের জন্ম হয়। এখন নিউজ পেপার, টিভি, স্যোশাল মিডিয়া মিথিক্যাল মোদির জন্ম দিচ্ছে। সেকালে মহম্মদের মৃত্যুর ১০০ বছর বাদে হঠাৎ করে মহম্মদের ওপর লেখা অনেক নথির জন্ম হয়। অনেকটা এরকম-কেও শক্তিমান বলে একটা কার্টুন চরিত্রের জন্ম দিয়েছে-সেটা বেশ জনপ্রিয় হয়েছে-ফলে হঠাৎ করে বাজারে শক্তিমানের ওপর লেখা আরো গল্প, ভিডিও গেমস চলে এল।
আরো একটা ভাল উদাহরন আছে নভেম্বর বিপ্লব। বর্ত্মানের রাশিয়ান ঐতিহাসিকরা নথি ঘেঁটে দেখেছেন জারের উইন্টার প্রাসাদ মাত্র ১০০জন নৌসেনা দখল করে সেই দিন। জার আগেই পালিয়েছিল। কিন্ত পরবর্তী কালে লেনিনের সময় নভেম্বর বিপ্লবের প্রথম সিনেমাতে দেখানো হয় সেখানে ১০,০০০ লোক ছিল-সাথে লেনিন আর ট্রট। স্টালিন আরেকটা ফিল্ম বানান। সেখানে বিদ্রোহীর সংখ্যা হয় ১০০,০০০, সাথে স্টালিন লেনিনের সাথে ঢুকে পরেন, আর ট্রট বাদ যায়!!!
এবং কি আশ্চর্য্য, আজ ও পশ্চিম বাংলার প্রতিটা কমিনিউস্ট সেই নভেম্বর বিপ্লবের মহানতায় বিশ্বাস করে যেখানে রাশিয়াতে এই ব্যাপারটা নিয়ে এখন হাঁসাহাসি হয়!
তাও লোকে মিথে, এই সব গল্পে কেন বিশ্বাস করে? কারন তাদের ধারনা মহম্মদ, যিশূ, লেনিন এরা ত গরিবের ভাল করতে এসেছিলেন, তাই এসব মিথ সত্য। যারা এগুলোকে মিথ্যে বলে প্রমান করার চেষ্টা করে, তারা "শত্রু"।
No comments:
Post a Comment