বাঙালি হিসাবে আদর্শবাদের সাথে পরিচয় ছেলেবেলা থেকে। মহান নেতাজী, রবীন্দ্রনাথ, স্বামী বিবেকানন্দ ইত্যাদির শ্রদ্ধাবাসর সম্পন্ন করে কৈশোর থেকে যৌবনে, জীবনযুদ্ধে নামতেই বাঙালী বাবা-মা রা স্বপরিচয়ে আবির্ভূত হন। ঘুঁশ না নিলেও, তখন দেখা যায় ঘুঁশ দেওয়া থেকে জীবনের নানা রকমারী কম্প্রোমাইজে তাদের আপত্তি ত নেই-বরং উনারা এটাকে স্বীকৃত সারভাইভাল গেম হিসাবে মেনে নেন। তারপরেও অনেকেই অনেক কিছু মানতে পারেন না-এবং বাঙালী মানস আদর্শবাদের ব্যাপারে একটা অদ্ভত দ্বিচারিতায় ভোগে। আমেরিকা বিরোধিতা, ইসলাম বিরোধিতা, হিন্দুত্ববাদ বিরোধিতা, গান্ধীবাদ বিরোধিতা, কংগ্রেস বিরোধিতা, বাম বিরোধি, এসি ঘরে বসে বাম ছাগলামি-অনেক কিছুই বিশুদ্ধ বাঙালী আদর্শবাদের লক্ষণ । এই মিমগুলো নিয়ে আমার আপত্তি নেই-মানুষের যৌত্বিক নির্মান বলতে কিছু হয় না। মানবিকতা ব্যাপারটা অনেকটাই সারভাইভাল স্ট্রাট্রেজি। আপত্তি শুধু একটা ব্যাপার নিয়ে- সেটা হচ্ছে এরা সবাই এদের নিজেদের পজিশনটাকে খুব যৌত্বিক ভাবেন-এবং মনে করেন এই বিরোধিতা না করলে পৃথিবী রসাতলে যাবে। বাপ্যারটা এমন-আমেরিকা, মুসলমান, বিজেপি, টাটা, সিপিএম, তৃণমূল, ইউনুসের মাইক্রোক্রেডিট-সবাই বাঙালীর পেছনে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে লম্বা আছোঁলা বাঁশ নিয়ে।
কিছুদিন আগে একটা ভাল খবর শুনলাম। সমাজ বিজ্ঞানের গবেষণাতে জানা গেছে বামেরা দুশ্চিন্তা করতে "ভালবাসে"। মানে যেখানে দুশ্চিন্তা নেই-সেখানেও দুশ্চিন্তা করাটা নাকি বামেরদের মাথাতে ইনবিলট। আর দক্ষিন পন্থীরা ফিল গুড ফ্যাক্তরে বিশ্বাসী। মানে আমেরিকা রসাতলে গেলেও উনারা মনে এটা ভেবে খুশী এটাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশ। ভারতের ৭০% লোক ঠিক ঠাক না খেতে পেলেও ইনারা শাইনিং ইন্ডিয়াতে বিশ্বাসী।
বামপন্থী এবং দক্ষিণপন্থীদের যারা বিলক্ষণ চেনেন-বা এদের হাতে ভুগেছেন-তারা নিশ্চিত ভাবে অবগত আছেন, এদের জগতের সাথে বাস্তবতার দূরত্ব বিস্তর কয়েক আলোকবর্ষ। বাস্তবতা বা রিয়ালিজমের সংজ্ঞায় সব থেকে গুরুত্বপূর্ন হচ্ছে পারসেপশন-বা জাগতিক অনূভুতি। সেই অনুভূতিটা যদি সত্যিকারের ভালোবাসার হয়, মানুষ আদর্শবাদের পাঁক থেকে এমনিতেই মুক্তি পায়। কিন্ত তার বদলে হাজারটা ভুল তথ্য এবং তত্ত্ব জোগার করে, নিজেদের পজিশনকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা- অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছাগলামি।
No comments:
Post a Comment