Friday, August 27, 2010

শোভা মান্ডিঃ মাওবাদিদের মুখ এবং মুখোশ

আমি মাওবাদিদের কারনের প্রতি সহানুভূতিশীল হলেও, তাদের পথের নিন্দা করেছি। ইতিহাসের শিক্ষা এটাই গণতন্ত্রের বিকল্প কাল ও ছিল না-আজ ও নেই। লেনিন বা মাও কেওই গণতন্ত্রকে হত্যা করে কোন সমাধান পৃথিবীকে দিয়ে যান নি-বরং ইতিহাসের অন্যতম নিষ্ঠুর অসভ্যতাগুলি কমিনিউস্টদেরই অবদান।


শোভামান্ডির আত্ম সমর্পন থেকে মাওবাদি নেতৃত্ব সম্মন্ধে যা জানা যাচ্ছে, তাতে অনেকে অবাক হলেও আমি হচ্ছি না। শোভামান্ডি বেশ কয়েকবার মাওবাদি পুরুষ নেতৃত্বের হাতে ধর্ষিত হওয়ার পরেও মাওদের শীর্ষ নেতৃত্ব তার অভিযোগ শোনে নি। শোনার কথাও না। কারন খাদ্য এবং যৌনতার দাবি সৈন্যদের না মেটাতে পারলে-পৃথিবীর ইতিহাসে কোন মিলিশিয়াই দাঁড়াত না। বলশেভিকদের লাল সৈন্যরা ১৯১৮ সালে রাশিয়ার গ্রামে গঞ্জে কৃষক মেয়েদের দেদার ধর্ষন করেছে। লেনিন কিঞ্চিত বিচলিত হয়ে এই ব্যাপারে ট্রটস্কিকে নোট পাঠালে, যে উত্তর আসে সেটা এই এরকম - সবই ত বুঝিত গুরু, কিন্ত লালবাহিনীর লোকেদের যদি এই ব্যাপারে একটু ছার দেওয়া না যায়-বিদ্রোহ হতে পারে। বুঝতেই পারছেন এরা আনেকদিন গৃহছারা (গৃহিনী)! কোন সন্দেহ নেই শোভামান্ডির বয়ান থেকে পরিস্কার ভাবেই বোঝা যাচ্ছে মাওদের শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাব ঠিক একই রকম!

আমার অনেক বন্ধুরাই মাওবাদির জন্যে নানান মিডিয়াতে গলা ফাটিয়েছে। কারন মাওরা সমাজের নীপিড়িত মানুষদের জন্যে নাকি লড়ছে। স্যার কার্ল পপারের দয়াতে একটা জিনিস আমার কাছে খুব পরিস্কার-পৃথিবীর বৃহত্তম গণহত্যাগুলি স্বর্গ স্থাপনের নামেই করা হয়েছে। তাই স্বর্গের ব্যাপারীদের আমি এমনিতেই ভয় পাই। ভারতে মেয়েরা এমনিতেই নিপীড়িত-অত্যাচারিত। প্রতি বছর এদেশে ৮০০০ নারী মারা যায় পণ প্রথার বলি হয়ে-আর কত মেয়েরা যে ঘরে অত্যাচারিত হয়-সেটা সংখ্যাতত্ত্বের আওতারও বাইরে। বেসিক্যালি সমাজ যায় হোক না কেন-ক্ষমতার শীর্ষে পুরুষ থাকা মানে মেয়েদের ওপর এই অত্যাচার চলতেই থাকবে। ধনতন্ত্রে টাকা দিয়ে নারীকে লুঠ করা হয়-আর কমিনিউজমে বন্দুকের নলের সামনে।

গণতন্ত্রের বিকল্প কালকেও ছিল না, আজও নেই। সেই পথ অনেক কঠিন। অনেক পরিশ্রম, অনেক অপেক্ষা করতে হবে। কিন্ত বন্দুকের নল কোন পথ না। হিংসা দিয়ে অতীতেও কোনদিন কোন সমস্যার সমাধান হয় নি-আজ় ও হবে না। স্টালিন ৩০ বছর ধরে অত্যাচারের যে স্টিমরোলার রাশিয়ান সমাজে চালিয়েছেন- তাতে কোন সমস্যাটার সমাধান হয়েছিল?

No comments: