Monday, April 19, 2010

বাম ভাবধারার জন্যেই পশ্চিম বঙ্গ রসাতলে যাচ্ছে

যে মানসিকতার জন্যে বাংলা উচ্ছন্নে গেছে, তার নাম, "আমার চাই"-চাই কিন্ত কি দিতে হবে বিনিময়ে সেটা নিয়ে কারুর হুঁস নেই।

এটি বামেদের আবিস্কার। আমি শোষিত, আমি নির্যাতিত-তাই আমি চাই। কি চাই সেটাও আমি জানি না-দু চারটে বাস পোড়ানো, অর্কুটে মহিলাদের প্রকাশ্যে ধর্ষনের ইচ্ছা করার বামবিপ্লব-ইত্যাদি সবই অধিকার। জন্মপ্রদত্ত। কারন বামবাঙালী মনে করে জন্ম হইতে সে পুজিপতি এবং বুর্জোয়া ভূতেদের দ্বারা বঞ্চিত হইয়াছে। লেনিনবাদ নামক যাবতীয় আধভৌতিক তত্ত্ব, যা ভারতীয় পুরাণগাথার সমতুল্য-তাই দিয়ে সমাজের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা - সমস্যাটার ১% না বুঝেই- আমাকে সত্যিই অবাক করে।

পৃথিবীর নানান দেশের সংস্কৃতি এবং নানান মানুষের সংস্পর্ষে আসার পরে, পরিস্কার করেই বলি-করণিক, শিল্পী, কবি, দাবা, তাস এবং খাদ্য রসনা- এই কটি ক্ষেত্রে বাঙালী অসাধারন। রবীন্দ্রসঙ্গীত ও আন্তর্জাতিক ভাবেই সেরা।

কিন্ত রাজনীতি, দর্শন এবং বুদ্ধিবৃত্তির চর্চায় বাঙালী ব্যার্থ।

যে ব্যাপারটা আমাকে অবাক করে-সেটা হচ্ছে এই-পৃথিবীর জ্ঞান ভান্ডার কোথায় এগিয়ে গেছে, আর এই বাম বাঙালীরা এখনো সব এঙ্গেলেস এবং লেনিনের রূপকথা চর্চা করতে ভালোবাসেন। সেই নিয়ে আগে অনেক লিখেওছি-সমাজবিজ্ঞানে কত শত আবিষ্কার হয়ে চলেছে-পৃথিবী কত দ্রুত বদলাচ্ছে-এরা এসব কিছু জানেও না -বোঝেও না। পশ্চিম বঙ্গে যারা বাম রাজনীতির চর্চা করে তাদের মতন মাথামোটা এবং আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানে অজ্ঞ পৃথিবীতে অতুলনীয়। প্রভাত পট্টনায়েকের মতন দর্শন শাস্ত্রের একজন বিরাট গোল যাদের শীর্ষ তাত্ত্বিক-তাদের নিয়ে হাসাহাসি করা ছাড়া আমার উপায় নেই। সিপিআই এম এল সাইট তাও মন্দের ভাল- ওদের একটা লাইন আছে, যা আনকম্প্রোমাইজিং। ওদের সমাধানে ভুল আছে, অবজারভেশনে ভুল নেই। ভারতীয় গণতন্ত্রে ওই সমস্যাগুলো নিয়ে কোন রাজনৈতিক দলই মাথা ঘামায় না। নক্সালপন্থী দলগুলির প্রতি আমার শ্রদ্ধা এই জন্যেই আছে যে বাকীদলগুলি যেখানে দালালরা চালাচ্ছে-এবং যার জন্যে জনগণের সমস্যাটা উঠে আসছে না-সেখানে ওরা ফোকাস করতে পেরেছে। ওদের সমাধান ভুলভাল-কিন্ত এই সমস্যাগুলো কেন গণতন্ত্রে উঠে আসবে না?

কেন প্রতিটা পার্টি ব্যাবসায়ীদের দালালে পরিণত হবে?

রাজনীতিতে সবার প্রভাব থাকবে-সেটাই সার্থক নীতি। ছোট বড় সব ব্যাবসা, শিক্ষক, চাষী, শ্রমিক সবার স্বার্থ দেখার জন্যেই গণতন্ত্র।

যে গণতন্ত্র আমরা পেলাম তা স্বার্থ দেখে সরকারী চাকুরে আর বড় ব্যাবসায়ীদের। তাদেরই সব 'সে'। বাকী ছোট ব্যাবসায়ী চাষি লেবার এই গণতন্ত্রে কেও না!!! চাকুরেদের 'সে' আছে কারন, তারা সব পার্টির শীর্ষ পদগুলো দখল করে বসে আছে। আর ব্যাবসায়ী দের আছে কারন তারাই টাকা দিয়ে দল চালাচ্ছে। বাকীদের জন্যে এই গণতন্ত্র কিছু রাখে নি।

এমন নয় যে এটা কেও বোঝে না। রাহুল গান্ধী অনেক বার এই কথা বলেছেন। নক্সালরা বাদ দিয়ে বাকী পার্টিগুলো এই নিয়ে ভাবার সময় ও পায় না। তারা মস্তান আর টাকা নামিয়ে ভোট গুণতেই ব্যাস্ত। কিন্ত এইভাবে কতদিন একটা বৃহত্তর অংশকে বাদ দিয়ে গণতন্ত্র চলবে?

কিন্ত এর জন্যে বাম বা ডান কোন পন্থী আন্দোলনেরই দরকার নেই। দরকার ছিল গণতন্ত্রের খোল বদলানো। সেটা নিয়ে কারুর কোন ভাবনা নেই।

No comments: