Sunday, August 4, 2013

গোপাল পাঁঠার পুনরুত্থান,বামেদের গোরস্থান

শেষে এদিনও এল। কোলকাতা, বাম বাঙালীর গর্বস্থানে গোপাল পাঁঠার জন্মদিন পালন হবে মহাসমারোহে-আর ইলামিত্র, যিনি আদিবাসি আন্দোলনের প্রবাদ প্রতিম নেত্রী, তার জন্মদিন ত দূরের কথা, বামপন্থী ছেলেগুলো, তার নাম জানে কিনা আমার সন্দেহ আছে।

কোন সন্দেহ নেই বাম স্যোশাল মিডিয়া হিন্দুত্ববাদিদের দখলে চলে গেছে। তার মানে বিজেপির দিকে ভোট গেছে তা না -অনেক হিন্দুত্ববাদি মোমোকেই ভোট দেয়-চাল ডাল চাকরি রেশনের সমস্যা। তবে সেই জন্য লিখছি না -স্যোশাল মিডিয়াতে বামেরা একদম ধরাশায়ী। সেরকম গুনী মানী বাম লেখক, চিন্তাবিদ স্যোশাল মিডিয়াতে কোথায়? যারা আছে তারা হয় খিস্তিবাজ নইলে বামতোতা- পৃথিবী ধ্বংস হলেও, সেই একই দুনিয়া কাঁপান ১০ দিনের রূপকথাকে সত্য জেনে ধুপধূনো দেয়। আর এদিকে, লালশালুমোড়া বামপন্থায় মস জমতে জমতে ভারতের রাজনীতিতে বামেদের ভোট ৪% থেকে নেমে ২ এর কাছাকাছি চলে আসে। মমতা না ছড়ালে ওটা কেরালাতেই সীমাবদ্ধ থাকত ।

বামেদের হিন্দুবিরোধি কিন্ত মুসলিম মৌলবাদের প্রতি মৌনতা যে উঠতি হিন্দু যুবকদের থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন করে দেবে, সেটা আমি ৪ বছর আজ্ঞে একটা প্রবন্ধে লিখেছিলাম। ওরা তখন পাত্তা দেয় নি-কারন সেই চাল ডাল চাকরির লোভে এই সব চাপা হিন্দুত্ববাদিরা এস এফ আই এ নাম লিখিয়েছিল। তাই বোঝে নি। আজ যখন সেই চাল ডাল চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেয়-দেখা যাচ্ছে দলে দলে উঠতি হিন্দু বাঙালী যুবকরা দক্ষিন পন্থি হিন্দুত্ববাদে নাম লেখাচ্ছে। এটা যে হবে আমি পাঁচ বছর আগে লিখেছিলাম।


[সোমক ফেসবুকে একটা ভাল পোষ্ট দিয়েছে। দেখুন দুরাবস্থাটাঃ সোমকের পোষ্ট থেকে
-------------------------------------
বামপন্থার পতন এর পক্ষে
সিপিআই+সিপিএম ভোট% এবং আসন
১৯৫১- ৩.২৯(১৬)
১৯৫৭- ৮.৯২(২৭)
১৯৬২- ৯.৯৪(২৯)
১৯৬৭- ৯.৩৯(৪২) (সেই বার প্রথম সিপিএম আলাদা লড়ে যাই হক আমি সিপিএম এবং আই দের ভোট যোগ করে লিখছি)
১৯৭১- ৯.৮৬(৪৮)
১৯৭৭- ৭.১২(২৯)
১৯৮০- ৮.৭৩(৪৭)
১৯৮৪- ৮.৫৮(২৮)
১৯৮৯- ৯.১২(৪৫)
১৯৯১- ৮.৬২(৪৯)
১৯৯৬- ৮.০৯(৪৪)
১৯৯৮- ৭.১৫(৪১)
১৯৯৯- ৬.৮৮(৩৭)
২০০৪- ৭.১০(৫৩)
২০০৯- ৬.৭৬(২০)
কাজেই এই হিসেব দেখে কি বুঝলেন? একসময় এর প্রায় ১০% ভোট থেকে কমে আজ আপনারা ৬-৭ এর গণ্ডীতে খাবি খাচ্ছেন যাই হক একটা জিনিস নিশ্চয়ই দেখবেন যে ভোট কমা সত্ত্বেও ১৯৮৪ বাদ দিয়ে ১৯৮০-২০০৪ বামরা প্রত্যেক বার ৪০ এর বেশি আসন পেয়েছে। কেন জানেন? অই সময় গোটা দেশে যখন আপনারা উবে যাচ্ছিলেন তখন পশ্চিমবঙ্গ আপনাদের দরাজ হস্তে ৪২ এর ভেতর ৩০-৩২ টা করে আসন দিচ্ছিল। তাই আসন কমেনি কিন্তু গোটা দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ভোট কমেছে। আপনাদের মোট আসনের ৬০-৭০% জুটিয়েছিল বাংলা। আগে কিন্তু এমন ছিল না মোটামুটি গোটা দেশে বামরা লড়তেন এবং সব রাজ্যেই অন্তত একটা দুটো বিধানসভা বা লোক সভা জেতার ক্ষমতা আপনাদের ছিল। তাই বাংলার পতন হতেই সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে আপনারা উবে গেলেন ভোট তো আগেই গেছিল আসন সংখ্যাও গেল। বাংলা পুনরুদ্ধার না করতে পারলে আপনারা মোদ্দা কথায় ফিনিস
_______________________

Somnath Roy ৫১ থেকে ৫৭র মধ্যে ভোটটা বেড়েছিল কেন?
_____________

Somak Chaudhury কয়েকটা রাজ্যে আগে বাম কি ছিল এখন কি হয়েছে-
বিহার- বিহারে সিপিএম এর থেকে সিপিআই বরাবর বেশি শক্তিশালি। সিপি আই বিহারে একসময় নিজের শক্তি তে ৩০ টা বিধানসভা একা লরেও জিতেছে। প্রতিবার ৫-৬ টা করে লোক সভা আসন জিতত আজ? সিপি আই এর বিহারে বিধায়ক-১ ভোট ২% সাংসদ-০
সিপিএম ২-৩ টে করে লোকসভা আসন জিতত। ভাগলপুর এ অনেক বার জিতেছে। পুরনিয়ার অজিত সরকার বিখ্যাত বিধায়ক ছিলেন।
বেগুসরাই ছিল নাকি বিহারের লেনিনগ্রাড। আজ বিহারে সিপিএম ০
আসাম- আসামে বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় সিপিএমের বিশাল প্রভাব ছিল। শিলচর এবং বরপেতা লোকসভা আসনে বামেরা অনেকবার জিতেছে। সিপিএম ২-৩ জন করে সাংসদ পেত এককালে ওখান থেকে। আর আজ???? আসামে বামেদের সাংসদ ছেড়ে দিন মোট বিধায়ক???? রসগোল্লা শিলচরে জামানত জব্দ হয় তাদের
মহারাষ্ট্র- জানেন একসময় বাল ঠাকরের উত্থানের আগে মুম্বই তেও বামেরা লোক সভা আসন জিতেছে? অবাক??? ঢপ? আজ্ঞে না সত্যি জিতেছে একসময় মহারাষ্ট্রে ২০ টা বিধানসভা জেতার ক্ষমতা ছিল বামদের আর আজ? সবেধন নীলমণি একজন সিপিএম বিধায়ক পড়ে আছেন তিনিও মনে হয় ২০১৪ এ হেরে যাবেন তবে আসামের মত এখানেও ষোল কলা পূর্ণ হবে।
অন্ধ্র- একসময় তেলেঙ্গনায় কংগ্রেস এর মুল প্রতিপক্ষ ছিল বামরা অন্ধ্র থেকে বহু বিখ্যাত বাম নেতা উঠে এসেছেন। একা লড়ে ২-৩ টে লোকসভা আসন জেতার ক্ষমতা তাদের ছিল। অন্ধ্র বিধানসভায় ১০ এর কম বিধায়ক বামরা কখনও পাঠায় নি। আর আজ? ক্রমাগত তেলেগু দেশম এর সাথে জোট করে বামদের নিজেদের ভোট ব্যাংক ই কমে গেছে ১৯৯৯ এ একা লড়ে সব কেন্দ্রে জামানত হারায় বামরা। তারপর বুদ্ধি খোলে একবার কংগ্রেস একবার টিডিপি র সাথে বামরা জোট করে লড়ে (এরা আবার আদর্শর কথা বলে? ) তাও জোট করেও আগের লোকসভায় একটাও জেতেনি। বিধানসভায় ৫ টা বিধায়ক পড়ে আছে।
আর কত উদাহরন দেব? তামিলনারুতে বামরা একবার করুনা আর একবার জয়ার ঘাড়ে চেপে ২-৩ টে আসন পায়... উত্তর প্রদেশে মুছে গেছে... সেখানে এলাহাবাদেও সিপিআই এককালে লোকসভা জিতেছে জানেন!!!! কাশ্মীরে একটা বিধায়ক পড়ে আছে। মধ্যপ্রদেশে অনেক দিন অব্দি ১ টা ছিল ২০০৯ এ সেও হেরে গেছে। গোটা দেশ থেকেই আজ বামরা অবলুপ্ত হতে চলেছে। পাঞ্জাবেও বাম রা আজ ০। গুজরাটে আহমেদাবাদে জ্যোতি বসু সিটুর বড় সভা করে গেছেন এখন ওখানে বামরা ১ টা আসনে কোনমতে প্রার্থী দেয় আর তারও জামানত জব্দ হয়।
ইসস অনেক সত্যি কথা বলে ফেললাম সরি




]

এই মুহুর্তে দুটো জিনিস না করলে বামেরা তরুন শ্রেনীর কাছ থেকে ধুয়ে মুছে যাবে.

(১) লেনিনবাদ-স্টালিনবাদ ত্যাগ করে ল্যাটিন আমেরিকার মাটির কাছাকাছি প্রকৃতিবাদি বামপন্থাকে গ্রহণ করা- আজকের ইন্টারনেটের যুগে ওই দুই বিশ্ববিখ্যাত ক্রিমিন্যালের নামে কমিনিউস্ট রূপকথাগুলোকে বিশ্বাস করার মতন কেও নেই। এটা বুঝতে হবে। ইকুয়েডের প্রেসিডেন্টের মতন কেও ত বলুক নতুন বামপন্থা শুরু হোক পরিবেশকে বাঁচাতে-এইসব শ্রেনীতত্ত্ব, বিপ্লব, শ্রেনী সংগ্রামের ফাজি লজিকের দুনিয়া ছাড়িয়ে ল্যাটিন আমেরিকাতে বামেরা কোয়াপরেটিভ মার্কেট এবং কমিউনিটি ব্যাবসা, ব্যাঙ্কিং এর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমেরিকাতেও বামেরা কমিউনিটি ব্যাঙ্কিং, কমিউনিটি শিক্ষা ও স্বাথ্যর ওপর জোর দিচ্ছেন। সেখানে কিন্ত ধনতন্ত্রের ভাল দিকগুলি যথা বাজার, প্রতিযোগিতা, উৎপাদন ব্যাঙ্কিং ইত্যাদির মাধ্যমেই বামপন্থাকে খোঁজা হচ্ছে। সেখানে মালিকানা বদল করে কমিউনিটির হাতে মালিকানা তুলে দিয়ে বা কমিউনিটিকে ঋণ দিয়ে কমিউনিটির ক্ষমতায়নের মাধ্যমে, জনগনের ক্ষমতায়ন হচ্ছে। ল্যাটিন আমেরকাতে রাফেল করিয়া লেনিন, স্টালিন শ্রেনী তত্ত্ব ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে যেভাবে ধণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্যে কমিউনিটিকে এনে সাধারন মানুষের উৎপাদনশীলটা, রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং পরিবেশ রক্ষা করছেন। সেখানে শ্রমিক ধর্মঘটের প্রয়োজন হয় না শ্রমিকের ক্ষমতায়নের জন্য।

কিন্ত হায়-কাদের জন্য এ কথা- বাংলার বামেরা কেও বামপন্থী না -সব বামতোতা। এদের মধ্যে নেতা আর কে বেঁচে আছে, যার মধ্যে থেকে একজন হুগো শাভেজ বা রাফেল করিয়া বেড়বে?

বিমান বোস সূর্য্য কান্ত বুদ্ধদেব এরা তোতাকাহিনীর নামগোত্রহীন তোতা-এদের মুখ থেকে শুধু খসখসে কাগজ খাওয়ার শব্দ বের হয়। এদের দিয়ে কোন যুবকশ্রেনীকে উৎসাহিত করা সম্ভব না 

(২) ইসলামিক এবং হিন্দু মৌলবাদের বিরুদ্ধে সমান শক্তিশালী অবস্থান নিতে হবে- শুধু হিন্দুত্ববাদিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে, সেটা রাজনৈতিক সুবিধাবাদ ছাড়া অন্য কিছু না। এই রাজনৈতিক সুবিধাবাদের জন্য ইউরোপের রাজনীতি বামেদের হাত থেকে ইসলাম বিরোধি দক্ষিনপন্থী শক্তিগুলির হাতে চলে যাচ্ছে বা গেছে। এটা পশ্চিম বঙ্গে সময়ের অপেক্ষা মাত্র। যেভাবে বাম আমলে মুসলিমদের মধ্যে প্রগতীশীলতার বদলে লুঙি,বোরখা, মাদ্রাসা আর হজের চাষ হয়েছে, তাতে কোন সুস্থ মাথার হিন্দু পরিবারের ছেলে এই বিশ্বাস রাখে না যে এইসব বামেরা ইসলামিক মৌলবাদের থেকে তাদের বাঁচাতে সমর্থ হবে। এবং ইসলামিক মৌলবাদের সমস্যাটা বাংলাদেশ পাশে হওয়ার কারনে পশ্চিম বঙ্গে বেশ বাস্তব। এই নিয়ে আমি আগে লিখেও ছিলাম।

http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=353

guruchandali te ei niye alochona:
https://www.facebook.com/groups/guruchandali/permalink/629547337063216/

No comments: