মাওবাদের সাথে ভারতের বর্তমান গনতন্ত্রের লড়াইকে এই ভাবে একলাইনে সামারাইজ করলাম। বর্তমান কাঠামোতে কোন সন্দেহ নেই-রাজনীতিবিদদের একটা বড় অংশই ব্যাবসার দালালি করে-কিন্ত মনমোহন বা রাহুল গান্ধীর মতন কয়েকজন অবশ্যই উন্নত ভবিষ্যতও চিন্তা করেন। সব থেকে বড় কথা এই সিস্টমে রাজনীতিবিদরা দালালির মাত্রা ছাড়ালে-তাদের পরিবর্তবনের ব্যাবস্থা আছে। এবং জনগন তাদের শাস্তিও দিয়ে থাকেন। কর্পরেট আদিবাসিদের জমি কাড়ছে-এটা প্রচারে অন্তত ভারতে বাধা নেই। অরুন্ধুতি সরকারের বিরুদ্ধে মিডিয়াতে মুখ দেখাতে পারেন। আমাদের নকুকুল খুনী মাওবাদিদের সাফাই গাইতেই পারে। মাওবাদিদের সমর্থনে [ আদিবাসিদের বকলমে] জমায়েত সব শহরে হতে পারে। এতে আমি গর্বিত। কারন গণতন্ত্রে এটা না হলেই কর্পরেট জাঁকিয়ে বসত। অরুন্ধুতি রায়রা আছেন-তাদের নাটক দেখে আমি নিশ্চিত হয়, আমাদের গণতন্ত্র কাজ করছে।
কিন্ত মাওবাদিরা যে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা চাইছেন সেটা কেমন হবে?
কিউবাতে ইন্টারনেট সার্ফ করতে লাইসেন্স লাগে। অনুমতি না নিয়ে কেও ইন্টারনেটে ঢুকলে সে দেশে জেলাদেশ হয়। চীনে সোশাল মিডিয়া প্রায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জমায়েত, মেইন স্ট্রিম মিডিয়াতে অরুন্ধুতির সরকারি বিরোধি নাটক-এসব কোন দিন চীন বা কিউবা করতে দেবে?? স্টালিন রাশিয়ার ৫০০ আদিবাসি সম্প্রদায়কে নিজেদের বাসভূমি থেকে সম্পূর্ন উচ্ছেদ করে সাইবেরিয়াতে পাঠিয়েছিলেন-কারন মধ্য এশিয়াতে তার তেলের দরকার ছিল। ওখানে রাষ্ট্রের দরকার ছিল-এখানে কর্পরেটদের দরকার। ওখানে ওরা প্রতিবাদ করেছিল বলে আদিবাসি গোষ্টি গুলিকে চিরতরে নির্বাসিত করেন স্টালিন। চীনেও উন্নতির নামে প্রতিদিন আদিবাসিদের উচ্ছেদ হচ্ছে। মিডিয়াতে চীনের কোন খবর আসে? আছে কোন অরুন্ধুতি রায় চীনে??
সুতরাং গনতন্ত্রে যতই দালাল থাক, তা কমিনিউস্ট খুনী দৈত্যদের থেকে শতগুনে ভাল। অনেকেই মাওবাদিদের প্রতি সহানুভুতিশীল কারন তারা আদিবাসিদের অধিকার রক্ষা করতে চাইছেন। সেটা ভাল কি? চীন এবং সোভিয়েত ইউনিয়ানে কমিনিউস্ট জমানাতে আদিবাসিদের কি হাল হয়েছিল বা হচ্ছে জেনে নিন। তাহলেই মাওবাদিরা আদিবাসিদের অধিকার রক্ষা করবে-এমন ভাঁও সুলভ স্বপ্ন থেকে মুক্ত হবেন।
আদিবাসিদের অধিকার রক্ষা করা আমাদের পবিত্র কর্তব্য। কিন্ত তা গণতান্ত্রিক এবং আইনের পথেই করা সম্ভব। তাতেই আন্দোলনের জনভিত্তি বাড়বে। এর জন্যে দৈত্যদের ডেকে লাভ কি?
No comments:
Post a Comment