মনে হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রিপ্লে দেখছি টিভিতে!
১৫ই মার্চ, ১৯৩৯। জার্মান ভেহেরমার্ক চেকোস্লোভাকিয়া দখল করতে ঢুকে গেল। তার এক বছর আগে চেকোস্লোভাকিয়ার সুদেতানল্যান্ডে জার্মানরা বসবাস করে বলে, আগেই সেখানকার জার্মান সেপারিটিস্ট পার্টিকে দিয়ে, চেকোস্লোভাকিয়ার পশ্চিমদিকটা জার্মান প্রভাবিত অঞ্চল করে রেখেছিলেন হিটলার। ঠিক যেমন ইউক্রেনের পূর্বে রাশিয়ান সেপারিস্টদের দিয়ে ডনবাস্ক এবং লুহ্যান্সকে নিজের কব্জায় আগেই এনে ফেলেছেন পুতিন। এরপর যখন চেকোস্লোভেকিয়ায় জার্মান সৈন্য মিউনিক চুক্তি অগ্রাহ্য করে ঢুকে গেল - ফ্রান্স, বৃটেন লিপ সার্ভিস দিচ্ছিল। ঠিক এখন যেমন আমেরিকা, বৃটেন, জার্মানরা ইউক্রেনকে "মরাল" সাপোর্ট দিচ্ছেন- অথচ বুদাপেস্ট চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমন করতে পারে না! ইউক্রেন আক্রান্ত হলে আমেরিকা এবং বৃটেনের ইউক্রেনকে সাহায্য করার কথ! কিন্ত কিয়েভ আস্তে আস্তে রাশিয়ার সৈন্যদের দখলে চলে যাচ্ছে! ঠিক যেভাবে চেকোস্লোভাকিয়া হিটলারের তলপেটে চলে গেছিল---
একদম ওয়ান টু ওয়ান রিপ্লে!
মনে রাখতে হবে ১৯৯১ সালে যখন ইউক্রেন তার নিউক্লিয়ার সম্ভার রাশিয়ার হাতে তুলে দেয়-তখন চুক্তি ছিল (বুদাপেস্ট মেমোরান্ডাম) , রাশিয়া কোনদিন ইউক্রেন আক্রমন করবে না। আর যদি রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমন করে আমেরিকা, বৃটেন ইউক্রেনকে সাহায্য করবে। ইউক্রেনে সোভিয়েত ইউনিয়ানের ৩০০০ নিউক্লিয়ার মিশাইল ছিল, যা ইউক্রেন আমেরিকা এবং রাশিয়ার গ্যারান্টি পেয়ে, রাশিয়ার হাতে তুলে দিয়েছিল!
"আগে একসাথে ছিলাম তাই অন্যকোন শক্তির সাথে মিত্রতা চলবে না- এই যুক্তিতে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমন বৈধতা পেলে----
চীনের তাইওয়ান দখল ও বৈধতা পাবে--
ভারত স্বাচ্ছন্দ্যে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ দখল করতে পারে---
মোদ্দা কথা এর শেষ কোথায়? সুইডেন, ফিনল্যান্ড ও নেটোতে যোগ দিতে চাইবে এবার-এরাও রাশিয়ার বর্ডারে। পুতিন কিভাবে তার বর্ডারে নেটোকে আটকাবেন? সুতরাং বর্ডারে নেটো-একটা ছেঁদো যুক্তি! ১৯৯৫ সালে রাশিয়া নিজেই নেটোতে যোগ দিতে চেয়েছিল!
পুতিনের ভরসা আগ্রাসী চীন। আগে যেমন হিটলার জার্মান সহদর হিসাবে আগ্রাসী জাপানকে পেয়েছিল, এখন পুতিন চীনকে পাশে পাচ্ছেন। সাথে, ইরান, কিউবা, ভেনেজুয়েলার মতন কিছু স্বৈরতৈন্ত্রী রাষ্ট্র। মুশকিল হচ্ছে বর্তমানের চীন , চল্লিশের জাপান না! তাদের বেস সেই জাপানের থেকে অনেক বেশী-লোকবল, সৈন্যবল, শিল্পবল সব কিছুই অনেক অনেক বেশী--
বেসিক্যালি, পুতিন সফল হলে সব থেকে বড় ব্যথা তাইওয়ানের। চীন যেকোন দিন তাইওয়ান দখল করে নিতে পারে। চীন অরুনাচল প্রদেশ, লাদাখ দখল করতে পারে। কাশ্মীর দখল করে পাকিস্তানকে দিয়ে দিতে পারে। এসব কিছুই বৈধতা পেয়ে যাবে!
আর এসবের মানেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
ইউক্রেনে পুতিনের সৈন্যদের সম্পূর্ন পরাজয় না হলে, গোটা বিশ্বজুরে যুদ্ধ লাগবে। গায়ের জোর যদি আন্তর্জাতিক লজিক হয়, বিশ্বযুদ্ধ কেই আটকাতে পারবে না।