Tuesday, March 29, 2022

বাংলার বুদ্ধিজীবি !

 অনেকদিন আগে একটা জোক্স শুনেছিলাম। কুকুরের থেকে বেশী  প্রভুভক্ত প্রানী চান? 

 তাহলে বাঙালী বুদ্ধিজীবি পুষে দেখতে পারেন। প্রায় গ্যারান্টি! 

 রাজকবির রামপুরহাট বেদনা কাব্য পড়ে সেটা আবার কেন যেন মনে হল। কবি কিসুন্দর নিরেপেক্ষ অরন্যে রোদন করতে পারেন! ঠিক যেমন ভারত রুশো-ইক্রেন যুদ্ধে বলছে এত রক্ত, এত হিংসা বন্ধহোক! ভারত এবং রাজকবি-কারুর অবস্থানই আমি বুঝতে পারি নি! তবে মহাভারতে কৃষ্ণ বুঝেছিলেন। ভ্রাতা বলরামকে বকেছিলেন-ধর্মযুদ্ধে অমন যুদ্ধ চাইনা শান্তি চাই টাইপের সুবিধাবাদি অবস্থান আসলে কাপুরুষ সুবিধাবাদের সহস্রলক্ষণ। 

ইউক্রেন রাশিয়া আক্রমন করে নি। রাশিয়ার একটা লোককেও মারে নি। পুতিন ইউক্রেনে তান্ডবযজ্ঞ চালাচ্ছে। নিরীহ লোক মেরেই চলেছে। এই অবস্থায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান না নিয়ে যুদ্ধ না শান্তি চাই বলা- আর সুবিধাবাদ একই জিনিস। ঠিক একই কথা বলা চলে রামপুরহাট প্রসঙ্গে।  গত ৪০ বছরে পশ্চিম বঙ্গে এই ধরনের নির্মন রাজনৈতিক এবং সামাজিক খুনোখুনী ভারতে সব থেকে বেশী? কেন? কারন অর্থনীতি বসে গেছে। বামপন্থায় বিশ্বাস করে যেভাবে ভেনেজুয়েলা থেকে গ্রীস ভোগে গেছে, বাংলাও তাই। ফলে ইঁট সুরকি বালির তোলাবাজি এবং তার থেকে নেতা পুলিশের বাটোয়ারা হচ্ছে জনসাধারনের বেঁচে থাকার অন্যতম পথ। দিদি আসার পর বাংলার অর্থনীতিতে কিছুটা রক্ত সঞ্চার হলেও , উনি এই সিন্ডিকেটকে ধ্বংস করতে পারেন নি-বা চান নি। 

আমি চাই দিদি আরো ভাল করে বাংলা চালান। কারন তার পার্টীই বাংলার একমাত্র স্বাধীন পার্টী। বাকি সবাই তাদের দিল্লীর নেতাদের কথায় ওঠবোস করা নন্দকিশোর। আর সেটা চাই বলেই মনে করি রামপুর হাটের ঘটনা থেকে এটা পরিস্কার হওয়া উচিত, পুলিশ-সিন্ডিকেট-পার্টি, এই নেক্সাস দিদি ভাংতে না পারলে, আরো রামপুরহাট ঘটবে। এবং এটা উনার প্রশাসনের ব্যর্থতা।  এটা যত দ্রুত স্বীকার করে, সিন্ডিকেটগুলো ভেঙে দেওয়া যায় তত উনার ভাল। উনি এমনিতেই জিতবেন। ২৯৩-০ করে লাভ নেই।  সেটা পশ্চিম বঙ্গ, উনার নিজের, তৃনমূলের সবার জন্য খারাপ। 

 কবির নির্মল হৃদয় কাঁপবে, কিন্ত অন্নদাত্রীকে সিন্ডিকেট ভাংতে ডাক দেওয়ার দম তার নাই! 

 আরো খারাপ লাগে আনন্দবাজারের আপ্রান প্রচেষ্টা বাংলার বুদ্ধিজীবিদের জাতে তোলার জন্য! আজ সকালে অভিনেত্রী ঋতুপর্নাকে ইন্ডিগো ফ্লাইটে উঠতে দেয় নি বলে ( নির্ধারিত সময়ের পরে গেটে পৌছালে একমাত্র এয়ার ইন্ডিয়া ছাড়া বাকি কোন এয়ার লাইন্সই ছাড়বে না) তার ফেসবুক পোষ্টের ওপর আনন্দবাজার খবর করেছে!  যদিও স্যোশাল মিডিয়াতে পাবলিকই ওই ভুলভাল ইংরেজিপোষ্টের বিরুদ্ধে সঠিক উত্তর দিয়েছে-যে এরপরে তারা ইন্ডিগোর ওপর আরো বেশী ভরসা রাখবে।  ডিসিপ্লিনের জন্য যারা সেলিব্রিটিদের রিজেক্ট করতে পারে, তাদের কম্যান্ড এন্ড কন্ট্রোল অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য। এই ঋতুপর্নাই যখন তার প্রেমিক রোজভ্যালির কর্নাধার গৌতম কুন্ডুর সাথে জনগণের কোটিকোটি টাকা মেরেছে, আনন্দবাজার চুপ ছিল।  

 অভিনেত্রীর কান্না এবং তার আনন্দবাজারীয় এমপ্লিফিকেশন জনগন যেভাবে রিজেক্ট করল, সেটা থেকে আশাকরি অভিনেত্রী এবং আনন্দবাজার দুই পক্ষই বুঝবেন দিনকাল বদলাচ্ছে।  বুঝবেন কেন প্রেসিডেন্ট  জেলেনাক্সি সাধারন টিশার্ট পরে, সব থেকে জনপ্রিয় নেতা হয়ে গেলেন। কারনে উনি অভিজ্ঞ কৌতুকনেতা এবং জানেন মিডিয়াকে কিভাবে ম্যানুপুলেট করতে হয়। তার উপায় একটাই। আজকের দুনিয়াতে সবাই কমন ম্যানের মধ্যেই এক্সট্রাওর্ডিনারি ম্যান দেখতে চাইছে !  লোকে সেলিব্রিটিদের থেকে দূরে থেকে সাধারন মানুষের অসাধারন হয়ে ওঠার গল্প শুনতে চাইছে। 



No comments: