Tuesday, October 28, 2014

হিন্দু মুসলিমদের মধ্যে পারিবারিক, সামাজিক আদানপ্রদান কতটা ভারতে?

স্মৃতির গহ্বরে হানা দিতেই,  এক ভয়ংকর সত্যের সম্মুখীন আমি। কোনদিন ভাবিই নি হয়ত। আচ্ছা ভারতে এই যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বুলি কপচানো হচ্ছে-এই প্রশ্নটা কেও করেছে?

 হিন্দু মুসলিমদের মধ্যে পারিবারিক, সামাজিক আদানপ্রদান কতটা ভারতে?

  আমার নিজের তথ্যটা দিই আগে।  আমি ভারতে ছিলাম জীবনের প্রথম সাতাশ বছর । এই সাতাশ বছরে কোনদিন কোন মুসলিম গৃহে খানাপিনা করার সৌভাগ্য হয় নি। তবে বাবার বন্ধুদের অনেকেই মুসলিম ছিলেন। তাদের আমাদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল নিয়মিত। কিন্ত আমার ঘনিষ্ঠ সার্কলে কোন মুসলিম ছিল না । কারন এই নয় যে আমি মুসলিমদের  এড়িয়ে চলতাম। আসলে আমাদের করিমপুরের হাইস্কুলে বা নরেন্দ্রপুরে বা আই আই টি খরগপুরে মুসলিমদের মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজতে হত। আই আই টিতে মুসলিমদের অধিকাংশই আবার বাংলাদেশ না হলে মধ্য প্রাচ্যের।

অথচ আমেরিকাতে যদ্দিন আছি-আমার সংখ্যাগরিষ্ঠ কাছের বন্ধুরা বাংলাদেশের মুসলিম। আমাদের প্রায় প্রতি সপ্তাহে একসাথে খানাপিনা, পার্টি চলতে থাকে।

কিন্ত আমার এখন ভাবতে অদ্ভুত লাগে। করিমপুরের আশে পাশের গ্রামগুলোতে প্রায় ১০০% মুসলিম। আমার বাবাও একটি মুসলিম অধ্যুষিত স্কুলেই শিক্ষক ছিলেন । কিন্ত মুসলিমরা পারিবারিক বা সোশাল সার্কেলে আসবে কি করে?  আমাদের ওই  গঞ্জ শহরেও কেও মুসলিমদের ঘর ভাড়া দিত না । দিত এক বিধবা মহিলা-যার দিন চলত ঘর ভাড়া থেকে। সে দিত। কারন মুসলিমদের ঘর ভাড়া দিলে ২৫% বেশী ভাড়া পেত। এত করুন অবস্থা, ভাবতেই খারাপ লাগে।

আজকে মুসলমানদের যখন চারিদিকে দেশদ্রোহি বলা হচ্ছে, হিন্দুরা কি কেও একবার ও ভেবেছেন-তারা দেশের মুসলমানদের কিভাবে "ট্রিট" করেন? এই ট্রিটমেন্টের পর সামাজিক সম্প্রীতি বা দেশভক্তি কি করে কেও আশা করে সেটাও আমার মাথায় ঢোকে না । এসব যখন ভাবি তখন মনে হয় দেশভাগ হয়ে ভালো হয়েছে।  কারন অধিকাংশ হিন্দু মুসলমানদের প্রাপ্য মানুষের সন্মান দেয় নি। যেসব হিন্দু ফ্যামিলি নিজেদের উঠোনে নমঃশুদ্র দেখলেই ফিস্ফাস করে, তারা মুসলমানদের কি সন্মান দিত সেসব ভাবলেও আঁতকে উঠি।

 ইসলাম নিয়ে আমার কোন ইল্যুশন নেই । কোন ধর্ম নিয়েই নেই।  একবিংশ শতাব্দিতে এসবের কোন দরকার আছে বলে মনে করি না । আধ্যাত্মিক জ্ঞানের জন্য, যদি লাগে, গীতা কোরান বাইবেল ত্রিপিটক আধুনিক দর্শন রবীন্দ্রনাথ নজরুল, কার্ল মার্ক্স- সব আছে-প্রানখুলে পড়লেই হল। তার জন্য হিন্দু মুসলমান হওয়াটা অপ্রয়োজনীয় এবং ক্ষতিকর । ক্ষতি অনেক হইয়েই গেছে-এখন মানুষ তার এই অপ্রয়োজনীয় ধর্মীয় লেবাসটা যত তারাতাড়ি খুলতে পারবে, ততই মঙ্গল।

Sunday, October 26, 2014

সবই ব্যাদে আছে!

প্রখ্যাত বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা একবার বিরক্ত হয়ে বলেছিলেন-সবই ব্যাদে আছে! মানে বেদে আছে!! কারন কোন এক তর্কালঙ্কার পন্ডিত তাকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন তড়িৎচুম্বক বল থেকে নিউক্লিয়ার বল-সব কিছুই নাকি মহাভারতের যুগে পন্ডিতরা আবিস্কার করে বসে ছিল! মেঘনাদ সাহা গবেষনা করে কি আর বিশেষ ছিড়ছেন-এই হচ্ছে বক্তব্য!!

    নরেন্দ্র মোদি কোন তর্কালঙ্কার পন্ডিত নন । তিনি ভারতের ক্রান্তিবীর ছাপ্পানো ইঞ্চি প্রধানমন্ত্রী। তিনিও জনসভায় দাবী করেছেন ভারতের শল্যবিদ্যা এমন উন্নত ছিল যে কাটা মাথা দেহের সাথে লাগাত শল্যচিকিৎসকরা। রেফারেন্স -গনেশ মামা।

 কোরান বেদ মহাভারতে বিজ্ঞান খুজে পাওয়াতে সরকারি স্টাম্প বসানো খুব ডেঞ্জারাস। কারনটা বলি। সৌদি আরব একবার বিলিয়ান ডলারের বেশী খরচ করেছিল, পাশ্চাত্যের বিজ্ঞানীদের ঘুশ দিয়ে ভিডিও তুলতে যাতে তারা কোরানে বিজ্ঞান আছে বলে জয়গান করেন। ইউটিউবে এই সব ভিডিও মুসলমানদের মধ্যে ভয়ানক জনপ্রিয়।  যা মুসলমানদের মধ্যে আরো অজ্ঞতা এবং মৌলবাদ বৃদ্ধি করেছে। সমস্ত মুসলিম দেশে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোরানে বিজ্ঞান  খুঁজতে একাডেমিক গ্রান্ট দেওয়া হয়। আসলে ক্ষতিটা এখানেই হয়েছে মুসলিম দেশগুলোতে- যে যাদের বিজ্ঞানগবেষনায় ওপরের চেয়ারে নিয়ে আসা হয়েছে -তাদের ওই কোরানে বিজ্ঞান আছে টাইপের বিজ্ঞানী হতে হবে!! আর কোরানে বিজ্ঞান আছে টাইপের বিজ্ঞানীরা কি টাইপের কুলাঙ্গার এবং অপদার্থ সেটা সবাই জানেন।

 ভারতে আগেরবার বিজেপি শাসনে সেই দিকেই ঘটনাক্রম এগিয়েছে। আই আই টিতে বৈদিক ম্যাথ  ইত্যাদি চালানোর চেষ্টা হয়। খেলা এক। সেই হিন্দু ধর্মে কত বিজ্ঞান আছে সেসব প্রমান করার জন্য বিজ্ঞানী নামের কিছু কলঙ্ককে হিন্দুগ্রন্থে বিজ্ঞান খুঁজতে পাঠানো হয়।

  আদি ভারতে  জ্ঞান বিজ্ঞানে-  বৈদিক বা বৈদজ্ঞ বা ব্রাহ্মন্য ধর্মের বা বর্তমানে যেটাকে হিন্দু ধর্ম বলে চালানোর চেষ্টা হচ্ছে, তাদের অবদান কি?

 তাদের অবদান শুন্য। প্রাচীন ভারতে যারা বিজ্ঞান চর্চা করেছেন- চরক,  বরাহ মিহির, আর্য্যভট্ট- এদের সবাই বৌদ্ধ ছিলেন। হিন্দু বা বৈদিকরা লিখতে পর্যন্ত জানত না । প্রাচীন ভারতে লেখা বা লিপিটাও এসেছে বৌদ্ধদের কাছ থেকে। বেসিক্যালি আদি ভারতে শিক্ষিত ছিল বৌদ্ধ আর জৈনরা। তারাই জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা করত। আদিভারতে অশিক্ষিত দাঙ্গাবাজ ছিল হিন্দুরা। সেই ট্রাডিশন আজো চলছে। মধ্যেখানে মুসলিম এবং ইংরেজ শাসনে হিন্দু ধর্মে উন্নতি আসে। কারন হিন্দু ধর্ম তখন রাজনৈতিক ক্ষমতাহীন। ফলে ধর্ম সংস্কারের মাধ্যমেই হিন্দু ধর্মকে মানবিক দিয়ে উন্নত করেন চৈতন্য বা মীরাবাই। রাজনৈতিক ক্ষমতা হিন্দু ধর্মের হাতে থাকলে, ওইটুকু সংস্কার হত না ।

বেসিক্যালি বৈদিক ধর্মটা ভারতের বাইরে থেকেই আসুক বা ভেতর থেকেই তৈরী হৌক-তা মোটেও কোন উন্নত সভ্যতার দান না । এগুলো ছিল যুদ্ধবাজ আদিবাসীদের ধর্ম।  এরপর বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্মের প্রভাবে ক্রমশ হিন্দু ধর্মে একটা ইন্টেলেকচুয়াল ট্রাডিশন আসে। যা ক্রমশ উপনিশদ বলে খ্যাত হয় এবং উপনিষদের সারবত্তা  গীতাতে সংকলিত হয়। গীতা দুর্বল মানুষকে বা মানুষের দুর্বল মুহুর্তে শক্তি, অনুপ্রেরনা দেয়। সেটাই গীতার কাজ। কিন্ত এই সব বেদ উপনিষদের  মধ্যে বিজ্ঞান খোঁজা ধর্মান্ধতা এবং উজবুকামি ছাড়া কিছুই না ।

পাওয়ার বাই কনসেসসাস

দিল্লী থেকে মুজাফর নগর। গল্প একটাই । দাঙ্গা বাধানো হচ্ছে যাতে হিন্দু মুসলিম ভোটের পোলারাইজেশন হয়। প্যাটার্ন টাও এক-হয় কোন হিন্দু মেয়েকে মুসলমান ছেলে বিয়ে করেছে/টিটকারি মেরেছে সেই নিয়ে উত্তেজনা। নইলে নতুন মন্দির বিগ্রহ বসানো নিয়ে পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া।
ধর্মকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল নতুন কিছু না । ইসলাম এবং খৃষ্ঠান ধর্মের জন্মই হয়েছিল সেই জন্যে। ভারতের ইতিহাসে উদারতা যেমন আছে-ধর্মীয় বিবাদ কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা দখলের ইতিহাস অসংখ্য।
অর্থাৎ একটা মধ্যযুগীয় পুরাতন খেলা। মারা পড়বে কিছু গরীব মুসলমান বা হিন্দু যারা দিন আনে দিন খায়। লাভ কাদের? সব শ্রেনীর রাজনৈতিক দাদাদের-যারা নেতা মন্ত্রী হতেই শিল্পপতিদের চেক গুনবেন শিল্প স্থাপনে ছাড় দিয়ে। মধ্যেখানে অসহায় মধ্যবিত্ত। কিছু গরীব হিন্দু মুসলমান মেরে শিল্পপতিদের থেকে টাকা নিয়ে বড়লোক হবে খুনী রাজনৈতিকরা।
কেন শিক্ষিত মধ্যবিত্ত অসহায়? কারন তারা ধর্মকে, ধর্মানুভুতিকে আঘাত করতে ভয় পায়। ফুকোর রাজনৈতিক ক্ষমতার তত্ত্বে একটা পরিস্কার দিক আছে। এটাকে বলে পাওয়ার বাই কনসেসসাস। হিন্দু ধর্ম ঠিক, ইসলাম ঠিক, শুধু লোকগুলো বাজে-এগুলো খাজা তত্ত্ব এবং ভুল স্ট্রাটেজি। কারন এতে হিন্দু ধর্ম এবং ইসলামের ক্ষমতাকে সংহত করা হচ্ছে। যেহেতু কনসেনসাস দাঁড়াচ্ছে ধর্মটা কিন্ত ঠিক। এগুলোতে দাঙ্গাবাজদের হাত শক্ত হবে কারন তাদের হাতিয়ার হচ্ছে ধর্ম। ধর্ম ঠিক, ধার্মিক ভুল-এগুলো অবাস্তব তত্ত্ব। ধার্মিক যা করে বেড়ায়, সেটাই ধর্ম। তার বাইরে কোন ধর্ম নেই ।
মধ্যবিত্ত ধর্মের ব্যপারে যত চুপচাপ বসে থাকবে- মিউ মিউ করে ধর্ম ভাল, ধার্মিক খারাপ মারাবে-ফুকোর তত্ত্ব অনুযায়ী ইসলাম আর হিন্দুধর্মের হাত আরো শক্ত হবে। দাঙ্গার ব্যবসায়ীদের হাত আরো শক্ত হবে।

Friday, October 24, 2014

কালীমাতা বনাম সানি লিওন!

                                                                 (১)
গত কয়েকদিন ধরে কালীর নগ্নতা নিয়ে কিছু পোষ্ট দিলে হয় ফেসবুক ওড়াচ্ছে-নইলে গ্রুপ এডমিনরা ডিলিট করছে। সাথে সাথে হিন্দুত্ববাদিদের চূরান্ত অসভ্যতা, গালিগালাজ সবই আছে!

আমি বুঝতে পারছি না কালী সহ দেবীদের এরোটিসিজম নিয়ে থ্রেড ফেসবুক ওড়াচ্ছে কেন-লোকে কেনই বা অসন্তুষ্ঠ এই ধরনের পোষ্টে। সমস্ত দেবীদের কল্পনার পেছনে একটাই দর্শন -প্রজননে সক্ষম নারী সৃষ্টির উৎস।  তাই নারীই প্রকৃতি। কালী নারী হিসাবে প্রকৃতির প্রকাশ-তাই নগ্নিকা। কারন যুগে যুগে  প্যাগানদের মধ্যে নারীর নগ্ন দেহ বা যোনি প্রজনন শক্তি এবং তার থেজে প্রকৃতির রূপক হিসাবে পূজিত। সুমেরু সভ্যতা থেকে গ্রীস, রোম থেকে ভারত- সর্বত্রই দেবীরা যৌন শক্তির রূপক। তাদের এরোটিসিজম নিয়েই গ্রীক বা ভারতের পুরান। সরস্বতী দেবীকুলে গণিকা, নারায়নের রক্ষিতা-এত ভারতের পুরানেই বলে।

   তাহলে কি দেখছি? আসলে প্রাচীন কালে ভারতবাসীদের  যৌনতা নিয়ে শুচিবাই ছিল না। দেবীদের তারা যৌনতার দেবী হিসাবেই পূজা করত। হ্যা, যৌনতা সুন্দর-তাই তারও পূজাতে অভ্যস্ত ছিল ভারতীয় সহ সব প্যাগান সভ্যতা। কিন্ত বর্তমানের হিন্দুত্ববাদিরা যৌনতাকে খারাপ মনে করে। তাই ফেসবুকে এর বিরুদ্ধে ফ্ল্যাগ করছে। এটার কারন সেই হিন্দু ধর্মকে ইসলাম বা খৃষ্টান বানানোর চেষ্টা। কারন যৌনতার বিরুদ্ধে শুচিবাই আছে আব্রাহামিক ধর্মগুলিতে-যথা ইসলাম বা খ্রীষ্ট ধর্মে। ভারতীয়রা যৌনতার পূজা করে-তারা কেন মুসলিমদের হনুকরন করছে?

সাধে আমি লিখে চলেছি-যে ভারতের হিন্দুত্ববাদি আন্দোলন হল, হিন্দু ধর্মকে ইসলাম বানানোর অপচেষ্টা।

                                                                   (২)
 কালীর মধ্যে সানি লিওন খুজে পেয়ে কেও একজন প্যারোডি পোষ্ট করে ।
 সঙ্গে সঙ্গে তেড়েমেরে রে রে করে ধর্মানুভূতিতে আঘাত বলে ফেসবুকে ভ্যান্ডালিজম শুরু করে হিন্দুত্ববাদিরা।

কালীর সাথে সানি লিওনের তুলনা করলে ধর্মানুভূতিতে লাগবে?
কেন ?

 প্রথমত দুজনেই নগ্নিকা। ভুষনহীনতাই তাদের পছন্দ।

 দ্বিতীয়ত কালী নারী দেহের মাধ্যমে প্রকৃতির প্রকাশ। তাহলে সানি লিওনের দেহতে প্রকৃতির প্রকাশ নেই ?

  তৃতীয়ত হেমা মালিনী মুখের ছাঁচে দেবী দূর্গা কত দেখেছি। হেমা মালিনীকে আমরা গ্রহন করেছি দূর্গা রূপে-তাহলে সানি লিওনকে কালী রূপে কেন না ?  দুজনেই ত অভিনেত্রী। কে কতটা কাপড় খোলেন, তা রিলেটিভিটির প্রশ্ন। তাতে ত বেসিক চেঞ্জ  হয় না ।

চতুর্থত, ধর্মানুভূতিটি কি জিনিস? ওটি আসলে ছোট বেলায় ব্রেইন ওয়াশ করে ঢোকানো ধর্মীয় ভীতি। এবং একটি অহেতুক ভীতি যার জন্য ভারতের প্রগতি আটকে আছে। একটি অহেতুক ভীতি যা দাঙ্গা লাগায়, মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে-সেই অহেতুক ভীতিকে কেন সন্মান করব ? সেই ভীতিকে দূর করার চেষ্টা করাটাই ভাল কাজ নয় কি?

পঞ্চমত ভারতীয় দর্শন এব্যপারে কি বলে? কোন উপনিষদে লেখা আছে ধর্ম ভীতি থেকে শুরু হয়? ওগুলো অনুন্নত ইসলাম , খীষ্ঠানদের ব্যপার। উপনিষদ বলছে ভয় থেকে না, ভয়কে জয় করা থেকেই  সত্যর সন্ধান শুরু হয়। আসল ধার্মিক জীবন শুরু হয়। আসল ধার্মিকের ধর্মানুভূতি কি?  তার ধর্মত সাহসের সাথে সততার সাথে কর্তব্য পালনের মাধ্যমে। তার সাথে কালীর সাথে সানি লিওয়নের তুলনার কি সম্পর্ক?

 আর কালী পূজোর সাথে ধর্মের সম্পর্কটাই বা কি?  জ্ঞানযোগ, ভক্তিযোগ, রাজযোগ বা কর্মযোগের মধ্যে পূজো অর্চনা কোথায়? আর ভীতিযোগ বলে কিছু আছে ভারতীয় দর্শনে ? পূজো অর্চনা শ্রেফ প্যাগান সেলিব্রেশন।

                   (৩)
সেকন্ড পোষ্টটা ফেসবুকের গ্রুপে ফেলতেই প্রতি মিনিটে ১০ টা করে বাপ মা তুলে গালি আসা শুরু হল হিন্দু ধর্মের স্বগোষিত রক্ষকদের কাছ থেকে।

কালিকা তাদের কাছে "মা"।  মায়ের সাথে পর্নস্টার সানি লিওনের তুলনা ? "ধর্মানুভূতিতে" বিশাল আঘাত!!

আমার মনে পড়ল পান্নালালের শ্যামাসঙ্গীত--

"মা আমার সাধ না মিটিল আশা না পুরিল
সকলই ফুরায়ে যায় মা...
জনমের সাধ ডাকি গো মা তোরে
কোলে তুলে নিতে আয় মা.....
সকলই ফুরায়ে যায় মা।।
মা আমার সাধ না মিটিল আশা না পুরিল
সকলই ফুরায়ে যায় মা।।
পৃথিবীর কেউ ভালতো বাসেনা
এ পৃথিবী ভাল বাসিতে জানেনা
যেথা আছে শুধু ভাল বাসাবাসি
সেথা যেতে প্রাণ চায় মা
সকলই ফুরায়ে যায় মা।।
মা আমার সাধ না মিটিল আশা না পুরিল
সকলই ফুরায়ে যায় মা...
বড় দাগা পেয়ে বাসনা তেজেছি
বড় জ্বালা সয়ে কামনা ভুলেছি
অনেক কেদেছি কাঁদিতে পারিনা
বুক ফেটে ভেঙ্গে যায় মা....
সকলই ফুরায়ে যায় মা...
মা আমার সাধ না মিটিল আশা না পুরিল
সকলই ফুরায়ে যায় মা."



পান্নালালের ওই জনপ্রিয় গানটা কার অসাধারন লাগে নি? কেন না ওটা একটা রিয়ালাইজেশন ।  উপলদ্ধি। বোধ। 

অপূর্ন  জীবনের বেদনা , ব্যর্থ জীবনের বেদনা, এক সন্তান তার মার কাছে গাইছে। কারুর না কারুর কাছে ব্যর্থ জীবনের বেদনা শোনাতে পারলে মন অনেক হালকা হয় ।  সন্তানের বেদনা মায়ের থেকে  বেশী আর কে বোঝে?

 কিন্ত একোন "মা"? এই মায়ের সাথে সন্তানের গোপন বোঝাপড়া। সবটাই মিস্টিক সাধনা তা বলবো না -জীবনের গূঢ় উপলদ্ধি গুলো, যা সাফল্য, ব্যার্থতার ধাক্কা খেতে খেতে তৈরী হয়-তার কাব্যিক, আত্মোপলদ্ধির জন্য এই "মায়ের" কল্পনা। এই মা আমাদের নিজেদের চেতনার এক স্তর । 

 এবার তাহলে আপনারাই বুঝুন। যেসব হিন্দুরা সানি লিওয়নের সাথে কালীর তুলনায় আপসেট হচ্ছেন, গালাগাল দিচ্ছেন, উত্তেজিত হচ্ছেন-তারা নিজেদের ধর্ম নিয়েই কতটা অশিক্ষিত।

দেখে শুনে মনে হচ্ছে  নগ্ন কালীমাতাকে বোরখা পরাতে পারলে হিন্দুধর্মের ইসলামায়ন সম্পূর্ন হয়।

Saturday, October 18, 2014

হিন্দু ধর্মের ঠিকাদার

হিন্দুত্ববাদিদের ঠিকেদারিত্বে ভারতীয় দর্শন এবং অতীত কি নিরাপদ?

হিন্দুত্ববাদিরা যে হিন্দুধর্মের সন্ধানে, তা অস্তিত্বহীন অতীত। বরং তা ইসলাম বা আব্রাহামিক মনোলিথিক ধর্মগুলির ভারতীয় সংস্করন।

একটু উদাহরন দিচ্ছি। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের তক্ষশীলার শিক্ষক এবং পরবর্ত্তী জীবনের রাজনৈতিক গুরু বিষ্ণুগুপ্ত ( চানক্য) তৎকালীন ব্রাহ্মণ আচার্য্য। কিন্ত কি আশ্চর্য্য! চন্দ্রগুপ্ত মাত্র বিয়াল্লিশ বছর বয়সে রাজত্ব ত্যাগ করে জৈন ভিক্ষু হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন! ভিক্ষু হওয়ার আগে উনি চানক্যর কাছে যান। চানক্য মোটেও অসন্তুষ্ট হন নি যে তার প্রিয়তম ছাত্র ব্রাহ্মন্য ধর্ম না নিয়ে জৈন ভিক্ষু হচ্ছে। তার আক্ষেপ ছিল- এই সব ভাববাদি দর্শনগুলি ভারতের দুর্বল রাজনৈতিক ভিত্তির মূল কারন। চন্দ্রগুপ্তের প্রধান অমর্ত্য ছিলেন রাক্ষস। তিনি আবার বৌদ্ধ। চন্দ্রগুপ্ত পুত্র বিম্বিসার ছিলেন আরেক নাস্তিক দর্শনের অনুগামী-অভাজিকা। যা আজ লুপ্ত। বিম্বিসার পুত্র সম্রাট অশোক আবার বৌদ্ধ ধর্মের জন্য নিজেকে উৎসর্গিত করলেন।

 অর্থাৎ প্রাচীন ভারতের দিকে তাকালে আমরা কি দেখতে পাই?

 প্রথমত একাধিক জীবন দর্শনের সমাহার। সেখানে নাস্তিক, আস্তিক, ভিক্ষু-সব ধরনের আধ্যাত্মিক জীবনের স্বাধীনতা।

  দ্বিতীয় এবং গুরুত্বপূর্ন -পারিবারিক বা রাষ্ট্রীয় ধর্ম বলে কিছু ছিল না । চন্দ্রগুপ্ত, বিম্বিসার, অশোক-পিতামহ থেকে দৌহিত্র-সবাই যে যার নিজের ধর্ম বেছেছেন। অর্থাৎ এরা নিজেদের আত্মানুসন্ধানের মাধ্যমে নিজেদের মার্গে এসেছেন। এমন কি স্ত্রীর ধর্মও স্বামীর ধর্ম থেকে আলাদা হত। অর্থাৎ আজকে যে ভেঁড়ার পালের ধর্ম আমরা দেখি-যে সবাইকে এক পথ অনুসরন করতে হবে-প্রাচীন ভারতে এই ধরনের ধর্মীয়  অত্যাচারের চিহ্ন এসেছে অনেক পরে। আদিতে সবার মুক্তচিন্তার স্বাধীনতা ছিল-সবাই নিজের মত করে জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে নিত।

এই আধ্যত্মিক বা ধর্মীয় স্বাধীনতার রাজনৈতিক অধিকার লুপ্ত হতে শুরু করে গণরাজ্য গুলির বিলুপ্তির সাথে সাথে। প্রাচীন ভারতের এই ধর্মীয় স্বাধীনতার সাথে, গণরাজ্যগুলিতে মানুষের স্বাধীনতার বিশেষ সম্পর্ক আছে। ষোলটি আদি জনপদগুলিতে গণতন্ত্রের অস্তিত্বের কারনেই প্রাচীন ভারতে সহস্র  দর্শন শতপুষ্পে প্রস্ফুটিত। কিন্ত আস্তে আস্তে গণরাজ্য গুলিতে গণপরিশদ ক্ষমতা হারাতে শুরু করলে সম্রাটের হাতে অধিক ক্ষমতা আসে। রাজধর্ম ক্রমশ প্রজাদের ধর্মে পরিনত করার একটা প্রবণতার জন্ম হয়।

জীবনের কোন পরম উদ্দেশ্য নেই । কোন ধর্ম, বিজ্ঞান বা যুক্তি দিয়ে "জীবনে কি করিতে হইবে বা করা উচিত" তার উত্তর খোঁজা অসম্ভব। কারন এটি একটি অর্নিয়াক প্রশ্ন। আবার আমরা যা কিছু করছি-প্রতিটা মুহুর্তে আমাদের সিদ্ধান্ত, আমাদের জীবনের "আপাত উদ্দেশ্য"-অর্থাৎ যেটিকে আমরা উদ্দেশ্য বলে মনে করছি-সেটাই আমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্তর আসল চালক।

এই ধাঁধা বা পারাডক্স  মানবজীবনের সব থেকে বড় ট্রাজেডি এবং বৈচিত্রের ও মূল কারন। জীবনের উদ্দেশ্যই আমাদের চালনা করছে-আবার এদিকে জীবনের উদ্দেশ্য কি হওয়া উচিত তার কোন উত্তর পাওয়া সম্ভব না ।

ফলে প্রত্যেকের জীবন অজানার উদ্দেশ্যে তার নিজস্ব যাত্রা। প্রাচীন ভারতে এই জন্য প্রতিটি মানুষ তার নিজস্ব আধ্যাত্মিক যাত্রাপথের স্বাধীনতা পেয়েছে।

ইসলাম বা খ্রীষ্ঠান ধর্ম মূলত "সাম্রাজ্য" প্রতিষ্ঠার ধর্ম । যদিও এই দুই ধর্মের শুরু "সাম্রাজ্যর" বিরোধিতার মধ্যে দিয়েই। ফলে এই দুই ধর্ম মানুষকে তার নিজস্ব পথের স্বাধীনতা দেয় নি-জনগনকে ভেড়ার পাল বানিয়ে, রাজ্য শাসন করাই আব্রাহামিক ধর্মের মূল উদ্দেশ্য।

ভারতের বর্তমান হিন্দুত্ববাদের উৎস লোকমান্য তিলক এবং বিবেকানন্দের হাত ধরে। হিন্দু জাতীয়তাবাদের মূল লক্ষ্য ছিল হিন্দু পরিচয়ের ভিত্তিতে গৌরবান্বিত হওয়া-যাতে লোকেরা খ্রীষ্ঠান বা মুসলমান না হয়। এর থেকে যে কাল্পনিক হিন্দু ধর্মের বা সনাতন ধর্মের আমদানী হয়-তার সাথে ইসলাম বা খ্রীষ্ঠান ধর্মের ভেড়াল পালের গোষ্ঠিবাজির মিল আছে। প্রাচীন ভারতের ধর্মীয় উদারতা বা স্বাধীনতা কোনটাই হিন্দুত্ববাদিদের সনাতন ধর্মে নেই।

বর্তমানে হিন্দুত্ববাদিরা যে সনাতন ধর্মের স্বপ্নে বিভোর-সেরকম কিছু ভারতে ছিল না । যেটি ছিল, তা হচ্ছে নিজস্ব আধ্যত্মিক  জীবন নির্বাচনের সম্পূর্ন স্বাধীনতা। হিন্দুত্ববাদিদের সনাতন ধর্ম আসলেই ইসলাম বা খ্রীষ্ঠ ধর্মের আদলে তৈরী অলীক কাল্পনিক এক ধর্ম।




মহম্মদ বিন তুঘলককে অপমান করিবার অসাধু প্রচেষ্টা

কেহ কেহ মহম্মদ বিন তুঘলকের সহিত হিরকের রানীর তুলনা করিতেছেন। ইহা ইতিহাসের চূড়ান্ত অবমুল্যায়ন । মহম্মদ বিন তুঘলক (১৩২৪-১৩৫১) ইতিহাসের এক ব্যতিক্রমী ধর্মনিরেপেক্ষ সুলতান। দিল্লীর উলেমারা যে রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং অর্থ ভোগ করিত, উনি বাতিল করিয়াছিলেন। উলেমাদের রাজনৈতিক অভিলাশকে তিনি শুলে চড়াইয়া দমন করিয়াছিলেন। কথিত আছে কিছু অবাধ্য উলেমা-যাহারা তাহার ধর্মনিরেপেক্ষ রাজত্বের বিরোধিতা করিয়াছিল-তাহাদের তিনি জ্যন্ত কবরে পাঠাইয়াছিলেন। মুসলমান কি ভাবিবে, তাহাদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগিলে তিনি তাহাদের সমর্থন হারাইবেন কি না-ইহা লইয়া তুঘলক কখনোই ভাবেন নাই। তাহার মুদ্রায় আল্লা মহান বানীর সহিত কালী মাতার ছবিও থাকিত। তিনি এই ব্যাপারে মুসলমান ভাবাবেগের পরোয়া করেন নাই।
কিন্ত হিরক রানী বা মতান্তরে দুষ্টরানী বা অধুনা জঙ্গীরানী উলেমাদের শুধু অর্থ দান করিয়াই ক্ষান্ত হন নাই, তাহাদের জঙ্গী কার্যকলাপের সুবিধা হেতু পুলিশ প্রটেকশন ও দান করিয়াছেন!
এতেব হে বঙ্গবাসীবৃন্দ! জঙ্গীরানীর সহিত তুঘলকের তুলনায়, তুঘলকের ধর্মনিরেপেক্ষ চরিত্রকে কালিমা লিপ্ত করা হইতেছে। হিরকের জঙ্গী রানীর সহিত তুঘলকের তুলনা করিয়া মহম্মদ বিন তুঘলককে অপমান করিবার অসাধু প্রচেষ্টা ইতিহাসের অজ্ঞতা।

Thursday, October 16, 2014

ভামপন্থীদের আমেরিকা

আমেরিকা নিয়ে ভারতের বামেরা এত আজগুবি হিজিবিজি ধারনা বাজারে খাইয়েছে, যার সবটাই কুখাদ্য বা নাখাদ্য।  সব থেকে বড় কথা একটা দেশ ভাল বা খারাপ-এই ভাল খারাপের ধারনাটাও অর্থহীন। যাহাই ভাল, তাহার মধ্যেই খারাপ। মুদ্রার দুই পিঠ। আমি দুদিকেরই কিছু ভুল চিত্র তুলে দিচ্ছি ঃ

 (১) ভারতের অনেকে মনে করে-প্রবাসী ভারতীয়রা আমেরিকাতে সেকন্ড ক্লাস সিটিজেন। বাস্তব পুরো উলটো। আমেরিকাতে ভারতীয়রা ইমিগ্রান্টদের মধ্যে সব থেকে বেশী ধণী, শিক্ষিত এবং রাজনৈতিক ভাবে ইনফ্লুয়েন্সিয়াল ( অর্থের কারনে)। বাস্তব হচ্ছে অনেক প্রবাসীই ভারতে এলেবেলে থেকে যেত-কিন্ত আমেরিকান সিস্টেমে এসে করে বড় হয়েছে।


   (২) আরেক ভুল ধারনা আমেরিকা বিদেশে বোম মারে বলে এই দেশের লোকেরা ধনী বা আয়েশ করে থাকে। এগুলো এতই আজগুবি-অন্য একটা থ্রেডে এই নিয়ে বিশদ বিতর্ক চলছে। বাস্তব হচ্ছে, গত শতাব্দির সব কার্যকরী আবিস্কার-যা আমরা ব্যবহার করি-ট্রানজিস্টর , অটোমোবিল, আই সি, বিদ্যুৎ, টিভি, কম্পিঊটার ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, দামি সব ওষুধ-সব কিছুই আমেরিকার আবিস্কার। বৃটিশ বা জার্মানরা ডিস্টান্ট সেকেন্ড। আমেরিকার অর্থনীতির চালিকা শক্তি আবিস্কার।  গোটা পৃথিবী গবেষনাতে যা খরচ করে, আমেরিকা তার থেকে বেশী করে-এবং জানে, কিভাবে সেটা  থেকে সোনা ফলাতে হয়। আমি প্রতিদিনই সেসব লোকেদের দেখা পায়-যারা ইংল্যান্ড, জার্মানি, জাপান থেকে আমেরিকাতে এসেছে-কারন এই দেশই কেবল নতুন চিন্তার কদর করে-তাদের ধণী বানায়। বাকী দেশেগুলিতে নতুন চিন্তার জনকদের খোরাক করা হয়।

 বেসিক্যালি আমেরিকাতে আমরা শিখি " মানুষ এবং তার ক্ষমতায়" বিশ্বাস রাখতে। বাজে আমেরিকান, চোর আমেরিকান, বোমা ফেলা আমেরিকান-সবই আছে-কিন্ত তাদের ওপরে আছে স্টিভ জবস বা বিলগেটসের মতন আমেরিকান। যাদের চিন্তা এবং কর্ম পৃথিবীকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। যেখানে লেনিন , স্টালিনের  কুকর্মে পৃথিবী শুধুই পিছিয়েছে।

বামেদের উলটো পালটা চক্রান্ত তত্ত্বে বিশ্বাস করার লোকেদের সংখ্যা এমনিতেই কমে এসেছে।  আমেরিকা নিয়ে তাদের ভাটতত্ত্বে পাত্তা দিতে হবে এমন না । কারন আমেরিকার ভিসার লাইনে সবার আগে দাঁড়ায় বামপন্থী ছাত্ররা।  তবে লাইনে দাঁড়িয়েও ইল্যুশনে অনেকেই ভোগেন।

Friday, October 10, 2014

পুরুষের ভবিষ্যত-২

                                                                        (১)
সেটা দশ বছর আগের কথা।  হঠাৎ মাথায় এল আরে পুরুষ জাতিটার আসলেই কোন ভবিষ্যত নেই। বড়জোর আর হাজার বছর। তারপরেই পুং লিঙ্গ বলতে কিছু থাকবে না ( আর্টিকলটা এখানে আছে https://sites.google.com/site/biplabpal2000/Future_of_Males.pdf )।

 কারনটা আসলেই সহজ। যা কিছুর জন্ম সবটাই বিবর্তনের কারনে। প্রকৃতির আদিতে সবই একলিঙ্গ-বা এক অর্থে নারীই বলব যারা নিজেদের প্রজননে সক্ষম। বিবর্তনের পথে পুরুষ লিঙ্গের আমদানির দরকার হল বিবর্তনে গতি আনতে। উভয় লিঙ্গের ক্রমোজমের ক্রসওভার থেকে অনেক বেশী মিউটেশন সম্ভব। অনেক বেশী বৈচিত্র। ফলে প্রাকৃতিক নির্বাচনের কাজটা সহজ হয়, কাকে পরিবেশের সাথে বেশী টিকিয়ে রাখবে। [১]

 অর্থাৎ বায়োলজির গ্রান্ড স্কীমে পুরুষের ভূমিকা ওইটুকুই। জিনে বৈচিত্র আনতে সাহায্য করা। পশুকুলে বাবারা সন্তানের দেখাশুনা করে-সেই রেওয়াজ একদমই নেই। স্পার্ম ছড়ানো ছাড়া পুরুষের কাজ পশুকূলে সীমিত।

 মানবকুল অনেক জটিল। প্যালিওলিথিক সমাজ পর্যন্ত পুরুষের ভূমিকা সমাজে কি ছিল-তা সবটাই স্পেকুলেটিভ। তবে সমাজ যে সেখানেও মাতৃতান্ত্রিক ছিল সেই নিয়ে সন্দেহ নেই। নারীর অবস্থানের অবনমন হতে শুরু করে কৃষিভিত্তিক সমাজের উত্থানের সাথে সাথে। এর মূল কারন ছিল দুটো। প্রথমত চাষের কাজের জন্য সমাজে ক্রমবর্ধমান সন্তানের চাহিদা। এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির উদ্ভব। এর মধ্যে প্রথমটাই মূল কারন নারীর অবনমনের। সেই কালে শিশুমৃত্যুর হার এত বেশী ছিল মাত্র দুটি সন্তানকে যুবক অবস্থায় টানতে ছটি শিশুর জন্ম দিতে হত। [২] ফলে অধিকাংশ নারীকে বাধ্য করা হত আটটি কি দশটি সন্তানের জন্ম দিতে। "বাধ্য" টা শব্দের ভূল প্রয়োগ। ধর্মের মাধ্যমে অশিক্ষার মাধ্যমে মেয়েদের মাথায় সন্তান ধারনের মাহাত্ম্য ঢোকানো সব ধর্মগ্রন্থেই পাওয়া যাবে। কিন্ত পাশাপাশি এটাও সত্য-এটা না হলে সেই যুগে মহামারী যুদ্ধের ফলে মানব জনসংখ্যা কমতে কমতে, মানুষের বেঁচে থাকাটাই সংকটপূর্ন হতে পারত। কিন্ত এটা ভাবার কারন নেই মধ্যযুগে নারীদের যৌন স্বাধীনতা ছিল না। সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে প্রায় মৃত্যু হত মায়েদের। ফলে মেয়েরাও জানতেন তাদের জীবন সংক্ষিপ্ত-তাই জীবনের মধু ছাড়া যাবে না। হেলিওনিক এবং রোমান সভ্যতায় এই উদাহরন অজস্র [৩]। 

 মেয়েদের বর্তমান স্বাধীনতার ধারনা মোটেও কোন দর্শনপ্রসূত ডিম্ব না। এটি  উনবিংশ শতকে শিল্প বিপ্লবের ফল। [৪] শিশুমৃত্যুর হার কমতে মেয়েদের আর ছটি সন্তান ধারনের কোন প্রয়োজনিয়তা রইল না । অন্যদিকে গ্রাম থেকে শহরায়ন এবং শিল্পের কারনে নিউক্লিউয়ার ফ্যামিলির উদ্ভবে মেয়েদের ও কাজে যাওয়ার প্রয়োজন হল। আমেরিকাতে এটা শুরু হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। ছেলেরা ছিল যুদ্ধে।  আমেরিকান ওয়ার মেশিনের উৎপাদনের পুরোভাগে ছিল মেয়েরা। ভারতে মেয়েরা ব্যপকভাবে কাজে আসতে শুরু করে সাত এবং আটের দশকে।

 তারমানে এই না যে সমতার অধিকার সব দেশে প্রতিষ্ঠিত। ভারত কি আমেরিকা সব দেশেই কর্মজীবি মায়েদের বেশ সমস্যা। যাদের দুটি সন্তান-তাদের অনেকেই পেশা ছেড়ে সন্তানপালনে নিজেদের ক্যারিয়ার ত্যাগ করেছেন। [৫] কিচেন থেকে ডিশওয়াশার-সর্বত্র অটোমেশনের ফলে সাংসারিক কাজের ভার অনেক কমেছে। কিন্ত সন্তানপালনের জন্য কোন রোবট এখনো দেখা নেই ।  ফলে সন্তানপালনের গুরু দায়িত্বটা এখনো মেয়েদেরই। জানি না প্রযুক্তির উন্নতির ফলে ভবিষ্যতটা কি।

                                                                            (২)

 সমস্যা হচ্ছে সেই দিন আজ আগতপ্রায় যেখানে নতুন ভ্রুনের সম্পূর্ন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং সম্ভব। ফলে বায়োলজির গ্রান্ডস্কীমে পুরুষের মূল কাজ-জেনেটিক ভ্যারিয়েশন-তার দরকার নেই। মেশিনই সেই কাজ করে দিতে পারবে। 

 সুতরাং মেয়েদের পুরুষকে দরকার হবে কেন?

  সেক্সের কারনে? দৈহিক চাহিদা মেটাতে?
   সেখানেও পুরুষের  ভবিষ্যত উজ্জ্বল না। স্পিলবার্গের এ আই এ অর্গা মেকার চরিত্রগুলি মনে আছে?  হ্যা আর দু দশকের মধ্যেই বাজারে আসতে চলেছে পুরুষ সেক্স রোবট । যারা শরীরে শারুখ খান, প্রেমে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ!  এবছরই সনির আর এন ডি এই ধরনের হিউমানয়েডের আবিস্কারের কথা ঘোষনা করে যার মধ্যে আবেগ থাকবে [৬]। টোশিবার গবেষনাগারে তৈরী হিউমানয়েড কেঞ্জি সংবাদ শিরোনামে এসেছিল আগের বছর। যে মেয়েটা তাকে প্রেমের পাঠ শেখাচ্ছিল, কেঞ্জি তাকে কদিন বাদে এমন ভাবে জাপটে ধরে, গবেষনাটাই থামিয়ে দিতে হয় [৭]। এগুলো সবে শুরু।

 বর্তমানে আমেরিকাতে ডিল্ডোর বাজার খুব ভাল। ৩০% রেটে বাড়ছে ১৫ বিলিয়ান ডলারের মার্কেট। দেখা যাচ্ছে কি বিবাহিত, কি অবিবাহিত সব মেয়েরাই একাধিক সেক্স টয় কিনছেন। এতটাই যে ২০০৮ সালের রিশেসনে শুধু একটা শিল্পই বেড়েছিল-এটা হচ্ছে এই এডাল্ট টয়। আমেরিকাতে মেয়েরা যৌন আনন্দ খুঁজছেন নতুন নতুন সেক্স টয় এর মাধ্যমে। হিউমানয়েড সেক্স রোবট অনেক দূর। এখনই জাস্ট একটু ইন্টেলিজেন্ট সেক্স টয়ের জন্যেই মেয়েরা আস্তে আস্তে সেক্সের জন্য পুরুষ ছেরে নিজের সেক্সটয়ের ওপর ভরসা করছেন বেশী। কারন অত্যাধুনিক ইলেক্ট্রনিক্স ডিল্ডোগুলির ডিজাইন এত অদ্ভুত এডভ্যান্সড, অধিকাংশ মেয়েরা মনে করছেন, ডিল্ডোগুলি পুরুষদের থেকে অনেক বেশী আনন্দ দিতে সক্ষম [৮][৯][১০]। বর্তমানে এত ভাল সিলিকন পলিমার বেড়িয়েছে এবং ইলেকট্রনিক্সের মাধ্যমে ডিল্ডোগুলিতে উত্তাপ ও প্রানসঞ্চার করা সম্ভব হচ্ছে , অধিকাংশ মেয়ে মনে করছেন, এগুলির প্লেজার কোশেন্ট পুরুষ লিঙ্গের চেয়ে শতগুন ভাল।

  তাহলে একজন মেয়ের জীবনে পুরুষের দরকার কেন? সন্তানের বায়োলজিক্যাল বাবার দরকার এমনিতেই হবে না।তাহলে বাবার দরকার সন্তান পালনের কাজটা ভাগ করে নিতে।  সেই দরকারটা দুই দশকে চলে যাচ্ছে না-কিন্ত আগামী শতাব্দিতে অবশ্যই সন্তান পালনে বাবার দরকার হবে না। কারন সেই রোবট বা হিউমানয়েড। 

 একজন সন্তানের কি দরকার? সঠিক গাইডান্স। বাজে কাজ থেকে আটকানো। পড়াশোনাতে সাহায্য করা। খেলতে, খেলা শেখাতে সাহায্য করা।  এর কোনটা একজন হিউমানয়েড বাবার থেকে খারাপ করবে?

কঠিন সত্য হচ্ছে একটা হিউমানয়েড বায়োলজিক্যাল বাবার থেকে এই কাজটা অনেক বেশী ভাল করবে।

 সুতরাং খুব পরিস্কার চিন্তা করলে-একজন মেয়ের জীবনে পুরুষ নির্ভরতা কমতে শুরু করেছে বিংশ শতাব্দি থেকেই। একবিংশ শতাব্দির শেষে একজন মেয়ের জীবনে পুরুষ হবে "অপশনাল"। দরকার হবেই না।

                                                                    (৩)
এই জন্যেই নারীবাদী আলোচনা আমার ভীষন হাস্যকর লাগে।  হ্যা, মেয়েদের ওপর নানান কারনে নানান অত্যাচার হচ্ছে -এটা ঠিক। কিন্ত সেটা মানুষ হিসাবেই প্রতিবাদ করা যায়। যদি লিঙ্গের প্রশ্ন ওঠে-তাহলে আসলে কিন্ত পুং লিঙ্গের ভবিষ্যত বিলুপ্তপ্রায়। সুতরাং লিঙ্গ রাজনীতির ক্ষেত্রে সব থেকে প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন ওঠা উচিত-পুরুশের ভবিষ্যত কি হবে? 

নারীরা যে বৈষম্যের শিকার হয়েছে-তা ঐতিহাসিক, সামাজিক বিবর্তনের প্রয়োজনে। আর পুরুষ বিলুপ্তির সম্মুখীন সেই বিবর্তনের হাত ধরেই।

তাই নারীবাদি আলোচনা আমার কাছে অতীত, অপ্রাসঙ্গিক। 

অনেক বেশী প্রাসঙ্গিক এই শতাব্দির শেষে পুরুষের ভবিষ্যত কি হবে?

[1]http://www.ted.com/conversations/2925/can_evolution_explain_why_all.html
[2]https://www.princeton.edu/~pswpc/pdfs/scheidel/040901.pdf /
[3]http://ancienthistory.about.com/od/sexualit1/g/moichos.htm
[4]http://www.gilderlehrman.org/history-by-era/jackson-lincoln/essays/women-and-early-industrial-revolution-united-states//   http://www.loyno.edu/~kchopin/Women's%20Rights.htm
[5]http://www.workingmother.com/research-institute/what-moms-choose-working-mother-report
[6]https://inlportal.inl.gov/portal/server.pt/community/ethical_considerations/543
[7]http://ieeexplore.ieee.org/xpl/login.jsp?tp=&arnumber=1545061&url=http%3A%2F%2Fieeexplore.ieee.org%2Fiel5%2F10375%2F32977%2F01545061.pdf%3Farnumber%3D1545061
[8]http://www.alternet.org/sex-amp-relationships/what-15-billion-sex-toy-industry-tells-us-about-sexuality-today
[9]http://www.forbes.com/sites/rakeshsharma/2013/07/31/lets-talk-about-sex-silicon-valleys-efforts-to-disrupt-the-adult-toy-industry/
[10]http://rt.com/usa/recession-sex-industry-toy-531/

Monday, October 6, 2014

বর্ধমান বোমাকান্ডে ধৃত রাজিয়া বিবির খবরে ভিরমি খাওয়ার জোগার

বর্ধমান বোমাকান্ডে ধৃত রাজিয়া বিবির খবরে ভিরমি খাওয়ার জোগার। পুলিশকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকানো মামুলি-কিন্ত স্বামী রক্তাত্ব, মৃত-সেই অবস্থায় সম্পূর্ন অনুতাপহীন, ভাবলেশহীন অবস্থায় জিহাদের জ্যোতি এগিয়ে নিয়ে যেতে এক ছেলেকে কোলে নিয়ে স্বামীর রক্তাত্ব দেহ লুকানো, প্রতিবেশীকে ভয় দেখানো-এবং তারপরেও পুলিশের কাছে নিরুত্তাপ যে তার স্বামী ইসলামের কাজে শহিদ, তাই সে গর্বিত!!  নিজের দেশ প্রতিবেশী ছেড়েই দিলাম-সে নিজেকে ইসলামের সৈনিক হিসাবে এতটাই গর্বিত, নিজের বাচ্চা ছেলেমেয়েরা কি করবে সেই নিয়েও ভাবিত না। অর্থাৎ মাতৃসুলভ বায়োলজিক্যাল ড্রাইভ, যা আমাদের অস্তিত্বকে আচ্ছন্ন করে রাখে, তার ওপরেও সে একটা ধর্মীয় মিথে, রূপকথার  গল্পে আচ্ছন্ন?

    এটি গভীর অস্তিত্ববাদি সমস্যা। জীবনের ত কোন পরম উদ্দেশ্য নেই -এবার ধর্মের ছলে ব্রেইন ওয়াশ করিয়ে এরকম একটা পরম উদ্দেশ্য মাথায় ঢোকাতে পারলেই পুতুল নাচের কীর্তনীয়াদের কেল্লা ফতে।  ফলে যা্রা ধরা পড়েছে তাদের সবাই দিনে পাঁচ বার করে নামাজ পরা মুসলমান-অতিধার্মিক বলে পরিচিত। এই ব্যপারে কারুর কোন সন্দেহই থাকা উচিত না -যে ধার্মিক হওয়াটাই তাদের অস্তিত্ববাদি সংকটে ফেলেছে। নইলে কেও মাতৃধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্মের সেবা করে?  এতটা কান্ডজ্ঞানহীন হওয়াটা একমাত্র অতি-ধার্মিকদের পক্ষেই সম্ভব।

  রাজিয়া বিবির ওপর মোটেও কোন ধর্মীয় অত্যাচার হয় নি কোনদিন। সে করিমপুর থানার বারবাকপুর গ্রামের মেয়ে। আমি নিজেও করিমপুরেই বড় হয়েছি-ওই এলাকাতে কোনদিন কোন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয় নি। যদিও আরবের টাকায় ওয়াহাবি ইসলামের প্রচার ওখানে শুরু হয়েছে নব্বই এর দশক থেকে। এলাকার সব রাজনীতিবিদ, পুলিশ জানে ওইসব মাদ্রাসাতে কি হয়।  মুসলমান ভোটের টানে কেও মাথা গলায় নি। আর বিশ্বাস ছিল, যে নিজেদের সেফটি ভালভ রাখতে ওরা বোমা ওখানে বাঁধলেও, ফাটাবে হয়ত বাংলাদেশে! আজকে খবরে বেড়োচ্ছে বেলেডাঙাতে আই ডি তৈরীর ফ্যাক্টরি ছিল? আরে মুর্শিদাবাদের গ্রামে গ্রামে ওই ধরনের বোমা ফ্যাক্টরি আছে।  আমার মনে আছে সেই ৯৭ সালে একবার পেটের রোগে ভুগে প্রায় মাস খানেক করিমপুরের বাড়িতে থাকতে হয়েছিল। হঠাৎ একদিন  রাতে নদীর ওপার থেকে -বহুদুর থেকে দুটো বোমা ফাটার আওয়াজ। পরের দিন সকালে বন্ধুদের জিজ্ঞেস করলাম-আরে তোরা কেও শুনিস নি?  ওরা বললো দূর-ওগুলো সব বোমা টেস্টিং । ওটা রোজ হয়!  তবে ওরা নাকি লোক্যালি ফাটায় না। বাংলাদেশ আর বিহারে এসব বোমের চাহিদা বেশী! কি মারাত্মক-পুলিশ সব জানে কিন্ত মুসলিম এলাকা বলে ঢুকতে সাহস পায় না ! তাছারা সিপিএম ছিলও অদ্ভুত পার্টি। তেলে জলে সবাইকে ধরে রেখেছিল বলে, গন্ডোগল সামনে আসত না -কিন্ত ভেতরটা গিয়েছিল পচে।

 আর্থ সামাজিক বিশ্লেষন-হিন্দুদের সাম্প্রদায়িকতা এইসব দিয়ে থিওরী বানানো কাঁচাগোল্লা ছাড়া কিছু না এই ক্ষেত্রে।  আশির দশকে করিমপুর এলাকার মুসলিম অধ্যুসিত গ্রামগুলিতে ঢুকতে আমার কোনদিন ভয় লাগত না। আমাদের ওদিকের মুসলমানরা ভীষন অতিথি বৎসল। তাছারা গ্রামের লোকেরা একটু গায়ে পড়েই কথা বলতে এগিয়ে আসে।  নব্বই এর দশকে সব পালটে গেছিল। আমার নিজের ওই সব জায়গায় ঢুকতে ভয় লাগত-চারিদিকে সব অদ্ভুত চাউনি।   আগে অধিকাংশ গ্রামে মসজিদই ছিল না। মাদ্রাসাও ছিল না ।  ভাঙাচোরা মুঘল আমলের মসজিদ সব। নব্বই এর দশকে আরবের টাকায় সব বদলে গেল। ব্যাঙের ছাতার মতন মসজিদ আর মাদ্রাসা গজিয়েছে। সিপিএমের নেতারা সেসব উদ্বোধন ও করেছেন।  ইদানিং শুনছি তাহাই তৃণমূলের ঘাঁটি।

পশ্চিম বঙ্গ সম্পূর্ন বারুদের ওপর বসে। বিস্ফোরন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

Friday, October 3, 2014

নীরব কম্প্রোমাইজ

যাদবপুর কান্ডে আমদের সমাজের আরেকটা দুর্ভাগ্যজনক অন্ধকার সামনে এল-এটা নিয়ে আগে গভীরে আলোচোনা হলে ভাল হত।
 কিন্ত এখনই হৌক।
প্রশ্ন হচ্ছে, আসল অপরাধী কারা-তা একমাত্র হোস্টেলের ছেলেরাই জানে। তারা কেন অপরাধীদের আড়াল করছে? তারমানে ত 
হোস্টেলসুদ্ধ ছেলেরা এই অপরাধে অপরাধী?
হোস্টেলের ছেলেদের এই অপরাধ লুকানোর জায়গা নেই । সেট যেমন ঠিক-ঠিক তেমনই বাস্তবতা হচ্ছে, হোস্টেলের ছেলেরা 

একক্কাট্টা হবেই বন্ধুদের অপরাধ ঢাকতে। কারন হোস্টেলে ত বাবা-মা থাকে না। বন্ধুরাই দেখাশোনা করে কিছু হলে। ফলে
 এটাই হোস্টেল জীবনের অলিখিত নিয়ম-বন্ধুর পাশে সময়ে অসময়ে দাঁড়াও। গান্ধী বোধ হয় এই জন্যেই বলেছিলেন বেশী বন্ধুত্ব খারাপ-কারন তা বন্ধুদের খারাপ কাজের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে নিরুৎসাহিত করে।
মুশকিল হচ্ছে আই আই টির হোস্টেলে দীর্ঘ দশবছর কাটানোর অভিজ্ঞতা থেকে এটা বলতে পারি- আমি নিজে যাদবপুরের হোস্টেলে 
থাকলে ছাত্ররা যেভাবে বন্ধুদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে-আমিও তাই করতাম। কারন অতীতে এই কাজ অনেকবার ইচ্ছাকৃত বা 
অনিচ্ছাকৃত ভাবেই করতে হয়েছে। '৯১ সালে আমি যখন আই আইটিতে ঢুকি-ঠিক ১২ দিনের মাথায় আর কে হলে, আমার মতন
 আরেক নবাগত সন্দীপ সিনহা রায়কে তিনতলা থেকে ঠেলে ফেলা হয় র‍্যাগিং এর সময়। সন্দীপ আমার সাথেই নরেন্দ্রপুর থেকে
 এসেছিল। পরেরদিন পুলিশ আটজন ছাত্রকে গ্রেফতার করে। এবং তারপরের দিন, গোটা আই আই টি জুরে পুলিশ একশনের বিরুদ্ধে
 অনশন ধর্মঘট বিক্ষোভ হয়। ছাত্রদের বক্তব্য ছিল-গোটা ঘটনা ঘটেছে অন্ধকারে-পুলিশ র‍্যান্ডম ফায়ার করে নিরাপরাধ ছাত্রদের
 ক্যারিয়ার ধ্বংস করছে। ঠিক আজকে আমি যেটা লিখছি। সেই দিন, ভীষন অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও আমাকে মিছিলে হাঁটতে হয়েছিল। 
কারন সন্দীপকে আমি ভালোই চিনতাম। মনথেকে মেনে নিতে পারি নি যে বন্ধুদের অপরাধিদের বাঁচাতে আমাকে মিছিলে হাঁটতে হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠবে, এবং ওঠা উচিত ও-তাহলে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ছাত্রদের কারুর মেরুদন্ড নেই ?

শুধু ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কেন, সর্বত্রই বাঁচার জন্য আমাদের কম্প্রোমাইজ করতে হয়। যত ওপরে ওঠা-তত বেশি কম্প্রোমাইজ। এই
 যেসব মেয়েরা, পুরুষতন্ত্র, জেহাদি ফেমিনিজম দেখাচ্ছে তারা কম্প্রোমাইজ করে নি তাদের ক্যারিয়ারে? কত মেয়ের জীবন 
ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে, তারা গাইডের সাথে শুতে রাজী হয় নি বলে। আবার অনেকে শুয়ে নিজেরটা বাগিয়েও নিয়েছে। তারা
 হয়ত এই টাইপের নয়-কিন্ত তাদের সামনে ত এই সব ঘটনা ঘটেছে আখছার-তারা কেও কোনদিন প্রতিবাদ করেছে? নীরবে
 কম্প্রোমাইজ করেছে। এই নীরব কম্প্রোমাইজটা ভীষন আনফরচুনেট পার্ট অফ লাইফ। যারা টিসিএস, ইনফি, সিটিসে কাজ করছে, 
তাদের জীবনের প্রতিটা মুহুর্ত এই নীরব কম্প্রোমাইজ এর মধ্যেই কাটে।
সুতরাং কাঁচের ঘরে বসে যাদবপুরের ওই হোস্টেলের ছাত্রদের বিরুদ্ধে ঢিল ছোঁড়া উচিত না। আমরা যেটা দেখছি-সেটা আমাদের
 জীবন এবং সমাজের অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক একটা দিক। আমরা কেওই গান্ধী নই-বাপুজিক বইতেই ধরতে পারি না-ত নিজের 
জীবনে!!

Wednesday, October 1, 2014

অথ তত্ত্বান্ধ কথা!

গ্রেফতার হওয়া ছাত্রদুজনের বিরুদ্ধে মন্তব্যের বহর দেখে, আবার লিখতে বাধ্য হচ্ছি, মানুষের স্থান তত্ত্ব, আদর্শ, রাজনীতির ওপরে। রাজনীতির জন্য মানুষকে বলি না দিয়ে, মানুষের জন্য রাজনীতিকে বলি দিতে শিখুন। নইলে মানুষ, সমাজ, রাষ্ট্র এবং রাজনীতি-সবই ব্যর্থ হবে। 

অনেকেই অনেক যুক্তি দিয়েছেন আমার বক্তব্যের বিরুদ্ধে। আলাদা করে সবাইকে উত্তর দেওয়ার সময় নেই। তাই একটা প্রবন্ধেই সব যুক্তি সাজাচ্ছি

  (১) মেয়েটির অভিযোগ বিশ্বাস করা যায় কি না? 

          সব প্রশ্নের শুরু এখান থেকেই হওয়া উচিত।  হ্যা, মেয়েটিকে নিশ্চয় হেনস্থা করা হয়েছে। কিন্ত সেটা যৌন হেনস্থা কিনা-সেটা বলা যাচ্ছে না। যাদবপুরের পড়ুয়াদের কাছ থেকে যেটা জানা যাচ্ছে মেয়েটি ফেস্টের দিন অন্ধকারে তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে যৌনক্রীয়ারত কালে কিছু হোস্টেলবাসী মরাল পুলিশ হিসাবে উপস্থিত হয়ে-ওদেরকে হেকল করে।  তারপরে টেনে হিঁচরে হোস্টেলের একটা ঘরে বন্ধ করে রাখে। মোরাল পুলিশিং ন্যাক্কারজনক ঘটনা। কিন্ত সেটা যৌন হেনস্থা না।

  মেয়েটি ওই হোস্টেলের কাউকেই চিনত না। তারপরে ছিল অন্ধকার।  এই অবস্থায় সে ১৫ জনের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করে। কে এই কাজ করেছে, ওই মেয়েটির পক্ষে বলা অসম্ভব-কারন কিছু অচেনা ছেলে রাতের অন্ধকারে এই গর্হিত কাজটা করেছে। সে ১৫ টা ছেলের বিরুদ্ধে র‍্যান্ডম ফায়ার করেছে। 

 পুলিশ ওই ১৫ টি ছেলের মধ্যে পিঠ বাঁচাতে দুটিকে গ্রেফতার করেছে। সেই দুটি যারা সব থেকে বেশী গরীব-যাদের বাবা-কাকারা ইনফ্লুয়েন্স খাটাবে না। হ্যাসল ফ্রি মাল। 
 
 ওই  হোস্টেলের ছেলেরাই একমাত্র জানে কারা জড়িত। কিন্ত মেয়েটি যা করেছে তা র‍্যান্ডম ফায়ার। পুলিশ পিঠ বাঁচাতে দুজন গরীব ছাত্রকে বেছে বেছে কুমীর ছানার মতন দেখাচ্ছে। কোন প্রমান নেই মেয়েটির জবাবনন্দী ছাড়া। এই অবস্থায় পৃথিবীর কোন  ভদ্র আইনে ছেলে দুটি দোষী হতে পারে?

 সুতরাং ওই ছেলেদুটি দশচক্রে ভগবান ভূত। ওদেরকে দোষী সাব্যাস্ত করে দুটি হত দরিদ্র ফ্যামিলিকে এ ভাবে ভাসিয়ে দেওয়া মেয়েটিকে হেনস্থা করার চেয়ে শতগুন বড় অপরাধ।

 (২)  কোন মেয়েকে যৌন হেনস্থা করতে বড়লোক বা গরীব হতে হয় না। পুরুষ হওয়াই যথেষ্ট। আমি যুক্তি দিয়েছিলাম- গ্রামের গরীব ঘরের "মেধাবী ছাত্র" এই ধরনের কার্যে লিপ্ত হতে পারে কি না?

  মেধাবী কথা উহ্য রেখে সবাই বেমালুম নির্ভয়া কেসে গ্রামের গরীবদেরকে টেনে আনল। নির্ভয়ার রেপিস্টরা  কেও কি যাদবপুরে পড়ার মতন মেধাবী ছাত্র ছিল?

 গ্রামের  " মেধাবী ছাত্র" কথাটা কেন গুরুত্বপূর্ন? 

 গ্রামের স্কুলে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা আমার- এটা আমার নিজের অভিজ্ঞতা। ছেলেগুলি নিশ্চয় গ্রামের স্কুলের সেরা ছাত্র ছিল। আমাদের গ্রাম বা গ্রামশহর গুলি এতই রক্ষণশীল-ভাল ছাত্ররা ছাত্র অবস্থায় কোন মেয়ের সাথে প্রেম করবে-সেটা পর্যন্ত হতে বাগড়া দেয়। আমার নিজেরই কত মেয়ে দেখে বুক দুড়দূর করেছে-কিন্ত একটা মডেল কোড ভুতের মতন বসে থাকত ঘারের ওপর। মেয়েদের সাথে কথা বলতেই ভয় পেতাম। না, মেয়েদের নিয়ে ভয় ছিল না-ভয় ছিল সমাজ নিয়ে। পাছে ভালো ছেলের তকমাটা খসে যায়-এটা একটা স্যোশাল ইউটিলিটি প্রেসার।

 ওই মডেল কোডের চাপ নিয়ে যারা উঠে এসেছে, তাদের পক্ষে এই কাজ করা প্রায় অসম্ভব। অধিকাংশ রেপের ঘটনায় জরিত থাকে- হয় বড়লোক বাপের বখাটে যে জানে বাপের ক্ষমতায় উদ্ধার পাবে বা অশিক্ষিত সর্বহারা গরীব যাদের হারানোর কিছুই নেই। আপনারা দেখেছেন কখনো এর মাঝামাঝি স্পেক্ট্রামে মধ্যবিত্ত বা গরীব ঘরের কোন মেধাবী ছাত্র কোথাও কোন রেপ কেসের সাথে জড়িত? যাদের হারানোর অনেক কিছু থাকে, তারা এই ধরনের রিস্ক কেন নেবে?

 (৩) রীনিতা এর মধ্যে মার্ক্সিজম, লেনিনিজম, ফেমিনিজম -ইত্যাদির সাপলুডো নিয়ে হাজির। আরে বাবা এটাকে পুরুষতন্ত্রের নারী নির্যাতন হিসাবে মানতে আমি নারাজ। এটা কিছু ছাত্রের ভ্রান্ত মরাল পুলিশিং।  এখানে পিতৃতন্ত্রের ঝাঁট দেখতে পেলে মুশকিল আছে। কিছু ছাত্রর ভুল, যা মোটেও সবদিন হয় না-একটা স্পেশাল ঘটনা ঘটে গেছে-তার মধ্যে পিতৃতন্ত্রের ভূত দেখলে হয় সৃষ্টিকর্তা নইলে ডারউইন সাহেবের কাছে গিয়ে অভিযোগ যানান।  প্রথম অভিযোগে লিখবেন -মেয়েদের দেখলে ছেলেদের উঠে যায়-এই ধরনের ন্যাক্কারজনক পিতৃতন্ত্রের অবসান দরকার হে সৃষ্টিকর্ত্তা!! এই ফেমিনিস্ট ভদ্রমহিলা সর্বত্র পিতৃতন্ত্রের ভূতের সন্ধানে নিজেই অদ্ভুত চরিত্র!  উনি ঝারফুক করতে থাকুন!!

 (৪) আমি কোন মার্ক্সিস্ট বিশ্লেষন করি নি।  উৎপাদনের ব্যবস্থার সাথে, ফেস্টের দিন রাতে মেয়েটি কেন তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে ইস্টিমিস্টি করছিল বা ছেলেগুলো মরাল পুলিশিং করল তার সম্পর্ক আছে? পাগল না মাথা খারাপ?

আমি পেশাগত ভাবে একজন প্রযুক্তিবিদ। আমাদের ডোমেনে কোন নিউটনিস্ট বা আইনস্টানিস্ট নেই। কারন আমরা শিখি তথ্য এবং প্রমানই একমাত্র গ্রাহ্য।  কোন ইস্ট বা ইস্টদেবতার সাহায্য ছাড়া, শুধু তথ্য এবং প্রমানের ভিত্তিতেই কোন ইস্যুতে পজিশন নিতে হয়।

(৫) এবার আসি সায়ন্তনীর কথায়। ও ছিপ ফেলে বসে থাকে। কে কখন সেক্সিস্ট একটা কথা ড্রপ করলো। কালিদাস বা কবিগুরু ভাগ্যবান। তাদের সায়ন্তনীর কথা ভেবে লিখতে হয় নি। নইলে কালিদাস মেয়েদের স্তন এবং নিতম্বের সুউচ্চ প্রশংসা করার আগে দশবার ভাবতেন যদি তার বিরুদ্ধে সেক্সিস্ট ট্যাগ লাগে! তবে আমার অভিজ্ঞতা বলে অধিকাংশ মেয়েই সায়ন্তনী না। তারা পুরুষের কাছ থেকে হট সেক্সী-ইত্যাদি বিশেষণ পেলে খুশীই হয়। কারন নারী-পুরুষ সবার নির্মানের মূলেই আছে যৌনতা। যেসব মেয়ে বলে, তারা এই সব বিশেষনে খুশী না-তারা শ্রেফ হিপোক্রিট। 

 (৬) অভিজিতের থ্রেডে আসা যাক। ছেলেদের হোস্টেলের ছেলেরা নাকি খুব খারাপ হয়!!! মেয়েদের দেখলেই রেপ করে ফেলবে। আরে ভাই আমাদের হলেও ফেস্ট হত-অনেক রাত অব্দি মেয়েরা থাকত। কোনদিন বাজে কিছু হয়েছে বলে জানি না। ব্যাতিক্রম নিয়ম না।  সব হোস্টেলেই কিছু বাজে ছেলে থাকে। হ্যা তারা এই ধরনের বাজে কাজ করতে পারে। সেই সংখ্যাটা ৫% এর বেশী হবে না। 

আর সেক্সিস্ট কথা, মেয়েদের লক্ষ্য করে বাজে গালি? 

  এর কারন আমাদের সমাজের সেক্সুয়াল ওপ্রেশন। একটা উনিশ কুড়ির ছেলের যদি বান্ধবী না থাকে, সেক্সের জন্য রেগুলার আউটলেট না থাকে,  এই ধরনের সেক্সুয়াল পার্ভাসান, আসাই স্বাভাবিক।  ফ্রাস্ট্রেশন থেকে। আই আই টী লিঙ্গো ফ্রাস্টু। আমাদের ছাত্র জীবনে দেখেছি। যাদের বান্ধবী আছে, সুন্দর লাভ লাইফ আছে, তারা সেক্সুয়াল ফ্রাস্ট্রেশনে ভোগে না।  এটা আমাদের সমাজের দোষ যে আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য সুন্দর যৌন জীবনের ব্যবস্থা করে দিই না। এটা মানুষের জীবনের একটা বেসিক চাহিদা। তার সাপ্লাই না দিলে-মেয়েটি মাঠে গিয়ে অন্ধকারে ওইসব করবে-আর ছেলেগুলো ফ্রাস্টু খেয়ে তার ওপর হাত চালাবে। সবটারই কারন সেক্সুয়াল ফ্রাস্টেশন -তার জন্য দায়ী সমাজ। রাষ্ট্র। সব হৌককলরব করছে-আসল সত্য বলার সাহস কারুর নেই ।

 এই যে নির্ভয়া নিয়ে এত আন্দোলন হল-কেও আসল ইস্যুটাই তুললো না। বিহার উত্তর প্রদেশ থেকে আসা, দিল্লীতে থাকা ওইসব লেবার ক্লাসের ছেলেরা মেয়ে কোথায় পাবে? নারী সব পুরুষের জীবনের বেসিক চাহিদা। খাবার না পেলে বাঘ ও জঙ্গল ছেড়ে মানুষ শিকার করতে আসে লোকালয়ে-গুলি খাওয়ার ভয় সত্ত্বেও। এটা ভুললে চলবে না। মেট্রো শহর গুলিতে গ্রাম থেকে উঠে আসা লেবারক্লাসের জন্য মেয়ে সাপ্লাই না থাকলে ( সেটা গনিকালয় হলেও চলবে), ভারতের কোন রাজধানী শহরে কোন মেয়ে নিরাপদ নয়। ওই যে বল্লাম বাঘ খেতে না পেলে, গুলি খাওয়ার ভয় থাকা সত্ত্বেও লোকালয়ে আসে মানুষ ধরতে।  আমাদের শিক্ষিত মানুষরা আবার এসব নিয়ে আলোচনা করতেই নজ্জা পান!


মানুষ অমৃতের পুত্র।সে খারাপ নয়, খারাপ তার প্রবৃত্তি।  প্রবৃত্তি একটা সামাজিক কন্ডিশনিং। ইতিহাসে বারবার প্রমান আছে কিভাবে দস্যু রত্নাকর মহর্ষী বাল্মিকী হয়েছেন। চন্ডাশোক ধর্মাশোক হয়েছেন।