Tuesday, June 30, 2020

আদৌ নবজাগরন? না হিন্দু সংস্কার আন্দোলন ( রিভাইভালিজম?

আদৌ নবজাগরন? না হিন্দু সংস্কার আন্দোলন ( রিভাইভালিজম?

****
ভাবনাতে বাঙালীর নবজাগরনকে নিয়ে কাঁটা ছেঁড়া হচ্ছে-এটা ভাল। এট দ্যা এন্ড ইতিহাস একটা ন্যারেটিভ। যে ন্যারেটিভ স্কুল পাঠ্য বইতে, সমাজের মুষ্টিমেয় কিছু এলিট গুঁজে দিয়েছেন, তার থেকে বেড়িয়ে এসে মুক্তমনে ইতিহাসের পুনপর্যালোচনা দরকার। রামমোহন, বিদ্যাসাগর, বঙ্কিম, বিবেকানন্দ নিয়ে আলোচনা মূলত তারা কি বলেছেন, কি লিখেছেন, এগুলি নিয়েই সীমাবদ্ধ থাকে। আমার মতে নবজাগরন নিয়ে আলোচনার সীমাবদ্ধতা এটাই যে ভাবুকগন, কে কি লিখেছেন- সেখানেই নিজেদের হারিয়ে ফেলছেন। (১) অর্থনৈতিক উৎপাদন কাঠামো, (২) সাম্প্রদায়িকতার "ধারাবাহিক" ইতিহাস, (৩) আইনের কাঠামোর উৎস (৪) বর্তমানের রাজনীতিতে নবজাগরনের প্রভাব - এই চারটি জিনিসকেই সমান্তরালে দেখে সিদ্ধান্তে আসা উচিত।

আমি উপোরোক্ত চারটি স্তম্ভ বিশ্লেষন করে নিশ্চিত হয়েছি, বাঙালীর এনলাইট্মেন্ট-আসলেই হিন্দু ধর্মের রিভাইভালিজম ছিল। এমন কি বাঙালী হিন্দুর সিপিএম পর্যন্ত সেই হিন্দু রিভাইভালিজমেরই টেইল এইন্ড,। বাঙালী হিন্দুর সিপিএম কোন মার্ক্সিস্ট মুভমেইন্টই না। যার জন্যে সিপিএমের বর্তমান নেতা ক্যাডারদের বিজেপিতে মিশে যেতে কোন অসুবিধাই হচ্ছে না।

তবে এক্ষেত্রে মতামত আমার। বিশ্লেষন আপনাদের!

অর্থনৈতিক উৎপাদন কাঠামো এবং আইন //[১]- প্রথমেই দেখতে হবে ইউরোপে বিশেষত যদি ইংল্যান্ড এবং জার্মানীকে দেখি- অষ্টাদশ শতকের পুনজাগরনের আসল কারন কি? ইংল্যান্ডে জেরেমি বেন্থাম, জন স্টুয়ার্ট মিলের উটিলিটারিনিজম কেন জুদাইক্রিস্টিয়ান আইনের লেগাসির চেয়ে বেশী উপযুক্ত বলে রাজনৈতিক মহলে গন্য হল? জার্মানিতেও দেখা যাচ্ছে ইমানুয়েল কান্টের ক্যাটেগরিক্যাল ইম্পারেটিভের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুশাসকরা অখুশী। কারন কান্ট প্রথম বল্লেন আইনের উৎস হিসাবে ধর্ম টেরিবল আইডিয়া-এবং ক্যারেগরিক্যাল ইম্পারেটিভের উনিভার্সালিজমের মাধ্যমে সেটা ব্যখ্যা করলেন। খুব স্বাভাবিক ভাবেই ধর্মীয় মহল অখুশী। কিন্ত জার্মান এনলাইটেমেন্ট কান্টকে ঘিরেই এল-খ্রীষ্টানিটিকে ঘিরে আসে নি। আইনের ক্ষেত্রে "ধর্মের সংস্কার না" -সম্পূর্ন ভাবে হয় বেন্থামের উটিলিটারিয়ানিজম বা কান্টের ক্যাটেগরিক্যাল ইম্পারেটিভকে কেন্দ্র করে ইউরোপের প্রগ্রেসিভ আন্দোলন এগিয়ে গেছে। যেখানে আমরা দেখেছি - খ্রীষ্টানিটির টোটাল রিজেকশন।

কিন্ত বাংলার নব জাগরনে হিন্দু ধর্মের টোটাল রিজেকশন কোথায়? বরং বেন্থাম পড়ে নবজাগরনের পুরোধারা ভাবলেন এত আমাদের হিন্দু ধর্মেই আছে। কারন ধর্ম এমনিতেই ডিকন্সট্রাকশনের দৃষ্টিতে উইক টেক্সট। ফলে আইনস্টাইন আপেক্ষিকতাবাদ আবিস্কার করলে আলেমরা বেদ কোরানে তা পুনঃআবিস্কার করেন! সেটা পাওয়া যায়! কারন আল্টিমেটলি ধর্মের ৯৫% ই ব্যখ্যা! ফলে নবজাগরনের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে বৃটিশ উটিলিটারিজমের আলোকে "তেনারা" সবাই আলোকিত। কিন্ত উলিলিটারিজমের কন্সকিয়েন্সিয়ালিজমের ভিত্তিটাকেই এরা উড়িয়ে দিয়েছেলেন। তার বদলে, ইহা হিন্দু ধর্মে বহুদিন পূর্ব হইতেই সুল্ভ-এই দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহন করে, হিন্দু ধর্মের আইনের সংস্কারে ব্রতী হোন।

কিন্ত কেন ইংল্যান্ড বা জার্মানীর নবজাগরনে খ্রীষ্টান ধর্মের রিজেকশন কিন্ত বাংলায় সেই একই দর্শনের সূত্র থেকে হিন্দু ধর্মের রিভাইভালিজম?

এক্ষেত্রে পসিবিলিটি অনেক- হয়ত নিম্নোক্ত কারনগুলি কমবেশী সব এফেক্টিভ!

- হিন্দু ধর্মের টেক্সটের ডায়ালেয়াক্টিক বেস। হিন্দু ধর্ম "ক্যানোনিকাল" না। আইন নির্ভর না। রিয়ালাইজেশন নির্ভর। মনু স্মৃতি আইনের কালেকশন হলেও এপ্লিকেশন ছিল লিমিটেড। ফলে ১৭৭২ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস যখন দশজন ব্রাহ্মনকে এপয়েন্ট করলেন হিন্দু আইন বানানোর জন্য, সেই চেষ্টা ২০০ বছরেও সফল হয় নি। বরং পন্ডিতদের মধ্যে বিরাট মতৈনক্যের কারনে লর্ড বেন্টিঙ্কের আমল থেকেই বৃটিশ আইন বেশী করে বলবৎ করা হয়। হিন্দু শাস্ত্রে আইনের বিভাগ এতই দুর্বল, বেসিক্যালি হিন্দু আইন বলে কোন কিছু কোনদিন দাঁড়ায় নি। এমন কি আম্বেদকারের হিন্দু কোড বিল নিয়েও চূড়ান্ত বিতর্ক ছিল। কালকের শাখা সিঁদুরের জাজমেন্ট একটা বড় উদাহরন যে হিন্দু ম্যারেজ এক্টও -আইনের দৃষ্টিতে উইক টেক্সট।

এখানেই সবথেকে বড় প্রশ্ন উঠবে। রামমোহন বিদ্যাসাগর বঙ্কিম রবীন্দ্রনাথ বিবেকানন্দ -সবাই হিন্দু ধর্মের সংস্কারে মন দিলেন। কিন্ত তাদের সময় ও দেখা যাচ্ছে হিন্দু পারসোনাল আইন দাঁড়াচ্ছে না। নানা মুনির নানান মত। বৃটিশরা বাধ্য হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে বৃটিশ আইন চালাতে। অথচ বেন্থাম বা কান্টের দর্শন তারা জানতেন না তা না। খুব ভাল করেই জানতেন আইনের উৎস হিসাবে ধর্ম শ্রেফ গার্বেজ। কিন্ত তাও তারা "হিন্দু রুটে" অনড় থাকলেন?

কেন?

এর কারন কি এই যে পরাধীনতার গ্লানির জন্য "হিন্দুত্ব= ন্যাশানালিজম" এক হয়ে ওঠে?

না "হিন্দু ধর্ম কালেক্টিভিস্ট না- ব্যক্তিস্বাতন্ত্রকে গুরুত্ব দেয়-ফলে নব-নির্মিয়মান ধনতান্ত্রিক কাঠামোর সাথে তাল মেলানোতে অসুবিধা হয় নি?

ইউরোপের এনালাইট্মেন্টের মূল কারন সমাজ কে না ভাংতে পারলে, ফ্যাক্টরিতে ";লেবার" পাওয়া অসম্ভব ছিল। খৃষ্টান ধর্ম পুরো এন্টি ক্যাপিটালিস্ট। ফলে অষ্টদশ শতকে যখন বনিকেরা ইংল্যান্ডের রাজনৈতিক ক্ষমতায় এসেছে, তারা নিজেদের স্বার্থেই ইউটিলিটারিয়ানিজমকে গুরুত্ব দিয়েছে। ধনতন্ত্রের স্বার্থেই খ্রীষ্টান আইন, খ্রীষ্ঠ ধর্মের চার্চের পাওয়ারকে ডাইল্যুউট করা হয়েছে।

বাংলায় শাসক শ্রেনীর ( কোম্পানী) কি সেই স্বার্থ ছিল হিন্দু ধর্মকে ডাইল্যুট করায়?

আমার মনে হয় উত্তর নিহিত আছে এই শেষ প্রশ্নেই । শাসক সব সময় চাইবে এমন একটা শ্রেনী-যারা শাসক শ্রেনীর শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নেবে। সিলেক্টিভলি গোকুলে বুদ্ধিজীবি হিসাবে তারাই বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হোন। শাসক বৃটিশ, সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি-যেই হোন না কেন, " বুদ্ধিজীবী" শ্রেনীটি কিন্ত শাসকে্র রাজনৈতিক দর্শনের ঘোড়া। বিদ্যাসাগর তারই প্রতিফলন। এটা ভুললে চলবে না। কেউ ব্যতিক্রম হতে পারেন না। কারন ব্যতিক্রম হলে তিনি জেলে পচবেন।

সংস্কৃত কলেজ তৈরীর মূল কারন ছিল, এঙলো-হিন্দু আইনের সৃষ্টি। আর বিদ্যাসাগর সেই সিস্টেমের প্রোডাক্ট। যাকে সিস্টেম তৈরী করল হিন্দু ধর্মের রিভাইভালিজমের জন্য-তিনি অন্যকিছু হবেন এমন ভাবা ভুল।

কাঁঠাল বাগানে কাঁঠালই হবে। সুতরাং বিদ্যাসাগর আলোকিত, আর বিবেকানন্দ অন্ধকার এটা ভুল ধারনা। উনারা সবাই এক সূত্রে , এক সিস্টেমে বাঁধা। সেটা হচ্ছে হিন্দু ধর্মের রিভাইভাল।

(২) সাম্প্রদায়িকতার ধারাবাহিক ইতিহাস- মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের সাথে সাথে মারাঠাদের উত্থান। আর তার সাথে সাথেই দ্বিজাতি তত্ত্বের শুরু। উত্তর ভারতে এই সময় সৈয়দ আহমেদ বরেল্ভি এবং হাজি শরিয়তুল্লার ইসলামিক রিভাইভালিজম ও শক্তিশালি হয়। ফলে ইসলাম আবার ক্ষমতায় আসতে পারে ( যা আহমেদ সিন্ধ্রির ভাবধারা) এই ভয়টা হিন্দু মানসে সেখালেও ছিল । এখনো আছে। ফলে ভারত বর্ষের হিন্দুদের একত্রিত করার চেষ্টা -যা অজান্তে ওয়ারেন হেস্টিংস শুরু করেছিলেন ১৭৭২ সালে এংলো-হিন্দু আইন তৈরীর মাধ্যমে-তাকে কেন্দ্র করেই হিন্দু ন্যাশানালিজমের বিকাশ হবে। যাদের বর্তমান সন্তান বিজেপি-আর এস এস। সুতরাং হিন্দু মেইন স্ট্রিমের মধ্যে হিন্দু ধর্মকে সম্পূর্ন বাতিল করে, নতুন এনলাইট্মেন্টের চেষ্টা কোন কালেই সফল হয় নি। কারন ইসলামের ভয়ে একটা হাল্কা বৃহত্তর হিন্দু ঐক্য বহুদিন থেকে আছে।

(৩) এংলো-হিন্দু আইন থেকে হিন্দু পারিবারিক আইন- এটা বিশাল সাবজেক্ট। এর দুশো বছরের ইতিহাস পাঠ করলে, ভারতে হিন্দু ধর্ম এবং রাজনীতির স্বরূপ সম্পূর্ন বোঝা যাবে। আমি জটিল বিষয়ে ঢুকছি না। কিন্ত এটা ভুললে চলবে না-হিন্দু রিভাইভালিজমের উৎসমুখ কিন্ত সংস্কৃত কলেজ -কারন বৃটিশ প্রভুরা চাইছেন পারসোনাল হিন্দু আইন-পন্ডিতরা দিতে পারছেন না-কারন আদতেই উনিভার্সাল হিন্দু আইন ইসলামের শরিয়া আইনের মতন কিছু ছিল না। ফলে হিন্দু ধর্মে বিতর্ক এবং সংস্কারের শুরু হয়। কিন্ত সেটা আর যাইহোক এনলাইট্মেন্ট না। বড়জোর খ্রিষ্ঠান ধর্মের প্রটেস্টান্ট মুভমেন্টের মতন। সেটা লঞ্চিং প্যাড হতে পারে।

(৪) এবার আসি বর্তমানে। কোন সন্দেহ নেই ভারতে্র মেইনস্ট্রিম কমিনিউস্ট আন্দোলন বাংলাতেই সব থেকে জোরদার ছিল। এর মূল কারন দুটো। বাংলাতেই প্রথম ভূমি আন্দোলন শুরু হয়। এবং বাংলাতেই সব থেকে বেশী উদারপন্থী হিন্দু তৈরী হয় হিন্দু রিভাইভালিস্ট আন্দোলনের ফলশ্রুতি হিসাবে।

বাংলার কমিউনিস্ট নেতারা ( থুরি সিপিএম নেতারা) সংস্করিত হিন্দু নেতা না মার্ক্সিস্ট প্রগ্রেসিভ নেতা-এটার ঐতিহাসিক বিচার হওয়া প্রয়োজন। শহরের সিপিএম নেতারা হয়ত কিছুটা প্রগ্রেসিভ ছিলেন-কিন্ত আমার দেখা গ্রামের সিপিএম নেতা মানে ওই উদারপন্থী হিন্দু। সিপিএমের ৩৪ বছরে বাংলায় হিন্দুত্ব আরো গ্রথিত হয়েছে। বলতে পারেন তা উদার হিন্দুত্ব। ধর্মের নাগপাশ কিছু মাত্রায় কমে নি। কারন গ্রাম বাংলায় শিল্পের বিকাশ হয় নি। ইন্ডাস্ট্রি আর মার্কেট- তার নিজের প্রয়োজনে ধর্মীয় সমাজকে ভাঙে এবং গড়ে। পুঁজির অভাবে গ্রাম বাংলায় শিল্পের বিকাশ না হওয়া, ধর্মের শিকর সেখানে এখনো গভীর।

উপসংহারে এটাই বলবো নবজাগরন বাংলার হিন্দুদের ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। বিদ্যাসাগর রবীন্দ্রনাথ বিকেকানন্দ নেতাজি যে আদর্শ চরিত্র হিন্দু বাঙালীদের সামনে রেখেছেন, তা ত্যাগী সন্ন্যাসীর। গেরুয়াবাদির। তা রক্ত মাংসের লোভ, যৌনকামনা, যশকামনায় বিশ্বাস করে না। কিন্ত মার্কেট অর্থনীতি হচ্ছে লোভের রাশানালাইজেশন।

নবজাগরন বাংলার ব্যবসা বিমুখতার মূল কারন। দেখুন কোন কোন বাঙালী ব্যবসায় সফল। দেখবেন তারা খুব নীচু ফ্যামিলি থেকে উঠে এসেছে-যাদের ফ্যামিলি এতই গরীব ছিল যে এইসব এনালাইটমেন্টের ট্রাপে পা দেয় নি ।

ফলে বাজার অর্থনীতির সুযোগ নিতে বাঙালী হিন্দু ব্যর্থ হয়েছে। এর কারনে মারোয়ারীরা -যারা ওই এনলাইটমেন্টের ধারে কাছ দিয়েও যায় নি, তারা আজ বাঙালীর প্রভু।

সুতরাং নবজাগরন যে বাঙালীর ক্ষতি করেছে, সেটার বিচার হওয়া দরকার।
আর দিনের শেষে আমরা সবাই সিস্টেমের প্রোডাক্ট। আমি গ্লোবালাইজেশনের সন্তান।

এখন আমি হয়ত সেই সিস্টেম থেকে লাভ করেছি। তার মানে এই না সমগ্র বাঙালী জাতিই লাভ করেছে।

সুতরাং এক্ষেত্রেও দেখতে হবে বিদ্যাসাগর থেকে আমি লাভ করেছি মানেই সমগ্র বাঙালী জাতি লাভ করেছে।

Wednesday, June 24, 2020

আমেরিকা বৃটিশদের হারাল, কিন্ত ভারত হারাল স্বাধীনতা -কেন?

আমেরিকা যেসময় স্বাধীনতার যুদ্ধ লড়ছে, ভারত আস্তে আস্তে বৃটিশ অধীনে চলে যাচ্ছে। কি আশ্চর্য্য, জর্জ ওয়াশিংটন যেখানে ১৭৭৬ সালে প্রবল ঠান্ডায় মাত্র ছ হাজার অপেশাদার সৈন্য নিয়ে লর্ড কর্নওয়ালিশের ৩০ হাজার সেনাকে ট্রেনট্রন এবং প্রিন্সটনের যুদ্ধে ঘোল খাওয়াচ্ছেন, ভারতের নবাবদের ৫০ হাজার সেনা মাত্র তিন থেকে পাঁচ হাজার বৃটিশ সেনার কাছে হেরে যাচ্ছে।
পলাশীর যুদ্ধ না হয় ছিল ষড়যন্ত্র। বক্সারের (১৭৬৪) যুদ্ধে কি হল? মাত্র ছ হাজার কোম্পানীর সেনা ৪০ হাজার নবাবের সেনাকে হারিয়ে দিল!
আলিগড় মুসলিম বিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক ইরফান হাবিব এবং তার ছাত্রী শিরিন মুসভি প্রমান করার চেষ্টা করেছেন মুঘল আমলে ভারতীয়রা বৃটিশ আমলের থেকে অনেক ভাল ছিল। তাদের তথ্যে অনেক গোলমাল। কিন্ত তথ্যের মধ্যে না গিয়েও শুধু এই টুকুই যদি চর্চা করা যায় বৃটিশদের তিন থেকে পাঁচ হাজারের ফোর্স নবাব, মারাঠা , শিখদের ৫০ হাজারের ফোর্সকে অবলীলায় হারাত, তাহলে মুঘল আমলে জনগণ কেমন ছিল-তা নিয়ে কিছু মৌলিক প্রশ্ন ওঠে।
বৃটিশদের অস্ত্র এবং স্ট্রাটেজি নিশ্চয় ছিল অনেক উন্নততর। ভারতের মিলিটারি কমান্ডারদের মধ্যে কেউ জর্জ ওয়াশিংটন ছিলেন না-সম্ভব ও ছিল না। কারন নবাব পুত্ররা ভোগ ব্যসনে বড় হওয়া শাহাজাদা- যুদ্ধবিদ্যার কলা তারা ভাল জানতেন না। তারাই ছিলেন কম্যান্ডার। কিন্ত ওয়াশিংটনের সেনারা আগে যুদ্ধই করেন নি। তার অস্ত্রের অবস্থাও ছিল খারাপ- জনপ্রতি মাত্র আধ পাউন্ড গান পাওডার ছিল! বৃটিশদের সুসজ্জিত সেনাদের থেকে অনেক অনেক পিছিয়ে ছিল তার র‍্যাগট্যাগ কন্টিনেন্টাল ফোর্স। তিনি কি করে তার থেকে পাঁচগুন বড় বৃটিশ সেনাদলকে আমেরিকা থেকে উৎখাত করলেন-সেটা পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে, ভারতের সাধারন জনগন সম্পূর্ন ভাবেই "রাজা", "নবাব", "নিজের দেশ" ইত্যাদি থেকে সম্পূর্ন বিচ্ছিন্ন ছিল। বাদশা নবাব রাজারা প্রজাদের সুখচিন্তক ছিলেন না- তাদের শোষন করতেই উৎসাহ ছিল বেশী। ফলে গদিতে কে এল গেল, তা নিয়ে সাধারন ভারতীয়দের কোন মাথাব্যাথা ছিল না। সিরাজদৌল্লা দেশের লোক, বৃটিশরা বাইরের এই ধারনাই ছিল না সেকালে। তারা জানত নবাব, রাজা মানেই টাক্স আদায়কারি অত্যাচারি।
১৭৭৫ সালের ক্রিসমাসের রাতে প্রচন্ড ঠান্ডায় বরফে ভর্তি ডেলওয়ার নদী পার করে ওয়াশিংটনের ৫ হাজার সৈন্য। এত ঠান্ডা, সেনাবাহিনীর কয়েজন মারা যায়, অধিকাংশর সেনার হাত পা অবশ। তবুও তারা এগোচ্ছেন, ভোর রাতে ট্রেন্ট্রনে হানা দেবেন অতর্কিতে। তিনমাসের মাইনে বাকী অনেকের। প্রচন্ড ঠান্ডায় নদী পার করতে গিয়ে সেনাদের প্রচন্ড বাজে হাল দেখে, ওয়াশিংটন ভাবলেন, লাভ নেই। আবার ফিরে যাওয়া যাক। কিন্ত তার সেনারাই বাধ সাধল। বৃটিশদের তাড়ানোর এই সুযোগ। তারা তখন নতুন দেশ, নতুন স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর। যেখানে তারাই সিদ্ধান্ত দেবে, রাজা থাকবে না। ট্রেনট্রনের যুদ্ধে পরাজয় থেকেই বৃটিশদের শেষের শুরু হয়।
সেখানে পলাশী যুদ্ধের অবস্থা দেখুন। যদিও ইতিহাসে আমাদের পড়ানো হয় মীরজাফরের ৫০,০০০ সেনা যুদ্ধে অংশ নিতে চায় নি মিরজাফরের নেতৃত্বে -বাস্তব হচ্ছে তারা মুর্শিদাবাদ থেকে পলাশী মার্চ করতেই চায় নি। কারন নবাব মাইনে দিতে পারছিলেন না। যাদের যুদ্ধ করার কোন ইচ্ছাই ছিল না। নবাব শেষ মুহুর্তে মাইনের ব্যবস্থা করে অবস্থা সামাল দেন। কিন্ত বাস্তব হচ্ছে মীরজাফর জানতেন, সেনাবাহিনীর যুদ্ধ করার ইচ্ছা নেই। মুর্শিদাবাদে যখন সিরাজকে বন্দি করে আনা হয়, মুর্শিদাবাদের লোক নবাবের সেই হাল দেখে , বিদ্রোহ করে নি। তারা মজা লুঠছিল- ভাবছিল এক অত্যাচারির হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে, এবার নতুন কে আসবে!
মোদ্দা কথা সেই সময় রাজা/নবাররা যেমন প্রজাদের শোষন করতে ব্যস্ত থাকতেন, সাধারন প্রজা বা সেনারাও "দেশ" বাঁচাতে যুদ্ধ করতেন-এমন কোন ভাবনা ছিল না। অধিকাংশই ছিল পেশাদারি সেনা- মূলত আফগানিস্থান, রাজপুতানার লোক।
ভারত কিভাবে বৃটিশরা দখল করল- তার ইতিহাস ভারতে পড়ানো হয় উলটো ভাবে। দেখানো হয় বৃটিশরা ছিল বুদ্ধিমান ষড়যন্ত্রকারী। আসলে ওসব কিস্যু না। অধিকাংশ নবাবই ছিল জনবিচ্ছিন্ন অত্যাচারি। তাদের সেনাদের ও ইচ্ছা ছিল না যুদ্ধ করার। বৃটিশরা সেই সুযোগই নিয়েছে। ভারতের যদি সেই সময় আদিকালের গণতন্ত্রও ( ষোড়জনপদের সময়ে যা ছিল) থাকত, তাহলেও গুটিকয় বৃটিশদের তারা রুখে দিতেন।
যেমন দিয়েছিলেন জর্জ ওয়াশিংটন।
ভারতের ইতিহাসের পুনর্নিমান দরকার। সত্যিটা সামনে আসলেই ভাল।

Tuesday, June 2, 2020

বর্নবাদ বিরোধি আন্দোলন ?? রিয়ালি?

বর্নবাদ বিরোধি আন্দোলন ?? রিয়ালি?
- বিপ্লব ৬/২
জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আমেরিকাতে যে "সোকল্ড" বর্নবাদ বিরোধি রায়োট ( মতান্তরে আন্দোলন) চলছে , তাতে সব থেকে বেশী লাভ ট্রাম্পের। বর্নবাদ বা বর্নবাদবিরোধি দলের লোকজন সুইং ভোটার না। সুইং ভোটার হচ্ছে তারা, যারা কিছুটা বর্নবাদি, আবার কিছুটা বর্নবাদ বিরোধি। সবটাই হাইব্রিড। অর্থনীতি, চাকরি তাদের মূল লক্ষ্য। তারা চায় সুন্দর সুস্থির চাকরিভর্তি আমেরিকা।
জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু সবাই কে চোখ দিয়ে দেখাতে পারত, আমেরিকার জাস্টিস সিস্টেম কত পুরাতন,অচল পয়সা। এটা লিব্যারালদের সামনে একটা বড় সুযোগ ছিল সবাইকে দেখানোর যে ক্রিমিন্যাল জাস্টিস সিস্টেম আমেরিকাতে সম্পূর্ন ধ্বংসপ্রাপ্ত। এটার নতুন করে শুরু হওয়া দরকার।
সেসব না করে লিব্যারাল রাজনীতিবিদরা কেসটাকে পুরো রেসিজমের ঝোলে টানল। এতে তাদের লস বই লাভ দেখতে পাচ্ছি না।
- রেসিজিম নিয়ে খেলা করা, ভারতের ধর্ম নিয়ে খেলার সমান। সব শহরগুলিতে কালো গুন্ডারা লুঠপাট চালালো। সরি, এরা রাগী, বিদ্রোহী, এক্টিভিস্ট কেউ না। ধান্ধায় থাকা লুঠেরা। ফলে যে আন্দোলনটা একটা ভেঙে পড়া পুলিশ সিস্টেমের বিরুদ্ধে হতে পারত, তার বদলে আমেরিকা আবার পোলারাইজড। দুই দলে বিভক্ত।
- এক্ষেত্রে যুক্তি দিয়ে রেসিজমের কেস প্রতিষ্ঠা করা মুশকিল। ডেরেক বলে যে বদমেজাজি পুলিশ অফিসার এই খুন করেছে, সে এর আগেও ল্যাটিনো, রেড ইন্ডিয়ান গুলি করে মেরেছে। তার বিরুদ্ধে এমন ১০ টা কেস আছে। কিন্ত সব ক্ষেত্রেই তদন্ত করে দেখা গেছে-ডেরেকের দোষ নেই। সে "ক্রিমিন্যাল" মেরেছে। তার কোন সাসপেনশন বা শাস্তি হয় নি। এছারা এই ডেরেক একটা নাইট ক্লাবে পার্ট টাইম সিকিউরিটির কাজ করে। এদের বাউন্সার বলে। আমেরিকার নাইট ক্লাব মানে তরুন তরুনীরা নেশা করে নাচে। বাউন্সারের কাজ, কোন ছেলে জোর করে মেয়েদের গায়ে হাত দিলে, তাদের ঘার ধাক্কা দিয়ে ক্লাব থেকে বার করে দেওয়া। ইন্টারেস্টিং যে এই ক্লাবে কালো যুবক যুবতীদের ভীর বেশী। ডেরেক যদি এতই রেসিস্ট হয়, এই ক্লাবের মালিক তাকে ১৬ বছর এই
সেন্সিটিভ কাজে রাখল?? শুধু রাখেই নি সেই ক্লাব মালকিনের মতে ডেরেকের ওপর তার ভরসা সব থেকে বেশী।
বেসিক্যালি যেটা ওই ক্লাবের মালকিন বলছে, এবং মিনিয়াপলিসের পুলিশ চিফ বলছে না- মোটামুটি সত্য এই যে ডেরেক হচ্ছে একজন এফেক্টিভ " পুলিশ"। কারন সে পেটাতে পারে। পেশী শক্তির ব্যবহার করে। এর জন্য দেখা যাচ্ছে ডেরেক সফল।
কেউ বলছে না, পুলিশ হিসাবে ডেরেকের সাফল্যটাই আমেরিকা সহ তৃতীয় বিশ্বের পুলিশের মূল সমস্যা। সবাই পুলিশ বলতে বোঝে শক্তির ব্যবহার। যে গিয়ে পিটিয়ে কাজ করে নেবে।
এখানেই "পুলিশ" মধ্যযুগীয় পেয়াদা। পুলিশ কাউন্সেলর না। তার কাজ পেশী প্রদর্শন। মারা। ভয় দেখানো। পুলিশের এই ভূমিকা যদ্দিন থাকবে, বর্নবাদ বা রেসিজমের ভূত তাড়া করে লাভ নেই। পুলিশের হাতে বেঘোরে আরো অনেক প্রান বলিদান হওয়ার অপেক্ষায় লাইনে আছে।
বর্নবাদ বিরোধি আন্দোলন চলুক। ক্ষতি নেই। কিন্ত কেউ যদি বলে আমেরিকাতে বর্নবাদ বড্ডবেশী -আমি আপত্তি করব। আমেরিকার থেকে অনেক বেশী বর্নবাদি ভারতীয় ( হিন্দু মুসলমান সবাই), জাপানি, জার্মান এবং বৃটিশ লোকেরা। সুন্দর পিচাই, সত্য নাদেলা আমেরিকার সব থেকে বৃহত্তম কোম্পানীর সিইও হচ্ছেন। এটা এরা ভারতেও পেতেন না। সেখানে সিইও হত গুজরাতি বা মারোয়াড়ি মালিকের কোন অযোগ্য আত্মীয়।
আপনে বলতেই পারেন, এটা ওপর মহল। নীচে দেখুন মশাই। তাহলে এই তথ্যটাও রাখুন। আমেরিকাতে নাইজেরিয়ান অভিবাসীদের মধ্যে মাস্টার ডিগ্রির হার আমেরিকার গড়ের তিনগুন, তাদের ফ্যামিলি ইনকাম, আমেরিকার গড় ইনকামের ৩০% বেশী ( ভারতীয় অভিবাসীদের আয় আমেরিকান গড়ের প্রায় ৬০% বেশী)। নাইজেরিয়ানদের ৫০% মুসলিম এবং ১০০% কালো। যেসব বাঙালী ফেসবুকে আমেরিকার বিরুদ্ধে ডায়ালোগ দিচ্ছে, তারা যেন ভুলে না যায়, কোলকাতা বা দিল্লীতে নাইজেরীয় ছাত্র ছাত্রীদের কেউ বাড়ি ভাড়া দিতে চায় না। ভারত এতটাই রেসিস্ট।
আমেরিকাতে ব্ল্যাক পপুলেশনের দুটো ভাগ। যাদের পূর্বপুরুষরা দাশ ছিল। এরা হচ্ছে খাঁটি আদি কালো। আর যারা সম্প্রতি আফ্রিকা বা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে এসেছে। মনে রাখবেন ওবামা দ্বিতীয় প্রজাতিভুক্ত। খাঁটি কালো না। এই দ্বিতীয় কালো চামড়ার লোকেরা ভারত বাংলাদেশীদের মতন এখানে উন্নতি করেছে। নাইজেরিয়ানদের উদাহরন দিলাম। আমেরিকাতে এত বর্নবাদ থাকলে ভারতীয় নাইজেরিয়ানরা এখানে কলা খেত। মাইক্রোসফট গুগুল চালাত না।
সমস্যা হচ্ছে সেই ১২% কালোদের নিয়ে যাদের পূর্বপুরুষরা দাস ছিলেন। এত সরকারি সাহায্য, এফারমেটিভ একশন, সরকারি চাকরি কিছু দিয়েই এদের টেনে তোলা যাচ্ছে না। কিছু হলেই বলবে এর কারন সিস্টেমেটিক রেসিজম। তাহলে ভারতীয়, নাইজেরিয়ান বাংলাদেশীরা খুব সাদা চামড়ার নাকি?
সমস্যাটা আমি এবার খোলাখুলি বলি। আমার ছেলের বয়স যখন এগারো, ক্লাস ফাইভে পড়ে- একদিন ধরলাম আচ্ছে তোর এই সাবজেক্টে গ্রেড খারাপ হচ্ছে কেন? বলে টিচার রেসিস্ট। আমাকে পছন্দ করে না।
আমি ত শুনেই আঁতকে উঠেছিলাম। কারন নিজের ব্যর্থতার দায় ঢাকতে যদি ছেলে এই বয়স থেকেই রাজনীতি শেখে, তাহলে ভবিষ্যত ঝড়ঝ্ররে। যাগগে সেই যাত্রায় ওকে বল্লাম, যদি সেটা সত্যিও হয়, যে শিক্ষক রেসিস্ট, তাহলেও অজুহাত দিয়ে লাভ নেই। কারন কোন শিক্ষক যদি তোমার প্রতি কঠোর হয়, সে আসলেই তোমাকে আরো ভাল করার জন্য উৎসাহিত করছে। সোজা কথা ব্যর্থতা নিজের কাঁধে নিতে শেখ। যে কাঁধ নিজের ব্যর্থতার দায় নিতে পারে না, সেই কাঁধ কোনদিন শক্ত হবে না।
কিন্ত সেদিন একটা ঝটকা খেলাম। বাড়িতে ত কোনদিন রেসিজম ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয় না। তাহলে একজন সাদা শিক্ষক রেসিস্ট হতে পারে এটা ও কোথায় শিখল?
এটা বুঝলাম কিছুদিন আগে। আমাদের কাউন্টিতে স্কুল পরিচালন সমিতি নিয়ে বিবাদ একদা বর্নবাদে পৌছায়। ত আমার এক বন্ধু বিবদমান দুইপক্ষকে এক টেবিলে বসিয়ে ছিল। সেখানে আমিও গেলাম। দেখালাম, দুইজন কৃষ্ণাঙ্গ মা দাবী করছে, তাদের ছেলে মেয়েরা ভাল গ্রেড পায় না, কারন সাদা শিক্ষকরা রেসিস্ট।
অর্থাৎ এইসব ফ্যামিলিতে ছোটবেলা থেকেই শেখানো হচ্ছে, তোমাদের কিছু হচ্ছে না-কারন রেসিজম। আমার ছেলের মতন, তাদের ছেলে মেয়েরাও আসলে পড়াশোনাতে ফাঁকি দিচ্ছে-কিন্ত তারাও দেখছে,অহ কি মজা! ফাঁকি দেওয়া সত্ত্বেও রেসিজমের কার্ড ফেলতে পারলেই কেল্লা ফতে। বাড়ির ফুল সাপোর্ট। তারপর একদিন ড্রাগ নিয়ে উচ্ছন্নে যাবে। কারন আশেপাশের পরিবেশটাই তাই।
বুঝলাম, আমার ছেলে কোত্থেকে এটা শিখছিল।
কিছুদিন আগে একটি কালো ছেলে ইন্টার্ন হিসাবে যোগ দেয়। হঠাৎ দেখি তিন মাস বাদে সে পদত্যাগ পত্র পাঠাচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম কি হল? সে বলে তার মনে হচ্ছে যেহেতু আশেপাশে সবাই সাদা, সবাই তার পেছনে কথা বলছে। সে একসময় মানল যে এটা খুব সম্ভবত তার মানসিক পরিস্থিতি। বাস্তবে হয়ত তেমন কিছু হচ্ছে না।
এই "ভিক্টিম" ভাবতে শেখা কোভিড-১৯ এর মতন সংক্রমক। আমি বলছি না, তারা বর্নবাদের শিকার না। কিন্ত যদি তারা বর্নবাদের শিকার হয়ও, নিজের ফেলিওরের জন্য বর্নবাদকে দোষ দিলে হিতে বিপরীত হবে। এটাই বাস্তব।
ভিক্টিম সাজার রাজনীতি শুরু হয়েছিল ক্রিষ্ঠানদের থেকে। যাদের হাতে গ্রীস এবং রোমান সভ্যতার উচ্চ দার্শনিক প্রতিষ্ঠানগুলি ধ্বংস হয়। ইসলাম, মার্ক্সবাদ, পোষ্টমড়ার্ন লিব্যারালিজম-সব কিছুই মানুষকে ভিক্টিম ভাবতে শেখায়। যা খুব ডেঞ্জারাস।
আমি বলছি না মালিক শ্রমিককে শোষন করে না। কিন্ত যদি শুধু শোষনের দিকটাই একজন শ্রমিক দেখে এবং সেটা ভেবে কোম্পানীর জন্য কাজ না করে, তাহলে অচিরে সেই কোম্পানীও ধ্বংস হবে এবং সেও বেকার হবে। যেটা পশ্চিম বঙ্গের শিল্প ধ্বংসের আসল সত্য।
মাইন্ডসেট খুব গুরুত্বপূর্ন। বর্নবাদ, শোষন সবই সত্য। কিন্ত শেষ সত্য না। শেষ সত্য হচ্ছে মানুষকে এর মধ্যে থেকেই উঠতে হবে । বাস্তবের পথে গোলাপের কাঁটাই থাকে, ফুল থেকে না। আর যারা রাস্তায় কাঁটা আছে, তাই এই রাস্তা ক্রস করা সম্ভব না বলে, তাদের জীবনে কোনদিন উন্নতি হবে না।