Thursday, November 10, 2022
বিজ্ঞান এবং ধর্ম ঃ সমন্বয় না সংঘাত ?
Saturday, September 24, 2022
আশেপাশের নারীবাদি ইতিহাস-
আশেপাশের নারীবাদি ইতিহাস----
Friday, September 9, 2022
রাণীকাহিনী
রাণীকাহিনী
-বিপ্লব পাল, ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২২(১)
বৃটেনের রানীকাহিনীর সব থেকে আকর্ষক দিক-অন্যান্য দেশে রাজা, বৃটেনে রাণী কেন? আরো খোলসা করে বললে, একটা দেশের রাজকন্যা-তার বাবার রাজত্ব পাচ্ছেন- এটা বৃটেনেই দেখা যায়। ভারতের ইতিহাসে মাত্র চার বছর রিজিয়া সুলতানা শাসক ছিলেন। মহাভারতে শিখন্ডী সব থেকে ভাল এবং অভিজ্ঞ সেনানায়ক হওয়া সত্ত্বেও তিনি দ্রুপদ রাজ্যের দাবিদার ছিলেন না। বা তাকে তখন পান্ডব পক্ষের সেনাপতি নির্বাচন করা হয়, কৌরবরা মেনে নেয় নি।
পৃথিবীর সব দেশেই রাজকন্যাদের ভবিষ্যত বাপের রাজত্ব ছেরে, অন্য রাজ্যের রাণী হওয়া। সে রাণী কিন্ত শাসক নন। বৃটেনে "রাণী" অফিশিয়াল শাসক। তার পিতা বা মাতা যদি বৃটেনের কিং বা কুইন হন, তবেই তিনি, কুইন পদের দাবিদার। রাজপরিবারে বিয়ে করে কুইন হওয়া যায় না। রাজা যদি বৃটেনের শাসক হন, যেমন এখন হলেন চার্লস (৩), তার স্ত্রী ক্যামিলা কিন্ত কুইন নন। কুইন কনসর্ট।
কুইন এলিজাবেথ ও কিন্ত বৃটিশ রাজপরিবারের বিবাহিত স্ত্রী না। তিনি ছিলেন রাজা জর্জ-৬ এর কন্যা। জর্জ-৬ এর তিন কন্যা। তার মধ্যে এলিজাবেথ-২ বড়বোন। তাই বৃটেনের সিংহাসন গেছে তার কাছে। তার স্বামী ফিলিপ বরং রাজপরিবারে বিয়ে করেছেন। তাই কুইনের স্বামী-কিং নন। ফিলিপকে উপাধি দেওয়া হয়েছিল ডিউক অব এডিনবরা। শুধু তাই না। পাবলিক সমক্ষে ফিলিপকে মাথা নত করতে হত কুইন এলিজাবেথের সামনে। চলতে হত তার পেছনে পেছনে। অবশ্যই রাজ সিংহাসনে এলিজাবেথ বসার পর। ফিলিপ এসব মেনে নিতে পারেন নি। মনের দুঃখে রাজপ্রাসাদ ছেড়ে এক বছর বৈরাগী হয়ে পৃথিবী ঘুরেছেন। আবার ফিরে এসেছেন তার ভালোবাসার নারীর কাছে। যাইহোক ঠিক একই কারনে ডায়না কোন দিনই বৃটেনের রানী পদের দাবীদার ছিলেন না। তিনি হতেন কুইন কন্সর্স্ট । যিনি কিন্ত শাসক নন।
এতটা কিচ্ছার দরকার ছিল না। আমার লেখাটা ছিল রানীর শাসন নিয়ে। পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র বৃটেন আর রাশিয়ার রোমানভ বংশের জারের ফ্যামিলিতেই রানীর শাসন ছিল।
আর কোথাও পুরুষতন্ত্রের জন্য, রাজকন্যা বা রানীরা শাসক হতে পারতেন না। হ্যা ঝাঁসির রানী লক্ষীবাই বা চীনের কুইন মাদার দোগের কি- এরাও শাসক ছিলেন। কিন্ত স্বীকৃত শাসক না। নিজের নাবালক পুত্রকে নামেমাত্র রাজা করেই এরা পর্দার পেছনে শাসন করেছেন। কারন পুরুষতন্ত্র নারী শাসককে মেনে নেয় নি। প্রায় কোন দেশেই না। বাংলার ইতিহাসই দেখুন। কোন নারী শাসক নেই। শেখ হাসিনা না মমতা ব্যানার্জি এরা আধুনিক গণতন্ত্রের ফসল। কিন্ত রাজতন্ত্রে রাজকুমারী রাজা হচ্ছেন- এটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কোথাও ছিল না। ব্যতিক্রম শুধু বৃটেন এবং রাশিয়া-বা আরো বিস্তারিত বললে পূর্বের শ্লাভ রাজ্যগুলির মধ্যে।
কিন্ত কেন? শুধু তাই না। আমার ইংল্যান্ডের ইতিহাস পড়ে এটাই মনে হয়েছে- বৃটেন যে গোটা পৃথিবী শাসন করেছে-এর মূল কারন বৃটেনের মাতৃতান্ত্রিক সমাজ। যেখানে মেয়েরা শাসক হতে পারে। যার জন্য ১০০,০০০ বৃটিশ, ৩০ কোটি ভারতীয়কে শাসন করেছে। কেন? এটা আমার নিজস্ব মতামত। আমি পরে ব্যখ্যা করছি।
(২)
বৃটেনের ইতিহাসে রানীর শাসন বহুপুরাতন। যেই যবে থেকে রোমান ঐতিহাসিকরা ইংল্যান্ডের ইতিহাস লিখছেন। প্রথম শতাব্দিতে বৃটেন ছিল রোমের অধীন। ইংল্যান্ড বিভক্ত ছিল অসংখ্য করদ রাজ্যে। তারা প্রায় রোমের অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করত। এমন এক করদ রাজ্যের রাজা ছিলেন কসুতোগাস। আসিনি উপজাতিদের সর্দার। তার স্ত্রী বোদিকা। তার দুই কন্যা। পুত্র ছিল না। রাজা কসুতোগাস রোমের সাথেই ছিলেন। তিনি উইল করে যান তার মৃত্যুতে তার বড় কন্যা হবে, সেই রাজ্যের শাসক। রোমের লোকাল কনসাল তা মানে নি। উলটে তার দুই কন্যাকে ধর্ষন করা হয়। রানী বোদিকাকে চাবুক মারা হয়। বোদিকা আত্মসমর্পন করেন নি। এই ঘটনায় বৃটেনের সব রাজ্যের শাসকরাই বিদ্রোহী হয়ে ওঠে রোমের বিরুদ্ধে। তারা বোদিকার নেতৃত্বে প্রথম বারের মতন ঐক্যবদ্ধ বিদ্রোহী সেনাবাহিনী গঠন করে। সেটিই ছিল ইতিহাসের প্রথম ইংলিশ সেনাবাহিনী। বোদিকা রোমের সাথে যুদ্ধে পরাস্ত হোন ('৬১ খৃষ্টাব্দ) ।
কিন্ত এই বিদ্রোহের ঘটনা সুদূরপ্রসারী। ইংল্যান্ডের জনমানসে, রোমান পিতৃতান্ত্রিক শাসকদের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের বিদ্রোহী জনগনের কাছে "মাতৃতান্ত্রিক শাসন এবং রাজকুমারীদের উত্তরাধারিকার" একটা বড় ইস্যু ছিল। ফলে ইংল্যান্ড যখন রোমান সাম্রাজ্য থেকে মুক্তিপেল- ইংল্যান্ডের আদিবাসী আইনে রাজকুমারীদের শাসক হওয়া কিন্ত ট্রাডিশন হয়ে গেছে। সেটা বোদিকার ওই বিদ্রোহকে স্বরণ করেই। এবং তারপর ও ইংল্যান্ডে ভাইকিং দের রেইড চলতেই থাকবে। এবং ভাইকিং রাজারাও রাজকুমারীর উত্তরাধিকার মেনে নেয়। যদিও ভাইকিংদের মধ্যে এই চল ছিল না।
কিন্ত প্রশ্ন হচ্ছে সেক্ষেত্রে ঝাঁসির রাণী লক্ষীবাইএর ক্ষেত্রে বৃটিশরা উলটো পথে গেল কেন? এত সেই বৃটেনের বিরুদ্ধে রোম যা করেছিল, তারই ফ্ল্যাশব্যাক। কেননা ঝাঁসির রাজা আমৃত্য বৃটিশ অনুগতই ছিলেন। সেক্ষেত্রে ঝাঁসির রানীর শাসন কোম্পানীর লোকের মানে নি কেন? সোজা উত্তর হচ্ছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী সেই রাজ্য বেচে আরো বেশী লাভের আশায় ছিল। যাইহোক ১৮৫৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর এসব দুরাচারের কারনেই রাণী ভিক্টোরিয়া কোম্পানীর হাতে আর ভারতের শাসনভার রাখেন নি। নিজের হাতে নেন।
এবং একটা হার্ড ট্রুথ হচ্ছে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসনে ভারতের জিডিপি ছিল নিম্নগামী। যবে থেকে ভারতের রানীর শাসন শুরু হয়, তবে থেকে ভারতের লোকেরা অনেক বেশী আইন সুরক্ষা পেয়েছে এবং জিডিপি গ্রোথ ও এই সময় আবার পজিটিভ হয়। ভারতের বৃটিশ কলোনিয়াল ইতিহাসের দুটো অধ্যায়। একটা রানীর শাসনের আগে। কোম্পানীর শাসন। যে সময় লুঠ হয়েছে অবাধে। ভারতের জিডিপি নেগেটিভে ছিল। অন্যটা রাণীর শাসন। যেখানে জিডিপি গ্রোথ ছিল। আইনি সুরক্ষা ছিল অনেক বেশী। ডেটা থেকে খুব পরিস্কার আলাদা করা যায় এই দুই অধ্যায়। মনে রাখবেন ওই সুরক্ষা থাকার কারনেই, রানীর শাসন শুরু হওয়ার পরেই একমাত্র টাটা বা বিড়লারা শিল্পপতি হিসাবে উঠতে থাকেন। যদিও অর্থের সোর্স ছিল চীনে আফিম বেচা।
আপনি বলতেই পারেন তাতে কি? ভারতীয়দের কি অধিকার ছিল রানীর শাসনের বিরুদ্ধে কিছু বলার? কিন্ত সেই প্রশ্ন ত আজও উঠবে। বর্তমানেও দিল্লী বা কোলকাতার শাসকদের সমালোচনা করা বিপজ্জনকই বটে!
তবে কলোনিয়াল শাসন ভাল না খারাপ এটা এই প্রবন্ধের আলোচ্য না। আমার একটা উত্তর দেওয়া বাকি আছে। কেন বৃটেনে এই রানীর শাসনের ঐতিহ্য, এই জাতটিকে মাস্টাররেস করে তোলে।
বৃটেনে রাজকুমারী এবং মেয়েদের প্রায় ছেলেদের সমানই শিক্ষা দেওয়া হত। তলোয়ার খেলা, ঘোড়ায় চড়া বা শিক্ষা। প্রায় সবক্ষেত্রেই মেয়েরা ছেলেদের সমকক্ষ ছিল। সেটা বৃটেনের সেই আদিবাসী সমাজ থেকেই চলে আসছে।
যে দেশে মায়েরা শিক্ষিত এবং যুদ্ধবিদ্যায় স্কিল্ড হবে, সেই দেশে বীর এবং নেতার সংখ্যাও বেশী হবে। যার জন্য ইংল্যান্ডে নেতার অভাব কখনো হয় নি ইতিহাসে ( তবে আজ হচ্ছে! )। বৃটিশরা যে বীরত্ব এবং নেতৃত্বে অনেক এগিয়েছিল-সেই নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কারন ক্লাইভ যখন ৩০০০ সৈন্য নিয়ে সিরাজকে আক্রমন করেন-তখনো তিনি জানেন না মীরজাফর কোন দলে। আদৌ গদ্দারি করবে কি না। ফলে পলাশী যুদ্ধের দুপুর বেলা থেকে, তার সৈন্যরা মীরজাফরের সৈন্যদলকেও আক্রমন করে ছত্রভঙ্গ করে। মীরজাফর গদ্দারি করবেই এই ভরসাই ক্লাইভ আক্রমন করেন নি। করেছিলেন নিজেদের উন্নত কামান এবং যুদ্ধবিদ্যার জোরেই। ক্লাইভের সমকক্ষ স্ট্রাটেজিস্ট এবং সেনাপতি-সেই সময় ভারতে কেউ ছিল না। পলাশীর যুদ্ধের আগে দাক্ষিনাত্যে ক্লাইভ আরো দুটো যুদ্ধ জিতেছেন। যেখানে তার সেনা বাহিনী ছিল নবাবাদের থেকে অনেক ছোট। এবার প্রশ্ন করুন লর্ড ক্লাইভের মা কে ছিলেন?
তার মায়ের নাম রেবেকা। যদিও ক্লাইভ ম্যাঞ্চেস্টারে তার মাসি এবং মেসোমশাইএর কাছে বড় হয়েছিলেন। তিনি তার মাসীর কাছ থেকেই প্রাথমিক যুদ্ধবিদ্যার পাঠ নেন। এবং সমস্ত স্কুল জীবনে মারপিট করতে অভ্যস্থ ছিলেন। যাকে বলে এডিটেক্ট টু ওয়ার । এটি এসেছিল, তার মাসীর কাছ থেকেই।
আমি জানি ভারতে বৃটিশ উপনিবেশের ইতিহাস যেভাবে পড়ানো হয়, তাতে ভারতীয়রা লর্ড ক্লাইভ ইত্যাদি চরিত্রগুলিকে ঘৃনা করতে শেখে। তার নিশ্চয় সঙ্গত কারন আছে। কিন্ত কেউ একবার ও ইতিহাসে খোঁজ নেয়-কি করে ১০০,০০০ বৃটিশ ৩০ কোটি ভারতীয়কে দাবিয়ে রেখেছিল? কি করে ক্লাইভ প্রায় সব যুদ্ধে অনেক কম সেনানী নিয়ে নবাবদের বিরাট বিরাট বাহিনীকে হারিয়েছেন?
ক্লাইভ এবং তার সমসাময়িক বৃটিশ জেনারেলদের যুদ্ধকুশলতা বুঝতে ইতিহাসের অনেক গভীরে যেতে হবে। কিন্ত মনে রাখা দরকার এইসব যুদ্ধ বিশারদ ক্লাইভদের জন্যেই গোটা বিশ্বে বৃটিশ সাম্রাজ্য ছড়িয়ে যায় । কারন দেশীয় রাজারা বা নবাররা যুদ্ধে বা রাজনীতিতে ক্লাইভদের সমকক্ষ ছিলেন না। কিন্ত কেন ?
কারন ক্লাইভ সহ বৃটিশ জেনারেলরা আসতেন বৃটেনের এলিট ফিউডাল পরিবারগুলি থেকে। যেখানে তারা বীরত্বের শিক্ষা, যুদ্ধের শিক্ষা মা বা মাসী পিশীদের কাছ থেকে পেতেন। মেকস এ লটস অব ডিফারেন্স।
ইতিহাসের গভীরে গেলে অনেক কিছুই শেখা যায়। আর শুধু স্কুলের বই পড়লে কিছু কিছু লোকের প্রতি একগাদা ঘৃনা তৈরী হবে-যা সম্পূর্ন সিস্টেম ম্যানুফাকচারড।
Sunday, August 14, 2022
স্বাধীনতার ৭৫ বছর - "ভারত" বিশ্বের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক পরীক্ষা
যখন ছোট ছিলাম, ভারতে ছিলাম, ভারতের ইতিহাস বই পড়তাম, তখন এক ভারতকে চিনতাম।
এখন বয়স হল, ভারতের বাইরে আছি দীর্ঘদীন। পৃথিবীকে যত চিনছি, যত বিশ্বের ইতিহাস আর ভূগোলকে জানার সুযোগ হচ্ছে, অন্য ভারতকে আবিস্কার করছি প্রতিদিন। হতে পারে সেটা আমেরিকার লেন্সে, দর্শনের মাইক্রোস্কোপে আর ইতিহাসের দূরবীক্ষনে । কিন্ত প্রতিনিয়ত এক অদ্ভত দেশকে আবিস্কার করি! সত্যিই, এমন দেশটি কোথাও গেলে পাবে নাকো তুমি!
ভারত বা যেকোন দেশই একটা "স্যোশাল কনট্রাক্ট"- বিবাহের মতন জুটি বাঁধা। বিয়ে টেকাতে যেমন প্রতিনিয়ত সবাই কিছুটা নিজেদের ব্যক্তিস্বাধীনতা বিসর্জন দিই, নিজস্ব স্বত্ত্বা বিসর্জন দিচ্ছি, নানাবিধ কম্প্রোমাইজ করে থাকি- এবং তার বিনিময়ে বিবাহ থেকে অনেক কিছুর নিরাপত্তা পাই। দেশের সাথে তার জনগনের সম্পর্ক ও তাই। কিন্ত আরো অনেক জটিল স্কেলে। একটা দেওয়া নেওয়ার সম্পর্কের চুক্তি। দেশের জন্য সবাইকেই কিছু না কিছু ত্যাগ করতে হয়। বিনিময়ে দেশ দেবে। কিন্ত এই দেওয়া নেওয়ার সম্পর্কে ফাঁকিবাজি বড্ড বেশী।
ঐক্যবদ্ধ অখন্ড ভারতের ধারনা মহাভারতে বারংবার উচ্চারিত। কেন? কারনটা মহাভারতের লেখক বারংবার বলেছেন। এক, তাতে রাজ্যগুলির মধ্যে যুদ্ধ হবে না। শান্তি বজায় থাকলে, দেশে সমৃদ্ধি আসবে। বহিঃশত্রুর আক্রমন থেকে ভারত নিরাপদ থাকবে। এই প্রয়োজনেই ভারতের উৎপত্তি এবং বর্তমান অস্তিত্ব। ভারতের মিলিটারি বাজেট জিডিপির ২%। আজ ভারতের প্রতিটা রাজ্য যদি স্বাধীন রাষ্ট্র হয়, তাহলে প্রতিটা রাজ্যকে আলাদা মিলিটারি রাখতে হবে। এবং তাতে সামরিক বাজেট হবে জিডিপির ১০%+ । কিন্ত তাতেও নিরাপত্তা অনেক অনেক বেশী কমবে। ইউক্রেনের যুদ্ধ প্রমান করে দিয়েছে, বড় শক্তিশালী দেশের নাগরিক না হলে, ছোট দেশের নাগরিকরা নিরাপদ না। ইউ এন এক ঠুটো জগন্নাথ দর্শক। কোন ছোট রাষ্ট্রকে বড় রাষ্ট্রের আগ্রাসন থেকে নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষমতা তার নেই।
কিন্ত মহাভারত এক উপন্যাস। অখন্ড ভারত ইতিহাসে প্রথম বার তৈরী হল আলেক্সান্ডারের আক্রমন থেকে শিক্ষা নিয়ে। আলেক্সান্ডারের আক্রমন প্রমান করে দিল, বহিঃশত্রুর আক্রমন থেকে বাঁচতে অখন্ড ঐক্যবদ্ধ ভারত দরকার। ফলে গোটা এশিয়াতে গ্রীক সাম্রাজ্য রাজত্ব করেছিল আলেক্সান্ডারের মৃত্যুর পরও দুশো বছর। কিন্ত ভারতে রইল ভূমিপূত্রদের মৌর্য্য সাম্রাজ্য। কারন চানক্য বা বিষ্ণুগুপ্ত বুঝেছিলেন ভারত নিজে "সাম্রাজ্য" না হলে, এই ভূখন্ড অন্য সাম্রাজ্যের অধীন হবে।
চানক্যের রাজনৈতিক শিক্ষার আরেক সফল প্রয়োগ দেখায় চীনের কুইন সাম্রাজ্য। ২৪৭ খৃঃপূর্বাব্দে তারা বাকি পাঁচটি রাজ্যকে হারিয়ে গোটা চীনকে একটি অখন্ড রাষ্ট্রের আওতায় আনে। ফলে চীন দীর্ঘদিন পর্যন্ত- ইউরোপিয়ানদের আগমনের আগে পর্যন্ত পৃথিবীর সব থেকে সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসাবে টিকে থাকে। এবং তারা আবার পৃথিবীর সব থেকে শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসাবে নিকট ভবিষ্যতে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে।
কিন্ত ভারত ভুলে যায় বিষ্ণুগুপ্তকে। ফলে চানক্যের ভবিষ্যতবানী সফল করে উত্তর-পশ্চিমের দুর্ধ্বষ্ব পাহাড়ি যোদ্ধারা ইসলামের ধর্মজয়ে ধ্বজ্জা উড়িয়ে ভারত আক্রমন করে। সফল ভাবে তারা ভারতের রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করে। বিচ্ছিন্ন ভারতের ক্ষমতা ছিল না-সেই শক্তিকে রুখে দেওয়ার। ফলে প্রথমে মধ্য এশিয়ার উপজাতি, পরে ইউরোপিয়ান বনিকদের হাতে এই অঞ্চলের লোকেরা দীর্ঘদিন পদানত ছিল। যেমন অধিকাংশ মুসলমান শাসকরা বিদ্রোহের ভয়ে স্থানীয় লোকেদের ঘোড়া, অস্ত্র এবং সৈনিক রাখতে দিত না। বা দিলেও অনুমতি সাপেক্ষে দিত। বৃটিশরা ভারতের লোহ শিল্পকে ধ্বংস করে যাতে অস্ত্র তৈরী না হয়। আর স্থানীয় রাজরাজাদের সেনাবাহিনী তুলে দেওয়া হয় প্রোটেক্টারেট স্টেটের নামে।
বলতে গেলে বর্তমান এই ভারতের শুরু মুঘলদের হাত দিয়ে যারা মধ্য এশিয়ার থেকে আগত। বৃটিশরা মুঘলদের ভারত নামক পরীক্ষাটাই এগিয়ে নিয়ে গেছে। সাথে যোগ হয়েছে ইউরোপিয়ান লিব্যারাল ডেমোক্রাসির আদলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র।
মুঘল আমলেই ভারতের স্থানীয় সংস্কৃতিগুলি- যেমন বাংলা বা তামিল বা মারাঠি জাতিগোষ্ঠিগুলি দিল্লীর অধীনে আসে। দিল্লী থেকে আগত গর্ভনররা ভারতের রাজ্যগুলি শাসন করতে থাকেন। বৃটিশ আমলে সেই ট্রাডিশনই বজায় ছিল-শুধু দিল্লীর বদলে লন্ডন থেকে গর্ভনর আসত। স্বাধীনতার পর, স্বয়ত্ব শাসনের পরিধি বাড়াতে রাজ্যগুলির হাতে "কিছু" ক্ষমতা দেওয়া হয়-গর্ভনরের পজিশনটা টিটুটেলার হেড হিসাবে থেকে যায়।
একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে। এই শতকে পৃথিবীর যে তিনটে দেশ বৃহত্তম এবং সব থেকে শক্তিশালী রাষ্ট্র হতে চলেছে- ইউনাইটেড স্টেটস, চীন এবং ভারত- তাদের ভিত্তি বিশাল দেশের বিপুল অর্থনীতি। জাপান, জার্মানী, বৃটেন, ফ্রান্সের মতন উন্নত দেশগুলিও ভারতের সাথে সামরিক, অর্থনৈতিক এবং বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে পেরে উঠবে না।
এটা এক ধরনের মির্যাকল। ম্যাজিক। ১৯৪৭ সালে ভারত ছিল গরীব একটা দেশ। এখনো তাই আছে। কিন্ত এখন দেশে গরীবের সাথে সাথে বিরাট বড় বড় পুঁজি রয়েছে। পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম মধ্যবিত্ত শ্রেনীটি আছে। বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে শিক্ষিত দ্বিতীয় বৃহত্তম মানব সম্পদ রয়েছে। এখন মার্ক জাকারবার্গ বা জেফ বেজোসকেও ভারতে আসতে হয়। ভারতের কথা ভাবতে হয়। ভূরাজনীতি ভারত ছাড়া ভাবা যায় না।
কোন সন্দেহ নেই, এ এক উদীয়মান ভারত। অদ্ভুত দেশ। এত জাতি, এত ভাষা, এত ধর্ম সত্ত্বেও দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে।
কিন্ত আমি সম্পূর্ন নিশ্চিত না। স্কেপ্টিক্যাল। কারন একটাই।
একটা দেশকে ধ্বংস করতে আজকাল পরমানু বোমার দরকার হয় না। ট্যাঙ্ক গোলাবারুদ, বায়োওয়েপন, ভাইরাস কোন কিছুই ভারতকে ধ্বংস করতে পারবে না। বিচ্ছিন্নবাদি আন্দোলন ও পারবে না।
তাও ভারত ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। পৃথিবী যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে মানুষের শিক্ষা সব থেকে গুরুত্বপূর্ন হতে চলেছে। শিক্ষা বিষয়টি ভারতের শাসকেরা কখনোই সিরিয়াসলি নেয় নি। ভারতের স্কুলে যে মুখস্থ বিদ্যা নির্ভর শিক্ষা চলছে- তা বর্তমানে সম্পূর্ন অকার্যকরী। অদরকারি। এতে এক বিকালঙ্গ নাগরিক সমাজ তৈরী হচ্ছে, যারা চিন্তা করতে জানে না। এরা দেশ দেশ বলে লাফাতে পারবে, কিন্ত দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।
ভারতকে যদি কোন কিছু ধ্বংস করে, সেটা হবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে অবহেলা। উদাহরন দিই? গরমকালে ভারতের সব শহরে জল কষ্ট। পাম্প খারাপ হয়। ভূগর্ভে জল থাকে না। অথচ ভারতে এখনো বহুতল বানানোর পারমিশন অকাতরে দেওয়া হচ্ছে। বহূতল মানেই খুব অল্প জায়গায় বিপুল জল মাটি থেকে টেনে, সেখানকার ভূর্গভস্থ জল সম্পূর্ন ধ্বংস করবে। যা ব্যাঙ্গালোর, চেন্নাই, পুনেতে হয়েছে। বহুতল বানানোর পারমিশন শুধুমাত্র কোন অশিক্ষিত জাতিই দিতে পারে।
আরো উদাহরন দিচ্ছি। ভারত পাঁচ হাজার বছরের সভ্যতা। এখানে বহুদিন ধরে জনগন যেসব ফসল ফলাত-যেভাবে সেই ফসল থেকে খাদ্য হত-তা আজ লুপ্ত। বহুদিনের এই সুস্থ থাকার শিক্ষা আজ লুপ্ত। তার বদলে ভারতের মেনুতে ঢুকেছে অগুন্তি অস্বাস্থ্যকর খাদ্য তালিকা। সুস্থ থাকার শিক্ষাটাই স্কুলে পড়ানো হয় না ঠিক করে।
আমি নানাবিধ বিষয়ে পড়াশোনা করে এই সিদ্ধান্তে এসেছি- ভারতকে তার হৃদ্গৌরব ফিরে পেতে গেলে, সুস্থ এবং বুদ্ধিমান জনগোষ্ঠির দরকার। ১৪০ কোটি অসুস্থ, নাবালক নাগরিক নিয়ে সবার সেরা আমার সে দেশ হবে না। আর সেটা করতে গেলে, অতীতে তাকানো প্রয়োজন। যখন ভারতে একটি বাড়ি বানালে, সে বাড়ির পেছনে একটা পুকুর থাকত। একটা শহর বানাতে গেলে একাধিক হ্রদকাটা হত। ভোগ না, ত্যাগই ছিল পরম আদর্শ। লোভ না, সেবাই ছিল পরম ধর্ম। প্রকৃতি ছিল পরম গুরু এবং মাতা। এসব ভারত থেকে হারিয়ে গেলে, সে শুধু নামেই ভারত হবে। পৃথিবীর শিক্ষক এবং গুরু হতে পারবে না।
Thursday, August 11, 2022
ভারতীয় আইনে বাকস্বাধীনতা নেই!
ভারতীয় আইনে বাকস্বাধীনতা নেই!
-বিপ্লব পাল, ১২ই আগষ্ট, ২০২২
বাংলাপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা নেতা গর্গ চ্যাটার্জি, আসাম সরকারের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। এখন ট্রান্সিট জামিনে। তার অপরাধ -তিনি তার টুইটে একটি প্রশ্ন তুলেছিলেন । বিজেপি যদি বাবর সহ মুঘলদের বহিরাগত তকমা দেয়, তাহলে অহম সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সুকাপাকে কেন বহিরাগত বলা হবে না?
কারন সুকাপা চীনের মং মাও (বর্তমানে উন্নান প্রভিন্সের) রাজ্যের রাজকুমার ছিলেন। আসামের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় তিনি এসেছিলেন পাটকাই পর্বত পেরিয়ে ১২২৮ সালে। প্রায় ন হাজার সৈন্য নিয়ে।
এটা খুব সহজ একটা ঐতিহাসিক প্রশ্ন। এর জন্য আসামের জনগোষ্ঠির অনুভুতিতে আঘাত লেগেছে-এই ধারাতে গর্গ কেস খেয়েছেন, এবং গ্রেফতার হয়েছেন। যেকেউ এটা শুনলেই অবাক হবেন যে স্বাধীন ভারতে ইতিহাস নিয়ে প্রশ্ন তুললেও আপনি গ্রেফতার হতে পারেন। কিন্ত কেন?
এখানে চারটি পয়েন্ট বোঝা খুব গুরুত্বপূর্ন। আমি সেগুলো ব্লগে লিখছি। কারন ইদানিং ফেসবুকে এসব যতই তথ্যসহকারে লিখিনা কেন, ফেসবুকের ডিজফাংশনাল এই আই প্রযুক্তি আমাকেই ধরে ব্যান করে দেবে। ভারতের আইনের থেকেও গোলমেলে ফেসবুকের তথা কথিত এই আই রিভিউ!
যে বেসিক প্রশ্নগুলো সবার তোলা দরকার --
(১) ভারতের সংবিধানে কি তাহলে বাক স্বাধীনতা নেই? আছে এবং যদি গর্গ কেসটা লড়েন, সংবিধানের সেই রক্ষাকবচের জন্য জিতে আসবেন। কিন্ত এই কোর্ট থেকে ওই কোর্টে দৌড়ে তার ভোগান্তি হবে বিশাল। আসামের বিজেপি সরকার সেটাই চাইছে। এটার মূল কারন, ভারতের সংবিধান রচনা হয়েছে ১৯৪৯ সালে। কিন্ত ভারতের সংবিধান অনুসারে ভারতের পেনাল কোডের আইন বদলায় নি। ভারতের পেনাল কোডের আইন বৃটিশ আমলের। যেখানে এইসব ব্লেস্ফেমি ( ধর্মীয় অনূভূতির অবমাননা), সিডিশন (দেশদ্রোহী) ধারায় কেস চলে। যা কোন উন্নত বিশ্বের গণতন্ত্রে নেই। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ীও থাকা উচিত না। কিন্ত ভারতীয় পেনাল কোডে এই ধারা গুলি রয়ে গেছে। কারন ১৯০৯ সালের পর ভারতের পুলিশ আইনে বিশেষ সংশোধন হয় নি। ফলে ভারতের যেকোন রুলিং পার্টি, খুব বিধিবদ্ধ রুটিন ঐতিহাসিক প্রশ্ন তোলার জন্যও যাকে খুশী, তাকে গ্রেফতার করতে পারে এইসব ভুল্ভাল আইনি ধারায়।
(২) সুকাপা কিভাবে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই ইতিহাস বাবরের মতন পরিস্কার না। স্থানীয় উপজাতিদের সাথে তার যুদ্ধের শুধু দুটো ইতিহাস পাওয়া যায়। কিন্ত অহম সাম্রাজ্য যে দীর্ঘ ৬০০ বছর টিকে ছিল-তাদের নিজেদের ঐতিহাসিক ভাষ্য হচ্ছে সুকাপাকে স্থানীয় লোকজন ভালবেসে রাজা হিসাবে গ্রহন করেছিল। কারন ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় বানভাসি জমিতে কিভাবে ধান চাষ করতে হয়, সেই চাষের প্রনালী সুকাপা চীন থেকে এনেছিলেন। ফলে তাদের চৈনিক প্রযুক্তিতে স্থানীয় অধিবাসীরা খুব উপকৃত হয় এবং তারা সুকাপাকে রাজা হিসাবে গ্রহন করে।
Tuesday, August 2, 2022
ক্ষুধিত ড্রাগন ---
ক্ষুধিত ড্রাগন ---
Friday, July 22, 2022
ক্ষুদার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়-- অভুক্ত লোকেদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে
২০১৭। ইউ এন খুব গর্ব করে ঘোষনা করেছিল, এই প্রথম পৃথিবীতে যত না লোক না খেতে পেয়ে মরেছে-তার থেকে অনেক বেশী লোক মারা গেছে বেশী খেয়ে। অবেসিটি থেকে। মানে বেশী খেয়ে মোটা হয়ে।
এটা ঠিক ২০১৩ সালে পৃথিবীতে অভুক্ত লোকেদের সংখ্যা নেমে আসে ২০০ মিলিয়ান বা কুড়ি কোটির কম। যাদের অধিকাংশই আবার ভারত আর আফ্রিকাতে।
২০২২। প্যান্ডেমিক গ্লোবাল ওয়ার্মিং এবং যুদ্ধের ত্রিফলায় বর্তমানে ৮০ কোটির বেশীর লোক অভুক্ত। যার মধ্যে আছে পাকিস্তান, আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ। ভারত ত পার্মানেন্ট মেম্বার। ইউক্রেন থেকে গমের সাপ্লাই বন্ধ।
মধ্যবিত্তরা খেতে পারছে। কিন্ত খাবার কেনার জন্য, অন্য খরচের অনেক কিছু ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছে। এটা শুধু ভারতে না, আমেরিকার জন্য আরো বেশী সত্য। ফলে দুটো দেশেই কনজিউমার ইন্ডেক্সের অবস্থা খারাপ। আমেরিকা রিশেশনের সম্মুখীন।
গ্লোবাল ওয়ার্মিং থেকে খাদ্য সংকট। সমস্যা একটাই। বিজ্ঞান প্রযুক্তিকে ঠিক যায়গায় কাজে লাগানো যাচ্ছে না। কারন পুঁজির ধর্ম। ওই দু জায়গায় পুঁজি ঢাললে রিটার্ন কম। এখন বরং খাদ্য ব্যবসায় তাও একটু জোয়ার এসেছে। ভারতে যা জমির পরিমান এবং আবহাওয়া, তাতে বর্তমানে যা প্রোডাকশন, তার তিনগুন উৎপাদন হওয়া উচিত। কিন্ত হবে না। কারন সবার এক লপ্তে ছোট জমি-তাতে অটোমেশন আধুনিক কৃষি সম্ভব না। আর ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। না সম্ভব কৃষি সংস্কার। না স্টালিনের মতন ডিক্টেটর এসে কোয়াপরেটিভে বাধ্য করবে। আর গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর জন্যও একই সত্য। ওখানে পুঁজি ঢেলে রিটার্ন নেই। নেহাত কিছু বিলিয়ানার কয়েকশো মিলিয়ান ডলারের ফান্ড তৈরী করেছে ক্লাইমেট ক্লীনটেকের জন্য। তাতে কিস্যু হবে না।
ভারতে গত বছর ১০৬ টা স্টার্টাপ নাকি ইউনিকর্ন হয়েছে। যদিও এগুলোর সবই ডুববে- সব থেকে বাজে দিক হল এর মধ্য একটি স্টার্টাপ ও ছিল না - যা কৃষি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে। অথচ ভারত সব থেকে বেশী অভুক্তরা থাকে। খাবারের দাম মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাহলে পুঁজি এখানে আসছে না কেন? কারন কৃষি প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করে যদি কেউ মেশিন বানায়-কিনবে কে? ছোট ছোট জমির জন্য অধিকাংশ চাষীই নতুন প্রযুক্তি কিনতে পারবে না। ফলে অনেক কিছু করা সম্ভব -কিন্ত বিজ্ঞান প্রযুক্তি এখানেও ঠুঁটো জগন্নাথ।
এই অচল অবস্থা আর কদ্দিন চলে দেখি।
Thursday, July 21, 2022
সত্য বনাম মিথ্যে ইসলাম
তালিবানদের ক্ষমতা দখলে ভারতের হিন্দুত্ববাদিরা উল্লাসিত। ইসলাম কত বাজে তা আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার "শোকেস" তালিবান। আর সেই ধারনাই স্টাম্পিং করছে অনলাইন উপভারতীয় মুসলমানরা। যারা কিন্ত বাংলাদেশে তালিবান শাসন কায়েম হলে ঢাকা বিমানবন্দরে সবার আগে লাইন দেবে। বা পশ্চিম বঙ্গে লাফিয়ে চলে আসবে। ঠিক বঙ্গজ কমিনিউস্টদের মতন। এরা কিউবা নিয়ে বগল বাজায়। কিন্ত কিউবার ফিদেলের মতন কোন শাসক ক্ষমতা দখল করলে, এরা কিন্ত সবার আগে বোটে চড়ে পালাবে।
Thursday, July 7, 2022
ভারত এবং আমেরিকার গণতন্ত্র আর কদিন টিকবে?
ভারত এবং আমেরিকার গণতন্ত্র আর কদিন টিকবে?
Wednesday, July 6, 2022
মত প্রকাশের অধিকার যখন বিড়ম্বনা-
মত প্রকাশের অধিকার যখন বিড়ম্বনা-
৬ই জুলাই, ২০২২ / বিপ্লব পাল
গত দশদিন লিখব লিখব করেও কিছু লিখিনি। কিছুটা ভয়ে। আসলে নুপুর শর্মা এবং মহুয়া মৈত্রের অবস্থা দেখে পরিস্কার বুঝতে পারছি, আজকাল ধার্মিকদের থেকে ধর্মের ষাঁড়ের দল অনেক বেশী ভারী। শুধু নুপুর শর্মাকে সমর্থন করার জন্য রাজস্থান এবং মহারাষ্ট্রে নৃশংস ভাবে খুন করা হল! এই সব খুনীরা ধার্মিক ? রিয়ালি? প্লিজ বলবেন না এর সাথে মুসলমানদের নাম জড়ানো উচিত না। যারা খুনী, তারা খুনী! মুসলমান সমাজের খুব ক্ষুদ্রাংশ! কিন্ত বাস্তব হল, ওইসব ধর্মান্ধ কল্লাকাটাদের বিরুদ্ধে মুসলমান সমাজের কোন বিক্ষোভ নেই। ভারতের তথাকথিত সেকুলার পার্টিদের ও বিক্ষোভ নেই! মুসলমান সমাজের মৌনতা ওইসব খুনীদের হিরো করে দিচ্ছে। রাজস্থানের ওই ধর্মান্ধ খুনীরা দাওয়াত ই ইসলামি গোষ্ঠিভুক্ত। যারা না কি অহিংস ভাবে ইসলামে আসার জন্য দাওয়াত দেয়! এই গোষ্ঠি পারভেজ মুশারেফের সৃষ্ট। তালিবান কট্টর পন্থীদের বিরুদ্ধে "মডারেট" মুকাবিলা! এরাই পাঞ্জাবের গর্ভনর সালমন তাসিরের খুনীর সমর্থনে বিশাল মিছিল বার করে ছিল! এরা কোন বিচ্ছিন্ন ধর্মান্ধ নন। রাজনৈতিক মদতপুষ্ট খুনখারপি করা গুন্ডা। যাদের পেছনে বৃহত্তর মুসলমান সমাজের নির্বাক মদত আছে।
মহুয়া মৈত্র মাকালী নিয়ে তার মত প্রকাশ করেছেন। হিন্দু ধর্মে যে কেউ দ্বিমত করতেই পারেন। কারন হিন্দু ধর্মে প্রত্যেকের ঈশ্বর তার একান্ত নিজের কল্পনা। শ্যামা সঙ্গীতের ব্যঞ্জনা এই জন্যেই সার্বজনীন। মা কালী, আমাদের নিজেদের মা হয়ে যায়! যার কাছে এই ব্যর্থ জীবনের সব অভিযোগ, অনুযোগ, হতাশা উজার করে সন্তান স্নেহ দাবী করা যায় ---কমলাকান্ত , অতুলপ্রসাদের মা-কালী সেই সার্বজনীন মা। তারা তাদের স্নেহময়ী মাকেই কালী রূপে কল্পনা করেছেন। তাতে হিন্দু ধর্মে কোন জোর চলে না। মহুয়া মৈত্র আধুনিকা। তিনি যদি তার মাকে সিগারেট ধুম্রপানরত হিসাবে দেখতে চান- হিন্দু ধর্মে সেই কল্পনার স্বাধীনতা সব ভক্তর আছে। মায়ের সাথে সন্তানের ভালোবাসাতে কোন জোর চলে না! এই ধর্মে কৃষ্ণ কারুর সখা, কারুর প্রেমিক, কারুর শিশু সন্তান, কারুর পিতা। এবং সবাই ঠিক। বড়ু চন্ডীদাসের কামুক কৃষ্ণ থেকে বিদ্যাপতির প্রেমিক কৃষ্ণ- যা মানব কল্পনায় প্রেমের এক বিরাট বিস্তার-
সবই এ ধর্মে গ্রহনযোগ্য।
তাহলে হিন্দু ধর্মের নামে মহুয়া মিত্রর বিরুদ্ধে দল পাকিয়ে চোখ রাঙানো হচ্ছে কেন? হিন্দু ধর্ম নিয়ে ভক্তদের অজ্ঞতা? নাকি রাজনৈতিক কারনে হিন্দু ধর্মকে ইসলাম -২ বানানো হচ্ছে?
তবে আমেরিকাও নিরাপদ না। সুপ্রীম কোর্ট প্রগতিশীলতার ক্ষেত্রে নিরেপেক্ষ থাকবে জানানোর পর এখন এদেশে খৃষ্ঠান ধর্মান্ধদের লাফালাফি! তারা নাকি গর্ভনিরোধক ও বন্ধ করে দেবে! আমেরিকা উইথদাউট কন্ডোম! এরা ইদানিং ভারতের ধর্মান্ধদের ও ছাড়িয়ে গেছে!
আসলে এরা কেই ধার্মিক না। ধর্মকে আশ্রয় করে দল পাকিয়ে এই গুন্ডামো করার বিশেষ কারন আছে। আপনাদের নিশ্চয় সিপিএম জমানা মনে আছে। পার্টির বিরুদ্ধে গেলে দল পাকিয়ে আপনাকে গুঁতাতে আসত। এসবই সাধারন বঞ্চিত মানুষের মনস্তত্বের একটা প্যাটার্ন। আসলে সাধারন মানুষ ব্যক্তিগত , সামাজিক, রাষ্ট্রীয় জীবনে এত অসহায়, এত ক্ষমতাহীন- তারা ভাবে কোন একটা দলে ভিড়লে যদি তাদের কিছুমাত্র ক্ষমতাপ্রাপ্তি হয়। ঐক্যবদ্ধ গুন্ডামো সাধারন মানুষের ক্ষমতায়নের একটা পথ। বাই দ্য ওয়ে-এটা আমার তত্ত্ব না। এটা বিশ্ববরেন্য মনোবিদ এডলারের তত্ত্ব- যিনি নাৎসি জার্মানির উত্থানের পেছনে, হিটলারে্র উত্থানের পেছনে সাধারন মানুষের জনসমর্থন নিয়ে গবেষনা করেই এই সিদ্ধান্তে এসেছিলেন।
আমি দূরের কথাও ভাবছি। চীন এসব থেকে দূরে-বিজ্ঞান প্রযুক্তির ওপর, তাদের সাধারন মানুষের কর্ম সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭৮ সালে ভারতের জনপ্রতি ইনকাম চীনের থেকে বেশী ছিল। ১৯৬৪ সালে ভারতের জনপ্রতি ইনকাম সাউথ কোরিয়ার থেকে বেশী ছিল।
আর আজ ? চীনের জনপ্রতি আয় ভারতের ৫ গুন । দক্ষিন কোরিয়ার জনপ্রতি আয় ভারতের ১২গুন। চীন সব কিছুতেই আমেরিকাকে টেক্কা মারছে।
গণতন্ত্র ( ভারত, আমেরিকা দুই দেশই) যদি এই ঢালাও ভাবে ধর্মান্ধতার পারমিশন দেয়, গণতন্ত্র টিকবে না। কারন বিজ্ঞান প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে, অনেক উন্নত এক সমাজ এবং রাষ্ট্র চীন গড়ছে। যার ফলে মাত্র ৩০ বছরের মধ্যে আজকে যা কিছু ইলেক্ট্রনিক্স, যন্ত্রাংশ-যা কিছু কিনতে যান, চীন ছাড়া গতি নেই।
মাত্র ৩০ বছরে! ১০০ বছর এইভাবে চললে পার্থক্য কোথায় যাবে? বোধ হয় আর ১০০ বছর ওইভাবে চলবে না। চীনকে কাউন্টার করতে আমার ধারনা ভারত এবং আমেরিকাতে চীনের মডেলেই স্বৈরতান্ত্রিক সরকার এসে যাবে। না হলে, চীনই ছলে বলে ব্যাঙ্কিং এর মাধ্যমে এই দুটো দেশ অধিকার করে , চৈনিক মডেল চালাবে।
এত ধর্মান্ধদের মাঝে , তার সাথে দুই দেশের বিজ্ঞান যুক্তিবাদি মানুষদের সুবিধাবাদি নীরবতার মধ্যে, আর কোন ভবিষ্যত দেখতে পাচ্ছি না।
Tuesday, March 29, 2022
বাংলার বুদ্ধিজীবি !
অনেকদিন আগে একটা জোক্স শুনেছিলাম। কুকুরের থেকে বেশী প্রভুভক্ত প্রানী চান?
তাহলে বাঙালী বুদ্ধিজীবি পুষে দেখতে পারেন। প্রায় গ্যারান্টি!
রাজকবির রামপুরহাট বেদনা কাব্য পড়ে সেটা আবার কেন যেন মনে হল। কবি কিসুন্দর নিরেপেক্ষ অরন্যে রোদন করতে পারেন! ঠিক যেমন ভারত রুশো-ইক্রেন যুদ্ধে বলছে এত রক্ত, এত হিংসা বন্ধহোক! ভারত এবং রাজকবি-কারুর অবস্থানই আমি বুঝতে পারি নি! তবে মহাভারতে কৃষ্ণ বুঝেছিলেন। ভ্রাতা বলরামকে বকেছিলেন-ধর্মযুদ্ধে অমন যুদ্ধ চাইনা শান্তি চাই টাইপের সুবিধাবাদি অবস্থান আসলে কাপুরুষ সুবিধাবাদের সহস্রলক্ষণ।
ইউক্রেন রাশিয়া আক্রমন করে নি। রাশিয়ার একটা লোককেও মারে নি। পুতিন ইউক্রেনে তান্ডবযজ্ঞ চালাচ্ছে। নিরীহ লোক মেরেই চলেছে। এই অবস্থায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান না নিয়ে যুদ্ধ না শান্তি চাই বলা- আর সুবিধাবাদ একই জিনিস। ঠিক একই কথা বলা চলে রামপুরহাট প্রসঙ্গে। গত ৪০ বছরে পশ্চিম বঙ্গে এই ধরনের নির্মন রাজনৈতিক এবং সামাজিক খুনোখুনী ভারতে সব থেকে বেশী? কেন? কারন অর্থনীতি বসে গেছে। বামপন্থায় বিশ্বাস করে যেভাবে ভেনেজুয়েলা থেকে গ্রীস ভোগে গেছে, বাংলাও তাই। ফলে ইঁট সুরকি বালির তোলাবাজি এবং তার থেকে নেতা পুলিশের বাটোয়ারা হচ্ছে জনসাধারনের বেঁচে থাকার অন্যতম পথ। দিদি আসার পর বাংলার অর্থনীতিতে কিছুটা রক্ত সঞ্চার হলেও , উনি এই সিন্ডিকেটকে ধ্বংস করতে পারেন নি-বা চান নি।
আমি চাই দিদি আরো ভাল করে বাংলা চালান। কারন তার পার্টীই বাংলার একমাত্র স্বাধীন পার্টী। বাকি সবাই তাদের দিল্লীর নেতাদের কথায় ওঠবোস করা নন্দকিশোর। আর সেটা চাই বলেই মনে করি রামপুর হাটের ঘটনা থেকে এটা পরিস্কার হওয়া উচিত, পুলিশ-সিন্ডিকেট-পার্টি, এই নেক্সাস দিদি ভাংতে না পারলে, আরো রামপুরহাট ঘটবে। এবং এটা উনার প্রশাসনের ব্যর্থতা। এটা যত দ্রুত স্বীকার করে, সিন্ডিকেটগুলো ভেঙে দেওয়া যায় তত উনার ভাল। উনি এমনিতেই জিতবেন। ২৯৩-০ করে লাভ নেই। সেটা পশ্চিম বঙ্গ, উনার নিজের, তৃনমূলের সবার জন্য খারাপ।
কবির নির্মল হৃদয় কাঁপবে, কিন্ত অন্নদাত্রীকে সিন্ডিকেট ভাংতে ডাক দেওয়ার দম তার নাই!
আরো খারাপ লাগে আনন্দবাজারের আপ্রান প্রচেষ্টা বাংলার বুদ্ধিজীবিদের জাতে তোলার জন্য! আজ সকালে অভিনেত্রী ঋতুপর্নাকে ইন্ডিগো ফ্লাইটে উঠতে দেয় নি বলে ( নির্ধারিত সময়ের পরে গেটে পৌছালে একমাত্র এয়ার ইন্ডিয়া ছাড়া বাকি কোন এয়ার লাইন্সই ছাড়বে না) তার ফেসবুক পোষ্টের ওপর আনন্দবাজার খবর করেছে! যদিও স্যোশাল মিডিয়াতে পাবলিকই ওই ভুলভাল ইংরেজিপোষ্টের বিরুদ্ধে সঠিক উত্তর দিয়েছে-যে এরপরে তারা ইন্ডিগোর ওপর আরো বেশী ভরসা রাখবে। ডিসিপ্লিনের জন্য যারা সেলিব্রিটিদের রিজেক্ট করতে পারে, তাদের কম্যান্ড এন্ড কন্ট্রোল অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য। এই ঋতুপর্নাই যখন তার প্রেমিক রোজভ্যালির কর্নাধার গৌতম কুন্ডুর সাথে জনগণের কোটিকোটি টাকা মেরেছে, আনন্দবাজার চুপ ছিল।
অভিনেত্রীর কান্না এবং তার আনন্দবাজারীয় এমপ্লিফিকেশন জনগন যেভাবে রিজেক্ট করল, সেটা থেকে আশাকরি অভিনেত্রী এবং আনন্দবাজার দুই পক্ষই বুঝবেন দিনকাল বদলাচ্ছে। বুঝবেন কেন প্রেসিডেন্ট জেলেনাক্সি সাধারন টিশার্ট পরে, সব থেকে জনপ্রিয় নেতা হয়ে গেলেন। কারনে উনি অভিজ্ঞ কৌতুকনেতা এবং জানেন মিডিয়াকে কিভাবে ম্যানুপুলেট করতে হয়। তার উপায় একটাই। আজকের দুনিয়াতে সবাই কমন ম্যানের মধ্যেই এক্সট্রাওর্ডিনারি ম্যান দেখতে চাইছে ! লোকে সেলিব্রিটিদের থেকে দূরে থেকে সাধারন মানুষের অসাধারন হয়ে ওঠার গল্প শুনতে চাইছে।
Saturday, March 19, 2022
কাষ্মীর ফাইলস-ন্যারেটিভের যুদ্ধ
কাষ্মীর ফাইলস-ন্যারেটিভের যুদ্ধ
Thursday, March 10, 2022
উত্তরপ্রদেশ পাঞ্জাবের রেজাল্ট -কি কি সিগন্যাল পাওয়া গেল
(১) ভোটে জাতিয়তাবাদ খুব গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠছে-রুটিমোকামের থেকেও বেশী-অনেক বেশী। সেই উভাল নোয়া হারারির প্রতিধ্বনিই দেখছি- আদর্শবাদের লড়াইটাই মুখ্য হচ্ছে। এবং এক্ষেত্রে বিজেপি দুই ধাপ এগিয়ে। কারন তারা ভারতীয় জাতিয়তাবাদ এবং হিন্দু জাতিয়তাবাদ দুটোই কব্জা করেছে।
(২) বিজেপির ডবল ইঞ্জিন আদর্শবাদ রুখে দিতে সক্ষম কেবল মাত্র ভাষাভিত্তিক রাজ্য জাতিয়তাবাদ-যেমন বাঙালী, তামিল, মালইয়ালি, উড়িষ্যা, তেলেগু, মহারাষ্ট্র ইত্যাদি। ভাষাভিত্তিক জাতিয়তাবাদের ফেডারেল জোট ছাড়া বিজেপিকে ২০২৪ সালে আটকানো অসম্ভব।
(৩) নোটবন্দী, জিএসটিতে, কৃষিবিলে যতই দুর্দশা বাড়ুক-জনগণ তাও বিজেপিতে ভরসা রেখেছে-কারন ধরে নেওয়া হচ্ছে মোদি দেশটাকে বদলাতে চাইছেন-তাই ওইটুকু যন্ত্রনা সহ্য করতে হবে!
(৪) লড়াইটা হচ্ছে কোন পার্টি সরকারি পরিশেবা, সরকারি স্কিম/টাকা জনগনের মধ্যে ভাল করে বিলিয়ে দিতে সক্ষম। সব পার্টিই এখন স্কিমে বিশ্বাসী।
(৫) পৃথিবীর সবদেশে বামেরা ১০-৩০% ভোটপান। আমেরিকাতেও বামেদের ভোট ১৫-২০%। কিন্ত ভারতে বামেরা সম্পূর্ন ভাবে ডাইনোসোর গোত্র । পাঞ্জাবে একদা বামেরা ৮-১২% ভোট-সিট পেতেন। এখন কোথাও কোন সিট নেই। কেন? কারন পৃথিবীর সর্বত্র বামেরা পরিবেশ, সাসটেনেবিলিটি কোয়াপরেটিভের ওপর ভিত্তি করে নতুন পৃথিবীর আদর্শ তৈরী করেছে। ভারতের বামেরদের থেকে অপদার্থ রাজনীতিবিদ পৃথিবীর ইতিহাসে পাওয়া অসম্ভব। এরা এখনো লেনিন-স্টালিনের হেগোপোঁদ চেটে যাচ্ছে-একে ওকে দোষদিচ্ছে। নিজেদের প্রোডাক্টটা যে এক্সপায়ারড সেটা এরা কেউ বুঝছে না। এতটাই বুদ্ধিহীন ভারতের বাম!
(৬) তৃনমুল জাতীয় রাজনীতিতেব গুরুত্ব নিতে চাইলে #২ এর ওপর ফোকাস করতে হবে- ২০২৪ সালে বিজেপিকে হারানোর ওটাই একমাত্র সরুপথ। এই ওই রাজ্যে গিয়ে তিনোপার্টি খুলে লাভ নেই। তবে ত্রিপুরা, মেঘালয়, আসামে কংগ্রেসের বিকল্প তৃনমূল। কংগ্রেস এই রাজ্যগুলো থেকে উঠে যাবে।
(৭) আপ - হিন্দি হার্টল্যান্ডে কংগ্রেসকে ফেলবে আগামী পাঁচ বছরে। ইউপিতে সপাকেও খাবে। সপার ভোটব্যাঙ্ক বেশীদিন টিকবে না। কারন বর্তমানে এর অধিকাংশই বিজেপি বিরোধি ভোট। গোটা ভারতে আপ বিজেপির অলটারনেটিভ হলে, ঐ ভোট আপেই যাবে। সপাতে না। ইনফ্যাক্ট সপার দিকে ভোট পোলারাইজড হওয়া বিজেপিকে ২০২৪ সালে বাঁচিয়ে দিল। কিন্ত আপের দুর্বলতা অনেক। ওটা কেজরিভিত্তিক দল। দিল্লী থেকে নিয়ন্ত্রন করতে চায়। ফলে এদ্দিনে এত পোটেনশিয়া থাকা সত্ত্বেও শুধু পাতা ফেলে গেছে। কেজরি যদি বোঝে রাজ্যের আপ ইউনিটগুলিকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেওয়া উচিত-তবেই আপ এগোবে। যেখানে রাজ্যভিত্তিক দল শক্তিশালী-সেখানে আপের সময় নষ্ট করা উচিত না।