Friday, July 14, 2023

্স্বামীজিকে ভুল বোঝা, খুব সহজ

 জীবন ও জীবিকা সংক্রান্ত গ্রুপগুলোর মধ্যে অনেকেই আছেন রামকৃষ্ণ মিশনের দীক্ষিত। অথবা তাদের ছেলেমেয়েরা রামকৃষ্ণ মিশনে পড়ছে।


গত কয়েকদিন ইস্কনের অঘোরদাস এবং বেশ কয়েকটি যুক্তিবাদি গ্রুপ, রামকৃষ্ণ মিশন, স্বামী বিবেকানন্দ এবং শ্রীরামকৃষ্ণ নিয়ে কিছু প্রশ্ন তোলায় ( অনেকের ভাষায় তা অপমান করার জন্য, তাদের হেয় করার জন্য ) তারা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। কারন সেই মর্মে আমি অনেক চিঠি পাচ্ছি। অনেকেই আমাকে অনুরোধ করেছেন, কিছু যদি কিছু লিখি-এই ব্যাপারে।

# ১ আমি ধর্ম এবং রাজনীতি সংক্রান্ত লেখা থেকে দূরে থাকায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাই এর পক্ষে বা বিপক্ষে কিছুই লিখব না। কারন আগেই লিখেছি। বাঙালীদের মধ্যে ধার্মিক, নিধার্মিক, বাম, ডান, যুক্তিবাদি-সবাই অজ্ঞানের অন্ধাকারে ডুবে আছে। এদের ভালোর জন্যে কিছু বলতে গেলে, বোঝার থেকে ভুল বোঝে। মূল সমস্যা। এরাও সেই মুখস্থ বিদ্যা, টিউশনির প্রোডাক্ট। প্রাইমারী বা সেকেন্ডারী স্কুলের লেভেলে ইতিহাস , যুক্তিবিদ্যা কিস্যুই পড়ে নি। বা পড়েও বোঝে নি। কিন্ত লেখার সময় ভাব দেখাবে পি এই চ ডি করে এসেছে। এরাই বাঙালী বুদ্ধিজীবি। এদের পক্ষে স্বামী বিবেকানন্দ বা শ্রীরামকৃষ্ণর দর্শন বা ভারতীয় দর্শন বোঝা সম্ভব না। তার জন্য ম্যাচিউরিটি লাগে। তারজন্য গোটা ভারত খালি পায়ে , খালি পকেটে ঘুরতে হবে। সব শ্রেনীর মানুষের সাথে মিশতে হবে। শুধু বই পড়ে, বিবেকানন্দকে বোঝা সম্ভব না।

#২ বিবেকানন্দের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ-তার লেখায় স্ববিরোধিতা। কখনো সতীদাহের সমর্থনে বলেছেন। কখনো বিরুদ্ধে বলেছেন। প্রয়াত অভিজিত রায়, যিনি আমার খুব ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন, তিনিও এই অভিযোগ তুলে এক বিরাট লেখা লিখেছিলেন। বর্তমানে যুক্তিবাদিদের তোলা অভিযোগগুলো ঠিক তাই।

# ৩ তথ্যের দিক দিয়ে তাদের লেখা বা প্রশ্ন ঠিক। কিন্ত মুশকিল হচ্ছে -ইতিহাসের কনটেক্সট ভুলে গেলে, ইতিহাসের এমন কোন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যাবে না, যিনি ভিলেন না। আজ আমেরিকা সব থেকে শক্তিশালী দেশ কারন এর সংবিধান। পলিটিক্যাল স্ট্রাকচার। তার জনক কে? আমেরিকার তৃতীয় প্রেসিডেন্ট থমাস জেফারসন। রাজনীতি বিজ্ঞানে তার মতন জ্ঞানী ব্যক্তি পৃথিবীর ইতিহাসে জন্মায় নি। বস্তত, আজ তার দূরদর্শিতায়, আমেরিকা এত শক্তিশালী দেশ হিসাবে আবির্ভূত। কিন্ত বর্তমানে আমেরিকাতেও প্রচুর র‍্যাডিকাল লোকজন। যার দরুন তার মূর্তি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। কেন? কারন তিনি বাজে লোক ছিলেন। কেন? কারন তার প্রচুর দাস ছিল। এবার সমস্যা হচ্ছে সেই সময় সব নেতাদের দাস ছিল। জেফারসন তার নিজেদের দাসেদের প্রতি খুব সদয় ছিলেন। একজন ক্রীতদাসীর সাথে তার চারটি সন্তান ও ছিল [ তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ]। সেই সন্তানদের তিনি বৈধ স্বীকৃতিও দিয়েছেন। এগুলি সেই যুগের জন্য স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্ত তারজন্য আমেরিকার সংবিধানের রূপকারের, দেশের রূপকারের মূর্তি ভাঙা? নক্সালরা একদা এইভাবেই রবীন্দ্রনাথ, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছেন।

# ৪ বিবেকানন্দকে বুঝতে গেলে তার সময়টা, তার সামনে থাকা চ্যালেঞ্জটাকে বুঝতে হবে। সেটা না বুঝে, তিনি কোথায় কি বলেছেন, তার ভিত্তিতে তাকে বিচার করতে গেলে, যেটা হবে- সেটা এই রকম- আজকে আমরা যারা পুরুষ আছি-তারা সবাই দ্বাবিংশ শতাব্দিতে ভিলেন বলে প্রতিপন্ন হব। কেন? কারন আমরা বিবাহ করিয়াছি। আর আমি নিশ্চিত ২১০০+ সালের পরে যারা ইতিহাস লিখবে, তারা বলবে, এই পুরুষটা বিয়ে করেছিল মানে ভিলেন-কারন বিয়ে হচ্ছে "নারীর দাসত্বের সুইট লিগ্যালাইজেশন"।

#৫
বিবেকানন্দের নতুন ভারত গড়ার কাজটা খুব কঠিন ছিল। তিনি তাত্ত্বিক সন্ন্যাসী নন। তিনি একই সাথে স্যার জামসেদজি টাটাকে ইন্ডিয়ান ইন্সটিউট অব সায়েন্স গড়ার জন্য অনুপ্রানিত করছেন-আবার ভারতের রাজা-মহারাজাদের জীবন পতিত জেনেও, তাদের অতিথেয়তা, তাদের সাহায্য তাকে নিতে হয়েছে। অঘোর দাস বা বর্তমানে বাঙালী যুক্তিবাদি পর্যন্ত যেতে হবে না। গুরুভাই ব্রহ্মানন্দও অনেক ক্ষেত্রে আপত্তি করেছেন। কিন্ত ব্রহ্মানন্দকে টাকার জোগার করতে হত না। বিবেকানন্দকে করতে হত। ফলে তাকে অনেক কিছুই বলতে হয়েছে, যা সেই স্থানে, সেই জনের জন্য গ্রহনযোগ্য হয়।

#৬
উনি নিজেও জানতেন এর জন্য লোকে উনাকে ভুল বুঝবে। কারন টাকার জোগারযন্ত্র করতে গিয়ে উনাকে সেইসব লোকেদের সাথে মিশতে হচ্ছে, অতিথেয়তা নিতে হচ্ছে-যাদের টাকা আছে। অনেক কিছুই বলেছেন বক্তা হিসাবে- শ্রোতাদের খুশী করার জন্য। কারন , লেকচার থেকে টাকা তুলতে হবে। নাহলে ভারতে তার কর্মযজ্ঞ থেমে যাবে।

কোনটা আগে? ভারতের উন্নতি? না ভবিষ্যতে মি"ঃ এক্স তার স্ববিরোধিতার সমালোচনা করবেন-তাই তিনি পদ্মাসনে যোগী হয়ে থাকবেন? ভারতবাসীর কথা ভাববেন না?

এটা সিম্পল লজিক। এখানে বাচ্চাদের জন্য এই শিক্ষাপ্রজেক্টে কাজ করতে, অনেকেই অনেক কটু কথা বলছে। কিন্ত তাদের কথা শুনে কি আমি পিছিয়ে আসব? আমি এইসব ভুল্ভাল লোকেদের সমালোচনাকে গুরুত্বদেব-না বাচ্চাদের জন্য যেটা করা দরকার আগে, সেটার দিকে গুরুত্ব দেব?

স্বামীজির চিঠি পড়ুন। উনিও জানতেন। সমালোচনা হবে। কিন্ত কাজটা আসল। সমালোচনা হবে, তাই কাজ থেকে পিছিয়ে এসে পদ্মাসনে বসে বাতাসা কুড়াবেন, সেই সন্ন্যাসী তিনি নন।

কাজে নামলে, টাকা লাগে। আর টাকার গায়ে একটু গন্ধ থাকবেই। কিছু করার নেই। নেচার অব মানি।

#৭
স্বামী বিবেকানন্দকে ভুল বোঝা স্বাভাবিক। উনাকে বুঝতে গেলে, উনার প্রতিটা চিঠি পড়তে হবে। উনার সমসাময়িক ইতিহাস বুঝতে হবে। উনি কি চেয়েছিলেন বুঝতে হবে। উনি কি পরিস্থিতিতে কি করেছিলেন, সেটা গভীরে না বুঝলে, বদহজম হবে। তাই উনাকে যারা ভুল বুঝেছেন-তাদের প্রতি আমার ক্ষোভ নেই। কারন মানুষ কম পড়লে, কম বুঝলে, অমন মহান ব্যক্তিকে ভুল বোঝে।

অত সহজে যদি স্বামী বিবেকানন্দকে সব বাঙালী বুঝে যেত-অত বোদ্ধা, অত বিজ্ঞ, অত জ্ঞানী যদি বাঙালী হত - এই রাজ্যের রাজনৈতিক হাল-এত দুরাবস্থা হয় না।

#৮

আমি কোন ধার্মিক লোক নই। কোন ধর্মাচরনে আমি নেই। রবীন্দ্রনাথ, ডস্টভয়েস্কি, ইম্যানুয়েলকান্ট, নিৎসে নিয়ে আমার কৌতুহল এবং চর্চা অনেক বেশী। কিন্ত বিবেকানন্দ কি করেছিলেন, সেটা বুঝতে ইতিহাস এবং দর্শন একটু গভীরে পড়তে হবে। কমন সেন্স ও দরকার। আমি স্বামী বিবেকানন্দ এবং শ্রী রামকৃষ্ণের দর্শন, সম্পূর্ন ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকে দেখি। তাদের কাজ আমার কাছে সেই ভাবেই গ্রহনযোগ্য।

ব্যক্তিগত ভাবে যেটুকু পড়াশোনা করেছি- যা বুঝেছি, তার ভিত্তিতে এটুকুই বলি -বিজ্ঞান এবং ধর্মের দর্শনের সহাবস্থান সম্ভব। কেন সম্ভব, সেটা নিয়েও একটা ব্লগ আছে। যারা বিজ্ঞান এবং ধর্মের গভীরে যায় নি, তারাই নিজেদের অবস্থান থেকে মারামারি করে। আমার ধর্ম ভাল এইসব মৌলবাদি দাবী করে। তারাই শ্রীরামকৃষ্ণের যতমত তত পথ বুঝতে অক্ষম। কেন তারা শ্রীরামকৃষ্ণের দর্শন বুঝতে অক্ষম- সেসব প্রশ্নের উত্তর এই ব্লগেই পাবেন-

https://biplabbangla.blogspot.com/2022/11/blog-post.html

Wednesday, June 7, 2023

মেসি নীরবে পুরুষকুলের যে সব্বোনাশটি করে গেলেন!

 বিপ্লব পাল, ২১শে ডিসেম্বর

ঠান্ডা ঠান্ডা মোলায়েম ওয়েদার। উত্তেজিত ঐতিহাসিক ফাইনালের ফাইনাল ফল আউট- জীবনের সব না পাওয়া ভুলিয়ে একটা বেশ এস্টাটিক ঐশ্বরিক আনন্দের পরশ চারিদিকে। রোমান কনসালরা জানতেন। রোমের অধিবাসীরা যখনই রাজনীতির জন্য, কোরাপ্ট এডমিনিস্ট্রেশনের জন্য ক্ষেপে যেতেন, রোমান সম্রাটরা দুই-তিন সপ্তাহের টানা গ্ল্যাডিয়েটর গেম লাগিয়ে দিতেন। জুলিয়াস সিজার থেকে এই ট্রাডিশনের শুরু-এবং দেখা যাচ্ছে দুই হাজার বছর বাদেও ঠিক সেই এক ঘটনা। অসাধারন লেভেলের খেলা মানুষকে তার দৈনন্দিন দুঃখের জগত, সংগ্রামের জগতকে ভুলিয়ে এক মায়াবী জগতে নিয়ে যায়।
তবে খেলোয়ার মেসি নিয়ে এই পোষ্ট না। লিখছি প্রেমিক মেসি, আন্তেনোলা রোকুজ্জোর স্বামী মেসিকে নিয়ে। শতাব্দির সেরা প্রেমিক বা সেরা স্বামীর জন্য যদি কোন গোল্ডেন বলদ ট্রফি থাকত, সেটাও মেসির সেদিন প্রাপ্য ছিল। এবং মেসি পুরুষকুলের একদম যাকে বলে-সব কিছু মেরে দিয়েছেন!
মেসির প্রেম কাহিনীর শুরু আর্জেন্টিনার শহর রোজারিও থেকে। রাজধানী বুয়েনো আয়ার্সের ৩০০ কিমি উত্তরে সান্তা ফে রাজ্যের রাজধানী রোজারিও। যেখানে মেসি এবং আন্তেনোলার একসাথে বড় হওয়া। মেসি পাঁচ বছর বয়স থেকেই আন্তেনোলাকে চেনেন। আন্তেনোলা সম্ভত মেসির এক স্থানীয় বন্ধুর বোন। একদম ছকে ফেলা বাল্যপ্রেম।
১২ বছর বয়সে মেসি রোজারিও ছেড়ে বার্সিলোনাতে। কিন্ত আন্তেনোলাকে ভোলেন নি। তখন মেসি সবে বার্সিলোনার জার্সি গায়ে তুলেছেন ১৮ বছর বয়সে (২০০৫)। এই পাঁচ বছর মেসি ছিলেন বার্সিলোনার ব্রহ্মাচর্য্যশ্রমে ফুটবল তপস্যারত- রোজারিওতে ফেরেন নি। খুব সম্ভবত আন্তেনোলার সাথে যোগাযোগ ও ছিল না। কিন্ত বাল্যের ফেলে আসা রোজারিও শহরের খুঁটিনাটি খবর রাখতেন। একদিন চোখে এল গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেছে উরসুলা নজ। এই উরসুলা আন্তেনেলার বেস্ট ফ্রেইন্ড। মেসি তখন আর্জেন্টিনা এবং ইউরোপের ফুটবলে বিষ্ময় প্রতিভা। খবর পাওয়া মাত্রই আন্তোনেলাকে সারপ্রাইজ দিলেন। না ইমেলে না। বার্সিলোনা থেকে ফ্লাইটে রোজারিও। শুধুই আন্তোনেলাকে ইম্প্রেস করার জন্য। অর্থাৎ আন্তেনেলার প্রতি প্রেম ফল্গুধারার মতন বইছিল। কিন্ত পেশাদার ফুটবলে আবির্ভাবের আগে যে কঠোর পরিশ্রম এবং ডিসিপ্লিনের মধ্যে বার্সিলোনার নার্সারিতে ছিলেন- তার অভিকর্ষজ বল কাটিয়ে ডিস্টান্সড বাল্যপ্রেমের রিস্ক নেন নি। কিন্ত মনের গভীরে যে প্রেম ছিল-তা বাঁশগাছের রুটের মতন মাটির গভীরে বেড়েই চলেছিল!
২০০৫ সাল থেকে তাদের বাল্যপ্রেম নব্য প্রেমের রূপ নেবে। এর মধ্যে বিয়ের (২০১৭) আগেই দুবার বাবা হয়েছেন মেসি। দুই ছেলে থিয়েগো (২০১২) এবং মাতিও (২০১৫)র জন্ম দিয়েছেন আন্তেনোলা-যখন মেসির বয়স ২৫ এবং ২৭। ছোট ছেলে সিরোর জন্ম ২০১৮ সালে। একদম নিখুঁত ফ্যামিলি প্ল্যানিং, সব কটি বাচ্চা তিন বছরের গ্যাপে। আন্তেনোলাও মেসির জন্য লাইফে প্রচুর সাক্রিফাইস করেছেন। আন্তেনোলা সুন্দরী মডেল এবং ভাল ছাত্রী ছিলেন। ডেন্টিস্ট্রি পড়া শুরু করেও, শুধু মেসির সাথে থাকার জন্য, দাঁতের ডাক্তারি থেকে ড্রপ আউট করেন সেকেন্ড ইয়ারে।
মেসি কেমন পিতা? মেসিকে কোন পার্টিতে পাওয়া যায় না । মেসি শুধুই ফ্যামিলির সাথে ডিনার করেন। নইলে তার তিনজন ছেলের সাথে খেলে বেড়াচ্ছেন। ফুটবল এবং ফ্যামিলি- এর বাইরে তৃতীয় কোন মেসির সন্ধান কেউ পায় নি! ওইজন্যই লিখলাম, শতাব্দির সেরা স্বামীর স্বর্ণবলদটিও মেসির প্রাপ্য।
বিশ্বকাপ জেতারপর আপনার সবাই দেখেছেন মেসি সেলিব্রেশন করছেন-তার তিন সন্তান এবং বৌকে নিয়ে। সেই ছবি টিভি থেকে আমিও তুলেছি। গোটা বিশ্ব দেখেছে। একদম দারুন সুখী সংসারের ছবি দখতে কেনা ভালবাসে। সবাই দারুন দারুন করছে। খুব ভাল। এখানেই কিন্ত পুরুষকূলের দফারফা হয়েগেল, সেটা কেউ বুঝল না!
একজন বাংলাদেশী মেয়ে কিন্ত সাহস করে সমস্ত মেয়েদের মনের কথা লিখেই ফেলল- অহ, আমার জীবনেও যদি মেসির মতন কেউ থাকত--কি সুন্দর প্রেমিক! কি সুন্দর স্বামী----মেয়েটা লিখেফেলেছে। বাকী কোটি কোটি মেয়েরা ভাবছে!!
এখানে দুটো জিনিস মনে করাতে চাইছি। ডিভোর্স এবং সুখী দাম্পত্যের ওপর নানান দেশেই গবেষনা হয়েছে। দেখা গেছে, যাদের বাল্যপ্রেম তারাই দাম্পত্যে সব থেকে বেশী স্টেবল। এটা নিয়ে আগে আমি একটা দীর্ঘ ব্লগ লিখেছিলাম। কারন একমাত্র বাল্যপ্রেমই ১০০% খাঁটি। ভেজাল কম। মনের বিবর্তন একসাথে হয় বলে, আন্ডারস্ট্যান্ডিং অনেক বেশী। তাই মেসির স্টেবল প্রেম ব্যতিক্রম না-যেহেতু বাল্যপ্রেম।
দুই নাম্বার পয়েন্টটা খতরনাক। সেটা হচ্ছে এদ্দিন কিশোরী বালিকাদের মনে বিয়ে এবং বরের ধারনা আসত সিনেমার রোম্যান্টিক নায়কদের দেখে। সাইকোলজিতে এটিকে আইডিয়েশন প্রসেস বলে। অন স্ক্রিন প্রেমের ঝর্নাধারার সিঞ্চনে তাদের ধারনা জন্মায় বর বা প্রেমিকরা তাদের জন্য ঠিক এই ১,২,৩্‌্‌,১০, ১১, ১২্‌ নাম্বার কাজ গুলো করবে। বাস্তবের দাম্পত্য হয় ঠিক উলটো। এটা তাও অনেক মেয়ে মানিয়ে নিত-যে না ওসব সিনেমা নাটক নভেলে হয়। বাস্তবে স্বামী অত ভাল হওয়া সম্ভব না। কিন্ত এই বিশ্বকাপের পর-সব মেয়ে জেনেগেছে মেসির পিকচার পারফেক্ট প্রেম কাহিনী! এবারত সিনেমা গল্প নাটকের অজুহাত দেওয়া যাবে না- ভীষন গোলমেলে কাজ করে পুরুষ জাতির ভবিষ্যত ডুবিয়ে গেছেন মেসি।
আরেকজন ডুবিয়েছিলেন। বারাক ওবামা। একদম বিকেল পাঁচটা বাজলেই ওভাল অফিস ছেড়ে মেয়েদের নিয়ে বাস্কেটবল খেলতে নামতেন। তারপর মেয়েদের হোমওয়ার্ক করাতেন। তবে ওবামা সিনেমার হিরো নন বলে, সে যাত্রাই অনেক পুরুষ বেঁচে গেছেন। আমি বাঁচি নি। যদি কোন দিন একবার ও বলেছি, অফিসের চাপের জন্য, এটা করতে পারব না- উলটো দিক থেকে- তুমি ওবামার থেকে বেশী বিজি নাকি????????
তবে আমাদের জেনারেশন শেষ। পুরুষদের নতুন জেনারেশন মেসির চাপ নিক।
All reactions:
Pratik Dutta Ray, Pinaki Duttaray and 208 others

Thursday, June 1, 2023

কেন জীবন এবং জীবিকা নিয়ে বাংলায় লেখা শুরু করলাম, জীবন এবং জীবিকা -ভূমিকা পর্ব

 কেন জীবন এবং জীবিকা নিয়ে বাংলায় লেখা শুরু করলাম, জীবন এবং জীবিকা -ভূমিকা পর্ব

বিপ্লব পাল, ৩১ শে মে , ২০২৩
[১]
সবকিছুরই শুরু থাকে, কারন থাকে। আমার এই জীবন ও জীবিকা সিরিজ শুরু করার পেছনেও দীর্ঘ ইতিহাস। গত দুই সপ্তাহে বিপুল সাড়া পেয়েছি। কোন কোন পর্ব ৫ লাখের ও বেশী লোকে পড়েছেন [ ফেসবুকে যা দেখাচ্ছে]। প্রায় ২ লাখের বেশী লাইক, কমেন্ট এসেছে-শেয়ার হয়েছে ৯০০০ এর বেশী। প্রায় ৫০০০ এর বেশী অভিভাবক এবং ছাত্রছাত্রী, তাদের প্রশ্ন আমার কাছে রেখেছেন। আমি আমার সীমিত সময়ে হয়ত কয়েকশো প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছি-তাও হোয়াটসাপ গ্রুপে।
একদিকে আমি খুশী যে এত লোকে পড়েছেন। অন্যদিকে আতঙ্কিত যে এগুলি পড়েও কিস্যু পরিবর্তন হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। আমি অধিকাংশ প্রশ্ন পাচ্ছি- মেয়ে কিভাবে বোর্ড এক্সামে ভাল মার্কস পাবে, বড় হয়ে এই হতে চাইছে, নইলে ওই হতে চাইছে!
সমস্যা এই যে এই চাওয়া পাওয়াগুলো অভিভাবকদের থাকাটাই স্বাভাবিক। আপদ এই যে উনারা বুঝতে পাচ্ছেন না এই চাওয়া পাওয়ার চাপে ইনারা অসংখ্য টিউশনি দিচ্ছেন, নাম্বারের পেছনে ছুটছেন- কম্পিটিটিভ পরীক্ষাতে ছেলে মেয়েদের বসাচ্ছেন- কিন্ত একবার ও দেখছেন না ছেলেটি বা মেয়েটির "লার্নিং প্রসেস" এ কি সমস্যা- সেটি শক্ত করার দরকার আছে কি না। অধিকাংশ প্রশ্নই ছেলে বা মেয়ে এই পরীক্ষাতে পায় নি বা ওই পরীক্ষায় পায় নি-এবার তাহলে কি হবে? আগে এটা বুঝুন, এই ক্ষেত্রে সবার আগে এটা বুঝতে হবে আপনার ছেলে বা মেয়ে আগে ভাল লার্নার হয়ে উঠুক- তবে না সে সর্বত্র ভাল করবে। সে যদি দুর্বল লার্নার হয়, যেখানেই দিন, সে খুব ভাল কিছু করে উঠতে পারবে না। যদি আপনার ছেলে বা মেয়ে নিট বা আই আই টি মেইন্সে না পায়, তাহলে তার লার্নিং পদ্ধতি ঠিক করতে হবে আগে। কিন্ত সেটা না করে ইনারা কোথায় কিসব কোর্স পাওয়া যায়, তার পেছনে ছুটছেন। চাকরি সব স্ট্রিমেই আছে। কিন্ত সেলফ লার্নিং এর মাধ্যমে না শিখলে, কেউ নেবে না।
পশ্চিম বঙ্গের ছেলেমেয়েদের স্টান্ডার্ডের কতটা অবনতি আমি দেখছি?
(২)
অবনতি কি না আমি বলতে পারব না-তবে যেভাবে ছেলেপিলেরা আসছে, তাতে এটা বলতে পারি, যে তাদের শিক্ষাদীক্ষা মোটেও আধুনিক চাহিদার সাথে মিলছে না। আগের দিনের মতন মাস্টার ডিগ্রি পাশ করে, সরকারি পরীক্ষার যুগ আর নেই। সব কোম্পানীতেই স্কিলের চাহিদা- ডিগ্রি আর মার্কসের কোন চাহিদা নেই। আর স্কিল দ্রুত নিজেকে শিখতে হয়। কারন সফটোয়ার শিল্পে প্রতি দুই বছর নতুন নতুন জিনিস আসে। সবাই প্রতিদিন শেখে। এই জন্য এখানে মাইনেও বেশী। অনেক অনেক বেশী। [ এসব বিস্তারিত জানতে আমার সিরিজের পর্ব ১ থেকে ৬ পড়ুন]
(৩)
এবার আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে লিখি।
২০১২ সালে প্রথম খুব ছোট একটা ইউনিট আমি কোলকাতায় খুলেছিলাম। জ্রেয়াস টেকনোলজি নাম দিয়ে। তখন ইলেকট্রনিক্সের কাজ করাতাম। ২০১৪ সালে আমি ইনভেস্টমেন্ট পেলাম, ইউনিট বড় করার জন্য। অনেকটাই বড় হয়। ২০১৪ সালে যেখানে মাত্র ৮জন ছিল, ২০১৬ সালের মধ্যে এটি ৭০ জনের কোম্পানীতে পরিনত হয়। ২০১৭ সালে এটির মূল অংশ প্রফেসি বা মেসিনসেন্স নামে পরিচিত হয়ে, আলাদা করা হয়-যা ২০১৮ সালে মেসিনসেন্স মাইক্রোসফটে্র গ্লোবাল স্কেল আপ প্রোগ্রামে প্রথম ১০ টি কোম্পানীর মধ্যে জায়গা করে নেয়। কোলকাতা থেকে, আমরাই প্রথম ওই প্রোগ্রামে সুযোগ পেয়েছিলাম।
কিন্ত আমাদের বিশাল সমস্যা হচ্ছিল কোলকাতায় স্কিল্ড ইঞ্জিনিয়ার পেতে। কোলকাতায় অভিজ্ঞ কাউকে পাওয়া যায় না। এই ধরনের প্রোফাইল সবাই ব্যাঙ্গালোর, পুনেতে। ফলে বলতে গেলে ৯০% খুব ভাল ইন্টার্ন হায়ার করে, তাদের ট্রেইন্ড করে কাজ চালাতে হয়। যেমন ডেটা সায়েন্সের জন্য আমি প্রেসিডেন্সির ২০১৬ সালের ব্যাচের স্টাটের প্রায় সবাইকেই হায়ার করেছিলাম [ একজন বাদে]। ওদের ফাইনাল ইয়ারেই ইন্টার্ন হিসাবে হায়ার করে, কোম্পানীর কাজের সাথে যুক্ত করা হয়। ব্যাঙ্গালোর থেকে মেন্টর ছিল। ফলে ওরা যখন ২০১৬ সালে কাজে যোগ দেয়, খুব ভাল কাজ করছিল।
আমার সফটীওয়ার টিম প্রথমে ছিল জয়পুরে। ২০১৯ সালে আমরা ঠিক করি সব কিছু কোলকাতায় এক ছাতার তলায় না করলে অসুবিধে। কারন আই ওটির কাজে ইলেক্ট্রনক্সি এবং সফটওয়ার টিম একসাথে কাজ না করলে মুশকিল।
আমার দুর্ভাগ্যের শুরুও সেখান থেকে। এই গল্পের শুরু ও এখান থেকে।
আমি ভাবলাম, যেহেতু কোলকাতায় ক্লাউড বা মিডলোয়ারের অভিজ্ঞ লোক নেই, আগের মডেলে ভাল ইন্টার্ন হায়ার করে তাদের ট্রেইন্ড করা যাক। সেই অনুযায়ী প্রায় ৪০ টা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ২০০০ ছেলেমেয়ের পরীক্ষা নেওয়া হল। মাত্র ৬ জন ৪০% এর বেশী পেল। তাদের মধ্যে তিনজনকে নেওয়া হল ইন্টার্ন হিসাবে। কিন্ত এদের রাখা গেল না। কারন এদের সবাই খুব বড় ব্রান্ডে চাকরি পেল। স্যালারি বেশী অফার করলেও কেউ কোলকাতার ছোট কোম্পানীতে থাকে না। কারন ব্যাঙ্গালোরে ইকোসিস্টেম ভাল-কোম্পানী বড় ব্রান্ড। এরপর জ্রেয়াস, যেটা এখন আরেকটা আলাদা, কোম্পানী আলাদা অফিস-সেখানেও ক্যাম্পাস থেকে ইন্টার্ন নিতে গিয়ে একই অভিজ্ঞতা। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে ভাল কোডার তৈরী হচ্ছে না। হচ্ছে হাতে গোনা কজন। তাদের সবাই ব্যাঙ্গালোর পুনে তে চলে যাচ্ছে। টিসিএস ইনফোসিসের ক্যাম্পাসে যারা পাচ্ছে-তাদের অধিকাংশ কাজই ডেভেলপারের না- নন কোডিং কাজ। যেখানে একটু ভাল ইংরেজি জানলে আর কোন একটা সফটোয়ারে ট্রেনিং নিলেই হয়। তাছাড়া ওগুলো কম মাইনের চাকরি। সুতরাং সেইসব ক্ষেত্রে কোডিং বা সফটোয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং কম জেনেও লোকে চাকরি পেতে পারে।
কোলকাতায় যাদের ভাল সিস্টেম-সফটয়ার কোম্পানী আছে-তাদের অনেক সিইওই আমার বন্ধু-আমার এই ফেসবুক প্রোফাইলেই অনেকে আছেন। আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম, তারা কি করে কোলকাতায় ছোট বা মাঝারি সাইজের কোম্পানী চালাচ্ছেন? কারন ঠিক ঠাক টেলেন্টেড রিসোর্স পাওয়া যাচ্ছে না। যাদের দিয়ে এডভান্সড প্রোডাক্টে কাজ হয়।
সবার উত্তর এক
- ছেলে পাওয়া যাচ্ছে না
- আর সেই জন্য, কোলকাতা ছেড়ে অনেক ছোট ভাল কোম্পানীই চলে গেছে পুনে, সুরাট, ইন্দোরে
এই সিইওদের মধ্যে অনেকেই আছেন, বাংলাকে ভালোবেসে কোলকাতায় হাজার রাজনীতি এবং নেগেটিভের মধ্যেও কোম্পানী চালাচ্ছেন বিদেশ থেকে। তারা বাংলার মাটি ছাড়বেন না। তাদেরকে স্যালুট।
আমি তাদেরকে বল্লাম আমরা সবাই মিলে যদি এমন একটা সংস্থা করি-যেখানে একটা কোডিং ক্লাব করব, সেখানে বাংলার ছেলেদের কোডিং এর পরীক্ষা এবং চর্চার মাধ্যমে ওদের উন্নত করব-তাহলে সবার লাভ হবে। সেখানে ছেলেমেয়েদের টাকা লাগবে না। কারন, কোডিং ক্লাবে কেই ভাল করলে, তাদেরকে নিয়ে নেওয়া যাবে এবং সেই প্লেসমেন্ট ফিতে ক্লাব চলবে।
সবাই বলল। উত্তম প্রস্তাব। এগিয়ে যাও।
ইনভেস্ট করলাম। অন্য আরেকটি কোম্পানী [ সুদীপদার ই বি আই ডবলু] ও ইনভেস্ট করল যাতে কোলকাতায় কোডিং ট্যালেন্ট তৈরী করা যায়। ক্রাকিং আই টি জব সংস্থার নাম। এখানে কোডিং পরীক্ষা দেওয়া যায়। কোম্পানীগুলি তাদের ইন্টার্ন পজিশনের জন্য পোষ্টিং ও দেয়। বেসিক্যালি এটা টেস্ট প্ল্যাটফর্ম -ইন্টার্ন নেওয়ার জন্য।
প্রথমে গুগুলের কোডিং জ্যাম স্টান্ডার্ডে টেস্ট সেট করা হল। দেখা গেল কেই কিছু পারছে না। বুঝলাম এটা আই টি কুলির দেশ। এখানে অনেক নীচু থেকে শুরু করতে হবে। অত উঁচু আশা রাখলে চলবে না। পরে পরীক্ষা আরো সহজ করা হল। তাও সেই একি হাল।
তখন ভাবলাম এদের ট্রেনিং দেওয়া যাক। প্রথমে লোক্যাল প্রফেসর দের দিয়ে প্রশ্ন গুলোর সমাধান করাতাম। দেখলাম, স্থানীয় যারা পড়াচ্ছে, তাদের কোডিং স্কিলে সমস্যা আছে। সেটা হতে পারে। কারন ভাল কোডাররা সবাই ইন্ডাস্ট্রিতে। তারা কেউ কম পয়সার শিক্ষকতার কাজে আসে না। স্যালারি রেশিও ১ঃ ১০। সফটোয়ারের ক্ষেত্রে। ফলে মেরীল্যান্ড থেকে যোসেফ পিবাস বলে একজনকে হায়ার করলাম। এই ছেলেটি মেরিল্যান্ড কলেজ পার্কের কম্পিউটার সায়েন্সের গ্রাজুয়েট [ কলেজ পার্কের র্যাঙ্ক প্রথম ২০ এর মধ্যে, আই আই টির ওপরে ]। গুগুল জ্যাম ভাল জানে। এবং একজন পেশাদার কোডার ।
ভাললাম, এ ক্লাস নিক। যোসেফকে দিয়ে প্রায় ১২ টা ক্লাস করানোর পরে [ ইউটিউবে ক্লাস গুলো দিলাম] দেখা গেল, কেউ ওই ক্লাস শুনছে না। আমি নিজেও ছেলেমেয়েদের কেরিয়ার গাইড ওয়েবিনার করেছি ছটা। এসব কিছুই ছিল ফ্রি। কারন কোডার তৈরী হলে, কোডিং ক্লাব লাভ করত। দেখা গেল ছেলেপুলের শেখার ইন্টারেস্টই নেই। ১০০০-২০০০ ছেলে পরীক্ষা দিচ্ছে কোডিং ক্লাবে-কিন্ত ৪ জন ও ২৫% ক্লিয়ার করতে পারছে না। বেসিক্যালি কারুর কোন ইচ্ছাই নেই। সবাই ওই টিসিএস মডেলের ক্যাম্পাসিং চাইছে। আমি হোষ্টেলে শুয়ে বিড়ি গাঁজা টেনে কাটিয়ে দেব। আর ক্যাম্পাসিং এর দিন টাই শুট পরে আসলেই টিসিএস তুলে নিয়ে যাবে! এই হচ্ছে এদের এক্সপেক্টেশন।
কোডিং শিখতে হবে? সেটা কি?
এদিকে তিনমাস চালিয়ে বোঝাগেল -২০০০ ছেলেপুলে এল বটে, কিন্ত ১ টি পাতে দেওয়া যাবে না। ফলে ক্লাব চালিয়ে লাভ নেই। অথচ এই ক্লাব নিয়ে কোলকাতার অনেক আই টি কোম্পানী আশায় ছিল, এখান থেকে ভাল কোডার বেড়বে। ভাল ট্রেনার ছিল, কেউ নিতেই পারল না। প্রায় ১৫ টি কোম্পানী আমাকে ৫০০ এর বেশী ইন্টার্নের জন্য বলেছিল। আমি দেখলাম, একটিই দিতে পারছি না-৫০০ কোত্থেকে দেব। যারা ক্লাবে আসছে কোন বেসই নেই।
এই ব্যর্থতার পর, আমি নানান স্কুল শিক্ষকের সাথে কথা বলি। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রদের সাথে দেখাও করি। অবস্থা বোঝার জন্য,। ব্যাপারটা কি?
যেটা বুঝেছি---
১) এই সব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যারা পড়ছে-তাদের অভিভাবক বা ছেলেমেয়েদের কেরিয়ার কি বস্তু সেই আইডিয়াটুকুই নেই। সব প্রায় নিম্ন মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির। আই টি আই থেকে বিটেকে এসেছে। কেউ জমি বেচে। কেউ ধার নিয়ে। বাংলার আপার ক্লাস ফ্যামিলির ছেলেপুলেরা সরকারি কলেজে না পেলে, ইকো স্টাট ফিজিক্স ফার্মা নার্সিং এসব লাইনে যাচ্ছে। এদের প্রেফারেন্স স্কুলের চাকরি নইলে মেডিক্যাল লাইন। খুব কম সংখ্যায় প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে আসছে। কারন এদের ও বিশ্বাস উঠে গেছে। এইটুকু ঠিক।
কিন্ত সমস্যা হচ্ছে বাংলায় স্কুলের চাকরি কিলো দরে বিক্রি হয়ে গেছে। এখন যারা এম এস সি পাশ করেছে, তারাও সফটোয়ার ট্রেনিং নিয়ে সেই আইটিতেই ঢুকছে। যেহেতু স্কুলে কি হবে আর কেউ ভরসা রাখতে পারছে না। এখন এটাই যদি হয়, তাহলে বি এস এসি থেকেই সফটোয়ার শিখে সেটাই করতে পারত। জীবনে ৫ বছর এগিয়ে যেত।
২) কিন্ত এই যে বিপুল ৫০-৮০ হাজার ছাত্রছাত্রী প্রাইভেটে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে-এদেরই বা কি হবে? ২০২১-২২ সালে ক্যাম্পাসিং ভাল হয়েছিল। টিসিএস ইনফি প্রচুর লোক নিয়েছিল। কিন্ত তাদের অনেকেই এখনো জয়েনিং লেটার পায় নি [ পর্ব ২-৬ দেখুন, প্রচুর লেখা এবং নিউজ রেফারেন্স দিয়েছি]। এবার ক্যাম্পাসিং খুব বাজে হয়েছে। এর পরের বছর আরো বাজে হবে। কারন আমেরিকান মার্কেটে মন্দা। আর চ্যাট জিপিটির জন্য অনেক কম লোক লাগবে। যাদের লাগবে তাদের চোস্ত সিস্টেমে জ্ঞান থাকতে হবে। সেই ট্রেনিং ত কেউ দিচ্ছে না। ক্লাসে পড়ানো হচ্ছে। ছেলেপুলেরা পাশ করছে। কিচ্ছু শিখছে না।
অনেকে বলছেন কোর ইঞ্জিনিয়ারিং। লোকের আইডিয়াই নেই। ভারতের কোন ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টে ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ার প্রায় নেয় না। যারা ওইমোহে প্ল্যান্টের কাজ নিয়েছেন-দেখেছেন, ৫ বছরে স্যালারি প্রায় বাড়ে নি। অনেকেই অন্য লাইনে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
৩) সফটোয়ারে বাইরেও আমাদের বায়োলজি, কেমিস্ট্রি, ফিজিক্সের ল্যাব আছে। সেখানে বায়োসেন্সরে কাজ হয়। সেখানেও দেখছি ফিজিক্স কেমিস্ট্রি বাংলাতে সেই ৫০ বছরের পুরাতন ট্রাডিশনেই পড়ানো হচ্ছে। ফলে একাডেমিক্সে সমস্যা হবে না-কিন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর এনডিতে এদের মানিয়ে নিতে বেশ সমস্যা হয়। এবং সমস্যার মূল কারন, ফেলিওর কে আনালাইজ করতে ব্যর্থতা। যেটা বর্তমানে সফটয়ার থেকে কেমিস্ট্রি-সর্বত্র দরকার । কিন্ত স্কুল কলেজে ওই ভাবে পড়ানো হয় না। ফলে ছেলেমেয়েরাই বা নতুন পদ্ধতিতে শিখবে কি করে? তারা ত ১০০/১০০ পেতে অভ্যস্ত।
মোদ্দা ব্যপারটা কি? পৃথিবী বদলাচ্ছে দ্রুত। আমরাই তাল মেলাতে পারছি না। অভিভাবকরা মেলাবেন কি করে?
যত দিন যাচ্ছে তত, দেখা যাচ্ছে, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি থেকে সফটয়ার-সর্বত্রই আর এন ডিতে লোক লাগছে বেশী। এসব কাজে যথেষ্ট মেধা লাগে,। আর তার থেকে বেশী লাগে ব্যর্থতা থেকে দ্রুত শেখার শিক্ষা।
আগের দিনের ওই মুখস্থ করে, টিউশনি লাগিয়ে পরীক্ষাতে ১০০/১০০ এখন কেউ পাত্তাই দেবে না। কারন রিসার্চ এন্ড ডেভেলেপমেন্টে ওটার দরকার নেই-দরকার তাদের- যারা ব্যর্থতা থেকে দ্রুত শিক্ষা নিয়ে নতুন দিশা দেখতে পায়। বিজ্ঞানের আবিস্কার ওই পথেই হয়।
ফলে আমি দেখলাম, যে কোটি কোটি অভিভাবক অন্ধকারে। এদেরকে যে যেমন পারছে, লোভনীয় কোর্স দেখিয়ে মুর্গী করছে। আরে সবাই এ আই ডেটা সায়েন্স করছে- কিন্ত কেউ স্টাট ম্যাথ শিখতে চাইছে না। তা এদেরকে কে ইন্টার্নশিপ দেবে? আমাদের ডেটা সায়েন্সের ইন্টার্নের পরীক্ষায় ১০০% স্টাটের বেসিক প্রশ্ন থাকে। বাকীদের ও তাই হওয়া উচিত। কারন মেসিন লার্নিং লাইব্রেরী কোড চালাতে একটা ক্লাস ফাইভের ছেলেও পারে। কিন্ত অভিভাবকরা কি আর সেসব জানবে? তারা লাখ টাকার কোর্স দেখে, ডেটা সায়েন্সে চাকরির চাকচিক্য দেখে, সেইখানেই টাকা দেবে। তাদের কোন আইডিয়াই নেই ডেটা সায়েন্স খায় না মাথায় দেয়!
ফলে এই লেখাটা, এই সিরিজটা আমাকে লিখতেই হত। কাজের দুনিয়া এবং সেখানে শিক্ষার চাহিদাটা যে সম্পূর্ন বদলে গেছে- সেই বার্ত্তাটা অভিভাবকদের কাছে পৌছে দিতেই হবে।
ইউটিউবে অঙ্ক ইংরেজি কোডিং শেখার অসম্ভব ভাল রিসোর্স আছে।
বাংলার কোন শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব না ওর থেকে ভাল শেখানো। বা ওই লেভেলের ১০% শেখানো।
আমি সেগুলো রেগুলার দিচ্ছিও আমার পোষ্টে। আমার প্রোফাইল ফলো করতে থাকুন। আরো রিসোর্স পাবেন।
মনে রাখুন, এই পরিবর্তিত দুনিয়াতে সফল হওয়ার চার মন্ত্র
> ইউ টিউব থেকে সেলফ লার্নিং-যেকোন সাবজেক্টে
> সেই স্কিলের, মেন্টর পাওয়া- যিনি একজন প্রাক্টিসিং পেশাদার লোক [শিক্ষক নন ]
> ইন্টার্নশিপ
> কঠিন প্রবলেম, এলগোরিজম ইত্যাদি করে ব্যার্থতা থেকে শেখা- লার্নিং ফ্রম ফেলিওর।
শনিবারের গুগুল মিটে যোগ দিন। আর ডিটেলস দিন বলে আমাকে লজ্জা দেবেন না। এসব কিছুই আমার রিসেন্ট ফেসবুক পোষ্টেই আছে। খুঁজে নিন। নিজেরা সেলফ লার্নিং প্রাক্টিস করুন আগে। সেলফ লার্নিং এর প্রথম স্টেপ নিজে নিজে রিসোর্স খোঁজা।
আর আমার জীবন এবং জীবিকা সিরিজ পড়ার পর কোন প্রশ্ন থাকলে, হোয়াটসাপে গ্রুপে জয়েন করুন । সেখানে ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যে উত্তর পেয়ে যাবেন। হোয়াটসাপ গ্রুপের নাম্বার ও এই ফেসবুকেই পেয়ে যাবেন,। কমেন্টেই পেয়ে যাবেন। অন্যান্য পোষ্টের থ্রেডেই আছে।
পোষ্ট এবং প্রোফাইল ফলো করতে থাকুন। আগামী পর্বে [২০] আলোচনা করব কি করে আপনার সন্তান তুখোড় লার্নার হয়ে উঠতে পারে। কারন সেটা সবার আগে দরকার। তার আগে কোন লাইনে পড়বে ভেবে লাভ নেই। আপনারা তাদের টিউশনিতে পাঠিয়ে অলরেডী তাদের লার্নিং স্কিলের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন। আগে সেটা ঠিক করা যাক।
লেখাটি প্লিজ শেয়ার করুন। কারুন বাকী অভিভাবকরাও জানুক বাস্তব অবস্থা কি। শুধু আপনি আলোকিত হলেই হবে না। বাকীরা পেছনে থাকলে, তারাও আপনাকে পেছনে টানবে।
যোসেফের কোডিং ক্লাবের ক্লাস-কি করে কোডিং ইন্টারভিউ ক্রাক করতে হয় [ প্লে লিস্ট]
আই টি/ কম্পুটার/ ইলেকট্রনিক্সের ছেলেমেয়েদের জন্য আমার কেরিয়ার গাইড
[প্লে লিস্ট]

বাচ্চা এবং বড়দের কোডিং নিজে নিজে শেখার রিসোর্স-2

 বাচ্চা এবং বড়দের কোডিং নিজে নিজে শেখার রিসোর্স-2

বিপ্লব পাল, 31 শে মে Biplab Pal
[ এই পোষ্টটা আপনারা অনায়াসেই শেয়ার করতে পারবেন ফেসবুকে শেয়ার করার দরকার নেই... ]
এই পর্বে হাইস্কুলের কোডিং শেখার রিসোর্স দিচ্ছি- এগুলি যারা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ছে , তারাও ব্যবহার করতে পারে। কারন আমি দেখেছি, আমেরিকার হাইস্কুলের কম্পিউটার সায়েন্স এপি আর ভারতের কলেজের কম্পিউটার সায়েন্সের সিলেবাস এবং লেভেল প্রায় এক।
CrashCourse Computer Science: This playlist goes through the history of computing, up to and including modern topics. The explanations are clear and the animations are helpful. It's an excellent starting point to get an overview of the field.
CS50's Introduction to Computer Science: This is Harvard University's introduction to the intellectual enterprises of computer science and the art of programming. CS50's lectures are available for free on YouTube.
Code.org: This channel is dedicated to expanding access to computer science, and increasing participation by women and underrepresented students of color. They have many educational videos and tutorials on various topics.
The Coding Train: Daniel Shiffman makes creative coding tutorials and examples with a focus on algorithmic art and generative design. His video series on nature of code is particularly good.
TheNewBoston: This channel contains a vast amount of tutorials on a wide range of computer science topics, including programming languages like Python and Java, which are commonly taught in high schools.
MIT OpenCourseWare: While this is a college-level resource, the Introduction to Computer Science and Programming in Python course can be a helpful and challenging resource for a high school student who's particularly interested in the field.
Khan Academy's Computing Courses: They cover a wide range of topics including algorithms, cryptography, information theory, and coding.
To Learn Python and analytic package from school level :>>
Corey Schafer's Python Tutorials: These tutorials are very detailed and cover a wide range of Python topics. The tutorials on Python basics are great for beginners.
Sentdex's Python Programming for Beginners: This channel offers a beginner-friendly Python course. It also provides tutorials for more advanced topics and specific packages like Matplotlib, Pandas, and Scikit-Learn.
Data School's Python Pandas Tutorials: This channel offers a tutorial series focused specifically on using the Pandas library for data science in Python.
freeCodeCamp.org's Python Course: This is a complete Python course for beginners and covers Python in 4 hours. It is very comprehensive and easy to understand.
Krish Naik's Python for Data Science: Krish Naik provides a detailed course on using Python for data science. He explains the different packages and functionalities used in data science.
CS Dojo's Python Tutorials for Absolute Beginners: CS Dojo's Python tutorials are very beginner-friendly and cover all the basics you need to start coding in Python.
Keith Galli's Python Tutorials: These tutorials are excellent for beginners and cover a wide range of Python topics. His tutorials on Python's data science packages are particularly helpful.