Wednesday, March 15, 2023

জীবন ও জীবিকা 5 - যারা কোর সাবজেক্টএ বিটেক বা সায়েন্সে এম এস সি পাশ করছে তাদের ভবিষ্যত কি? -৬ ই মার্চ, ২০২৩

 জীবন ও জীবিকা 5 - যারা কোর সাবজেক্টএ বিটেক বা সায়েন্সে এম এস সি পাশ করছে তাদের ভবিষ্যত কি? -৬ ই মার্চ, ২০২৩

(১)
ক্যাপিটাল বা পুঁজির গতি
'
আমরা কি চাই, আমাদের কি কাজ করতে ভাল লাগে, তাই দিয়ে কিন্ত চাকরি বা জীবিকা তৈরী হয় না।
আবার আমাদের কি প্রয়োজন, বিশ্বের কি প্রয়োজন -তাই দিয়েও নতুন জীবিকা তৈরী হয় না।
জীবিকা এবং চাকরির পেছনে, একটাই শব্দ "পুঁজি" বা ক্যাপিটাল। আপনি চান বা না চান, ক্যাপিটাল যেদিকে ছুটবে, চাকরির গতিও সেই দিকেই হয়। আর সেটা অনেক কারনেই সমস্যা। মূল দুটো কারন হল-অনেক ক্ষেত্রেই হাইপের পেছনে অনেক চাকরি তৈরী হয়। তারপর দেখা গেল সেই ফিল্ডের আর হাইপ নেই । ফলে সেখানে প্রচুর বেকার তৈরী হয়। টেলিকম এমন এক উদাহরন। দ্বিতীয় কারন হচ্ছে, এই কোর ফিল্ডগুলির যেসব কোম্পানী-তারা অপেক্ষাকৃত স্টেবল হলেও যখন বসে যায়, তখন নতুন কোন চাকরি পাওয়া সমস্যা হয়। কারন অলিতে গলিতে সফটোউয়ার কোম্পানীর মতন কোর কোম্পানী সর্বত্র সর্বভূতে নেই।
আমি আগেই লিখেছি, কেউ যদি তার সাবজেক্টে খুব ভাল হয়- তাকে চাকরি খুঁজতে হয় না। চাকরি তাকে খুঁজে নেবেই। এটাও লিখেছিলাম ১% ছেলেমেয়েরা যারা নিজেদের সাবজেক্ট ব্যাচেলর বা মাস্টার্স করেছে-তারা নিজেদের সাবজেক্টটা জানে কি না সন্দেহ।
ভবিষ্যত জানতে গেলে একটা জিনিস অবশ্য জানা দরকার। সফটোয়ার বা মেকানিকাল বা ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারদের- মানে কোর সাবজেক্টে যারা বিটেক করেছে -তাদের মাইনে আসে কোথা থেকে?
মূলত তিনটে জায়গা থেকে। প্রোডাকশন, আরেন্ডি বা গবেষনা, আর সেলস ইঞ্জিনিয়ার বা সেলস সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে।
এর মধ্যে ভারতে প্রথম দুই এর স্কোপ খুব কম। কারন প্রোডাকশন সবাই আই টি আই পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার ডিপ্লোমা দিতে চালায়। খুব কম কোম্পানী বিটেক হায়ার করে। আমি দেখেছি জেকে টায়ার, প্রোক্টর এন্ড গ্যাম্বলের বিরাট প্ল্যান্টে হার্ডলি হাতে গোনা মাত্র কজন বিটেক ইঞ্জিনিয়ার থাকে। তাদের মাইনে ছোট সফটোয়ার কোম্পানীর জুনিয়ার সফটোয়ার ডেভেলপারদের থেকেও কম।
ভারতের অধিকাংশ কোম্পানীর আরেন্ডি নেই। টাটারা ব্যতিক্রম। বাকি সবাই বিদেশ টেকনোলজি লাইসেন্স করে। ভারতের আই আই টিগুলো টেকনোলজি ডেভেলপ করতে পারে না-কারন তাদের পেছনে শিল্প সংস্থার খুব বেশী সাপোর্ট নেই। অবস্থা এখন আস্তে আস্তে বদলাচ্ছে। বিশেষত বিজেপি সরকার ডিফেন্স ইন্ড্রাস্ট্রি ডি আর ডি ও নামক সরকারি সাদা হাতি থেকে বার করে প্রাইভেটাইজ করে ভাল করেছে-কারন এতে অন্তত কোর ইঞ্জিনিয়ারিং এর চাহিদা বাড়বে। আমেরিকাতে মেকানিক্যাল ইলেক্ট্রিক্যাল ইত্যাদি ভাল ভাল কোর ফিল্ডের লোকেদের চাকরি হয় মূলত এইসব ডিফেন্স কোম্পানীগুলিতে। এছাড়াও আর্মিকোর ইঞ্জিনারিং, এয়ারফোর্স মেইন্টেনান্স ইত্যাদি মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং এর চাহিদা আস্তে আস্তে বাড়তেই থাকবে। কারন ভবিষতে যুদ্ধ করবে রোবটেরা, রোবট গাড়িতে চেপে! নেহেরুর সরকারি কোম্পানী খুলে নতুন ট্যাঙ্ক বানানোর ভূত ভারতের মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের বিকাশের প্রচন্ড ক্ষতি করেছে। এখন প্রাইভেটাইজেশনের ফলে আস্তে আস্তে এই সেক্টরের বিকাশ হবে ভারতে। ফলে কোর ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা বাড়বে। ডিফেন্স শিল্পে লাইসেন্সিং করে বেশী দূর যাওয়া যায় না। ফলে এখানে ভাল কোয়ালিটির কোর ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা ভালোই বাড়বে।
আর পরে রইল সেলস। সেলস ইঞ্জিনিয়ার যত না ইঞ্জিনিয়ার তার থেকে তাকে সাহিত্যিক হতে হবে-কথা সাহিত্যিক হতে হবে বেশী! যাদের সাহিত্যে ছিল মন, কিন্ত বাবা-মা জোর করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলে ঢুকিয়ে দিয়েছে-তাদের জন্য সেলস ইঞ্জিনিয়ার হওয়া ভাল। এখানে কমিউনিকেশনের কদর আছে। সেলস ইঞ্জিনিয়ারদের মাইনে এবং ওঠার স্কোপ দুটোই ভাল। কিন্ত তাদেরকে ইঞ্জিনিয়ারিং, কমিউনিকেশন এবং অপারেশন- এই তিনটেই দক্ষ হতে হয়। যা বেশ কঠিন। তাই তাদের মাইনে আগের দুটো ক্ষেত্রের থেকে বেশী।
(২) নতুন যুগের নতুন ডিমান্ড --
কিন্ত মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মানে ইলেক্ট্রিকাল, ইলেক্ট্রনিক্স, সফটৌয়ার শেখার দরকার নেই?
এই মুহুর্তে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ সব থেকে হট টপিক - অটোমেটেড কার, ইলেক্ট্রিকাল কার, ড্রোন, রোবটিক্স ইত্যাদি। এগুলো মেকানিক্যাল, ইলেক্ট্রনিক্স, সফটোয়ার, এই আই-সব কিছুর মৃগয়া ক্ষেত্র। এর সাথে আছে মেটাভার্স- যা গেম ইঞ্জিনের বাস্তব অনেক এপ্লিকেশন। সেখানে ফিজিক্স, মেকানিক্যাল, সি প্লাস প্লাস-সব কিছুই লাগে।
আগের মতন মেকানিক্যাল মানে, শুধু মেশিন ডিজাইন শিখে লাভ নেই ( ভারতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়াদের সেই স্কিলও কারুর নেই )। মেকানিক্যাল ইলেক্ট্রিক্যাল ইদ্যাদি সব ব্রাঞ্চের ছাত্রদের সফটয়ার ডেটা সায়েন্স সেন্সর, মেকাট্রনিক্স ইত্যাদি সাবজেক্ট শেখা উচিত। মুশকিল হচ্ছে ভারতের কোন কলেজে এসব শেখাবে? মেকানিক্যালের ক্লাসিক্যাল সাবজেক্ট পড়ানোর ভাল শিক্ষকই ত নেই!
এই জিনিসটা যারা ফিজিক্স, স্টাট, ম্যাথ , কেমিস্ট্রি নিয়ে পড়ছে তাদের জন্যও সত্য। কেমিস্ট্রি এবং বায়োলজির ভবিষ্যত ভাল হওয়া উচিত কারন হেলথকেয়ার উত্তোরোত্তর আমাদের ইনকামের, আমাদের জিডিপির অধিকাংশ খেয়ে নিচ্ছে। কিন্ত ভারতে এটা হচ্ছে না। কারন ভারতে বায়োলজি, কেমিস্ট্রির স্টার্টাপ নেই। সবাই ভারতে কর্মাস স্টার্টাপ খোলে ১৪০ কোটি মানুষের মার্কেট পেতে। ফলে ভারতের ছাত্ররা বিদেশে গিয়ে গবেষনা করে নতুন জিনিস তৈরী করছে-আবার ভারতের কোম্পানীরা বিদেশ থেকে লাইসেন্স করে সেটা কিনছে! তবে এখানে দিনকাল আস্তে আস্তে বদলাচ্ছে। আরো বদলাবে।
অনেকেই বলবেন যারা ফিজিক্স কেমিস্ট্রি পড়ছে-তাদের শিক্ষকতার লাইন ত খোলা রইল! আমি খুব নিশ্চিত নই- চ্যাট জিপিটি, গুগুলের যুগে কিভাবে শিক্ষকতা এবং সাবজেক্টের পুনবিন্যাস হবে। আমেরিকাতে অলরেডি স্কুল লেভেলে এসব বেসিক সায়েন্সের টিচারদের ডিমান্ড খুব কমে গেছে। কারন আমেরিকাতে হাই স্কুল থেকেই [ এখানে ক্লাস ৯ থেকে ১২, ৪ বছর হাইস্কুল] "এডভান্সড প্রোগ্রাম" বা এপি স্পেশালাইজেশন করতে দিচ্ছে। ফলে যে ভবিষ্যতে সফটোয়ার ইঞ্জিনিয়ার হতে চাইছে, সে হাইস্কুলেই ৫-৭ টা কলেজ লেভেলের কম্পিউটার সায়েন্স কোর্স নিতে পারে- তাকে ম্যাথ বা ফিজিক্সের বা কেমিস্ট্রির খুব কম কোর্স নিতে হয়। যারা ডাক্তারি বা ফার্মাসিতে যাবে তারা বায়োলজি, কেমিস্ট্রির বেশী কোর্স নিচ্ছে । আমার ধারনা এটা ভারতের নতুন এডুকেশন পলিসিতে এসে গেছে। কারন ভারতের বর্তমান স্কুল সিস্টেম সম্পূর্ন বোগাস এবং ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের ক্ষতি করছে। এগুলো বদলাবেই। এবং ভারতের নতুন শিক্ষা পলিসিতে সেটা স্বীকার করা ও হয়েছে।
আমি মনে করি যারা কেমিস্ট্রি বায়োলজি ফিজিক্স নিয়ে পড়ছে-তাদের ভবিষ্যত বেশ ভাল- যদি তারা সাবজেক্টটা শেখে এবং বিদেশে শিল্প গবেষনাতে চান্স পায়। বা দেশেও আরেন্ডিতে কাজ শুরু করে। ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ অটোমেট করা সহজ। সায়েন্সে সেটা সম্ভব না। কারন সেখানে কাজটাই হচ্ছে নতুন আবিস্কার। এই এ আই এর যুগে ইঞ্জিনিয়ারিং কাজের অটোমেশন হবে সবার আগে। কারন ইঞ্জিনিয়ারিং রিপিটেটিভ স্টান্ডার্ড কাজ- যার অটোমেশন করা সব থেকে সহজ। সুতরাং ইঞ্জিনিয়াররাও সায়েন্সটিস্ট হয়ে যাবে। এবং সেটাই হচ্ছে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা রোবটের এ আই নিয়ে গবেষনা করছে।
ভবিষ্যতে মেকানিক্যাল ইলেক্টিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বলে কিছু থাকবে না। এগুলোকে বলা হবে মেকানিক্যাল এন্ড অটোমেশন সায়েন্স বা ওই জাতীয় কিছু।
আসলে আমরা খুব দ্রুত পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। যারা এই পরিবর্তনের ধারাপাতটা দ্রুত বুঝতে পারবেন, একমাত্র তাদের সামনেই উজ্জ্বল ভবিষ্যত। বাকীটা বেশ ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট বাইনারী কেস।

জীবন ও জীবিকা ৪ - এবার যারা বিটেক পাশ করছে তাদের ভবিষ্যত কি?

 জীবন ও জীবিকা ৪ - এবার যারা বিটেক পাশ করছে তাদের ভবিষ্যত কি?

-৫ই মার্চ, ২০২৩
[১]
গত তিনমাসে যেসব সংবাদ ভারতের নিউজ পেপারে দেখেছি
#১ ইনফোসিস উইপ্রো এক্সেঞ্চার ফ্রেশার লেওফ করেছে। আরো করবে কিছু খবরে আসছে। অধিকাংশই খবরে আসে নি । এদের ক্যাম্পাসিং হয়েছিল ২০২১ সালে। ২০২২ সালে যারা ক্যাম্পাসিং করে পেয়েছে, তাদের অধিকাংশ এখনো জয়েনিং ডেট এবং লেটার পায় নি। তাদের ঢোকার কথা ছিল আগষ্ট অক্টবরে। যদিও খবরে দেখানো হচ্ছে ইন্টারন্যাল টেস্ট পাশ করতে পারে নি বলে এদের তাড়ানো হয়েছে। আমি এমন ছেলেমেয়েদের সাথে কথা বলে জেনেছি-আসলে এরা বেঞ্চে ছিল। কোম্পানী কাজই দিতে পারছিল না। কিন্ত খবর এসেছে অন্যভাবে [ তথ্যসূত্র কমেন্টে)
# ২
টিসিএস, কগনিজেন্ট, উইপ্রো-সবার এক অবস্থা ২০২২ এবং ২০২১ সালের পাশ আউট ফ্রেশার দের নিয়ে। বেসিক্যালি ভারতের আই টি মেজরদের সবার অবস্থা এরকম
২০২১ সালে যাদের ক্যাম্পাসিং হয়েছিল তাদের ম্যাক্সিমাম বেঞ্চে আছে এবং নীরবে লেওফ ফেস করছে।
২০২২ সালে যারা ক্যাম্পাসিং এ পেয়েছিল তাদের অধিকাংশর জয়েনিং এরা দিতে পারছে না এখনো। [ কমেন্টে নিউজ লিংক দেখুন] কারন বেঞ্চে প্রচুর ফ্রেশার বসে আছে।
২০২৩ সালে ক্যাম্পাসিং প্রায় হচ্ছে না।
এগুলো নিয়ে যেটুকু সংবাদ আসে-তা খুব সামান্য। কারন কর্পরেট লবি এসব খবর চেপে দিতেই পছন্দ করে। মুর্গী হয় ছাত্রছাত্রীরা। কিন্ত তবুও এবার খবর আটকানো যাচ্ছে না। প্রচুর সংবাদ আসছে, গ্লোবাল আই টি রিশেসনে ফ্রেশারদের দুরাবস্থা নিয়ে।
[২]
এবার দুটো জিনিস আরো জানা যাক।
# ১ আই টি, সফটোয়ার অটোমেশন এগুলো বাড়াতেই থাকবে। আই টির ডিমান্ডে সমস্যা নেই।
# ২ আই টির সার্ভিস মার্কেটে ফ্রেশারদের ডিমান্ড থাকবেই। কারন ফ্রেশারদের দিয়ে কাজ করিয়েই কোম্পানীগুলির আসল মার্জিন-মানে বড় লাভ হয়।
কিন্ত দুটো নতুন জিনিস ও জানা দরকার।
# ১ চ্যাটজিপিটির কোডেক্স টাইপের সফটোয়ার নিজে নিজেই মোবাইল এপ ইত্যাদি লিখে দিচ্ছে-শুধু ফিচার কি হবে বলে দিলেই হল। সুতরাং আই টি এবং সফটোয়ারের ডিমান্ড বেশী থাকা মানেই কিন্ত চাকরির সংখ্যা বাড়তেই থাকবে- সেটা না। অন্য স্কিলের লোকজনের সংখ্যা বেশী হবে। যেমন অলরেডি কোম্পানী সেই টাইপের লোক খুঁজছে যারা চ্যাট জিপিটি কাজে লাগিয়ে তাদের কাজ টা করে দেবে। এতে কোম্পানীর প্রফিট বেশী।
# ২ ফ্রেশার দিয়ে লাভ করা- এই বিজনেস মডেল থাকবে কি না- সেটাই সন্দেহ। কারন বেসিক কোডিং চ্যাট জিপিটিই করে দেবে।
কেউ কেউ আবার এতোটাই আশাবাদি [ কমেন্টে তথ্যসূত্র দেখুন], তারা বলছেন আগামী ৫ বছরে কোডিং টাই থাকবে না। আমি এদের দলে। কারন আমি পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি প্রাইভেট ডেটাবেসে এই ধরনের লার্জ লাঙ্গুয়েজ মডেল ট্রেইন করাতে পারলে, বটেরা মানুষের থেকে অনেক ভাল কোড করবে।
সুতরাং আই টি সেক্টরে ক্যাম্পাসিং, অতীতের গল্প হয়ে যেতে পারে। যদিও মেকানিক্যাল, ইলেক্ট্রিকাল ইত্যাদি কোর সেক্টরে এখনো সেই ভয় নেই। কিন্ত ভারতে কোর সেক্টরের মাইনে খুব কম।
[৩]
প্রশ্ন হচ্ছে ফ্রেশ গ্রাজুয়েটরা কি করবে? কারন শুধু ২০২৩ সালে যারা পাশ করবে তারা না, ২০২১ সালে যারা পাশ করেছে, দুর্দিন তাদের সামনেও।
সুতরাং আমার উপদেশ, নতুন ছাত্রদের চ্যাটজিপিটির কোডেক্সের সাথে পরিচিত হতে হবে। নতুন যেসব কোডিং ট্রেনিং আসছে চ্যাটজিপিটিকে ব্যবহার করে [ যেখানে চ্যাট জিপিটি নিজেই ট্রেনার]-সেগুলো শিখতে হবে দ্রুত। এগুলো করলে, ভালোই চান্স আছে। নইলে আগের মতন ক্যাম্পাসিং এর ভরসাই থাকলে, ভাগ্যে দুর্ভাগ্য আর হতাশা ছাড়া কিছু আশা দিতে পারছি না। আমি বলব ছাত্রছাত্রীরা তাদের আগের ব্যাচের ছাত্রছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানুন শিখুন মার্কেটের অবস্থাটা কি।
See insights
Boost unavailable
All reactions:
Dipankar Banerji, Indranil Basu and 61 others

জীবন এবং জীবিকা-6 ঃ কোম্পানীতে ইন্টার্নশিপ, বিটেক সার্টিফিকেটের থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ন ?

 জীবন এবং জীবিকা-৫ ঃ কোম্পানীতে ইন্টার্নশিপ, বিটেক সার্টিফিকেটের থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ন ?

শ্রীধর ভেম্বুর নাম শুনেছেন? অনেকেই শোনেন নি-কারন তিনি লোকচক্ষুর আড়ালে ভারতের সব থেকে সফল সফটোয়ার প্রোডাক্ট কোম্পানী জোহো তৈরী করেছেন। শ্রীধর আই আই টি মাদ্রাস, তারপর প্রিন্সটনের পি এইচ ডি। জোহো ভারতের সব থেকে সফল স্টার্টাপ-কিন্ত কোন স্টার্টাপ ফান্ডিং নেয় নি। সম্পূর্ন অর্গানিক গ্রোথ। জোহোর নাম, ভারতের আই টি ছাত্ররা হয়ত শোনে নি-কারন জোহো ক্যাম্পাসিং করে না। অথচ, আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে জোহোর সফটোয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং কোয়ালিট ভারতের অন্যান্য সফটোয়ার কোম্পানীর থেকে অনেক এগিয়ে। গোট বিশ্বজুড়ে তাদের প্রোডাক্টের সাফল্য-যেখানে তারা সিলিকন ভ্যালির বহু বিলিয়ান ইনভেস্টেড কোম্পানী সেলসফোর্সকে হারিয়ে দিচ্ছে- সেখানে সন্দেহের অবকাশ থাকে না, তাদের সফটোয়ার ইঞ্জিনিয়ারদের কোয়ালিটি আন্তর্জাতিক মানের। কিন্ত তারা আই আই টি ইত্যাদি ক্যাম্পাসিং করে না!!
শ্রীধর মনে করেন, ভারতের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি কোয়ালিটি সম্পূর্ন ফালতু। ওই দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের প্রোডাক্ট কোম্পানী হবে না- বড়জোর টিসিএস ইনফির আই টি কুলিগিরির বিজনেস হবে। সেইজন্য শ্রীধর তামিলনাডুর গ্রামে গ্রামে নিজেই জোহোর স্কুল খুলেছেন। বাছাই করা গরীব মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের তুলে এনে মাসে ১০,০০০ টাকা ইন্টার্নশিপ স্টাইপেন্ড দেন। একদম স্কুল থেকে তারা জোহোর ভাল ভাল সফটোয়ার ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে হাতে কলমে শেখার সুযোগ পাচ্ছে ( ইন্টার্নশিপ )। শ্রীধরের কোম্পানীর একদম সেরা মানের সফটোয়ার ইঞ্জিনিয়ার পাওয়ার চাবিকাঠি এটাই।
শ্রীধর ভেম্বু দেখিয়ে দিয়েছেন ভারতের ছেলেমেয়েরাও পারে। একদম বিশ্বমাঝে শ্রেষ্ঠ আসন নিতে পারে যদি, তাদের আমরা সেই সুযোগ, সেই পরিকাঠামো দিই।
কোলকাতার সেক্টর ফাইভের সফটোয়ার কোম্পানীর অধিকাংশ সিইওই আমার ব্যক্তিগত লেভেলে চেনা। অনেকে বহুদিনের বন্ধু। তাদের সাথে দেখা হলেই, গল্পটা আক্ষেপের পর্যায়ে চলে যায়। আক্ষেপ এই যে- আই টি ব্যবসার মার্কেট খুব ভাল। বিশেষত আউটসোর্সিং এর। কিন্ত আমরা সঠিক ভাবে ভাল কোডার পাই না। সাপ্লাই লাইনের অভাবে আমাদের সবার ব্যবসাতেই ভাল ক্ষতি হচ্ছে। প্রোডাক্ট কোম্পানী বানানো অনেক দূর। ব্যাঙ্গালোর বা পুনেতে যে অবস্থা খুব বেশী ভাল তা না। এত এত ছেলে পাশ করে বেরোচ্ছে- এদের ১% ও ভাল কোডার না। ২০১৯ সালে একবার আমরা ক্যাম্পাসিং এ পরীক্ষা নিয়েছিলাম। ১৮০০ ছাত্রের মধ্যে মাত্র ৩জন ৩০% এর বেশী পেয়েছিল। আমাদের একটা কোডিং ক্লাব আছে- সেখানে ৫০০+ মতন ছাত্রছাত্রী কোডিং চ্যালেঞ্জ প্রাক্টিস করে। ১০জন ছাত্রছাত্রীও নেই যে বলবো এরা কোডিং ভাল শিখেছে। ভাল শিখেছে মানে গুগুলের যে কোডিং স্টান্ডার্ড- কোডিং জ্যাম এর স্টান্ডার্ড মেইন্টেইন করতে পারে!
এবার আমরা সব দোষ দিই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোর ওপর। কারন অভিযোগ তারা টিচারদের ঠিকঠাক ইউজিসির স্কেল দেয় না। টিচার নেই। মুশকিল হচ্ছে যদি তারা শিক্ষকদের ঠিক ঠাক ইউজিসির স্কেল দিতও, তাহলেও একজন ভাল কোডারের বেতন একজন ইউজিসির প্রফেসরের থেকে ৩-৮ গুন!!!! সুতরাং কোন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে, শিক্ষকদের ইউজিসি স্কেল দিলেও ভাল কোডিং শিক্ষক পাওয়া যাবে তা কিন্ত গণিতের নিয়মেই সম্ভব না।
তাহলে ছেলেমেয়েরা সফটোয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বা কোডিং ভাল শিখবে কোথায়?
অনেক বাবা-মা চিন্তিত হয়ে আমাকে হোয়াটসাপ মেসেজ পাঠান-ছেলেটা +১২ এ খুব খারাপ রেজাল্ট করেছে। এখন একটা ওচা প্রাইভেট ইঞ্জিনিইয়ারিং কলেজ ছাড়া পাচ্ছে না! কি করা যায় ইত্যাদি-ইত্যাদি--
আমি তাদের একটা কথায় বারবার বলেছি- তাদের ছেলে বা মেয়েরা যদি সত্যিই সফটয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং শিখে ভাল চাকরি করতে ইচ্ছুক- তাহলে কোন কলেজে কি ডিগ্রি পাচ্ছে-তা দেখে লাভ নেই। তাকে ফার্স্ট ইয়ার থেকে কোন সফটোয়ার কোম্পানীতে ইন্টার্নশিপ মানে খাতা কলমে কোডিং শিখতে হবে।
কোলকাতায় এমন প্রচুর ছোটখাট কোম্পানী আছে। ৪-১০জন কর্মী। কিন্ত মালিক নিজেই সফটয়ার কোডার। ভাল কোডার। সেই শেখায়। আজকের দি্নে বিটেক, বি এস সি এসব ডিগ্রি দিয়ে কেউ চাকরি পাবে না। সে স্কিল জানে সেই পাবে। যারা আই টি ক্যারিয়ারে ইচ্ছুক-তাদের একদম স্কুল লেভেল থেকেই এইসব ছোট ছোট সফটোয়ার কোম্পানীতে ইন্টার্নশিপ করে কোডিং শেখা উচিত। আরেকটু ভাল শিখলে, আরেকটু বড় কোম্পানীতে যাবে।
নইলে ৩ বা ৪ বা ৫ বছরের যাই আই টির কোর্স হোক-সব বেকার। কোন কাজের না। কোন কলেজেই কোডিং এর ভাল শিক্ষক নেই। কারন যে ভাল কোডীং জানবে সে কোম্পানীতে চাকরি করবে, বা নিজেই কোম্পানী খুলবে।
সুতরাং যারা আই টি কেরিয়ারে ইচ্ছুক-তাদের প্রথম বর্ষ থেকেই ছোট ছোট কোম্পানীগুলোতে ইন্টার্নশিপে যেতে হবে। এছাড়া কোডিং ভাল শেখার দ্বিতীয় কোন উপায় নেই।

Wednesday, March 1, 2023

জীবিকা ও জীবন -৩ ঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে কি ভাবে তৈরী হতে হবে ছোটবেলা থেকে ?

 জীবিকা ও জীবন -৩ ঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে কি ভাবে তৈরী হতে হবে ছোটবেলা থেকে ?

বিপ্লব পাল, পয়লা মার্চ, ২০২৩
এটা মাধ্যমিক, সিবিএসসির সময়। আমি বেশ অবাক হই, এখনো এদের সিলেবাসে সেসব প্রশ্ন আসে, যা গুগুল করলে এক সেকেন্ডেই পাওয়া যায়। চ্যাট জিপিটি আরো এক কাঠি ওপরে-এখন প্রশ্ন করলে, "মোটামুটি" কোয়ালিটি উত্তর ও দিয়ে দেবে।
২০০১ সালের প্রবল ঠান্ডার মধ্যে যখন আমেরিকাতে এসেছিলাম, তখন দেশটাকে ঘুরে দেখার একমাত্র উপায় ছিল পেপারের ওপর আঁকা ম্যাপ। ২০০৪ সালে কর্মসূত্রে ক্যালিফোর্নিয়াতে একেক মাসেই ঘুরতাম প্রায় আট দশ হাজার মাইল । গ্রাম থেকে গ্রামে, পাহার থেকে হ্রদে। ক্যালিফোর্নিয়ার গোটা রাজ্যটাই পৃথিবীর বুকে স্বর্গ। হাতে ম্যাপ। মাধ্যমিকের ভূগোল নলেজ কাজে আসত। তারপর এসে গেল জিপিএস-গার্মিন। সেই বলে দিতে লাগল, রাস্তা, অলি গলি। এখান থেকে ওখানে! ব্যাস গত ১৬ বছরে ম্যাপ রিডিং একদম হারিয়ে গেছে। এখন ইচ্ছা করেই অনেক সময় জিপিএস চালাই না। আমার টেসলার সামনে এক ঢাউস ম্যাপ দেখা যায়। নিজেই ম্যাপ দেখে রাস্তা রাউট করি। এইটুকু মাঝে মাঝে, না করলে, ম্যাপ রিডিং করার ব্রেনের যে ক্ষমতা ছিল, যা সম্পূর্ন নষ্ট হয়ে যাবে।
আরেকটা মজার ঘটনা বলি। কোলকাতায় আমার যে ড্রাইভার-সে একবার কোন রাস্তায় গেলে, সম্পূর্ন মনে রাখে। মানে ছবির মতন রাস্তাঘাট মনে রাখত। গত দুই বছর দেখছি-সেও স্মার্টফোনে নেভিগেশনের স্বাদ পেয়ে গেছে। এখন আর মনে রাখার চেষ্টা করে না। এখন সেও স্মার্টফোনের নির্দেশ নির্ভর!
ক্যালকুলেটর আর স্প্রেডশিটের দিনে কেউ আর যোগ বিয়োগ গুন ভাগ মনে মনে করে না। ফলে অধিকাংশ মানুষের মধ্যে সেন্স অব নাম্বারটাই হারিয়ে গেছে। আমি এখনো কিছু কিছু যোগ বিয়োগ গুন ভাগ, মনে মনে করার চেষ্টা করি। নইলে সেন্স অব নাম্বার সম্পূর্ন হারিয়ে যাবে। যা একজন ইঞ্জিনিয়ার এর পক্ষে খারাপ।
চ্যাট জিপিটি আসার সাথে সাথে, এটাই আমার প্রথমে মনে এল। এবার ছাত্রছাত্রীরা লেখালেখির অভ্যেস ছেড়ে দেবে। যদিও চ্যাট জিপিটির লেখার হাত মারাত্মক কিছু ক্রিয়েটিভ না- কিন্ত কার্যকর। কিন্ত ছাত্রছাত্রীরা যদি লেখালেখি ছেড়ে দেয়, চিন্তা করাটাই ছেড়ে দেবে। লেখাত আমাদের চিন্তার প্রতিবিম্ব।
মেশিনের ওপর নির্ভর হতে হতে এই যে সেন্স অব ডিরেকশন, সেন্স অব নাম্বার, বেসিক চিন্তাকে ট্রান্সলেট করার ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে- এর ফল হবে মারাত্মক।
আপনি বলবেন কেন? অটোমেশন যা করে দিচ্ছে-যা মানুষে করে কি হবে?
এবসোলিউটলি ঠিক। কিন্ত অটোমেশন কি করবে- সেটা খামারই হোক বা কারখানা- মিলিটারি বা মেডিক্যাল -বলে দিতে হবে কিন্ত সেই মানুষকেই। আর সেটা করতে গেলে আমাদের চিন্তাকে আরো উন্নত করতে হবে- যেখানে এই সেন্স অব ডিরেকশন, সেন্স অব নাম্বার, এবসট্রাকশন, কাল এবং ত্রিমাত্রিক ধারনা-একটা সিম্যুলেশন সম্পূর্ন মাথায় রাখা-এগুলো না রাখলে সেই সৃজনজীল চিন্তা, সেই ক্রিয়েটিভ স্ট্রাটেজিই বা আসবে কোথা থেকে?
হোয়াট ইজ ক্রিয়েটিভিটি? সৃজনশীলতা কি ? সৃজনশীলতা-তা কাব্যেই হোক, বা বিজ্ঞানে, অঙ্কে বা ফুটবলের মাঠে- তা একটাই- চিত্রকল্প মাথায় ভেসে ওঠা।
মেসি, এমবাপের পাশ গুলো দেখেছেন? ওই পাশ গুলো যে "অন্যতম সমাধান" সেগুলো আপনি আগে থেকে ভাবতে পারেন? ওরা পারে। কারন ওগুলো দ্রুত ওদের ব্রেনে ভেসে ওঠে।
১৯৯৭-৯৮ সাল। তখন পিএইচডি করছি। আমার লিনাক্স সিস্টেমে একটা দাবার গেম ছিল। সেটার সাথে খেলতাম এবং হারতাম। এটা সেই সময় যখন ক্যাস্পারভ বনাম ডিপ ব্ল -মানুষ বনাম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ হত। ২০০৪-৫ সালের পর আর এসব হয় নি। কারন এখন অতি সাধারন কম্পিউটার গেমের এলো রেটিং ৩০০০+ হয় এবং তা গ্রান্ড মাস্টারদের হারিয়ে দেবে। আমি হারতাম, শুধু শিখতে। মনে রাখবেন, জিতলে কেউ শেখে না। শেখে হারলে। সাফল্য শেখায় না, ব্যর্থতা শেখায়।
এখন প্রশ্ন উঠবে, যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের সব ক্ষেত্রে হারিয়ে দেয়, তাহলে, তার সাথে যুদ্ধ করে, প্রতিযোগিতা করে কি হবে?
দুটো ভুল হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শুধু সেই ক্ষেত্রেই কাজ করবে-যেখানে ডিগ্রি অব ফ্রিডম কম এবং সিস্টেমে ডেটারমিনিজম বেশী। দাবাখেলায় কম্পুউটারকে হারানো যায় না- কারন দাবা খেলায় কটা সম্ভাব্য চাল হবে- এবং তার ফল কি হবে, তা আগে থেকে গননা করা সম্ভব।
কিন্ত ধরুন আপনি বৌ বা প্রেমিকার সাথেও খেলছেন। সেই খেলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে চাল দিতে বলুন। ডাঁহা ফেল করবে। কারন আপনার বৌ বা প্রেমিকার মুড এবং চয়েস দুটোই ভীষন আনসার্টেন-কখন কি করবে তার ঠিক নেই! যুক্তিপূর্ন চয়েস নেবে-তারা কোন নিশ্চয়তা নেই। একই কথা খাটে কন্সিউমার মার্কেটে। মহিলারা যে কিভেবে কি যুক্তিতে তাদের পার্টনার বা প্রোডাক্ট সিলেক্ট করে- তার অনেক ক্ষেত্রেই মাথামুন্ডু থাকে না-একজন ক্রেতা কেন কিনবে- সেই যুক্তিও যে খুব যে বেশী যুক্তিপূর্ন -তা না। এখানেই মানুষের স্কোপ।
প্রেমিকা, কনসিউমার-এসব সিস্টেমের ডিগ্রি অব ফ্রিডম এত বেশী-এসব ক্ষেত্রে কিছু কিছু কাজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা করতে পারলেও, মানুষ লাগবেই।
দ্বিতীয় ব্যপারটা হচ্ছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে নিরন্তর প্রতিযোগিতায় থেকে, তার কাছ থেকে দ্রুত শিখতে হবে। বুঝতে হবে তার দুর্বলতা। এই জন্যে আমি সব সময় চ্যাট জিপিটি যত গুলো পয়েন্ট বলে- সব সময় ভাবি আর কি ও বললো না। কি মিস করে গেল। কাজটা বেশ কঠিন। একজন ছাত্র হলে আরো কঠিন। কিন্ত ভবিষ্যতে শিক্ষক এবং ছাত্রদের কাজ সেটাই। চ্যট বট, আই-বট- হরেক রকমের বট কি পারে না-যা আমরা পারি-সেটা না বার করতে পারলে, লোকে কাজে কেন নেবে? চ্যাট জিপিটি দিয়েই করবে।
সুতরাং একজন ছাত্রছাত্রীকে এখন থেকেই দুটো কাজে প্রচন্ড দক্ষ হতে হবে
#১ কিভাবে এইসব চ্যাটবট ব্যবহার করে, দক্ষতা আরো অনেক বাড়ানো যায়
# ২ দক্ষতাই শুধু না, চ্যাটবটের ভুল বা, চ্যাটবট যদি কিছু মিস করে যায়-তা ধরার ক্ষমতাও রাখতে হবে। এটা কঠিন কাজ, কিন্ত সম্ভব। ইন্টালেকচুয়াল লেভেল অনেক বেশী লাগবে।
মোদ্দা কথা ক্যাচাপ এন্ড দেন এক্সিড এ আই । কাজটা সহজ হবে না। কিন্ত করতে হবে।
খুব বাজে শোনালেও সত্য, সফটোয়ার শিল্পের ৯৫% চাকরি বাজারে টিকে আছে-কারন মানুষে বাজে কোয়ালিটির কোড লেখে। এগুলো দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে বটেদের উৎকর্ষ উৎপাতে। তারপর? সেই ৯৫% লোক কি করবে?
লোকে টিকে থাকবে আইডিয়া এবং এবস্ট্রাকশনে। অর্থাৎ চিন্তার উৎকর্ষতায়-সৃজনশীলতার জোরে।
কালকে এম আই টির এক ছাত্রীর ইন্টারভিউ দেখছিলাম। তার বয়স এখন ৩৫। বেশ কটি ফেইলড স্টার্টাপের পর লেটেস্ট স্টার্টাপে ২০০ মিলিয়ান ডলার বা ১৬০০ কোটি টাকা তুলেছে। বানিয়েছে এক নতুন প্রোটিনের বিউটি ক্রিম- যা বুড়িদের ও ছুড়ি বানা্বে। বটক্সের বিষহীন বিকল্প। সে একটা কথা ঠিক বলেছে। যতই ভাল স্কুল হোক-তা ১০০তে ১০০ পেতে শেখায়। কেউ শেখায় না শুন্য পেলে,মানে ফে;লিউর হলে, কিভাবে সেই ফেলিওর থেকে শিখে সাফল্যের পথে যেতে হবে। অথচ এটাই হওয়া উচিত আসল শিক্ষা । ভবিষ্যতের শিক্ষা। যেখানে সবাই একটা পরীক্ষা দেবে। সেখানে ১০০ তে সবাই শুন্য পাবে। তারপর ভুলগুলো পর্যবেক্ষন করে ১০০ তে ২০ পাবে। তারপরে আবার ভুলগুলো চর্চা করবে-করে সেখান থেকে ১০০ তে ৫০ পাবে। এইভাবে আসে আস্তে সে একমাস বা দুইমাসের চেষ্টায় ০/১০০ থেকে ৯০/১০০ তে আসবে। এই শিক্ষা না পেলে, কর্মক্ষেত্রে এখন স্কুল কলেজের সব শিক্ষা সম্পূর্ন ইউজলেস। যে প্রশ্নে ১০০/১০০ পাওয়া যায়, তা চ্যাট জিপিটিও করে দেবে।