আদানী বনাম হিন্ডেনবার্গ- নেপথ্য ভাষন-2
বিপ্লব পাল, ১২ই ফেব্রুয়ারী
(১)
আমি আগের লেখাতে আদানী কান্ডে সচেতন ভাবে রাজনীতি এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এড়িয়ে গিয়েছিলাম। কিন্ত এই আদানী কান্ড বুঝতে গোটা পৃথিবীর সাম্প্রতিক ইতিহাস জানা দরকার।
বিংশ শতাব্দি থেকে পৃথিবীর সমস্ত রাষ্ট্রের সামনে উন্নতির জন্য, তিনটে রাজনৈতিক দিশা ছিল।
(১) সোভিয়েত বা সমাজতান্ত্রিক মডেল- যেখানে স্টেট ক্যাপিটাল-বা সরকারি পুঁজর সাহায্যে দেশে ইনফ্রাস্টাকচার এবং শিল্প গড়ে তোলা
(২) ওপেন মার্কেট , কম্পিটিটিভ ক্যাপিটালিস্ট মডেল- যা আমেরিকা এবং পাশ্চাত্য মডেল- যেখানে আন্তারপ্রেনার তৈরীর মাধ্যমে, মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশে নতুন নতুন ব্যবসার সৃষ্টি হয়।
(৩) জাপানী মডেল- যেখানে রাষ্ট্র কয়েকটি দেশভক্ত বিজনেস গ্রুপ/ফ্যামিলিকে ব্যবসা করার জন্য বিশেষ সুবিধা দেয়। যেমন টয়োটা, মিসুবিৎসি, হন্ডা-ইত্যাদি যত জাপানি ব্র্যান্ড আমরা আজ দেখি- এগুলি সবই প্রায় ১০০ থেকে ১২০ বছর পুরাতন বিজনেস ফ্যামিলি- যাদের উত্থানের পেছনে ছিল বিংশ শতাব্দির শুরুর জাপানি জাতিয়তাবাদি সরকার। জাপানকে এখনো ওপেন মার্কেট বলা যাবে না। এটা ঘোষন কান্ডেই প্রমানিত। দক্ষিন কোরিয়ার দ্রুত উত্থান ও এই পথে। স্যামসাং, কিয়া , হোন্ডাই এগুলোও ফ্যামিলি বিজনেস, যা দক্ষিন কোরিয়ার সরকার, ১৯৬০ সাল থেকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে আসছে।
অর্থাৎ সরকার যদি ওলিয়ার্গ সিস্টেম-মানে মুষ্টিমেয় কিছু ব্যবসায়ী ফ্যামিলির হাতে দেশের ব্যবসা/ইনফ্রাস্ট্রাকচারের ভার তুলে দেয় , তাতে কিন্ত একটা দেশ দ্রুত এগোতে পারে।
আপনি বলবেন তাহলে মোদি সরকার আদানির হাতে দেশের ইনফ্রাস্টাকচার আউটসোর্স করে ভুল কি করছে? আফটার অল, নেহেরুর সমাজতান্ত্রিক মডেলে গিয়ে ভারত অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক পিছিয়ে গিয়েছিল। এবং ভারতের অন্যান্য ব্যবসায়ী ফ্যামিলিরা রাজনৈতিক ঝামেলার কারনে ইনফ্রাস্টাকচার প্রোজেক্টে খুব বেশী আসতে রাজী না।
ওয়েল, উলটো উদাহরন ও আছে। রাশিয়াতে সমগ্র বিজনেস পুতিন লইয়ালিস্ট অলিয়ার্গদের হাতে আউটসোর্স করার পরে দেশটা ডুবেছে অনেক ভাবে। সুতরাং এটা নিয়ে আরো গভীরে ভাবা দরকার। এটা নিয়ে এই প্রবন্ধের পরে আরো ডিটেলেসে লিখছি।
(২)
১৯৯১ সালে মনমোহন সিং যখন, ভারতকে সোভিয়েত ট্রাক থেকে আমেরিকান ট্রাকে ফেললেন, তখন দেশের গ্রোথ, অর্থনীতির বিকাশ হল বটে- কিন্ত ভারত আটকে গেল একটা জায়গায়। সেটা হচ্ছে ইনফ্রাস্ট্রাকচার- যেমন ধরুন, রেইল লাইন, পোর্ট, ইলেক্ট্রিক পাওয়ার, রোড এগুলোতে কিন্ত সেই সরকারি পুঁজির আওতাই থেকে গেল। কেন?
কারন এই ইনফ্রাস্টাকচার প্রোজেক্ট বানাতে প্রচ্রর টাকা লাগে। মানে টাকা ধার করতে হয়। তারপর গণতান্ত্রিক দেশ। জমি দখল করে এসব প্রোজেক্ট চলে। এবং এসব থেকে ইনকাম খুব বেশী হয় তা না। যেমন ধরুন আদানী পোর্টের লাভের হার মোটে ৩-৫%। ট্রান্সমিশন লাইনে ৮%। ওই লাভ থেকে দীর্ঘমেয়াদি লোন শোধ করে নতুন ক্যাপিটাল তৈরী করা খুব মুশকিল। শেয়ার বাজারেও ইনফ্রাস্টাকচার কোম্পানীগুলির শেয়ারের পি-ই রেশিও- খুব বেশী না। মোদ্দা কথা ওপেন মার্কেট মডেলে- অর্থাৎ আমেরিকান মডেলে প্রাইভেট কোম্পানীগুলি যারা ইনফ্রাস্টাকচারে আসে- তারা শেয়ার বাজারে খুব বড় কোম্পানী না- এবং খোদ আমেরিকাতে ইনফ্রা সেক্টরে সরকারি ক্যাপিটালি এখনো লাগে। আসলে মুক্ত বাজার অর্থনীতি -যা আমেরিকান মডেল তাতে প্রাইভেট ক্যাপিটাল মোটেও দেশের ইনফ্রাস্টাকচারে উৎসাহিত হয় না। সরকারি ক্যাপিটালেই সব কিছু এখনো চলে খোদ আমেরিকাতে। আমেরিকা বহুদিন ধরে লসে চলা মূল রেল কোম্পানী আমট্রাক বেচতে পারে নি কোন প্রাইভেট অপারেটরকে। সরকারকেই চালাতে হয়। আমেরিকার প্রায় সমস্ত রেইল লাইন আগে প্রাইভেট ছিল-এখন সরকারি। উপায় নেই। আসলে মডেল-২তে ইনফ্রাস্টাকচার বিজনেসের জন্য প্রাইভেট ক্যাপিটাল টানা মুশকিল। এটা বুঝতে পারলেই আমরা আদানীকান্ড বুঝতে পারব আরো ভাল ভাবে।
(৩)
এবার আদানীর ইতিহাস দেখা যাক। আদানী কিন্ত বিজেপির লোক ছিল না। সংঘ পরিবারের ও না। আদানী ১৯৮০-২০০২ সাল পর্যন্ত, অর্থাৎ মোদির গুজরাত অভিষেকের আগে পর্যন্ত অত্যন্ত কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
মোদির ভাইব্রান্ট গুজরাতের আসল রূপকার আদানী নিজে। বেসিক্যালি গুজরাত থেকেই মোদি-আদানীর মডেল-৩ এর খেলা শুরু এবং যা গুজরাতে সফল ভাবে কাজ ও করে। ফলে ২০১৪ সালে যখন মোদি মসনদে বসলেন ( এবং তার জন্য যাবতীয় প্রচার এবং খরচের সিংহভাগ আদানীই জুটিয়েছিলেন) -এটা ভবিতব্য ছিল যে মডেল-৩ এর খেলা এবার গোটা দেশ জুরে হবে। অর্থাৎ মোদির ভারত মডেল-২ থেকে মডেল-৩ তে গিয়ার শিফট করবে-কারন তাতেই মোদি এবং বিজেপির লাভ বেশী। কারন তারা দেশের উন্নতি দেখাতে পারবেন আরো দ্রুত।
কিন্ত মডেল-৩, জাপান , দক্ষিন কোরিয়া এবং চীনে কাজ করলেও কিন্ত রাশিয়াতে কাজ করে নি। এর মূল কারন দক্ষিন কোরিয়ার এই ব্যবসায়ী ফ্যামিলিগুলি- এমন কি চীনেও এইসব বিলিয়ানারদের নিয়ন্ত্রন করে সরকার। রাশিয়াতে কিন্ত তা হয় নি। রাশিয়ান অলিয়ার্গরা উলটে সরকার নিয়ন্ত্রন করেছেন। অর্থাৎ মডেল-৩ তখনই কাজ করে যখন সরকার সম্পূর্ন ভাবে এইসব ফ্যামিলিগুলিকে নিয়ন্ত্রনে রাখে। যেমন ধরুন জ্যাক মাকে চীন সরকার এখন সম্পূর্ন পকেটে পুরে নিয়েছে। স্যামসাং এর ইতিহাস ও তাই। স্যামসাং ও তাই। সরকার নির্ধারন করে স্যামসাং ফ্যামিলির কে সিইও হবে। আর জাপানের দীর্ঘ ইতিহাস সম্পূর্ন ভাবেই তাই- হন্ডা, টয়োটা, মিসুবিৎসি এসব গোষ্ঠির ওপর সরকারে নিয়ন্ত্রন ছিল ১০০%।
আদানীর উত্থান ভারতের ভাল হতে পারে যদি ভারতীয় সরকার আদানী গোষ্ঠিকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে। কিন্ত গত তিন বছরে দেখা যাচ্ছে আদানী ঘোষ্ঠির মরিশাসের শেল কোম্পানী থেকে শেয়ার ঘোটালা করা থেকে মুম্বাই এয়ারপোর্ট অধিকরনের কলঙ্কিত কান্ডে সরকারি নিয়ন্ত্রকরা অন্ধ যুধিষ্ঠীরের ভূমিকাতে। অর্থাৎ আদানীর কর্মকান্ড মোটেই স্যামসাং বা হন্ডাদের মতন না- বরং কোরাপ্ট রাশিয়ান অলিয়ার্গদের মতন। যাদের সরকার নিয়ন্ত্রন করে না। বরং এরাই সরকারকে নিয়ন্ত্রন করছে।
(৪)
কিন্ত প্রশ্ন হচ্ছে আদানী গোষ্ঠি নিজেদের শেয়ারের দাম মরিশাসে ৩৩ টা কোম্পানি খুলে কৃত্রিম ভাবে "এত" বাড়াতে গেল কেন? ইনফ্রা কোম্পানীগুলির যেখানে পি-এই রেশিও ৭-১০ এর বেশী হয় না, আদানীর ক্ষেত্রে ১০০- ১৫০ কোন জাদুবলে? নাকি পুরোটাই নগ্ন কোরাপশন?
আমেরিকাতে এগুলো ক্রিমিনাল অপরাধ। কোম্পানি ত শেয়ার বাজার থেকে ডিলিস্টেড হবেই -প্রমোটার ও জেলে যাওয়ার কথা। ভারতের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে এসব অভিযোগ পাওয়া সত্ত্বেও সেবি, ইডি আদানির কোন কোম্পানীর বিরুদ্ধেই কোন অভিযোগের ঠিকঠাক ইনভেস্টিগেশন করে নি। বিরোধিরা যখন জয়েন্ট পার্লামেন্টারী কমিটি চাইছেন আদানীর বিরুদ্ধে ইনভেস্টিগেশনের জন্য, তখন মোদি নারাজ। অসময়ের বন্ধু বলে কথা। অর্থাৎ ভারতে আদানীকে কেউ ছুঁতে পারবে না।
কিন্ত গৌতম আদানী "রেপুটেশনের" এই রিস্ক নিলেন কেন? কারন আদানী গোষ্ঠির ৭৩% ( ৭৫% ম্যাক্সিমাম হতে পারে ) স্টক নিজের হাতে। বাকী ২৭% এর ১৫% বিদেশী ইনভেস্টর- যারা কিনা ইন্সটিউশনাল ইনভেস্টর মূলত আরব, আমেরিকা এবং ইউরোপে, তাদের হাতে। সুতরাং এই অপরাধ বিদেশী, বিশেষত আমেরিকান শর্ট সেলাররা কোন না কোন দিন ধরতই। ভারতে না হয়, হাজার অপরাধ করলেও তাকে ধরার কেউ নেই।
এখানেই আদানী কেলেঙ্কারির মূল সূত্র। আসলে ইনফ্রাস্টাকচার প্রোজেক্টে টাকা লাগে অনেক বেশী। তার প্রচুর সুদ। কিন্ত ইনকাম খুব কম। ৩-৪% প্রফিট। আদানী গোষ্টির মোট প্রফিটের পরিমান তার সমস্ত ধারের তুলনায় কিছুই না। বেশীক্যালি হাজার কোটি টাকা প্রফিট-আর দুশো হাজার কোটি টাকার ধার। মানে এই রেটে চললে, দুশো বছর লাগবে প্রিন্সিপাল শোধ করতে যদি ধারের টাকা কোম্পানীর প্রফিট থেকে শোধ করতে হয়!
তাহলে আদানী কিভাবে তার সাম্রাজ্য বিস্তার করবেন? কারন এমন অবস্থায় ত কেউ ধার দেবে না। ফলে হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ তিনি তারা বড়ভাইকে মরিসাসে পাঠিয়ে সেখানে ৩৩ টা বেনামী কোম্পানী খুলে আদানী স্টক পাম্প করা শুরু করলেন। নিজেরাই কিনে, নিজেরাই বেচে শেয়ার ভ্যালু বাড়ালেন। এসবের বিরুদ্ধে শেয়ার মার্কেটে অনেক আইন আছে। কিন্ত তাতে কি? ভারতের কোন রেগুলেটর তাকে আটকাবে? এবার সেইসব শেয়ারের বিরুদ্ধে লোন নেওয়া শুরু করলেন!
(৪)
ভারতের কি ক্ষতি হল?
ভারতের মার্কেটের ওপর বিদেশী বিনিয়োগকারিদের ভরসা উঠে গেছে। কারন মার্কেটে কারচুপি না আটকাতে পারলে, সাধারন ইনভেস্টরা টাকা হারাবেন। আর এই পুলিশি কাজের দ্বায়িত্ব সেবির। দেখা যাচ্ছে আদানী গ্রুপের ওপর ভারতের সেবির কোন নিয়ন্ত্রন নেই। অর্থাৎ ভারতের মার্কেটের ওপর বিশ্বাস উঠে গেছে বিদেশী ইনভেস্টরদের। যার জন্য নরওয়ের সভারেন ফান্ড সব শেয়ার বেচে দিয়েছে।
এতে যেটা হবে, ভারতের শেয়ার মার্কেট তার বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য বিদেশী ইনভেস্টরদের কাছে যে প্রিমিয়াম পেত সেটা হারাবে। এটা খুচরো ইনভেস্টরদের লস।
এবার দেখা যাক এল আই সি, এস বি আই এর এক্সপোজারে। ভারতে আমার বাবা-মায়ের মতন মধ্যবিত্তদের শেষ দিনের সম্পদ এখানেই গচ্ছিত। আদানী শেয়ার পড়ে গেলে, মর্টগেজের মূল্য থাকবে না। যেহেতু আদানী লাভে চলে, সেহেতু বেস্ট কেস সিচুয়েশন হচ্ছে এখনো আদানী স্টক বেচে এই কোম্পানীগুলি, প্রচুর প্রফিট সহ টাকা তুলে নিয়ে এক্সপোজার কমিয়ে দিতে পারে। তবে সেটা করলে আদানীর স্টক প্রাইস কমবে। আদানীর বিপদ বাড়বে। মোদি সরকার তা করবে না। তারা আদানীর এত নুন খেয়েছে, আদানীর ক্ষতি করে দেশের লোকের সেবা তারা করবে না। সুতরাং এক্ষেত্রে আমি সব থেকে ক্ষতিকর পরিস্থিতিটার হিসাব নিচ্ছি। সেটা হচ্ছে, তারা আদানী কোম্পানীর কন্ট্রোল নিতে পারে -লোন ডিফল্টের ক্ষেত্রে। এগুলো যেহেতু ইনফ্রা প্রোজেক্ট সেহেতু এইসব কোম্পানীর দাম কিন্ত বিপুল। তারা এক্ষেত্রেও ড্রিসট্রেস সেলে খুব লাভ না করলেও, টাকা তুলে নিতে পারবে বলেই মনে হয়। কারন আদানী গোষ্ঠির কোম্পানীগুলির ফান্ডামেন্টাল ভালোই।
আসল সমস্যা হচ্ছে শেয়ার মার্কেটে খেলে, প্রাইভেটে টাকা ধার নিয়ে ইনফ্রা প্রোজেক্ট করা যায় না। অত লাভ ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্টে নেই। ইনফ্রাতে সরকারি পুজি লাগবেই। অর্থাৎ সরকারি কন্ট্রোল লাগবেই।
(৫)
শেয়ার মার্কেটে আইন ভেঙে শেয়ার প্রাইস বাড়ানো নতুন কিছু না। বলতে গেলে সব গেমই রিগড। পেটিম, ন্যাকা ইত্যাদি সব নতুন আই পিও ভারতের শেয়ার বাজারে শুয়ে গেছে। অপেনিং এর থেকে ৫০%, ৮০% নীচে নেমে গেছে। তাহলে এই শেয়ার গুলোই বা এত প্রিমিয়াম পেল কি করে? সেবি কি এসব কিছু দেখে নি?
আসলে শেয়ার মার্কেট জুয়ারীদের আড্ডা। প্রায় সব দেশেই। সবটাই রিগড গেম। আদানী খারাপ, আম্বানী ভাল-টাটা ভাল এসব না ভাবাই ঠিক। কেউ বেশী। কেউ কম। আসল সত্য হচ্ছে ক্যাপিটালিজমে আমাদের চাকরি, আমাদের চিকিৎসা, আমাদের ভবিষ্যত-সব কিছুই জুয়ারীদের হাতে। মানুষের হাতে নেই। এটা ভারত-আমেরিকা দুটো দেশের জন্যই সত্য। এবার যারা মার্কেটের নিয়ন্ত্রক, তারা যদি অন্ধ যুধিষ্ঠির হয় বা সরকার যদি তাদের ঠুটো জগন্নাথ করে বসিয়ে দেয় জন সাধারন ভুগবে।
ধরুন গুগল একদিনে ১০০ বিলিয়ান মার্কেট ভালু হারাল,। কি না, চ্যাট জিপিটির প্রতিযোগি আনতে গিয়ে, এমন ডেমো দেখাল-সবাই দেখল, সেখানে ভুল তথ্য আসছে। ব্যস একটা ছোট্ট ভুলে ১০০ বিলিয়ান হাওয়া।
সুতরাং সবটাই জুয়া।
আরো মিনিংফুল সমাজ রাষ্ট্র কি সম্ভব। অবশ্যই সম্ভব। তবে তার ক্যাপিটালিজম বা কমিনিউজম কোন পথেই আশার আলো নেই। কারন আমদের সমাজে ক্ষমতার পিরামিড আছে। ওটা ছাড়া সিস্টেম কাজ করবে না। কমিনিউজমে ক্ষমতা যায় খুনী শাসকদের কাছে, যারা দেশের লোককে ক্রীতদাস বানায়। সবচেয়ে বাজে সিস্টেম। আর ক্যাপিটালিজমে ক্ষমতার শীর্ষে বসে আছে জুয়ারীরা। তাও ক্যাপিটালিজম মন্দের ভাল যদি রাষ্ট্র এইসব জুয়ারীদের নিয়ন্ত্রন করতে পারে। নাহলে এখানেও ভোগান্তি ।
দুঃখ একটাই । ছোটবেলা থেকে কত নীতিশিক্ষা পেয়ে বড় হই আমরা । ছেমেয়েয়েদের ও সৎ পথে থাকতে বলি। মনে হয় সৎপথে থাকার এই লবনের বস্তাটার সব গুরুদ্বায়িত্ব সবদেশের মধ্যবিত্তদের। যারা আমাদের মালিক- সেই পলিটিক্যাল বা ক্যাপিটালিস্ট ক্লাসের কোন দ্বায়বদ্ধতা নেই ওসব মধ্যবিত্তসুলভ নীতিগর্ভতা নিয়ে বেঁচে থাকার! এটাই দুঃখের!