Saturday, August 27, 2016

কোলকাতার হিন্দু বাঙালীর কুয়োর জগৎ

                                                                                  (১)
এমনিতেই অপ্রিয় সত্যকথনের অধিকথায় স্যোশাল মিডিয়াতে আমি ব্রাত্যজন। তাই বহুদিন থেকেই এই লেখাটি লিখবো লিখবো করেও সাহস হয়ে ওঠে নি।  কিন্ত কাল সুমন্ত্র মাইতির একটা পোষ্টের পরে, মনে হল, এই লেখাটি না লিখলে তা হবে আমার "ঐতিহাসিক অপরাধ"।

   আমি ওর পোষ্ট থেকেই জানলাম আল আমিন মিশনের তিনশো ছাত্র এবার ইঞ্জিনিয়ারিং জয়েন্টে  পেয়েছে। এটি আনন্দের খবর। কারন গোটা ভারতেই শিক্ষা দিক্ষায় মুসলমানরা পিছিয়ে আছে। তাদের এগিয়ে যাওয়ার খবর নিঃসন্দেহে আনন্দের। তাছাড়া আল আমিন মিশনে খুব গরীব এবং নিম্নমধ্যবিত্তরা পড়াশোনা করে।  গরীব এবং নিম্নমধ্যবিত্তদের স্যোশাল আপওয়ার্ড মোবিলিটি সবসময় দরকার।

 ওই পোষ্টে এটাও দেখলাম তাতে বর্ণহিন্দুদের গা জ্বলছে। তাদের বিশ্বাস মমতা সরকারের সাম্প্রদায়িক তোষনের ইহা নবতম সংযোজন। যদিও যারাই জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়েছেন, তারা সবাই জানেন এইসব পরীক্ষায়, পরীক্ষার্থীর নাম তুলে নাম্বার বসিয়ে পরীক্ষকের কাছে পাঠানো হয়। তাছাড়া রামকৃষ্ণ মিশন থেকেও প্রতি বছর কয়েকশো ছেলে জয়েন্ট ভাল র‍্যাঙ্ক করে।

আসল ব্যপারটা স্পষ্ট। এদের মনোভাব থেকে পরিস্কার, এরা মনে করে ভারতের উচ্চপদে একমাত্র বর্ণহিন্দুদেরই অধিকার। ইনারা আবার বিজেপির সদস্য। মুসলমান মানে জঙ্গী হবে, চোর হবে, ড্রাইভার হবে- ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারের মতন সামাজিক উচ্চপেশায় কেন?

                                                                (২)

আজ থেকে একশো বছর আগে বর্ণহিন্দুদের এই মনোভাব ছিল বলেই মুসলমানরা প্রথমে বঙ্গভঙ্গ পরে মুসলীমলীগের মাধ্যমে দেশভাগ করেছে। যদিও আমার ফ্যামিলি বাংলাদেশের মুসলমানদের হাতে মার খেয়েই পশ্চিম বঙ্গে এসেছিল-আমি ত দেখছি, দেশভাগ না হলে আজকে বাংলাদেশে বাঙালীরা বানিজ্য এবং মানব সম্পদে যা উন্নতি করেছে, সেটা সম্ভব হত না।

  হ্যা আমি জানি পশ্চিমবঙ্গবাসী মনে করে বাংলাদেশ মানে ইসলামি জঙ্গীদের জঙ্গলরাজ্য। সেটা দেশটা মুসলমান হওয়ার উত্তরাধিকার কারন ঐ ধর্মটা যে দেশে থাকবে তার রাজনীতিতে ইসলামের কুপ্রভাব থাকবেই। কিন্ত বাংলাদেশের উন্নতিগুলো নিয়ে পশ্চিম বঙ্গের উচ্চবর্ণের হিন্দুরা কিছু জানেন কি? কজন পশ্চিম বঙ্গবাসী বাংলাদেশের বেকন ফার্মাসিউটিক্যালের নাম শুনেছেন? যারা হেপাটাইটিস সির প্রথম জেনেরিক ড্রাগ আবিস্কার করেছে এবং তা আমেরিকার এফ ডি এতেও পাশ করে এখন আমেরিকাতেও পাওয়া যাবে। এই ড্রাগ চশমখোর আমেরিকান ড্রাগ কোম্পানি গিলাডের বহুমূল্য এপক্লজার থেকে আমেরিকানবাসীদের মুক্ত করবে। বাংলাদেশে ফার্মা এখন দক্ষিন এশিয়াতে জেনেরিক ড্রাগে ভারতের ফার্মাগুলির সাথে সমানে পাল্লা দিচ্ছে। টেক্সটাইলের ক্ষেত্রে রপ্তানী মার্কেটে বহুদিন আগেই বাংলাদেশ ভারতকে পেছনে ফেলেছে।

শুধু তাই না-বাংলাদশের মাদ্রাসা শিক্ষাই শুধু ভারতের মিডিয়াতে আসে। আমি দেখিনি পশ্চিম বঙ্গের কোন মিডিয়া কোনদিন লিখেছে, বাংলাদেশ স্কুল শিক্ষায় প্রোগ্রামিং কোডিং ইত্যাদি বহুদিন হল চালু করেছে প্রায় সব স্তরে। পশ্চিম বঙ্গে আছে শুধু ঐচ্ছিক হিসাবে। বাংলাদেশ ম্যাথ অলিম্পিয়াডে এখন ভারতের থেকে ভাল র‍্যঙ্ক করে অথচ ভারতের ছেলেরা গণিতে খুব ভাল-এটা হচ্ছে আমাদের সাধারন ধারনা। 2014 সালে ম্যাথ অলিম্পিয়াডে ভারতের র‍্যাঙ্ক ৩৭, বাংলাদেশের ৩৩। এসব বাদই দিলাম। মানব সম্পদ অগ্রগতির সূচক-যা শিশুশিক্ষা, অনাহার ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে ইউ এন থেকে দিয়ে থাকে, সেখানে ভারতের অবস্থান ১৩০ [0.609], বাংলাদেশের ১৪০ [.555]। কিন্ত যদি শুধু পশ্চিম বঙ্গের এইচ ডি আই ধরি,  তা বাংলাদেশের থেকে কিছু কম হবে। আমার কাছে এক্সাক্ট নাম্বার নেই-কিন্ত ২০১০ সালে পশ্চিম বঙ্গের এইচ ডি আই ছিল 0.495. [ India was 0.519]।


কোলকাতার বাঙালীদের অবস্থাটা ঠিক কি? কোলকাতার যারা বুদ্ধিমান তাদের অনেকেই আমেরিকা ব্যাঙ্গালোর ইংল্যান্ডে গিয়ে বড় ব্যবসা গড়েছেন-তা ঠিক। কিন্ত যারা খোদ কোলকাতায় পড়ে আছেন-সেই বাঙালীদের অবস্থাটা কি?  কোলকাতার ব্যবসার সব মারোয়ারীদের হাতে। এবং সেখানে বাংলাদেশের মতন উন্নত ফার্মা শিল্প গড়ে ওঠে নি-কারন মারোয়ারীরা রিসার্চ নির্ভর শিল্প গড়তে চান না। তাছাড়া কোলকাতার সব পরিশেবা ব্যবসাও মারোয়ারীদের হাতে যার ফল হল বিদ্যুতের দাম কোলকাতায় সব থেকে বেশী।  একটা ঠিক ঠাক আইটি হাব পর্যন্ত নেই। সেক্টর ফাইভের আই টি হাব একটা টোটাল স্ক্যাম। ওটা কোন আইটি ফেসিলিটিই না। যা ঝড়ে বসে যায়, বন্যায় ডুবে যায়। বাঙালী খুব বেশী হলে মারোয়াড়ি কোম্পানীগুলোতে ডিরেক্টর বা ভিপির পজিশন পায়-ব্যবসার নীতি নির্ধারনে যাদের কোন ভূমিকা নেই।

 ফলে পশ্চিম বঙ্গের আসল ভূত ভবিষত আসলেই মারোয়াড়িদের হাতে-শুধু রাজনৈতিক ক্যাঁচাল, রাজনৈকিক খুনোখুনির উত্তরাধিকার হিন্দু বাঙালীর। কলকাতার বাঙালী সম্পূর্ন ভৃত্যশ্রেনীর একটা নিম্ন মেধার জাতি এখন।



                                                                       (৩)

 কোলকাতার বাঙালীর একদম ভৃত্য হয়ে ওঠার কাহিনীটা অবশ্য উনবিংশ শতাব্দির। বাঙালীর হিরোদের দিকে তাকান-সবাই ভৃত্যসুল্ভ মনোভাবাপন্ন ছিলেন।


        রাজা রামমোহন রায়? কেউ কি প্রিভি কাউন্সিলে লেখা উনার চিঠি পড়েছেন? আমি রেফারেন্স দিয়ে এই লেখা ভারাক্রান্ত করতে চাইছি না। ইন্টারনেটেই আছে পড়ে নেবেন-তাতে উনি লিখছেন সমগ্র ভারতবাসী তার উন্নতিকল্পে  বৃটিশদের মতন সুশিক্ষিত নীতিপরায়ন একজন জাতির রাজাকে পেয়ে নিজেদের ধন্য বলে মনে করছে!

       বঙ্গিম চন্দ্র? উনিত সারা জীবন বৃটিশদের গোলামী করেই কাটালেন।

 রবীন্দ্রনাথ ? উনি চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের জমিদার। যারা আদতে বৃটিশদের খাশ গোলাম । লিখেছেন গোলামীর বিরুদ্ধে, স্বাধীন চিন্তার পক্ষে। কিন্ত জিন্না যখন ভারতের প্রথম বাল্যবিবাহ রোধে আইন আনার জন্য লড়ছেন ( সারদা এক্ট) , উনি তখন একের পর এক নিজের মেয়েদের বাল্যবিবাহ দিয়ে স্ববিরোধিতায় ভুগেছেন।

বিবেকানন্দ নেতাজি বিদ্যাসাগর এরা সবাই গোলামীর বিপক্ষেই ছিলেন। কিন্ত গোলামী কাটাতে যে ইক্যুইটি বা সম্পদের বা বিজনেসের মালিক হতে হয়, শিল্প গড়তে হয় নিজেদের এসব এদের মাথায় ছিল না।  নেতাজি আগাগোড়াই মিসগাইডেড রোম্যান্টিক নেতা। একই সাথে হিটলার তেজো স্টালিন এবং মুসোলিনির রাজনৈতিক লাইনের সিরিয়াস গুনগান গাইতে পারেন যিনি, তিনি রাজনীতি কতটা আদৌ বুঝতেন, সন্দেহ আছে। নেতাজি বাঙালী ট্রাশ রাজনৈতিক রোম্যান্টিকতার উজ্জ্বল নির্দশন।

 বিবেকানন্দ ভাববাদি জল দিয়ে সেই দাসত্বমুক্তির ডাক দিলেন। জল দিয়ে কি দুধের কাজ হয়?

 পদপ্রদর্শক যে বাঙালীর ছিল না তা না। প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর, ভারতের প্রথম আধুনিক আন্তারপ্রেনার। স্টিম ইঞ্জিনের সাথে সাথে যে কয়লা সাপ্লাইএর দরকার হবে, সেটা বুঝে কয়লার খনির ব্যবসায় নেমে গেলেন। প্রচুর লাভ ও করেছেন ব্যবসা করে-যার অধিকাংশই ছিল একদম অত্যাধুনিক, বৃটিশদের টেক্কা দিয়ে। কিন্ত উনার ছেলে দেবেন্দ্রনাথ আবার সেই জমিদারি ব্যবসার নিশ্চিত ইনকাম আর ভাববাদি ব্রাহ্মজলে ডুবে রইলেন।

ছিলেন স্যার রাজেন মুখার্জি। যিনি জামসেদজীর টাটার বহুদিন আগে কুল্টিতে ভারতের প্রথম স্টিল শিল্প স্থাপনে উদ্যোগ নিলেন। আজ টাটা গ্রুপ ভারতের বৃহত্তম শুধু না-পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম। আর কোথায় গেলেন রাজেন মুখার্জির ছেলে স্যার বীরেন মুখার্জি?  উনার তৈরী ইস্কোকে ধ্বংস করে হিন্দু বাঙালীর শ্রমিক আন্দোলন। উনি ভগ্ন হৃদয়ে মারা যান।

ছিলেন প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। মাত্র সাতশো টাকায় তৈরী করেছিলেন বেঙ্গ্ল কেমিক্যাল। আস্তে আস্তে তা মহীরুহ হয় তিনটে ফ্যাক্টরিতে। কিন্ত  স্বাধীনতার পরে বাঙালীর শর্টকাটে মেরেদাও টাইপের শ্রমিক আন্দোলন বেঙ্গল কেমিক্যাল এবং ইস্কোকে জাতীয়করনে বাধ্য করে এবং ক্রমশ এরা গঙ্গাপ্রাপ্তির দিকে এগোতে থাকে।

 এরা কেউ বাঙালীর হিরো না-হিরো হচ্ছে তারা যারা হয় ভৃত্যভাবে কাটিয়েছেন সারাজীবন- কিন্ত গাদাগুচ্ছের ভাল ভাল কথা লিখে গেছেন ।  বাঙালীর আরাধ্য  জ্যোতিবোসের মতন রাজনৈতিক নেতৃত্ব-যাদের রাজনৈতিক বিদ্যাবুদ্ধি পশ্চিম বাংলাকে আরো অনেক পিছিয়ে দিয়েছে মার্ক্সবাদের নামে মাছভাতের সাধনায়।

 তার ফল দেখছি আজকে। এইভাবে এত ভৃত্যগিরির সাধ যাদের মজ্জায় মজ্জায়, সেই বাঙালী হিন্দুর আসল অবস্থাটা কি? বাংলাদেশে না হয় মুসলমানরা মেরে ধরে তাড়াচ্ছে। পশ্চিম বঙ্গে কি অবস্থা? এখানে ত তারা মারোয়াড়ীদের চাকরবাকর।

                                                           (৪)

 হিন্দুদের বর্ণবাদ এবং ইসলামের প্রভাবে বাঙালীর আরব বেদুইন হওয়ার স্বপ্ন-আসলেই এক অলস জাতির ভ্রান্তিবিলাস। যা বাঙালীর উন্নতির অন্তরায়।

 হিন্দুদের বর্ণবাদ মানে ব্রাহ্মনরা শুদ্রদের নীচু জাত মনে করে সেটা বলছি না। সেটা এখন নেই। এই বর্নবাদ আসলে এক গুঢ় রোগ। যা মানুষকে উঁচু নীচু-কাজকে উঁচু নীচু দেখার রোগ। একজন সিডিউলড কাস্ট বা হরিজন আই এ এস অফিসারকে চিনতাম আই আই টির ছাত্রজীবনে। উনি আই আই টিতে কোটা সিস্টেমে ঢুকে- ইন্ডিয়ান এডমিনিস্ট্রিটেটভ সিস্টেম ও কোটায় নামালেন। ছাত্রজীবনে বামপন্থী ছিলেন বলে একটু ইয়ারদোস্তির আলাপ। সদ্য ডিএম হয়ে একটা জেলায় পোস্টেড। একদিন আই আই টি দর্শনে এলেন সিকিউরিটি গার্ড, ড্রাইভার সহ।  আড্ডা মারার পর খেতে যাওয়ার জন্য বললো-গাড়িতে উঠে পর।  ও বাবা-যেই গাড়িতে উঠতে গেছি সেই সিকিউরিটি গার্ড, সেলাম ঠুকে দরজা খুলে দিচ্ছে আমাদের জন্য।  আমি ওকে বল্লাম আচ্ছা এটাত বন্ধ করতে বলতে পারতে বস-এগুলোই ত আসল বর্নবাদি আইডিয়া যে একটা লোক সিকিউরিটি গার্ড বলে, বা ড্রাইভার বলে তাকে তার বাবুর পায়ে হাত দিয়ে চলতে হবে। তাহলে আর তোমাকে বর্ণবাদ বিরোধি কোটায় ঢুকিয়ে লাভটা কি হল?

     উঁচু কাজ নীচু কাজের বিভেদ রেখে কোন জাতি বড় হতে পারে না।

 ইসলাম ক্ষতি করছে মূলত নারীমুক্তির প্রক্রিয়াটা পিছিয়ে দিয়ে। একটা জাতিকে এগোতে গেলে, মেয়েদের এগোতে হবে আগে। সমস্ত বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা বলছে ছেলেমেয়েদের পরবর্তী জীবনের সাফল্য নির্ভর করে মায়েদের শিক্ষাদীক্ষা এবং জ্ঞানের ওপরে। মুসলমানদের শরিয়ার খোয়াব যে দেশটাকে শুয়োরের খোঁয়াড়ে পরিণত করবে, এটা বোঝার বোধ অধিকাংশ মুসলমানের নেই। বাঙালী মুসলমান মেয়েরা অনেক পিছিয়ে আছে শিক্ষা দীক্ষায়-্ যা বাংলার ইসলাম ধর্মের সব থেকে বড় কুফল।  এর সাথে সাথে ধর্ম নিরেপেক্ষ গণতান্ত্রিক কাঠামো ভাঙার পাঁয়তারা ত আছেই।

   আজকে যদি স্বাধীন বাংলাদেশ ইসলামকে ছুঁড়ে ফেলে বাঙালী জাতিয়তাবোধের ভিত্তিতে বাংলাদেশ গড়ত-সেই বাংলাদেশ হতে পারত সিঙ্গাপুর বা সাউথ কোরিয়ার মতন এক উন্নত দেশ। কারন বাংলাদেশীরা একই সাথে বুদ্ধিমান এবং পরিশ্রমী।

  আমি হিন্দু মুসলমানে বিশ্বাস করি না। কারন ওই দুই ধর্ম বাঙালী জাতির সব থেকে বড় দুর্দিনের কারন। ব্রাহ্মন্য ধর্ম বাংলায় ঢোকার আগে ধর্মপাল, দেবপালরা সমগ্র ভারত শাসন করেছে। আর এই ব্রাহ্মন্য ধর্ম বাংলায় ঢোকার পরে বাঙালী হিন্দুদের খোয়াব হচ্ছে উত্তরভারতের খাঁটি বামুনত্বের উত্তরাধিকারি ভাবা।  এবং মুসলমানদের খোয়াব হচ্ছে নিজেদের তুর্কী বা ইরাকের খাঁটি মুসলমানদের বংশধর ভেবে, তাদের আদাব কালচারের হনুকরন।  যাদের নিজেদের উত্তরাধিকারের গৌরব নেই, তাদের দিয়ে কদ্দুর কি হবে?

 তবে আমার বিশ্বাস ইন্টারনেটের প্রভাবে এই মুক্তজ্ঞানের বিশ্বে বাঙালী- হিন্দু মুসলমান, কমিউনিজম, লেনিন -ইত্যাদি বিজাতীয় বিষের থেকে নিজেকে মুক্ত করে জগত সভায় শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার হবে।






















Friday, August 19, 2016

কাশ্মীর সমর্থক বামপন্থীদের প্রতি

কাশ্মীর নিয়ে প্রচুর ঘোল খাওয়ানো লেখা দেখি চারিদিকে। কিছু চাড্ডিদের-কিছু উবের লিব্যারালদের। কিছু উবের লিব্যারালদের ইস্যুভিত্তিক দোস্ত ইসলামিস্ট ছাগুদের। মজা লাগে।
প্রথমত- কাশ্মীরের স্বাধীনতা কেন, ভারত সহ কোন রাষ্ট্রের অস্তিত্বই যুক্তি আর ইতিহাস দিয়ে ব্যখ্যা করা যায় না। রাষ্ট্রের জন্ম মানেই মার্কেটটা ছোট করে দেওয়া হল। সুতরাং অর্থনৈতিক যুক্তিতে রাষ্ট্রের অস্তিত্বই থাকা উচিত না-যেহেতু তা মার্কেট ছোট করে। স্বয়ত্ব শাসিত পুলিশ থাকতেই পারে-তাও মার্কেটের প্রয়োজনেই।
সুতরাং একটা ভূখন্ডের মানুষ যতক্ষন না অর্থনৈতিক কলোনিয়ালিজমের শিকার না হচ্ছে-তাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের পেছনে যুক্তি খোঁজা অর্থহীন। কাশ্মীরে ভারতের ট্যাক্স ইনকামের ১০% খরচ হয়-যা হওয়া উচিত ৩% ও না। সুতরাং কাশ্মীর অর্থনৈতিক দিকে দিয়ে অবহেলিত, এটা বলার উপায় নেই। ঠিক এই কারনে আমি তিব্বতের স্বাধীনতার আন্দোলন ও সর্মথন করি না। কারন চীনের অধিকারের পরে, তিব্বতে অনেক আধুনিক উন্নয়ন এবং প্রগতি এসেছে। আগে তিব্বতে শিক্ষার হার ছিল নগন্য। চীনা অধিগ্রহনের ফলে গোটা তিব্বত এখন শিক্ষিত।
মূল সমস্যা -কাশ্মীরে ভারতের সৈন্যদের অত্যাচার। কিন্ত তার মূল কারন সেপারেটিস্ট জঙ্গীরা। কাশ্মীর যদি তামিলনাডু বা বাংলার মতন ভারতের অঙ্গরাজ্য হয়ে থাকে, সেখানে সেনা থাকার কোন কারন নেই। সুতরাং ডিম আগে না মুর্গী আগে সেই তর্ক অর্থহীন।
এবার একটা এবস্ট্রাক্ট প্রশ্নে আসা যাক। একটি জনগোষ্টির স্বয়ত্ব শাসনের অধিকার। সেটাত ভারতে ফেডারাল স্ট্রাকচারে সম্ভব। কাশ্মীরের ক্ষেত্রে কি ব্যতিক্রম ঘটল? ব্যাতিক্রম এই যে তা মুসলিম প্রধান রাজ্য। সুতরাং কারনটা সাম্প্রদায়িকতাঘটিত।
ব্রেক্সিটে ইউকের এক্সিটের পরে অবস্থা কি? ইনফোসিস টের পাচ্ছে ব্যঙ্ক অব স্কটল্যান্ডের কনট্যাক্ট এবং ৩০০০ লোকের বিলিং হারিয়ে। সেক্টর ফাইভে যেসব কোম্পানী ইউকের ছিল, তাদের অনেকেই ছাঁটাই করেছে। তাদের রেজুমে ভাসছে, দেখতে পাচ্ছি।
মুখে এসব স্বাধীন সত্তা ইত্যাদি ভাল জিনিস-এবং তার ভিত্তি আছে যতক্ষন পর্যন্ত তা অর্থনৈতিক বিকাশের সহায়ক। একজন কাশ্মীরি ভারতে ভালোই ব্যবসা করতে পারেন এবং ভারতের মার্কেটের পূর্ন সহযোগিতা পান। সুতরাং কাশ্মীরকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করা ব্রেক্সিটের থেকেও ভয়ংকর হবে কাশ্মীরের অর্থনীতির জন্য।
আর প্রাক্টিক্যাল কারন? বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানে যেহারে জঙ্গী তৈরী করেছে, ভারতের জন্য তা নিরাপদ না। পাকিস্তানের জন্য যেকোন জঙ্গীরা আজ সুটকেস নিউক ফাটাতে সক্ষম দিল্লী মুম্বাই বা কোলকাতায়। যেকোন মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিবেশী থাকা সিকিউরিটি রিস্ক। কারন ইসলাম সেইসব দেশের রাজনীতিতে ঢুকবেই এবং কাফের মারার জন্য জঙ্গীদল তৈরী করবেই। তারপর নিজেদের মধ্যে মারামারি করবে সেটা অন্যব্যাপার।
সুতরাং কাশ্মীরকে স্বাধীনতা দিলে তা হবে ভারত বিরোধি জঙ্গীদের আরেক আখরা। বাংলাদেশকে ভারত কিছুটা আয়ত্ত্বে আনতে পেরেছে আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনার জন্য-কারন তিনি দিল্লীতে এসাইলাম পাওয়ার কারনে ভারতের কাছে , বিশেষত ইন্দিরা গান্ধীর কাছে চির কৃতজ্ঞ। খালেদা জিয়ার আমলে বাংলাদেশ ভারতের জন্য কি মারাত্মক সিকিউরিটি রিস্ক ছিল, -ইতিহাস সাক্ষী।
কাশ্মীরের হবে পাকিস্তান টু। ওটা ভারত বিরোধি জঙ্গীদের আরো মারাত্মক ঘাঁটি হবে।
সুতরাং কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলন সমর্থন করার জন্য প্রাক্টিক্যাল, টাক্টিক্যাল বা থিওরেটিক্যাল-কোন যুক্তিই পাচ্ছি না। বামপন্থীরা অনেক যুক্তি পেয়ে থাকেন-কারন তারা অশিক্ষিত। ইতিহাসে অজ্ঞ। তারা স্টালিন লেনিনকেও সমর্থন করেন-যারা কিন্ত মধ্য এশিয়ার ১৯ টি রাষ্ট্রকে গ্রাস করে সোভিয়েত ইউনিয়ান বানিয়েছিলেন এবং সেইসব রাজ্যগুলির স্বাধীনতা আন্দোলন নির্মম ভাবে দমন করেছিলেন।
26 August 1918 – 14 September 1918 : লেনিন আজারবাইজান দখল করেন বাকুর তৈলক্ষেত্র দখলের জন্য। রেড আর্মি আজারবাইজানের ১২,০০০ মুসলমান আদিবাসি খুন করে।
15 February – 17 March 1921: লেনিন জর্জিয়া দখল করলেন, ৮০০০ জর্জিয়ান সেনা এবং সিভিলিয়ান মারা যায়
30 November 1939 – 13 March 1940--স্টালিন ফিনল্যান্ড দখল করেন-৮০,০০০ ফিনিশকে হত্যা করা হয়।
উজবেকিস্তানকে এনেক্স করা হয় ২৪ ই অক্টবর ১৯২৪। উজবেকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলন চলতেই থাকে। ১৯৩৯ সালে স্টালিন , উজবেকিস্তানের কমিনিউস্ট প্রধানমন্ত্রী ফইজুল্লা খোয়াজেভকে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে হত্যা করেন। কারন উনি সেন্ট্রাল কমিটিতে উজবেকিস্তানের জন্য সামান্য স্বয়ত্বশাসন চেয়েছিলেন!
তবে সোভিয়েত ইতিহাসের সব থেকে কুখ্যাত আদিবাসি নিধন মধ্য এশিয়াতে বাসমাসি বিদ্রোহ দমন। ফারগানা উপত্যকা এবং টুর্কেমিনিস্থানের মুসলমান আদিবাসীরা বহুদিন থেকেই জারের আধিপত্য মানতে চায়নি। ১৯১৭ সালে যখন বলশেভিক বিপ্লব হয়, এইসব আদিবাসিদের মনে আশার সঞ্চার হয়, যে তারা এবার রাশিয়ান আধিপত্য থেকে মুক্তি পাবে। ফলে ওক্টবর বিপ্লবের সময়, এরা রেড আর্মিকে সমর্থন করেছিল লেনিনের স্বয়ত্বশাসনের ঢপে বিশ্বাস করে। রেড আর্মি ক্ষমতা পেতেই এই আদিবাসিরা বুঝে যায়, বেসিক্যালি বলশেভিকরা জারের থেকেও বড় দানব। তাদের স্বাধীনতা দেওয়ার কোন ইচ্ছা লেনিনের নেই। ফলে ইসমাইল বে এর নেতৃত্বে বিদ্রোহ করে আদিবাসিরা। ১৯১৮ সালে কোকান্ড শহরে রেড আর্মি ২৫,০০০ কৃষক, আদিবাসি হত্যার মাধ্যমে তাদের ঋন পরিশোধ করেন। হত্যালীলা এখানেই শেষ হয় না। ১৯২৩ শাল পর্যন্ত রেড আর্মি মধ্য এশিয়ার এই উপজাতি অঞ্চলে রক্তবন্যা বইয়ে দখলে আনবে। এসব হত্যালীলার সব কিছুই হয়েছে লেনিনের নির্দেশে। শুধু তাই না। গর্ভাচেভের দিন পর্যন্তও এদের বিশ্বাস করত না রাশিয়ানরা। এদের স্থানীয় কমিনিউস্ট পার্টির মাথায় সব সময় একজন রাশিয়ানকে বসানো হত। কোথায় লাগে কাশ্মীর!

Saturday, August 13, 2016

নারী নেতৃত্ব

                                                                                             (১)
৮ই অক্টবর ২০০৮, আইসল্যান্ড। হ্যা যেভাবে গ্রীষ্মের প্রবল দাবাদহে সেকেন্ডের মধ্যেই বরফ গলে জল হয়, ২০০৮ সালের সামারে পৃথিবীব্যাপী ফ্যাইন্যান্সিয়াল মেল্টডাউনে, গলে জল  আইসল্যান্ডের অর্থনীতি। ওইদিনই আইসল্যান্ডের ন্যাশানাল ব্যাঙ্ক, সেন্ট্রাল ব্যঙ্ক অব আইসল্যান্ড জানিয়ে দেয়, তাদের পক্ষে সম্ভব না, আইসল্যান্ডের ব্যাঙ্কগুলো উদ্ধার করা-কারন তারা আইসল্যান্ডের জিডিপির প্রায় এগারোগুন ধার দিয়ে  বসে আছে! সম্পূর্ন রেকলেস ফাইনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট। ভাবুন সারদা কেলেঙ্কারিতে আপনাদের শুধু কারু কারুর এক দুলাখ টাকা গেছে। ৮ ই অক্টবর ২০০৮ ছিল এমন একটা দিন, যেদিন আইসল্যান্ডের সবাই জানল, তাদের সব ব্যাঙ্ক উল্টেছে, সেভিংস বলতে আর কিছু নেই।

 আটই অক্টবরে সব ব্যাঙ্কের যেদিন গণেশ উল্টালো, ওইদিন শুধু একটা ছোট ফ্যানান্সিয়াল সার্ভিস -আডুর ক্যাপিটাল কিন্ত টিকে যায়  আডুর ক্যাপিটালের মালকিন দুই মহিলা- হাল্লা তোমাসদোতির এবং ক্রিস্তিন প্রেদুসদোতির। এই ভদ্রমহিলা রিস্ক ইনভেস্টমেন্ট করে নি, গ্রাহকদের বরং বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন, রেকলেস ফাইনান্সিল গেইন মানেই ভরাডুবি। ফলে ওই টর্নেডোর মধ্যেও টিকে যায় তাদের সার্ভিস।

পরবর্তীকালে হাল্লা একটা খুব ইম্পটার্ন্ট কথা বলেছিলেন।  উনার মতে, ২০০৮ সালের ফাইনান্সিয়াল ক্রাইসিসের জন্য দায়ী পুরুষ নেতৃত্ব। হাল্লা দেখিয়েছিলেন, ফাইন্যান্সিয়াল ইন্সটিউটগুলোর টপ ম্যানেজমেন্টের ৯৫% ই পুরুষ। ফলে এইসব ইন্সটিউটশনগুলি সাংঘাতিক ভাবেই প্রচুর লাভের প্রত্যাশাই আইন ভাঙে এবং  সাংঘাতিক রিস্ক নিয়ে থাকে। জৈব বিবর্তনের কারনেই পুরুষ অনেক বেশী এগ্রেসিভ এবং রিক্স নিতে ভালবাসে। পুরুশ একাধারে যোদ্ধা এবং জুয়ারী। ফলে পুরুষের সিদ্ধান্ত অনেকক্ষেত্রেই বেশী এগ্রেসিভ, ঝুঁকিপূর্ন এবং আইনের বর্ডার লাইনে খেলা করা। এর তুলনায় নারীর মানসিকতা অনেক বেশী রক্ষণশীল-কারন বহুদিন ধরে সংসার চালানোর দায়ভার নারীরই।

                                               (২)


অবশ্য আইসল্যান্ড পর্যন্ত যেতে হবে না-পশ্চিম বঙ্গের দিকে তাকালেও পরিস্কার হবে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বের ক্যারিশমায় পশ্চিম বঙ্গের রাজনীতি আজ বিরোধিশুন্য। মুর্শিদাবাদের শাহেনশাহ অধীর খোদ মুর্শিদাবাদেই জমি হারাতে চলেছেন যা সিপিএম আমলেও ছিল অকল্পনীয়। কালকেই অমিত শাহ দিল্লী থেকে নিদান দিয়েছেন বিজেপি মমতার বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাবে না-যার নীটফল ফেসবুকের বিজেপি ধর্নুর্ধররা অস্ত্র মাটিতে শুইয়ে রেখে বাণপ্রস্থের যাবার পাবলিক পোস্টিং দিচ্ছেন সর্বত্র। সিপিএমত বহুদিন আগেই ধ্বংস। আপনারাই বিচার করুন-মমতা ব্যানার্জির রিয়াল পলিটিক্সের সামনে  প্রকাশ কারাত, সীতারাম ইয়েচুরি, সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু-সম্পূর্ন নাবালক। মমতা যেভাবে জনগণের পালস বোঝেন-রাজনীতি বোঝেন তার ধারে কাছেও নেই কোন সিপিএম নেতৃত্ব। শুধু তাই না-গোটা পশ্চিম বঙ্গ জুরে মমতা যেভাবে কাজ আদায় করে নিতে পারেন আমলাদের কাছ থেকে-সিপিএম আমলে কোওর্ডিনেশন কমিটির তাবেদারি ছাড়া- রাজ্য প্রশাসন ছিল সম্পূর্ন ধ্বংস। মোদ্দা কথা,  রাজনীতিবিদ এবং প্রশাসক হিসাবে মমতাকে ৮০/১০০ দিলে সিপিএমের নেতাদের ১০/১০০ দেবারও কারন নেই।

 ইন্দিরা গান্ধীর আমলেও বিরোধি পুরুষনেতাদের দুরাবস্থা অধীরের থেকে ভাল কিছু ছিল না । যদ্দিন ইন্দিরা বেঁচে ছিলেন --না কংগ্রেসের মধ্যে, না বিরোধিদের মধ্যে এমনকোন নেতা ছিল-যিনি ইন্দিরার পলিটিক্যাল ক্যারিশমার কাছাকাছি আসতে সক্ষম। ইন্দিরাও মমতার মতন বিরোধিশুন্য করে ছেড়েছিলেন সম্পূর্ন নিজের পলিটিক্যাল ক্যারিশমার জোরে।

  এবার শেখ হাসিনা এবং বেনজির ভুট্টোর দিকে তাকানো যাক।  ১৯৯১ এর পরে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সম্পূর্ন নারী নেতৃত্বের আওতাই। মাঝের ২০০৭-২০০৯ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাদ দিয়ে। বাংলাদেশের জিডিপি থেকে হিউম্যান ডেভেলেপমেন্ট ইন্ডেক্সের সব থেকে বেশী প্রগতি কিন্ত হাসিনার আমলেই হয়েছে।  বাংলাদেশীরা নারী নেতৃত্ব শুনলেই তেলে বেগুনো জ্বলে ওঠেন। স্বাভাবিক আন্টি ইনকাম্বেন্সি। কিন্ত বাস্তব এটাই বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বঙ্গে পুরুষ রাজনীতিবিদ সেই মাপের নেই।

  বেনজিরকে খুন না করলে পাকিস্তানের আজকের  এই দূরাবস্থা হয় না। আমি পাকিস্তানের নিউক্লিয়ার বোমের জনক আব্দুল কাদের খানের ইন্টারভিঊ শুনছিলাম। উনি বেনজিরকে খুব গালাগাল দিচ্ছিলেন। কারন বেনজির ভুট্টো পাকিস্তানের নিউক্লিয়ার বোম প্রোগ্রাম প্রায় বন্ধ করে দিতে চাইছিলেন। এই কারনেই চাইছিলেন যে নিউক্লিয়ার বোমার জন্য পাকিস্তানের ওপরে সব ধরনের নিশেধাজ্ঞা-এবং যার দরুন পাকিস্তানের অর্থনীতির জীর্ন দশা। পাকিস্তান এমন এক দেশ, যার বাজেটের মোটে ১% খরচ হয় জনগনের শিক্ষা এবং চিকিৎসার জন্য। ৫৬% যায় মিলিটারীর পেছনে!
 এই দেশ কি টিকতে পারে? বেনজির এসবের পরিবর্তন চেয়েছিলেন-ফলে পাকি মিলিটারী তাকে খুন করে দিল!

                                           (৩)


আমেরিকাতেও দেখুন হিলারী ক্লিনটনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা বিল ক্লিনটনের আগে। কি ছাত্র হিসাবে, কি ছাত্র নেতা হিসাবে কি পেশাদার আইনজীবি হিসাবে হিলারি ক্লিনটন বিল ক্লিনটনের থেকে অনেক এগিয়ে ছিলেন। কিন্ত আমেরিকা নারী নেতৃত্ব খুব একটা বেশী মানতে অপারগ। ফলে রাজনীতিবিদ হিসাবে এগিয়ে গেলেন বিল ক্লিনটন। আর অনেক বেশী সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও, ফার্স্ট লেডি হিসাবেই কাটাতে হল হিলারীকে। যদিও ২০০৮ সালেই প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা হিলারীর। কিন্ত সেই বছরই উত্থান ওবামার-যিনি সম্ভবত শতাব্দির সেরা রাজনীতিবিদ বলেই আমি মনে করি।

 অন্যদিকে পুরুষ রাজনীতিবিদ হিসাবে ট্রাম্পের ভূমিকা দেখুন। সম্পূর্ন ঘৃণার চাষবাস করে ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা।  শুধু ট্রাম্প কেন-বাকী সব রিপাবলিকান পুরুষরাজনীতিবিদরাই মনে করে
 আর্বশন বন্ধ করা উচিত।  অদ্ভুত সব দাবী এই রিপাবলিকান পুরুষ রাজনীতিবিদদের!

 কি ট্রাম্প, কি সীতারাম ইয়েচুরি। পুরুষ রাজনীতিবিদ মানেই বাস্তব বর্জিত বস্তাপচা আদর্শবাদ, মানুষের মনে সুরসুড়ি দিয়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা। সেখানে মমতা বা হিলারীর রাজনীতির মধ্যে আছে নারীত্বের ছোঁয়া-যা মাটির খুব কাছাকাছি-এবং যা মেয়েরা শেখে একদম বাস্তব ভাবে বাঁচার জন্য, সংসারকে বাঁচানোর জন্য। এই বাস্তববাদিতা পুরুষদের রাজনীতিতে অনুপস্থিত।

 সুতরাং পৃথিবীকে ক্ষমতা এবং লোভ থেকে বাঁচানোর জন্য রাজনীতি , ফাইনান্স এবং কর্পরেটে মহিলা নেতৃত্ব আরো অনেক বেশী করে দরকার। পুরুষ আসলে জন্মলগ্ন থেকে শিকারি। ফলে সে স্বভাব জুয়ারী।  তাকে দিকে শিকার হবে-কিন্ত ম্যানেজমেন্ট এবং নেতৃত্বের ক্ষেত্রে মেয়েদের ক্ষমতা স্বভাবজাত।

 সিপিএম এবং কংগ্রেসকে টেনে তুলতে গেলে একটাই পথ-মহিলা নেতৃত্বকে ক্ষমতা দিতে হবে বেশী। কিন্ত সিপিএমের ক্ষেত্রে তা প্রায় অসম্ভব। তারা গোটা পার্টিতেই মেয়েদের ক্ষমতার ল্যাডারে উঠতে দেয় নি। ফলে আজকে পার্টির ভরাডুবি।